![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সকল প্রশংসা মহান আল্লাহ তায়ালার, আমি আরও বেশী জানতে, শিখতে, অর্জন করতে চাই, মহান আলাহ রব্বুল আলামিনের নিকট চাওয়া, তিনি যেন আমাকে সঠিক জ্ঞান দান করেন
২০১৯, ২৭শে ফেব্রুয়ারীর ঐতিহাসিক পাক-ভারত আকাশ যুদ্ধ
২৭ তারিখ এয়ারস্ট্রাইক শুরু হবার ১৭ ঘন্টা আগে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা দফতর থেকে ভারতে পাল্টা হামলার সরাসরি ঘোষণা দেয়া হয়৷ ভারতও জানতো পাকিস্তান খুব সিগ্রই রেসপন্স করবে। ভারত ধারনা করে সেদিন রাতেই পাকিস্তান হামলা করবে। তাই ২৬ তারিখ সন্ধ্যা থেকে ২৭ তারিখ সকাল পর্যন্ত ভারতীয় বায়ুসেনা হাই এলার্ট পজিশনে থাকে৷ ভারতীয় একটি AW&ACE বিমান সারা রাত আকাশে উড়ন্ত অবস্থায় থেকে পাকিস্তানের এয়ারস্পেস পর্যবেক্ষন করে। এছাড়া ভারতের কিছু এয়ার সুপিরিয়র ফাইটার পুরো রাত জুড়ে LOC এর আশেপাশে টহল দেয়। কিন্তু ভারতকে হতাশ করে দিয়ে পাকিস্তান সেদিন রাতে হামলা করেনি। বরং পাকিস্তান যখন হামলা করে তা ছিলো ভারতের জন্য সম্পূর্ণ সারপ্রাইজিং।
এই অপারেশনে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা ISI বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়ে হেল্প করে এয়ারফোর্সকে। তারা জানায়, জম্বু কাশ্মীরে রাজৌরি সেক্টরের ব্রিগেড হেডকোয়ার্টারে গোপন বৈঠকের জন্য উপস্থিত হয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনীর নর্দান এলায়েন্সের কমান্ডার রনবীর সিং, ১৬ কোরের কমান্ডার লে. জেনারেল পরমজিৎ সিং সহ বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা।
এছাড়া ভারতীয় AW&ACE এর ফ্লাইং টাইম সম্পর্কেও গুরুত্বপূর্ণ একটা তথ্য দেয় ISI. যুদ্ধ পরিস্থিতিতে ভারত-পাকিস্তান উভয় দেশ তাদের AW&ACE বিমানগুলোকে ২৪ ঘন্টাই এয়ারবোর্ন রাখে। ফলে কেউ কোনো যুদ্ধবিমান টেকঅফ করালেই প্রতিপক্ষের AW&ACE এর রাডারে তা ধরা পরে যায়। কিন্তু ISI জানায়, ২৭ তারিখ সকালে ভারতের একটা AW&ACE ল্যান্ডের পর অপর একটা AW&ACE টেকঅফের মাঝে ১০ মিনিট গ্যাপ থাকবে। আর পাক এয়ারফোর্স এই ১০ মিনিটকেই তাদের মিশনের জন্য সিলেক্ট করে।
◼️◼️অপারেশন সুইফট রিটর্ট.....
