![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
স্বল্প শিক্ষিত বেকারদের জন্য কৃষি-খামার। মাঝারি শিক্ষিতদের জন্য বৃহৎ খামার, কুটির শিল্প ও আউটসোর্সিং-ফ্রিল্যান্সিং। শিক্ষিতদের জন্য শিল্প স্থাপন অথবা প্রযুক্তিগত বিপণন। বাংলাদেশে বেকারত্ব দূরীকরণে এই কয়েকটি লক্ষ্যণীয় বিষয়ই যথেষ্ট। Facebook.com/M01634300300
বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার খাদ্য নিরাপত্তা বিধানের জন্য বহুমুখী খাদ্য উৎপাদনের প্রয়োজন। আর এ জন্য দরকার নতুন নতুন খাদ্য উৎপাদন ও এর সংযোজন। আভ্যন্তরীন চাহিদা পূরণের পাশাপাশি বৈদেশিক মূদ্রা আয়ের ক্ষেত্রেও খরগোশ পালন বড় ধরনের ভূমিকা রাখতে পারে। কারণ মুসলিম প্রায় প্রতিটি দেশেই খরগোশের গোশতের ব্যাপক ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তাছাড়া ইউরোপের অনেক দেশেও খরগোশের গোশত ফ্রাই এক্সপেনসিভ খাদ্য তালিকায় রয়েছে। বর্তমানে সমগ্র বিশ্বের খরগোশের চাহিদা পূর্ন করে মিশর, সুদান, লিবিয়া, আলজিরিয়া, পোল্যান্ড, রাশিয়া, কোরিয়া, জাপান ও চীন সহ কয়েকটি দেশ। একটি পরিসংখ্যানে দেখা যায় প্রতি বছর প্রায় ৮৭ হাজার কোটি ডলার মূল্যমানের খরগোশ মিডল ইস্ট এর মুসলিম কয়েকটি দেশে, ইউরোপে, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ায় এক্সপোর্ট করা হয়। তবে দুঃখজনক হলেও সত্য যে বাংলাদেশে খরগোশ উৎপাদন করার মত জনবল, পরিবেশ, আন্যান্য সুযোগ সুবিধা থাকলেও এই খাত থেকে কোন বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের কোন পরিকল্পনা সরকারী ও বেসরকারী পর্যায়ে একেবারেই নেই।
মূলতঃ উৎপাদান বাড়ানো সম্ভব হলে বাংলাদেশে থেকেও খরগোশ এক্সপোর্ট করার পরিকল্পনা উদ্যোক্তারা গ্রহন করতে পারেন।
Micro-livestock হিসাবে আখ্যায়িত খরগোশ একটি বহুমুখী খাদ্য উৎপাদনের উৎস। এই লক্ষ্যে বাংলাদেশ পশুসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট সাভার ঢাকা দীর্ঘ ৭ বছর যাবৎ খরগোশের লালন পালন, খাদ্য, বাসস্থান, বিভিনড়ব রোগ-বালাই, মাংসের গুণাগুণ ইত্যাদি নিয়ে গবেষণা করে আসছে। দীর্ঘ দিনের গবেষণার ফলাফল থেকে দেখা গেছেঃ
১. অল্প জায়গায় স্বল্প খাদ্য এবং বিনিয়োগের মাধ্যমে খরগোশ পালন করা যায়।
২. খরগোশের মাংসের প্রোটিন, এনার্জি, খনিজ এবং ভিটামিনের পরিমাণ অন্যান্য সকল প্রজাতির জীবজন্তুর মাংসের চেয়ে বেশি এবং কোলেস্টেরল ফ্যাট ও সোডিয়াম কম থাকে। এছাড়া এদের মাংস সুস্বাদু ও সহজে হজম হয় এবং সকল ধর্মের মানুষের জন্য গ্রহণযোগ্য।
৩. খরগোশ দ্রুতবর্ধনশীল এবং একটি স্ত্রী খরগোশ প্রতিবারে ২-৮টি বাচ্চা দেয়। এরা নিু মানের খাবার খেয়ে অধিক পুষ্টিসম্পনড়ব মাংস উৎপাদন করে।
৪. খরগোশ পালন বেকার যুবক, মহিলা ও ভূমিহীন কৃষকের দারিদ্র বিমোচন এবং কর্মসংস্থানের অন্যতম একটি পেশা হতে পারে। এসব কারণে দেশে প্রাণীজ আমিষের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি দারিদ্র বিমোচনে সংশিষ্ট সকলের খরগোশ পালনের জন্য এগিয়ে আসা উচিত।
