নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি নাহিদ পারভেজ নয়ন।

নাহিদ পারভেজ নয়ন

যা মনে আসে তাই লিখি।সব লেখা পড়ার যোগ্য নয় তবুও লিখি।

নাহিদ পারভেজ নয়ন › বিস্তারিত পোস্টঃ

নীল শার্ট এ ভালবাসা

১৭ ই নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:২৫

-কথা বলোনা কেন?
.
রাগী গলায় সুস্মিতা কথা টা জিজ্ঞেস করল, সচারচর এমন গলা শোনা যায়না ওর।যখন রেগে যায় শুধু মাত্র তখনই এত কঠিন গলায় কথা বলে।ও এখন রেগে আছে কঠিন ভাবে রেগে আছে। অবশ্য ওর গলার কঠিন আওয়াজ টা শুনতে ভালই লাগে।
.
সুস্মিতা আবার বলল,
-ফোন কি রাখব?
-কেন?
-ফোন দিয়ে কথা বলতেছ না কেন?
-তোমার কথা শুনতে ভাল লাগতেছিল।
-ইদানিং তো আমার কিছুই ভাল লাগেনা তোমার
-কে বলল,
-শার্ট একটা কিনে দিলাম সেটাও তো পছন্দ করো নাই
-কে বলছে করিনাই,,
-এই শোন,আমাকে বোকা বানাবা না।সাত বছর ধরে চিনি তোমাকে।তোমার চেহারা দেখলেই বুঝি তোমার কি হইছে আর কি হয়নাই।
-ওহ,কত ভালবাসো।
-ধুর,ন্যাকামী করবানা তো
-ন্যাকামী কই করলাম,
-রাখো তো ফোন,রান্না করতেছি
-কেন,আম্মা কই?
-আছে,তবুও করি,
-যাব আমি,
-না,খবর দার আসবানা।
-আচ্ছা,,তাহলে রাখি।
-এই শোন শোন।
-হুম।
-কিছু খাওনাই?
-না,,
-আচ্ছা আসো তাহলে।
-আচ্ছা।
.
আমি জানতাম সুস্মিতা বেশিক্ষন আমার উপর রাগ করে থাকতে পারবেনা।
ঘটনা খুব বেশি নয়,পরশু আমার জন্মদিন ছিল তাই সুস্মিতা অনেক শখ করে একটা শার্ট কিনে আনছে আমাকে উপহার দেয়ার জন্য ।
দামী শার্ট, কিন্তু প্রবলেম হল শার্ট এর কালার নীল।নীল শার্ট কেমন না?
নীল কালার মেয়েদের মানায় ছেলদের না।
আমি মুখে বললাম যে শার্ট আমার পছন্দ হয়েছে কিন্তু সুস্মিতা ঠিকই বুঝে নিয়েছে যে আমার পছন্দ হয়নি।বেশি ভালবাসার এই এক প্রবলেম।
.
তার কিছুক্ষন পর ও ব্যাগ গুছিয়ে বাপের বাড়ির দিকে রওনা দিয়ে দিল।আমি শুধু তাকিয়ে রইলাম, আর ভাবতে লাগলাম যে, এই সামান্য কারণে কেউ হ্যাজবেন্ডের উপর রাগ করতে পারে।রাগ করেছে ঠিক আছে,তাই বলে বাসা থেকে চলে যেতে হবে।এত অভিমান যে কই পায় কে জানে?
এটা অতিরিক্ত ভালবাসার সাইড এফেক্ট।
যাওয়ার সময় আমি আর আটকালাম না ওকে, যাক।এ মেয়ের মাথায় অনেক সমস্যা আছে।
.
আমার ফোন বাজছে,জানি এটা সুস্মিতার কল।
প্রায় ঘন্টা খানেক আগে ওকে বলেছি ওর মায়ের বাসায় যাচ্ছি।এতক্ষনে আমার সেখানে চলে যাওয়া উচিত ছিল।কিন্তু আমি যাইনি, আমি এখনো আমার ঘরেই বসে আছি।
