নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অবলীলায় অবরুদ্ধ আমার বাস্তবতা, উপাসনায় জাগ্রত তুমি আমার কবিতা

আমি অতি সাধারন ধ্রুব। নিজেকে মানুষ ভাবতে ভালবাসি। ভালবাসি কবিতাকে। কবিতা মূলত আমার নেশা , পেশা ও প্রতিশোধ গ্রহনের হিরন্ময় হাতিয়ার। যেখানে অবলীলায় অবরুদ্ধ আমার বাস্তবতা, সেখানে উপাসনায় জাগ্রত সদাই আমার কবিতা। বেঁচে থাকতে চাই একটি পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে। ভাল

নাহিদ ধ্রুব

নিম্নগামী অতীত নিয়েই আমার বেঁচে থাকা, চায়ের দোকানে বসে ধূসর ধোঁয়ায় উড়িয়ে ছিলাম স্বপ্নের ঘুড়ি, চেতনা জুড়ে ছিল একটু ছেলে মানুষী, কল্পনা ছিল অচেনা পৃথিবীর অঙ্গ জুড়ে, কণ্ঠে ছিল মিছিলের উষ্ণতা, দৃষ্টি ছিল অসীমের কাছে, অজানা একটা ঝড় আসলো, পাল্টে গেলো চিত্র, আমি প্রস্তুত ছিলাম না, ছিলাম না সিদ্ধহস্ত, সময়ের স্রোতে আমি অচেনা হলাম, সময় টা কি খরস্রোতা নাকি কালস্রোতা তাও জানা হোল না, জানা হয় নি অনেক কিছুই- যৌনতায় গড়া প্রেম পিপাশার কথা, নিঃসঙ্গতায় বন্ধুর জন্য অপেক্ষা, পিয়াসী চলে যাওয়ায় কষ্টের তীব্রতা, ভরা যন্ত্রণায় আত্মঘাতি হওয়া , এখানে এখন কিছুই নেই, আছে কিছু মধ্য রাতের বোধ, কলুষ মনের হাহাকার, প্রতিস্থাপিত নিঃস্পৃহ বিদ্বেষ, আপন মনেই কেঁদে ফেলার ভয়, সমানুপাতিক সমীকরণ, আমার মেয়াদ ফুরিয়ে গেছে, অহমিকার দেয়ালে লেগেছে ঘৃণার পোস্টার, চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত হয়ে এলো, প্রক্রিয়া চলছে পাপ ধুয়ে ফেলার, মনুষ্যত্বের অন্বেষণে ব্রতী দেহ মন, বিশ্বাস করবে না কেউ তবু আমি বলব আমি তোমাদেরই একজন।

নাহিদ ধ্রুব › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রসঙ্গঃ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ( আমার চোখে সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী) ও তার জন্মদিন।।

১৬ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ১১:৩৫





আমার অতি প্রিয় মানুষ টিকে নিয়ে লিখার ইচ্ছা- আজ নতুন নয়। এই অভিনব ইস্পাত সমান দৃঢ় চিত্তের মানুষ টি আমাকে সদাই ভাবিয়েছে-শিখিয়েছে দেশ প্রেম , নেতৃত্ব ও বাঙ্গালীর চেতনা। আজ অনেক সাহস করে ওনাকে নিয়ে লিখছি। বলাই বাহুল্য , এটা আমার মনের আদিম অনিরুদ্ধ বাসনা।



শেখ মুজিবুর রহমান (মার্চ ১৭, ১৯২০ - আগস্ট ১৫, ১৯৭৫) বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক নেতা যিনি পূর্ব পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব এবং বাংলাদেশের জাতির জনক হিসেবে বিবেচিত। তিনি মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী প্রতিষ্ঠিত আওয়ামী লীগের সভাপতি, বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি এবং পরবর্তীতে এদেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। জনসাধারণের কাছে তিনি "শেখ মুজিব" এবং "শেখ সাহেব" হিসাবে বেশি পরিচিত এবং তার উপাধি 'বঙ্গবন্ধু'।



