নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মন্দ জিনিস দেখবো না , মন্দ কথা বলবো না মন্দ কিছু শুনবো না।

মুন্ন৮৮

আমি গুছিয়ে কিছুই লিখতে পারি না কিন্তু মনে অনেক গল্প জমা আছে, সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা তিনি যেন একদিনের জন্য হলেও আমাকে লেখার ক্ষমতা দান করেন।

মুন্ন৮৮ › বিস্তারিত পোস্টঃ

খাবারে বিষাক্ত রাসায়নিকের ব্যাবহারের কারন ও তার প্রতিকারের জন্য কিছু পরামর্শ

০৭ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ২:০১

রমজান ও রমজানের আগেও বেশ কিছুদিন ধরেই ব্যাবসায়ীদের রাসায়নিকের সাহায্যে ফল পাকানো ও সংরক্ষণের বিষয়টি ব্যাপক আলোচনায় ছিলো, যা বর্তমানে লঞ্চ ডুবি ও সড়ক দুর্ঘটনা বিষয়ের নিকট চাপা পড়েছে। আচ্ছা একবারো কি ভেবে দেখেছেন ব্যাবসায়ীরা কেন ফলমূল এবং পচনশীল খাদ্যদ্রব্যে রাসায়নিক ব্যাবহার করে? বাংলাদেশের আবহাওয়াতে যেকোনো পচনশীল দ্রব্য সর্বোচ্চ ২৪ ঘন্টা ভালো থাকে তাই ব্যাবসায়িক ক্ষতির হাত থেকে বাঁচতে তারা একরকম বাধ্য হয়েই রাসায়নিক দ্রব্য ব্যাবহার করে। তবে মানুষের মধ্যে যেমন ভালো খারাপ রয়েছে তেমনি রাসায়নিক দ্রব্যের মধ্যেও ভালো খারাপ রয়েছে, জাতি হিসাবে আমরা বাকপটু ও আড্ডাপ্রিয় হওয়ায় আমরা সবাই সমস্যা নিয়ে আলোচনা, সমালোচনা টকশো করতে বেশ পছন্দ করি। এগুলো করতে করতে ভুলেই যাই যে আমাদের আলোচনা সমালোচনা বা টকশোর চেয়ে সমস্যার সমাধান খুবইজরুরী। এতদিন হয়ে গেলেও এই সমস্যার কোন স্থায়ী সমাধান দেখলাম না। এমনকি এই ইন্টারনেটের যুগে ব্লগেও কোন তথ্যমূলক লেখা দেখলাম না। কিছু আরটিকেল পেলেও গৎবাঁধা একই ধরনের লেখা দেখে বুঝলাম সব একই জায়গা থেকে কপি করা। এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান বলতে আমি খারাপ রাসায়নিক আমদানী ও বিক্রয়ের সাথে জড়িতদের ধরপাকড় বা শাস্তির কথা বলছিনা, বলছি তাদেরকে খারাপ রাসায়নিক বাদ দিয়ে ভালো রাসায়নিক আমদানীতে বাধ্য করার কথা। এই ক্ষেত্রে মিডিয়া একটি বড় ভুমিকা নিতে পারে। ঠিক যেভাবে আমাদের মিডিয়া রাসায়নিক ব্যাবহারের কুফল বর্ণনা করে তৃণমূল পর্যায়ের জনসাধারণ ও ব্যাবসায়িদেরকে সচেতন করেছে একই ভাবে ভালো রাসায়নিকের গুনাগুন প্রচার করে ব্যাবসায়ীদেরকে সৎ হবার সুযোগ করে দিতে পারে এবং একইসাথে জনসাধারনের দুশ্চিন্তাও দূর করতে পারে। আমি নিচে ফল পাকানো ও সংরক্ষণের ক্ষেত্রে ব্যাবহ্রিত রাসায়নিক সমুহের ক্ষতিকারক দিক ও এই ক্ষতিকারক রাসায়নিকের বদলে বিকল্প কিছু রাসায়নিকের নাম দিচ্ছি যাদের কোন ক্ষতিকারক প্রভাব নেই।







ইথিলিনগ্যাসঃ
সাধারানত ফল পাকাতে ইথিলিন গ্যাস ব্যাবহার করা হয়। মাঝারী মাপের গুদাম ঘরের ফল পাকাতে গুদামের বাতাসে বাতাসে ১% ইথিলিন গ্যাসের উপস্থিতিই যথেষ্ট। অতিরিক্ত ইথিলিন মানুষের স্নায়ুতন্ত্রকে দুর্বল করে, চোখ, ত্বক, ফুসফুস ও মস্তিষ্কের ক্ষতিকরে। উন্নত দেশে ফল ব্যাবসায়ীরা ইথিলিন গ্যাস জেনারেটরের মাধ্যমে উৎপন্ন গ্যাস পরিমিত পরিমানে প্রয়োগ করে ফল পাকায়।



