নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শব্দ আমার আশ্রয়, চিন্তা আমার পথ। ইতিহাস, সমাজ আর আত্মপরিচয়ের গভীরে ডুব দিই—সত্যের আলো ছুঁতে। কলমই আমার নিরব প্রতিবাদ, নীরব অভিব্যক্তি।

মুনতাসির রাসেল

আমি তোমাদের মাঝে খুজিয়া ফিরি আমার বিশ্বলোক; নরকে গেলেও হাসিয়া বলিব আমি তোমাদেরই লোক।

মুনতাসির রাসেল › বিস্তারিত পোস্টঃ

গাজার ট্র্যাজেডি ও মুসলিম বিশ্বের শিক্ষা: আবেগ নয়, প্রয়োজন আত্মসমালোচনা, জ্ঞানচর্চা ও কৌশলগত পরিকল্পনা

১৯ শে মার্চ, ২০২৫ রাত ৯:৩৮


গাজায় ইজরায়েলের সাম্প্রতিক বর্বরোচিত হামলায় একদিনে ৪০০-এরও বেশি নিরীহ মানুষ নিহত হয়েছে। নারী, শিশু, বৃদ্ধ—কেউই রক্ষা পাচ্ছে না। বিশ্ববাসী শোক প্রকাশ করছে, মুসলিম বিশ্ব ক্ষোভে ফেটে পড়ছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিবাদের ঝড় উঠছে, দোয়া করা হচ্ছে, বিক্ষোভ মিছিল হচ্ছে—কিন্তু বাস্তবতা হলো, ইজরায়েল তাদের আগ্রাসন থামাচ্ছে না, বরং আরও নিষ্ঠুরভাবে চালিয়ে যাচ্ছে।
প্রশ্ন হলো, কেন বারবার মুসলিম বিশ্ব নির্যাতিত হচ্ছে? কেন তারা নিজেদের রক্ষা করতে পারছে না? শুধুমাত্র পশ্চিমা বিশ্বের ষড়যন্ত্রকে দায়ী করলে কি আসল কারণ খুঁজে পাওয়া যাবে? নাকি নিজেদের অভ্যন্তরীণ দুর্বলতাও এর জন্য সমানভাবে দায়ী?
এই লেখায় আমরা দেখব, কীভাবে মুসলিম বিশ্বের আত্মসমালোচনা, জ্ঞানচর্চা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে পিছিয়ে থাকা, রাজনৈতিক দুর্বলতা ও কূটনৈতিক ব্যর্থতা তাদের বারবার পরাজিত করছে।

