![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বৈচিত্রময় এ পৃথিবীতে সত্য সুন্দর এবং সভ্যতার প্রতীক হয়ে সকলকে কাজ করতে হবে । ----মুহসিন
মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবনাদর্শ
-----------------------------------------------------------
রাসূলে করীম (সা.)-এর আগমনের প্রাক্কালটি ছিল জাহিলিয়াতের যুগ। তখন মানব জাতির অবস্থা ছিল ঘোর তমসাচ্ছন্ন। তারা তখন ধর্মের নামে চন্দ্র-সূর্য, নদ-নদী, পাহাড়-পর্বত, গাছ, পাথর প্রভৃতির পূজা করত। হাতে গড়া মাটি ও পাথরের মূর্তি বা দেব-দেবীর উপাসনা করত।
কবি ইকবালের ভাষায়- পূর্বে তোমার বিশ্বে ছিল দৃশ্য অতি কদাকার কেউ পূজিত গরু বানর, কেউ পূজিত গাছ পাথর। সাকার পূজায় নিত্য রত নিখিল বিশ্ব চরাচর কে পূজিত কে মানিত আকার বিহীন একেশ্বর। এই অধার্মিকতার প্রভাবে সে সমাজে বিরাজ করছিল সীমাহীন নৈরাজ্য। যুগ যুগ ধরে মানুষে মানুষে, গোত্রে গোত্রে চল্ত তাদের মধ্যে বিরামহীন সংঘর্ষ। আধ্যাত্মিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক প্রভৃতি েেত্র তারা এক দুর্যোগপূর্ণ মুহূর্ত অতিক্রম করছিল। শোষণ, নিপীড়ন, অত্যাচার, ব্যভিচার, মারা-মারি, দাঙ্গা-হাঙ্গামা, চুরি-ছিনতাই, খুন, রাহাজানি ইত্যাদি ছিল তাদের জন্য জন্য স্বাভাবিক এক ব্যাপার।
বর্বর যুগে নারী জাতির অবস্থা ছিল অত্যন্ত শোচনীয়। নারীরা ছিল পুরুষদের একমাত্র ভোগের বস্তু। তারা কন্যা সন্তুানদেরকে জীবন্ত পুঁুতে ফেলত। দাস-দাসীদের সাথে করত তারা কুকুর বিড়ালের চেয়েও নিকৃষ্টতম আচরণ। আর্ত মানবতার এ চরম দুর্দিনে ত্রাণকর্তা, মানবতার মুক্তির দূত হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর আগমন ঘটিয়ে মহান আল্লাহ বিশ্ববাসীকে দান করলেন একটি বড় নিয়ামত। আল্লাহ তায়ালা বলেন- *** অর্থাৎ, হে রাসূল! আমি আপনাকে বিশ্বের জন্য রহমত স্বরূপ পাঠিয়েছি।
রাসূল (সা.)-এর মাধ্যমে মানব জাতি পেয়েছে এমন এক আদর্শ যার দ্বারাই তৎকালীন মানব সমাজ মুক্তি পেয়েছিল তাদের এ চরম দুর্দিন থেকে। আল্লাহ তায়ালা বলেন- *** অর্থাৎ, নিশ্চয়ই তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসূলের মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ, মহানবী (সা.)-এর আদর্শ মানব জাতিকে দিয়েছে সমুজ্জ্বল আলোর সন্ধান। পথভ্রষ্ট লোকদের দিয়েছে আলোকিত এক পথের দিশা। দোযখের ইন্ধন তুল্য মহাপাপীকে করেছে পূণ্যময় জীবনের অধিকারী। তাঁর মাধ্যমেই মানব সমাজ শ্রেষ্ঠ ধর্ম ইসলাম লাভ করেছে, যে ইসলাম ইহকালের একমাত্র অনুস্মরণীয় ধর্ম এবং পরকালের মুক্তির একমাত্র উপায়।
