![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নিম্নগামী অতীত নিয়েই আমার বেঁচে থাকা, চায়ের দোকানে বসে ধূসর ধোঁয়ায় উড়িয়ে ছিলাম স্বপ্নের ঘুড়ি, চেতনা জুড়ে ছিল একটু ছেলে মানুষী, কল্পনা ছিল অচেনা পৃথিবীর অঙ্গ জুড়ে, কণ্ঠে ছিল মিছিলের উষ্ণতা, দৃষ্টি ছিল অসীমের কাছে, অজানা একটা ঝড় আসলো, পাল্টে গেলো চিত্র, আমি প্রস্তুত ছিলাম না, ছিলাম না সিদ্ধহস্ত, সময়ের স্রোতে আমি অচেনা হলাম, সময় টা কি খরস্রোতা নাকি কালস্রোতা তাও জানা হোল না, জানা হয় নি অনেক কিছুই- যৌনতায় গড়া প্রেম পিপাশার কথা, নিঃসঙ্গতায় বন্ধুর জন্য অপেক্ষা, পিয়াসী চলে যাওয়ায় কষ্টের তীব্রতা, ভরা যন্ত্রণায় আত্মঘাতি হওয়া , এখানে এখন কিছুই নেই, আছে কিছু মধ্য রাতের বোধ, কলুষ মনের হাহাকার, প্রতিস্থাপিত নিঃস্পৃহ বিদ্বেষ, আপন মনেই কেঁদে ফেলার ভয়, সমানুপাতিক সমীকরণ, আমার মেয়াদ ফুরিয়ে গেছে, অহমিকার দেয়ালে লেগেছে ঘৃণার পোস্টার, চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত হয়ে এলো, প্রক্রিয়া চলছে পাপ ধুয়ে ফেলার, মনুষ্যত্বের অন্বেষণে ব্রতী দেহ মন, বিশ্বাস করবে না কেউ তবু আমি বলব আমি তোমাদেরই একজন।
ফুল নিবেন ফুল?
লাল ফুল, সাদা ফুল হরেক রকম ফুল।
শিশুকাল টা তার এমনই ছিল।
রংচটা, আধপেটা মর্মরে শৈশব।
আস্তাকুরে জন্ম ছিল সাধারন বাস্তব।
নিঃশ্বাস ছিল ভারী ডাস্টবিনের দুর্গন্ধে,
চেতনা ছিল দৃঢ় বেঁচে থাকার সংগ্রামে।
পৃথিবী তাকে গ্রহন করেছিল অনাথের নামে,
ভিক্ষার ঝুলি উপহার পেয়েছিল বীণা শ্রমে।
চলছিল বেশ ফুলের সৌরভে কথিত জীবন,
উৎকোচ হিসেবে পৃথিবী দিল রুপের আশ্চর্য প্লাবন।
এভাবে নয়,সত্যি এভাবে ঠিক হয় না,
বেঁচে থাকার সংগ্রামে পৃথিবী করল নতুন কিছু বায়না।
কাজ চাই, পেটে ভাত চাই, চাই নির্মল শুদ্ধ জীবন,
গার্মেন্টস আছে আছে ঘর বাড়ি, কারো নেই ওর প্রয়োজন।
শরীরে আসে জরা, টান পরে নড়বরে সুতোয়,
প্রিয় বন্ধু রাস্তাও ধিক দিচ্ছে প্রতিনিয়তই।
ত্রাতারুপী এক কেতাদুরস্ত দম্পত্তি,
উদ্ধার করল ওকে দিল স্বীকৃতি।
স্বীকৃতি ওর ছিল না, ছিল ওর দেহের,
এক এক করে চুল থেকে নখের হোল বিচ্ছেদ।
চাহিদার তালিকায় রইলো না আর নতুন জামা কাপড়,
উম্মুক্ত বক্ষ হোল ওর বেঁচে থাকার রসদ।
দানবরুপী মানুষ গুলো হানা দিল একে একে,
শরীরটা শুধু মমি হয়ে ব্যাস্ত মনোরঞ্জনে।
অনাথ উপাধি মুছে দিয়ে পৃথিবী নতুন নাম দিল,
বেশ্যা রমণী নামে ঘৃণিত নরকের পণ্য।
কপোলে লাল টিপ, ঠোটে গাঢ় লিপিস্তিক,
চোখে আছে গভীরতা, গভীরতায় মিশ্র আবেগ।
বিছানায় ঝড় তোলা পরিপাটি মানুষ,
সবার কাছে ওর প্রশ্ন সংসার কি স্বপ্ন ফানুস?
এভাবেই চলছিল বেশ অজানা প্রশ্ন নিয়ে,
হঠাৎ পেটে জন্ম হোল নতুন হৃদ স্পন্দনের।
এক এক করে উত্তর গুলো থাকলো না অজানা,
সংসার তো মানুষের ওর জন্য না।
অমানুষ হয়ে মানুষ লালনে ওর ভীষণ আপত্তি,
আরেক বেজন্মার জন্ম দেয়ার ঘোর বিরোধী।
দুষ্ট চিন্তা মাথায় আসলো নামলো অমানুষ বধে,
এক দিন ওর লাশ ভেসে উঠলো বুড়িগঙ্গার বুকে।
শেষ হোল মানুষের ভেলায় এক অমানুষের চিৎকার
ওর কোন সৎকার হোল না, আছে ভয় অপবিত্র হবার।
সাবাই জানে মৃত্যু হয়েছে এক পতিতার বাচ্চার,
যে কিনা জানলই না কি তার অপরাধ!
আমরা সমাজ। আমরা মানুষ, আমরাই পবিত্র,
টাই মুখ লুকিয়ে রাতের আধারে হই ওদের শরণাপন্ন।
ফুল বিক্রেতা পথ শিশুটি হাওয়ায় মিলিয়ে যায়,
আমরা তাকে বেশ্যা বানিয়ে আমরাই ভুলে যাই।
©somewhere in net ltd.