আমরা খরগোশকে সাধারণত সৌখিন প্রাণী হিসেবে পালন করি। তবে, বাণিজ্যিকভাবে খরগোশ পালন করে প্রাণিজ আমিষের চাহিদা পূরণসহ কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা যেতে পারে। খরগোশের মাংস অত্যন্ত সুস্বাদু ও পুষ্টিকর।
দেশে বাৎসরিক গোশতের চাহিদা প্রায় ৬ মিলিয়ন মেট্রিক টন এবং উৎপাদিত হয় মাত্র ১ মিলিয়ন মেট্রিকটন। দেশের চাহিদার তুলনায় মোট আমিষের শতকরা ১৫-২০ ভাগ আসে পশুসম্পদ থেকে যা প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগন্য। জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে এই চাহিদা আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে। একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির দৈনিক ১২০ গ্রাম মাংস গ্রহণ করা প্রয়োজন অথচ সেখানে আমরা প্রতিদিন মাত্র ২০ গ্রাম মাংস গ্রহণ করে থাকি। এজন্য প্রাণীজ আমিষের চাহিদা মেটানোর লক্ষ্যে নতুন সংযোজন হিসাবে আমরা খরগোশ প্রতিপালনের বিষয়টি অধিক সম্ভাবনাময় দিক হিসাবে বিবেচনা করতে পারি।
অন্যান্য প্রাণীর তুলনায় খরগোশ পালন বরং সহজ। এদের খাদ্য এবং ব্যবস্থাপনা সহজ বিধায় বাড়ীর মহিলা ও ছেলে-মেয়েরা কাজের ফাঁকে সহজেই এদের পরিচর্যা করতে পারে।
খরগোশের প্রজাতি
বাংলাদেশে বিভিনড়ব প্রজাতির খরগোশ পাওয়া যায়। তম্মধ্যে রয়েছে ডার্ক গ্রে (দেশী), ফক্স, ডাচ, নিউজিল্যান্ড লাল, নিউজিল্যান্ড সাদা, নিউজিল্যান্ড কালো, বেলজিয়াম সাদা এবং ছিনছিলা উল্লেখযোগ্য।
বিভিনড়ব গবেষণা থেকে দেখা গেছে যে, অল্প বয়স্ক খরগোশের মাংস বেশি বয়স্ক খরগোশের মাংসের তুলনায় উনড়বতমানের হয়। আবার স্ত্রী খরগোশের মাংসের তুলনায় পুরুষ খরগোশের মাংস তুলনামূলক উনড়বত মানের হয়ে থাকে। বয়স হলে মাংসে কোলেস্টেরল এবং লিপিডের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় এবং প্রোটিনের পরিমাণ কমে যায়। অন্য দিকে স্ত্রী খরগোশের মাংসে লিপিড, ফ্যাট এবং কোলস্টেরল এর পরিমাণ বেশি থাকে।
খরগোশ পালনের সুবিধা
১. খরগোশ দ্রুত বর্ধনশীল প্রাণী। এদের খাদ্য দক্ষতা অপেক্ষাকৃত ভাল।
২. এক মাস পরপর এক সাথে ২-৮ টি বাচ্চা প্রসব করে।
৩. অল্প জায়গায় ও স্বল্প খাদ্যে পারিবারিকভাবে পালন করা যায়। অল্প খরচে অধিক উৎপাদন সম্ভব।
৪. খরগোশের মাংস অধিক পুষ্টি গুণসম্পনড়ব। সব ধর্মের মানুষই এর মাংস খেতে পারে।
৫. মাংস উৎপাদনে পোল্ট্রির পরেই খরগোশের স্থান।
৬. রানড়বা ঘরের উচ্ছিষ্টাংশ, বাড়ীর পাশের ঘাস ও লতা-পাতা খেয়ে এদের পালন করা সম্ভব।
৭. পারিবারিক শ্রমের সফল প্রয়োগ করা সম্ভব।
খরগোশ প্রতিপালনের পদ্ধতি
বাড়ীর আঙ্গিনা বা বারান্দায় অল্প জায়গায় অথবা বাড়ীর ছাদে অল্প বিনিয়োগ করে ছোট আকারের শেড তৈরি করে খরগোশ প্রতিপালন করা যায়।
দুইটি পদ্ধতিতে খরগোশ প্রতিপালন করা যায়ঃ
