নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কাজী মুস্তাহিদুজ্জামান

কাজী মুস্তাহিদুজ্জামান › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভালবাসার প্রত্যাবর্তন !

২৭ শে জানুয়ারি, ২০১২ বিকাল ৩:১২

মিনহাজ, বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান । তার বাবা একজন অধ্যাপক এবং মা গৃহিণী । বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান হওয়ার কারনে সে অনেক আদর যত্নের মধ্যে বড় হয়ে ওঠে । বাবা শিক্ষক হওয়ার কারনে স্বভাবতই তাকে ছোটবেলা থেকেই তাকে লেখা-পড়ার প্রতি অনুরাগী হতে হয় (হতে বাধ্য হয়) । ভাল ছাত্র হওয়ার কারনে সে সব সময় লেখাপড়ার মাঝে ডুবে থাকে । এ জন্য সে সবার কাছে সমাদৃত হয়, পরিবার সমাজ থেকে শুরু করে তার শিক্ষকেরা ও তাকে খুব ভালোবাসে পছন্দ করে । জীবনে কোনোদিন কোন ক্লাসে সে ২য় হয় নি । এভাবে তার বড় হয়ে ওঠা । লেখা পড়া বাদে তার অন্য কোন ভাবনা-চিন্তা কখনো মাথায় আসেনি । লেখা পড়াকেই সে তার অন্তঃকরণে গেথে নিয়েছে ।







ফারহানা, বাবা মায়ের তিন সন্তানের মাঝে সে সবার বড় । বাবা মায়ের বড় সন্তান হিসেবে তার আদর ভালবাসার অভাব হয়নি । কিন্তু ফারহানার বাবা রফিক সাহেব সবসময় ছেলে মেয়ের খোঁজ খবর রাখেন কোথায় কে গেল, কোথায় কে কি করছে ইত্যাদি ইত্যাদি । তিনি ছেলে মেয়েদের কখনো কোন অভাবে রাখেননি কোন কষ্ট পেতে দেননি । কিন্তু এত কিছুর মধ্যেও তিনি কড়া শাসনের মধ্যে রাখেন । বিশেষ করে ফারহানাকে কারন মেয়ে বড় হচ্ছে সে যদি আবেগের বশবর্তী হয়ে কোন ভুল করে বসে এটাই তার প্রধান ভয় । তিনি সবসময় মেয়ের লেখা-পড়ার খোঁজ রাখেন । মেয়ে কে বাইরে বেশি একটা যেতে দেন না কেবল মাত্র স্কুল এবং কোনো আত্মীয় বাড়ি বেড়াতে যাওয়া ছাড়া, তাও আবার হয় মায়ের সাথে কিংবা ভাই বোনের সাথে । বর্তমান যুগটাকেই তিনি ভয়পান । বখাটে ছেলেদের উপদ্রব তাকে আরও বেশি শঙ্কিত করে তোলে । ফারহানা যখন স্কুলের পাঠ চুকিয়ে অর্থাৎ এস, এস, সি পাশ করে কলেজে ভর্তি হয় নিজেকে মানিয়ে নিতে একটু কষ্ট হলেও কয়েকদিনের মধ্যে সব ঠিক হয়ে যায় । তার কলেজের সকল বান্ধবীদের মোবাইল ফোন থাকলেও তার কোন ফোন নেই । এজন্য তার নিজেকে ছোট ছোট লাগে। সে বাড়িতে গিয়ে মায়ের কাছে একটা ফোনের আবদার করে । ফারহানার মা জোহরা খাতুন তার বাবার কাছে মেয়ের আবদারের কথাটা জানায় কিন্তু রফিক সাহেবের এক কথা মেয়েকে তিনি ফোন কিনে দিবেন না । কারন তিনি মনে করেন যে মেয়ে কে মোবাইল কিনে দিলে সে ভালকরে লেখাপড়া করবে না আর তাছাড়া এটার অপব্যবহার করতে পারে । ফারহানা বেচারি আর কি করবে মন খারাপ করে কলেজ করতে থাকে নিয়মিত । বান্ধবীদের সবাইকে তার বাড়ির