সুস্মিতার জন্য অপেক্ষা করছি,ও কিছুক্ষন কল দিয়ে যখন আমাকে ফোনে পাবেনা,তখন ঠিক বাসায় চলে আসবে।অতিরিক্ত চিন্তা তার আমাকে নিয়ে।এটাও ভালবাসার সাইড এফেক্ট।
.
এসবের মাঝেই ফোনের ম্যাসেজ টোন টা বেজে উঠল,ফোন হাতে নিয়ে দেখি সুস্মিতার ম্যাজে।
লেখা,
"বাবু সোনা, টুকুর বাবা।
আমি জানি তুমি ঘরেই বসে আছো।জলদি নীল শার্ট টা গায়ে দিয়ে আমাদের বাসায় চলে আসো।
টাইম মাত্র পনের মিনিট, এখনো না খেয়ে বসে আছি তোমার জন্য।
ইতি টুকুর আম্মু।
.
আমি ম্যাসেজ টা পড়ে আশ্চর্য হয়ে গেলাম, এই মেয়ে কিভাবে জানল এটা।ইদানিং ও আমার চিন্তা ধারার উপরেও নিয়ন্ত্রন রাখছে।এটাও অতিরিক্ত ভালবাসার সাইড এফেক্ট।
আমি আর দেরী করলাম না, ওর দেওয়া শার্ট টা পড়ে বের হয়ে গেলাম।না গেলে আবার কি হবে কে জানে?
.
সুস্মিতার বাড়ির সামনে গিয়ে দেখি সুস্মিতা সেজে গুজে বাড়ির সামনে দাড়িয়ে আছে।আমি রিকশা থেকে নেমে বললাম,
-ব্যাপার কি?
.
ও আমার কথার জবাব দিল না।আমাকে ভাল করে দেখতে লাগল।আমি বললাম,
-কি হল?
-বাহ,তোমাকে দারুন লাগছে এ শার্ট এ।
-ধন্যবাদ,বাট তুমি বাইরে কেন?
-আমাদের বাড়িতে তোমার খাওয়া নাই,
-কেন?
-কারণ আমার দেওয়া শার্ট তুমি পছন্দ করো নাই,
-আমার ক্ষুদা লাগছে,
-মিথ্যা বলবানা,তুমি খেয়েই আসছ।নয়ত যখন ডাকছিলাম তখনই বাসায় চলে আসতা।
-হুম,,তো এখন কি করব,
-বাসায় যাবো।রিকশা ডাকো,,
-আচ্ছা।
.
আমি রিকশা ঠিক করলাম।অবশ্য আমার চিন্তা ছিল অন্য, খেয়ে দেয়ে একটু ঘোরা ঘুরি করব।
তবে এটাও ভাল কোন ঝুট ঝামেলা ছাড়া সুস্মিতা বাড়ি ফিরছে।আগের বার যখন রাগ করে আসল পরে অনেক কষ্ট করে ওকে ফিরিয়ে নিয়ে গেছিলাম সেই হিসেবে এবারের টা ভাল।
.
রিকশা কিছুদুর যাওয়ার পর সুস্মিতা আসল বোম টা ফাঁটালো।ও আমার ঘাড়ে ওর মাথা রাখতে রাখতে বলল,
-খুব সহজে সব ঠিক হচ্ছে তাই না?
-মানে,
-এই যে আমি সহজে তোমার সাথে যাচ্ছি।
-হুম,,
-আসলে তোমার জন্য একটা সারপ্রাইজ আছে,
-কি?
-বাসায় চলো,,,আজ রাতে দিব।
.
আমি তো সুস্মিতার কথা শুনে অনেক খুশি হলাম, কি উপহার আছে এই চিন্তা আর মাথা থেকে গেল না। রাতে যেহেতু দিবে সেহেতু দারূন কিছু আশা করা যেতে পারে।ওকে বাড়িতে নামিয়ে দিয়ে একটু কাজ ছিল একখানে, সেখানে গেলাম।
.
কাজ শেষ করতে করতে সন্ধ্যা হয়ে গেল, তারপর বাসায় আসার জন্য রওনা দিলাম। মনে পড়ল সুস্মিতা উপহার দিবে আর তার বদলে যদি আমি কিছু না দেই তাহলে ব্যাপার টা কেমন হয়ে যাবে।
