![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বাংলালিপির সংক্ষিপ্ত ইতিহাস : উপমহাদেশের প্রাচীনতম লিপি মহেঞ্জদরো এবং হরাপ্পায় প্রাপ্ত বিভিন্ন শিলমোহরের লিপি আর পরবর্তীকালে বহুল প্রচলিত ব্রাক্ষীলিপি নিয়ে প্রত্নতত্ত্ববিদ ও লিপিবিশারদদের চর্চার প্রভাবে বাঙালীর বাংলা লিপির উদ্ভব ও বিকাশ সম্পর্কে আগ্রহের সৃষ্টি হয় । মহেঞ্জদরো এবং হরাপ্পা সভ্যতা আবিষ্কারের পূর্বে উপমহাদেশের বর্ণমালা বা লিপিচিন্তা ব্যাপক হয়নি, কারন চতুর্থ খ্রিস্ট পূর্বের আগের কোনো নিদর্শনও পাওয়া যায়নি । মহেঞ্জদরো ও হরাপ্পায় প্রাপ্ত প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের মধ্যে একটি রৌপ্যখন্ডের আবিষ্কারক একজন বাঙালী, রায় বাহাদুর কে এন দীক্ষিত । ১৯২৬ সালের ১লা জানুয়ারি তিনি যে রৌপ্যখন্ডটি আবিষ্কার করেন (নং ডি কে ১৩৪৯) তার উভয় দিকে কুনিফর্ম বা কীলকাক্ষারের ছাপ রয়েছে । ভারতবর্ষে প্রাপ্ত এটিই প্রাচীনতম কীলকাক্ষারের উৎর্কীণ নিদর্শন । খ্রীস্টপূর্ব তৃতীয় থেকে পঞ্চম শতক পর্যন্ত ব্যবহৃত ডানদিক থেকে বামদিকে লিখিত খরোষ্টী লিপি ভারতবর্ষ ও মধ্য এশিয়ায় প্রচলিত ছিলো এবং টমাস, কার্নিংহাম, ব্যুলার প্রমুখ প্রত্নতাত্ত্বিকবিদের মতে সেমেটিক উপশাখা আরামায়িক বর্ণমালা থেকে খরোষ্টীর উদ্ভব । গান্ধারা ছাড়া ভারতবর্ষে ব্যাপকভাবে প্রচলিত ব্রাহ্মীলিপি থেকে উপমহাদেশ, সিংহল, বর্মা, তিব্বত, থাইল্যান্ড প্রভৃতি অঞ্চলের অধিকাংশ বর্ণমালার উৎপত্তি হয়েছে বলে মনে করা হয়। যাকে পাশ্চাত্য পন্ডিতেরা পালি বা আশোকলিপি নামেও অভিহিত করেছেন। ব্রাহ্মীলিপি কোনো বিদেশী লিপি থেকে উদ্ভুত নয় বরং বাংলা লিপিতত্ত্ববিদরা ব্রাহ্মীলিপি থেকে বাংলার উদ্ভব ও বির্বতন দেখিয়েছেন সকলেই । বাংলা লিপিবিশারদদের মধ্যে প্রথমে রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম স্মরণ করতে হয়, তাঁর "দ্যা অরজিন অব ব্যাঙ্গলী স্ক্রিপ্ট" গ্রন্থটি বাংলা লিপির প্রথম নির্ভরযোগ্য পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস ।তারমতে , আসাম ও উড়িষ্যার লিপি বাংলালিপি থেকেই উৎকীর্ণ । রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায় ২২টি বাংলা বর্ণমালার সম্পূর্ণ আকৃতি প্রথম দেখিয়েছিলেন যার নিদর্শন ১২শ শতকের লক্ষ্মণ সেনের আনুলিয়া দানপত্র ।প্রসঙ্গক্রমে এশিয়াটিক সোসাইটি অব বেঙ্গলে রক্ষিত ১০ম বা ১১শ শতকের দুইটি বাংলা হস্তলিখিত পান্ডুলিপি উল্লেখযোগ্য। হরপ্রসাদশাস্ত্রী এই পান্ডুলিপির লিপিকে বাংলা কুটিললিপি রুপে নির্দেশ করেছেন । যা হউক ইতিহাস আমার মূলবিষয় বস্তু নয় তাই সংক্ষিপ্ত করলাম ।
এখন আমি বাংলা লিপির ক্রমবিকাশের একটি চিত্র তুলে ধরছি :
বিভিন্ন বর্ণমালার সঙ্গে বাংলা বর্ণমালার তুলনা দেখানো হল :
এবার "স" এর অবস্থান ও প্রভাব নিয়ে কিছু আলোচনা করা যাক : [/su
স- একটি অঘোষ বর্ণ(যে বর্ণ গুলো উচ্চারণ করতে ফুসফুস থেকে অপেক্ষাকৃত কম বাতাস প্রবাহিত হয় এবং কম নাদিত হয়)
স-উষ্মবর্ণ (শিশ্ ধ্বনি) । ভাষার মধ্যে সাধু ভাষা, ধ্বনি তত্ত্বের মধ্যে সন্ধি,স্পর্শ ধ্বনি,সমাস, খাঁটি বাংলা উপসর্গের মধ্যে তিনটি ই "স"(স,সা,সু),পদের মধ্যে সকর্ম ক্রিয়া তাছাড়াও সকল নামের রাজা সর্বনাম পদ প্রভৃতি ।
