![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পুত্র, পুত্র বধু ও সাত বছরের নাতির সঙ্গে বাস করতেন এক জরাগ্রস্ত বৃদ্ধ।বয়সের ভারে বৃদ্ধ একেবারে নুইয়ে পড়েছেন। হাঁটতে গেলে হোঁচট খেয়ে পড়ে যান, কিছু ধরতে গেলে হাত কাঁপতে থাকে, কিছু দেখতে চাইলে চোখ ঝাপসা হয়ে আসে।বুড়ো পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বেশ সুখে জীবন যাপন করতে থাকেন।সবাই মিলে একসঙ্গে গোল করে ডাইনিং টেবিলে বসে প্রতিদিনের আহার সারত।
কিন্তু ভাগ্যের কী পরিহাস! হাত কাঁপানী ও ক্ষীণ দৃষ্টি শক্তির ফলে খাবার খেতে বৃদ্ধের খুব কষ্ট হয়।যেহেতু হাত দিয়ে ভাত খেতে পারতেন না, সেহেতু তিনি চামচ দিয়েই ভাত খেতেন।তবে চামচ দিয়ে ভাত খেতে গিয়ে ঠিক সামলাতে পারতেন না, ভাত পড়ে গিয়ে মেঝেতে ছড়িয়ে পড়ত।গ্লাস উঠিয়ে পানি খেতেও ওনার বেশ বেগ পেতে হত।গ্লাস জাপটে ধরার সময় পানি ছলাৎ করে ছিটকে টেবিলের ওপর গড়াতে থাকে।মহা সঙ্কটে বৃদ্ধের দিন কাটতে লাগল।
এদিকে বৃদ্ধের কান্ডকারখানায় পুত্র ও পুত্র বধু অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন।
দুজনে বললেন, ‘কী মহা বিপদে না পড়েছি!’
পুত্র বিরক্ত হয়ে বললেন, ‘বাবার এ নংরামি আর সহ্য করা যায় না। আমাদের কিছু একটা করা একান্ত প্রয়োজন।বাবার অত্যাচার আমরা যথেষ্ট সহ্য করেছি, আর নয়।বাবাকে দুধ খেতে দিলে, দুধের গ্লাস হাত থেকে পড়ে যায়। আহার করার সময় কী বিচ্ছিরি শব্দ করে খান।দেয়ালে আমাদের পিঠ ঠেকে গেছে।’
স্বামী-স্ত্রী উপায় বের করতে উঠে পড়ে লেগেছেন।বাবাকে কীভাবে এক ঘরে করা যায়।তবেই ওনারা সুখে শান্তিতে জীবন যাপন করতে পারবেন।যুদ্ধক্ষেত্রেও এমন উত্তেজনা ও হিংস্রতা লক্ষ্য করা যায়না যেমনটি এ পরিবারের পরিমন্ডলকে ঘিরে ঘটছে।
শুরু হল উচ্ছেদের অভিযান।বৃদ্ধের শোবার ঘরে পাতা হল একটি ছোট্ট টেবিল।সেই টেবিলেই বৃদ্ধের জন্যে খাবার পরিবেশন হতে লাগল।সেই থেকে সেখানেই বৃদ্ধ একাকী খাবার খেতে লাগলেন।ঘরের এক কোণে অযত্নে অবহেলায় ফেলে রাখা হয় বুড়োকে। অথচ ভাঙ্গা কুলাও চুলার ছাই ফেলতে কাজে লাগে। বুড়োকে এক ঘরে করে বাড়ির অন্য সদস্যরা সবাই একসঙ্গে সেই ডাইনিং টেবিলে বসে মনের আনন্দে খাবার খেয়ে চলেছে।
এখানেই স্বামী-স্ত্রী থেমে থাকেননি।বুড়োকে নিয়ে যেন আরও বিপাকে পড়েছেন।ওনার শোবার ঘর থেকে কাঁচের প্লেট ভাঙ্গার শব্দ পাচ্ছেন।হাত কাঁপানী রোগের কারণে এমনটি হচ্ছে।শুরু হয়ে গেল কাঠের গামলায় বৃদ্ধের খাদ্য পরিবেশনের পরিকল্পনা।
সন্ধ্যা ঘনিয়ে এসেছে।রাতের খাবারের পূর্বে বুড়োর সাত বছরের নাতি ছোট ছোট কাঠের টুকরো দিয়ে মেঝেতে বসে খেলা করছিল।
এক পর্যায়ে বুড়োর পুত্র নিজের সন্তানকে মিষ্টি সুরে বললেন, ‘বাবা, তুমি কাঠের টুকরো দিয়ে কী বানাচ্ছো?’
মুচকি হেসে ছেলে উত্তর দিল, ‘আমি তোমার ও মায়ের জন্যে একটা কাঠের গামলা বানাচ্ছি। আমি যখন বড় হব, তখন এ কাঠের গামলায় তোমরা খেতে পাবে।’
Copyright 2013
২| ৩০ শে আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ২:১৩
নাসরীন রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১|
২৯ শে আগস্ট, ২০১৩ সকাল ১১:৪৬
তানজিয়া মোবারক মণীষা বলেছেন: ব্লগে স্বাগতম আপনাকে, ভালো থাকুন।