মোবাইল নাম্বার দিয়ে আসে যদি তাকে কোন প্রয়োজন হয় তাহলে যাতে তার সাথে যোগাযোগ করতে পারে । একাদশ শ্রেণীতে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হওয়ার কারনে তাকে নিয়মিত ক্লাস করতে হয় কারন প্রায় দিন তার ব্যাবহারিক ক্লাস থাকে । একদিন সে আত্মীয়র বাড়ি বেড়াতে যাওয়ার জন্য কলেজে যেতে পারেনি কিন্তু ওইদিন ক্লাসের ফিজিক্স স্যার সবাইকে বলেন যে আগামী কাল গুরুত্বপূর্ণ একটা ক্লাস হবে তাই যারা আজ ক্লাসে আসেনি তাদের সবাই কে খবর দিতে । ফারহানার বান্ধবীরা তাদের বাড়ি ফোন করে কিন্তু তাদের বাড়ির ফোন বন্ধ থাকার কারনে তাকে পায় না । এ জন্য ফারহানা খবর পায়না এবং ক্লাস সে মিস করে । পরে ক্লাসে গেলে তার বান্ধবীরা তাকে খুব করে ধরে একটা ফোন নেওয়ার জন্য । সে বাড়ি এসে তার মাকে একথা বলে । তার মা সমস্যার কথা চিন্তা করে তার বাবার কথা গ্রাহ্য না করে তাকে একটা মোবাইল কিনে দেয় । ফোন কেনার পর যথারীতি তার আপন আত্মীয় এবং ক্লাসের বান্ধবীদের ছাড়া আর কাউকেই ফোন নাম্বার দেয়নি । ফারহানার ক্লাসের সবচেয়ে ক্লোজ বান্ধবী রিতা । রিতার সাথেই ওর সবচেয়ে বেশি কথা হয় ফোনে ওরা দুজন নিজেদের মধ্যের সব কথা একে অন্যের কাছে শেয়ার করে তাই ওরা কে কি করেছে, কে কোথায় বেড়াতে গিয়েছিল, কে আজ কি করবে , কে কততুকু পরেছে , কে কখন কলেজে যাবে ইত্যাদি ইত্যাদি । একবার গল্প জুড়লে ওদের কথার জাল যেন ছড়াতেই থাকে । এ ছাড়া ফারহানার ফোন এ ওর মামা কিংবা খালা ফোন করে ওদের খোঁজ নেয়।







এদিকে মিনহাজের যখন এইচ, এস, সি পরীক্ষা শেষ হয় ও তখন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রস্তুতি নিচ্ছিল । সে একটা কোচিং সেন্টারে ভর্তি হয় । ও সবসময় লেখা পড়া নিয়ে ব্যস্ত থাকার কারনে কখনো মোবাইল নিয়ে তেমন কোন ফাজলামো করার সময় পেতনা বা কথাবার্তা তেমন বলত না । ওর বন্ধুবান্ধব অনেকে বিভিন্ন জায়গায় কথা বলতো । মোবাইলে অনেকে মেয়েদের সাথে সম্পর্ক করতো এগুলো ওর বন্ধুরা বলাবলি করতো কিন্ত মিনহাজের এগুলো পছন্দ হতোনা । ও সবসময় এগুলো এড়িয়ে চলতো । তো পরীক্ষা শেষ এরকম সময় ওর সময় কাটছিল না । তাই একদিন ও ফোন নিয়ে একটা রং নাম্বারে কল করে । ওই নাম্বারটা হল ফারহানার । যথারীতি ও প্রান্তথেকে ফারহানা কল রিসিভ করে এবং জানতে চায় আপনি কে ? মিনহাজ তখন কথা না বলে লাইনটা কেটে দেয় । কিছুক্ষণ পরে ফারহানা ওর কল ব্যাক করে এবং একটু মিথ্যার আশ্রয় নেয় আর বলে যে সে বিবাহিত তার একটা বাচ্চা আছে । সে আরও বলে যে তার স্বামী বাসায় আসলে কল দেখলে খুব রাগ করবে তাই সে যেন তাকে আর ফোন না দেয় । মিনহাজ এতক্ষণ ওর কথা গুলো শুনছিল এবং তার পর সে মুখ খুলল । সে বলল যে ঠিক আছে সে