নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অবলীলায় অবরুদ্ধ আমার বাস্তবতা, উপাসনায় জাগ্রত তুমি আমার কবিতা

আমি অতি সাধারন ধ্রুব। নিজেকে মানুষ ভাবতে ভালবাসি। ভালবাসি কবিতাকে। কবিতা মূলত আমার নেশা , পেশা ও প্রতিশোধ গ্রহনের হিরন্ময় হাতিয়ার। যেখানে অবলীলায় অবরুদ্ধ আমার বাস্তবতা, সেখানে উপাসনায় জাগ্রত সদাই আমার কবিতা। বেঁচে থাকতে চাই একটি পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে। ভাল

নাহিদ ধ্রুব

নিম্নগামী অতীত নিয়েই আমার বেঁচে থাকা, চায়ের দোকানে বসে ধূসর ধোঁয়ায় উড়িয়ে ছিলাম স্বপ্নের ঘুড়ি, চেতনা জুড়ে ছিল একটু ছেলে মানুষী, কল্পনা ছিল অচেনা পৃথিবীর অঙ্গ জুড়ে, কণ্ঠে ছিল মিছিলের উষ্ণতা, দৃষ্টি ছিল অসীমের কাছে, অজানা একটা ঝড় আসলো, পাল্টে গেলো চিত্র, আমি প্রস্তুত ছিলাম না, ছিলাম না সিদ্ধহস্ত, সময়ের স্রোতে আমি অচেনা হলাম, সময় টা কি খরস্রোতা নাকি কালস্রোতা তাও জানা হোল না, জানা হয় নি অনেক কিছুই- যৌনতায় গড়া প্রেম পিপাশার কথা, নিঃসঙ্গতায় বন্ধুর জন্য অপেক্ষা, পিয়াসী চলে যাওয়ায় কষ্টের তীব্রতা, ভরা যন্ত্রণায় আত্মঘাতি হওয়া , এখানে এখন কিছুই নেই, আছে কিছু মধ্য রাতের বোধ, কলুষ মনের হাহাকার, প্রতিস্থাপিত নিঃস্পৃহ বিদ্বেষ, আপন মনেই কেঁদে ফেলার ভয়, সমানুপাতিক সমীকরণ, আমার মেয়াদ ফুরিয়ে গেছে, অহমিকার দেয়ালে লেগেছে ঘৃণার পোস্টার, চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত হয়ে এলো, প্রক্রিয়া চলছে পাপ ধুয়ে ফেলার, মনুষ্যত্বের অন্বেষণে ব্রতী দেহ মন, বিশ্বাস করবে না কেউ তবু আমি বলব আমি তোমাদেরই একজন।

নাহিদ ধ্রুব › বিস্তারিত পোস্টঃ

বার্থ থ্রু জেনোসাইড [অন্ধকারে নিমজ্জন অত:পর একটি রক্তস্নাত জন্ম]

২৫ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ৯:৩৯

আমি ইতিহাস প্রেমী মানুষ, আমি ইতিহাসেই অস্তিত্ব খুঁজে যাই। বাংলাদেশের এক অকৃত্তিম গৌরবময় ইতিহাস নিয়ে কাঁটাছেঁড়া করার কিছু সৌভাগ্য আমার হয়েছে। আমি বিশেষ বিশেষ মুহূর্তে ফিরে ফিরে যাই সেই সব ইতিহাসের পাতায়, আমার চোখের পর্দা ভারী হয়ে ওঠে। আজ কিসের জন্য যেন খুব অসহায় ও ফাঁকা ফাঁকা লাগছে, গায়ের পসম কাঁটা দিয়ে উঠছে ভয়ে, আর্তনাদে , ঘৃণায় আর অপারগতায়- আজ আমি ফিরে গেছি ৭১' এর ২৫ শে মার্চ রাতে। সেই ভয়াল রাতে, সেই অস্থিরতায়, কান্নায়, রক্তের বন্যায়, নারকীয় উল্লাসে- আমি ফিরে গেছি পৃথিবীর সবচেয়ে নিকৃষ্ট জেনোসাইডে। চলুন ফিরে যাই সেই দিনে- অনুধাবন করি আমাদের স্বাধীনতা।।