২৭শে ফেব্রুয়ারী সকালে পাক এয়ারফোর্সের একটি স্যাব-২০০০ AW&ACE বিমান এয়ারবোর্ন হয়ে তার পজিশন নেয়। এই বিমানটাই ছিলো উক্ত অপারেশনের কমান্ড এন্ড কন্ট্রোল সেন্টার। ৪৫০ কিলোমিটার রেঞ্জের শক্তিশালী রাডারের কারনে বিমানটি পাকিস্তানের আকাশে দাড়িয়ে থেকেই ভারতের আকাশের ভেতর কি ঘটছে তা সবকিছু দেখতে পেতো।
সকাল ৯টা বেজে ২৫ মিনিট। সারা রাত হাই এলার্ট থাকার পর ভারত নিশ্চিত হয় আজ আর হামলা হবেনা। ফলে পাহারা শিথিল করে ভারত। কিছুক্ষণ পর এয়ারবোর্ন থাকা ভারতীয় AW&ACE বিমানটি ল্যান্ড করে। আর সাথে সাথে শুরু হয় পাকিস্তানের অপারেশন সুইফট রিটর্ট।
৯টা ৩০ মিনিটে সর্বপ্রথম পাক এয়ারফোর্সের ১৬ নং স্কোয়াড্রনের দুটো JF-17 ফাইটার ভারতের পুঞ্চ সেক্টর এবং নারেয়ান সেক্টরের দিকে ধেয়ে আসে। উভয় সেক্টরের দুটি টার্গেটে ৩০ হাজার ফুট উচ্চতা থেকে দুটি LS-6 গ্লাইড বম্ব নিক্ষেপ করে ভারতীয় বাহিনীর দুটো সেনা চৌকি উরিয়ে দেয়।
কয়েক মিনিটের ভেতরেই ঘটনাস্থলে চলে আসে দুটো ভারতীয় মিরোজ-২০০০ ফাইটার। পাক ফাইটারের এস্কেলেশনের কারনে শুটডাউন ক্লিয়ারেন্স পেয়ে যায় ভারতীয় পাইলট। ফলে JF-17 গুলোকে রাডার লক করে মিসাইল ছুড়তে উদ্যত হয় ভারতীয় পাইলটরা। কিন্তু এখানেই ঘটে বিপত্তি। মিরোজ-২০০০ যতবারই JF-17 কে রাডার লক করে ততবারই লক ভেঙে যেতে থাকে। এভাবে বেশ কিছুক্ষণ ধরে উভয় পক্ষের ফাইটারগুলো নিজেদের এয়ারস্পেসের ভিতরে থেকেই একে অপরকে উস্কাতে থাকে। কিন্তু রাডার লকে ব্যার্থতার কারনে মিরোজ-২০০০ গুলো হামলা করতে ব্যার্থ হয়। মিরোজ-২০০০ গুলো কন্ট্রোল স্টেশনে জানায় তাদের রাডার কাজ করছেনা।
আসলে ওই সময় পাকিস্তানি JF-17 গুলো KG-600 সেল্ফ প্রোটেকশন জ্যামার দিয়ে ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার করে ভারতীয় মিরোজ-২০০০ গুলোর রাডার লক ভেঙে দিচ্ছিলো।
এটা ছিলো একটা ডেকয় মিশন। আগেরদিন রাতে এরকমই ৩ টা ডাইভারশন ক্রিয়েট করে পাক ফাইটারগুলোকে অন্যদিকে মনোযোগ আকৃষ্ট করে রেখেছিলো ভারত। কিন্তু পাকিস্তানি ফাইটারগুলো হামলা চালিয়ে দেয়ায় ভারত মনে করে এটাই আসল হামলা।
এদিকে পুঞ্জ সেক্টরে JF-17 যখন মিরোজ-২০০০ গুলোকে বিরক্ত করছে ঠিক সেই সময় ২৪ টা ফাইটারের বড় একটি ফর্মেশন জম্মু কাশ্মীরের রাজৌরি সেক্টর এবং নওশেরা সেক্টরের দিকে ধেয়ে আসে। এদের ভেতর ছিলো ১২ টা F-16, ৮ টি JF-17 এবং ৪ টি মিরোজ-Rose ফাইটার। মিরোজ-Rose গুলো ছিলো বম্বিং ফর্মেশনে। আর এদের সাথে গেম চেঞ্জার হিসেবে ছিলো "ডাসাল্ট ফ্যালকন DA-20" ইলেকট্রনিক ওয়্যারফেয়ার (EW) বিমান।
