নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিভৃতচারী

জ্ঞানের দৈন্য আমি পূরণ করি-অধ্যয়ন দিয়ে আর মেধার দৈন্য –অনুশীলন দিয়ে

খান ইখতিয়ার

আমার প্রিয় শিক্ষক কবিয়াল এস,এম, নুরুল আলম (মরহুম) বলতেন,'অখ্যাত থেক তবু কুখ্যাত হয়োনা'। আমি আমার এই সাধাসিধে জীবনে এই শিক্ষাটুকু পরম ভক্তির সাথে মেনে চলার চেষ্টা করি।

খান ইখতিয়ার › বিস্তারিত পোস্টঃ

তত্ত্বাবধায়ক কিংবা সর্বদলীয় সরকার নয়, প্রয়োজন স্বাধীন নির্বাচন কমিশন

২১ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:১৮

আমাদের দেশের প্রধান দলগুলোর নেতা-নেত্রীরা এক টেবিলে বসে খানা খেতে পারেন, কিন্তু এক টেবিলে বসে দেশের স্বার্থে কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারেননা। পরস্পরের প্রতি অনাস্থা, অবিশ্বাস এবং ক্ষমতা লিপ্সাই যে এর প্রধান কারণ তা বলাই বাহুল্য। যার কারণে দেখা যায়, একসময় যারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য আন্দোলন করে দেশ তোলপাড় করেন, তারাই আবার সংবিধানে সংশোধনী এনে সেই বহুল আলোচিত তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বাতিল করেন। আর এই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে একসময় অসাংবিধানিক বলে সে দাবী পাশ কাটিয়ে একতরফা নির্বাচন অনুষ্টানকারী দলই আবার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবীতে মায়াকান্না করে নির্বাচন বর্জনের হুমকি দেন। প্রধান দুই দলের বালখিল্যতা ও ক্ষমতা লিপ্সার কারণে এই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক আলোচিত, সমালোচিত ও হাস্যকর উপাদানে পরিণত হয়েছে। যদিও বা দুই প্রধান দলই সময়ে-অসময়ে এই ভিন্ন নামের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দাবীতে আন্দোলন করেছে বা করছে, তবুও বিগত তিন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নেতৃত্বে অনুষ্টিত নির্বাচন দুই দলের কাছে সমান গ্রহণযোগ্য হয়নি। সুক্ষ্ম কিংবা স্থুল কারচুঁপির অভিযোগ এনে পরাজিত দল সবসময় নির্বাচনের ফলাফল না মানার মানসিকতা দেখিয়েছে। স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশে শৈশবকালীন গণতন্ত্র দীর্ঘদিন সামরিক শাসনের যাঁতাকলে পিস্ট হয়েছে, যার কারণে পরস্পরের প্রতি আস্থা ও গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি আমাদের দেশে স্থায়ী রূপ নিতে পারেনি।

১৯৯৬ সালে আমরা এই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবীতে আওয়ামীলীগকে লাগাতার আন্দোলন করতে দেখেছি, আওয়ামীলীগের জোরালো আন্দোলনের কারণে একতরফা নির্বাচন করেও বিএনপির শেষরক্ষা হয়নি। পরে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবিধানে সংযোজন করে পুনরায় বিএনপি নির্বাচন দিতে বাধ্য হয়। এই নির্বাচনে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসে। ২০০১ সালের নির্বাচনে আবার ক্ষমতায় আসে বিএনপি। নিজেদের পছন্দের বিচারপতিকে পরবর্তী তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান করার মানসিকতা থেকে বিচারপতিদের অবসরের বয়স দুই বছর বৃদ্ধি করে বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে বিতর্কের মুখে ঠেলে দেয়, আবার উত্তাল হয় দেশ। ফলশ্রুতিতে অনেক নাটকের পর ক্ষমতায় আসে ডঃ ফখরুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার। অনেকের হিসেব নিকেশ পালটে যায়, বহু পরিবর্তন আসে প্রশাসনসহ সর্বত্র। অন্তরীণ করা হয় দুই প্রধান নেত্রীসহ অনেক রাজনীতিবিদকে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে রুজু করা হয় অনেক মামলা, সাজাও দেওয়া হয় অনেককে। টনক নড়ে রাজনীতিবিদদের। পরবর্তীতে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ সংবিধানে সংশোধনী এনে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে, যেই আওয়ামীলীগ এই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার জন্য দীর্ঘদিন আন্দোলন করেছে। এবার টনক নড়ে বিএনপির, ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের অধীনে নির্বাচন নিরপেক্ষ হবেনা। সুতরাং চাই তত্ত্বাবধায়ক সরকার। যাদের কাছে একসময় তত্ত্বাবধায়ক সরকার অসাংবিধানিক ছিল, তারাই আবার মাঠে নামল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবীতে। গাড়ি পুড়ছে, মানুষ পুড়ছে, লাগাতার হরতালে স্থবির দেশ।

ইত্যবসরে আওয়ামীলীগ খাড়া করল সর্বদলীয় সরকার তত্ত্ব। আবার কবে আওয়ামীলীগ এই তত্ত্বের বিরোধীতায় আন্দোলনে নামে সে প্রশ্ন ইতিহাসের কাছেই রইল।

সত্যিকার অর্থে পরস্পরের প্রতি অনাস্থা এবং পরাজয় মানতে না পারার মানসিকতাই এতসব তত্ত্ব ও স্ববিরোধীতা এবং ব্যর্থতার কারণ। নতুবা একটি স্বাধীন নির্বাচন কমিশনই পারে সুষ্টু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্টান করতে যদি সেই নির্বাচন কমিশন নির্বাচনকালে বিশেষ ক্ষমতার অধিকারী হয়। নির্বাচন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্টান ও প্রশাসন নির্বাচনকালে নির্বাচন কমিশনের অধীনে ও চাহিদানুযায়ী পরিচালিত হবে, যাতে সরকার কোনরূপ নির্বাচনে প্রভাব খাটাতে না পারে। নির্বাচন কমিশন যদি স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে তাহলে নির্বাচন কমিশনের অধীনেই সুষ্টু নির্বাচন সম্ভব।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.