![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
খুব সাধারন কিছু মুখলুকোনো শব্দ খুঁজে এনে , শহরের স্যাতস্যাতে দেয়ালগুলোর কাঁচা শেওলা মেখে দি, গ্রামের কোন অচিন পথের ধুলোতে মেখে নি । আমার লেখা থেকে তাই উৎকট গন্ধ আসতেই পারে, অনুভূতিতে উদ্ভটামি আসতে পারে ।
স্যাটানিজম বলতে শয়তান উপাসনাকে বুঝায় । স্বভাবতই শয়তান বলতেই আমরা বুঝি এমন কাওকে যিনি মানুষকে মন্দ পথে প্রলুব্ধ করেন, যিনি মানুষের বিশ্বাসে আঘাত করেন ।
ইসলাম ধর্মে শয়তান আগুনের তৈরী এক জীব যারা মানুষের বিশ্বাসে আঘাত করে ও মন্দপথে ডেকে নিয়ে যায় ।
হিব্রু বাইবেল অনুসারে, যে মানুষের বিশ্বাসের ওপর আঘাত করে সেই শয়তান । গ্রিক নিউ টেস্টামেন্টে আরো বিস্তারিত ধারণা পাওয়া যায়, যেখানে যিশুর প্রলুদ্ধ হওয়ার ঘটনাকে বুঝানো হয়েছে । আব্রাহামিক ধর্মে শয়তানকে তুলনা করা হয়েছে বিপথগামী দেবদূত বা দানব হিসেবে , যে মানুষকে খারাপ কাজ বা পাপ করতে অনুপ্রেরণা যোগায় । খ্রিস্টান ধর্ম অনুযায়ী শয়তানকে খ্রিস্টান ধর্মের প্রধান শত্রু হিসেবে গণ্য করা হয়েছে ।
.
স্যাটানিজম দুইরকম, এক যারা যুক্তিবাদী ও বস্তুবাদে বিশ্বাসী অর্থাৎ নাস্তিক স্যাটানিস্ট । দ্বিতীয়ত যারা অধ্যাত্ববাদে বিশ্বাসী অর্থাৎ আস্তিক স্যাটানিজম-এ বিশ্বাসী । উইকিপিডিয়া অনুসারে, আস্তিক স্যাটানিজম প্রাচীনপন্থী বা আধ্যাত্বিক স্যাটানিজম নামেও পরিচিত, শয়তানকে দেবতা হিসেবে উপাসনা করা হয় । আস্তিক স্যাটানিজমকে নানা দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা যায়, যাতে কালো যাদুর উপর বিশ্বাস স্থাপন যা শয়তানকে পূজার মাধ্যমে অর্জিত হতে পারে। আস্তিক স্যাটানিজমে শিথিলায়নের রীতি এবং আত্নার উন্নয়ন ও অন্তর্ভুক্ত । আস্তিক স্যাটানিজম প্রাচীন সূত্রগুলো থেকেও অনুপ্রেরণা লাভ করে (১৯৬০ সালের স্যাটানিক বাইবেল-এর আগের সূত্র) যেমন ১৮৬২ সালের বই ’’স্যাটানিজম ও ডাকিনীবিদ্যা’’। আরেকটি দলকে আস্তিক স্যাটানিজম ভাগে ফেলা যায়, যাদের নাম ’’বিপরীত খ্রিস্টান’’।এই শব্দটি একটি খারাপ শব্দ হিসাবে করে অন্যান্য আস্তিক শয়তানের দলগুলো । খ্রিস্টানরা অভি্যোগ করে যে বিপরীত খ্রিস্টানরা ব্ল্যাক মাস-এর চর্চা করে থাকে ।
.
এই আস্তিক স্যাটানিস্টরা যাদের পূজা করে তাদের মধ্যে অন্যতম হলো লুসিফার ও বাইল ।
প্রথমেই আসা যাক বাইলের কথায় । খ্রিস্টান ধর্মমতে, তিনি নরকের সাতজন যুবরাজের মধ্যে অন্যতম একজন । তাকে শয়তানদের উচ্চপদস্থ কেউ বা অনেকে তাকে শয়তান নিজেই মনে করে । ফিলিস্তিনের এক শহরে এক ধর্মীর গুষ্ঠি একে দেবতা মেনে পূজা করতো এবং মহানবী (সঃ) এর আগমনের পূর্বে মক্কাতেও তার পূজা করা হতো । কিন্তু যেকোন কারনে পরবর্তীতে বাইবেলে তাকে আবিষ্কার করা হয় একজন দানব বা ডেভিল হিসেবে । কারনটা নিয়ে পরে আসছি ।
অন্যদিকে শয়তান হিসেবে পরিচিত আরেক চরিত্র লুসিফার মনে করা হয় শুকতারাকে । শুক্র হলেন হিন্দুধর্মে একজন দানব এবং লুসিফার হলেন খ্রিস্টান ধর্মে তথাকথিত স্যাটান । এই শুক্র থেকেই শুক্রবার হলো । এই কারন নিয়েও পরে বলতেছি ।
.
