নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি একজন সমালোচক,তবে তা সংশোধনরে জন্য। আবার একজন প্রশংসাকারিও বটে, তবে তোষামোদকারি নয়।জানতে চাই অনেক কিছু।হতে চাই কালের সাক্ষী।

মুসাফির নামা

সত্যানুসন্ধানী

মুসাফির নামা › বিস্তারিত পোস্টঃ

১৯৭১ সালে ২৫ মার্চ রাত: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অপারেশন সার্চলাইট(না জানা অনেক কথা)

০৯ ই মার্চ, ২০১৬ দুপুর ২:১৫



দীর্ঘ দুইশত বছরের ইংরেজ শাসনে সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্টিগুলোর মধ্যে বাংলা বিশেষ করে বাংলার মুসলিম অধ্যুষিত পূর্ব বাংলার জনগণ ছিল অন্যতম।বিশাল আশায় বুক বেঁধে তাইতো তারা পাকিস্থানের পক্ষে ভোট প্রদান করে পাকিস্তান রাষ্ট্র সৃষ্টি করেছিল।কিন্তু দূর্ভাগ্য যে পাকিস্থান হওয়ার কথা ছিল ফেডারেশন রাষ্ট্র তা তো হয়নি বরং দীর্ঘদিন পাকিস্থান তাদের সংবিধান রচনা করতে ব্যর্থ হয়।তারপর আইয়ূব খান এর সামরিক শাসনের আগ পযর্ন্ত মোটামুটি বেসামরিক লোকদের হাতেই ক্ষমতা ছিল।এদের মধ্যে অনেক বাঙালীও ছিল যারা কেন্দ্রে এবং প্রদেশে নেতৃত্ব দিয়েছিল।কিন্তু সাম্রাজ্যবাদী শাসকদের হাত থেকে ক্ষমতা বলা যায় পরিবর্তন হয়ে সামন্তবাদীদের হাতে যায়।জনগণের সাথে যাদের সম্পর্ক ছিল না বললেই চলে।এই জনবিচ্ছিন্ন শাসকগোষ্টির জনবিচ্ছিন্নতার কারণে বাঙালিরা নিজেদের দীর্ঘদিন ধরে পক্ষপাতিত্ব ও অসমতার নীতির শিকার বলে মনে মনে উপলব্দি করছিল যদিও কখনো কখনো এটা প্রমাণ করতে গিয়ে যে পরিসংখ্যান উথাপন করেছে এবং পরিসংখ্যানে যা দেখা গিয়েছে তাতে অসমতা হয়তো ছিল কিন্তু কোনভাবেই সে সব কিছু পক্ষপাতিত্ব ছিল না।১৯৪৭ সালে পাকিস্থান সৃষ্টির সময় থেকে পশ্চিম পাকিস্তান অপেক্ষা পূর্ব পাকিস্থান অধিকতর গরিব ও অর্থনৈতিক দিক থেকে ছিল বেশ দূর্বল।এবং পরিসংখ্যানে দেখা যায় যে, ঐতিহাসিকভাবে খুব কম সংখ্যক পূর্ব পাকিস্তানীই পাকিস্তান স্বাধীন হওয়ার সময় সিভিল সার্ভিস,সেনাবাহিনী ও ব্যবস্থাপনার মতো পদে কর্মরত ছিলেন।কাজেই অসমতা থাকবে এটা বাস্তবতা ও সমতা আনাও রাতারাতি সম্ভব ছিল না।দেখা দরকার যে সুযোগ সুবিধা সমানভাবে ও সুষ্ঠুভাবে পূর্ব পাকিস্তানীদের সামনে খুলে দেওয়া হয়েছিল কিনা।পক্ষপাতিত্ব যে ছিল সেটি অবশ্যই বিতর্কের ব্যপার তবে পাকিস্তানের দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক হিসেবে বাঙালিদের অনুভূতি ছিল সত্য এবং এটা ছিল প্রকটভাবে একটি রাজনৈতিক ইস্যু। পিছিয়ে পড়া জনগোষ্টি হলেও বাঙালিদের আত্মবিশ্বাস ছিল ব্যাপক।১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনের সফলতা তাদেরকে আরো আত্মবিশ্বাসী ও জাতীয়তাবাদী করে তুলে।তাদের দাবী-দাওয়াগুলোর মধ্যে ছিল অধিকতর স্বায়ত্বশাসন,ক্ষমতার ন্যায্য অংশগ্রহন ও অর্থনৈতিক সুযোগ সুবিধাসমূহ।সামরিক শাসক আইয়ূব খানের দীর্ঘদিনের শাসন বাঙালিদের আরো ক্ষিপ্ত করে তোলে।এর মধ্যে ১৯৬৬সালে শেখ মুজিবুর রহমানের জনপ্রিয় ছয়দফা বাঙালিদের সে আশা আকাঙ্খার প্রতিফলন।আর এতে পশ্চিম পাকিস্থানীদের বাঙালীদের প্রতি সন্দেহের মাত্রা তীব্রতা লাভ করে।অথচ বাস্তবতা হচ্ছে এই ছয়দফাই ছিল পাকিস্তান রাষ্ট্র হিসাবে টিকে থাকার একমাত্র ভিত্তি।
তবে জেনারেল ইয়াহিয়া খান ছিলেন পাকিস্থানের একমাত্র সামরিক শাসক, যিনি তার ক্ষমতা গ্রহণের একবছর মধ্যে দেশকে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে বাস্তবিকই তার কথা রেখেছিলেন।এছাড়াও তিনি পূর্ববর্তী সংবিধানে সংযুক্ত 'সমতার নীতিমালা'বাদ দিয়ে সর্বজনীন ভোটাধিকারের ভিত্তিতে সরাসরি নির্বাচনের পথ বেছে নেয়।যা সংখ্যাগরিষ্ট পূর্ব পাকিস্থানকে বিশেষ সুবিধা এনে দেয়।নির্বাচনের ফলাফল সেদিকেই ইংগিত দেয়।কিন্তু এরপর তিনি দেশটিকে গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিতে নেতৃত্ব দেন ও ভারতের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে পরাজয়ের গ্লানি কাঁধে নেন।আর পাকিস্থান হয়ে পড়ে দ্বিখন্বিত।

