নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নাঈফা চৌধুরী অনামিকা

নাঈফা চৌধুরী (অনামিকা)

নাঈফা চৌধুরী (অনামিকা) › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাদুড়

০৯ ই জুন, ২০১১ ভোর ৫:৫২



[নীচে মুখবন্ধ** সংযোজন করা হল। ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করবার প্রয়াসে প্রথম পোস্টটি লিখলেও এখন সিদ্ধান্ত বদল করে অখণ্ডিত রেখে পুরো লেখাটিই একই পোস্টে প্রকাশ করা হল]

------------------------------------



কতক্ষণ ঘুমিয়েছি জানি না। দরজা খোলার শব্দে ঘুম ভেঙে গেল। তবে তখনও তন্দ্রা পুরোপুরি কাটেনি। ঘুমঘুম ভাবের মধ্যেই বেশ আশ্চর্যবোধ করলাম। দরজা তো লক্‌ করে ঘুমিয়েছি, বাইরে থেকে খোলার প্রশ্নই আসে না। হঠাত্ মনে হল, কেউ আমার লেপের ভেতর ঢুকে পড়ল। প্রচন্ড আতংকিত হয়ে পড়লাম। তবু কি আশ্চর্য - ঘুমের রেশ চোখে জড়িয়ে, চোখ খুলতেই পারছি না। কোনমতে চোখ দুটো আধো খুলে দেখলুম, না কেউ নেই। দরজাটাও লক্‌ড্‌ রয়েছে। সাথে সাথে চোখের পাতা ভারি হয়ে গেল।



কিছু মুহুর্ত কাটল চুপচাপ। তারপর আবার দরজার ক্যাঁচক্যাঁচানি। কেউ আমার লেপ ধরে টানছে। স্পষ্ট তার অস্তিত্ব টের পাচ্ছি - লেপের কুঞ্চন অনুভব করছি শরীরে। আমি তো বিস্ময়ে ও ভয়ে অভিভূত। হচ্ছে কি এসব!



মাস তিনেক হল অস্ট্রেলিয়াতে এসেছি, মেলবোর্ণে। এখনও কোনকিছুর সঙ্গেই ভালভাবে খাপ খাওয়াতে পারিনি নিজেকে। প্রতিদিনই ঘুম ভেঙ্গে কোথায় রয়েছি বুঝে উঠতে বেশ কিছু সময় পেরিয়ে যায়। বাবা ইমিগ্রেশান নিয়ে এসেছেন, সাথে মা, শ্যামল আর আমি। শ্যামল আমার সাত বছরের ছোট। বাংলাদেশে এখন ক্লাস সেভেনে পড়বার কথা। এখানে ওর স্কুলের প্রিন্সিপ্যাল কিছুতেই সেভেনে ভর্তি করতে রাজী নয়। তাঁর মতে নাকি "তৃতীয় বিশ্বের" দেশগুলিতে শিক্ষার মান এত পিছিয়ে যে, এখানে এখন ক্লাস সেভেনে পড়াশোনা শ্যামলের জন্য ভয়াবহ এক মানসিক চাপের সৃষ্টি করবে; এতে করে নাকি শ্যামলের সুকুমার বৃত্তিগুলো সুস্থ স্বচ্ছন্দগতিতে বিকশিত হতে পারবে না। অতএব, এখন সে ক্লাস সিক্সের ছাত্র। আমি এক ফাঁকে শ্যামলের সিলেবাস ও বইগুলো উল্টেপাল্টে দেখলুম -- হ্যাঁ, সুকুমার বৃত্তিই বটে, ঐসব ক্লাস ফোরের স্ট্যান্ডার্ডের অংকগুলো কষতে থাকলে শ্যামলের যে সহজাত গণিতপ্রতিভা ছিল, তা' লুপ্ত হতে বেশীদিন লাগবার কথা নয়।



অস্ট্রেলিয়ায় আসবার আগে দেশে শেষের কটি দিন যে কি' ব্যস্ততার মধ্যে কাটল। প্রতিদিন শপিং-য়ে দৌড়াদৌড়ি। নভেম্বারের পঁচিশ তারিখে ফ্লাইট। মণিখালা একবার চিঠিতে লিখেছিল, মেলবোর্নে না কি' প্রচন্ড শীত পড়ে। নিউমার্কেট ছুটলাম - প্রায় দু'হাজার টাকার মত খরচ হয়ে গেল শুধু আমার স্যোয়েটারের জন্যই। মা, বাবার জন্য কেনা প্যান্টের কাপড় দিয়ে গাওছিয়া থেকে আমার জন্য মোটা মোটা সব সালোয়ার বানিয়ে নিয়ে এলেন। এখন ভাবতে গেলেই হাসি পেয়ে যায়, 'সাত সমুদ্র তেরো নদী' পাড়ি দেবার চাপা উত্তেজনায় বেমালুম ভুলে গিয়েছিলুম যে, দক্ষিণ গোলার্ধের যে কোন দেশে এখন গ্রীষ্মকাল। আমার ভূগোল টীচার জানতে পারলে কি' বকাটাই না খেতে হত!