ভারতের হামলায় যেহেতু পাকিস্তানের তেমন কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি তাই পাক এয়ারফোর্সের উপর অর্ডার ছিলো ক্যাজুয়ালিটি না করে ভারতকে নিজেদের সক্ষমতার প্রমান দেখিয়ে সতর্ক করা। ফলে তারা সেই অনুযায়ী প্লানিং করে।
হামলার ক্ষেত্রে ব্যাবহার করা হয় পাকিস্তানের নিজস্ব তৈরি H-4 SOW স্ট্যান্ড অফ ওয়েপন। এগুলো ভারতের ব্যাবহৃত ইসরায়েলের তৈরি স্পাইস বোমার চেয়ে অনেক আধুনিক। কারন এতে আছে IR সিকার, যা একে টার্মিনাল ফেজে গাইড করে নিখুঁত ভাবে হামলা করতে সাহায্য করে। এতে টু-ওয়ে ডাটালিংক সিস্টেম থাকায় ফায়ার করার পরেও টার্গেট চেঞ্জ করা যায়। এছাড়া এর রয়েছে নিজস্ব বুস্টার ইঞ্জিন, ফলে স্পাইস গ্লাইড বোমার চেয়ে H-4 SOW এর রেঞ্জ দ্বিগুণ বেশি (১২০ কিলোমিটার)
LOC এর নিকট এসে মিরোজ-Rose গুলো পাকিস্তানের এয়ারস্পেসে দাড়িয়েই ভারত সীমান্তের ১৭ কিলোমিটার ভেতরে রাজৌরি সেক্টরের ব্রিগেড হেডকোয়ার্টার এবং নওশেরা সেক্টরের অস্ত্র গুদাম সহ মোট ৪ টি টার্গেটকে লক করে H-4 sow ফায়ার করে।
প্রথমে ডিরেক্ট স্থাপনা টার্গেট করে বম্ব ফায়ার করা হলেও কিছুদূর যাওয়ার পর পাইলট এদের কোর্স চেঞ্জ করে খালি যায়গাকে টার্গেট করে দেয়। ফলে বোমাগুলো ব্রিগেড হেডকোয়ার্টার এবং অস্ত্র গুদামের পাশে খালি যায়গায় গিয়ে আঘাত করে। ক্যাজুয়ালিটি না ঘটিয়েই শত্রুকে নিজেদের সামর্থ সম্পর্কে অবগত করার অর্ডারের কারনে পাক এয়ারফোর্স এই কাজ করে। সেদিন পাকিস্তান চাইলে ভারতীয় সেনাবাহিনীর নর্দান এলায়েন্সের কমান্ডার রনবীর সিং সহ আরো বেশ কয়েকজন হাই রেঙ্ক অফিসারকে হত্যা করতে পারতো।
তবে পাকিস্তানি ফাইটার টার্গেট মিস করেছে ভারত যেন এই দাবি করতে না পারে সেজন্য মিরোজ- Rose এর মাল্টিফাংশন্যাল ডিসপ্লেতে ধারণকৃত (টার্গেট লক-বম্ব ফায়ার-টার্গেট চেঞ্জ-বম্ব ব্লাস্ট) পুরো ফুটেজটি প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রকাশ করে পাক ISPR.
বোমা হামলা করেই পিছু হটে বেইসে ফিরে যায় মিরোজ-Rose বম্বার গুলো। কিন্তু F-16 এবং JF-17 গুলো ভারতীয় রেসপন্সের অপেক্ষায় সেখানেই দাড়িয়ে থাকে। এবার কাজ শুরু করে ডাসাল্ট ফ্যালকন DA-20. শক্তিশালী জ্যামারের মাধ্যমে কাশ্মীর এরিয়ার কমিউনিকেশন সিস্টেম জ্যাম করে দেয় বিমানটি। ফলে উক্ত স্থানে ভারতীয় ফোর্সের ভেতর কমিউনিকেশন ব্ল্যাকআউট ঘটে।