বেলুচ কসাই নামে পরিচিত জেনারেল টিক্কা খান

আসা যাক শিরোনামের দিকে।২৫ মার্চ রাতে 'আপারেশন সার্চলাইট’এর পূর্বে পরিকল্পনা ছিল 'অপারেশন ব্লীৎজ’।এর পরিকল্পনা করা ৭০ এর সাধারণ নির্বাচনের আগে।তখন পূর্ব পাকিস্থানের গভর্ণর ছিলেন লে.জে. সাহেবজাদা ইয়াকুব।২৫ মার্চের কিছু আগে লে.জে.সাহেবজাদাকে পদত্যাগ করিয়ে তার জায়গা নিয়ে আসা হয় বেলুচ কসাই নামে পরিচিত জেনারেল টিককাকে।তখনই 'অপারেশন ব্লীৎজ’পরিবর্তন করে করা হয় 'অপারেশন সার্চলাইট’।যদিও দুইটির উদ্দেশ্য একই ছিল পূর্ব পাকিস্থানে তাদের নিয়ন্ত্রন ধরে রাখা।কিন্তু কর্মপদ্ধতি ছিল ভিন্ন।অপারেশন ব্লীৎজ এর কর্মপদ্ধতি ছিল সংঘর্ষ এড়িয়ে সমঝোতা পৌঁছানো।কিন্তু 'অপারেশন সার্চলাইট’এর কর্মপদ্ধতি ছিল যেকোন উপায়ে তাদের নিয়ন্ত্রন প্রতিষ্ঠা করা। ১লা মার্চ বসতে যাওয়া সংসদ অধিবেশন ইয়াহিয়া অনিদির্ষ্ট কালের জন্য স্থগিত করেন।তখন থেকে পূর্ব পাকিস্থানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নেতৃত্ব একটি সমান্তরাল সরকার কার্যক্রম শুরু হয়ে যায়।যায়গা যায়গা বাঙালিদের স্বশস্ত্র অবস্থায় দেখা যায় এবং অনেক অবাঙালি ও বিহারী আক্রান্ত হতে থাকে।এমনকি সেনাবাহিনীর অনেক কর্মকর্তা বিভিন্ন যায়গা অপদস্থ হয় এবং অনেকে ব্যাংকে গিয়ে চেকের বিনিময়ে টাকা তুলতে পারেনি।আওয়ামী নেতৃত্বের বেশিরভাগ চাচ্ছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা করুক।এমনকি ৭ই মার্চ তারা ব্যাপক আশাহত হয়।বাস্তবিক পক্ষে সেনাবাহিনীর সাথে টিকে থাকার মতো কোন পস্তুতি ছিলনা আওয়ামী লীগের।তিনি আলোচনা চালিয়ে যান।আর এদিকে তার স্থানীয় লীডাররা যায়গা যায়গা সাধারণ দেশীয় অস্ত্র সস্ত্র নিয়ে বিভিন্ন জায়গা বিহারী ক্যাম্পে হামলা চালায়।এমনকি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েরা খেলনা বন্দুক নিয়ে যে মার্চপাষ্ট করছিল তা দেশীয় ও আর্ন্তজাতিক মাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচার পায়।বস্তুতপক্ষে পাকিস্থান জান্তা সরকার ধরে নেয় , আলোচনার ক্ষেত্রে শেখ মুজিবের অনড় অবস্থান এবং বাহিরে বিভিন্ন অপ্রয়োজনীয় বহিঃপ্রকাশ বাঙালি আসলে স্বাধীনতা চাচ্ছে।তাই আলোচনার নামে তারা সময় ক্ষেপন করছিল আর পশ্চিম পাকিস্থান থেকে সেনা আর অস্ত্র রসনাদি আনছিল।অবাক করা বিষয় পুরো বিষয়টা আওয়ামী লীগ এবং বাঙালি সেনাকর্মকর্তারা বিন্দু মাত্র আচ করতে পারেনি।আর এভাবে এসে যায় সে কালো রাত্রি, যা এই জাতি কোনদিন ভুলবেনা।আমি শুধু সেই রাত্রে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপারেশনটা তুলে ধরব।
’বিদ্রোহী’ একটি বিশ্ববিদ্যালয়কে ধূলিস্মাৎ করার জন্য জান্তা সেই রাত্রে সেনাবাহিনী পাঠিয়েছিল।এ ঘটনাকে বেশিরভাগ মানুষ সংঘাতকালের সবচেয়ে কালো অধ্যায় হিসাবে বিবেচনা করেছেন।ওই সময়ে মাকির্ন দলিলপত্রে লিপিবদ্ধ তথ্যানুযায়ী’ ৩০ মার্চ মার্কিন কনসুলেট জেনারেল তার প্রতিবেদনে জানান যে, সেনাবাহিনী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অগণিত নিরস্ত্র ছাত্রদের হত্যা করেছে। মার্কিন কনসাল আর্চার ব্রাড তার আত্মজীবনীতে লিখেছেন,"ইকবাল হলের ছাত্ররা যাদের অনেকের কাছে অস্ত্র ছিল তাদেরকে হয়তো কক্ষেই গুলি করে হত্যা করা হয়েছে অথবা তারা দলবদ্ধ হয়ে হলের বাইরে এলে তাদের কচুকাটা করা হয়।”এ ঘটনার কিছুকাল পরেই সাইমন ড্রিং সানডে টেলিগ্রামে লিখেছেন,"সেনা অভিযানের একমাস পূর্বে শেখ মুজিবুর রহমানের কর্মীরা জোর গলায় বড় বড় বক্ততা বিবৃত্তি দিলেও প্রকৃত পক্ষে সামরিক অভিযানের বিপক্ষে তাদের কোন প্রস্ততিই ছিল না।আওয়ামী লীগ চিৎকার হৈ চৈ করে বিক্ষিপ্ত ভাবে রাস্তায় তাদের মিছিল প্রদর্শন করলেও তারা সুসংগঠিত ছিল না, ছিল না তাদের কোন সামরিক প্রশিক্ষণ ও আধুনিক অস্ত্র এবং যার ফলে সেনাবাহিনীর এ্যাকশন প্রমাণ করেছে যে ঢাকায় লড়াই করার মতো তাদের কোন অবস্থানই ছিল না।মৃত্যু পযর্ন্ত লড়াই করার ঘোষনা দিলেও তাদের হাতে ১৯৩৯-৪৫ সালের যুদ্ধে ব্যবহৃত কয়েকটি অতি পুরাতন রাইফেল,পুরনো পিস্তল ও হাতে তৈরি বোমা যা ২৫ মার্চ রাতে সেনাদের মোকাবিলায় কোন কাজেই আসেনি।যখন গুলিবর্ষণ শুরু হয় তখন সকল চিৎকার,উচ্চবাক্য,পাকিস্থান সরকারের সামরিক শক্তির বিরুদ্ধে প্রকাশ্য বিরোধিতা খুব দ্রুত নিঃশেষ হয়ে যায়।”


