![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ইংরেজি নববর্ষের দ্বিতীয় দিন বৃহস্পতিবার ১৯৭৫।
‘পূর্ববাংলার সর্বহারা পার্টি’ প্রধান নেতা সিরাজুল হক সিকদার ওরফে সিরাজ সিকদারকে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় রাজধানীর অদূরে সাভার এলাকায়। তখন রাত প্রায় সাড়ে ১১টা।
গর্জে ওঠে পুলিশের রাইফেল।
পুলিশ হেফাজতে, হাতে হ্যান্ডকাফ লাগানো অবস্থায় সিরাজ সিকদারের প্রাণ কেড়ে নেয়ার জন্য ধেয়ে আসে রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য পুলিশেরই ছোড়া ঘাতক বুলেট। চারটি বুলেট সিরাজ সিকদারের শরীর ভেদ করে বেরিয়ে যায়। আর একটি বুলেট তার বুক ভেদ করে বের হয়ে যেতে না পারায় অবস্থান নেয় ফুসফুসে। নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে নির্মমভাবে হত্যার শিকার হন সিরাজ সিকদার। এর আগের দিন অর্থাৎ ১ জানুয়ারি চট্টগ্রাম থেকে গ্রেফতার হন সিরাজ সিকদার। এদিনই তাকে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় আনা হয়।
স্বাধীন বাংলাদেশে তত্কালীন শেখ মুজিবুর রহমানের সরকারের আমলে পুলিশের প্রথম আলোচিত ক্রসফায়ারের এ ঘটনার বিবরণ পুলিশের প্রেসনোটের উদ্ধৃতি দিয়ে ছাপা হয় সেই সময়ের বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকায়।
২ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত (৩ জানুয়ারি) প্রায় তিনটায় সিরাজ সিকদারের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে আসা হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
৩ জানুয়ারি (শুক্রবার) সকাল প্রায় সোয়া ১১টায় ময়নাতদন্ত হয়। এদিন দুপুর ২টার সময় সিরাজ সিকদারের পিতা আবদুর রাজ্জাক সিকদার, মরহুমের কয়েক ভাই ও অন্যান্য আত্মীয়-স্বজন হাসপাতাল মর্গে উপস্থিত হন। বেলা সোয়া ২টার সময় রাজ্জাক শিকদার তার ছেলের লাশ শনাক্ত করেন। লাশ সন্ধ্যার আগ পর্যন্ত কড়া পুলিশ পাহারায় লালবাগ থানায় রাখা হয়। সন্ধ্যায় মোহাম্মদপুর গোরস্তানে নিহত সিরাজ সিকদারের লাশ পুলিশ পাহারায় দাফন করেন তার বাবা ও অন্যান্য আত্মীয়-স্বজন। অকালে অবসান ঘটে সিরাজ সিকদারের বিপ্লবী রাজনৈতিক জীবনের। আর সিরাজ সিকদারের এই মৃত্যু প্রসঙ্গে-
তৎকালীন সরকারপ্রধান শেখ মুজিবুর রহমান দম্ভের সঙ্গে বলেন,
‘কোথায় আজ সেই সিরাজ সিকদার’
মুজিব সরকারের আমলে ক্রসফায়ারে সিরাজ সিকদারকে বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যা এবং তাকে নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ওই উক্তি দেশের রাজনীতিতে নানা সমালোচনা ও বিরূপ প্রতিক্রিয়ার জন্ম দেয়। দেশবরেণ্য বুদ্ধিজীবী, রাজনীতিক ও সাংবাদিকরা তাদের লেখায় সিরাজ সিকদার হত্যাকাণ্ডকে শেখ মুজিবুর রহমানের একটি অমার্জনীয় অপরাধ হিসেবে অভিহিত করেন। প্রয়াত বুদ্ধিজীবী ড. আহমদ শরীফ ‘বিপ্লবী বীর সিরাজ সিকদার প্রসঙ্গে’ শিরোনামে লেখায় বলেন, ‘সিরাজ সিকদার আজ আর কোনো ব্যক্তির নাম নয়। সিরাজ সিকদার একটি সংকল্পের, একটি সংগ্রামের, একটি আদর্শের, একটি লক্ষ্যের ও একটি ইতিহাসের অধ্যায়ের নাম।
