নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চলে যাব-তবু আজ যতক্ষণ দেহে আছে প্রাণপ্রাণপনে পৃথিবীর সরাব জঞ্জাল, এ বিশ্বকে এ-শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি--নব জাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।

মাহদী মুরাদ

আমি নামানুষ।।। প্রচুর বই পড়তে ভালোবাসি।

মাহদী মুরাদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

রিয়াল মাদ্রিদ রেফারি কিনে!!!

২৭ শে মে, ২০১৮ রাত ১০:১৫

১. বাজেভাবে ট্যাকলের স্বীকার মোহাম্মদ সালাহর বিশ্বকাপ প্রায় অনিশ্চিত। গতকাল রামোস এর বাজে ট্যাকলের স্বীকার হয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে তাকে। ক্লাব ফুটবলে ভয়ংকর দুজন ডিফেন্ডারের নাম বলতে গেলে সবার আগে আসবে রামোস আর পেপের নাম। এটা কেউই অস্বীকার করতে পারবেনা। মাদ্রিদ সাপোর্টারসকেও এটা মেনে নিতে হবে নির্দ্বিধায়।
এখন আসি, ফুটবলপ্রেমী ট্যাগ লাগিয়ে মুখোশের আড়ালে থাকা কিছু বার্সা সমর্থকদের কথায়। মোহাম্মদ সালাহ অনেক ভালো একটা খেলোয়াড়। সে অনেক কষ্টে মিশরকে বিশ্বকাপে তুলেছে। সে লিভারপুলকে উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লীগের ফাইনালে তুলতে অনেক বড় অবদান রাখছে। এখন সে যদি এই ইঞ্জুরির জন্য বিশ্বকাপ খেলতে না পারে, তাহলে খুব খুব অন্যায় হয়ে যাবে তাইতো? রামোস খুব বাজেভাবে, পরিকল্পিতভাবে সালাহকে আহত করেছে ইত্যাদি ইত্যাদি। আপনাদের মতো ভদ্র ফুটবলপ্রেমীদের কাছে যেটা খুবই বাজে লাগছে। তাই আপনারা ফুটবলপ্রেমী হিসেবে ভদ্রতা রক্ষার্থে রামোসকে কুত্তার বাচ্চা, ফাক রামোস বলে স্ট্যাটাস দিচ্ছেন।

২. এবার একটু পেছন ফিরে তাকাই। ২০১৪ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল চলছে। ব্রাজিল বনাম কলম্বিয়া ম্যাচের ৮৮ তম মিনিটে মাঠ ছাড়েন নেইমার। ততক্ষণে ম্যাচের ফলাফল ব্রাজিলের পক্ষে গেছে। হয়তবা ক্ষোভের বশবর্তী হয়ে কলোম্বিয়ান ডিফেন্ডার হুয়ান কামিলো জুনিউগা নেইমারকে বাজেভাবে ট্যাকল করে ওর কশেরুকা ভেঙ্গে দেয়। ফলাফলস্বরূপ, নেইমার হাসপাতালের বিছানায় মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে আর নেইমারবিহীন ব্রাজিল জার্মানির কাছে ৭-১ গোলে পরাজিত হয় যেটা আর্জেন্টাইন সমর্থকদের সময়ের সেরা অর্জন বলে ধরে নেয়া যায়। কারণ, আর্জেন্টাইন সমর্থকরা নিজেদেরকে গত বিশ্বকাপের ফাইনালিস্ট বলার চেয়ে 'আমরা তো আর সেভেন আপ খাওয়া দল নই' বলতেই বেশী স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে।
ফুটবলপ্রেমী হিসেবে মিশরের সালাহর জন্য আপনার অনেক মায়া হয় বুঝলাম। তবে ২০১৪ সালে ব্রাজিল যখন ট্রফি থেকে মাত্র দুটো ম্যাচ দূরে ছিল, তখন পরিকল্পিত সেই হামলা কতটুকু ভাল ছিল? একটা স্বাগতিক দেশের যখন স্বপ্নভঙ্গ হয়ে গেল, তখন আপনাদের মায়া কই ছিল ভাই? তখন তো আপনাদের কাউকে দেখিনি সেই কলোম্বিয়ান ডিফেন্ডারকে গালি দিতে। সেই কলোম্বিয়ান ডিফেন্ডারের নামটাও আপনারা জানেন কিনা সন্দেহ! তখন তো আরেক কাঠি সরেস হয়ে বলছিলেন, 'ব্রাজিলে নেইমার ছাড়া কি আর কোনো খেলোয়াড় নাই ?' আর্জেন্টিনার কথা ভাবেন তো একবার, মেসিবিহীন আর্জেন্টিনা কেমন। তাহলেই উত্তর পেয়ে যাবেন।

