নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নাহিদ০০৭

নাহিদ০০৭ › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমার দেখা সর্বকালের সেরা স্ট্রাইকার

১৬ ই জুন, ২০১৫ দুপুর ২:১৩

আমি সেই দিন এর কথা বলতেছি যেদিন ফুটবল বিশ্ব কিছু সময়ের জন্য থমকে গিয়েছিল। আমি সেই দিনের কথা বলতেছি যেদিন একসাথে
মাদ্রিদিস্তা এবং কিউলস রা কেদেছিল, যে দিন ইন্তারিস্তা
কিংবা মিলানিস্তা রা এক সাথে গলা মিলিয়ে কেদেছিল। আমি এমন এক দিনের কথা বলতেছি যেদিন ফুটবল
বিশ্ব ক্ষণিকের জন্য স্থব্দ হয়েছিল।

একটু ফ্লাশব্যাকে যাওয়া যাক...

বাবা-মায়ের ৩য় সন্তান তিনি। ছোটবেলা থেকেই ছিল ফুটবলের
প্রতি অগাধ আগ্রহ। হবেই না কেনো ? জন্ম যে তাঁর ফুটবলের অপরূপ সুন্দরী
সাম্বা-নগরীতে। রিও দি জানেইরোতে ১৯৭৬ সালের ১৮
সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহন করেন সর্বকালের সেরা স্ট্রাইকার।

“ তাকে যখন প্রথম আমি খেলতে দেখি
তখন সে বাচ্চা ছিল, মাত্র ১৭ বছর বয়স
ছিল তাঁর তখন। সে ক্রুজেইরো এর হয়ে
একটি ম্যাচ খেলতেছিল যেখানে
সে ৫ গোল করে। সেই সময়ই সে ইঙ্গিত
দেয় সে সত্যিকার অর্থেই একজন
ফেনোমেনোন” –
কাফু!


১৯৯৩ সালের ২৫মে মাত্র ১৬ বছর বয়সেই সে তাঁর প্রফেশনাল
ক্যারিয়ার শুরু করে। আর মাত্র ৩মাস পরেই ৭ নভেম্বর ১৯৯৩ সালে বাহিয়ার বিপক্ষে ৫ গোল করে জাতীয় দলের ম্যানেজমেন্ট এর নজর কারেন তিনি। ক্রুজেইরো এর হয়ে ৪৭
ম্যাচে ৪৪ গোল করেন তিনি। ১৯৯৪ সালের ইউএসএ বিশ্বকাপেও ছিলেন তিনি। কিন্তু খেলতে পারেন
নি। বিশ্বকাপের পরে ইউরোপে পাড়ি জমান তিনি। ব্রাজিলিয়ান
কিংবদন্তী রোমারিওর কথায়
রোনালদো পিএসভি তে যোগ দেন।
নিজের ১ম সিজনেই ৩০ গোল করেন
তিনি। ২য় সিজনে হাটুতে ইঞ্জুরি
থাকায় পুরো সিজন খেলতে পারেন
নি তিনি। তবুও ১৩ ম্যাচে ১২ গোল
করে প্রমান করেন ইউরোপিয়ান
ডিফেন্স যতোই শক্তিশালী হউক না
কেনো সেই দূর্গ্য ভাঙতে সাম্বা দেশ
থেকে তাঁর আগমন হয়েছে। ২ সিজনে
৫৮ ম্যাচে ৫৪ গোল তারই প্রমান।
ইতিহাসে নিজেকে স্মরণীয় হয়ে
রাখতে হলে নিজেকে ১০০ বছর
জীবিত থাকা লাগবে না, ১ বছরই
যথেষ্ট। প্রমান চান ? লিওনেল মেসি
কে চিনেন ? বর্তমান সময়ের সেরা ২
জনের ১ জন তিনি। কারো কারো
মতে এই দশকের সেরা ফুটবলার তিনি।
আবার কারো কারো মতে
ইতিহাসের সেরাদের মধ্যে তিনিও
একজন। ইতিহাসের সেরা একাদশ
বানালে অনেক বিশেষজ্ঞই তাকে
রাখবেন। আমি যতোই মাদ্রিদিস্তা
হই না ক্যানো ? যতোই সেলেসাও
সাপোর্টার হই না কেনো ? তাকে
যতোই ট্যাক্স চোর, মাছি কিংবা
হরমোন রোগী বলি না কেনো তাঁর
ট্যালেন্ট কে অস্বীকার করার সাধ্য
আমার নেই। সেই সেরা ২ জনের ১ জন।
জানেন কি এই মেসির আদর্শ কে ? কে
এই মেসির প্রিয় স্ট্রাইকার ? কাকে
নিয়েই এই মেসি প্লে স্টেশনে
গোলের বন্যা ভাসাতেন ? উত্তর
একটাই – সর্বকালের সেরা স্ট্রাইকার
ফেনোমেনোন রোনাল্ডো
নাজারিও দা লিমা।