১) গভীর লিটার পদ্ধতি -
এই পদ্ধতিটি কম সংখ্যক খরগোশ পালনের জন্য উপযোগী। মেঝেতে মাটি খুঁড়ে গর্ত বানানো বন্ধ করার জন্য মেঝে কংক্রিটের হওয়া উচিত। মেঝের উপর ৪-৫ ইঞ্চি পুরু করে তুষ, ধানের খড় অথবা কাঠের ছিলকা ইত্যাদি ছড়িয়ে দিতে হবে। এই পদ্ধতিতে এক সাথে ৩০টার বেশি খরগোশ প্রতিপালন করা ঠিক নয়। পুরুষ খরগোশ আলাদা ঘরে রাখা উচিত। অবশ্য এভাবে প্রতিপালন করলে খরগোশ সহজে রোগাক্রান্ত হতে পারে। তাছাড়া খরগোশকে সামলানোও খুব অসুবিধা হয়।
আমাদের দেশে সাধারণত পরিবহনযোগ্য নেটের খাঁচা বা কাঠের বাক্স খরগোশ প্রতিপালনের জন্য ব্যবহার করা হয় যা খামারীরা দিনের বেলায় ঘরের বাইরে এবং রাতে ঘরের ভিতরে আনতে পারে। এক্ষেত্রে কোনো কোনা এলাকাতে পুরুষ এবং স্ত্রী খরগোশ একত্রে রাখা হয় কিন্তু বাচ্চা দেবার পর বাচ্চাসহ স্ত্রী খরগোশকে আলাদা করে ফেলা হয়। আবার কোনো কোনো এলাকায় স্ত্রী এবং পুরুষ খরগোশকে সবসময় আলাদা রাখা হয়। কেবলমাত্র প্রজননের সময় পুরুষ খরগোশকে স্ত্রী খরগোশের নিকট দেয়া হয়।
২) খাঁচা পদ্ধতি -
বাণিজ্যিকভাবে খরগোশ প্রতিপালনের জন্য লোহার পাত দিয়ে তৈরি ৩-৪ তাকবিশিষ্ট খাঁচা অধিক উপযোগী। প্রতিটি তাকে খরগোশের জন্য প্রয়োজনীয় জায়গা রেখে খোপ তৈরি করতে হবে।
খাঁচাতে খরগোশের জন্য প্রয়োজনীয় জায়গা -
ক) পূর্ণবয়স্ক পুরুষ খরগোশের জন্য ৪ বর্গফুট
খ) পূর্ণবয়স্ক মা খরগোশের জন্য ৬ বর্গফুট (প্রসূতি ঘর সহ)
গ) বাচ্চা খরগোশের জন্য ১.৫ বর্গফুট
পূর্ণবয়স্ক খরগোশের খাঁচা ১.৫ ফুট লম্বা, ১.৫ ফুট চওড়া এবং ১.৫ উঁচু হওয়া উচিত। এতে বাড়ন্ত দুইটি খরগোশ প্রতিপালন করা যাবে।
বড় আকারের খরগোশের জন্য ৩ ফুট লম্বা, ১.৫ ফুট চওড়া এবং ১.৫ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট খাঁচা উপযোগী। ২০ ফুট লম্বা, ১৩ ফুট প্রস্থ ও ১০ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট বাঁশের বা পাকা ঘরে প্রায় ১৫০-২০০টি খরগোশ খাঁচায় লালন পালন করা যায়।
খাদ্য ব্যবস্থাপনা
বয়স ও প্রজাতি ভেদে খরগোশের খাদ্য গ্রহণ ও পুষ্টির প্রয়োজনীয়তা ভিন্ন হয়। একটি বয়স্ক খরগোশের খাদ্যে পুষ্টির জন্য ক্রুড প্রোটিন ১৭-১৮%, আঁশ ১৪%, খনিজ পদার্থ ৭% ও বিপাকীয় শক্তি ২৭০০ কিলোক্যালরী/ কেজি হওয়া প্রয়োজন।
খাদ্যে পরিমাণ
বয়স্ক খরগোশের জন্য প্রতিদিন ১৩০-১৪৫ গ্রাম, দুগ্ধবতী খরগোশের জন্য প্রতিদিন ২৫০-৩০০ গ্রাম ও বাড়ন্ত খরগোশের জন্য প্রতিদিন ৯০ গ্রাম খাদ্য সরবরাহ করতে হবে।
খাদ্যের ধরণ
সবুজ শাক-সবজিঃ ঋতু ভিত্তিক সবজি, পালং শাক, গাজর, মুলা, শশা, শাকের উচ্ছিষ্টাংশ, সবুজ ঘাস ইত্যাদি।
দানাদার খাদ্যঃ চাল, গম, ভুট্টা, তৈলবীজ ইত্যাদি। তবে, বাণিজ্যিকভাবে খরগোশ পালনের জন্য ব্রয়লার মুরগির জন্য প্রস্তুতকৃত খাদ্য খরগোশের রেশন হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে।
নিচের চিত্রে প্রাপ্ত বয়স্ক খরগোশের খাদ্য তালিকা দেয়া হল : -