আমরা মধ্যযুগ কিংবা হিটলার মুসোলিনির আমলে এ ধরনের বর্বরতম ঘটনার নিদর্শন পাই। বুর্জোয়া যে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের কথা বলে থাকে আজকাল, এমনকি আমাদের দেশেও, তাতে সিরাজ সিকদার অপরাধ করে থাকলেও তার বিচার পাবার দাবিতো উপেক্ষিত হতে পারে না। সিরাজ সিকদার যে বিচারবঞ্চিত হয়েছিলেন, সরকারি প্রেসনোটে তখন যা উল্লেখ করা হয়েছিল (জিপ থেকে পালিয়ে যাবার চেষ্টা করলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার গুলিতে তিনি নিহত হন), তা যে বিশ্বাসযোগ্য হতে পারে না। একথা যারা এ প্রেসনোট নিয়েছিলেন তারাও স্বীকার করবেন। আর সবচেয়ে ন্যক্কারজনক হলো তত্কালীন সংসদে প্রধানমন্ত্রীর উল্লসিত আস্ফালন—কোথায় আজ সিরাজ সিকদার?’
এই আওয়ামী লীগ আর সেই আওয়ামী লীগের পার্থক্য নেই কোন, শুধু বয়স ছাড়া।
# দৈনিক আমারদেশ, জানুয়ারি ২, ২০১০।
২| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১১ বিকাল ৩:৪৬
দূর আকাশের নীল তারা বলেছেন: একটা যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ পুর্নগঠনে সিরাজ শিকদার কতটুকু ভুমিকা পালন করেছিলেন? বামপন্থী দল গঠন করে তিনি বা তার দল কতটি ব্যাংক লুট করেছিলেন? স্বাধীন বাংলাদেশে তার হাতে কতজন নিরীহ মানুষ খুন হয়েছিলেন? একটু ইতিহাস ঘেটে দেখবেন।
৩| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১১ বিকাল ৩:৫১
নেটপোকা বলেছেন: @দূর আকাশের নীল তারাঃ
তাতে কি তাকে ক্রসফায়ার করাটা জায়েজ় হয়ে যায়?
৪| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১১ বিকাল ৩:৫৭
দূর আকাশের নীল তারা বলেছেন: @নেটপোকা: মোটেই জায়েজ হয় না। কিন্তু ইতিহাস সবটুকু জেনে নিয়ে নিরপেক্ষভাবে বিচার করুন। সিরাজ শিকদার নিজেও তো ধোয়া তুলসী পাতা ছিলেন না? অথচ, এমনভাবে লেখা হচ্ছে যে, যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ গঠনে সিরাজ শিকদার খুব বড় ভুমিকা রেখেছিলেন। আমি কেবল এই অংশটিরই প্রতিবাদ করেছি মাত্র। ক্রসফায়ারের স্বপক্ষে বলি নি।
৫| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১১ বিকাল ৪:১৯
নেটপোকা বলেছেন: @দূর আকাশের নীল তারাঃ
আমার মনে হয় আপনি এ লেখার সঠিক টোনটিই ধরতে পারেন নি। সিরাজ সিকদারের প্রশস্তি গাইবার জন্য এ পোস্টটি লেখা হয়নি, বরং যে আওয়ামী লীগ সবসময় আইনের শাসনের কথা বলে, শেখ মুজিবকে প্রায় দেবতুল্য একজন মানুষ ও শাসক হিসেবে তুলে ধরে, তাঁর কোন ভুল কখনোই তাদের চোখে পড়েনা এবং এ ব্যাপারে কোনরকম সমালোচনাও সহ্য করতে পারেনা, সেই শেখ মুজিবের হাতেই যে বাংলাদেশে বিচার-বহির্ভূত হত্যাকান্ডের সূচনা হয়েছিল - এ লেখার মূল সুর সেটিই।