১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ মধ্যরাতে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ঘুমন্ত নিরস্ত্র বাঙালির ওপর আধুনিক যুদ্ধাস্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। বাঙালির স্বাধীকার আন্দোলন, এমনকি জাতীয় নির্বাচনের ফলাফলে প্রাপ্ত আইনসঙ্গত অধিকারকেও রক্তের বন্যায় ডুবিয়ে দিতে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী শুারু করেছিল সারাদেশে গণহত্যা। পাকিস্তানী সামরিক জান্তা ঢাকায অজস্র সাধারণ নাগরিক, ছাত্র, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, পুলিশ হত্যা করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হল, ইকবাল হল, রোকেয়া হল, শিক্ষকদের বাসা, পিলখানার ইপিআর সদরদপ্তর, রাজারবাগ পুলিশ লাইনে একযোগে নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে হত্যা করে অগণিত নিরস্ত্র দেশপ্রেমিক ও দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের। এশিযা টাইমসের ভাষ্য অনুযাযী, সামরিক বাহিনীর বড বড অফিসারদের নিয়ে বৈঠকে ইযাহিযা খান ঘোষণা করে "তিরিশ লক্ষ বাঙ্গালিকে হত্যা কর, তখন দেখবে তারা আমাদের হাত চেটে খাবে।" সে পরিকল্পনা মতোই ২৫শে মার্চেও রাতে পাকিস্তানী আর্মি অপারেশন সার্চলাইট আরম্ভ করে যার উদ্দেশ্য ছিল বাঙ্গালি প্রতিরোধ গুঁড়িয়েদেযা।



হত্যাকাণ্ডের খবর যাতে পৃথিবীর অন্যান্য দেশে না পৌঁছায সে লক্ষ্যে ২৫শে মার্চের আগেই বিদেশী সাংবাদিককে ঢাকা পরিত্যাগে বাধ্য করা হয। তারপরও সাংবাদিক সাইমন ড্রিং জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঢাকায অবস্থান করে ওযাশিংটন পোস্টের মাধ্যমে সারা পৃথিবীকে এই গণহত্যার খবর জানিয়ে ছিলেন। পাকিস্তান সেনাবাহিনী পুরো দেশজুড়ে বাঙালি নিধন চলালেও এই হত্যাযজ্ঞের মূল কেন্দ্রবিন্দু ছিল ঢাকা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো ছিল তাদের বিশেষ লক্ষ। একমাত্র হিন্দু আবাসিক হল - জগন্নাথ হল পুরোপুরি ধ্বংস করে দেয পাকিস্তান সেনাবাহিনী। এতে জগন্নাথ হলের ৬০০ থেকে ৭০০ আবাসিক ছাত্র নিহত হয। পুরো বাংলাদেশেই হিন্দু এলাকাগুলো বিশেষ ক্ষতির সম্মুখীন হয। ২৫শে মার্চের মধ্যরাতের আগেই, ঢাকা পুরোপুরি জ্বলছিল, বিশেষভাবে পূর্ব দিকের হিন্দু প্রধান এলাকাগুলো। ২রা আগস্ট, ১৯৭১ টাইম সাময়িকীর প্রতিবেদন অনুযাযী, "হিন্দু,যারা মোট রিফিউজিদের তিন-চতুর্থাংশ, পাকিস্তানী সামরিক বাহিনীর ক্রোধ ও আক্রোশ বহন করছিল"।