ফ্লাইটের সাতদিন আগে থেকেই কারো চোখে ঘুম নেই। বাবা প্রতিদিন অফিস সেরে বিষন্নমুখে ঘরে ফেরেন। কেনাকাটার ব্যস্ততায় মা'র নিঃশ্বাস নেবার অবসরটুকুও মেলে না। শ্যামল প্রতিদিন টি.ভি. খুলে ইংলিশ সিরিয়্যালগুলো চলবার সময়ে টি.ভি.র পাশে কান লাগিয়ে বসে থাকে। ইদানীং সে ইংলিশে ছাড়া কথাই বলে না। তার স্ফূর্তি দেখবার মত। মণিখালা চিঠিতে লিখেছেন, মেলবোর্ণে প্রচুর খোলা মাঠ আর পার্ক। ইচ্ছেমত সাইকেল চালাতে পারবে শ্যামল। আর হরেক রকমের খাবারের না কি' শেষ নেই। Porridge, cereal, vegemite কি' না নেই – wheat bix, তা'ও আছে! “Aussie kids” দের পরিচয়ই না কি', যে তারা “wheat bix” kids। শ্যামল কবিতার মত অবিকল গড়গড় করে আবৃত্তি করে যাবে মণিখালার চিঠি। তার দৌলতে আমাদের সকলেরই চিঠিটা মুখস্থ হয়ে গেল। Christmas-এর সময়ে city-এর skyscrapers গুলো না কি অপূর্ব মনোরম হয়ে ওঠে। শ্যামল মেলবোর্নের সুউচ্চ দালানগুলো (ওর ভাষায় "প্রাসাদ") দেখবার জন্য আমাদের প্রায় অতিষ্ট করে তুলল। আমি চুপচাপ বসে থাকি, আর অয়নের প্রতীক্ষায় দিন গুনি। ও এখন দিল্লীতে, ভার্সিটি খোলা ওর। হুট করে ফ্লাইটের তারিখ ঠিক করে ফেল্‌লেন বাবা। মাত্র সাতদিনের মধ্যে। এখন কিভাবে যে খবর পাঠাই! সংকোচে কখনও ওর দিল্লীর ঠিকানা চাইতে পারিনি, সেও কখনও মুখ ফুটে বলেনি। কত আত্মীয়-স্বজন দেখা করতে আসলেন; আমার সব বান্ধবীরা একযোগে দেখা করতে আসল একদিন, কিন্তু অয়নের দেখা নেই। ও কি কারো কাছ থেকেই কোন খবর পায়নি? বুকের ভেতর রক্তক্ষরণ হতে থাকে।