১৯৪৭-এ ভারত বিভাগ পরবর্পূতী পূর্ব পাকিস্তানের রাজনীতির প্রাথমিক পর্যায়ে শেখ মুজিব ছিলেন ছাত্রনেতা। ক্রমে তিনি আওয়ামী লীগের জাতীয় নেতৃত্বের উচ্চপদে আসীন হয়েছিলেন। তার বড় গুণ ছিল তুখোড় বক্তৃতা প্রদানের ক্ষমতা। সমাজতন্ত্রের পক্ষসমর্থনকারী একজন অধিবক্তা হিসেবে তিনি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তনের জনগোষ্ঠীর প্রতি সকল ধরণের বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলেন। জনগণের স্বাধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তিনি একসময় ছয় দফা স্বায়ত্ত্বশাসন পরিকল্পনা প্রস্তাব করেন যাকে পশ্চিম পাকিস্তানে একটি বিচ্ছিন্নতাবাদী পরিকল্পনা হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছিল। ছয় দফা দাবীর মধ্যে প্রধান ছিল বর্ধিত প্রাদেশিক স্বায়ত্ত্বশাসন যার কারণে তিনি আইয়ুব খানের সামরিক শাসনের অন্যতম বিরোধী পক্ষে পরিণত হন। ১৯৬৮ খ্রিস্টাব্দে ভারত সরকারের সাথে যোগসাজশ ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগে তার বিচার শুরু হয় এবং পরবর্তীতে তিনি তিনি নির্দোষ প্রমাণিত হন। ১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দের নির্বাচনে তার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ বিপুল বিজয় অর্জন করে। তথাপি তাকে সরকার গঠনের সুযোগ দেয়া হয় নি।



পাকিস্তানের নতুন সরকার গঠন বিষয়ে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ইয়াহিয়া খান এবং পশ্চিম পাকিস্তানের রাজনীতিবিদ জুলফিকার আলী ভুট্টোর সাথে শেখ মুজিবে আলোচনা বিফলে যাওয়ার পর ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে মার্চ ২৫ মধ্যরাত্রে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ঢাকা শহরে গণহত্যা পরিচালনা করে। একই রাতে তাকে গ্রেফতার করা হয় এবং পরবর্তীকালে পশ্চিম পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া হয়। রহিমুদ্দিন খান সামরিক আদালতে তাকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করে তবে তা কার্যকরা হয় নি। ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধ শেষে ১৯৭১-এর ১৬ই ডিসেম্বর বাংলাদেশ-ভারত যৌথ বাহিনীর কাছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী আত্মসমর্পণ করার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ নামে স্বাধীন রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা হয়। ১০ এপ্রিল ১৯৭২ শেখ মুজিব পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করেন এবং বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরু করেন। পরবর্তীকালে তিনি প্রধানমন্ত্রী হন। সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতাকে ভিত্তি করে সংবিধান প্রণয়ন এবং সে অনুযায়ী রাষ্ট্র চালনার চেষ্টা সত্ত্বেও তীব্র দারিদ্র্য, বেকারত্ব, সর্বব্যাপী অরাজকতা এবং সেই সাথে ব্যাপক দুর্নীতি মোকাবেলায় তিনি কঠিন সময় অতিবাহিত করেন। ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক অস্থিরতা দমনের লক্ষ্যে ১৯৭৫ খ্রিস্টাব্দে তিনি সকল দলীয় রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করে নিজেকে আজীবনের জন্য রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করেন। এর সাত মাস পরে, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তারিখে একদল সামরিক কর্মকর্তার হাতে তিনি সপরিবারে নিহত হন।



এটুকু তার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস, আমরা যদি গভীরে যাই - তাহলে দেখবো, সেই "৫২, ৫৪ , ৬২, ৬৬, ৬৯, ৭০ , ও ৭১" - এই সব আন্দোলনেই তার ভূমিকা অপরিসীম। উনি একমাত্র ব্যাক্তি যিনি বাঙ্গালীর স্বাধীনতার জন্য যে কতবার জেলে গিয়েছেন ও অত্যাচার সহ্য করেছেন তা কেবল উনিই জানেন।



৬৬ তে ছয় দফা দিয়ে উনি বাংলাদেশ নামক বৃক্ষের জন্য বীজ বপন করেন, এর পর দুই বছর জেলে কাটিয়ে , ৬৮ তে জড়িয়ে পরেন আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায়। ১৯৬৯ সালের ৫ ডিসেম্বর সোহরাওয়ার্দীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক জনসভায় মুজিব ঘোষণা করেন যে এখন থেকে পূর্ব পাকিস্তানকে "বাংলাদেশ" নামে অভিহিত করা হবে:



" একটা সময় ছিল যখন এই মাটি আর মানচিত্র থেকে "বাংলা" শব্দটি মুছে ফেলার সব ধরণের প্রচেষ্টা চালানো হয়েছিল। "বাংলা" শব্দটির অস্তিত্ব শুধু বঙ্গোপসাগর ছাড়া আর কোথাও খুঁজে পাওয়া যেত না। আমি পাকিস্তানের পক্ষ থেকে আজ ঘোষণা করছি যে, এখন থেকে এই দেশকে 'পূর্ব পাকিস্তানের' বদলে 'বাংলাদেশ' ডাকা হবে"।



সেই থেকে জন্ম হয়েছিল বাংলাদেশ নামক একটি রাষ্ট্রের। এরপর ৭০'এ তার নেতৃত্বে নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়লাভ করার পরও আমাদের কে পার্লামেন্টে যেতে দেয়া হয় নি। সেই থেকে শুরু হয় বিক্ষোভ, যার মধ্যে অমৃত সুধা ঢেলে দেন তিনি ৭১' এর ৭ ই মার্চে। তার বজ্রকন্ঠে বার বার প্রতিধ্বনিত হতে থাকে,



" রক্ত যখন দিয়েছি, তখন রক্ত আরও দেবো- তবু এ দেশের মানুষ কে মুক্ত করে ছাড়বো ইনশাল্লাহ- এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম- এবারের সংগ্রাম - আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম"



সেই থেকে শুরু হোল স্বাধীনতার অমর ইতিহাস রচনা। পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী রাজনৈতিক ও জনসাধারণের অসন্তোষ দমনে ২৫ মার্চ অপারেশন সার্চলাইট শুরু করে। সামরিক বাহিনীর অভিযান শুরু হলে মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দেন।মূল ঘোষণার অনুবাদ নিম্নরূপ:



"এটাই হয়ত আমার শেষ বার্তা, আজ থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন। আমি বাংলাদেশের মানুষকে আহ্বান জানাই, আপনারা যেখানেই থাকুন, আপনাদের সর্বস্ব দিয়ে দখলদার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে শেষ পর্যন্ত প্রতিরোধ চালিয়ে যান। বাংলাদেশের মাটি থেকে সর্বশেষ পাকিস্তানি সৈন্যটিকে উত্খাত করা এবং চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের আগ পর্যন্ত আপনাদের যুদ্ধ অব্যাহত থাকুক"।



সেই থেকে তিনি স্বাধীন বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক। সেই থেকে তিনি বাঙ্গালীর অহংকার, সেই থেকে তিনি বাঙ্গালীর স্থপতি।



তার নেতৃত্বে আমরা পেলাম স্বাধীন, সার্বভৌম বাংলাদেশ।



স্বাধীনতার পর শেখ মুজিবর রহমান অল্পদিনের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন রাষ্ট্রপতি ছিলেন এবং পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এরপর দেশের বিভিন্ন অরাজকিয়তা ও বিশৃঙ্খলার জন্য তাকে প্রতি পদক্ষেপে সমালোচনার স্বীকার হতে হয়।



স্বাধীনতা পর অচিরেই মুজিবের সরকারকে ক্রমশ বাড়তে থাকা অসন্তোষ সামাল দিতে হয়। তাঁর রাষ্ট্রীয়করণ ও ইণ্ডাস্ট্রিয়াল সমাজতন্ত্রের নীতি প্রশিক্ষিত জনবল, অদক্ষতা, মাত্রাতিরিক্ত দুর্নীতি আর দুর্বল নেতৃত্বের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয় মুজিব অতিমাত্রায় জাতীয় নীতিতে মনোনিবেশ করায় স্থানীয় সরকার প্রয়োজনীয় গুরুত্ব লাভে ব্যর্থ হয়। আওয়ামী লীগ ও কেন্দ্রীয় সরকার পূর্ণাঙ্গ রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ করায় গণতন্ত্র দুর্বল হয়ে পড়ে। এ সময় তৃণমূল পর্যায়ে কোন নির্বাচনই অনুষ্ঠিত হয় নি।আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের মধ্যে কমিউনিস্ট এবং ইসলামি মৌলবাদীরা অন্তর্ভুক্ত ছিল। বাংলাদেশকে ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র ঘোষণা করায় ইসলামিক গোত্রের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। এ ছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ পদে আপনজনদের নিয়োগ দেয়ার জন্য মুজিবের বিরুদ্ধে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ আনা হয়।১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ খাদ্য সংকট আরো বাড়িয়ে দেয় এবং অর্থনীতির প্রধান উত্স কৃষিকে ধ্বংশ করে ফেলে। রাজনৈতিক নেতৃত্বের অভাব, দ্রব্যমূল্যের অসামঞ্জস্যতা, রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পপ্রতিষ্ঠানসমূহের ব্যর্থতার কারণে মুজিবকে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়।



রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে সংঘাতের মাত্রা বাড়তে থাকায় মুজিবও তাঁর ক্ষমতা বাড়াতে থাকেন। ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি মুজিব জরুরি অবস্থা জারি করেন এবং তাঁর রাজনৈতিক সমর্থকদের অনুমোদনের মাধ্যমে সকল বিরোধী রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। তদুপরি ৪টি বাদে সকল সংবাদপত্র নিষিদ্ধ করা হয়। মুজিবকে আজীবন রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করা হয় এবং চূড়ান্ত ক্ষমতা প্রদান করা হয়।



১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট প্রত্যূষে একদল তরুণ সেনা কর্মকর্তা ট্যাঙ্ক দিয়ে রাষ্ট্রপতির ধানমণ্ডিস্থ বাসভবন ঘিরে ফেলে এবং শেখ মুজিব, তাঁর পরিবার এবং তাঁর ব্যক্তিগত কর্মচারীদের হত্যা করে।[২][১৪] কেবল তাঁর দুই মেয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা পশ্চিম জার্মানিতে অবস্থান করার কারণে বেঁচে যান। তাদের বাংলাদেশে ফিরে আসার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।[২৩] সেনা অভ্যুত্থানের পরিকল্পনা করেন বিক্ষুব্ধ আওয়ামী লীগের সদস্য এবং সামরিক কর্মকর্তারা। এদের মধ্যে ছিলেন শেখ মুজিবের প্রাক্তন সহকর্মী খন্দকার মোশতাক আহমেদ, যিনি তাঁর স্থলাভিষিক্ত হন। সংবাদ মাধ্যমে এ ঘটনার ইন্ধনদাতা হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের সেণ্ট্রাল ইণ্টেলিজেন্স এজেন্সি সিআইএ-কে দায়ী করা হয়।বাংলাদেশে অবস্থিত তৎকালীন রাষ্ট্রদুত ইউজিন দিয়ে লরেন্স লিফসুল্জ সিআইএ-কে অভ্যুত্থান ও গণহত্যার জন্য দোষারোপ করেন। তাঁর মরদেহ তাঁর জন্মস্থান টুঙ্গিপাড়ায় হেলিকপ্টারে করে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সামরিক তত্ত্বাবধানে দাফন করা হয়। অন্যান্যদের ঢাকার বনানী কবরস্থানে দাফন করা হয়।



মুজিবের মৃত্যু বাংলাদেশকে বহু বছরের রাজনৈতিক সংঘাতের দিকে টেনে নেয়। সেনাঅভ্যুত্থানের নেতারা অল্পদিনের মধ্যেই উচ্ছেদ হয়ে যান এবং অভ্যুত্থান, পাল্টা অভ্যুত্থান আর রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডে দেশ অচল হয়ে পড়ে।১৯৭৫ সালের ৭ই নভেম্বর আরেকটি সেনা অভ্যুত্থানের ফলশ্রতিতে মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান ক্ষমতা আসীন হওয়ার পর শৃঙ্খলা অনেকাংশে ফিরে আসে। ১৯৭৮ সালে জিয়াউর রহমান নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করার পাশাপাশি ইনডেমনিটি অধ্যাদেশের মাধ্যমে মুজিবের হত্যার সাথে জড়িতদের বিচার বন্ধ করার নির্দেশ দেন।



সেনাঅভ্যুত্থানের অন্যতম প্রধান নেতা কর্নেল সৈয়দ ফারুক রহমানসহ ১৪ জন সেনা কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করা হয়। বাকিরা বিদেশে পালিয়ে গিয়েছিলেন।