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হিন্দু ছাত্রাবাস জগন্নাথ হলের দূঘর্টনা থেকে বেঁচে যাওয়ার বামপন্ত্রী কর্মী কালীরঞ্জন শীল লিখেছেন যে, জাতীয় সংসদ অধিবেশন স্থগিত করার ঘোষণা দেওয়ার পরই ছাত্র ইউনিয়ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জিমনিসিয়্যামে নকল রাইফেল নিয়ে প্রশিক্ষণ শুরু করে এবং আমিও এই প্রশিক্ষণের একটি দলে অংশগ্রহণ করি।কয়েকদিনের মধ্যেই আমাদের প্রথম দলটির প্রশিক্ষণ সমাপ্ত হয়। ছাত্রীদের অনুরুপ একটি দলের প্রশিক্ষণ শেষ হলে উভয় দলই রাস্তায় একটি মার্চপাষ্টের অংশগ্রহণ করে।আর ঐ মার্চপাস্ট এর ছবি দেশী বিদেশী অনেক পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।সে সময় অষ্টম শ্রেণির ছাত্র মোহন দাস যিনি জগন্নাথ হলের সামনের মাঠের কোণায় অবস্থিত স্টাফ কোয়ার্টারে থাকতেন তিনি জানান,হলের ছাদের দিকে তীব্র লাইটের আলো পড়ছিল আর পচন্ড গোলাগুলি চলছিল।রবীন্দ্র মোহন দাস জগন্নাথ হলের প্রভোষ্ট অধ্যাপক জ্যোর্তিময় গুহু ঠাকুরতার অফিসে চাকরি করতো।বাসন্তী গুহ (যিনি জ্যোর্তিময় গুহেুর স্ত্রী) লিখেছেন ”আমি প্রায় রাত বারোটা বা একটার দিকে গুলির শব্দে জেগে উঠি।ভাবছিলাম যুদ্ধ কি শুরু হয়ে গেছে? আমার স্বামী বললেন ও কিছু না,ছাত্ররা প্যাকটিস করছে মাত্র।শব্দটা ক্রমশ কাছে এগিয়ে আসে,শীঘ্রই তীব্র আলোর সাথে সাথে কান ফাটানো শব্দের মতো মনে হয়ে যায়।ভূমিকম্পের ন্যায় কেঁপে উঠে বাড়িঘর।এ অবস্থায় অধ্যাপক গুহু ঠাকুরতা পরিবারের সবাই আশ্রয় নেন চৌকির নিচে।জগন্নাথ হলের অপর দিকে ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাকাল্টির কোয়ার্টারের চতুর্থ তলায় বসবাসকারী অধ্যাপক নূরুল উল্যা লিখেছেন,”মধ্যরাতে প্রচন্ড এক বিষ্পোরণ আমার ঘুম ভাঙিয়ে দেয়।শীঘ্র শুরু হলো বিরতিহীন বুলেট ও মর্টার শেলের শব্দ।বেশ কিছুক্ষণ মধ্যেই হলের কিছু কক্ষে আগুনে জ্বলে উঠতে দেখলেন অধ্যাপক নরুল উল্যা।আরো দেখছেন, টর্চ লাইট দিয়ে ঘরে ঘরে তল্লাশী চালানো হচ্ছে।শীলের দেওয়া বর্ণনানুযায়ী হলের কেউই সেনাদের সাথে ওই রাতে সংঘর্ষে লিপ্ত হননি।শিল লিখেছেন ”তিনি জগন্নাথ হলের বিভিন্ন তালা ও কক্ষ তল্লাসি চালাতে দেখেছেন।একসময় সৈনিকরা হলের গেটম্যান প্রীয়নাথকে ডেকে হলের প্রধান গেট খুলে দিতে বলে এবং ঠিক সে সময়ে কাউকে যেন গুলি করা হয় হলের বিপরীত দিকে, যেখানে শীল উপরের কার্নিশের উপর শুয়েছিলেন।
দু’পক্ষের যুদ্ধের প্রমাণ পাওয়া যায় এক অপ্রত্যাশিত মাধ্যম থেকে।সে রাতে সেনা অভিযান চলাকালীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি সম্পর্কে আর্মি কমিউনিকেশন নেটওয়ার্কে ব্রিগেড কমান্ডার যে প্রশ্ন করেন, সে রেকর্ডকৃত বিবরণ থেকে যা জানা যায় তা নিম্নরুপঃ
"৯৯,৮৮ এর জন্য।(ক্যাপ্টেন সফিক একে নিয়াজী যিনি ব্রিগেড কমান্ডার ৫৭ ব্রিগেড ব্রিগেডিয়ার আরবারের সাথে অবস্থান করছিলেন তার কন্ঠ)সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক জানতে চাচ্ছেন যে জগন্নাথ, ইকবাল ও লিয়াকত হল থেকে কি ধরনের প্রতিরোধের মুখোমুখি হতে হচ্ছে।ওভার।”
"৮৮,৯৯ এর জন্য।(লে.ক.বাশারত সুলতান কমান্ডিং অফিসার ১৮ পাঞ্জাব) প্রথম দিকে জগন্নাথ ও ইকবাল হল থেকে অসংখ্য গুলির মুখোমুখি হতে হয়েছে।এ পযর্ন্ত বুঝেছি ও ওভার।’
আরও বিস্তারিত জানতে চেয়ে মেসেজ পাঠানো হয় যা ছিল নিম্মরুপঃ
"৯৯,৮৮ এর জন্য।(ক্যাপ্টেন সফিক) অনুগ্রহপূর্বক আমাদের জানান যে, সেখানে বিপরীত দিক থেকে কোন স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র ও গ্রেনেড ইত্যাদি ব্যবহার করেছে কিনা।ওভার।”
"৮৮,৯৯ এর জন্য।(লে.ক.বাশারত সুলতান) ০.৩০৩ এর প্রচুর গুলিবর্ষণ করেছে।আমরা কোন স¦য়ংক্রিয় অস্ত্র বা গ্রেনেড বিস্ফোরণ শব্দ শুনতে পাইনি।ওভার।”
