নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পরিবর্তনই মানুষের সবচেয়ে ধ্রুব বৈশিষ্ট্য, যার জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত কোন পরিবর্তন হয়না, সে হয় পশু না হয় দেবতা।

অন্ধের যষ্ঠী

সত্য সন্ধানী

অন্ধের যষ্ঠী › বিস্তারিত পোস্টঃ

আশরাফ মুসলমান বনাম নমঃশূদ্র মুসলমান

১৪ ই মে, ২০১৫ রাত ২:৩১

১৯৯৮ সাল, দেশে মিনি ক্রিকেট বিশ্বকাপ বসেছে, স্কুলে এক লম্বা দাঁড়ি ওয়ালা স্যার যাকে আমরা নানা স্যার বলে ডাকতাম ক্লাসে হঠাত বলে উঠলেন "মুসলমান হিসেবে আমাদের সবার পাকিস্তানকে সাপোর্ট দেয়া উচিত।" তখন বয়েস কম থাকলেও পাকিস্তান আমাদের সাথে কি করেছিল তা জানতাম। স্যারের এই কথা শুনে অবাক হয়েছিলাম। কিন্তু এখনো এই দেশে অনেকেই আছে যারা পাকিদেরকে সাপোর্ট দেয়াকে ঈমানি দ্বায়িত্ব মনে করে। সমাজ যখন কাউকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে একঘরে করে দেয়, সেই সমাজে থাকার জন্য আকুপাকু করা আর সেই সমাজকে নমঃষ্কার কি জাতিগত হীনমন্যতার পরিচয় নয়? আর সেই সমাজের নাম যখন হয় ইসলামি সমাজ, যে সমাজের মোড়ল হচ্ছে আরব ধনী দেশগুলো, আর পাকিস্তানের মত দেশগুলো হচ্ছে তাদের মাফলার পড়া চামচা। সেখানে বাংলাদেশ, মালয়শিয়ার মত দেশগুলো হচ্ছে অস্পৃশ্য নমঃশূদ্র শ্রেণী। পৃথিবীর সব মুসলমানের পাঁচ ভাগের তিন ভাগই ভারত উপমহাদেশ এবং মালয়, ইন্দো দ্বীপপুঞ্জের বাসিন্দা। কিন্তু তারপরো যেহেতু ঐশীবাণী আরবদেশ থেকে প্রাপ্ত তাই তাদেরকেই দাদা বলে মেনে নিতে হয়। আর তাদের দাদাগিরি সহ্য করতে হয়। অথচ মুসলমানদের এই সমাজ ১৯৭১ সালে পাকিস্তান আর তাদের দোসর জামাতকে সমর্থন করেছিল। পৃথিবীর কোথাও কোন হিন্দু বিপদে পড়লে ভারত অভিভাবকের মত পাশে থাকে। পৃথিবীর সব হিন্দুর জন্য ভারতের দ্বার খোলা থাকে। অথচ মুসলমানদের তীর্থ ভূমি সৌদি আরব তার উলটো। সে তার সুবিধামত কাজ করে। সে ফিলিস্তিনকে কাচ কলা দেখিয়ে ইসরাইলকে বুকে টেনে নেয়। অথচ ফিলিস্তিনের এই অভাগা মানুষগুলো আরবের মক্কার মুহাম্মাদ (স) এর অনুসরণ করে বলেই তাদের এই দুরাবস্থা, একই অবস্থা কাশ্মির বা মিন্দানাও অথবা বার্মায়, কিন্তু সেদিকে আরবদের কোন নজর নেই। ৭১ সালে যখন পাকিস্তানি আর্মি এই দেশের নিরিহ মানুষদের বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে মারছিল, ইসলাম রক্ষার নামে বাঙালী মেয়েদের ইজ্জত হনন করছিল, সেই মানূষগুলোর আর্তনাদ আর বাঁচার আকুতি আরব বাদশাদের কানে পৌঁছেনি। পাকিরা একজন একজন করে মানুষ মেরেছে আর বাদশারা মারহাবা মারহাবা বলে হাত তালি দিয়েছে। আজকে তারাই নাকি আমাদের ত্রাণকর্তা, ইসলাম রক্ষাকারী। অথচ আজকে যদি আবার যদি পাকিস্তানের সাথে যুদ্ধ হয় আরব দেশগুলো পাকিস্তানের পাশেই থাকবে। ধিক্কার দেই এই ইসলামি সমাজকে, নিকুচি করি তাদের সমাজ ব্যবস্থাকে। যারা আমাদেরকে মানুষ বলেই