সবসময় ফোন করবে না এবং সে ফারহানার নাম জিজ্ঞেস করল , ফারহানা তার নামটা বলল । মিনহাজ এ সময় ফারহানার ছেলের বয়স জিজ্ঞেস করল ফারহানা তখন বলল ৫ বছর । মিনহাজ যাচাই করার জন্য বলল যে সে পিচ্চিটার সাথে কথা বলবে । এ মত অবস্থায় ফারহানার এক চাচাতো ভাইয়ের ছেলে তার কাছেই ছিল সে ওই পিচ্চিটাকে নিজের ছেলে সাজিয়ে কথা বলতে বলল “ সে বলল একটু কথা বলতো বাবু এই আঙ্কেল এর সাথে” তখন পিচ্চিটা কথা বলল আর ফারহানা শুনতে লাগল এবং পিচ্চিটাকে বিভিন্ন কথা শিখিয়ে দিতে লাগল । মিনহাজ তখনই সন্দেহবোধ করল পরে ফারহানার সাথে কথা বলতে লাগল । ফারহানা মিনহাজকে তার নাম জিজ্ঞেস করল মিনহাজ তার নাম বলল । এরপর ফারহানা মিনহাজের বাড়ি কোথায়, সে কিকরে কোথায় পড়ে ইত্যাদি জিজ্ঞেস করল । মিনহাজ ওই মুহূর্তে সবকিছু বলতে প্রস্তুত ছিলনা তাই সেও কিছু মিথ্যার আশ্রয় নিল । সে তার বাড়ির ঠিকানা এবং সে যে কলেজে পড়ত সেটা না বলে অন্য একটির নাম বলল । তারপর বেশ কিছুক্ষণ কথা বলার পর তারা ফোন কেটে দিয়ে বিদায় নিল । এরপর বেশ কিছুদিন পরে মিনহাজ আবারো ওই নাম্বারে কল করল এবার ফারহানা ফোনের কাছে না থাকায় ফারহানার মা ফোন রিসিভ করল । মিনহাজ ভিন্ন কণ্ঠের আওয়াজ পেয়ে লাইনটা কেটে দিল । এরপর ফারহানা রিসিভ কলে মিনহাজের নাম্বারটা দেখে তাকে ফোন করল । মিনহাজ যথারীতি তার পূর্ব পরিচয়ের মাধ্যমেই কথা বলল বেশ কিছুক্ষণ এরপর সে ফারহানাকে জিজ্ঞেস করল পিচ্চিটা কেমন আছে এবং সে পিচ্চিটার সাথে কথা কথা বলতে চাইল । এবার ফারজানা পড়ল বিপদে কারণ সেই পিচ্চিটা তো তখন কাছে ছিল না । ফারহানা বুদ্ধি করে উত্তর দিল যে পিচ্চিটা এখন বাইরে গেছে খেলছে । মিনহাজ তখন কার মত বিদায় নিল । পরে একদিন মিনহাজ আবার ফোন করল ফারহানার মোবাইলে ফারহানা তখন ব্যস্ত ছিল তাই কথা বলতে অপরাগতা জানাল মিনহাজ ঠিক আছে বলে কেটে দিল । মিনহাজ এবার সাতপাঁচ ভাবতে লাগল এবং সে সিদ্ধান্ত নিল যে সে ওই মেয়েকে আর বিরক্ত করবেনা এবং তাকে সে সত্য কথা বলে দিবে ও তার কাছে ক্ষমা চেয়ে বিদায় নিবে । যথারীতি পরে মিনহাজ আবারো কল করল ফারহানাকে । এখন ফারহানা কল রিসিভ করল এবং মিনহাজ কথা বলা শুরু করল । মিনহাজ প্রথমে সবাই কেমন আছে জানতে চাইল যেমন ফারহানার স্বামী, সে ও তার পিচ্চি সম্পর্কে । এরপর মিনহাজ ফারহানাকে বলল যে সে তার ফোন নাম্বারটা রং নাম্বার এ কল করেছিল(যদিও ইতিপূর্বে ফারহানা তাকে অনেকবার তার মোবাইল নাম্বার কোথায় পেয়েছিল জিজ্ঞেস করেছিল কিন্তু মিনহাজ বলেনি কৌশলে এড়িয়ে গিয়েছিলো)। নাম্বারের ডিজিট গুলো তার নাম্বেরর সাথে এলোমেলো ভাবে মিলিয়ে । এবং সে যে ঠিকানাটা বলেছিল সব মিথ্যে এমনকি সে যে কলেজে পড়ত সেটার নামও সে মিথ্যা বলেছিল । এ জন্য সে দুঃখিত তাই ফারহানা যেন তাকে ক্ষমা করে দেয় এবং সে একই সাথে মহান আল্লাহ্‌ রাব্বুল আলামিনের কাছে ও ক্ষমা চাইল । এবং সে আরও বলল যে সে তাকে আর কখনো বিরক্ত করবে না । মিনহাজের এই কথা গুলো শুনে ফারহানার ও ভ্রম ভাঙ্গল । সে তখন মিনহাজের কাছেও ক্ষমা চাইল এবং সেও বলল যে আসলে তার কোনদিনও বিয়ে হয়নি ও তার কোন ছেলে মেয়েও নেই । সে সবে মাত্র এস, এস, সি পাশ করে কলেজে পড়ছে । সে আবারো মিনহাজের কাছে ক্ষমা চাইল । তখন মিনহাজ বলল যে, সে(ফারহানা) তার কাছে ক্ষমা চাচ্ছে কেন ক্ষমা তো করবেন মহান আল্লাহ্‌। তাই মিনহাজ ফারহানাকে আল্লাহ্‌র কাছে ক্ষমা চাইতে বলল । এর পর আরও কিছুক্ষন কথাবলার পর সেদিনের মত তারা বিদায় নিল । পরদিন মিনহাজ আবারো ফারহানা কে কল করল তারা নিজেদের জীবনের ঘটে যাওয়া নানা ঘটনা শেয়ার করল । তাদের জাবনের আনন্দ, বেদনা ও মজার সব ঘটনা কোন কিছুই বাদ গেল না । সবই একে অপরের কাছে ভাগ করে নিল । একপর্যায়ে মিনহাজ ফারহানাকে বলল, “ আমি কাউকে প্রচণ্ড ভালবাসতে ইচ্ছা করে কিন্তু সাহস পাইনা” ফারহানা বলল কেন ? তখন মিনহাজ ফারহানাকে বুঝিয়ে বলল যে, কোন মেয়েকে সে প্রচণ্ড ভাবে ভালবাসল কিন্তু কিছুদিন পরে যদি ওই মেয়ের বিয়ে হয়ে যায় তবে সেই দুঃখটাতো সে সহ্য করতে পারবে না তার প্রচণ্ড কষ্ট হবে । কারণ এই মুহূর্তে তো তার পক্ষে বিয়ে করা সম্ভব নয় । ফারহানা ভেবে বলল যে , তারতো এখন বিয়ে হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই সে এখন বিয়ে করবে না । আর বাড়ি থেকে যদি বিয়ের ব্যাপারে চাপ দেই তবে সে কোন একটা দুর্ঘটনা ঘটাবে । এজন্য বাড়ি থেকে তাকে বেশি চাপাচাপি করেনা বিয়ের ব্যাপারে কারণ সে এখন পড়তে চায় এবং আরও অনেক দূর এগিয়ে যেতে চায় । এভাবে একে অন্যের অবস্থা জানার পরে কথার ছলে তাদের মধ্যে ভাবটা আরও গভীর হতে থাকে । একপর্যায়ে তাদের মনের অজান্তে ভালোবাসা এসে তাদের মনের ভিতরে বাসা বাঁধে । এটা তারা বুঝতেও পারে না । হটাৎ একদিন ফারহানার ফোনে তার মামা ফোন করে । অনেক দিনপর তার মামা ফোন করায় অনেকক্ষণ ধরে কথা বলে এবং জানতে চায় সে এখন কি করছে, কোথায় পড়ছে পড়ালেখা ঠিক মত করছে কিনা বাড়ির সবাই কেমন আছে ইত্যাদি ইত্যাদি । তার সাথে কথা শেষ হলে তার মায়ের সাথে কথা বলে অনেকক্ষণ ধরে ঠিক এই সময় মিনহাজ ফোন করে ফারহানার মোবাইলে এবং তা ওয়েটিং দেখতে পায় । এভাবে মিনহাজ কয়েকবার চেষ্টা করে কিন্তু ফারহানার মামা কথা বলার কারনে সে কল রিসিভ করতে পারেনা । মিনহাজ বিরক্ত হয় এবং অন্য কিছু ভাবতে শুরু করে । এমত সময় ফারহানার মামার কথা শেষ হলে সে তাড়াতাড়ি মিনহাজকে কল ব্যাক করে তখন মিনহাজ তার(ফারহানা) কল কেটে দিয়ে আবার কল করে কিন্তু