৬| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১১ বিকাল ৪:৪২
দূর আকাশের নীল তারা বলেছেন: @নেটপোকা: নির্বাচনের সময় এলে আম্লীগ-বিম্পী দুইদলই আইনের শাসনের কথা বলে, যদিও বাস্তবে তা অধরাই রয়ে যায়। এই দোষে দু'দলই সমানভাবে দোষী। মুজিব-জিয়া কেউই ভুল-ত্রুটির উর্ধ্বে ছিলেন না, কিন্তু দু'দলের অন্ধ সর্মথকরাই মুজিব-জিয়াকে দেবতার আসনে বসায়। আমি মুজিব-জিয়া কিংবা বিচার বর্হিভূত হত্যাকান্ড কোনটারই সর্মথন করছি না, বরং যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ পুর্নগঠনে সিরাজ শিকদারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছি। সিরাজ শিকদারের মেয়ে শামীম শিকদারও তার বাবার কাজের সর্মথন করেন নি এবং তার বাবার হত্যার বিচার চান নি। (সূত্রটি খুজে পাচ্ছি না বলে দিতে পারলাম না।) বরং শামীম সিকদার আম্লীগ সময়ে বুয়েট-জগন্নাথ হল-সলিমুল্লাহ হলের ত্রিমোড়ে মুজিবের প্রতিকৃতি তৈরী করেন। যেখানে মেয়ে বাবার হত্যার বিচার চায় না, সেখানে আমাদের বোঝা উচিৎ, সিরাজ শিকদার কতখানি নির্দোষ ছিলেন। কেবল মুজিব বা আম্লীগের দোষ না দিয়ে নিরপেক্ষ মতামত প্রদান করাই কি সমীচীন নয়?
৭| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১১ বিকাল ৪:৪৯
স্বাধীকার বলেছেন: নেটপোকা বলেছেন: @দূর আকাশের নীল তারাঃ
আমার মনে হয় আপনি এ লেখার সঠিক টোনটিই ধরতে পারেন নি। সিরাজ সিকদারের প্রশস্তি গাইবার জন্য এ পোস্টটি লেখা হয়নি, বরং যে আওয়ামী লীগ সবসময় আইনের শাসনের কথা বলে, শেখ মুজিবকে প্রায় দেবতুল্য একজন মানুষ ও শাসক হিসেবে তুলে ধরে, তাঁর কোন ভুল কখনোই তাদের চোখে পড়েনা এবং এ ব্যাপারে কোনরকম সমালোচনাও সহ্য করতে পারেনা, সেই শেখ মুজিবের হাতেই যে বাংলাদেশে বিচার-বহির্ভূত হত্যাকান্ডের সূচনা হয়েছিল - এ লেখার মূল সুর সেটিই
একমত।
৮| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১১ বিকাল ৪:৫৫
নেটপোকা বলেছেন: @দূর আকাশের নীল তারাঃ
আপনার সাথে আমি পুরোপুরি একমত যে, কৃত অপরাধের জন্য সিরাজ সিকদারের শাস্তি হওয়া উচিত ছিল।
তবে সেটা অবশ্যই বিচারের মাধ্যমে - বিচার-বহির্ভূতভাবে নয়।
ধন্যবাদ।
৯| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১১ বিকাল ৫:০৬
নেটপোকা বলেছেন: অথচ চরম পরিহাসের বিষয় হল, যে বামপন্থীরা একদিন সিরাজ সিকদারের আদর্শে অনুপ্রাণিত ছিল, তার চরমপন্থার সহযোগী ছিল, সমান অপরাধে অপরাধী ছিল - তাদের অনেকেই আজকে আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগী, এমনকি মন্ত্রীসভার মন্ত্রী!
কে করবে তাদের বিচার?
