![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নিম্নগামী অতীত নিয়েই আমার বেঁচে থাকা, চায়ের দোকানে বসে ধূসর ধোঁয়ায় উড়িয়ে ছিলাম স্বপ্নের ঘুড়ি, চেতনা জুড়ে ছিল একটু ছেলে মানুষী, কল্পনা ছিল অচেনা পৃথিবীর অঙ্গ জুড়ে, কণ্ঠে ছিল মিছিলের উষ্ণতা, দৃষ্টি ছিল অসীমের কাছে, অজানা একটা ঝড় আসলো, পাল্টে গেলো চিত্র, আমি প্রস্তুত ছিলাম না, ছিলাম না সিদ্ধহস্ত, সময়ের স্রোতে আমি অচেনা হলাম, সময় টা কি খরস্রোতা নাকি কালস্রোতা তাও জানা হোল না, জানা হয় নি অনেক কিছুই- যৌনতায় গড়া প্রেম পিপাশার কথা, নিঃসঙ্গতায় বন্ধুর জন্য অপেক্ষা, পিয়াসী চলে যাওয়ায় কষ্টের তীব্রতা, ভরা যন্ত্রণায় আত্মঘাতি হওয়া , এখানে এখন কিছুই নেই, আছে কিছু মধ্য রাতের বোধ, কলুষ মনের হাহাকার, প্রতিস্থাপিত নিঃস্পৃহ বিদ্বেষ, আপন মনেই কেঁদে ফেলার ভয়, সমানুপাতিক সমীকরণ, আমার মেয়াদ ফুরিয়ে গেছে, অহমিকার দেয়ালে লেগেছে ঘৃণার পোস্টার, চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত হয়ে এলো, প্রক্রিয়া চলছে পাপ ধুয়ে ফেলার, মনুষ্যত্বের অন্বেষণে ব্রতী দেহ মন, বিশ্বাস করবে না কেউ তবু আমি বলব আমি তোমাদেরই একজন।
অনেকেই বলে ইতিহাস ভুলে যাও, ইতিহাস বেদনা সৃষ্টি করে, কিন্তু আমি বিশ্বাস করি ইতিহাস কথা বলে। আমাদের ইতিহাস টা অদ্ভুত ভাবে "৭১" এ এসে থেমে গেছে। আমরা স্বাধীনতা নিয়ে বরাবরই চিন্তিত। কিন্তু, সেই চিন্তার মধ্যেও লুকিয়ে আছে নিজস্ব রাজনৈতিক ভাবনা।স্বাধীনতা নিয়ে আমরা যেমন টা অসচেতন ঠিক তেমনই স্বাধীনতা পরবর্তী সময় নিয়েও। আমরা অনেকেই জানি নাহ বাকশাল কি? বন্ধবন্ধুর মৃত্যুর পর বাংলাদেশের অবস্থা কি হয়েছিল? স্বাধীনতা নিয়ে অনেক কাঁটাছেঁড়া করেছি, স্বাধীনতার এই মাসে আজ স্বাধীনতা পরবর্তী অবস্থা নিয়ে কাঁটা ছেঁড়া করার চেষ্টা করছি। লিখাটা অনেক টাই অগোছালো, নিজের মত করে লিখা।সমালোচনা টাও আমার ব্যাক্তিগত চিন্তার ফসল।লিখা টা এক কথায় বেশ খোলামেলা ভাবে লিখা।লিখা টা এক বসায় একাধারে লিখলে আকৃতিতে বিরাটাকার ধারন করার সম্ভাবনা থাকায়- আমি এটা খণ্ডাকারে প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এখানে প্রথম খণ্ড দেয়া হোল।কারো খারাপ লাগলে আমার কিছুই করার নাই।তথ্যে ভুল থাকলে - ক্ষমা করে দিবেন।
প্রথম অধ্যায়ঃ বাকশাল, মুজিব হত্যা ও বাঙ্গালীর স্বাধীনতার সূর্য চিরতরে মুছে দেয়ার ইতিহাস।
৭১ পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশে আমরা দুর্ভিক্ষের কথা জেনেছি- তখন লবনের কেজি হয়ে গিয়েছিল ৬০ টাকা। অবস্থা সামাল দিতে গিয়ে বঙ্গবন্ধু কে বেশ বেগ পেতে হয়েছিল বলাই চলে। এর মধ্যে ভিতরে ভিতরে অনেক মীর জাফরের ষড়যন্ত্রের শিকার হতে হয়েছিল তাকে। তিনি পরিস্থিতি সামাল দেয়ার জন্য রক্ষী বাহিনী গঠন করলেন, এবং শেষের দিকে নিজেকে আজীবন রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করে বাকশালের প্রবর্তন করলেন। বঙ্গবন্ধুর সবচেয়ে বড় ভুল ছিল রক্ষী বাহিনী গঠন। আমরা ইতিহাস পর্যালোচনা করলে খুব সহজেই রক্ষী বাহিনীর অত্যাচারের কথা জানতে পারবো। তখনকার সময়ে রক্ষী বাহিনী মানেই ছিল ত্রাস। তারা অনেক ধরনের অপকর্ম করেছিল , এমনকি তারা মুক্তিযোদ্ধাদের কেও তাদের অত্যাচারের তালিকা থেকে রক্ষা দেয় নি। বাকশাল প্রবর্তনের ফলে সাধারণ মানুষের বাকস্বাধীনতা হারিয়ে গিয়েছিল- যা বঙ্গবন্ধুর জানা ছিল না, তিনি তার দেশের মানুষ কে প্রান দিয়ে ভালবাসতেন - এবং নিজে বিশ্বাস করতেন তিনি যা করছেন তা দেশের মানুষের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে। কিন্তু, তার ভাবনায় প্রচণ্ড ভুল ছিল- সামান্য কারনেও তখন সাধারণ মানুষ বঙ্গবন্ধু কে দোষারোপ করতেন। এর মধ্যে দিয়ে তার দৃষ্টির অন্তরালে আঁকা হচ্ছিল স্বাধীনতা শক্তি ধ্বংস করার নীল নকশা এবং সেই নকশায় রং- পেন্সিল দিয়ে সাহায্য করছিলেন তার অতি প্রিয় ঘনিষ্ঠ ব্যাক্তি খন্দকার মোশতাক। তার এই অন্ধ ভালবাসার প্রতিদান তাকে দিতে হোল , ১৯৭৫ এর ১৫ই আগস্টে। মেজর ডালিম , মেজর মহিউদ্দিন, মেজর ফারুক ও মেজর রসীদ সহ আরও কয়েকজন বিশ্বাসঘাতক দেশদ্রোহী সামরিক বাহিনীর কর্তাদের হাতে সপরিবারে প্রান দিতে হোল - হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান কে। মজার ব্যাপার হোল, জাতির জনক যাদের কে নিজের সন্তানের মত ভালবাসতেন, সেই মেজর রশিদ, ফারুক , লে, কর্নেল ওসমানী - জিয়াউর রহমানের বাসায় বসে তার মৃত্যুর পরিকল্পনা করেন!
প্রশ্নঃ জিয়াউর রহমান কি তাহলে বঙ্গবন্ধু হত্যার সাথে জড়িত নাহ?
এবার কিছু মজার তথ্য দেবার পালা। যেই মানুষটির হাত ধরে এলো আমাদের কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা- তার মৃত্যুতে কেউ কোন উচ্চ বাক্য করলো না, বরং কতিপয় নাগরিক দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আনন্দ মিছিল বের করলো , একে অন্য কে মিষ্টি খাওয়াল। যেন ৩০ টি রোজা রাখার পর ঈদের চাঁদ দেখা গেছে। বাঙ্গালী ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ নেতার লাশ অনাদরে পুরো একদিন পরে থাকলো তার ৩২ নাম্বারের বাড়িতে। কিছু জিনিষ বাদ দিয়ে যাচ্ছি- এটা ঠিক হচ্ছে নাহ, কেউ কেউ এই জেনসাইড মেনে নেন নি, তারা মুজিব হত্যার বিচার চাই বলে রাস্তায় নেমেছিল, এবং যথারীতি জেল হাজতে চলে গিয়েছিল। এদের মধ্যে অন্যতম একজন বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকি- তিনি ঘোষণা দিলেন মুজিব বিহীন বাংলায় তিনি থাকবেন নাহ। তিনি ভারতে চলে গেলেন এবং ওখানে কাদেরিয়া বাহিনী গঠন করলেন এবং সীমান্তের পুলিশ ফাঁড়িতে আক্রমন করে নিরীহ অনেক পুলিশ কে হত্যা করলেন। এখানেও মজার একটি বিষয় লক্ষণীয়- মুজিব কে হত্যার পিছনে পুলিশ বাহিনীর কোন হাত ছিল নাহ, তবুও হত্যা করা হয়েছে তাদের কেই। আরও কিছু মজার খবর হোল, মুজিব হত্যার খবর ছড়িয়ে পরার সাথে সাথেই টুঙ্গিপাড়ায় তার পৈতৃক বাড়িতে স্থানীয় জনগন হামলা করে এবং বাড়ির সব জিনিষ পত্র লুট করে নিয়ে যায়!