অসুস্থ খরগোশের চোখ ফ্যাকাসে, কান খাড়া থাকে না, লোম শুষ্ক ও রুক্ষ দেখায়, খাদ্য ও পানি পানে অনীহা প্রকাশ করে, দৌড়াদৌড়ি কম করে, শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি প্রভৃতি লক্ষণ দেখা যায়।
খরগোশ পালনে আর্থিক লাভ
কিছু দানাদার খাবার এবং বাড়ীর আশেপাশের ঘাস, লতা-পাতা এবং রানড়বা ঘরের উচ্ছিষ্টাংশ প্রদান করে পারিবারিকভিত্তিতে ২০টি খরগোশ প্রতিপালন করে পারিবারিক পুষ্টির চাহিদা পূরণের সাথে সাথে মাসিক ৬০০০.০০ টাকা আয় করা সম্ভব যা অন্য কোনো ভাবে সম্ভব নয়।
এক কাঠা জায়গায় কমপক্ষে ১৩০টি খরগোশ পালন সম্ভব। সবুজ ঘাস, লতাপাতা, শাক-সবজি, ভাত খেতে এরা খুব পছন্দ করে। খুব সহজেই যে কেউ খরগোশ পালনকে পেশা হিসেবে বেছে নিতে পারেন। ছয় মাস বয়সী ১০০টি স্ত্রী খরগোশের সঙ্গে ছয় মাস বয়সী ২৫-৩০টি পুরুষ খরগোশের মিলনের ফলে আড়াই কি তিন মাসে ৫০০-৬০০টি বাচ্চা পাওয়া সম্ভব। একটি খরগোশ বছরে ৫ থেকে ৬ বার বাচ্চা দেয়। ছয় মাস বয়সী প্রতিটি খরগোশের মূল্য ৩০০-৪০০ টাকা (ঢাকার বাজার দরে)। খরগোশ বাচ্চা প্রদানের পর মাত্র ১২ ঘণ্টার মধ্যেই প্রসবকৃত বাচ্চাগুলো চলাফেরা করতে পারে। তবে বাচ্চাগুলোর দিকে খামারীর আধিক যত্নবান থাকতে হবে। বাচ্চা প্রসবের সময় এরা অবশ্য নিরাপদ আশয় খোঁজে। কারণ বেজি, নেড়ি কুকুড়, বিড়াল, সাপ এদের জাতশত্রু। এসব প্রাণী যাতে এদের ক্ষতি করতে না পারে সে ব্যাপারে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। প্রতিটি বাচ্চা এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে বিক্রির উপযোগী হয়। তখন এদের প্রতিটির মূল্য দাঁড়ায় ১২০ থেকে ১৪০ টাকা (ঢাকার বাজার দরে)। ঢাকাসহ দেশের প্রসিদ্ধ শহরগুলোতে খরগোশ কেনাবেচা হয়।
খরগোশের গোশত গ্রহণের ধর্মীয় ব্যাখ্যা
খরগোশের গোশত মুসলমানদের জন্য হালাল। বিখ্যাত ফিকাহ গ্রন্থ “হিদায়া”তে উল্লেখ করা হয়েছে, খরগোশের গোস্ত খাওয়াতে কোন অসুবিধা নেই। নবী করিম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সালাম তাঁর সামনে উপস্থাপিত খরগোশের ভুনা গোস্ত খেয়েছেন এবং তা খাওয়ার জন্য সাহাবায়ে কেরামকেও নির্দেশ দিয়েছেন। নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যেহেতু খরগোশের গোশত নিজে খেয়েছেন এবং পছন্দ করেছেন তাই খরগোশের গোশত খাওয়া খাছ সুন্নত হিসেবে গণ্য।
খরগোশের রোগ ও প্রতিকার
মিক্সোমাটোসিস (Myxomatosis)
এটি খরগোশের একটি প্রাণনাশক রোগ৷ আঙ্গোরা, ফ্লেমিস রাবিট, জ্যাক রাবিট ইত্যাদি প্রজাতির খরগোশের এই রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা তুলনামূলক ভাবে বেশী৷ এই ভাইরাস পক্স ভাইরাস শ্রেণীর অন্তর্ভূক্ত৷ রোগগ্রস্ত অবস্থায় খরগোশের প্রজনন ঘটালে মুখ, নাক, ঠোঁট, কান, চোখের পাতা ইত্যাদি অঙ্গে ইডেমা হয়৷ কান দেহ থেকে ঝুলে পড়তে পারে৷ কখনও কখনও শ্বাসকষ্ট হয়৷
চিকিত্সা-