মিনহাজ কল ব্যাক করার ঠিক আগ মুহূর্তে ফারহানার বান্ধবী মিতা কল করে ফারহানা সেটা রিসিভ করলে মিনহাজ আবারো তার(ফারহানা) ফোন ওয়েটিং দেখে । এবার সে(মিনহাজ) মনে মনে ভীষণ রেগে যায় । এদিকে মিতা ফারহানার সাথে পূর্বের ন্যায় প্যাঁচাল শুরু করে দেয় । মিনহাজ ও দিকে ওয়েট করতে করতে মনে মনে ভীষণ ক্ষুণ্ণ হয় । এর আগেও অবশ্য মিনহাজ ফারহানার ফোন ওয়েটিং পেয়েছিল কিন্তু তখন কিছু মনে করেনি এবং কিছু বলেও নি । তখনও ফারহানার মিতার সাথে কথা বলার কারনে ওয়েটিং ছিল । মিতার সাথে কথা শেষ হলে ফারহানা তাড়াতাড়ি আবারো মিনহাজকে কল ব্যাক করে । এবার মিনহাজ তার রাগ চাপিয়ে রাখতে পারেনা সে ফারহানাকে সরাসরি না বললেও আকারে ইঙ্গিতে ফোন ওয়েটিং এর কথা ফারহানাকে জানায় । ফারহানা তখন মিনহাজকে বলে যে তার মামা ফোন করেছিল তার মায়ের সাথে কথা বলেছিল এবং পরে তার বান্ধবী কল করেছিল । কিন্তু মিনহাজ সেটা আমলে না নিয়ে ফারহানার সাথে ভারি গলায় কথা বলে অনেকটা রাগ রাগ ভাব নিয়ে । এবং ফোনটা কেটে দেয় । পরদিন রাতে অর্থাৎ প্রায় ১১টা হবে ফারহানা মিনহাজের কাছে কল করে কিন্তু তখনও মিনহাজের রাগ প্রশমিত হয়নি যদিও সারাদিন অনেক কষ্ট পেয়েছে সে । তাই সে রাগান্বিত স্বরে কথা বললেও আস্তে আস্তে স্বাভাবিক পর্যায়ে ফিরে আসার চেষ্টা করছিল । ফারহানা এবং মিনহাজের কথা বলার মাঝে ফারহানার বাবা দেখতে পায় যে তার মেয়ে এত রাতে কার সাথে কথা বলছে । তিনি তৎক্ষণাৎ ফারহানার ঘরে ঢুকে, ফারহানা তার বাবাকে ঘরে ঢুকতে দেখে তাড়াতাড়ি লাইনটা কেটে দেয় । রফিক সাহেব ফারহানার কাছ থেকে মোবাইলটা কেড়ে নেয় এবং সেটা বন্ধ করে দিয়ে ঘরে নিয়ে আটকে রাখে । এদিকে মিনহাজ আরও প্রচণ্ড রেগে যায় এবং মনে মনে ভাবে যে আর সে কখনো ফারহানার সাথে কথা বলবেনা । ওদিকে ফারহানাতো মিনহাজের সাথে যোগাযোগ করতে না পেরে বিছানায় পড়ে কেঁদে কেঁদে অস্থির । মিনহাজ সেদিনের রাতে রেগে এবং মন খারাপ করে ঘুমিয়ে পড়ে । পরদিন তার ফারহানার জন্য কষ্ট হতে থাকে । তবুও সে ফারহানাকে কল দেয় না সে ভাবে যদি ফারহানা সবকিছু ভুলে তাকে আগে কল করে তবে সে কথা বলবে এবং তার খোঁজ নিবে । কিন্তু যখন সে দেখল যে সকাল পেরিয়ে দুপুর হচ্ছে তখনও ফারহানা তাকে কল করেনি তখন তার মনে সন্দেহ ও দয়া হল যে ফারহানা কি কোন বিপদে পড়ল ? তৎক্ষণাৎ সে সবকিছু ভুলে ফারহানার নাম্বারে কল করল এবং সে দেখল ফারহানার ফোন বন্ধ । তখন তার সন্দেহ আরও ঘনীভূত হল যে নিশ্চয় ফারহানা কোন বিপদে পড়েছে । কিন্তু কি বিপদে পড়তে পারে মিনহাজ ভাবতে থাকে ফারহানা কি অসুস্থ ? কিংবা তার কি পরিবার থেকে চাপ দিয়ে বিয়ে দিয়ে দিল ? কিন্তু না বিয়ে দিলে তো অন্তত পক্ষে তাকে জানাতেত পারত । এরকম