নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মাঝে মাঝে চাই কেউ আমার কথা শুনুক। এইতো।

মুহাম্মদ মাহিন

মুহাম্মদ মাহিন › বিস্তারিত পোস্টঃ

খোলা চিঠি-২

৩০ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ১১:২৮

প্রিয় চারু,

সেই মধ্য রাতে তুমি বিদায় নিলে। গুনে গুনে রাত দুটো বেজে তিরিশ। বাস্তবতার কড়াঘাতে পিষ্ট হতে চাইনি বলেই রাস্তা ভাগ হয়েছে আমাদের। কিন্তু আমার যে এখনও অনেক কিছুই বাকি তোমার সাথে।
প্রতি জোছনায় আমরা অফিস ছুটি নিয়ে লঞ্চ ভ্রমণে যাব। তুমি কি জানো, লঞ্ছের জোছনার স্বাদ অন্যরকম? ডেকে দাঁড়িয়ে মাঝ নদী থেকে পুর্ণিমা দেখার চেয়ে বড় সুখ আর কোথাও নেই। সেই সুখটা আমি তোমার সাথেই তো কাটাতে চাইলাম।
কটকা সি বিচের ঠান্ডা জ্বলে দুজন খালি পায়ে হেটে বেড়াব। পেছন থেকে হীম শীতল হাওয়া বয়ে এলে তুমি চাদর ভাল করে মুড়িয়ে ধরবে। আর সেই ফাকে আমি মুঠো করে নোনা পানি তোমার গাঁয়ে মারব। এই জলকেলী তো আর খেলা হল না চারু।
রাতে পশুর নদীতে যখন লঞ্ছটা থেমে থাকবে। নিস্তব্দ চারপাশ। শুধু নাম না জানা পাখির ডাক। মাথার উপর পুর্ণিমা। পায়ের নিচে হালকা ঢেউয়ে পানিগুলো লঞ্ছের গাঁয়ে আছড়ে পড়ার শব্দ। তুমি লঞ্ছের ঠিক সামনে বসে দূর অন্ধকারে তাকিয়ে থাকবে। কিন্তু আমি তাকিয়ে থাকব তোমার দিকে। ভরা জোছনায় তোমার ফর্সা মুখের একপাশ থেকে যাবে আধারে। আরেক পাশের দিকে তাকিয়ে আমি মনে মনে বার বার সৃষ্টিকর্তার শুকরিয়া আদায় করব চারু। আমি তো তোমার সেই রূপ দেখতে পেলাম না চারু।
কোন এক গ্রীষ্মকালীন অবকাশে চলে যাব স্পেন। প্রখর রোদে স্পেন ঘুরে বেড়াব। টমেটো ফ্যাস্টিবেল এ তোমার গাঁয়ে টমেটো মারব ইচ্ছে মত। কিংবা ছাদ খোলা একটা ভক্স ওয়াগণ নিয়ে আমরা ঘুরে বেড়াব মাদ্রিদ, বার্সালোনা।
ধর সেটা দিয়েই আমাদের ইয়োরোপ ট্যুর শুরু হল। তারপর তুর্কি, হাঙ্গেরী, গ্রীস, ইতালী যতদুর পারা যায়। তবে শেষ হবে প্যারিস দিয়ে।আইফেল টাওয়ারের উপর উঠে তোমার সাথে এক কাপ কড়া লিকারের রং চা খাওয়ার আমার খুব ইচ্ছা।
আর মাঝে ভেনিসে ভাসমান শহরে নৌকা দিয়ে ঘুরে বেড়াব দুজনের হাত ধরে। সেখানে একটা ক্যন্ডেল লাইট ডিনার সেরে ফেলা যেত চুপিসারে। কিন্তু আমি তো তোমাকে পেলাম না সেই দিনগুলোর জন্য চারু।
যে রাতে তুমি রাগ করে ভাত না খেয়ে ঘুমিয়ে পড়বে, সেই রাতে হুট করে তোমাকে জাগিয়ে তুলে চলে যাব পুরাণ ঢাকায় শাহী নান্নায়। খাসির কাচ্চি(অবশ্যই আলু সহ), বোরহানী, চাটনী দিয়ে না খেলে তোমার রাগ ভাঙবে না। কিন্তু সেই রাগ ভাঙানোর রাতটা তো আমি পেলাম না চারু।
কোন এক শীতের সকালে খুব ভোরে উঠে চলে আসব ৩০০ ফিট বালু ব্রিজ। একেবারে তাজা খেজুরের রস, ভাপা পিঠা দিয়ে আমাদের সেদিনের নাস্তাটা হবে। সেই ভোরটার জন্য আমার যে তোমাকে লাগবে চারু।
ধর হুট করে বিকেল বেলায় তোমাকে অফিস থেকে বের করে নিয়ে চলে যাব শীতলক্ষ্যা নদীর পাড়ে। অফিসের কাজের হালকা অজুহাতে তুমি আহ্লাদী রাগ দেখাবে। আমি "সরি, সরি" বলতে বলতে চায়ে চুমুক দেব। আর আমাদের সামনে নদীর ওপাড় দিয়ে সুর্য বিদায় নেবে। সেই সুর্যাস্ত দেখার জন্যতো আমি তোমায় পেলাম না চারু।
আমি তোমাকে পেলাম না আর চারু।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.