হামলা হবেনা ভেবে মাত্র ২টি Su-30 তখন এয়ারবোর্ন ছিলো। কিছুক্ষণের মধ্যেই ইন্টারসেপশনের জন্য ছুটে আসে বিমানদুটো। কাশ্মীরে প্রবেশ করতেই ডাসাল্ট ফ্যালকনের জ্যামারের কবলে পরে তাদের কমিউনিকেশন সিস্টেম অকার্যক হয়ে পরে। নিজেদের উপস্থিতি গোপন রাখতে রাডার অফ করে রাখে Su-30 দুটো। পাকিস্তানি ফাইটারগুলোও নিজেদের রাডার বন্ধ করে স্যাব-২০০০ AW&ACE এর সাথে ডাটালিংকে কানেক্ট হয়ে ছিলো।
রাডার আউটপুট এবং কমিউনিকেশন বিহীন অবস্থায় ভারতীয় ফাইটাগুলো অন্ধের মত বিক্ষিপ্ত ভাবে এদিক সেদিক উড়ে IRST দিয়ে পাকিস্তানি ফাইটার খুঁজতে থাকে। ভারতের কোনো AW&ACE এয়ারবোর্ন না থাকায় Su-30 গুলোকে সাপোর্ট দেবার মত কেউ ছিলোনা।
এদিকে AW&ACE এর ভিতর বসে কাশ্মীরের আকাশে কোথায় কি ঘটছে তা পর্যবেক্ষন করছিলো পাক কমান্ড সেন্টারের অফিসাররা। বিক্ষিপ্ত ভাবে ঘুরতে থাকা একটা SU-30 ফাইটার হঠাৎ করে LOC এর কাছাকাছি এসে রাডার অন করে। রাডার অন করতেই তা ধরা পরে পাক ফাইটারের রাডার ওয়ার্নিং রিসিভারে। আর তখনই কমান্ড সেন্টার থেকে শুটডাউন ক্লিয়ারেন্স দিয়ে দেয়া হয়।
এই সময় শোনা যায় স্কোয়াড্রন লিডার হাসান সিদ্দিকির সেই উত্তেজনাপূর্ন চিৎকার.... " ক্যাপচার-ওয়ান টার্গেটেড, ফক্স-থ্রি ফক্স-থ্রি। পাইলট সেসময় F-16 থেকে Fox-3 মিসাইল ফায়ার করে। F-16 তে ব্যাবহৃত Fox-3 মিসাইল হলো AIM-120C5 এ্যামরাম। মিসাইল লঞ্চ হতেই Su-30 এর পাইলট টের পেয়ে পালানোর চেষ্টা করেছিলো। কিন্তু সফল হতে পারেনি। পাক এয়ারফোর্স তার শুটডাউন কনফার্ম হয়।
শুটডাউনের পর বিমানটি ভারতের অভ্যন্তরে বিদ্ধস্ত হয়। এখানেই অনেকে প্রশ্ন করে রেকেজ না দেখেই কিভাবে শুটডাউন কনফার্ম হলো। আধুনিক কম্ব্যাটে ২টি বিষয় দেখে তা নিশ্চিত হওয়া যায়। প্রথমত মিসাইল নিক্ষেপের কিছুক্ষন পরেই পাকিস্তানি ফাইটারের রাডার ওয়ার্নিং রিসিভারে ভারতীয় Su-30 এর রাডার ওয়েভ আসা বন্ধ হয়ে যায়। এর মানে হলো Su-30 এর রাডার ধ্বংস হয়ে গেছে। দ্বিতীয়ত, মিসাইল ফায়ারের কিছুক্ষন পর ওই Su-30 টি পাকিস্তানি AW&ACE এর রাডার থেকে মুহুর্তেই ভ্যানিস হয়ে যায়। এর মানে বিমানটি ধ্বংস হয়ে গেছে। উইং ম্যানের পরিনতি দেখে পালিয়ে যায় অপর SU-30 এর পাইলট।
বিদ্ধস্ত Su-30 বিমানটি খুঁজে বের করতে সার্চ এন্ড রেসকিউ মিশনের জন্য একটি MI-17 হেলিকপ্টার পাঠায় ভারতীয় বায়ুসেনা। কপ্টারটি কাশ্মীরের বদগাম জেলার নিকট আসলে ওই অঞ্চলে ভারতীয় এয়ার ডিফেন্স ইউনিটের রাডারে সেটা ধরা পরে। পাকিস্তানী জ্যামারের কারনে কাশ্মীরে তখন কমিউনিকেশন ব্লাক আউট চলছে। বদগাম এয়ার ডিফেন্স ইউনিটের সেনারা বার বার কপ্টারটির আইডেন্টিফিকেশন জানতে চায়, কিন্তু জ্যামিং এর কারনে কপ্টারের পাইলট তা জানাতে ব্যার্থ হয়। ফলে তারা কপ্টারটিকে পাকিস্তানি যুদ্ধবিমান ভেবে ইসরাইলের তৈরি "স্পাইডার" মিডিয়াম রেঞ্জ SAM মিসাইল ফায়ার করে।
