নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমাদের একেক জনের জীবনের এক একটা নির্দিষ্ট বিন্দুতে এসে আমাদের আশপাশে যা হচ্ছে তার উপর নিয়ন্ত্রন হারিয়ে ফেলি। তখন জীবনের নিয়ন্ত্রন নেয় ভাগ্য। এটাই দুনিয়ার সবচেয়ে বড় মিথ্যা।
১.
এখন আর বন্ধুদের আড্ডায় যাই না। যাইনা বলতে আমাকে তারা নিষিদ্ধ করেছে। ওরা দেখলেই ভাবে এই বুজি টাকা ধার চাইব। ওরা বলে, টাকা ধার চাওয়া না কি আমার নেশা। ওরা যে কি সব ভুং ভাং খায়, সেগুলো নেশা নয়!
আমার বন্ধু, রিকশা চালক, তার কাছে কিছু টাকা ধার চাইলাম। খেঁকিয়ে উঠল সে। শেষে বললাম, তোর বাবা পড়ে গিয়ে মাথা ফাটিয়ে ফেলেছে, ওষুধ কিনতে হবে, তাই ধার চাইলাম।
কিছু বুঝে উঠার আগেই সে আমার থুতনি ফাটিয়ে দিল। খিস্তি করল- তোর বাপ না আমার বাপ? এই বলে লাইনে বসে গেল। দেখলাম ধোঁয়ার আড়ালে ঢাকা বিবর্ণ মুখ।
অগত্যা, লুঙ্গির কোণায় থুতনি মুছে ল্যাম্পপোস্টের দিকে আগালাম। সেখানে ভিক্ষা করে আমার বন্ধু হাত কাটা টিকলু। দুর থেকে দেখলাম সে খুচরা পয়সা ঝোলাতে নামিয়ে খুব দ্রুত আড়াল নিচ্ছে। নিশ্চিত, ব্যাটা আমায় দেখেছে। ধার দেয়ার ভয়ে পালাচ্ছে।
২.
আজ ওরা সবাই এসেছে। হাতকাটা টিকলু, রিকসা ড্রাইভার, তার বাবা।
'ওর একটাই বাজে স্বভাব ছিল। শুধু টাকা ধার চাইত। কোন খারাপ অভ্যাসই ছিল না। কোথায় খরচ করত কে জানে।'
আরেক জন কে বলল,'আহারে, বড় ভাল মানুষ আছিল। আমারে একদিন ভরপেট খাইয়েছিল।'
কিন্তু সবার কোলাহল ছাড়িয়ে শুনা গেল হাতকাটা টিকলুর বউয়ের আহাজারি। 'আমার সংসারের কি হবে রে, ও ভাইজানরে, ভাইজানরে।'
এইটা শুনে টিকলু বউরে ধমক মারল। 'কি যা তা বলিস বউ! আমি কি মইরেছি!' সে তার বউয়ের মুখ বন্ধ করার চেষ্টা করল।
সেদিকে বউয়ের কোন ভ্রক্ষেপ নেই। উচ্চস্বরে বলতে থাকল,'তুই বেড়া সংসারের খেয়াল রাইখতি? তোর থিকে টিয়া আনি ভাইজান আমারে দিত, তুইতো খালি ধুঁমা খাইতি!'
না! মরণ না এলে বুঝা যেত না, জীবন কত মধুর!
©somewhere in net ltd.
১| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৫:৪৯
রাজীব নুর বলেছেন: মনে হছে বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকেই লিখেছেন।