নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বাংলাদেশে বৈদ্যুতিক রিকশা পরিবহণে এক নতুন বিপ্লব এনেছে তা নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। পরিবেশবান্ধব এই যানবাহন লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। সংখ্যার বিবেচনায় এটি হয়তো প্রথম দিকের কর্মসংস্থানের মধ্যে পড়বে। কিন্তু, আজ তাদের ভবিষ্যৎ কিছুটা হলেও হুমকির মুখে, এবং এর দায়ভার কেন পূর্ববর্তী সরকারের অদূরদর্শী বিদ্যুৎ উৎপাদন নীতির ওপর দেওয়া যাবে না?
বিগত সরকারের আমলে, কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্লান্টের মতো পদ্ধতিতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা দ্রুত বাড়ানো হয়েছিল। কিন্তু এই স্বল্পমেয়াদী সমাধানে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার অভাব ছিল। কেননা যে হারে বাংলাদেশের মোট উৎপাদন গগনচুম্বী হচ্ছিল, আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে বিদ্যুতের ব্যবহার বা প্রয়োজনীয়তা সেভাবে হয়তো বাড়ছিল না। বাংলাদেশ বলতে শুধু জেলা শহরগুলোকে ভাবলে হবে না। কেননা শহরে মাত্র ৩২-৩৪ শতাংশ মানুষ বাস করেন। তাই প্রত্যাশিত হারে মাথাপিছু বিদ্যুৎ ব্যবহারের বৃদ্ধি না হওয়ায় অতিরিক্ত বিদ্যুৎ উৎপাদিত হতো বা হয়ে থাকতে পারে বলে ধরে নেওয়া যায়।
বিদ্যুৎ উৎপাদন এমন একটি প্রক্রিয়া যেখানে সরবরাহ লাইনে উৎপাদিত বিদ্যুৎ চলে আসা মানে হলো খরচ হয়ে যাওয়া। মানে হলো উৎপাদিত বিদ্যুৎ যদি আমরা ব্যবহার নাও করি, তবে তার অপচয় ঘটবে। বিদ্যুৎ সংরক্ষণের কোনো উপায় থাকে না, যদি না সেটা ব্যাটারিতে সংরক্ষিত হয়। আর তাই আমরা হুট করে অনেক বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করলাম বা করতে থাকলাম, সেই বিদ্যুতের পূর্ণাঙ্গ ব্যবহার নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। যে কারণে ব্যাটারি-চালিত রিকশার প্রতি জোর দেওয়া হতে পারে বলেও ধরে নেওয়া যেতে পারে। যেহেতু বাড়তি বিদ্যুৎ আছেই, তাই এ থেকে পরিত্রাণের তাৎক্ষণিক উপায় হয়ে যায় এই রিকশাগুলো। যদিও এই রিকশা প্রথমে উদ্ভাবিত হয়েছিল সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহার করে (এক্সপেরিমেন্টাল)।
কিন্তু অতিদ্রুত সময়ে এটি পরিকল্পিত কাঠামোর বাইরে থেকে সুবিধা পেলেও এর জন্য দীর্ঘমেয়াদী কোনো দিশা ছিল না।
আজ, কুইক রেন্টাল বন্ধ হওয়ার পর বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা কমে গেছে, এবং বৈদ্যুতিক রিকশাকে বিদ্যুৎ গ্রিডের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টিকারী হিসেবে দেখা হচ্ছে। এগুলো নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব, যা এক নির্মম বাস্তবতাকে সামনে আনতে পারে, তা হলো বিদ্যুৎ নীতির ভুল সিদ্ধান্তের কারণে যে খাত একসময় উপকৃত হয়েছিল, আজ সেই একই কারণে হুমকির মুখে পড়তে পারে।
