![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রবাসী বাঙালীদের মন শত ব্যস্ততার মাঝেও অন্তত একটা দিন কিছুটা সময় নিজেদের মতকরে কাটানোর জন্য ব্যাকুল হয়ে থাকে। আর সেটা যদি হয় ভ্রমণ ,তবেতো হবেনা কোন কথন। তুরস্কে ভূমধ্যসাগরের পার্শ্ববর্তী মায়াবী এক শহরের নাম আদানা। এই শহরে উঁকি দিলেই এর পরতে পরতে লুকিয়ে থাকা মায়াবীজালে আটকা পড়বে যেকেউ, নেইযে সন্দেহ তাতে কোন। শহরেতে মোরা আগে থেকেই ছিনু ৯ জন, যোগ দিল এসে নতুন আরো তিনজন, তাদের নিয়েই এবারের ভ্রমণ আয়োজন। পাহাড়ি আঁকাবাঁকা পথধরে ছুটে চলেছি আমরা, হঠাত গাড়ির জানালা দিয়ে অনেক দূরে সুউচ্চ দুই পাহাড়ের মাঝে একটা খাঁজ দেখিয়ে হাসান আমাকে জিজ্ঞেস করছে ,মুজাহিদ ভাই ওটা কি? দীর্ঘ নীরবতা ভেঙ্গে একটু গলা ঝেড়ে জবাব দিলাম, আরে বোকা সেখানেইতো লুকিয়ে আছে আসল রহস্য।খানিকবাদে গাড়ি থেকে নেমে ভোঁ দৌড় দিল হাসান,কিন্তু খাঁজের কাছে আসতেই তার চোখ চড়কগাছ, এত ভয়ংকর সুন্দর সে যে আগে খুব কম দেখেছে সেটা তার অভিব্যক্তিই দেখে যেকেউ হলফ করে বলে দিতে পারে। পোড়া পাথরের লাল আলোয় যেন আলোকিত চারপাশ, এরি মাঝে ভাই ,ভূমি থেকে প্রায়, ৬০০ ফুট উঁচু ,পাহাড়ের নিচু দিয়ে ছুটে চলেছে নীলাভ ঝর্ণাধারা, সে কি মনভুলানো ,হৃদয়জুড়ানো অপরূপ সজ্জা। এলোমেলো আর খাঁজকাটা সোজা খাঁড়া পাহাড়ের একপাশ কেটে ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য বানানো হয়েছে দীর্ঘ ৬ কিলোমিটার রাস্তা । লক্ষ্য একটায় , টূরিস্টদের সত্যিকার প্রকৃতির কাছাকাছি নিয়ে যাওয়া।গা ছমছমে এই রাস্তায় অনেক কিছু মনকে শিহরিত করবে বারবার,সাথে পাহাড়ি বাদুড়ের কর্কশ ডাক হয়তো রোমাঞ্ছটা বাড়িয়ে দিবে কয়েকগুণে। যাহোক রাস্তার শেষে দেখা মিলে গেল আরেক পুরনোকৃত্ত্বীর “জার্মান ব্রীজ” যেটি অধুনা “জেমস বন্ড ব্রীজ” নামে পরিচিত ( জেমস বন্ড সিরিজের "স্কাইফল" ছবির কিছু অংশ এখানে ধারণ করা হয়েছে) ।ওসমানীয় সাম্রাজ্যের প্রায় শেষের দিকে ১৯০৭ সালে ইস্তাবুলকে- বাগদাদ- হিজাজ মহাসড়কে যুক্তকরে যোগাযোগব্যবস্থা আরো উন্নত করার লক্ষ্যে ২১ জন শ্রমিক ও একজন জার্মান ইঞ্জিনিয়ারের নেতৃত্বে এর কাজ শুরু হয়, দীর্ঘ ৫ বছর পরে ১৯১২ সালে এটি ট্রেন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়। জার্মানির পক্ষ থেকে এটি নির্মিত হয় বলে এটি জার্মান ব্রীজ নামেই পরিচিতি পাই। দৈঘ্যে ১৭২ মিটার লম্বা চার পিলার বিশিষ্ট এই ব্রীজটির অনন্য বৈশিষ্ট্য হল, ইস্পাতের খাঁচায় পাথর বুনন কৌশল ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে এটি, এর বৃহদাকার পিলারগুলো, যেগুলোর উচ্চতা মাটি থেকে প্রায় ৯৯মিটার।
এবারের যাত্রার আমেজটা ছিল একটু ভিন্নমাত্রার, কারণ একটাই আদানার সব বাঙালিরা ছিল এবারের যাত্রাসংগী। যাত্রাপথে সবার সরব উপস্থিতি আনন্দের মাত্রাটা বাড়িয়ে দিয়েছিল অনেকগুণে।
©somewhere in net ltd.
১|
০৬ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ৩:৪১
লাবিব ফয়সাল বলেছেন: ভালো লিখেছেন।