বান্ধবীরা সকলে যেদিন এলো, সেদিন একটু শান্তি ও স্বস্তি পেলুম মনে। রাকা, লিপি, নাহিদা, মুনিয়া, তাসনীম, সুবর্ণা সকলেই এসেছে - শুধু সাব্‌রিনাটা আসতে পারেনি। লিপি ড্রয়িংরুমে ঢুকতে ঢুকতে বলে উঠল, "আমাদের আন্‌মনার তো ফেভারিট কালার নীল -- নীল সমুদ্রে ঘেরা স্বপ্নময় দ্বীপের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করবি, দেখিস্‌, আবার যেন ডুবে ডুবে নীলনয়নের অবাক জলপান না শুরু করিস্‌।" সবাই সমস্বরে হেসে উঠল। দেখলাম সকলেই আমার জন্য স্যুভেনিয়ার নিয়ে এসেছে। মুনিয়া তার দেওয়া উপহারের প্যাকেট খুলতে লাগল। দেখলুম এক জোড়া রাবার ব্যান্ড - তা'তে প্লাস্টিকের নীল অপরাজিতা আঠা দিয়ে সাঁটা। "নীলনয়নের ভাবীবধূর জন্যে কেনা", আবার হাসির উতরোল। ভালভাবে জমে উঠল আড্ডা। "এই আন্‌মনা, বিদেশে গিয়ে তুই কি' আমাদের ভুলে যাবি?" রাকা হঠাত্‌ প্রশ্ন করে উঠল। "তোদের ভুলে গেলে তো নিজের জীবনের বড় একটা অংশকেই ভুলে যেতে হয় - তা কি সম্ভব বল্‌!" "নারে, তুই অনেক বদলে যাবি, আমি জানি, সকলেই তো বদলে যায় - আর তুই তো দু'বছরের মধ্যেই সিটিজেনশীপ পেয়ে “Pure Australian”-এ' পরিণত হয়ে যাবি; তা'ছাড়া নীলনয়নের জলপান করলে তো কথাই নেই - কি বলিস্‌ তোরা?" ওদের সাথে আমিও হাসিতে যোগ দিলাম। তাস্‌নীম আরও এক কাঠি সরেস, "দু'দশ বছর পরপর কিন্তু আমাদের এই বাংলাদেশে একবারটি বেড়িয়ে যাস্‌ ভাই!" হাসি-কৌতুকের এই উত্সবে যোগ দিলেও মনের কোথায় যেন একটা অদৃশ্য কাঁটা বিঁধে রইল। অতঃপর পঁচিশ তারিখের কাক-ডাকা ভোরে তল্পিতল্পা ও স্যোয়েটারের বান্ডিলসহ বাবা, মা, শ্যামল আর আমি "উলের-দেশ" অস্ট্রেলিয়ার পথে যাত্রা শুরু করলাম।





।। দুই ।।





স্থিরভাবে চিন্তা করবার চেষ্টা করলাম। নাহ্‌, একটু আগেই তো দেখলাম দরজা লক্‌ড্‌ রয়েছে। তাছাড়া এই হোস্টেলে কে আমার লেপ ধরে টানাটানি করবে? কিন্তু আমার খাটের পাশে পায়চারীর আওয়াজ শুনতে পাচ্ছি। কোনমতে চোখ দুটো মেলে চাইলাম। না, কেউ নেই। আবারও ঘুমের গহ্বরে তলিয়ে যেতে থাকলাম - সঙ্গে সঙ্গে পায়চারীর খুটখুট শব্দ। দরজার ক্যাঁচক্যাঁচানি। মাথাটা ঝনঝন করে উঠছে। গোটা ব্যাপারটা ব্যাখ্যা করতে পারছি না। আমার কি হ্যালুসিনেশান হচ্ছে? কিন্তু কেন? কোথায় যেন পড়েছি, মানুষের সমস্ত অনুভূতি ও আবেগ মস্তিষ্কের জটিল তড়িত্-রাসায়নিক বিক্রিয়ার প্রকাশ। তবে কি' কোনপ্রকারে আমার মস্তিষ্কে বিকৃত তড়িত্‌-রাসায়নিক বিক্রিয়া শুরু হয়েছে? কেন? কিভাবে? ঘুমুবার সময়ে ইলেক্‌ট্রিক বেড হীটার চালিয়ে রেখেছিলুম - তবে, তবে কি এই হীটারের ইলেক্‌ট্রিসিটিই আমার মস্তিষ্কের ম্যাগনেটিক রেজোনেনস পাল্টে দিয়েছে! কি' উল্টোপাল্টা ভাবছি! মৃদু হাসির শব্দ শুনলুম। সঙ্গে সঙ্গে কারো তপ্ত নিঃশ্বাস এসে পড়লো আমার ডান গালে। রিনরিনে সুরে বেজে উঠল ঘড়ির আ্যালার্ম। তড়াক করে লাফিয়ে উঠলাম বিছানা থেকে। ঘামে ভিজে গেছে সমস্ত শরীর!