সকাল ১০ টার সময় বদগামের আকাশে নিজেদের ছোড়া মিসাইলের আঘাতে শুটডাউন হয় ভারতীয় MI-17 হেলিকপ্টার। কপ্টারে থাকা ২ জন পাইলট এবং ৪ জন অফিসারের সবাই মারা যায়। এছাড়া একজন সিভিল ব্যাক্তিও মারা যায়। ( Su-30 শুটডাউন অস্বীকার কারীদের জন্য একটা প্রশ্ন.... দুটো শক্তিশালী এয়ারফোর্স যেখানে যুদ্ধ করছে ভারত সেই যুদ্ধক্ষেত্রে কোন যুক্তিতে একটা পরিবহন হেলিকপ্টার পাঠালো? কি এমন জরুরি কাজ ছিলো যার জন্য কপ্টারটাকে যুদ্ধক্ষেত্রের ভেতরে ঢুকতে হলো?)
২০ মিনিট পর পরিস্থিতি পরিদর্শন করতে কাশ্মীরের দিকে ছুটে আসে ভারতীয় বায়ুসেনার কয়েকটি মিগ-২১ ফাইটার। কাশ্মীরে প্রবেশের পর তাদের কমিউনিকেশন জ্যাম হয়ে যায়। এমনিতেই মিগ-২১ এর জিওলোকেশনিং সিস্টেম অনেক পুরোনো এবং দুর্বল। তার উপর কমিউনিকেশন জ্যাম থাকায় এক মিগ-২১ বেচারা জিও-লোকেশনিংয়ে ভুল করে একদম পাকিস্তানের ভেতরেই ঢুকে পরে। ক্লিয়ারেন্স পেতেই সেটিকে শুটডাউন করে উইং কমান্ডার নোমান আলী খান। শুটডাউনের সময় রেডিওতে পাইলট নোমান আলী খান বলছিলো "ক্যাপচার-টু টার্মিনেটেড, ক্যাপচার-টু টার্মিনেটেড"
বাকি মিগ-২১ গুলো LOC ক্রস না করে পালিয়ে যায়। এরপর সেদিন আর ভারতের পক্ষ থেকে কোনো ফাইটার পাঠানো হয়নি। এটা ছিলো ভারতের জন্য সবচেয়ে লজ্জাজনক মুহুর্ত, পাক এয়ারফোর্স ভারতের এয়ারস্পেসে বসে আছে কিন্তু ভারত কোনো প্রতিউত্তর দিতে পারছেনা। পাক ফাইটারগুলো আরো কিছুক্ষন অবস্থান করার পর বেইসে ফিরে আসে। আর এইভাবেই সমাপ্ত হয় অপারেশন সুইফট রিটর্ট।
ওদিকে বদগাম এরিয়ার এয়ার ডিফেন্স ইউনিট থেকে হেডকোয়ার্টারে খবর আসে তারা একটি পাকিস্তানি বিমান শুটডাউন করেছে। সাথে সাথে ভারতীয় প্রতিরক্ষা দফতরের মুখপাত্র প্রেস ব্রিফিং করে জানায় ভারতীয় বায়ুসেনা পাকিস্তানের একটি F-16 শুটডাউন করেছে। পরে অবশ্য জানা যায় ওটা F-16 নয়, ওটা ছিলো নিজেদের Mi-17 হেলিকপ্টার। তখন শুটডাউন ক্লিয়ারেন্স দেয়া বদগাম ইউনিটের অফিসার স্কোয়াড্রন লিডার কমান্ডিকে কে বরখাস্ত করা হয়।