আরও সাত-পাঁচ ভাবতে লাগল মিনহাজ এবং ফোন দিতে থাকল ফারহানার ফোনে । কিন্তু ফোনে কল কিছুতেই ঢুকছে না । যতবার মিনহাজ কল করছিল ততবার সে ভাবছিল আল্লাহ্‌ এবার যেন ফোনটা চালু হয় এবং কল টা ঢুকে । সারা দিনে আস্তে আস্তে মিনহাজ ভালকরে বুঝতে থাকে যে অচেনা অজানা এবং ফোনে পরিচয় হলেও এই কয়দিনে ফারহানা তার মনে কতটা স্থান দখল করে নিয়েছে । সে তাকে কতটা ভালবেসে ফেলেছে । কিন্তু কি করবে সে ? সে তো ফারহানার বাড়ির ঠিকানা জানেনা, তাকে কখনো দেখেওনি, কিভাবে তাকে খুজে পাবে ? শুধুমাত্র ফারহানার ফোন নাম্বার ছাড়া ফারহানার পরিচিত অন্য কারো ফোন নাম্বারও সে জানেনা যে তার একটু খোঁজ নিবে যে তার কি হয়েছে । এভাবে ভাবতে ভাবতে ২দিন কেটে যায় কিন্তু ফারহানার কোন খোঁজ সে পায়না । দুদিন পরেও রাতে ঘুম আসছে না মিনহাজের সে সুধু ফারহানার কথাই ভাবছে ভাবতে ভাবতে কখন যে সে ঘুমিয়ে পড়ে নিজেও জানে না হটাৎ ১২টার দিকে তার ফোনে কল বেজে ওঠে যদিও নাম্বারটা অপরিচিত সে কলটা রিসিভ করে তখন অন্য প্রান্ত থেকে ফারহানার কণ্ঠ শুনে টের পায় যে সেটা ফারহানা । আবেগে দুজনই কেঁদে ফেলে এবং মিনহাজ ফারহানাকে জিজ্ঞেস করে যে তার কি হয়েছিল গত দুদিন ? তখন ফারহানা মিনহাজকে সব খুলে বলে যে তোমার সাথে যখন কথা বলছিলাম তখন বাবা দেখে ফেলেছিল এবং মোবাইলটা কেড়ে নিয়ে আটকে রেখেছে । তাই তোমার সাথে কোন যোগাযোগ করতে পারিনি । আজ অনেক কষ্টে মায়ের মোবাইলটা চুরি করে তোমাকে ফোন করেছি । তুমি ভাল আছতো ? তখন মিনহাজ বলে যে, এই দুদিনে আমি যে কষ্ট পেয়েছি সারাজিবনেও এরকম কষ্ট পায়নি । তখন মিনহাজ ফারজানাকে বলে যে, তুমি আর কখনো আমাকে ছেড়ে হারিয়ে জাবেনা তো ? এরকম আরও অনেক আবেগঘন কথা বলে সিদ্ধান্ত নেয় যে আগামিকাল তারা দুজনে পার্কে দেখা করবে যাতে আর কখনো যেন তারা হারিয়ে না যায় । আর গেলেও যাতে খুজে বের করতে পারে । এভাবে তাদের ভালোবাসার প্রত্যাবর্তন ঘটে এবং পরদিন তারা পার্কে দেখা করে তাদের ভালোবাসার গন্তব্যের উদ্দেশ্যে অজানার পথে যাত্রা শুরু করে ।



১৮/০৯/২০১১-২০/০৯/২০১১







বিঃদ্রঃ প্রিয় পাঠক আমি কোন পেশাদার লেখক নই । হটাৎ করে গল্পটা মাথায় আসল তাই লিখে ফেললাম । তাই লেখার মাঝে কোন ভুলত্রুটি থাকলে আপনারা সবাই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। আর একটা কথা না বললেই নয় আমি সেই ক্লাস 6 থেকেই বাংলা ব্যাকরনের যতি বা ছেদ চিহ্ন অধ্যায়টি ভাল পারতাম না বা ভাললাগতোনা তো এজন্য এখানেও ভাল করে সেটা ব্যাবহার করতে পারিনাই এত কিছুর পরেও যদি গল্পটি আপনাদের কাছে নুন্যতম ভাললেগে থাকে তাহলে মন্তব্য করে আমাকে উৎসাহিত করবেন আশাকরি।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.