নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শব্দ আমার আশ্রয়, চিন্তা আমার পথ। ইতিহাস, সমাজ আর আত্মপরিচয়ের গভীরে ডুব দিই—সত্যের আলো ছুঁতে। কলমই আমার নিরব প্রতিবাদ, নীরব অভিব্যক্তি।

মুনতাসির রাসেল

আমি তোমাদের মাঝে খুজিয়া ফিরি আমার বিশ্বলোক; নরকে গেলেও হাসিয়া বলিব আমি তোমাদেরই লোক।

মুনতাসির রাসেল › বিস্তারিত পোস্টঃ

একাকী রাজ্যের গেজেট

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৬



আজ থেকে কার্যকর—আমি আমার রাজ্যের নাম ঘোষণা করছি।
রাজধানী: হৃদপিণ্ড।
জাতীয় প্রতীক: একটি আয়না—ফিল্টার ছাড়া।
জাতীয় সঙ্গীত: যে নীরবতা অজুহাত শোনে না।

এই রাজ্যে শাসক একজন—আমি।
কিন্তু ভয় নেই, রাজদণ্ড এখানে দণ্ড নয়, মেরুদণ্ড।
নির্বাচনী কমিশন নেই, কারণ ভোট লুট হয় না—
কারণ ভোটই লাগে না, লাগে দায়।

সভাসদ চাইলে থাকবে—শুধু তারাই,
যাদের ছুরি ধারালো, কিন্তু হাত পরিষ্কার;
যারা প্রশংসার বিনিময় করে না,
যারা আয়নার মতো নির্মোহ,
অথচ আয়নার মতোই নিরপেক্ষ।
তাদের পদবি—সমালোচনা মন্ত্রী, বিবেক সচিব, শোকজ উপদেষ্টা।
তাদের কাজ—মুখে সরাসরি বলা, আড়ালে একটিও শব্দ নয়।

এখন নিষেধাজ্ঞার খসড়া শুনে নাও—
যে আত্মীয় আমাকে অবস্থানের কারণে এড়িয়ে গেছে,
যে বন্ধু ক্যারিয়ারের স্বার্থে সরে দাঁড়িয়েছে,
যে সহযোদ্ধা ঝড় থামতেই দৌড়ে গেছে অন্য ছায়ায়—
তাদের ভিসা স্থায়ীভাবে প্রত্যাখ্যাত।
এই রাজ্যে সুবিধাবাদের কোনো এমার্জেন্সি লেন নেই;
ছোট দরজা নেই, সাইড ডোর নেই,
শুধু সামনের গেট, আর তাতে লেখা—সাহস ছাড়া প্রবেশ নিষেধ।

আর যারা—
উপকারের নামে প্রতিশ্রুতির চেক লিখে
তারিখের জায়গায় ‘শিগগিরই’ লিখে রেখেছিল,
যারা ঘড়ির কাঁটার সঙ্গে সঙ্গে
কথা বদলায় আর কণ্ঠ বদলায়—
তাদের সব পদ বাতিল,
তাদের মাধুর্য এই রাজ্যে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর ঘোষিত।

তবুও সাড়া দিয়েছিল কিছু মানুষ—
তারা জানত, আমি ভুল করেছি;
তবু রাতের শেষে দরজায় দাঁড়িয়ে বলেছিল, “ পাশে আছি।”
তারাই হবে আমার নিমন্ত্রিত বিশেষ অতিথি—
তাদের জন্য প্রাসাদের আলো জ্বলে থাকবে,
সিংহদ্বারে পাহারা থাকবে কোমল,
আর ভেতরে থাকবে একটি টেবিল—ঢেকে রাখা নয়, খোলা—
যেখানে ঋণ শোধ হয় কৃতজ্ঞতার নীরবতায়।

এই রাজ্যের সংবিধান সংক্ষিপ্ত—
ধারা ১: আলো ছাড়া কোনো নীতি বৈধ নয়।
ধারা ২: আড়ালের ভাষা এখানে সরকারি ভাষা নয়।
ধারা ৩: যে কথা প্রকাশ্যে বলা যায় না,
তা কাগজে লেখা হলেও তার স্থান ডাস্টবিনে।

এটাই আমার রাজ্য: ছোট, তীব্র, আত্মমুখী।
এখানে সিংহাসন কাঠের, কিন্তু দৃঢভাবে স্থাপিত।
এখানে রাজকীয় পোশাক নেই, নেই জৌলুস অথবা চাকচিক্য।
এখানে কর বসে না,
আছে শুধু একটি কর—মিথ্যার ওপর শুল্ক: একশ শতাংশ।

ঘোষণা শেষ। গেজেট জারি।
দরজা খোলা শুধু তাদের জন্য
যারা সত্যকে সামনে থেকে দেখে,
আর ভালবাসাকে পিছন থেকে নয়—
ঠিক সামনে দাঁড়িয়ে বলে: তোমার ভুল আছে, তবু আমি আছি।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬

সুলাইমান হোসেন বলেছেন: অপূর্ব সুন্দর রহস্যময় একটি কবিতা।

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৮

মুনতাসির রাসেল বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।

২| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫

বাজ ৩ বলেছেন: কবিতাটা সত্যিই অসাধারন।একাকিত্বতার মধ্যেই শান্তি,সস্থি,এবং মুক্তি নিহিত থাকে। পরিশেষে সবাইকে ছেড়ে দিয়ে একা হয়ে যেতে হবে।আশেপাশে তাকিয়ে কাউকে পাবোনা সুধু পাবো আমাকে।তারপর আরো গভীরে তাকিয়ে,আমার পরিচয় এবং রহস্যকে পেয়ে যাবো।তারপর আরো গভীরে তাকিয়ে পাবো তাকে যিনি আমারও আমি।অসাধারন কবিতাটি লেখার জন্য ধন্যবাদ রাসেল ভাই।

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:০০

মুনতাসির রাসেল বলেছেন: আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ভাই!

৩| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৪৯

বিজন রয় বলেছেন: সুন্দর।

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৯

মুনতাসির রাসেল বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.