যেমন ঃ আল্লাহ তায়ালা বলেন- *** অর্থাৎ, নিশ্চয় আল্লাহ তায়ালার মনোনীত ধর্ম হচ্ছে ইসলাম। সে শাশ্বত অমীয় বাণীর বার্তাবাহক রাসূল (সা.)-এর জীবন মাত্র তেইশ বছরেই শেষ হলেও জীবনাদর্শ কিন্তু অনেক ব্যাপক ও বিস্তর আলোচনার অধিকারী। যা লিখতে মহাসাগরের পানি কালিরূপে ব্যবহৃত হলে হয়তো বা তা লজ্জিতও হতে পারে।
মহাকবি মিল্টনের ভাষায়- "পৃথিবীর অথৈ পানি রাশির একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ থাকলেও ুদ্র একটি চামচ হাতে কেউ যদি এ পানি রাশির পরিমাপ করতে চায় তবে তা হবে একটি ব্যর্থ প্রচেষ্টা মাত্র।" তেমনি যদিও রাসূল (সা.) ৬৩ বৎসরের একটি সংপ্তি জীবন নিয়ে এসেছিলেন; কিন্তু এর গভীরতা, ব্যাপকতা ও বিস্তৃতি এতোই বেশী যে, সকল যুগের অগণন অসংখ্য মনের (মানুষ) এবং তাদের সকল শ্রেণী, গোষ্ঠীও রুচির প্রয়োজন মেটাতে মহানবীর (সা.) একা জীবনই যথেষ্ট। হুযুর (সা.)-এর জীবনের এক একটি মূহূর্ত ল ল জীবনের সমন্বয় তূল্য মানব ইতিহাসে তিনিই সর্বাধিক আলোচিত ব্যক্তিত্ব। তার বৈশিষ্ট্য সমূহ অত্যন্ত মহান ও উচ্চতর। স্বয়ং আল্লাহ তা'য়ালা বলেন- ******** অর্থাৎ আমি আপনার আলোচনায় দিগন্ত প্রসারিত করেছি। মহানবী (সা.) এর জীবনের প্রতিটি চিত্রকে যথাযথ ভাবে উপস্থাপন করা এুদ্র পরিসরে যদি সম্ভব নয়। তদুপরী নিম্নে তার জীবনী থেকে কিয়ৎ আলোচনা করছি। (১) তাওহীদ প্রতিষ্ঠায় মহানবী (সা.) ঃ- ৪০ বছর বয়সে ৬১০ খৃষ্টাব্দে আরবী (চন্দ্র) মাসের রমজান মাসে লাইলতুল ক্বদর রজনীতে মহানবী (সা.) নবুওয়াত লাভ করেছেন। নবুওয়াত লাভের পর মহানবী (সা.) জাতি গঠন ও সমাজ সংস্কার মূলক কাজের কর্মসূচী গ্রহণ করলেন। দ্বন্ধ মুখর আরব জাতিকে তিনি মৌলিক শাশ্বত এক বিশ্বাসের প্রতি আহবান জানালেন। লাইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ-(আল্লাহ ছাড়া কোন মা'বুদ নেই মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর রাসূল) তাওহীদের মহান এ সত্যকে যখন তিনি ঘোষণা করলেন তখন তাঁর সমপ্রদায়ই সর্বপ্রথম তাঁর শত্রু হয়ে দাঁড়ান। সারাা আরবের বিরুদ্ধে তিনি একাই দন্ডয়মান হয়েগেলেন। তার হাতে ছিল পবিত্র ক্বোরআন অন্তরে ছিল এক আল্লাহর প্রতি পূর্ণ ঈমান ও দৃঢ় বিশ্বাস। এ বিশ্বাসের বলেই তিনি শুধু আরবেই নয় বিভিন্ন দেশের রাজা-বাদশাহ সহ রোম ও পারস্য সম্রাটদ্বয়কে ও ইসলামের প্রতি আহবান জানান। জন ডেভেন