![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
তড়িৎ প্রকৌশলী। টুইটার : https://twitter.com/mztanim88
১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বুধবার রাত্র ১:৩০ সিলেট,
প্রিয় মৃন্ময়ী,
আজ আমার একটুও ভালো লাগছে না। আজ কেন ইদানীং আমার দিনগুলো ভালো যায় না। আজ তো ভাল যাবার প্রশ্নই আসে না । আজ পহেলা ফাল্গুন । কিছুদিন আগে ক্যাম্পাসে বসন্ত সেমিস্টার এর শিক্ষার্থীরা এসেছে । তাদের পদ চারণায় পুরো ক্যাম্পাস মুখরিত । অনেক গুলো নতুন প্রান , দেখলেই মন ভাল হয়ে যায় ।
তুমি নেই । অনেক গুলা বছর তুমি নেই । শুধু এই প্রাণের সন্চার দেখে দেখে আমি কাটিয়েছি । এই মুখ গুলা আমাকে এখন বাচি্যে রেখেছে । প্রতিদিন ঘুম ভাঙ্গলেই ছুটে যাই ক্যাম্পাস এ । আমার ঘুম ভাঙ্গা মানে তোমাকে ভোলার অভিনয় শুরু করা । আমার ক্লাস থাক অথবা নাই থাক । আমার ছুটি থাক আর নাই থাক । আমার একা থাকা যে অসহ্য লাগে । আমি পারি না । অনেক চেষ্টা করেছি , আমি পারি না। এখন একা থাকলেই জলন্ত সিগারেট এর উষ্ণ আস্বাধন আমাকে আবছা করে রাখে ।
তুমি জানতে , আমি কত টুকু কষ্ট পাই একা থাকা । তুমি জানতে পড়া শুনা ছাড়া আমার আর একটাই শখ ছিল , সেটা তুমি । তোমাকে মিথ্যা বলা, তোমাকে রাগানো, তোমার হাতের হালকা একটা থাপ্পড়, তোমাকে ভেংচি কাটা , তোমার বাম গালের তিলটা নিয়ে কত যে কিযে তোমাকে বলেছি । মানষের কতা গুলা শখ থাকে , এখন আমি জানি । একটা ডি.এস.এল.আর, অথবা গিটার, গান, কবিতা । তুমি যতদিন পাশে ছিলা আমি অন্ধ ছিলাম, সম্ববত । এখন শখ আছে , ইন্জিনিয়ারিং ইলেকট্রমেগনেটিক্স বই টা হাতে নিয়ে পড়তে থাকা । যে বই কেউ খুলেও দেখতে চায় না । আমার যে একা থাকতে ভাল লাগে না । তুমি সব জানতে , তাও একা করে রেখেছ আমাকে ।
মনে আছে, কোন এক দুপুরে এক টেবিলে ভুলে রেখেছিলে তুমি চুলের রবার ব্যান্ড। লাল রঙের ছিল ব্যান্ডটি। তুমি কি জানতে আস্তে করে সেটা আমি সরিয়ে নেই? কি অদ্ভুত পাগলামীই না করতাম আমি। তোমার দীঘল কালো চুলগুলো আমি খোলা দেখতে চাইতাম সবসময়। কেন যে বেঁধে রাখতে তুমি? যখন বাতাসে তোমার চুলগুলো হালকা দুলে যেত, সেই দৃশ্যতো ছিল আমার কাছে পৃথিবীর সবথেকে সুন্দর একটি দৃশ্য। মন চাইতো শুধু বার বার দেখি সেই দৃশ্য। সেই ফাল্গুনের দিনটিতে আমি শুধু ঘুরে ফিরে তোমাকেই দেখছিলাম, জানতে কি এই কথা তখন? পেরেছিলে কি বুঝতে?
আরেকদিন কথা মনে আছে , তোমার হাতে ছিল ঐ টিস্যু পেপার টি । তুমি মুখটা মুছে হাতে রেখেছিলে, আমিও তোমার পিছন পিছন হেটে যাচ্ছিলাম । তুমি হয়ত বুঝ নি কখন সেটা তোমার নরম হাতের নাগাল পেরিয়ে মাটিতে ছুয়েছে । জান, সেদিনের সেই টিস্যু পেপার টি এখনও আমার কাছে । ঠিক যেমন পেয়েছিলাম , ঠিক তেমন করে রেখে দিয়েছি ।
আরেকটা কথা মনে আছে ,
হালকা বৃষ্টি হচ্ছিল সেদিন। মন চাইতেই ঘর হতে বের হয়ে সি.এন.জি নিলাম, মিরপুর অরিজিনাল ১০, বেনারসী পল্লী, ২ নাম্বার গেট । চেরিশ এর সামনে । বৃষ্টি তখন আস্তে আস্তে বেড়ে চলেছিল। আমি ভেবেছিলাম পৌছেই তোমায় ফোন করব। কিন্তু কি কারনে তুমি মানা করেছিলে আসতে পারবে না । অনুভব করেছিলে কি কত ভালবাসি তোমাকে? বারবার ফোন দিচ্ছিলে আমায়, কিন্তু আমি তো জানতাম, ফোন ধরলেই চলে যেতে বলবে তুমি। কি দরকার ছিল যাবার। তোমাকে এই বৃষ্টির মাঝে অনুভব করছিলাম। এখনও বৃষ্টি হলে অনুভব করি । একা দাড়িয়ে থাকি বারান্দায় ।
বসন্ত এলেই শরীরের মাঝে নতুন এক উন্মাদনার খোঁজ পাই। নির্লজ্জ হবার সাহস নেই তাই মন খারাপ করে বসে থাকি। বছরের বাকী দিনগুলোতে এতো তীব্রভাবে অনুভব করতে পারি না আর নিজেকে, নিজের ভেতর অন্য এক অস্তিত্বকে।
এখন আমর অনেক গুলা ভাল বন্ধু/ কলিগ হয়েছে । মাঝে মাঝে মনে হয় আমি অনেক লাকি তাদের মত মানুষ পেয়েছি । এখন আমার প্রতি মুহুর্তের ব্যস্ততা তোমাকে ভুলার । হয়ত পারব । নয়ত পারব না । তুমি না হয় অদৃশ্যই হয়ে থাকলে আমার মাঝে ।
একটা কবিতা মনে আছে ,
পথে ধুলোর গড়াগড়ি, চৈত্রের হাতছানি
বসন্ত আবহে শুধু হৃদয়ে কানাকানি।
আমি মিস করি তোমায় । অনেক মিস করি ।
কেমন লিখলাম জানি না। কাউকে মনে করে লিখেছি । জানি না সে দেখবে কিনা । আমার একান্তই নিজের ভাবনা ।
আজ শুধু পহেলা ফালগুন না হিমু দিবসও কিন্তু।
ধন্যবাদ সবাইকে ।
©somewhere in net ltd.