এই রোগের জন্য নির্দিষ্ট কোন ঔষধ নেই৷ রোগের লক্ষণ অনুযায়ী চিকিত্সা করতে হয়৷ সেফালেক্সিন বা এনরোফ্লক্সাসিন জলের সাথে মিশিয়ে খরগোশকে খাওয়ানো যেতে পারে৷
প্রতিরোধ ব্যবস্থা-
অসুস্থ খরগোশকে মেরে ফেলে মাটিতে পুঁতে দিতে হবে৷
ফর্মালিন বা ৩ শতাংশ সোডিয়াম হাইড্রক্সাইড দিয়ে খরগোশের খামার জীবাণুমুক্ত করতে হবে৷
প্রতিষেধক টীকা পাওয়া গেলে খরগোশকে টীকা দিতে হবে৷
সালমোনেল্লেসিস (Salmonellosis)
সালমোনেল্লা টাইফিমুরিয়াম নামক ব্যাকটেরিয়া এই রোগের কারণ৷ এই রোগে খরগোশের দেহের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় ও পাতলা পায়খানা হয়৷ গর্ভবতী খরগোশের গর্ভপাত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে৷ এই রোগে খরগোশের মৃত্যুহার অনেক বেশী৷
চিকিত্সা-
এনরোফ্লক্সাসিন বা সেফালোক্সিন বা সিপ্রোফ্লক্সাসিন নামক আন্টিবায়োটিক খাওয়ালে ভাল ফল পাওয়া যায়৷
প্রতিরোধ ব্যবস্থা-
খরগোশের খামার পরিষ্কার রাখতে হবে৷
দুষিত জল বা খাদ্য সরবরাহ বন্ধ করতে হবে৷
মৃত খরগোশেকে পুড়িয়ে ফেলতে হবে৷
খরগোশের খামারটিকে ভালভাবে জীবাণুমুক্ত করতে হবে৷
পরজীবী ঘটিত রোগ (Parasitic diseases)
হেপাটিক কক্সিডিওসিস (Hepatic Coccidiosis) আইমেরিয়া স্টাইডি নামক পরজীবী এই রোগের কারণ৷ সাধারণত কম বয়স্ক খরগোশের এই রোগ হয়৷
চিকিত্সা-
সালফাকুইনক্সালিন ডেরিভেটিভ এই রোগের খুব ভাল ঔষধ৷ খাদ্যে শতকরা ০.০২৫ ভাগ হিসাবে ও পানীয় জলের শতকরা ০.০৪ ভাগ হিসাবে এই ঔষধ খরগোশটিকে খাওয়ালে খুব ভাল ফল পাওয়া যায়৷
ইন্টেসটিনাল কক্সিডিওসিস (Intestinal Coccidiosis)
আইমেরিয়া সিকিওলা, আইমেরিয়া ফ্লাভেসেনস, আইমেরিয়া ইন্টেসটিনালিস, আইমেরিয়া ইরেসিডুয়া, আইমেরিয়া ম্যাগনা, আইমেরিয়া মোডিয়া, আইমেরিয়া পারফোরানস, আইমেরিয় পিরিফর্মিস- এই আটটি প্রজাতির আইমেরিয়া ইন্টেসটিনাল কক্সিডিওসিসের কারণ৷
লক্ষণ-
এই রোগের প্রধান কয়েকটি লক্ষণ হল পাতলা পায়খানার সঙ্গে রক্ত আসবে, ক্ষুধামন্দাভাব, পেট ফুলে থাকবে এবং চকলেট রঙের মলত্যাগ করবে৷
প্রতিরোধ ব্যবস্থা-
খরগোশের খামার মিয়মিতভাবে জীবানুমুক্ত করতে হবে৷
খাবার ও জলের পাত্র পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে৷
খাদ্যে কক্সিডিওসিস রোধকারী ঔষধ মেশাতে হবে৷
চীনের, তাইওয়ানের খরগোশের খামার -
খরগোশের প্রক্রিয়াজাত গোশত -
১৭ ই আগস্ট, ২০১২ দুপুর ২:৫০
মুহম্মদ রেজাউর রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ।
২| ১৫ ই আগস্ট, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:০১
শিপু ভাই বলেছেন:
দারুন পোস্ট++++++++++
প্রিয়তে রাখলাম।
১৭ ই আগস্ট, ২০১২ দুপুর ২:৫৩
মুহম্মদ রেজাউর রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ।
৩| ১৫ ই আগস্ট, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:২৪
এরিস আফ্রোদিতি বলেছেন: এই খরগোশের পায়ের নখ কি বিড়ালের মত ? নাকি ছাগলের মত ?