পোর্ট বলেন-"মোহাম্মদ (সা.) বিশৃঙ্খল, নগ্ন, ুদ্র ও ুধার্ত সম্প্রদায়কে বিরাট একতাবদ্ধ একটি জাতিতে পরিণত করেছিলেন। ত্রিশ বছর পূর্ণ হতে না হতেই এ জাতি রোম সম্রাট কে পরাভূত পারস্যের শাহানশাহ কে সিংহাসন চু্যত, সিরিয়া মিষর ও ইরাক করতল গত এবং আটলান্টিক মহাসাগর থেকে কাস্পিয়ান সাগর পর্যন্ত ভূ-ভাগে বিজয়ের পতাকা উড্ডীন করতে সম হয়েছিলেন।" মোট কথা মানবতার মহান ধারক মহামানব হযরত মুহাম্মদ (সা.) জাহিলিয়াতের অন্ধকার বিদ্ধরণকারী একমাত্র তথা তাওহীদের বাণী দিয়েই উজ্জ্বল রোশনীতে সমগ্র বিশ্ব জগত আলোকিত করেছিলেন। তাইতো পৃথিবীতে আজ এমন কোন ভূমি নেই যেখানে মানবতার চিরন্তন মুক্তির বাণী-লাইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূল্লাহ উচ্চাতি হয়না।
সমাজ সংস্কারে মহানবী (সা.) ঃ আরবের জাহেলী ইতিহাসকে পাল্টে দিয়ে রাসূল (সা.) পৃথিবী উপহার দিয়েছেন এক সোনালী সমাজ। যে সমাজ ছিল বিভিন্ন অত্যাচার অনাচার, হিংসা-বিহদ্বষ, মারা-মারি, হানা-হানি ইত্যাদি কর্মকান্ডে লিপ্ত। যে সমাজের মানুষেল মাঝে ছিলনা ন্যায়নীতির বন্ধন, সে সমাজ কে সংশোধন করে মহানবী (সা.) তাদেরকে এক আর্দশ সমাজ রূপে গড়ে তুললেন। যেমন ঃ মানব বৈষম্যের অবসানে তথা মানুষে-মানুষে ভেদাভেদ দূর করে মানবতার ভিত্তিতেই সামাজিক বন্ধনকে সুদৃঢ় করেছেন। তিনি আভিজাত্যের গৌরব ও বংশ অহংকারের মূলে কুঠারাঘাত করেছেন। এ ভাবেই তিনি সমাজ থেকে উচু-নীচু, গোত্রীয় ভেদাভেদ ও সাদা-কালোর পার্থক্য দূরীভূত করেছেন। সৌহাদর্্য ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে মহানবী (সা.) পৃথিবীর মুসলমানদেরকে একই জাতিতে পরিণত করেছেন। গ্রীস, রোমান এবং আরব প্রভতি সমাজে দাস প্রথা প্রচলিত ছিল। যেথায় মানুষ হিসাবে তাদের কোন অধিকার ছিলনা। তখনই মহানবী (সা.) দাস-দাসীদের মানবিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছেন। আর ধীরে ধীরে এ বসুন্ধরা থেকে দাসত্ব প্রথাকে উঠিয়ে দেয়ার রূপরেখা তৈরী করতঃ তাদেরকে চির গোলামীর শিকল থেকে মুক্তি করলেন। মোটকথা সমাজের সর্বেেত্র ভেদাভেদকে সমতায় পরিণত করে মানব বৈষম্যের অবসান ঘটিয়েছেন।
নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় মহানবী (সা.) ঃ জাহিলিয়্যাতের যুগে নারী জাতির কোন মূল্য ছিলনা; বরং একজন নারীকে তার পরিবার, সমাজ ও বংশের জন্য কলঙ্কজনক, অপমানকর এবং অভিশাপ মনে করা হতো। কিন্তু বিশ্বের বুকে মহানবী (সা.)-র আদর্শই নারী জাতিকে শুধু ধর্ম, কর্ম, শিা, সামাজিক ও অর্থনৈতিক েেত্র নয় বরং তাদের সার্বিক জীবনে প্রতিষ্ঠা করে দিয়েছে সম্মান, মর্যাদা ও অধিকার। নারীদের মানবিক অধিকার প্রদানকারী মহানবী পিতার মর্যাদা সম্পর্কে মহানবী (সা.) এরশাদ করেছেন- "যে ব্যক্তির কন্যা সন্তান জন্মে আর সে তাকে জীবন্ত অবস্থায় প্রোথিত করে না, হেয় প্রতিপন্ন করে না এবং পুত্রদেরকে তার উপর প্রাধ্যন্যও দেয় না আল্লাহ তায়ালা তাকে জান্নাতের অধিকারী বানিয়ে দিবেন।" অন্যত্র বলেন- "যে ব্যক্তি তার কন্যা সন্তানকে আদর-সোহাগ ও যত্নসহ প্রতিপালন করবে সে বেহেশ্তের অধিকারী হয়ে যাবে।" নারী জাতির জন্য মাতৃত্বের যে মহান মর্যাদা রয়েছে তা একমাত্র রাসূল (সা.)-ই যথাযথ ভাবে প্রতিষ্ঠা করেছেন। মাতৃত্বের মর্যাদা বর্ণনায় মহানবী (সা.) ঘোষণা করেছেন- "মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেশ্ত।" অন্য একখানা হাদীসে সন্তানের উপর মায়ের অধিকার তার পিতার তুলনায় তিন গুণ বেশী হওয়ারও প্রমাণ পাওয়া যায়। স্ত্রী হিসেবে নারীর অধিকার দিতে গিয়ে মহানবী (সা.) স্বামীকে নির্দেশ দিয়ে বলেছেন- "তুমি যা খাবে তা তোমার স্ত্রীকে খেতে দিবে। তুমি যে রকম কাপড় পরবে সে রকম পোষাক পরতে দিবে, তার মুখে প্রহার করবে না। তার সাথে বিরক্তিকর ব্যবহার করবে না। তার দোষ খুঁজে বেড়াবে না। নারীর অর্থনৈতিক অধিকার রণের নিমিত্তেই মহানবী (সা.) পিতা, স্বামী, সন্তানাদি ও অন্যান্য নিকটাত্মীয়ের ত্যাজ্য সম্পদে নারীকে উত্তরাধিকারীও বানিয়েছেন। তার সম্পদে হস্তপে করার কারো অধিকার নেই। এমনকি স্বামীরও নেই। তদুপরিও তার ভরণ-পোষণের দায়িত্ব স্বামীর উপর ন্যস্ত করেছেন। এভাবে বিবাহ, তালাক, শিা, ব্যবসা-বাণিজ্য, লেনদেন প্রভৃতি েেত্র নারীকে তার যথার্থ অধিকার দিয়েছেন। কিন্তু বড়ই দুঃখের বিষয় যে, এই নব্য যুগে নারী স্বাধীনতার মহান স্লোগান ও দোহাই দিয়ে নারীদের সঙ্গে বিভিন্ন দিক হতে প্রতারণামূলক ব্যবহার করা হচ্ছে। জাহেলী যুগের অনুকরণে তথাকথিত বর্তমান আধুনিক সভ্যতার নামধারী কিছু নারী লোভী মৌলবাদি বুদ্ধিজীবিরা বিভিন্ন প্রকারে রসালো স্লোগানের মাধ্যমে নারী জাতিকে ঘর থেকে বাইরে এনে নারী স্বাধীনতার নামে যা চালিয়ে যাচ্ছে মূলত: নারী স্বাধীনতা নয় বরং যৌন ব্যাপকতা ও তা আবাধ করণের প্রচেষ্টা। আধুনিক সভ্যতা নারীকে যে স্বাধীনতা দিতে চায় বস্তুত একটি প্রতারণা ছাড়া আর কিছু নয়। প্রকৃতপ েএটা স্বাধীনতা নয় বরং এমন একটি প্রচেষ্টা যা প্রাচীন কালের দাসত্ব প্রথ%E
©somewhere in net ltd.