১. আবেগের রাজনীতি বনাম কৌশলগত বাস্তবতা
প্রতিবার ফিলিস্তিনে গণহত্যা হলে মুসলিম বিশ্বে আবেগের স্রোত বয়ে যায়। মানুষ বিক্ষোভ করে, স্লোগান দেয়, ফেসবুক-টুইটারে প্রতিবাদ জানায়, অর্থ সাহায্য পাঠায়, দোয়া করে—কিন্তু কয়েকদিন পরই সেই উন্মাদনা হারিয়ে যায়। অন্যদিকে ইজ*রায়েল দীর্ঘমেয়াদে পরিকল্পনা করে তাদের সামরিক, অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক শক্তি বৃদ্ধি করে চলেছে।
(ক) আবেগ কোনো পরিবর্তন আনতে পারে না
একটি জাতি কেবলমাত্র আবেগ দিয়ে দীর্ঘমেয়াদে টিকে থাকতে পারে না। প্রয়োজন বাস্তব কৌশল ও সুপরিকল্পিত পদক্ষেপ। মুসলিমরা ফিলিস্তিনের জন্য কাঁদছে, কিন্তু তাদের চোখে দীর্ঘমেয়াদী কৌশলের অভাব রয়েছে। ইজ*রায়েল একদিনে এত শক্তিশালী হয়নি, তারা বছরের পর বছর ধরে সামরিক প্রযুক্তি, অর্থনীতি ও কূটনীতি শক্তিশালী করেছে। মুসলিম বিশ্ব কী করেছে? শুধু প্রতিবাদ আর দোয়া!
(খ) পশ্চিমা বিশ্বের কৌশলগত আধিপত্য
পশ্চিমা বিশ্ব জানে যে মুসলিম দেশগুলো নিজেদের অভ্যন্তরীণ সংকটে জর্জরিত। তাদের ঐক্য নেই, প্রযুক্তিগত উৎকর্ষ নেই, সামরিক শক্তির ঘাটতি রয়েছে। ফলে তারা অনায়াসে মুসলিমদের শোষণ করে যাচ্ছে।
(গ) মুসলিম দেশগুলোর নতজানু পররাষ্ট্রনীতি
অনেক মুসলিম দেশের সরকার পশ্চিমা বিশ্বের প্রভাবাধীন, ফলে তারা কার্যকরভাবে ফিলিস্তিনের জন্য কিছু করতে পারছে না। তারা নিজেদের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক স্বার্থ রক্ষায় ব্যস্ত।
২. জ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে মুসলিম বিশ্বের ব্যর্থতা
একটি জাতির শক্তি নির্ভর করে তার জ্ঞান, গবেষণা ও প্রযুক্তিগত উন্নতির উপর। ইতিহাস সাক্ষী, যখনই কোনো জাতি জ্ঞানে অগ্রসর হয়েছে, তখনই তারা বিশ্বনেতৃত্ব পেয়েছে। অথচ মুসলিম বিশ্ব এই ক্ষেত্রগুলোতে ভয়াবহভাবে পিছিয়ে পড়েছে।
(ক) মুসলিমদের সোনালি অতীত ও বর্তমান বিপরীতমুখী
এক সময় মুসলিমরা জ্ঞান-বিজ্ঞান, চিকিৎসা, গণিত, জ্যোতির্বিজ্ঞানসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে শীর্ষে ছিল। ইবনে সিনা, আল-খোয়ারিজমি, ইবনে রুশদ, আল-ফারাবির মতো বিজ্ঞানী ও দার্শনিকরা বিশ্ব সভ্যতায় বিপ্লব এনেছিলেন। কিন্তু বর্তমানে মুসলিম বিশ্ব এই ক্ষেত্রে ভয়াবহভাবে পিছিয়ে গেছে।
(খ) আধুনিক প্রযুক্তির অভাবে সামরিক দুর্বলতা
ইজ*রায়েলের মতো একটি ছোট্ট দেশ কীভাবে এত বড় মুসলিম বিশ্বের চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে? কারণ তারা আধুনিক সামরিক প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ করেছে। তারা নিজেদের অস্ত্র তৈরি করতে পারে, অথচ মুসলিম দেশগুলো অস্ত্রের জন্য পশ্চিমাদের উপর নির্ভরশীল।
(গ) শিক্ষা ও গবেষণায় পিছিয়ে থাকা
বিশ্বে শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে মুসলিম দেশগুলোর নাম খুঁজে পাওয়া কঠিন।
গবেষণা ও উদ্ভাবনে মুসলিম দেশগুলো একেবারেই পিছিয়ে।
পশ্চিমারা যেখানে নতুন জ্ঞান সৃষ্টি করছে, মুসলিমরা সেখানে পুরনো বই মুখস্ত করাতেই ব্যস্ত।
৩. ধর্মীয় সংকীর্ণতা ও বাস্তবতার সাথে ইসলামের সংযোগহীনতা
ইসলাম কেবল একটি ধর্ম নয়, এটি একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা। কিন্তু বর্তমান মুসলিম সমাজে ধর্মকে সংকীর্ণভাবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে।
(ক) বিজ্ঞান ও চিন্তার স্বাধীনতার অবমূল্যায়ন
ইসলামের ইতিহাসে বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ছিল। কিন্তু বর্তমানে বিজ্ঞানকে উপেক্ষা করা হয়, এবং যুক্তিবাদী চিন্তাকে দমন করা হয়।
(খ) অন্ধবিশ্বাস ও যুক্তিহীন ব্যাখ্যা
মুসলিম সমাজে কুসংস্কার ও অন্ধবিশ্বাস ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।
বাস্তবসম্মত চিন্তাভাবনার পরিবর্তে অযৌক্তিক বিশ্বাসকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
৪. অভ্যন্তরীণ বিভক্তি ও রাজনৈতিক অস্থিরতা
মুসলিম বিশ্ব একদিকে নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্বে লিপ্ত, অন্যদিকে পশ্চিমারা তাদের বিভক্ত করে শাসন করছে।
(ক) মুসলিম দেশগুলোর পারস্পরিক শত্রুতা
মুসলিম দেশগুলো নিজেদের মধ্যে যুদ্ধ করছে, অথচ ইজ*রায়েল ও পশ্চিমারা একত্রিত হয়ে মুসলিম বিশ্বকে নিয়ন্ত্রণ করছে।
মুসলিমদের মধ্যে যদি ঐক্য থাকত, তাহলে তারা প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারত।
(খ) গণতন্ত্র ও সুশাসনের অভাব
মুসলিম বিশ্বে অধিকাংশ দেশেই সুশাসনের অভাব রয়েছে।
জনগণের মতামত দমিয়ে রাখা হয়, ফলে সমাজের উন্নয়ন ব্যাহত হয়।
৫. সমাধানের পথ: কী করা উচিত?
(ক) শিক্ষার বিপ্লব ঘটানো
আধুনিক বিজ্ঞান ও গবেষণায় বিনিয়োগ করতে হবে।
যুক্তিবাদী ও বিশ্লেষণধর্মী চিন্তাভাবনাকে উৎসাহিত করতে হবে।
(খ) অর্থনৈতিক ও সামরিক স্বনির্ভরতা অর্জন
অস্ত্র ও সামরিক প্রযুক্তিতে মুসলিম দেশগুলোকে আত্মনির্ভরশীল হতে হবে।
অর্থনৈতিকভাবে স্বাধীন হতে হলে উৎপাদন খাতকে শক্তিশালী করতে হবে।
(গ) কূটনৈতিক কৌশলগত পরিকল্পনা
মুসলিম দেশগুলোকে নিজেদের স্বার্থ রক্ষা করতে কূটনৈতিকভাবে শক্তিশালী হতে হবে।
পশ্চিমা বিশ্বের আধিপত্য মোকাবিলায় তাদের সঙ্গে বুদ্ধিমত্তার সাথে সম্পর্ক রাখতে হবে।