১৯৯৬ তে কাতালান ক্লাব বার্সাতে ১৯.৫ পাউন্ডের যোগ দেন তিনি। সেখানে মাত্র ১ সিজন খেলেই
গড়েছেন ইতিহাস। ৪৯ ম্যাচে ৪৭ টি
গোল। আমি আবারো বলছি ৪৯ ম্যাচে
৪৭ টি গোল। আর গোল গুলি কিরকম
ছিল সেগুলো না দেখলে লিখে
বুঝানো অসম্ভব। লা লিগাতে ৩৭
ম্যাচে ৩৪ গোল করে ৯৬-৯৭ তে যে টপ
স্কোরার হয়েছিলেন সেটা ০৮-০৯
পর্যন্ত টিকে ছিল। আরো অনেক বছর
থাকতো যদি না মেসি-রোনালদো
লা লিগায় খেলতেন। ৯৬ তে মাত্র
২০বছর বয়সেই জিতেন ফিফা প্লেয়ার
অফ দ্য ইয়ার অ্যাওয়ার্ড। বার্সার রোনাল্ডোর সাথে ইতিহাসের
যেকোনো প্লেয়ার কে কম্পেয়ার
করতে রাজী আমি। হউক সেটা
পেলে-ম্যারাডোনা কিংবা
স্টেফানো-পুস্কাস র্, শুনতে হাসি
পেলেও এটাই সত্য। বার্সার পিক
টাইমের রোনাল্ডো > যে কেউ।

তারপর সিরি আ তে গিয়ে ইন্টার জয় করলেন।তারপর আবারো ফিরলেন
স্পেনে।এবার বার্সার প্রতিদ্বন্দি ক্লাব রিয়াল
মাদ্রিদে। রাউল! ফিগো! জিদান!
নিস্টলরয়! বেকহাম! তারকা দের
তারকা দের মাঝে থেকেও উজ্জ্বল
রোনাল্ডো। একবার এক সাংবাদিক
গত ৫০ বছরের সেরা ইউরোপিয়ান
প্লেয়ার জিদান কে জিজ্ঞেস
করেছিলেন আপনার ক্যারিয়ারে
খেলা সেরা সথীর্থ আর প্রতিপক্ষ
কে। জিদান ক্ষাণিকের মধ্যেই উত্তরদিলেন সম্ভবত ফেনমেনোন।

রোনাল্ডো হঅলেন সেই প্লেয়ার যিনি রিয়াল-বার্সাতে খেলার
পরেও দু ক্লাবের সমর্থকেরা সমান
ভালবাসে। তিনি সেই প্লেয়ার
যিনি সাদা জার্সি পরে ন্যু ক্যাম্পে
হুংকার দিয়েছেন আবার তিনিই সেই
প্লেয়ার যিনি মেরুন কালো রঙের
জার্সি গায়ে বার্নাব্যুতে মাদ্রিদ
কে কাদিয়েছেন। তিনি সেই
প্লেয়ার যিনি নীল কালো পরে লাল
কালো দের হারিয়েছিলেন আবার
লাল কালো দের হয়ে খেলেও নীল
কালো দের হারিয়েছেন।

“আমি কখনো পেলেকে খেলতে
দেখি নি। কিন্তু আমি
রোনাল্ডোকে দেখেছি। সে
অসাধারণ, সে অনন্য। সে সব কিছুতেই
১ম”। - এমারসন