স্বীকার করেনা, তাদের কাছ থেকে মুসলমানের স্বীকৃতি আমার দরকার নেই। এমনকি ইসলামের নামে পাকিস্তানি হুজুরদের উর্দু বয়ান শুনতেও আমি আগ্রহী নই। যারা নিজের দেশের আর্মিকে নসিহত করতে পারেনা, তারা আমাদের কী নসিহত করবে? অনেকে বলবেন যে, এটা তো ইসলামের দোষ না, মানুষের দোষ। কিন্তু ইসলামের কথা কি আরবরা আদৌ আত্মস্থ করতে পেরেছে? বরং তারা যেভাবে যায় ইসলামী বিশ্ব সেভাবেই চলে, তাহলে এখানে ধর্মের আর কি ভূমিকা থাকল? ইসলাম আরব দেশ থেকে এসেছে আর এর নিয়ন্ত্রন তাদের হাতেই। এখন আবার যোগ হয়েছে তাদের তেলের টাকা আর আমেরিকার কাছ থেকে কেনা অস্ত্রশস্ত্র। এসব দিয়ে তারা ইসলামি জগত শাসনে রেখেছে, এবং গত ১০০ বছরে তাদের মানসিকতার কোন পরিবর্তন আসেনি। আমরা ৭১ এ শুধু পাকিস্তান নয়, তামাম আরব বিশ্বের বিরুদ্ধে জয়লাভ করেছিলাম, অথচ আজকে আমারাই যেন পরাজিতের কাতারে। এখনো পর্যন্ত পাকিস্তানকে অকুণ্ঠ সমর্ধন দানের জন্য তারা ক্ষমা চায়নি এমনকি তারা লজ্জিত তো নয়ই। বরং তারা বাংলাদেশকে স্মীকৃতি দেয় ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট!! এর আগে শেখ মুজিব মুসলিম হিসেবে আরব্দের কাছে অনেক সাহায্য চেয়েছেন, কিন্তু পাননি, কারণ তারা পাকিস্তানের ভক্ত। অনেকে বলবেন, তারা তো আমাদেরকে তাদের দেশে কাজ দেয়, খাওয়াপড়া দেয়, ভাই থামেন আমি বলছি, ৭১ এ তারা এবং পাকিস্তান আমাদের সোনার বাংলাকে ধংসস্তুপে পরিনত না কারলে একটা বাঙালীকেও আরবদের দেশে যাওয়া লাগত না। আজকে তারা আমাদের গরু মেরে জুতা দান করছে, তাদের দেশে আমরা হলাম কামলা, মিসকিনের জাত। অনেকে বলে আরবরা আমাদের ভাই লাগে, আমাদের কত সাহায্য করতেসে, আপনি কি জানেন, বাংলাদেশের চেয়ে অনেক বেশি সংখ্যক ভারতীয় এবং ফিলিপাইনের লোক আরব দেশগুলোতে কাজ করে? তারা তো মুসলিম নয় তাহলে? মুসলমানরা সাতশ বছর এই অঞ্চল শাসন করেছে, তখন হয়ত মুসলমানরা ভালো থেকেছে, আবার ইংরেজদের দুইশ বছরে হিন্দু খ্রিস্টান সমাজ সুবিধা পেয়েছে। বৃহত্তর শাসক সমাজের সেই সব অন্যায় বা অত্যাচারের কথা অনেকেই ভুলতে পারেনি। কিন্তু আরব দেশ থেকে কেউ এসে আমাদের দেশকে ইংরেজ মুক্ত করে দিয়ে যায়নি। আমাদেরকে স্বাধীনতা অর্জন করতে হয়েছিল। কিন্তু পাকিস্তান সৃষ্টির মধ্যে দিয়ে আমরা যা আশা করে করেছিলাম তা বাস্তবায়িত হয়নি। ১৯৭১ এ বাঙালি হিন্দু মুসলমান উভয়েই অপূরণীয় দুঃখ কষ্ট ও ক্ষতি স্বীকারের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছি। ধর্মীয় উগ্রতা থেকে আমরা কখনো সফলকাম হইনি। এত ত্যাগের পর এই দেশে আবার ধর্মীয় জঙ্গিবাদ আস্তানা গেড়ে বসবে তা হতে পারে না। মোদির মত গোঁড়া হিন্দুও যদি মাথা ঠান্ডা রেখে নেতৃত্ব দিতে পারে, শান্তির ধর্মের লেবাস নিয়ে আমরা কি করছি? কোপাকুপির সংস্কৃতি থেকে আমরা কি পারবো বেরিয়ে এসে ধর্মের রক্তচক্ষুবিহীন স্বাধীন বাংলাদেশ গড়তে?