৩২ পাঞ্জাব এর কমান্ডিং অফিসার লে.ক.মোহাম্মদ তাজ জানান,তিনি সে রাতে সার্বিক দায়িত্বে ছিলেন এবং তিনি একমত যে ইকবাল ও জগন্নাথ হলে গোলাগুলি হয়েছিল এবং প্রচন্ড সংঘর্ষ হয়েছিল জগন্নাথ হলে।
মেজর জামাল বলেন,বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ন্ত্রনে আনতে তিন ঘন্টা সময় লেগেছিল যার মধ্যে জগন্নাথ হলে লেগে যায় দীর্ঘ সময়।
এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ’রেকেয়া হল’কে টাগের্ট করে সেনা অভিযানের কথা তখন ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়।প্রকৃতপক্ষে অন্যান্য হোস্টেলের ন্যায় রোকেয়া হলও ২৫ মার্চের আগেই খালি হয়ে যায়।এ হলকে সেনা লক্ষ্যস্থলও মনে হয়নি।একইভাবে জাহানারা ইমামের বইয়ে মহসিন হলের যে আতংকিত ছাত্রের কাহিনী সংযুক্ত হয়েছে, সেখানেও সেনাবাহিনী যায়নি।যা হোক রোকেয়া হলের তৎকালীন প্রভোষ্ট বেগম আখতার ইমাম পুস্খানুপুঙ্খারুপে বর্ণনা করেছেন কিভাবে পাকিস্তানী সেনারা তার নিজের বাংলোর গেট ভেঙ্গে প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ,অস্ত্রশস্ত্র, গোলাবারুদ ও ছাত্রীদের খুজছিল যারা এর আগে অংশ নিয়েছিল সশস্ত্র মার্চপাষ্টে।বেগম আখতার ইমামের মতে,রোকেয়া হলের ছাত্রী ধারণ ক্ষমতা ছিল প্রায় আটশ।রাজনৈতিক পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে ছাত্রীরা হল ত্যাগ করতে শুরু করে এবং ২৫ মার্চ ১৯৭১ সালে হলে মাত্র সাতজন ছাত্রী ছিল।ওই রাতে সামরিক বাহিনীর দ্বারা ছাত্রী নিবাস আক্রান্ত হলের প্রভোষ্ট জেগে ওঠেন ও ওই সাতজন ছাত্রী হলের হাউজ টিউটর সাহেরা খাতুনের বাসভবনে চলে যায়।সাতজন ছাত্রী নিরাপদে ছিল এবং ২৭ মার্চ সান্ধ্য আইন তুলে নিলে তারা তাদের অভিভাবকদের সাথে হল ত্যাগ করে।প্রভোষ্ট ইমাম লিখেছেন, ওই রাতে পাক সেনারা তার বাসায় দু’দফায় অনুপ্রবেশ করে।প্রথম দফায় তারা তল্লাশির নামে ব্যাপক ভাঙ্চুর করেন এবং তারা ব্যাপক আক্রমনাত্মক আচরণ করছিল কর্মচারীদের সাথে।বেগম ইমাম হলের স্টাফদের বাঁচানোর জন্য ওরা গরীব মানুষ বলে বারবার বলে যাচ্ছেন।ঠিক তখনই একজন সেনা কর্মকর্তা এসে মহিলাদের সাথে খারাপ আচরণ না করতে হুকুম দিয়ে যান।অল্পকিছুক্ষন পর আসে দ্বিতীয় দল।তারা প্রত্যেককে বাসায় বাইরে লাইনে দাঁড় করিয়ে অস্ত্র ও গোলাবারুদের সন্ধানে পুরো বাসা তছনছ করে।তারা তার কাছে জানতে চায় বিগত সপ্তাহগুলোতে যে ছাত্রীরা সামরিক প্রশিক্ষণ নিয়েছে তারা কোথায়, হলের অস্ত্রশস্ত্র কোথায় রাখা হয়েছে এবং লাইনে যারা দাঁড়িয়ে তারা সকলে মুসলমান কিনা? মিসেস ইমাম বলেন যে,সকল ছাত্রীই হল ত্যাগ করে চলে গেছে,হলে কোন গোলাবারুদ নেই এবং লাইনে দাঁড়ানো সবাই মুসলমান।তারপর তারা গালিগালাজ ও কিছু লুটতরাজ চালিয়ে চলে যায়।
প্রতিরোধের বিষয়টি সেনাবাহিনী কিছুটা বাড়িয়ে বলেছিল।মূলত প্রতিরোধ করার চেষ্টা করে হাতে গোনা কয়েকজন বাঙালি ।কারণ যে পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধার করেছে তা দিয়ে খুব একটা প্রতিরোধ করতে পারার কথা না।
অদ্ভুত ব্যাপার যে পাকিস্থানি সেনাবাহিনী বলেছে, জগন্নাথ হল ও ইকবাল হল থেকে প্রতিরোধ এসেছে এবং তারা ০.৩০৩ রাইফেল নিয়ে পাক সেনাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে ও বেশির ভাগই নিহত হয়েছে।অন্যদিকে বাংলাদেশী পক্ষের দেওয়া তথ্যানুযারী, ছাত্ররা ঘুমিয়ে ছিল, কিছুই করছিল না অথবা যে ’বীর বাঙালিরা’ প্রশিক্ষণ নিয়েছিল, মার্চপাষ্টে করে যুদ্ধ আর সংগ্রামের বড় বড় বুলি আওড়েছিল বাস্তবে তাদের সামনে যখন লড়াইয়ের ক্ষণ এলো তখন কারো মাঝেই লড়াইয়ের কোন ইচ্ছা জাগেনি।
