| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এইচ এন নার্গিস
আমি একজন লেখক, সমাজ কর্মি , মা এবং মুক্তিযোদ্ধা
অহমিকা ,দম্ভ এবং ইগো প্রবলেম
"Love and ego cannot live together" Saloni Bajaj.
বিবাহিত দম্পতির মধ্যে সম্পর্ক নষ্ট হতে চলেছে? সেখানে নাই সম্মান আর ভালবাসা?
সম্পর্কে যখন আত্ম গর্ব ,অহং বোধ আর দম্ভ বিরাজ থাকে, সেখানে সম্পর্ক নষ্ট হতে বাধ্য ।
সঙ্গীর "অহমিকা" দাম্পত্য কলহ বাড়িয়ে দায়। সম্পর্কে ফাটল ধরায় ।
কেউ কেউ হয়তো টেনে টুনে দিন গুলো কাটিয়ে দিতে থাকে যাতে পরিবার টি ভেঙ্গে না যায় কিন্তু সেখানে 'হেলদি সম্পর্ক' থাকে না।
বিবাহিত সম্পর্কে কি সেই অহমিকা?
উদাহরণ স্বরূপ বলা যায় কি সেই অহমিকা
১) সে যা চায় তাই হতে হবে
২) তার সিদ্ধান্তই সব কিছু হতে হবে
৩) সে সবসময়ই ঠিক
৪) তার চাওয়া পাওয়া কেই প্রাধান্য দিতে হবে
৫) সে যাই বলবে সেই মোতাবেক সব কিছু হতে হবে
৬) তার কথায় শেষ কথা অর্থাৎ তার সিদ্ধান্তই অবধারিত ,তার এক বিন্দু এদিক ওদিক হতে পারবে না
পরিবার একটা "অর্গানাইজেসন" । এখানে দুই জনেই সমান অংশিদার । দুই জনের মতামত দুই জন কে শুনতে হবে, গুরুত্ব দিতে হবে এবং সেই মোতাবেক সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এটাই হল সুস্থ সম্পর্কের ভিত্তি ।
"Your only enemy is your own ego, pride and discord. No one else is your enemy"
Mark L Lockwood.
এই ব্যাপার টি যেখানে থাকে না সেখানে মতের অমিল থাকে ,এক জনের সিদ্ধান্ত সঠিক হলেও অহমিকার বশবর্তি হয়ে, সে ভাবতে থাকে "তার কথা ঠিক হলেও আমি তা শুনবো না" এটাই হল অহমিকা পূর্ণ মানুষটির দম্ভ । যা সম্পর্ক নষ্ট করে ।
এটা সেই স্বামী বা স্ত্রী দুজনেই হতে পারে। আগের দিনে স্ত্রীদের পড়াশুনা তেমন থাকতো না । তাই তার সংসারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা থাকতো না।
এখন অনেক মেয়ে শিক্ষিত এবং কেউ কেউ চাকুরী করে বা ব্যাবসা করে।
তার পরেও যদি স্বামী টি, তার ইগো দেখাতে পারে । যেমন
+ কাজ করতে দিতে বাধা প্রদান
+ আবার কাজ করলেও তার ইনকাম তার হাতে দিতে চায় না। সে নিজে জোর পুর্ব ক তা নিয়ে নায়।
+ স্ত্রীর নামে কোনো ব্যাঙ্ক এক্যাউন্ট থাকে না
+ চাকুরী করার জন্য বাধ্য করা
মেয়েটির নিজের ইচ্ছা অনিচ্ছার মূল্য সেখানে নাই
এবং অর্থনৈতিক স্বাধীনতা দেওয়া হয় না।
অনেক সময় মেয়েটির শিক্ষাগত যোগ্যতা বেশি হলে পুরুষ মানুষ তা সহ্য করতে পারে না। তার প্রমোশন হলে তা নিতে পারে না।
অহমিকা বেশি থাকলে পুরুষ টি বেশি শিক্ষিত মেয়ে বিয়ে করতে ভয় পায় । কারন সে নিজের চেয়ে কম শিক্ষিত মেয়ের কাছে নিজের যোগ্যতা দেখাতে পারবে এই জন্য।
"তুমি শিক্ষিত নও" এটা বলার সুযোগ পাবে। বলে মজা পায় এবং নিচু করে ।
অহমিকা প্রবণ মানুষ সব সময় তার সঙ্গীর দুর্বল দিকটি খুঁজে যা ব্যবহার করে তাকে বুলি করে ।
এখানে কাজ করে হিংসা । "কাউকে হিংসা করা মানে তুমি তার সাফল্য গ্রহণ করতে পারছ না।"
"If you are jealous of someone it simple means you have not come to a true acceptance and appreciation of yourself"