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই মে, ২০১৫ সকাল ৯:২৪

জনতার রায় বলেছেন: আপনার দেওয়া তথ্য ভুল। বিশ্বের ১২৫ কোটি মুসলমানের মধ্যে ৭৪ কোটি মুসলিম অর্থাৎ ৬০% হচ্ছে ইন্দোনেশিয়া, ভারত, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের বাসিন্দা।

১৪ ই মে, ২০১৫ দুপুর ২:২৩

অন্ধের যষ্ঠী বলেছেন: আপনার তথ্যের জন্য ধন্যবাদ, আমি শুধু ঐ চারটি দেশ না, বরং সমগ্র অঞ্চলকে বুঝিয়েছি, যেখানে মালয়শিয়া, থাইল্যান্ড, বার্মা এবং ফিলিপিন্সের মুসলিমদেরকেও হিসাবে ধরা হয়েছে। আবার যদি শুধু আরব জনসংখ্যার হিসাব থেকেও বিচার করেন, তারা সব দিক থেকেই মারাত্মক রকম সংখ্যালঘু।

২| ১৪ ই মে, ২০১৫ দুপুর ২:০৯

শতদ্রু একটি নদী... বলেছেন: পাকিস্তানের শাসন থাকা উচিত ছিলো বাঙ্গালীদের হাতে। বাঙ্গালী ছিলো সাত কোটি আর পশ্চিমে ছিল সাড়ে চার কোটি। মাত্র দুই কোটি ছিলো পাঞ্জাবী। শাসন ক্ষমতা যদি বাঙ্গালীর হাতে থাকতো তাইলে পাকিস্তান ভাঙ্গার দরকার হইতোনা আর ওরাও আমাদের শাসনে কিছুটা মানুষ হইতো।

আরব জাত নিয়া কিছু নাই বলি। আরব জাত দেখলেই ক্যামন জানি চুলকানি উঠে। দুনিয়ার সবচেয়ে খারাপ জাত তাই শেষ নবী ওইখানেই আসছিলেন।

১৪ ই মে, ২০১৫ দুপুর ২:৩০

অন্ধের যষ্ঠী বলেছেন: আসলে পাকিস্তানের কাঠামোটাই এরকম ছিলো যে এটা যেকোন ভাবেই হোক ভেঙ্গে যেত, পাকিস্তান ছিল একটা খুবই সাময়িক সমাধান মাত্র, অনেকটা সোভিয়েত ইউনিয়ন বা যুগোস্লভিয়ার মত, তার চেয়েও নাজুক। বাঙ্গালীদের স্বাধীন হওয়ার যে আজন্ম আকুতি, তাই ধাপে ধাপে বঙ্গ ভঙ্গ, পাকিস্তান এবং ৭১ এ বাংলাদেশ সৃষ্টির মাধ্যমে অর্জিত হয়েছে। আর পাকিস্তানের মানুষ ও এর নেতাদের অহংকার ও একই সাথে অজ্ঞতা পুরো প্রক্রিয়াকে তরান্বিত করেছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.