জগন্নাথ হলের মাঠের বিপরীত দিকে রাস্তায় অপর পাড়ে অবস্থিত ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাকাল্টি বিল্ডিং এর চতুর্থ তলার জানালা দিয়ে এ দৃশ্যটি অবলোকন করেন অধ্যাপক নুরুল উল্যা।যদিও বর্তমানে ওই ক্যাম্পাসে অনেক নতুন অবকাঠামো তৈরী হয়েছে তারপরও ওই স্থানটি পরিদর্শন করে নিশ্চিত হওয়া যায় অধ্যাপক নরুল উলার বর্ণনানুযারী তার ওই চতুর্থ তলা থেকে ঘটনার সময় স্থানটি স্পষ্ট দেখা যেত।তার বর্ণনা মতে, মাঠের পশ্চিম দিকে জগন্নাথ হলের প্রধান ডরমিটরি অবস্থিত, সেখানে হঠাৎ করে প্রায় বিশ জন পাক সেনা হাজির হলো দু’জন আহত ছাত্রকে নিয়ে।সেনারা ছাত্র দু’জনকে বেশ যত্মের সাথে নিজেদের কাঁধে ভর দিয়ে নিয়ে এসে দু’টি চাটাই এর পাশে বসতে দিল যা দেখে মনে হয়েছিল তারা তাদের হসপিটালে নিয়ে যাবে।একটু পরই তারা চাটাই দুটি টেনে নিলে আমি দেখতে পেলাম ওই চাটাই নিচে বেশ ক’টি মৃত দেহ পড়ে আছে।আহত ছাত্র দুটি ব্যাপক অনুনয় করলেও তাদের গুলি করে হত্যা করা হয়।এর কিছুক্ষণ পর পশ্চিম দিক থেকে আহত আরো কয়েকজনকে নিয়ে আসে।অধ্যাপক নুরুল উলার কাছে ছিল জাপানে তৈরী একটি পোর্টেবল ভিডিও ক্যামেরা।সে সময় পূর্ব পাকিস্থানে এত অত্যাধুনিক ক্যামেরা একমাত্র তারই ছিল।তিনি তার ক্যামেরায় তিনটি দলকে হত্যার ভিডিও ধারন করতে সক্ষম হন।যদিও মোট সাত দফায় নিরস্ত্র ছাত্র ও সেখানকার মানুষদের হত্যা করতে দেখেছেন।অধ্যাপক নুরুল উলার মতে হত্যাকান্ডে অংশগ্রহনকৃত সৈনিকরা ছিল ছোট,কালো বর্ণের।অপেক্ষাকৃত লম্বা ও চওড়া,ফর্সা সৈনিকরা হত্যাকান্ডে অংশগ্রহন করেনি।তারা সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে ছিল।এর পর পূর্বদিক থেকে ২৫-২৬ জনের একটি দলকে নিয়ে আসা হয় যারা অক্ষত ছিল।অধ্যাপকের ধারণা হয়েছিল তাদের হত লাসগুলোকে স্থানান্তরের জন্য নিয়ে আসা হয়।দেখা গেছে তাদেরও হত্যা করা হল।হত্যাকারী সেনারা হত্যাকান্ডের পর লাসগুলো নেড়ে চেড়ে দেখে তাদের নিয়মানুযারী মার্চ করতে করতে চলে যায়, তিনি নিহতের মোট সংখ্যাটা সঠিকভাবে উল্লেখ করতে পারেননি।
ফ্যাকাল্টি কোয়ার্টার ৩৪ নম্বর বিল্ডিং এর হত্যাযজ্ঞঃ
ঐ এপার্টমেন্টে থাকতেন জগন্নাথ হলের প্রভোষ্ট জ্যোতিমর্য় গুহ ঠাকুরতা,তার স্ত্রী ও মেয়ে।ঐ একই বিল্ডিং এ থাকতেন অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আনিসুর রহমান ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক, তিনি ছিলেন দ্বিতীয় তলা।নিচতলায় থাকতেন গুহ ঠাকুরতা ও অধ্যাপক আব্দুল হাই এর পরিবার। যদিও সার্বিক দায়িত্বে থাকা লে.ক.তাজ বলেন ঐ রাতে তাদের কেউ ৩৪ নম্বর বিল্ডিং এ যায়নি।কিন্তু হত্যাকান্ডে কে ঘটিয়েছিল? পাঁচ পরিবার যারা ঐখানে বাস করছিল তারা বলতে পারবে কি ঘটেছিল।প্রথম ভয়াবহ সংঘর্ষের সময় জ্যোতির্ময়ের পরিবার সবাই খাটের নিচে লুকিয়ে পড়ে।একপযার্য়ে সংঘর্ষ থেমে গেলে তারা বের হয়ে আসে।এর পর একদল সেনা জীব করে সেখানে এসে হাজির।অধ্যাপক জ্যোতির্ময়ের স্ত্রী বাসন্তী গুহ স্বামীকে পাঞ্জাবী দিয়ে বলে রেডি হও উনারা তোমাকে নিতে এসেছে।তারপর তারা তাকে নিয়ে যায়।তবে মিসেস ঠাকুরতা বর্ণনা মতে তারা তার সাথে বা তার মেয়ের সাথে খারাপ আচরণ করেনি। তবে তারা বার বার জানতে চায় কোন জোয়ান আদমী হ্যায়? ইতোমধ্যে সিঁড়িতে প্রচন্ড হৈ চৈ শুরু হয়ে যায় যেখানে মিসেস গুহ ঠাকুরতা মিসেস মুনিরুজ্জামানকে দেখলেন সিড়িতে বসে কাঁদছেন।সৈনিকরা টেনে হিচড়ে নিচে নামিয়ে নিয়ে আসছিল অধ্যাপক মনিরুজ্জামান, তার পুত্র, ভাগ্নে ও অপর একজন ভদ্রলোককে।মিসেস ঠাকুরতা তাদের সকলকে সৈনিদের সাথে যাওয়ার পরামর্শ দিলেন অন্যথায় তারা গুলি করতে পারে।এবং বললেন যে, তার স্বামীকেও এইমাত্র সেনাবাহিনীর লোক ক্যান্টনমেন্ট নিয়ে গেছে।ঠিক এসময় বাইরে দুইটি গুলির শব্দ হলো এবং মিসেস গুহু ঠাকুরতা তার কানে হাত দিলেন।অধ্যাপক আনিসুর রহমানের বর্ণনা মতে, তিনি এবং অধ্যাপক আব্দুল হাই বাইরে তালা মেরে ভিতরে চুপচাপ বসে ছিলেন।আর অধ্যাপক রাজ্জাক আগেই পালিয়ে যায়।