শুধু তাই নয়। পঁচিশে মার্চের কালো রাতে গ্রেফতার করা হয ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতাপ্রাপ্ত দল আওযামী লীগ প্রধান বাঙ্গালীর তৎকালীন প্রিয নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। গ্রেফতারের পূর্বে ২৬শে মার্চের প্রথম প্রহরে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। কথিত আছে, গ্রেপ্তার হবার একটু আগে ২৫শে মার্চ রাত ১২টার পর (অর্থাৎ, ২৬শে মার্চের প্রথম প্রহরে) বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করেন যা চট্টগ্রামে অবস্থিত তৎকালীন ই.পি.আর এর ট্রান্সমিটারে প্রচার করার জন্য পাঠানো হয।



উল্লেখ্য ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ রাতের অন্ধকারে পাকিস্তানী সামরিক বাহিনী পূর্ব পাকিস্তানে বাঙালি নিধনে ঝাঁপিয়ে পডলে একটি জনযুদ্ধের আদলে মুক্তিযুদ্ধ তথা স্বাধীনতা যুদ্ধের সূচনা ঘটে। এই প্রতিরোধ যুদ্ধই সূচনা করে মহান মুক্তিযুদ্ধের। ২৫ মার্চ রাতেই পুলিশ, ইপিআর ও সেনাবাহিনীর বাঙালি সদস্যরা শুরু করে প্রতিরোধ যুদ্ধ, সঙ্গে যোগ দেয় সাধারণ মানুষ। তৎকালীন পাকিস্তানী সামরিক বাহিনীর ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট, ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস (ইপিআর), ইস্ট পাকিস্তান পুলিশ, সামরিক বাহিনীর বাঙ্গালী সদস্য এবং সর্বোপরি বাংলাদেশের স্বাধীনতাকামী সাধারণ মানুষ দেশকে পাকিস্তানী সামরিক বাহিনীর কব্জা থেকে মুক্ত করতে কয়েক মাসের মধ্যে গড়ে তোলে মুক্তিবাহিনী। গেরিলা পদ্ধতিতে যুদ্ধ চালিয়ে মুক্তিবাহিনী সারাদেশে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীকে ব্যতিব্যস্ত করে তোলে।



সেই থেকে শুরু হয় স্বাধীনতার সংগ্রাম, সেই থেকে জন্ম হয় একটি দেশের যার বাংলাদেশ নাম।

চলুন ফিরে যাই ক্ষণিকের জন্য সেই অপারেশন সার্চ লাইটে, যেখানে বাতাসে ভেসে আসছিল লাশের গন্ধ, যে রাতে নরকের সব দরজা খুলে গিয়েছিল, যে রাতে ঢাকার প্রতিটা রাজপথ হয়ে গিয়েছিল নদী, যে রাতে সতীত্ব হারিয়েছে আমার মা- বোন গুলি, যে রাতে বাংলার মাটি কেঁদে উঠেছিল পরম তৃষ্ণায়, যে রাতে অবাক বিস্ময়ে পৃথিবী দেখেছে মানব যন্ত্রণা। চলুন না স্মরণ করি তাদের কে যাদের কবরের উপর দাড়িয়ে আজ জন্মেছে এই দেশ, চলুন না সম্মান করি তাদের যারা নিঃস্বার্থে দেশ কে ভালবেসে দিয়ে গেছে প্রান। চলুন না আজ গর্বিত হই বাঙ্গালী রূপে।



চলুন আজ তাদের স্মরণে পালন করিঃ

বার্থ থ্রু জেনোসাইড [অন্ধকারে নিমজ্জন অত:পর একটি রক্তস্নাত জন্ম]

সময়: আজ রাত ১১.৫৫ - ১২.০০



রাত ১১,৫৫ থেকে রাত ১২,০০ টা পর্যন্ত সব আলো নিভিয়ে দিয়ে তাদের স্মরণ করি, যাদের জন্য আমরা আজকের বাঙ্গালী।।



"যারা স্বর্গগত তারা এখনও জানে স্বর্গের চেয়ে প্রিয় জন্মভুমি-

তারা কি ফিরবে না আর, তারা কি ফিরবে না আর সুপ্রভাতে,

যত তরুন - অরুন গেছে অস্তাচলে।। "



জয় বাংলা।।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.