এদিকে শুটডাউন হওয়া মিগ-২১ বিমানটি ৩টি বড় টুকরোয় বিভক্ত হয়ে পাকিস্তানের আজাদ কাশ্মীরে পতিত হয়। সেইসঙ্গে আকাশ থেকে টুপ করে পাকিস্তানের মাটিতে পরে মিগ-২১ এর পাইলট উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্ধমান। প্রথমে কাশ্মীরের জনগণ তাকে পাকড়াও করে উদোম ক্যালানি দেয়৷ পরে পাক আর্মি এসে তাকে জনগণের হাত থেকে উদ্ধার করে বেইসে নিয়ে যায়। এরপর তাকে লাহোরে নিয়ে চা খাওয়ানো হয়। চা খেয়ে খুশি হয়ে সে ঘোষণা দেয় "দ্যা টি ওয়াজ ভেরি ফেন্টাস্টিক"। ১ দিন পর লাহোরের ওয়াগা বর্ডার দিয়ে তাকে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়া হয়।
ভারতে ফেরার পর ভারতীয় মিডিয়া দাবি করে অভিনন্দনই নাকি মিগ-২১ দিয়ে F-16 শুটডাউন করেছে। পরে দেখা যায় অভিনন্দনের মিগের সবগুলো মিসাইল অব্যাবহৃত আছে, একটাও ফায়ার করা হয়নি। এরপরও ভারতীয় মিডিয়া জোর গলায় দাবি জানাতে থাকলে মার্কিন এয়ারফোর্সের একটি প্রতিনিধীদল পাকিস্তানি F-16 গুলো পরিদর্শনে আসে। পরিদর্শন শেষে তারা রিপোর্ট করে পাকিস্তানের সবগুলো F-16 অক্ষত আছে এবং ভারত নিজেদের লজ্জা আর ব্যার্থতা ঢাকার জন্য গুজবের আশ্রয় নিয়েছে।
এদিকে নিজেদের SU-30 শুটডাউনের কথা স্বীকার করেনি ভারত। SU-30 তো দুরের কথা, তারা মিগ-২১ শুটডাউনের কথাও স্বীকার করেনি, তাদের দাবি যান্ত্রিক ত্রুটিতে মিগ-২১ ক্রাশ করেছে। তবে SU-30 শুটডাউনের কথা স্বীকার না করলেও বোকার মত নিজেরাই তার প্রমান দিয়ে ফেলে ভারত।
ভারত দাবি করে বম্বিং করতে আসা একটি F-16 কে তারা শুটডাউন করেছে। কিন্তু পাকিস্তান জানায় বম্বিংয়ের সময় তারা F-16 ব্যাবহারই করেনি, ব্যাবহার করেছে মিরোজ-Rose. এবার F-16 এর উপস্থিতি প্রমান করতে গিয়ে বোকার মত SU-30 শুটডাউনকারি AIM-120C5 মিসাইলটার ধ্বংসাবশেষ মিডিয়ার সামনে প্রকাশ করে ভারত। যার মাধ্যমে নিজেরাই তাদের SU-30 শুটডাউনের প্রমান দিয়ে দেয়।
গোয়েন্দা রিপোর্টের মাধ্যমে শুটডাউন হওয়া দুই ফাইটারের তথ্য প্রকাশ করে পাকিস্তান। শুটডাউন হওয়া Su-30 বিমানটি ভারতীয় বায়ুসেনার ২২১ নং স্কোয়াড্রন 'ভেলিন্টস' এর অন্তর্ভুক্ত ছিলো। বিমানটি ছিলো একদম নতুন, ২০১৭ সালে তৈরি করা। আর Mig-21 টি বায়ুসেনার ৫১ নং স্কোয়াড্রন 'সোয়ার্ড আর্মস' এর অন্তর্ভুক্ত ছিলো।
তবে বিদ্ধস্ত Su-30 এর রেকেজ গায়েব করা গেলেও পাইলট মারা যাওয়ার বিষয় ধামাচাপা দেওয়া সহজ বিষয় নয়। আর সেটা ঢাকতে ভারত নতুন নাটক সাজায়। কয়েকদিন পরেই পত্র-পত্রিকায় নিউজ আসে সড়ক দুর্ঘটনায় ভারতীয় বায়ুসেনার দুজন পাইলট মারা গিয়েছে। তবে আরেকটি বিষয় ব্যাক্তিগত ভাবে আমার অদ্ভুত লাগে, সেটা হলো- ২৭শে ফেব্রুয়ারী পাক-ভারত আকাশ যুদ্ধ চলাকালে ভারতের একজন Su-30 পাইলট নিজ রুমে নিজের মাথায় গুলি করে আত্মহত্যা করে!