ফিলিস্তিনের জন্য কাঁদা ও দোয়া করা অবশ্যই প্রয়োজন, তবে সেটাই শেষ সমাধান নয়। সমাধান হলো—জ্ঞান, শিক্ষা, গবেষণা, কূটনীতি, অর্থনৈতিক ও সামরিক শক্তি বৃদ্ধি।
মুসলিমরা যদি নিজেদের শাসন, শিক্ষা, প্রযুক্তি ও সামরিক দিক থেকে শক্তিশালী করে, তাহলেই তারা ইজ*রায়েলের দখলদারিত্ব ও পশ্চিমা বিশ্বের আধিপত্য মোকাবিলা করতে পারবে। আবেগ নয়, প্রয়োজন সুপরিকল্পিত ও বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ। এই সত্য উপলব্ধি করলেই মুসলিমরা তাদের হারানো গৌরব ফিরে পেতে পারবে।

মন্তব্য ১১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে মার্চ, ২০২৫ রাত ৯:৪২

কামাল১৮ বলেছেন: একটা কিতাব থেকেই মুসলমানরা সকল শিক্ষা গ্রহন করে।এটাই তাদের প্রধান সমস্যা।

১৯ শে মার্চ, ২০২৫ রাত ৯:৪৮

মুনতাসির রাসেল বলেছেন: সেটাও পুরোপুরি এবং সঠিক উপায়ে করে কিনা সন্দেহ আছে।

২| ১৯ শে মার্চ, ২০২৫ রাত ১০:২১

জ্যাক স্মিথ বলেছেন: ভালো লিখেছেন কিন্তু এসব তো দীর্ঘ পরিক্রমার বিষয়, সবার আগে যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে।

সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে; ইজরাইল-ফিলিস্তিন যুদ্ধে দুপক্ষই ধর্মীয় ভাবধারায় উদ্বুদ্ধ হয়ে এই যুদ্ধে লিপ্ত যে কারণে এটা অনেক ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করেছে। সম্পূর্ণ বিপরীত ভাবধারায় বিশ্বাসী দুটি জাতি পাশিপাশি শ্বান্তিপূর্ণ বসবাস প্রায় অসম্ভব, ইতিহাসেও এই দুটি জাতির মধ্যে চরম বৈরীতা লক্ষ করা যায়।

৩| ২০ শে মার্চ, ২০২৫ দুপুর ১২:০৪

জ্যাক স্মিথ বলেছেন: এটা মূলত একটা ধর্মযুদ্ধ, নেতানিয়াহুকে এই যুদ্ধকে জাস্টিফাই করতে তোরাহ বা তাওরাত শরীফ থেকে বহু আয়াত পাঠ করতে দেখছি মিডিয়াতে, বহু সাংবাদিক'কেও এই কাজ করতে দেখেছি।

আমি স্পষ্ট প্রমাণ করে দিতে পারবো ইহুদীরা মূলত তাদের ধর্মগ্রন্থ থেকে উদ্বুদ্ধ হয়েই মুসলিমদের বিরুদ্ধে এই নিধন চালাচ্ছে কিন্তু আমার সে সময় নেই। তাদের ধর্মগ্রন্থ তোরাহ বা তাওরাত শরীফে মুসলিমদের অনেক নিচু চোখে দেখা হয়, মুসলিমদের তাদের ইমিডিয়েট শত্রু হিসেবে গণ্য করা হয়।

আবার তাওরাত শরীফ এবং বাইবেলের মধ্যেও বেশ কিছু বিষয়ে মিল রয়েছে, বাইবেল ইহুদিদের ভাই বলে সম্ভোধন করা হয়েছে, যে কারণে খ্রিষ্টান রাষ্ট্রগুলো সবসময় ইহুদিদের পক্ষেই থাকে।

অপর দিকে ইসলাম ধর্মে বিশেষ করে কুরআন শরীফে ইহুদিদের শত্রু বলে গণ্য করা হয়েছে কিন্তু তারপরেও মুসলিম রাষ্ট্রগুলো সব একজোট হয়ে কেন ইসরাইলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না তা আজও আমার বোধগম্য নয়।

২১ শে মার্চ, ২০২৫ সকাল ৮:৪১

মুনতাসির রাসেল বলেছেন: আপনার পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বেশ গুরুত্বপূর্ণ, তবে এখানে কয়েকটি বিষয় পরিষ্কার করা দরকার।

