![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
চট্টগ্রাম শহরের সবচেয়ে বড় আর ঐতিহ্যবাহী কলেজে পড়ার স্বপ্ন দেখে হৃদি।স্বপ্ন দেখে বড় হওয়ার।স্বপ্ন দেখে ডাক্তার হওয়ার।মিঃ কাম্রুজ্জামান আর মিসেস নাসরিন এর একমাত্র কন্যা হৃদি।তার বড় ও ছোট দুইটি ভাই রয়েছে।বাবা মায়ের একমাত্র কন্যা আর ভাইদের একমাত্র বোন হওয়ার কারনে সকলেই তাকে খুব আদর করে।শুধু এই কারনে নয়,তার লক্ষিপনা আর সরল মনের কারনে তার আত্মীয় স্বজনও তাকে খুব পছন্দ করে।অবশ্য তার এই সরলতার কারনে এই পর্যন্ত অনেকবার বিপদে পড়তে হয়েছে।এই নিয়ে অবশ্য তার বাবা মা অনেক চিন্তিত।।
লেখাপড়ায়ও খুব ভালো হৃদি।দেখতেও ভালো বলা চলে।মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে হওয়ায় তার মাঝে তেমন শখ আহ্লাদ নেই।তার ইচ্ছে পড়ালেখা করে বড় হয়ে মা বাবার মুখ উজ্জ্বল করার।।এ যুগের ৮-১০ টা মেয়ের মত তার অত চাহিদা নেই তার।নেই কোন ছেলে বন্ধু তবে অনেক মেয়ে বন্ধু আছে,যাদের কাছে হ্রিদি নামের লক্ষ্মী মেয়েটি অনেক জনপ্রিয়।।
সামনে হ্রিদির এসএসসি পরীক্ষা।পরীক্ষাতে ভালো ফলাফল ধরে রাখতে খুব মনযোগ দিয়ে পড়ছে।কোন কিছুতে সমস্যা হলে ২ বছর আগে এসএসসি পাশ করা বড় ভাইয়ের কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করছে সে।।
খুব ভালভাবে শেষ হল তার পরীক্ষা।এখন শুধু অপেক্ষা ফলাফলের।হ্রিদির এখন দিন কাটে বই পড়ে আর তার স্বপ্নের কথা ডায়েরিতে লিখে।অবশেষে এল তার ফলাফলের দিন।সেদিন সে খুব ভোরেই সে ঘুম হতে উঠে অপেক্ষা করতে লাগলো।দিনশেষে হ্রিদি সকলের প্রত্যাশামত ভালো ফলাফল করল।।
আজ হ্রিদির কলেজ জীবনের প্রথমদিন।গত কয়েক সপ্তাহ যেন কোনভাবেই যাচ্ছিল না।কলেজের নতুন বন্ধুদের সাথে কিভাবে পরিচিত হবে,কেমন হবে তার বন্ধুরা তাই নিয়ে ভাবছে হ্রিদি।খুব সকালেই সে চলে আসল তার স্বপ্নের কলেজে।কলেজে ঢুকার সময় কলেজের দারোয়ানকে হ্রিদি তার অডটোরিয়াম রুমের কথা জিজ্ঞেস করে নিলো।কলেজে ঢুকার পর হ্রিদি অডিটোরিয়াম রুম খুজতে লাগলো।খুজতে খুজতে কলেজের শেষদিকের ভবনটির কাছে গেল।সকাল সকাল হওয়াতে তখনও কলেজের নতুন ছাত্র ছাত্রী আর কলেজের সকল স্টাফ এসে পৌছায়নি।কয়েকটা ছেলেকে দেখা যাচ্ছে অডিটোরিয়ামের সামনে দাড়িয়ে কথা বলতে।অডিটোরিয়াম এখনও না খোলাতে হ্রিদি কলেজ মাঠের পাশের রাস্তা দিয়ে হাটছিল আর গুন গুন করে গান করছিল।।
কলেজ মাঠের শেসদিকে কাজ চলছিল কলেজের নতুন ভবনের শেষভাগের কাজ।ভবনের সামনের দিকটাতে কাজ করছিল মতিন মিয়া আর আরজু হোসেন।মতিন মিয়া একটু বয়স্ক আর আরজু হোসেনের বয়স ২৫-২৬ হবে।তাদের কাজের সময় সচরাচর কোন ছাত্র ছাত্রী এদিকটাতে আসে না।ফলে আরজু হোসেনের মনের হিংস্রতা প্রকাশও পায় না।আজ যখন হ্রিদি নামের সরল মনা মেয়েটি এদিকে আসছিল তখন থেকেই মনের হিংস্র পশুটি জাগ্রত হয়ে উঠল।মতিন মিয়ার বয়স ৩৫-৪০ হওয়াতে তার এইরকম পশু জাগ্রত হয় না তবে আজ আরজু হোসেনের পাল্লায় পড়ে তার মনের ভেতরের পশুটিও হিংস্র হয়ে উঠে।।
আর এদিকে সরল মনে হ্রিদি হেটে যাচ্ছে নির্মানাধীন ভবনটির কাছে।নির্মানাধীন হলেও ভবনটির নিচ তলা দোতলা সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে,আর নিচ তলাতে ক্লাস চলে।ক্লাসগুলো দেখার লোভ সামলাতে না পেরে হ্রিদি ক্লাসগুলোর জানালা দিয়ে দেখতে লাগল ক্লাসটি কেমন।আর ঠিক তখনি আরজু নামের শ্রমিকটি বলে উঠল ‘‘কি আফামনি কলেজে নতুন নাকি?’’হ্রিদি উত্তরে বলে ‘‘হুম!!আচ্ছা ভেতরে ঢুকে দেখা যাবে ক্লাসটি?’’
আরজু পাশে থাকা শ্রমিকের থাকার রুমটি দেখিয়ে বলে ‘‘আফা ঐ রুমের আবুল ভাই থেইকা চাবি নিয়া আসেন।’’(১)হ্রিদি সরল মনে ঐ রুমের কাছে গিয়ে দরজা খুলে ভেতরে উকি দিতেই পেছন থেকে মুখ চেপে ধরে মতিন মিয়া।এরপর দুই হিংস্র পশু হ্রিদিকে চেপে ধরে রুমে ঢুকিয়ে বেধে রাখে।।হ্রিদির কি হয়েছিল এরপর তা বলার দরকার নেই।।২ দিন পর শনিবারে কলেজের পিছন দিকটা থেকে হ্রিদির ক্ষত বিক্ষত লাশ পাওয়া যায়।।
প্রথমদিন কেউ জানতেও পারল না হ্রিদি কি তার স্বপ্নের কলেজে পা রাখতে পেরেছিল?দুইদিন পর লাশ পাওয়ার কিছুদিন পর বোঝা গেল হ্রিদি তার স্বপ্নের কলেজে পা রেখেই দুই পশুর শিকারে পরিনত হয়েছিল।।
(১)এখান থেকে গল্পটি অন্যভাবে বলা হবে আগামী এক পর্বে।।
©somewhere in net ltd.