ইথোফেনঃ অনেক ব্যাবসায়ীরা আবার ইথোফেন নামক উদ্ভিদ হরমোন ব্যাবহার করে ফল পাকায়। ইথোফেন ইথানলেরই আরেকটি যৌগ। ২০১০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের FDCA ফল পাকানোর ক্ষেত্রে ইথোফেনের ব্যাবহার নিষিদ্ধ করেছে।



ক্যালসিয়াম কারবাইডঃ বাংলাদেশে অবশ্য ইথানলের চেয়ে ক্যালসিয়াম কার্বাইড দিয়েই ফল পাকানো হয় বেশি। ক্যালসিয়াম কার্বাইডের সাহায্যে কলাসহ প্রায় সকল ধরনের ফলই পাকানো যায়, তাই অসাধু মহলে এর বেশ জনপ্রিয়তাও রয়েছে। মানব শরিরের জন্য ক্যালসিয়াম কার্বাইড ইথিলিনের মতই ক্ষতিকারক। শিল্প গ্রেডের ক্যালসিয়াম কার্বাইডে বিষাক্ত আর্সেনিক ও ফসফরাস থাকে।







ফরমালিনঃ আমাদের দেশের ব্যাবসায়িগন অজ্ঞতাবশত সকল পচনশীল দ্রব্য সংরক্ষনে ফরমালিন ব্যাবহার করেন, কিন্তু ফরমালিন ফল সংরক্ষনে কোন কার্যকর ভুমিকা রাখেনা বা রাখতেও পারেনা।এটি মুলত ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাকনাশক, তাই মৃত মানুষ, ডাক্তারি ও জীববিজ্ঞান ল্যাবরেটরির নমুনা এবং প্যাথেলজিকাল টিস্যু সংরক্ষণে ব্যাবহার করা হয়। ফরমালডিহাইড বা ফরমালিনসকল প্রানীর জন্য বিষাক্ত। ক্যান্সার উৎপাদক হিসেবে এটি বৈজ্ঞানিকভাবে স্বীকৃত এছাড়াও অতিরিক্ত ফরমালডিহাইড শরীরে প্রবেশ করলে তীব্র পেট ব্যাথা, বমি, কোমা, কিডনি সমস্যা এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। পৃথিবীর প্রায় সকল দেশেই তাই ফরমালডিহাইড দিয়ে খাদ্যদ্রব্য সংরক্ষন নিষিদ্ধ।





বিথাইলিনঃ বর্তমানে অনেক দেশেই ফল ব্যাবসায়ীগন বিথাইলিন নামক রাসায়নিক ব্যাবহার করছে। এখন পর্যন্ত এর কোনো কুপ্রভাব আবিষ্কৃত হয়নি।







পটাশিয়াম সরবেট, সোডিয়াম সরবেট, ক্যালসিয়াম সরবেট, সোডিয়াম বেনজয়েট ও বেনজয়িক এসিডঃ এই সকল পদার্থই প্রিজারভেটিভ হিসেবে বেশ কার্যকর। এদের অনুমোদিত গ্রহণযোগ্য মাত্রা ০.১%। প্রাকৃতিকভাবে বেনজয়েট সমূহ আলু বোখারা, তাল, দারুচিনি, পাকা জলপাই এবং আপেলে পাওয়া যায়। বিভিন্ন প্রক্রিয়াজাত খাবার যেমন টমেটো সস, আচার, চিপস, চানাচুর ইত্যাদিতে নিদৃস্ট পরিমানে এদের ব্যাবহার অনেক আগে থেকেই চলে আসছে।



এখন আমাদের ব্যাবসায়ী ভাইয়েরা ইথিলিন, ক্যালসিয়াম কারবাইড বা ফরমালিনের মত বিষাক্ত রাসায়নিক আমদানী না করে বিথাইলিন, সোডিয়াম বেনজয়েট ও পটাসিয়াম সরবেট আমদানি করলে এবং ব্যাবসায়িদেরকে এসকল রাসায়নিক পদার্থের ব্যাবহার সম্পর্কে সচেতন করে তুললে আমি বিশ্বাস করি খাদ্যে বিষাক্ত রাসায়নিকের সমস্যার স্থায়ী সমাধান করা সম্ভব।



রেফারেন্সঃ মাধ্যমিক রসায়ন ২০৮ ও ২০৯ নং পৃষ্ঠা।







মোঃ আব্দুল জাব্বার মুন্না M. Sc. ( রসায়ন ) সরকারি তিতুমীর কলেজ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.