Rasheed Ogunlaru
কম্পেয়ার, কৃটিসাইজ , কম্প্রমাইজ না করা কম্পিটিসান এবং কন্ট্রোল
আপস বা মিটমাট করতে না চাওয়া , প্রতিযোগিতা, তুলনা করা, সব ব্যাপার কে কন্ট্রোল করতে চাওয়া ।
এই পাঁচ টি দিক তাদের চরিত্রের বৈশিষ্ট্য । বিবাহিত জীবনে দম্ভ সম্পর্কে ফাটল ধরায়। সেখানে থাকে না ভালবাসা। অহংকারী মানুষ টি তার মেজাজ, ক্রোধ দেখিয়ে নিজের প্রভাব জারী করতে চায়।
তার সাথে থাকে
+ Lack of compromise (ছাড় দিতে চায় না)
+ Difficulty in accepting criticism (সমালোচনা পছন্দ করে না)
+Control Issues ( সব কিছু কন্ট্রোল করতে চায়, সঙ্গীর চলা ফেরা, বাইরে যাওয়া, তার অর্থ নিজের করে নেওয়া)
+Failure of emotional vulnerability ( মানসিক ভাবে অত্যাচার করা যেমন তাকে সম্মান না করা, নিচু করা, মানুষের সামনে ব্যাঙ্গ বিদ্রূপ করা।
+Failure to empathise সহানুভূতি না দেখানো
+Focused on winning arguments তর্কে তাকে জয়ী হতে হবে এই মনোভাব থাকা ।
দুই জনের মধ্যে যোগাযোগ থাকে না , বন্ধুত্ব থাকে না।
নিজে গুরুত্বপূর্ণ এটা দেখানোর জন্য সঙ্গীর ভুল ত্রুটি খুঁজে এবং সেই ভুল নিয়ে তুল কালাম ঘটনা ঘটায়।
নষ্ট হতে থাকে ভাবের আদান প্রদান। নিজের সঙ্গীর সাথে না থেকে বাইরে সময় কাটায় ।
Failure to Empathise সহানুভূতিশীল দেখাতে অপরাগ ।
সঙ্গীটি কি চায় ,তার পৃথিবীটা কেমন বা দৃষ্টি ভঙ্গি কি সেই দিকে তার কোনও খেয়াল নাই। সে থাকে নিজেকে নিয়ে। সঙ্গী কি চায় তা ইগনর করে। শুরু হয় সম্পর্কের অবনতি ।
আর্গুমেন্টিভ বা তর্ক বাঁধানো
সব কিছু নিয়ে তর্ক করা আর সেই তর্কে তাকেই জয়ী হতে হবে এই মনোভাব থাকা । সে মোটেও ভাবে না তার এই ব্যাবহার তাদের মধ্যের সম্পর্ক নষ্ট করছে।
এই চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য গুলো প্রতিনিয়ত ব্যাবহার করে একজন আর একজন কে ক্ষমতা হীন করতে চায় এবং তার মধ্যে দিয়ে নিজের ক্ষমতা জাহির করে।
অহমিকা বা দম্ভ, শুধু মাত্র যে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে সম্পর্ক নষ্ট করে তাই নয় এটা মা বাবা সন্তান, ভাই বোন এবং অফিসে উচ্চ পদস্থ বস এবং কর্মচারী দের মধ্যে গুড রিলেসান নষ্ট করে।
এই সমস্যা অনেক সময় মানুষের জিনেটিক বা জন্মগত এবং অনেক সময় পরিবেশ গত ভাবে পায় । অনেক সময়
এটা একটা সাইকোলজিক্যাল সমস্যাও হতে পারে।
কি করা উচিৎ
"আমি স্পেশাল একজন" এই অসত্য ভাবনা থেকে সরে আসতে হবে ।
" অন্য মানুষ কেও সাকসেসফুল হতে দাও।"
"Unrealistic expectations তার মানে আমাকে সব সময় জয়ী হতে হবে,এবং আমি বেশি গুরুত্তপুর্ন "
এই অসম্ভব ভাবনা থেকে সরে আসতে হবে।
কারন অনেক মানুষ পৃথিবীতে সাকসেসফুল এটা মেনে নিতে হবে।"
অহমিকা বা দম্ভ একটি অস্বাস্থ্যকর বিশ্বাস ।
সব শেষে একটি উক্তি দিয়ে শেষ করি "
"It is an unhealthy belief in our own importance , arrogance, self-centered ambition . It's the sense of superiority and certainty that exceed the bounds of confidence and talent."
হুসনুন নাহার নার্গিস
©somewhere in net ltd.