যদিও বৈদ্যুতিক রিকশার দায় অস্বীকার করা যাবে না, তাদের ভবিষ্যৎ নীতিগত ব্যর্থতার সাথে জড়িত হওয়া উচিত নয়। এদের উত্থানই ছিল একটি ত্রুটিপূর্ণ শক্তি কৌশলের প্রত্যক্ষ ফল, যেখানে তাৎক্ষণিক বিদ্যুৎ উৎপাদনকে টেকসই উন্নয়নের চেয়ে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছিল। রিকশাজনিত যত সমস্যার কথা বলা হয়, সেখানে জ্বালানি সমস্যার কথাটি বলা হয় না। ঠিক এ কারণেই বিষয়টি আরও চিন্তার খোরাক যোগায়।
বৈদ্যুতিক রিকশার ওপর দোষারোপ করা মূল সমস্যাকে এড়িয়ে যায়: অপরিকল্পিত উন্নয়নের খরচ। এদের গল্প নীতিনির্ধারকদের জন্য একটি শিক্ষা - উন্নয়নের জন্য শুধু উৎপাদন নয়, প্রয়োজন দীর্ঘমেয়াদী দৃষ্টি।
২৫ শে নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:১০
মুনতাসির বলেছেন: যথার্থ বলেছেন। আমাদের কর্ম সংস্থান এর জন্য কোন বড়ো ক্ষেত্র তৈরি হইনি। বস্ত্র শিল্প একটা বড়ো খাত কিন্তু এরপর? আমরা রিকশাই চালাব। কি আর করা।
৩| ২৫ শে নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:০৯
ইফতেখার ভূইয়া বলেছেন: ঢাকা শহরে বিদ্যুৎ চালিত তিন চাকার এইসব যান অনিরাপদ। গ্রাম কিংবা মফস্বলে হয়তো চালানো যেতে পারে কিন্তু ঢাকার রাস্তায় এসব যানবাহন শুধু সমস্যার সৃষ্টি করবে। বিশেষ করে চালকের জীবন-ই বিপন্ন হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশী। চালকের কোন নিরাপদ বসার জায়গা নেই, কোন ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই, ট্রাফিক সিগন্যাল দেয়ার কোন ব্যবস্থা নেই, সিগন্যাল মানাতো আরো দূরের বিষয়। যার যেভাবে মন চাইছে সেভাবেই চালাচ্ছে। এভাবে একটা রাজধানী চলতে পারে না। এসব যানবাহন, আগামীতে বহু মানুষের প্রান বিপন্ন করবে।
২৫ শে নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:১৮
মুনতাসির বলেছেন: ভুক্ত ভুগি হলাম আমরা। বাংলাদেশ এ এখন ৬০ লাখ রিকশা আছে। ঢাকায় নাকি ১০ লাখ আছে। কিন্তু থাকার কথা ১ লাখ। এ সংখ্যা গুলোর কোনটা ঠিক আর ঠিক না আল্লাই জানেন। ঢাকা মনে হই একমাত্র রাজধানী যেখানে ট্রাফিক লাইট কাজ করে না। দুই একটা রাস্তা বাদে। কি আর করা । মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
৪| ২৫ শে নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:২২
ইফতেখার ভূইয়া বলেছেন: দু'দিন পরপর মানুষজন আন্দোলনের নামে রাস্তা-ঘাট বন্ধ করে সভা-সমাবেশ করলে সরকারের আরো কঠোর হওয়া উচিত। সবাই এখন মামা বাড়ির আবদার নিয়ে হাজির হচ্ছে। এগুলো দ্রুত বন্ধ করা প্রয়োজন।
©somewhere in net ltd.
১| ২৫ শে নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:০২
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: সারাবিশ্বে বৈদ্যুতিক চার্জের যানবাহন সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে। অটোরিকশা থাকার কারণে প্যাডেল রিকশার অতিরিক্ত ভাড়া থেকে মানুষ মুক্তি পেয়েছে। ছোট বেলায় যখন আমি স্কুলে যেতাম ভ্যানে করে তখন ১০/১২ জন নিয়ে ভ্যানমামার চালাতে অনেক কষ্ট হইতো। সময়ের সাথে নতুন নতুন অনেক কিছুই হবে। প্রধান সমস্যা হলো দেশের একটি বিরাট তরুণ অংশ বেকার। কাজ না পেয়ে এরা অটো চালাচ্ছে। আমাদের ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড কোন কাজে লাগাতে পারি নাই আমরা। ভবিষ্যতে আরো সমস্যা বাড়বে।