| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
রেহানা বেগম অফিসে খুব ব্যাস্ত সময় কাটাচ্ছে। সামনে ঈদ, তাই হিসেব নিকেশ করে কর্মচারীদের বেতন দিয়ে ছুটি দিতে হবে।। কাল আবার তারা স্বপরিবারে তিন দিনের জন্য সিলেট যাচ্ছে।
স্বামী-স্ত্রী দুজনেই খুব ব্যাস্ত মানুষ। একটা বায়িং হাউজ আছে তাদের। দুজন মিলেই সামলাচ্ছে। ব্যাস্ত থাকেন অনেক তাই পরিবার নিয়ে সচরাচর ঘুরার সময় হয় না। বেছে বেছে ঈদের ছুটি গুলো ভ্রমণে ব্যায় করেন। এবার ইচ্ছে ছিল ভুটানের, কিন্তু সব মিলিয়ে আর সময় হল না। তার উপর ভুটানের কোন ফ্লাইট খালি ছিল না । তাই এবার পালা গ্রান্ড সুলতানের। অনেক দিন থেকেই যেতে চাচ্ছিলেন সময় হচ্ছিল না। ভুটান মিস হওয়ায় সুযোগটা কাজে লাগালেন।
তাদের একমাত্র মেয়ে রুনু। স্ট্যান্ডার্ড ফাইবে একাডিমিয়ায় পড়ছে । অসম্ভব শান্ত একটি মেয়ে। বাসায় রুনু আর কাজের মেয়ে তসলিমা ছাড়া সচরাচর কেউ থাকে না। আগে রুনুর দাদু থাকত, কিন্তু বছর দুই হল তিনি মারা গেছেন।
রুনুর একটা ড্রইং খাতা আছে। মোটা মলাটের বাধাই করা। সেখানেই সে বেশির ভাগ সময় ব্যায় করে। বিশেষ করে আজ দুপুর থেকেই একটু বেশি সময় ব্যায় হচ্ছে। বিকেলে তসলিমা দুধ নিয়ে এসেছিল, খায়নি। পড়ার টেবিলের এক পাশে ঢাকনা দেয়া গ্লাসে দুধ রাখা আছে। কিন্তু আজ রুনু খাতাটা নিয়ে খুব ব্যাস্ত। তসলিমা অনেক বার ডাকাডাকি করে শেষে নিজের কাজ নিয়ে ব্যাস্ত হয়ে গেছে।
সন্ধ্যায় রুনুর স্যার আসল । ঈদের বন্ধের আগে শেষ ক্লাস। তসলিমা স্যারের বেতন সেই সাথে নাস্তা দিয়ে গেছে। স্যার রুনুকে কিছু ক্লাস ওয়ার্ক দিয়ে নাস্তা করছেন।
“স্যার?”
“বল।”
“May I show you something?”
“Of course, what?”
রুনুর স্যারের সাথে সচরাচর ইঙ্গরেজিতেই কথা বলে এ ব্যাপারে তার মায়ের কড়া আদেশ আছে।রুনু স্যারের সামনে থেকে উঠে গিয়ে ড্রইং খাতা নিয়ে আসল। তারপর পেজ খুলে দেখাল।
“Is it significant?”
“A little bit,কোথায় পেয়েছ?”
খাতার মাঝখানে লাল রং দিয়ে বাংলায় কিছু সংখ্যা লেখা, ১,১,২,৩,৫,৮।
“It’s fibonacci series”
“What does it mean?”
“Well, in mathematics there are so many series, it’s one of them. You see, if you add the number with it’s previous one, you get the next one. But where did you get it? ”
“I dreamt it.”
“What?”
“Yes sir, I dreamt it”
ভদ্রলোক ব্যাপারটাকে এতটা গুরুত্ব দিলেন না। বাচ্চা মানুষ কোথাও দেখে ফেলেছে, সেখান থেকেই মাথায় নিয়ে ঘুরছে। কিন্তু রুনু এটা নিয়ে অনেক চিন্তিত।
“এটা তেমন কিছু না রুনু।”
“I’ve dreamt it gradually three days. Every time I saw a paper written with these number in red colour.”
“It’s not a big thing sweetheart. It just a number. ঠিক আছে?”