এ ব্যাপারে কোন লিস্ট করা হয়েছিল কিনা জানতে চাইলে লে.ক.তাজ ও পাকিস্থান ন্যাশানাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের সেক্রেটারী জে.ওমরাও অস্বীকার করেছেন।অবশ্যই তাদের কথার ভিত্তি থাকতে পারে অধ্যাপক মনিরুজ্জামানের হত্যাকান্ড দেখে।তিনি পরিসংখ্যানের ছিলেন এবং তিনি রাজনীতিতে সক্রিয়ও ছিলনা।আর রাজনীতিতে সক্রিয় ছিল বাংলার অধ্যাপক মনিরুজ্জামান।১৬,৪১,৮৮ কোডের হেড কোয়ার্টার ৪৮ কোডের ইউনিট যেটি বিশ্ববিদ্যালয় দায়িত্ব ছিল নির্দেশ দিল স্থানীয়দের লাগিয়ে লাসগুলো অন্যত্র সরিয়ে ফেলার জন্য।এ লাশ বহন করাদের মধ্যে রবীন্দ্র মোহন দাসও ছিল।তার বর্ণনা মতে লাশের সংখ্যা ২৫ হবে।খুব সম্ভবত সে যেখানে লাস বহন করছিল সেখানে লাসের সংখ্যা এমনই ছিল।
অপারেশন চলাকালীন খুব সকালে (২৬ মার্চ) রেডিও কমিউনিকেশন নেটওয়ার্কে যে কথোপকোথন ধারণ করে তা নীচে বর্ণনা করা হল।ওই রেডিও কমিউনিকেশনে বিগ্রেড কমান্ডার বিশ্ববিদ্যালয়ের হতাহতের ব্যাপারে খোঁজ খবর নেন।
(অফিসার এ):...বিশ্ববিদ্যালয়ে হতাহতের সংখ্যা কেমন হতে পারে?তোমার মতে কত হতে পারে আমাকে জানাও।কতগুলো মারা গেছে,কতগুলো আহত হয়েছে বা ধরা পড়েছে?আমাকে কেবল একটা ধারণা দাও।ওভার।”
(অফিসার বি):"৮৮আনুমানিক ৩০০ জন হবে।ওভার”
(অফিসার এ):"ওয়েলডান ,৩০০ জন নিহত হয়েছে?কেউ আহত বা ধরা পড়েছে?ওভার”
(অফিসার বি):"৮৮ আমি কাজে বিশ্বাস করি, ৩০০ জন নিহত হয়েছে।ওভার”
(অফিসার এ):"হ্যা, আমি তোমার সাথে একমত,তুমি জান এটা অনেক সহজ কাজ, কিছু করতে বলা হয়নি, কিছু করাও হয়নি।তোমাকে আর এ ব্যাপারে আর ব্যাখা দেওয়ার প্রয়োজন নেই।আবারও বলছি খুবই ওয়েলডান...।”
উপরের এ বাক্য বিনিময়ে মনে হয়েছে যে, বিগ্রেড কমান্ডার বিশ্ববিদ্যালয় বিদ্রোহীদের আহত বা বন্ধী আশা করেছিলেন,তবে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা ছিল।তার বাক্যালাপে বুঝা যায়, তিনি কাউকে গ্রেফতার করে কয়েদি করায় বিশ্বাস করতেন না।কঠিন বাস্তব যে,মেঘনা গুহ ঠাকুরতা (অধ্যাপক জ্যোতির্ময় গুহর মেয়ে) দেয়া তথ্যমতে মৃতসংখ্যা ছিল ৩০০ জন।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিরিষতলায় উপাচার্যের বাসভবনে, যারা নিহিত হয়েছেন তাদের স্মরণে একটি ¯স্মৃতিস্তম্ব স্থাপন করা হয়েছে, সেখানে পুরোবছরে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন বিভাগের ছাত্র,কর্মচারী,শিক্ষক সহ নিহত হয়েছেন ১৪৯ জন।এর সবাই আবার ঐ রাতেও নয় আবার ঐ স্থানেও নয়, বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন স্থানে নিহত হয়েছেন।তাহলে একজন ব্যাটালিয়ান কমান্ডারের হিসাবের সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব কিভাবে মিলাবেন? বাকীরা হয়তো বাহির থেকে আসা প্রশিণরত বাঙালি বিদ্রোহী অথবা দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা নিজের ক্রেডিট বাড়ানোর জন্য সংখ্যাটা ফুলিয়ে ফাপিয়ে বলেছেন।ঐ রাতে বর্বর পাকিস্থানীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রিয় শহীদ মিনার ভেঙ্গে পেলে যার পুরোটাই অর্থহীন ছিল এবং বিভিন্ন স্ট্যাফ কোয়ার্টারেও আগুন ধরিয়ে দেয়।আমি বাঙালি হলেও ইতিহাসের নির্মম এক খন্ড চিত্র তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।চেষ্টা করেছি বিভিন্ন পুস্তকে প্রাপ্ত বিষয়গুলো থেকে উভয়পক্ষের গ্রহনযোগ্য বক্তব্যগুলো নেওয়া।