২০ শে আগস্ট, ২০১২ দুপুর ১:০১
মুহম্মদ রেজাউর রহমান বলেছেন: আমি কম করে হলেও ৪/৫ জন মুফতী সাহেব এর সাথে পরামর্শ করেছি। তাদের মতামত হচ্ছে উভয় ধরণের খরগোশ খাওয়াই সুন্নত।
৪| ১৫ ই আগস্ট, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:৩৪
সাদা কলো বলেছেন: কাজে লাগবে। প্রিজারভ করে রাখলাম
৫| ১৫ ই আগস্ট, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:৩৫
গোলাম দস্তগীর লিসানি বলেছেন: প্লাস সহ প্রিয়তে।
এ ধরনের কাজের পোস্ট আরো আরো আরো চাই।
বিশেষ করে পরিবেশবান্ধব মুক্তপেশায় উসাহী করা তথ্য একত্র করছি।
তথ্য জানা থাকলে পোস্ট করতে থাকুন।
বাঙালির কেরাণী মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
ধন্যবাদ।
২০ শে আগস্ট, ২০১২ দুপুর ১:১৬
মুহম্মদ রেজাউর রহমান বলেছেন: চাকুরী করে একটা ছেলে কত টাকাই আর বেতন পায়। কিন্তু নিয়মমাফিক, বুদ্ধিমাত্তার সাথে খামার করতে পারলে চাকুরীর কয়েকগুন টাকা আয় করা সম্ভব।
তাছাড়া সাধারনত সৎ ভাবে চাকুরীর শেষ জীবনে ভাল ব্যালেন্স থাকে না, কিন্তু একজন খামারীর শেষ জীবনে শুধু খামারেরই পুজি থাকে কয়েক কোটি টাকা।
সবচেয়ে বড় কথা উৎপাদনমূখী খামার নিজের ও সন্তানদের। কিন্তু চাকুরী শুধুই নিজের। সন্তানদের নয়। খামার করা মানে সন্তানদের ভবিষ্যত তৈরীতে সহায়তা করা।
৬| ১৫ ই আগস্ট, ২০১২ রাত ১০:০৭
লালন রিটার্ন বলেছেন: কতদিন বাচে সেটাতো বললেন না
৭| ১৭ ই আগস্ট, ২০১২ রাত ৯:৩৩
Dubai Express বলেছেন: good
৮| ১৭ ই আগস্ট, ২০১২ রাত ৯:৪৩
েমা আশরাফুল আলম বলেছেন: ভালো পোস্ট, খরগোসের মাংস আসলেই ভালো স্বাদের, এখানে একটা কথা মনে রাখা দরকার, দুই ধরণের খরগোশ দেখা যায়, এক প্রকার হলো যাদের পায়ের খুর আছে (ছাগলের মত পা) এটা হালাল।
আর এক ধরণ হলো নখর ওয়ালা, এটা খাওয়া যাবে না।
২০ শে আগস্ট, ২০১২ দুপুর ১:০৩
মুহম্মদ রেজাউর রহমান বলেছেন: আমি কম করে হলেও ৪/৫ জন মুফতী সাহেব এর সাথে পরামর্শ করেছি। তাদের মতামত হচ্ছে উভয় ধরণের খরগোশ খাওয়াই সুন্নত।
৯| ১৭ ই আগস্ট, ২০১২ রাত ১১:০০
শাম।হাসান বলেছেন: আমি অনেক আগে থেকেই এমন খামার করার স্বপ্ন দেখছি।হতে পারে সেতা ছাগল, কোয়েল বা খরগোশের । একবার আমি আমার এক বন্ধু কে নিয়ে খরগোশ পালনের এক্তা উদ্যোগ নিয়েছিলাম,কিন্তু তার অসহযোগিতায় প্রজেক্ট টা দাড় করাতে পারিনি।
গ্রাজুয়েট লেভেলে এক্তা রিসার্চ করেছিলাম এই সব বিষয়ের উপর, তাই আমি কিছুটা জানি এগুলোর উপযোগিতা সম্পর্কে ।
আমাদের এক টুকরো (৫ কাঠা)জমি আছে, ঢাকার অনেক কাছে, গাজীপু্র চয়রাস্তার পাশে, ধান গবেষনার ঠিক পাশে যগিতলা গ্রামে।চাইলেই সেখানে প্রজেক্ট করা যায়। আমার আসলে ইচ্ছে আছে,সাধ্য খুব কম। ক্যাশ কাপিটাল নাই বললেই চলে, তাই একা শুরু করতে পারছিনা। তবে আপনারা কেউ আন্তরিক ভাবে চাইলে আমরা একসাথে এক্তা প্রজেক্ট করে ফেলতে পারি।