এখন কথা হচ্ছে, এই শয়তান পূজোটা কি করে হয় । এদের মূলমন্ত্র হচ্ছে প্রতিদন বা প্রতিসপ্তাহ একটি খারাপ কাজ করতে হবে । প্রতিমাসে কোন প্রানী খুন করতে হবে এবং বছরে একবার নরহত্যা । তারা ব্ল্যাক মাস নামে এক ধরনের অনুষ্ঠান পালন করে যা কিছুটা হিন্দুদের পূজোর মতো তবে তা করা হয় গোপনে । যেখানে মানুষকে অপবিত্রকরনই হলো মূল নীতি । সেটা বিকৃত যৌনাচার, নরহত্যা বা যেকোনরকমের পাপ হতে পারে! এটাও একটা গুরুত্বপূর্ন পয়েন্ট ।
.
এবার স্যাটানিজম নিয়ে এত আলোচনা কেন, তা দেখা যাক । প্রাচীন নাইজেরিয়া বা আফ্রিকান দেশগুলো যেগুলো ফ্রান্স বা ব্রিটেনের মতো দেশগুলোর অধীনে ছিলো সেখানে প্রচুর নারীকে এই কারনে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় ।
বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল নামের এক স্থান মিডিয়ার দাবী যেখানে যা কিছুই হারাক তা খুঁজে পাওয়া দুষ্কর, তা শয়তানের ত্রিভূজ বলে সংজ্ঞায়িত হওয়া ।
অ্যামেরিকার মতো দেশদের প্রধানদের স্যাটানিজমের প্রতি আগ্রহ । এই দেশটির হঠাৎ অভাবনীয় উন্নতি এবং কিছু রহস্যময় কীর্তিকালাপ ।
ব্ল্যাক মেটালের মতো সঙ্গিত, সাহিত্য ও টিভি অনুষ্ঠানের জনপ্রীয়তা ।
.
এতক্ষন সব শুধু তথ্য দিলাম । এবার জেনে নেয়া যাক প্রকৃতপক্ষেই কারন কি এই ততাকথিত স্যাটানিজমের পেছনে । কিছু যুক্তি খুঁজে নেয়া যাক ।
.
(১) দেখবেন , কোন এক পূর্ববর্তী ধর্মের দেবতা পরে আসা কোন ধর্মে দানব হিসেবে উপস্থাপিত হয়েছে । মাছিদের লর্ড বাইল খ্রিস্টান ধর্মে শয়তানের প্রধান হিসেবে উপস্থাপিত হন । হিন্দুধর্মে শিবের অনুসারি ডাক থেকেই পরবর্তীতে ডাকিনী শব্দটি আসে, ইতিবাচক চরিত্র নেতিবাচক রূপ লাভ করে । মুসলমানদের জুম'আ বারকে হিন্দুরা শুক্রবার বলে অবহিত করাও এরকম একটা কারণ । সুতারাং, স্যাটানিজমের প্রথম কারণ অন্য ধর্মকে কলুষিত করার উদ্দেশ্য , কারণ শয়তান শব্দটি স্বভাবতই নেতিবাচক আর অন্য ধর্মে নেতিবাচকতা ঢুকানো অই ধর্মের অনুসারী কমানোর বেশ সহজ পদ্ধতি ।
.
(২) আমেরিকা তাদেরকে বিশ্বে স্বতন্ত্র এবং শক্তিশালী দেশ হিসেবে ঘোষণা করতে চায় । নিজেদেরকে অপার্থিব শক্তির অধিকারী প্রমান করে কতৃত্ব লাভ করতে চায় ।
.
(৩) সঙ্গীতের প্রতি মানুষের সহজাত একটা আকর্ষণ রয়েছে । ভেনমের মতো কিছু ব্ল্যাক ম্যাটাল ব্যান্ডের কারণে সঙ্গীতের মাধ্যমে স্যাটানিজমের বিকাশ হয়েছে ।
.
(৪) ভৌতিক গল্পকাররা বা সিনেমা পরিচালকরা তাদের গল্পের চরিত্র হিসেবে এসবের উপস্থাপন এই ধারনাকে ছড়িয়ে দিয়েছে ।
.
(৫) মিডিয়া!
মানুষের এসব রহস্যাবৃত বিষয়ে ঢের আগ্রহ । সে আগ্রহকে পূঁজি করে মিডিয়া ব্যাবসা করছে । বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের মতো ব্যাপারগুলো একদমই মিডিয়ার সৃষ্টি । মিথ্যা কিছু ঘটনা এরা এত সুনিপুনভাবে উপস্থাপন করতে পারে!
.
.
সুতারাং যুক্তি দিয়ে ভাবুন । যুক্তি দিতে শিখুন । রহস্য ভালো লাগতে পারে, তবে তা যেন ভালো লাগতেই সীমাবদ্ধ থাকে । তাতে বিশ্বাস শুধু ধর্মনাশই করবেনা, মানসিকভাবে করে তুলবে আপনাকে বিকারগ্রস্থ । এই যুক্তিগুলো আমার ছোট্ট মস্তিষ্কপ্রসূত, যুক্তিবিদ্যার ছাত্রনা আমি, বিজ্ঞানপাঠকও না । এই চেষ্টাকে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন ।
ধন্যবাদ ।
©somewhere in net ltd.
১|
১৪ ই নভেম্বর, ২০১৬ রাত ১০:৪৭
চাঁদগাজী বলেছেন:
গ্রীকেরা ছিল সব রূপকথার শুরুর লেখক; সেই দিক থেকে পরের লেখাগুলো বরং দুর্বল; তবুও ইন্টারেস্টিং