সমালোচনা করছি উগ্র জাতীয়তাবাদীদের যারা নিমর্মভাবে হত্যা করেছে বিহারী নারী, পুরুষ ও শিশুদের।সমালোচনা করছি যুদ্ধকালীন সময়ে সম্ভব না হলে পরবর্তীতে এর গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টগুলো সংগ্রহ করতে না পারার।যেমন অধ্যাপক নুরুল উল্যাহর ভিডিওয়ের কথা, যা তার বইতে জানা গেলও তা আর পাওয়া যায়নি।বেশ কয়েকজন, ঐ ভিডিও দেখেছেন।তবে এখন আর ওটার কোন সন্ধান নেই। তিনি আর জীবিত নেই।এসব ডকুমেন্ট মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের আসল দলিল।সর্বশেষ, ২৫ মার্চের আগে উগ্রবাঙালিদের দ্বারা যে অপরাধ সংঘটিত হল তার বিচারের দায়িত্ব তখনকার জান্তা সরকারের ছিল, কারণ তখনও তারাই সরকার।তারপর আবার ঐসব বাঙালি কোন দায়িত্বরত লোক ছিলনা কিন্তু সেনাবাহিনীসহ জান্তা সরকার তো দায়িত্বশীল কর্মকর্তা।তারা তো পারত যতবড় অভিযোগই হোকনা কেন এদের নিরস্ত্র করে বন্দী করে বিচারের সম্মুখীন করতে।তাই জাতিসংঘের সংজ্ঞা বা যে যাই বলুক রাষ্ট্রকর্তৃক একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে এ ধরণের হত্যাকে অবশ্যই বর্বরোচিত গণহত্যাই বলতে হবে।দায়িত্বশীল রাষ্ট্র হলে পাকিস্থান সরকার পরেও এগুলোর বিচার করতে পারত।তাই আমার হৃদয়ের গভীর থেকে এই গণহত্যার নিন্দা জানাই এবং এখনও এর বিচার দাবী করি।