বঙ্গবন্ধুর খুনের পরে বাংলাদেশে বেশ কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটে- এর কিছু অংশ তুলে ধরার চেষ্টা করছি। খন্দকার মোশতাক রাষ্ট্রপতি হলেন, তার সরকার পাকিস্তান , সৌদি আরব , গণচীনের পূর্ণ সমর্থন পেলো। এখানেও লুকিয়ে আছে কিছু মজার রসদ- যারা ৭১ এ আমাদের স্বাধীনতা কে স্বীকৃতি দিতে অনেক বেশী দেরী করেছিল- তারাই সবার আগে এই সরকার কে সমর্থন করেছিল। (এখানেই আমাদের স্বাধীনতা হারিয়ে যাওয়ার চিত্র স্পষ্ট হয়ে উঠেছে)। ২৩শে আগস্ট ৪ নেতা সহ ২০ জন কে গ্রেফতার করা হয়। ২৪ শে আগস্ট মেজর জেনারেল শফিউল্লাহ কে সরিয়ে মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান নতুন সামরিক বাহিনীর প্রধান হিসেবে নিযুক্ত হন। এভাবেই শেষ হয় বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার অধ্যায়। পরবর্তীতে আমি বঙ্গবন্ধুর খুনিদের পালিয়ে যাওয়া ও তার পিছনে জিয়াউর রহমানের ভূমিকা বর্ণনা করবো।
সারকথাঃ বঙ্গবন্ধু নিয়ে এবং বাকশাল নিয়ে অনেকের মত পার্থক্য আছে, আমি আমার মতামত বলি- বাকশাল একটা মানুষ তখনই করবেন যখন তার প্রচণ্ড অর্থ লোভ থাকবে, বঙ্গবন্ধু'র যদি তাই থাকতো তাহলে তিনি অনায়াসে বাংলাদেশ বিক্রি করে দিয়ে এখন বিশ্বের অন্যতম ধনী ব্যাক্তি হতেন, এবং আমরা কখনই স্বাধীনতা পেতাম নাহ! তার ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা অবশ্যই ছিল, সেটা ছিল দেশের মানুষের প্রতি প্রবল ভালবাসা ও অন্ধ বিশ্বাস। তার রক্ষী বাহিনীর অত্যাচার অবশ্য তার শাসন ব্যাবস্থায় অক্ষমতার পরিচয় দিয়ে থাকে। সব মিলিয়ে কিছু ভুল ছাড়া তিনি ছিলেন বাঙ্গালী ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ সূর্য সন্তান।
কিন্তু , এখানেও মজার কিছু বিষয় আছে, এই মহান নেতা মারা যাওয়ার পর দেশের বুদ্ধিজীবী থেকে সাধারণ মানুষ খুব বেশী ব্যাথিত হয়েছিল বলে জানা যায় নাহ। ইতিহাস বলে, তারা বরংচো খুশি হয়েছিল! আমরা আমাদের জাতীর পিতা কে আজও সম্মান দিতে পারি নি, কিছু কুলাঙ্গার তাকে এখনও "বঙ্গবলতু" বলে ডাকে, আজও তার মৃত্যুদিনে কিছু বেজন্মা জন্মদিন পালন করে। আজও ৭ই মার্চের দিন এই বাংলায় যুদ্ধাপরাধীদের বিচা কে পণ্ড করে দেয়ার জন্য হরতাল ডাকা হয়। আজও রাজনীতির হাওয়া পরিবর্তনের সাথে সাথে জাতীর পিতা পরিবর্তিত হয়, তার ছবি চলে যায়, পায়ের তলে! কি অদ্ভুত এই দেশ, কি অদ্ভুত এই জাতি! আমরা আজও আমাদের জাতীর জনক কে তার কাঙ্খিত সম্মান দেখাতে পারি নি! তবে আমি বিশ্বাস করি- একদিন এই বাংলায় ৭ই মার্চের ভাষণের মধ্য দিয়ে আবারো ফিরে আসবেন বঙ্গবন্ধু- একদিন বাঙ্গালী কাঁদবে- কাঁদবে এই দেশ।।
আমি এখানে কোন রাজনীতির কথা বলতে আসি নি, আমি বলতে এসেছি স্বাধীনতার কথা, ৩০ লক্ষ শহীদের কথা, ২ লক্ষ ধর্ষিত মায়ের কথা, জাতীর পিতার কথা, আমার বাংলাদেশের কথা। আমি বিশ্বাস করি এই ইতিহাসের হাত ধরেই একদিন এই বাংলায় আবার ফিরে আসবে স্বাধীনতা, ফিরে আসবে বাংলার সূর্য সন্তানেরা।।
"সবকটা জানালা খুলে দাও না,
আমি গাইবো, গাইবো বিজয়েরই গান-
ওরা আসবে, চুপি চুপি যারা এই দেশটাকে ভালবেসে দিয়ে গেছে প্রান-
সব কটা জানালা খুলে দাও নাহ।।"
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।।
বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।।
(টু বি কণ্টিনিউড)
©somewhere in net ltd.