১. এই সংঘাত ধর্মীয় না, রাজনৈতিক ও ভূরাজনৈতিক
ইসরাইল-ফিলিস্তিন সংঘাতকে শুধুমাত্র ধর্মীয় লেন্সে দেখলে এর মূল কারণ ও প্রভাব বিশ্লেষণে সীমাবদ্ধতা আসে। যদিও নেতানিয়াহু বা কিছু ধর্মীয় ইহুদি গোষ্ঠী তাওরাত থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে এটিকে ধর্মীয়ভাবে বৈধ করার চেষ্টা করে, বাস্তবতা হলো, এটি মূলত একটি রাজনৈতিক, ভৌগোলিক ও উপনিবেশবাদী দখলদারিত্বের লড়াই। ফিলিস্তিনি জনগণকে তাদের ভূমি থেকে উৎখাত করা হয়েছে, তাদের অধিকার খর্ব করা হয়েছে, এবং আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেই অবৈধ বসতি স্থাপন চলছে।
২. তাওরাত ও বাইবেলে মুসলিমদের কীভাবে দেখা হয়?
তাওরাতে সরাসরি "মুসলিম" শব্দটি উল্লেখ নেই, কারণ ইসলাম ধর্মের আবির্ভাব এর অনেক পরে। তবে বাইবেল ও তাওরাতে "বেনি ইসরাইল" (ইসরাইলের বংশধর) ও অন্যান্য জাতির মধ্যকার সম্পর্ক নিয়ে বিভিন্ন মতামত আছে। ইহুদি ধর্মে নিজেদের "নির্বাচিত জাতি" বলা হলেও, মুসলিমদের প্রতি নির্দিষ্ট কোনো উল্লেখযোগ্য বিদ্বেষপূর্ণ নীতি সেখানে নেই যা সরাসরি মুসলিম নিধনকে সমর্থন করে। বরং কিছু নির্দিষ্ট ঐতিহাসিক ঘটনার ভিত্তিতে তারা কিছু জাতিগোষ্ঠীকে শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করেছে, যা তাদের ধর্মগ্রন্থে প্রতিফলিত হয়েছে।
৩. খ্রিষ্টান রাষ্ট্র ও ইসরাইলের সম্পর্ক
খ্রিষ্টান ও ইহুদি ধর্মের মধ্যে ঐতিহাসিকভাবে বহু বিরোধ ছিল। মধ্যযুগে খ্রিষ্টানরা ইহুদিদের নির্যাতন করত, ক্রুসেডের সময় ইহুদিরাও হত্যার শিকার হয়েছে। তবে আধুনিক বিশ্বে পশ্চিমা খ্রিষ্টান দেশগুলো, বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইসরাইলকে সমর্থন করে মূলত রাজনৈতিক ও কৌশলগত কারণে। তাদের দৃষ্টিতে মধ্যপ্রাচ্যে ইসরাইল হলো একটি গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ও অর্থনৈতিক মিত্র, যা তাদের স্বার্থ রক্ষা করে।
৪. কুরআন ও ইহুদিদের সম্পর্ক
কুরআনে ইহুদিদের ইতিহাস ও আচরণ সম্পর্কে বিভিন্ন আলোচনা রয়েছে। কুরআন স্পষ্টভাবে বলে যে, মুসলমানরা অন্য ধর্মাবলম্বীদের সাথে ন্যায়বিচার ও সদাচরণ করবে (সূরা আল-মুমতাহিনা ৬০:৮)। তবে কুরআনে কিছু ইহুদিদের বিশ্বাস ও আচরণের সমালোচনা করা হয়েছে, যেমন তাদের নবীদের হত্যার ইতিহাস, সত্য গোপন করা ইত্যাদি। কিন্তু এটি নির্দিষ্টভাবে সব ইহুদির বিরুদ্ধে কোনো যুদ্ধ ঘোষণা নয়।
৫. মুসলিম রাষ্ট্রগুলো কেন ইসরাইলের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে না?
এর কারণ অনেক, তবে প্রধান কয়েকটি হলো:
১.মুসলিম বিশ্বের দেশগুলোর মধ্যে রাজনৈতিক মতপার্থক্য ও স্বার্থের দ্বন্দ্ব আছে।
২.অনেক মুসলিম দেশের সরকার পশ্চিমা দেশগুলোর ওপর নির্ভরশীল, বিশেষত অর্থনীতি ও সামরিক দিক থেকে।
৩.কিছু আরব দেশ (যেমন সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত) সরাসরি ইসরাইলের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করেছে এবং ফিলিস্তিন ইস্যুতে এখন আর তেমন সক্রিয় নয়।
৪.অনেক মুসলিম দেশের নিজস্ব রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট আছে, যা তাদের আন্তর্জাতিক ইস্যুতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে বাধা দেয়।