রাস্তার পাশের এক ফুলের দোকান এ গিয়ে এক তোরা গোলাপ নিয়ে চলে এলাম।বাসায় এসে দেখি বাসার পরিবেশ খুব সুন্দর।
.
ভালভাবে ডিনার সেরে নিয়ে ঘরে উপস্থিত হলাম,
ঘরে গিয়ে দেখি সুস্মিতা সেজে গুজে বসে আছে।আমি একটা গোলাপ ওর মাথায় গুজে দিলাম।উপহারের আশায় আমি খুব এক্সাইটেড।
সুস্মিতা বলল,
-চোখ বন্ধ কর,
-কেন?
-করইতো,
-হুম,
.
আমি চোখ বন্ধ করলাম।ভাবলাম আমার সাথে ভাল কিছু হবে কিন্তু তেমন কিছু হল না।
ত্রিশ সেকেন্ড যেতেই বলল,
-চোখ খোল,
.
আমি চোখ খুলে দেখি অনেক গুলো প্যাকেট বিছানার উপর।
-কি এগুলো,
-শার্ট,
-কার জন্য,
-তোমার জন্য,,গিফট বলছিলাম না,তোমার গিফট।
.
মোট তিনটা প্যাকেট,একটা করে প্যাকেট খুলছি আর বিরক্তি হচ্ছি।তিনটা প্যাকেটে তিনটা শার্ট, আর তিনটা শার্ট এর রং ও নীল।কেমন লাগে বলেন তো?
.
-এসব কি কিনছ?
-কেন?
-একি কালার?
-হুম, ডিজাইন আলাদা।তোমাকে নীল কালারের শার্ট এ এত সুন্দর লাগে জানতাম না।তাই কিনে নিয়ে আসলাম।ভাল করছি না।
-হুম,ভাল করছ।
-দেখছ কত ভালবাসি তোমাকে,,
-হুম,আমি ভাবছিলাম কি না কি উপহার,
-কি ভাবছ?
-কিছুনা
-আচ্ছা,যাও।ট্রাই করতে থাক।
-হুম,
.
শালার ভাগ্য,কি উপহার ভাবলাম কি উপহার পেলাম।এই মেয়টা এত ভালবাসে কেন আমারে। সব অতিরিক্ত ভালবাসার সমস্যা।
ভাবছিলাম মজা হবে রাত্রে,এখন শার্ট পরে ট্রায়াল দিতেছি।
.
.
.
-নাহিদ পারভেজ নয়ন

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:৪৪

হাসান জাকির ৭১৭১ বলেছেন: ভালবাসার সাইড এফেক্ট।
ভালতো............

১৭ ই নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৪১

নাহিদ পারভেজ নয়ন বলেছেন: ধন্যবাদ

২| ১৭ ই নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:১৯

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:

'সাইড ইফেক্টের' গল্প ভালো লেগেছে।
তবে ভবিষ্যতে এরচেয়েও ভালো গল্প লেখতে পারবেন বলে মনে হচ্ছে :)

১৭ ই নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৪২

নাহিদ পারভেজ নয়ন বলেছেন: ধন্যবাদ

৩| ১৮ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:৩৫

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: এটা আগের গুলোর চেয়ে ভাল ছিল

১৮ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:৫০

নাহিদ পারভেজ নয়ন বলেছেন: ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.