এমন প্রজেক্ট এ কেউ আগ্রহী আমার সাথে বিনা সঙ্কোচে যোগাযোগ করতে পারেন।
Email: [email protected]
Or cell no: 01819538747
১০| ২০ শে আগস্ট, ২০১২ দুপুর ১:৩০
েমা আশরাফুল আলম বলেছেন: আপনি আরেকটু খোজ নেন, আমি যেখানে খেয়েছি সে ভালো করেই জানে (ইসলামীক ফাউন্ডেশনের অ্যাসিস্টেন্ট ডাইরেক্টর)।
গর্তে বাস করে এমন প্রাণী হালাল নয়, নখর ওয়ালা খরগোশ গর্ত তৈরি করে বাসের জন্য।
২২ শে আগস্ট, ২০১২ রাত ১২:৫৯
মুহম্মদ রেজাউর রহমান বলেছেন: আপনার অনুরোধের প্রেক্ষিতে আমি কয়েকজন মুফতি সাহেবের কাছে রেফারেন্স চেয়েছিলাম। তারা সময় নিল বিধায় আপনাকে উত্তরটি দিতে দেরী হল।
একজন নামকরা মুফতি সাহেবের লিখিত বক্তব্য তুলে ধরলাম -
হাদীছ শরীফ-এর ছহীহ্ কিতাবে বর্ণিত রয়েছে যে, “হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে খরগোশের গোশত হাদিয়া দিলে তিনি তা গ্রহণ করেছেন, খেয়েছেন এবং খেতেও বলেছেন।”
এ বর্ণনা থেকে প্রমাণিত হয় যে, খরগোশের গোশত খাওয়া কেবল হালালই নয় বরং সুন্নতেরও অন্তর্ভুক্ত।
উল্লেখ্য, খরগোশের পা হরিণ বা গরু-ছাগলের মতো হোক কিংবা বিড়ালের মত হোক উভয় প্রকার পা বিশিষ্ট খরগোশই খাওয়া সম্পূর্ণ হালাল বলে ফতওয়া দেয়া হয়েছে।
আর এটা শুধু হানাফী মাযহাবেই নয় বরং হানাফী, শাফেয়ী, হাম্বলী, মালেকী প্রত্যেক মাযহাবেই হালাল বলে ফতওয়া দেয়া হয়েছে।
দলীলসমূহঃ ফতহুল বারী, মুনতাক্বা, নাইলুল আওতার, তালখীছ, শরহে মুসলিম লিন্ নববী, তুহ্ফাতুল আহ্ওয়াযী, বযলুল মাজহুদ, হেদায়া, শামী, তানবীরুল আবছার, দুররুল মুখতার, রদ্দুল মুহতার, আল কামিল ফিত্ তারীখ, হেদায়া, ফতওয়ায়ে আমীনিয়া।
আরেকজন সর্বজনমান্য মুফতী সাহেব লিখে পাঠিয়েছেন,
বিখ্যাত ফিকাহ গ্রন্থ “হিদায়া” তে উল্লেখ করা হয়েছে, খরগোশের গোস্ত খাওয়াতে কোন অসুবিধা নেই। নবী করিম ছালালাহু আলাইহি ওয়াসালাম তাঁর সামনে উপস্থাপিত খরগোশের ভুনা গোস্ত খেয়েছেন এবং তা খাওয়ার জন্য সাহাবায়ে কেরামকেও নির্দেশ দিয়েছেন। খরগোশ মুর্দাখোর ও হিংস্র জন্তুর অন্তর্ভুক্ত নয় (দুররুল মুখতার)। বিড়াল ও বকরীর ন্যায় কান বিশিষ্ট দুই প্রকার খরগোশের গোস্ত খাওয়া বৈধ (তালীফায়ে রাশিদিয়া-পৃষ্ঠা-৪৫০)।
বাইতুল মোকাররমের খতিব সাহেবের বক্তব্য,
হাদীস শরীফের ভাষ্য আনুযায়ী নখ দিয়ে চিরে ফেড়ে খায় এ ধরনের জন্তু খাওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। স্বভাবতই এসব জন্তুর পায়ে লম্বা নখ দেখা যায় এবং খাওয়ার কাজে এরা নখযুক্ত পা ব্যবহার করে থাকে। খরগোশ এ জাতীয় জন্তুর অন্তর্ভুক্ত নয়। এরা তৃণভোজী প্রাণী। বেঁচে থাকার প্রয়োজনে এরা গাছে ওঠে এবং মাটি খোঁড়ে। তাই বিড়াল পা হোক আর ছাগল পা হোক, খরগোশের মাংস খাওয়ায় কোনো বাধাবিপত্তিও নেই।