রুনু হ্যাঁ সুচক মাথা নেড়ে চুপ করে পড়ায় মনযোগ দিল। কিন্তু স্যার দেখলেন যে আসলে তার খুব একটা মনযোগ নেই। তাই ভাবলেন আজ তাড়াতাড়ি ছুটি দিয়ে দেবেন।
স্যার চলে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরেই রেহানা তার স্বামীকে নিয়ে ঘরে ফিরলেন। সাথে ঈদের কিছু কেনাকাটা। রুনু কখনও মার্কেটে যায় না। ভীড়-ভাট্টা তার ভাল লাগে না। তার শপিঙের ভাগটা রেহানাকেই সামলাতে হয়।
রেহানা এসেই মেয়েকে নিয়ে বসলেন জামা গুলো দেখাতে। কিন্তু সেদিকে রুনুর মনযোগ খুব একটা নেই। তার মাথায় সংখ্যাগুলো ঘুরছে।
“কি হয়েছে মা? জামা পছন্দ হচ্ছে না?”
“নাহ আম্মু জামা অনেক সুন্দর।”
“তাহলে?”
“তুমি কি ফিবোনাচ্চি বোঝ?”
“না তো মা, টিচারকে জিজ্ঞেস করেছিলে?”
“স্যারইতো বলল। কিন্তু আমি ভাল করে বুঝতে পারছি না।”
“ও আচ্ছা। ঈদের ছুটি শেষ করে এসে স্যার থেকে বুঝে নিও। ঠিক আছে?”
“আচ্ছা আম্মু।”
সকাল সকাল রওনা হয়ে গেল ওরা। রুনু বসেছে সামনের বাম পাশের সিটে। বাবা ড্রাইভ করছে কারণ ড্রাইবার ছুটিতে আছে। মা তসলিমাকে নিয়ে পেছনে বসে আছে। আর ফোনে কার সাথে যেন কথা বলছে।
খুব সম্ভব ঈদের পরে কি কি করবে তার প্লানিং চলছে। রুনু এক মনে সিটের সাথে হেলান দিয়ে তাকিয়ে আছে সামনের দিকে। কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছে সে টের পায়নি।
হবিগঞ্জ পার হওয়ার পর চোখ খুলল রুনু,
“Good morning”
দেরী করে ঘুম থেকে উঠলে বাবা সব সময় এটা বলেন। রুনু কিছু না বলে হাসি মুখে বাবার দিকে তাকাল। এই হাসির দুটো কারণ, এক সে স্বপ্নে কিছুই দেখেনি, ঘুমটা ভাল হয়েছে। আর দুই হচ্ছে তার আসে পাসের দৃশ্য খুব ভাল লাগছে।
“মা কিছু খাবে? ক্ষিদে পেয়েছে?”
পেছন থেকে রেহানা বেগম ডাকলেন রুনুকে। রুনু কিছু না বলে মাথা ঝাকাল, বোঝাল তার ক্ষিদে পেয়ছে। রেহানা বেগম টিফিনের বক্স থেকে বার্গার বের করলেন। এটা বাসায় বানানো। তারপর সেটা একটা ওয়ান টাইম প্লেটে নিয়ে মেয়ের হাতে দিলেন।
রুনু সামনে দিকে দেখতে দেখতেই বার্গারে কামড় বসাচ্ছিল। মিউজিক প্লেয়ারে তখন একটা ইংরেজি গান চলছে। এই গানটা রুনুর খুব পছন্দের, রুনুর বাবারও পছন্দের। SYML এর “Where is my love”।
হটাৎ রুনু খেয়াল করল একটা ট্রাক আসছে রাস্তার বিপরীত দিক থেকে। গাড়িটা খুব ডান-বাম করছিল। গাড়িটা খুব কাছে চলে এসেছে ওদের।
রুনুর বাবা, মা, তসলিমা কে কি করছে রুনুর তা খেয়াল নেই।
রুনু শুধু তাকিয়ে আছে ট্রাকের উপরে থাকা একটা নেম প্লেটের দিকে। সেখানে একটা সাদা বোর্ডে লাল রঙে লেখা, “১১২৩৫৮”।
৩০ শে মার্চ, ২০১৮ দুপুর ২:২২
মুহাম্মদ মাহিন বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই। চেষ্টা করি নিয়মিত হওয়ার। কিন্তু লেখালেখির ব্যাপারে আমি একটু অলস তো।তবুও চেষ্টা করব।
©somewhere in net ltd.
১|
২৭ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ১০:০৭
মো: নিজাম উদ্দিন মন্ডল বলেছেন: ভাল লাগল।
কেন জানি আপনার নোটিফিকেশন পাচ্ছি না?
প্রথম পাতায় লিখতে চাইলে নিয়মিত লিখুন, আর ব্লগে থাকুন।