◼️◼️ অপারেশন সুইফট রিটর্টের গেম চেঞ্জার কে?
২৭শে ফেব্রুয়ারী যুদ্ধের ক্রেডিট F-16 বা JF-17 কাউকেই দেয়া উচিত হবেনা। আমি ক্রেডিট দিবো ডাসাল্ট ফ্যালকন DA-20 বিমানটিকে। এই বিমানটি ভারতীয় বায়ুসেনাকে পুরোপুরি অন্ধ আর বধির করে দিয়েছিলো। ফলে ঘটনাস্থলে কি হচ্ছে তা সম্পর্কে ভারত ছিলো সম্পূর্ণ অজ্ঞ। এটি ছিলো দিনের বেলার যুদ্ধ, কিন্তু ভারতের জন্য তা রাতের মত অন্ধকারে পরিনত হয়।
পাকিস্তানি পাইলট স্কোয়াড্রন লিডার হাসান সিদ্দিকি বলেছিলো,.. " আমরা ককপিটে বসে ভারতীয় পাইলট আর কমান্ড সেন্টারের দিশেহারা কথাবার্তা শুনছিলাম আর হাসছিলাম, কিন্তু তারা একে অপরের কথা শুনছিলো না। বিশেষ করে ভারতীয় সেন্ট্রাল কমান্ডাররা গ্রাউন্ড রাডারে দেখছিলো অভিনন্দন তার মিগ-২১ নিয়ে পাকিস্তানের ভিতর চলে যাচ্ছে। তারা অভিনন্দনকে অনেকবার বেইসে ফিরে আসার অর্ডার দিয়েছিলো, কিন্তু অভিনন্দন তা শুনতেই পায়নি"
একে বলে "ফগ অফ ওয়্যার"। চারপাশে কি ঘটছে পাইলট তা জানতে না পারলে দিশেহারা হয়ে পরে। সেসময় যথেষ্ট শক্তিশালী হবার পরেও প্রতিপক্ষের সহজ শিকারে পরিণত হতে হয়। ২৭শে ফেব্রুয়ারী পাকিস্তান প্রমান করেছিলো নিখুঁত প্ল্যানিং এর মাধ্যমে কিভাবে শক্তিশালী প্রতিপক্ষকে পরাস্ত করা যায়। সেই সাথে আধুনিক যুদ্ধে ইলেকট্রনিক ওয়্যারফেয়ার এবং গোয়েন্দা তথ্য কতটা ভয়ংকর হতে পারে অপারেশন সুইফট রিটর্ট তার পার্ফেক্ট উদাহরন।
উল্লেখ্য, অপারেশন সুইফট রিটর্টের ৩ দিন পর ভারতীয় বায়ুসেনার ওয়েস্টার্ন কমান্ডের চীফ 'চন্দ্রশেখরান হারি কুমার' কে বরখাস্ত করা হয়। ভারত অবশ্য বলেছে বরখাস্ত নয়, সে রিটায়ার্ড করেছে।
সেদিন এয়ার কম্ব্যাট শেষ হতেই ভারত তাদের সীমান্তে মোতায়েন থাকা ব্যালেস্টিক মিসাইলগুলোকে এক্টিভ করে এবং পাকিস্তানে মিসাইল হামলার হুমকি দেয়। জবাবে পাকিস্তানও তাদের সীমান্তে মোতায়েন থাকা ব্যালেস্টিক মিসাইলগুলো এক্টিভ করে ভারতকে পাল্টা হামলার হুমকি দেয়। পরিস্থিতি বুঝতে পেরে ভারত মিসাইলগুলি নিউট্রাল করে দেয়, এর মাধ্যমে উভয় দেশ পরমাণু যুদ্ধের মুখ থেকে ফিরে আসে।
©somewhere in net ltd.