ছবিসূত্রঃ-নেট

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই মার্চ, ২০১৬ দুপুর ২:২৭

কল্লোল পথিক বলেছেন:





অনেক গুরত্ব পূর্ণ পোস্ট।

০৯ ই মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৪:৫৪

মুসাফির নামা বলেছেন: মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ,কল্লোল ভাই।

২| ০৯ ই মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৫:১৩

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:

মেঘনা গুহ ঠাকুরতার দেয়া তথ্যমতে মৃতসংখ্যা ছিল ৩০০ জন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিরিষতলায় উপাচার্যের বাসভবনে, যারা নিহত হয়েছেন তাদের স্মরণে একটি ¯স্মৃতিস্তম্ব স্থাপন করা হয়েছে, সেখানে পুরোবছরে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন বিভাগের ছাত্র,কর্মচারী,শিক্ষক সহ নিহত হয়েছেন ১৪৯ জন।এর সবাই আবার ঐ রাতেও নয় আবার ঐ স্থানেও নয়, বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন স্থানে নিহত হয়েছেন।তাহলে একজন ব্যাটালিয়ান কমান্ডারের হিসাবে বা নিজের ক্রেডিট বাড়ানোর জন্য সংখ্যাটা ফুলিয়ে ফাপিয়ে বলেছেন।

সং্খা গণনা তখন সম্ভব ছিলনা

০৯ ই মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৫:২০

মুসাফির নামা বলেছেন: এটা আপনার মতামত।কিন্তু একজন সেনা কর্মকর্তার এগুলো দ্বায়িত্বের মধ্যে পড়ে।

৩| ০৯ ই মার্চ, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৫৮

কথাকথিকেথিকথন বলেছেন: বর্বর হত্যাযজ্ঞ নিয়ে কঠিন ইতিহাস তুলে ধরেছেন । ভাল লেগেছে । ৭১ এর অনেক কিছুই জানা অজানার ধোঁয়াশায় রয়ে গেছে, কারণ পরিস্থিতিগুলো ভয়ানক ছিলো ।

আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ।

০৯ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ৯:৫৪

মুসাফির নামা বলেছেন: দুঃখজনক হলেও সত্য ডকুমেন্ট ভিত্তিক প্রতিবেদনগুলো হারিয়ে যাচ্ছে। ফলশ্রুতিতে মুক্তিযুদ্ধ একসময় পৌরাণিক কাহিনীতে রুপান্তরিত হবে।

৪| ০৯ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১১:৩৮

বিদ্রোহী চাষী বলেছেন: না জানা অনেক ইতিহাস জানলাম।

০৯ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১১:৪৭

মুসাফির নামা বলেছেন: মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

৫| ০৯ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১১:৪৩

শরণার্থী বলেছেন: দায়িত্বশীল রাষ্ট্র হলে পাকিস্থান সরকার পরেও এগুলোর বিচার করতে পারত।তাই আমার হৃদয়ের গভীর থেকে এই গণহত্যার নিন্দা জানাই এবং এখনও এর বিচার দাবী করি।
পুরোপুরি একমত।

০৯ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১১:৫০

মুসাফির নামা বলেছেন: বিবেকের দাবী সকল হত্যাকান্ডের বিচার।

৬| ০৯ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১১:৫৭

কামরুল হাসান বলেছেন: ধন্যবাদ, ডকুমেন্ট ভিত্তিক ইতিহাস লেখার জন্য।

১০ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১২:০৮

মুসাফির নামা বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ।

৭| ১১ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ৩:৪২

চাঁদগাজী বলেছেন:


ছেলেমেয়গুলোকে ইউনিভার্সিটি থেকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়ার দরকার ছিলো।

১১ ই মার্চ, ২০১৬ দুপুর ২:২১

মুসাফির নামা বলেছেন: আন্দলনে বিশৃঙ্খলা সহজে লক্ষনীয়। সঠিক দিকনির্দেশনা ছিলনা বললেই চলে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.