নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমরা মানুষেরা শুরু থেকেই ঈর্ষা পরায়ণ। পৃথিবীতে মানবজাতির একদম শুরুতে আদম(আ) এর এক সন্তান এই হিংসার বশবর্তী হয়ে খুন করে নিজ ভাইকে। তখন থেকে ঈর্ষা মানুষকে নিকৃষ্টতম অপকর্ম করতে উদ্বুদ্ধ করেছে। আবার কখনো কখনো এটাই হয়ে দাঁড়িয়েছে মানব সভ্যতার চালিকাশক্তি। অন্যের চেয়ে নিজেকে ছাড়িয়ে যেতে পাথেয় হয়েছে এই ঈর্ষা, এক জাতি এগিয়ে গিয়েছে আরেক জাতিকে। তবে এর ঋণাত্মক দিকটাই বেশি পরিলক্ষিত হয়।
জন্মের পর একটি শিশু যখন তার মায়ের কোলে অন্য কোন বাচ্চাকে দেখে, তখন কিন্তু শিশুটি ঈর্ষা পরায়ণ হয়ে কান্নাকাটি জুড়ে দেয়, যতক্ষণ পর্যন্ত তার মা সে বাচ্চাটিকে নামিয়ে দিচ্ছে। আবার দেখা যাচ্ছে তার খেলনাটি অন্য কোন শিশু ধরতে গেলে, সে ধরতে দিচ্ছে না।
একটু যখন বড় হয়ে সেই শিশুটি স্কুলে যাচ্ছে, তখন ক্লাসে কেউ ফার্স্ট হচ্ছে কোন পুরস্কার পাচ্ছে, তখন সেই শিশুটি মনের অজান্তেই কিন্তু ঈর্ষায় ভোগে। তার এই হিংসার পেছনে তুষের আগুন জ্বালায় শিশুটির পরিবার। সে কেন অমন নয়, সে কেন ফার্স্ট হবে না...... ইত্যকার বাণী শুনিয়ে শিশুটির জন্মগত ঈর্ষা বাড়ে বৈ কমে না। অন্যদিকে তার নিজস্ব জিনগত ঈর্ষার বশবর্তী হয়ে সে খেলাধুলায়, আড্ডায় মনবৈকল্যে ভোগে।
এইভাবে দিনকে দিনকে পারিপার্শ্বিক ঈর্ষার বলয়ে বেড়ে যখন কলেজ কিংবা ভার্সিটি পাস করতে থাকে মানুষটির ঈর্ষার কারণ ও বিষয় এর পরিবর্তন ঘটে। কিন্তু এটার মূলোৎপাটিত হয় না। এ সময় আজকাল বেশিরভাগ মানুষই প্রেমে পড়ে। ভালো লাগার মানুষটি যখন তাকে পাত্তা না দিয়ে অন্য কোন বিপরীত লিঙ্গের কারো সাথে অনেক সময় কাটায়, আড্ডা দেয় তখন সে হিংসায় ভোগে। আবার প্রেম হয়ে যাবার পরেও যখন বেস্টফ্রেন্ড নামক ব্যক্তিটির সাথে তাদের প্রেম-বিরহের সমস্ত বিষয় বলে বেড়ায় সেটাও কিন্তু বয়ফ্রেন্ড বা গার্লফ্রেন্ডটিকে মারত্মক মনোঃপীড়া দেয়।
কর্মজীবনের শুরুতে বন্ধু বান্ধব কেউ কেউ খুব ভালো শুরু করে। সেটা দেখে পিছিয়ে থাকা বন্ধুটি মনোকষ্টে ভোগে। পরিবারের লোকজনের তুলনা এক্ষেত্রে তাদের যন্ত্রণার রেশ বাড়ায় বৈ কমায় না।
এমন করে আসে বিবাহের সময়। এসময়ও মানুষ অন্যের বউ সুন্দর দেখে নিজের জন্যও সুন্দর বউ খোঁজে। আবার অন্যদিকে অমুকের বর বড় সরকারী কর্মকর্তা, তমুকের বর মাল্টি ন্যাশনাল কিংবা কর্পোরেট জব করে, আর্মির অফিসার, অথবা অত্যন্ত সফল ব্যবসায়ী খোঁজে। মানুষটি কেমন সেটা খুব একটা বিবেচ্য হয় না। লোক দেখানো পাল্লাপাল্লিতে ছেলে-মেয়ের বিবাহ সম্পন্ন হয়।
এরপর নিত্যকার বিবাহিত জীবনে আছে ঈর্ষার অনন্ত যন্ত্রনা। স্বামী অন্য মেয়ের সাথে কথা বলল কেন? অমুকের স্বামী তাকে এটা গিফট দিয়েছে, ওটা গিফট দিয়েছে, বিদেশে হানিমুনে গিয়েছে, বউ বাচ্চা নিয়ে ইউরোপ-আমেরিকা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে।সর্বক্ষেত্রে ঈর্ষার ছড়াছড়ি। আবার স্ত্রীর ছেলেবন্ধুর সাথে নিষ্পাপ আড্ডা কিংবা মেলামেশায় বেচারা স্বামীর ঈর্ষার উদ্রেক হচ্ছে। সংসারে অশান্তি লাগছে, কোন কোন ক্ষেত্রে সংসারে ভাঙন ধরছে-সব ক্ষেত্রে নয় যদিও।
এরপর আবার সন্তান আসলে আবার শুরু হয় নিজের সন্তানের সাথে অন্যের সন্তানের তুলনার ব্যপার। সন্তানের সামর্থ্য মেধার বিচার না করে খোঁজা হয় তার জন্য বেস্ট পসিবল শিক্ষাদান।
এভাবে হিংসা, ঈর্ষা, পরশ্রীকাতরতা দিন দিন আমাদের তিলে তিলে কষ্ট দিয়ে চলছে। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত আমরা এর বাইরে যেতে পারি না।
২৩ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ৩:৫৮
মুচি বলেছেন: হয়তো.....
২| ২৩ শে আগস্ট, ২০১৭ সকাল ৯:৩১
মোস্তফা সোহেল বলেছেন: হিংসা আমাদের পেছনে ফেলে দেয় এটা আমরা মানুষ গুলো খুব কম বুঝি।
২৩ শে আগস্ট, ২০১৭ সকাল ১১:৫৬
মুচি বলেছেন: হয়তো বুঝি ঠিকই, তবে ঐসব মূহুর্তে ঈর্ষা পরায়ণ সত্বা জেগে ওঠে।
©somewhere in net ltd.
১| ২২ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ১১:৩০
রাজীব নুর বলেছেন: এর থেকে যারা বের হয়ে আসতে পেরেছে তারাই সাফল্য পেয়েছে।