এইখানে শেষ হয় বাঙ্গবন্ধু অধ্যায়ের।



এবার আমার কথা বলি, বঙ্গবন্ধু কে নিয়ে বর্তমানে বাংলাদেশে প্রচুর বিভক্তি আছে, বঙ্গবন্ধু চোর ছিল, বাকশালের প্রচলন করে বাংলাদেশ কে লুট করতে চেয়েছিল কিংবা বঙ্গবন্ধুর কারনে স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে দুর্ভিক্ষ হয়েছিল ইত্যাদি, ইত্যাদি! এমনকি বঙ্গবন্ধুর দেশ প্রেম নিয়েও অনেক প্রশ্ন আছে, অনেক বেজন্মা বঙ্গবন্ধুর মৃত্যু বার্ষিকীতে নিজের জন্মদিন পালন করে থাকেন! কাল জাতির পিতার জন্মদিন উপলক্ষে সরকারী ছুটি অনেকের চক্ষুশূল হয়ে দেখা দিয়েছে।



নিজের মত করে কিছু যুক্তি উপস্থানপন করি! বঙ্গবন্ধু যদি চোর হতেন তাহলে তিনি এখন বাংলাদেশের সবচেয়ে ধনী ব্যাক্তি থাকতেন, তিনি চাইলে এক নিমিষেই বাংলাদেশ কে বিক্রি করে দিতে পারতেন- এবং আমাদের এই দেশ কোন দিনও স্বাধীন হতো নাহ, আর আমি ধ্রুব এখন কীবোর্ডে বসে ব্লগ ও লিখতাম না, বঙ্গবন্ধু আমাদের স্বাধীন বাংলাদেশের রুপকার। আর স্বাধীনতা পরবর্তী কথা বলা যাক, একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে যেখানে প্রতিটা পদক্ষেপে ভুল, প্রতিটা মানুষ অসহায় সেখানে একজন নেতা কি করে সেই দেশ কে এক নিমিষে সোনার দেশ করে দিবেন? মানুষের কাছে তিনি ছিলেন যাদুকর, কিন্তু বাস্তবিক অর্থে তার কাছে কোন যাদুর কাঠি ছিল নাহ, তিনি এমতাবস্থায় বাকশালের ডাক দিয়েছিলান। ৭৫ পরবর্তী অবস্থায় আমরা দেখেছি, আমাদের স্বাধীনতা কি করে বিনষ্ট হয়েছে, এই স্বৈরাচারী জিয়াউর রহমানের মত অমানুষ নেতাদের রুখে দেয়ার প্রয়াসে বাকশালের প্রবর্তন করা হয়। ৭৫ পর্যন্ত যদি বঙ্গবন্ধু না থাকতো তাহলে স্বাধীনতার সঙ্গে সঙ্গে দেশ আবার পরাধীন হয়ে যেতো।



আমার অতি প্রিয় লেখক হুমায়ূন আহমেদ স্যার এর দেয়ালের উপন্যাসের কিছু অংশ এখানে তুলে দিচ্ছি।



শেখ মুজিব দেশের মানুষকে অন্ধভাবে ভালবাসতেন। আর পরবর্তীতে সেই মাসুল দিতে হল তার জীবন দিয়ে। বাংলার আকাশে বাতাসে তার মত নেতা শুধু নয়, তার মত মহান মানব পৃথিবীতেও খুব কম ছিলো। নিচের ঘটনাটা পড়লে কিছু বুঝতে পারবেন আশা করি।



বঙ্গবন্ধুর ধানমন্ডি ৩২ নং বাড়িতে এসেছেন RAW(ভারতের সিক্রেট সার্ভিস)- এর রিসার্চ ও এনালাইসিস ওয়িঙ্গের পরিচালক কাও। তিনি এসেছেন পানবিক্রেতা ছদ্মবেশে।

শেখ মুজিবুর রহমান বিরক্ত গলায় বললেন, আমি আপনাকে চিনি। অনেকেই আপনাকে চেনে। আপনার ছদ্মবেশ ধরার প্রয়োজন পড়ল কেন?