১১| ২২ শে আগস্ট, ২০১২ ভোর ৪:২৮
ঠানডুমিঞা বলেছেন: অনেক সুনদর লাগলো আপনার লিখা.....। দেখি শুরু করতে পারি কিনা....। কিভাবে শুরু করবো বুঝে উঠতে পারছি না....।
১২| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১২ দুপুর ১২:১৮
পারমানবিক বোমা বলেছেন: এত্ত চমৎকার টপিকের উপড় লেখার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ । চালিয়ে যান - আমরা আছি আপনার সাথে
১৩| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ সকাল ১১:৫৯
রাজা হাবিব বলেছেন: ভাই প্রথমে সালাম নেবেন? আমি ভারত থেকে।। এখানে এর সম্ভাবনা কিরকম জানাবেন.। আমার কোনো আইডিয়া নেই। কিন্তু আপনার পোস্ট পড়ে খুব আগ্রহ হল.।
১৪| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ১১:৪৭
না তুমি না আমি বলেছেন:
ভাইয়া, যদিও এই বিষয়ে কয়েকবার কথা হয়েছে তথাপি প্রশ্ন করছি। ছাগলপা মাতৃ দ্ম্পতি খরগোশ কোথায় কিনতে পাওয়া যাবে বলতে পারেন কি? ছাগল পা আর বিড়াল পা খরগোশের মধ্যে পার্থক্য হলোঃ
১. পাঃ ১টির পা বিড়ালের মত আর একটির পা ছাগলের মত
২. কানঃ ১টির কান বিড়ালের মত আর একটির কান ছাগলের মত
৩. মলঃ ১টির মল বিড়ালের মত আর একটির মল ছাগলের মত গুটি গুটি।
১৫| ০১ লা নভেম্বর, ২০১২ দুপুর ১২:৪৫
লালন রিটার্ন বলেছেন: "বাংলাদেশে বিভিনড়ব প্রজাতির খরগোশ পাওয়া যায়। তম্মধ্যে রয়েছে ডার্ক গ্রে (দেশী), ফক্স, ডাচ, নিউজিল্যান্ড লাল, নিউজিল্যান্ড সাদা, নিউজিল্যান্ড কালো, বেলজিয়াম সাদা এবং ছিনছিলা উল্লেখযোগ্য "
কোথায় পাওয়া যাবে?
১৬| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ১১:২৭
ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল জয় বলেছেন: প্রিয়তে রাখলাম।
১৭| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ১১:৩৩
অজানা এক আমি বলেছেন: কাজে লাগবে। প্রিজারভ করে রাখলাম
১৮| ১২ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ২:৩৪
মো.জাকারিয়া হাবিব বলেছেন: খরগোশ মাংসের বাজার নিয়ে কিছু বলেন ?
১৯| ২৩ শে আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৩:৪৩
আরিফ আহমেদ বলেছেন: খরগোশ পালন করার ইচ্ছা আছে কিন্তু ভাল জাতের বাচ্ছা কোথায় পাব?
২০| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৫:১৭
অনভিজ্ঞ বলেছেন: ছাগল পা খরগোশ কোথায় পাওয়া যাবে ?
©somewhere in net ltd.
১|
১৫ ই আগস্ট, ২০১২ বিকাল ৫:৪৩
আজমান আন্দালিব বলেছেন: মূল্যবান পোস্ট। সংরক্ষণে রাখলাম।