১৯৯৮ বিশ্বকাপ!
গোটা একটা দেশের চাপ আর
মিডিয়া ?
“প্রভাবলি দ্যা গ্রেটেস্ট প্লেয়ার হু
ইজ স্টিল প্লেয়িং”! এইরকম শিরোনাম
আসতো। অনেক মিডিয়াই রিটার্ন্স
অফ কিং (পেলে) বলেও হেডলাইন
দিয়েছিল। ফাইনালে ব্রাজিল কে
তুলতে তিনি যে ৪ গোল আর ৩ এসিস্ট
করেছিলেন। ফাইনালের আগে
ব্রাজিল ম্যানেজমেন্ট
রোনাল্ডোকে একাদশে রাখেন নি!
ফিফা যখন লাইন আপ চেক
করতেছিলেন তখন তিনি দেখেন
রোনাল্ডো নেই! তিনি তখনই
ব্রাজিল কোচ কে জিজ্ঞেস করেন _
“ wait a minute, where is Roanldo ? Mr.
Zagallo, are you sure there is no mistake ?”
প্রতিটি গনমাধ্যমের ব্রেকিং নিউজ
সহ হেড লাইন ছিল রোনাল্ডো কই ?
যদিও ম্যাচ শুরু হওয়ার প্রায় আধা ঘন্টা
আগে জানানো হয় তিনি খেলবেন।
কিন্তু ফাইনালে তাঁর নিস্প্রভতা
ব্রাজিলকে ভোগায়। আর
রোনাল্ডোর সাজানো মঞ্চে
ইতিহাস লিখেন ইউরোপিয়ান
ইতিহাসের সেরা ২ জনের ১ জন
( জিনেদিন ইয়াজিদ জিদান )।
নেগেটিভ, নেগেটিভ অ্যানড
নেগেটিভ!!

সেদিনই হয়তো প্রমিস করেছিলেন,
নিজ দেশকে এটা এনে দিবেন তিনি।
বছর চারেক পর কোরিয়া – জাপান
বিশ্বকাপ। অসুস্থ থেকে মাত্র সুস্থ
হলেন ইতিহাস লিখতে। আর ইতিহাস
হয়তো তাঁর হাতেই লিখার অপেক্ষায়
ছিল। অলিভার কান এর ভাষায়
রোনাল্ডো এক দুঃস্বপ্নের নাম।
ফাইনালে ২ গোল আর ব্রাজিলের
পেন্টা।
History has been written by Ro9aldo.
এর পর ২০০৬ এর বৃদ্ধ রোনাল্ডো এবং
ধীরে ধীরে জাতীয় দল থেকে অবসর।
এর আগে ৯৮ ম্যাচে ৬২ গোল করেন যা
পেলের পর সর্বোচ্চ। আর ক্লাব ফুটবলে
৩৪৭ ম্যাচে ২৪৭ গোল সঙ্গে একপুস্তক
সুখ-দুঃখের গল্প। এরই নাম তো
রোনাল্ডো। আমার দেখা সর্বকালের
সেরা স্ট্রাইকার।
উনাকে দেখেই ফুটবল বুঝতে শুরু করা,
রোনাল্ডো কাট দেয়া সবই তো তাঁর
জন্যে।ইতিহাসকে নতুন করে লেখা
মানুষটার নামই তো ফেনোমেনোন।
উনাকে নিয়ে লিখতে বসলে কলমের
কালি শেষ হবে, কি বোর্ড টিপতে
টিপতে হাত ব্যাথা হবে কিন্তু
লেখা থামবে না। ধন্যবাদ
রোনাল্ডো।

আর ব্রাজিল! তুমাকে অসঙ্খ্য ধন্যবাদ
এই রকম সন্তান তুমার কোলে জন্ম
দেয়ার জন্যে। অনেক দিন পর লিখলাম।

ভুল ত্রুটি মাফ করবেন। জয়তু ব্রাজিল।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই মে, ২০২০ বিকাল ৫:৩৪

খসরু ওয়াহিদ বলেছেন: নিঃসন্দেহে সর্বকালের সেরা স্ট্রাইকার রোনালদো এবং সর্বকালের সেরা কয়েকজন ফুটবলারের একজন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.