৩. ২০১৬ সালের ইউরো ফাইনাল চলছে। বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ংকর ডিফেন্ডারদের একজন পেপে খেলছে পর্তুগাল দলে। কিন্তু রোনালদো খেলার শুরুর দিকেই পায়েটের ট্যাকলে আহত হয়ে চোখে পানি নিয়ে মাঠ ছাড়ে। তখন আপনাদের ফুটবলপ্রেম আমি হারিকেন লাগিয়েও খুঁজে পাইনি ভাই। বরং পর্তুগাল ইউরো জেতার পর অনেককেই বলতে শুনেছি, 'রোনালদোর এমন উদযাপন দেখে মনে হয় ইউরো যেন ও-ই জিতাইছে।' আপনাদের এত জ্বলে কেন ভাই, বুঝিনা। রোনালদো একাই পর্তুগালকে বিশ্বকাপে টেনে তুলে। ইউরোর ফাইনালেও রোনালদোই পর্তুগালকে নিয়ে গেছে। তাহলে ওর উচ্ছ্বাস বাঁধভাঙ্গা হবেনা তো, কার হবে? নিজের দেশকে, নিজের দলকে জেতানোর আনন্দ সে পুরোপুরি উপভোগ করেছে। এটাও আপনাদের কাছে দৃষ্টিকটু লাগে। চিন্তা করেন, কেমন আপনাদের ফুটবলপ্রেম!

৪. এবার আসি রিয়াল মাদ্রিদের কথায়।
আচ্ছা ভাই, রিয়াল মাদ্রিদ কি এতটাই খারাপ দল যে তাদেরকে জিততে হলে এক সালাহকে মাঠের বাইরে পাঠিয়ে দিতে হবে? দ্বিতীয় সর্বোচ্চ লীগ জয়ী ক্লাবের থেকে ৬টা ট্রফি এগিয়ে আছে মাদ্রিদ। ক্লাব ফুটবলের মর্যাদাপূর্ণ এই লীগ যেখানে কোনো দল টানা দুবারও জিততে পারেনি, সেখানে টানা তিন তিনবার জেতা দল হচ্ছে রিয়াল মাদ্রিদ। গত পাঁচবছরে হ্যাটট্রিকসহ চারটা ট্রফি দেখেও কি আপনাদের মনে হয়না মাদ্রিদ ইজ ফার বেটার দ্যান এনি আদার টিম? তবুও আপনারা বলবেন, একজন খেলোয়াড়কে ইঞ্জুরিতে ফেলে দিয়ে মাদ্রিদকে ফাইনাল জিততে হয়? এ কেমন ফুটবলবোদ্ধা আপনারা? রোনালদো একজন খেলোয়াড়, যে হ্যাটট্রিক শিরোপা এনে দিল রিয়াল মাদ্রিদকে, তাকে তো অন্তত একটু নিরপেক্ষ নজরে দেখতে পারেন মাদ্রিদ শত্রু নাহয়ে। এখন বলবেন, রিয়াল রেফারি কিনে, গোলকিপার কিনে, ট্রফি কিনে! বার্সেলোনা যখন খেলার মধ্যে সুবিধা পায়, তখন বলেন ফুটবলে এরকম একটু-আধটু হয়েই থাকে। তাহলে, মাদ্রিদের ক্ষেত্রে আপনার সুর বদলে যায় কেন ভাই?

রিয়াল যখন একের পর এক ম্যাচ জিতে ট্রফির কাছাকাছি আসতেছিল, তখন আমি বার্সার খোঁজও নিতাম না। আমি ভাবতাম বার্সাও জিতে আসুক, চ্যাম্পিয়নস লীগের ফাইনালে দেখা হবে নাহয়। কিন্তু আপনারা ফুটবলপ্রেমীর চাদরে মোড়ানো বার্সা সমর্থকেরা জুভেন্টাস, বায়ার্ন হয়ে শেষে লিভারপুল এর সাপোর্টার হয়ে গেলেন। কারণ, বার্সা এতদূর আসতেই পারেনি। এইসব লোকেদেরকে আমার কি মনে হয় জানেন? চিড়িয়া মনে হয়, চিড়িয়া।

Note: অনেক বার্সা সমর্থক, মাদ্রিদবিরোধী এসে আমাকে গালি দিবেন, অনেককিছু বলবেন। অনেকে হয়ত রাগ করতে পারেন, কিন্তু ভেবে দেখবেন আমি একটুও বাড়িয়ে বলিনি।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.