১০| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১১ বিকাল ৫:২৩
দূর আকাশের নীল তারা বলেছেন: @স্বাধিকার: দয়া করে আমার শেষ মন্তব্যটি পড়ুন।
১১| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১১ সন্ধ্যা ৬:৩১
ধইঞ্চা বলেছেন: @ দূর আকাশের নীল তারা
নিরপেক্ষতার কথা যখন বলছেন তখন প্রশ্ন করতে হয় আপনি কতটা নিরপেক্ষ বা কতটা নিরপেক্ষতা আমি বাংলাদেশের মানুষের কাছ থেকে আশা করতে পারি?
বংবন্ধু যে প্রশাসক হিসাবে ব্যর্থ তা কি কেউ সহজে স্বীকার করবেন এদেশে? অথবা আজকাল যে যুদ্ধাপরাধ নিয়ে কথা হচ্ছে তা সম্পর্কে যদি বলি এটা করার মত নৈতিক স্বাধীনতা আমরা হারিয়ে ফেলেছি তা কি নিরপেক্ষ ভাবে কেউ সামর্থক করবেন।
যুদ্ধাপরাধ নিয়ে আমার মতামত হচ্ছে যেহেতু আমরা যুদ্ধ যারা শুরু করেছিল তাদের বিচার করতে পারিনি তাই এ যুদ্ধাপরাধ এর নামে এখন যাদের ধরা হচ্ছে বা বিচারের সমূখীন করা হচ্ছে তা অনৈতিক । পৃথিবীর সকল যুদ্ধাপরাধ এর বিচার কাজ গুলো দেখলে দেখবেন তা শুরু হয়েছে যারা উদ্যোক্তা ছিল তাদের বিচারের মাধ্যমে। আমরা পাকিস্তানী জেনারেল দের সসম্মানে বিদায় দিয়ে এখন যা করছি তা করার মত নৈতিক অধীকার আমাদের নাই। কিন্তু দুঃখের বিষয় কেউ নিরপেক্ষ হয়ে এ কথা বলার সাহস নেই। হয়তো আমার এ কমেন্ট দেখে আমাকে ট্যাগ করা হবে ছাগু হিসাবে।
১২| ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১১ ভোর ৪:৫৫
দূর আকাশের নীল তারা বলেছেন: @ধইঞ্চা: আমি নিরপেক্ষ থাকার চেষ্টা করেছি, আমি মুজিব-সিরাজ শিকদার কারো পক্ষই সমর্থন করিনি, সর্মথন করিনি বিচার-বর্হিভূত হত্যা। নিরপেক্ষতা কেবল সচতেন নাগরিকের কাছ থেকেই আশা করা যায়, কোন অন্ধ সর্মথকের কাছ থেকে আশা করা যায় না, ঠিক যেমনি আমি নিরপেক্ষতা আশা করি না, আম্লীগ বা বিম্পীর কোন সর্মথকের কাছ থেকে। আম্লীগ বা বিম্পীতে অনেক মুক্তিযোদ্ধা নেতা থাকা সত্ত্বেও দলের প্রতি অন্ধ ভক্তির কারণে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস প্রতি ৫-বছর অন্তর অন্তর পরিবর্তন হয়। পাকিস্তানী জেনারেলদের বিচার করতে পারি নি বলে কি তাদের দোসরদেরও বিচার করা যাবে না - এটাই আপনি বলতে চাচ্ছেন?
©somewhere in net ltd.
১|
০২ রা জানুয়ারি, ২০১১ বিকাল ৩:৩১
নেটপোকা বলেছেন: একটি দেশে মিলিটারি ক্যু থেকেও ভয়ানক জিনিস হল মিডিয়া ক্যু আর বাংলাদেশে সেটিই চলছে বাকশালী লেখক, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবীদের দ্বারা।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি শেখ মুজিব কিভাবে দেবতা থেকে দানবে পরিণত হলেন তা নিয়ে কখনো কোন বক্তব্য পাবেন না তাদের কাছ থেকে।