বাংলা বর্ণমালার প্রথম ভাগ স্বরবর্ণে "স" এর উপস্থিতি প্রমান করে এর শক্তিশালী অবস্থান । আমাদের মৌলিক স্বরধ্বনি সাতটি। আর সাতকে "লাকি সেভেন" বলা হয় "স" কারনেই। একমাত্র স এর মধ্যেই পাবেন পৃথিবীর সকল বর্ণমালার সুধা ।
স এর আছে স্বামী, স্ত্রী, সন্তান নিয়ে পরিবার তথা সমাজ গঠনের ক্ষমতা অর্থাৎ "স" সামাজিক।এর আছে সাহস,সংগঠিত করার স্বক্ষমতা, সহজ-সরল, সুস্বাস্থ্য, সন্মান, স্নিগ্ধতা, স্নেহময়তা, স্পষ্টবাদিতা সুনীতি, সুনাম এবং সুদর্শন । আছে সাহিত্য, সংস্কৃতি, সুর , সংগীত এবং স্বাতন্ত্রতা।
শক্তির দিকথেকে বিবেচনা করলে : সূর্য, সুধাকর, সাগর, সৌদামিনী, স্রোত এবং শক্তির প্রতীক সিংহ।
রং এর কথা বিবেচনা করলে : সাদা যা কিনা সকল রং এর জনক আর সবুজ সকল স্নিগ্ধতার প্রতীক এবং উজ্জ্বলতার প্রতীক সোনালি ।
ধাতু হিসেবে স্বর্ণ অত্যন্ত মূল্যবান।
বংশের নাম: সৈয়দ(এই বংশের প্রতিষ্টাতা খিজির খান) সেন বংশ প্রভৃতি।
পদ: - সভাপতি,সচিব, সাংসদ, স্পিকার।
মন্ত্রী:- স্বরাষ্ট্র, তাছাড়াও সুপ্রিমকোর্ট, সংবিধান।
তাছাড়া সরকার, সম্রাট, সেনাপতি, সৈন্য, সিপাহী ছাড়া কি দেশের স্বাধীনতা, স্বার্বভৌমত্ব এবং সীমান্ত রক্ষা করা যাবে বলেন?
"স" নামের তৃপ্তি : সুখ, স্বপ্ন, স্বর্গ, সত্য এ চারটি শব্দের মধ্যে একটি দারুণ মিল হচ্ছে প্রতিটি শব্দই চরম আত্ম তৃপ্তির এবং এদের নিজস্ব স্বত্ত্বা এক ।
স্বপ্ন আসলে এমন এক ইন্দ্রজালিক অনুভতি যা মানুষকে বার বার টেনে নিয়ে যা্য় তার অভ্যন্তরে তৈরি প্রতিটি কক্ষে, যেখানে সাজানো রয়েছে তার ইচ্ছাচিন্তা জগতের সবটুকু সুখ । আর সুখ একটি আপেক্ষিক ব্যাপার এর জন্য দরকার মনের সঠিক রুপায়ন , সততা এবং স্বপ্ন । কিন্তু সততা একটি ভয়ঙ্কর সুন্দর শব্দ, যা কিনা স্বর্গের পথ দেখায় ।
স্বাগতম "সু" :- এর উপস্থিতিতে নীতি-সুনীতিতে, শাসন-সুশাসনে, স্বাস্থ্য-সুস্বাস্থ্যতে, শিক্ষা-সুশিক্ষা তে, সংবাদ-সুসংবাদে, শৃঙ্খলা-সুশৃঙ্খলা তে, গন্ধ-সুগন্ধতে, নাম -সুনামে পরিনত হয়। সুতরাং বলুন "সু" কে স্বাগতম না জানিয়ে উপায় আছে ।
"স" যখন আসে স্বরূপে :- স্বত্বাধিকারী, স্বাধীনতাবাদী, স্বদেশপ্রেমিক, স্বতঃস্ফূর্ত, স্বজাতিপ্রিয়, স্বকীয়তা, স্বচ্ছন্দচিত্তে এবং স্বতঃস্ফূর্তভাবে স্বেচ্ছাসেবক ।
স্বদেশকে সুজলা, সুফলা, শস্য-শ্যামলা এবং সুন্দরভাবে সাজাতে এবং সকল ক্ষমতার সমতা বিধান করতে " স" এর বিকল্প নেই ।
সুতরাং উপরিউক্ত আলোচনা থেকে বুঝা যাচ্ছে যে, বাংলা বর্ণমালায় "স" এর অবস্থান কত সুসংগঠিত এবং আমরা সৌভাগ্যবান যে বাংলা বর্ণমালায় "স" কে পেয়েছি।
অতএব "স" কে বাংলা বর্ণমালার রাজা ঘোষনা করা হউক ।
[বিশেষ দ্রষ্টব্য : এটিই ব্লগে আমার প্রথম লেখা , সুতরাং লেখায় প্রচুর ভুল থাকতে পারে যার জন্য অগ্রিম ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।]
২| ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১২:৫৭
বটের ফল বলেছেন: চমৎকার গুছিয়ে লেখা আপনার। তথ্যের বিন্যাস অসাধারন। লেখেন না কেন আর?
আমিও একমত-
"স" কে বাংলা বর্ণমালার রাজা ঘোষনা করা হউক ।
ভালো থাকুন বৃক্ষের বচন।
নতুন লেখার প্রত্যাশায়-
©somewhere in net ltd.
১|
২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১১:৫২
ভারসাম্য বলেছেন: সসাধারন!