ইসরাইল-ফিলিস্তিন সংঘাতকে শুধুমাত্র ধর্মীয় হিসেবে ব্যাখ্যা করা পুরো চিত্রটি স্পষ্ট করে না। এটি মূলত একটি দখলদারিত্ব ও প্রতিরোধের যুদ্ধ, যেখানে ধর্মকে ব্যবহার করা হচ্ছে রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য। মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর ঐক্যের অভাব রাজনৈতিক বাস্তবতার কারণেই ঘটছে, যা শুধুমাত্র ধর্মীয় আবেগ দিয়ে সমাধান করা সম্ভব নয়।

তবে মুসলিম বিশ্ব যদি সত্যিই ঐক্যবদ্ধ হয়ে কূটনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামরিকভাবে ফিলিস্তিনের পক্ষে শক্ত অবস্থান নেয়, তাহলে পরিস্থিতি বদলাতে পারে। প্রশ্ন হলো—এটি কবে ঘটবে?

৪| ২০ শে মার্চ, ২০২৫ দুপুর ১:৪৯

নতুন বলেছেন: এটা একটা রাজনিতিক সমস্যা। মধ্যপ্রাচ্যের আমেরিকার প্রভাব বিস্তারে একটা ক্যান্সারের বীজ পুতেছিলো।

এটাকে রাজনিতিক এবং অর্থনৈতিক ভাবে মোকাবেলা করতে আরব বিশ্বকে একত্র হতে হবে।

আরব বিশ্ব চীনকে সাথে নিয়ে আমেরিকার সাথে এই বিষয়ে আলোচনা করলে আমেরিকা ইসরাইলকে থামাবে।

এটাকে ধর্ম যুদ্ধ হিসেবে নিয়ে জিহাদী জজবা দেখিয়ে মুল বিষয় থেকে দৃস্টি সরানোর চেস্টা করছে ইসরাইল, আমেরিকা। এবং মুসলমানেরা এটাকে ধর্ম যুদ্ধ হিসেবে নিয়ে ব্যস্ত আছে।

২১ শে মার্চ, ২০২৫ সকাল ৮:৪৮

মুনতাসির রাসেল বলেছেন: আপনি একদম ঠিক বলেছেন।
ইসরাইল-ফিলিস্তিন সংকট ধর্মীয় নয়, বরং রাজনৈতিক ও ভূরাজনৈতিক আগ্রাসনের ফল। আমেরিকা মধ্যপ্রাচ্যে নিজের আধিপত্য বজায় রাখতে ইসরাইলকে ব্যবহার করছে, আর ইসরাইল ধর্মীয় আবেগ উসকে দিয়ে আসল ইস্যু থেকে দৃষ্টি সরানোর চেষ্টা করছে। মুসলিম বিশ্ব যদি আবেগের বদলে কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে একত্র হয়ে চীনসহ অন্যান্য শক্তির সঙ্গে মিলে চাপ তৈরি করে, তাহলে আমেরিকা নিজ স্বার্থেই ইসরাইলকে নিয়ন্ত্রণ করতে বাধ্য হবে। কিন্তু মুসলমানরা যদি এটিকে শুধুমাত্র ধর্মীয় লড়াই হিসেবে দেখে, তাহলে বাস্তব সমাধানের পথ আরও কঠিন হয়ে যাবে।

৫| ২০ শে মার্চ, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৩

রাজীব নুর বলেছেন: আল্লাহ একজন মসীহ পৃথিবীতে পাঠাবেন।
তারপর পৃথিবী শান্ত হইবে। ইজরাইল, ফিলিস্তিন এবং রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধ চিরতরে থেমে যাবে।

২১ শে মার্চ, ২০২৫ সকাল ৮:৫২

মুনতাসির রাসেল বলেছেন: ততদিনে কিছু অবশিষ্ট থাকবে তো?

৬| ২০ শে মার্চ, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৪৮

Ruhin বলেছেন: কিন্তু তারা তো আরব জাতীয়তাবাদে উদ্বুদ্ধ। সব যুদ্ধ আরব জাতীয়তাবাদে হয়েছে

২১ শে মার্চ, ২০২৫ সকাল ৮:৫৫

মুনতাসির রাসেল বলেছেন: আমি তো জানি এটা ফিলিস্তিনির স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার যুদ্ধ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.