কাও বললেন, মাঝে মাঝে নিজেকে অন্যরকম ভাবতে ভালো লাগে বলেই ছদ্মবেশ। আপনাকে উৎখাতের ষড়যন্ত্র হচ্ছে। মেজর রশীদ, ফারুক, লে. কর্নেল ওসমানী এই নিয়ে আলোচনায় বসেন জেনারেল জিয়াউর রহমানের বাসায়। এই বিষয়ে আপনাকে তথ্য দিতে এসেছি।

শেখ মুজিব বললেন, আপনারা অতিরিক্ত সন্দেহপ্রবন। পানবিক্রেতার ছদ্মবেশে যে আমার কাছে তথ্য দিতে আসে তার কথায় আমার বিশ্বাস নেই।

আপনার সামনে মহাবিপদ।

নহাবিপদ আমি পার করে এসেছি।পাকিস্তানের কারাগারে যখন ছিলাম তখন বিপদ আমার ঘাড়ে বসে ছিল। এখন ঘাড় থেকে নেমেছে।

ঘার থেকে নামেনি স্যার।

শেখ মুজিব বললেন, যাদের কথা আপনি বলছেন তারা আমার সন্তানসম।

আমি এই আলোচনা আর চালাব না। আমার শরীরটা ভালো না। যদি কিছু মনে না করেন তাহলে আমি ঘুমুতে যাব।

স্যার, আপনি ভুল করছেন।

ভুল আমি করছিনা। আপনারা করছেন।

আমার কথা আপনি আমলে নিচ্ছেন না- ভালো কথা। পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থার কথা কি আমলে নিবেন?

শেখ মুজিব উঠে দাঁড়ালেন। পানবিক্রেতার সঙ্গে আলাপ চালিয়ে যাওয়া তার কাছে অর্থহীন মনে হলো।

সুত্র-১: বাংলা একাডেমী পত্রিকা উত্তরাধিকার, শ্রাবণ সংখ্যা, ১৪১৭ দ্রষ্টব্য।

সুত্র-২: Inside RAW, the story of Indian Secret Service.Ashoka Raina.Vikas Publication, New Delhi, India.



যেই মানুষ টা নিজের দেশের মানুষ কে ভালবেসে সারাটি জীবন সব কিছু বিসর্জন দিয়ে দিলেন তাকে আমরা বাংলাদেশী হিসেবে কি দিয়েছি? শুধুই লাঞ্ছনা। বি, এন , পি ক্ষমতায় আসলে শেখ মুজিব হয়ে যায় রাজাকার আর জিয়াউর রহমান হয়ে যায় স্বাধীনতার ঘোষক, শেখ মুজিবের ছবির জায়গায় উঠে আসে জিয়ার ছবি। এই কি তাহলে আমাদের প্রতিদান?



কাল তার জন্মদিন নিয়েও আছে আ=অনেক বাক বিতণ্ডা, একটি দিন যদি একটি বিশেষ মানুষের জন্য- সেই মানুষের জন্য যার জন্য জন্ম হয়েছে বাংলাদেশের, যার জন্য আমরা আজও বাঙ্গালী- তাকে উৎসর্গ করা হয় তাহলে কি মহা ভুল হয়ে যায়?



আমি জানি নাহ, শুধু এটুকুই জানি , বাঙ্গালী জাতির জন্য শ্রেষ্ঠ নেতা, শেখ মুজিব, আর শেখ মুজিবের জন্ম একবারই হয়েছিল।



যতকাল রবে পদ্মা, মেঘনা, গৌরি , যমুনা বহমান-

ততকাল রবে কীর্তি তোমার শেখ মুজিবুর রহমান।।



শুভ জন্মদিন।।



জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ১১:৪৬

শাপতাহিন বলেছেন: শুভ জন্মদিন।।

জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।

২| ১৬ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ১১:৫৪

ফাহীম দেওয়ান বলেছেন: সৃষ্টিকর্তা এমন একজন নেতা আমাদের দিয়েছিলেন এজন্য আমি চিরকৃতজ্ঞ আমার আল্লাহর কাছে।


কিন্তু আফসোস এমন আমানত কে আমরা নিজ হাতে শেষ করেছি। জাতি হিসেবে আমরা কতটা নীচ একবার ভেবে দেখেছেন কি ?

জন্ম দিনে তাকে লাখ কোটি সালাম।

জানি নেতা, আমরা বেঈমান হতে পারি কিন্তু তবু তুমি আমাদের মাঝে আজো আছো পথের দিশারী হয়ে। তোমার আদর্শ বুকে নিয়েই আমরা প্রিয় এ দেশটাকে নিয়ে যেতে পারবো স্বপ্নের ঠিকানায়।

জয় বাংলা। জয় বংগবন্ধু।

৩| ১৭ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ১২:০২

রুদ্র মানব বলেছেন: জয় বাংলা , জয় বঙ্গবন্ধু

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.