বিছানা ছেড়ে নেমে পড়লুম। হুঁ, তাহলে স্বপ্নই - নাহ্, স্বপ্ন নয়, দুঃস্বপ্ন দেখছিলুম। স্বপ্ন যে এতটা আজগুবি আর বিদ্ঘুটে হতে পারে, তা' না দেখলে বিশ্বাসই করতুম না। আর স্পর্শ ও শব্দই বা বাস্তবের এত কাছাকাছি, এতই সুস্পষ্ট হয়, বাব্বাঃ! যাই হোক্, এখন রুটিন কাজগুলো জলদি সেরে ফেলতে হবে - ঘড়িটার রিনরিনে অ্যালার্মটা বেজে উঠেছে একটু আগে; তার অর্থ দাঁড়াচ্ছে সোয়া আট্টা বেজে গেছে। ঘড়িটা হোস্টেলে আসবার আগে আগে মণিখালা আমার হাতে গুঁজে দিয়ে বল্ল, "snooze অ্যালার্ম দেয়া যায়, অ্যালার্মের মিষ্টি রিনরিনে সুর, তোর কাছে রাখ। প্রতিদিন মিষ্টি সুরে ঘুম ভাঙবে। আরে, এদেশের টেকনোলজি, বুঝিস্ই তো কত অ্যাড্ভ্যান্স্ড্। মিষ্টি আমেজে ঘুম ভাঙবে - তার জন্যও কত ব্যবস্থা, দেখ দেখি।" সেদিন থেকে প্রতিদিনই এই ঘড়ির অ্যালার্মে আমার ঘুম ভাঙছে। রিনরিনে, সাপের মন্ত্র পড়া এই সুর শুনলেই একটা অচেতন ভয় আমায় ক্রমশ গ্রাস করতে থাকে। মনে পড়ে যায়, এখানে বুয়া নেই নাস্তা তৈরী করে দেবার জন্য, ড্রাইভার ভাইও আমার অপেক্ষায় ক্রীম টয়োটাতে বসে নেই। এখন আমাকে সময়ের সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে, দ্রুত বাস ধরতে হবে। তারপর ইউনি. পৌঁছে লেকচারারদের অবোধ্য ভাষার লেকচার শুনতে হবে বসে বসে। চারদিকে কথার খই ফুটবে, এরই মাঝে নিজেকে মূক আর বধির বলে মনে হবে।



আমি দেশ থেকে আনা সবুজ বদনা (মেলবোর্ন রওয়ানা দেবার আগে আগে নানী অস্ট্রেলিয়া থেকে চিঠি লিখেছিলেন - তাতে বিশেষভাবে বলেছেন একটা বদনা নিয়ে আসার জন্য) হাতে বাথরুমের দিকে এগিয়ে গেলুম। প্রাতঃকৃত্যাদি সেরে হাত-মুখ ধুয়ে এসে woollen কামিজ ও বাবার প্যান্টের কাপড়ে বানানো মোটা সালোয়ারটা পরে নিলুম। গড়িতে দেখি সাড়ে আটটা বাজে। সর্বনাশ। কোনরকমে নীল কেড্স্জোড়া পায়ে গলিয়ে ব্যাগ কাঁধে ঝুলিয়ে আমার রুমটা লক্ করে নিয়ে হোস্টেলের কমন রান্নাঘরে চলে এলাম। এখানে আমাদের কমন ফ্রীজ রয়েছে।ফ্রীজের একেকটা shelf একেকজনের জন্য নির্ধারিত। ফ্রীজ খুলে আমার shelf-এ রাখা অখাদ্য vegemite কোনরকমে গলাধঃকরণ করে চারটে আপেল ব্যাগে পুরে লিফ্টের দিকে দৌড় দিলুম। আমার হলের আটতলাতে থাকি আমি। একতলাতে পৌঁছতে তিরিশ সেকেন্ডমত সময় লাগবে - কারণ লিফ্টা চার ও তিনতলাতে থামবে। দুটো ছেলে এসে ঢুকবে। ওদের একজন ভিয়েতনামিজ, ওর নাম "ভু লি"। আর অন্যজন কোরিয়ান, ওর নাম "হা"। দুজনেই আমার ইউনি. তে পড়ে। ওদের সঙ্গে এই লিফ্টেই পরিচয়। পরিচয় বলতে "হাই, হ্যালো" এই পর্যন্তই। হা দেখা হলেই বলবে, "হাওয়াইয়া অ্যানা!" - তারপরই গভীর মনোযোগে ওয়াক্ম্যানে কানে লাগিয়ে সঙ্গীতসাধনায় বুঁদ হয়ে যাবে। আমি উত্তরে বলি, "গুড। থ্যাংকস। হাউ আর ইউ হা?" বলে হাসি চাপবার প্রাণপণ চেষ্টা চালাই।



আজ ওদের দুজনের কারো দেখাই মিলল না। তার মানে আজ নিশ্চিত late হয়ে যাবে ক্লাসে পৌঁছাতে। গ্রাউন্ড ফ্লোরে নেমে দ্রুত পায়ে বাস স্ট্যান্ডের দিকে এগুতে থাকলাম। এরপর রেলস্টেশনে নেমে ট্রেন ধরতে হবে। তারপর পায়ে হেঁটে দু'মিনিট - তবেই ইউনি. পৌঁছাবো। অবশ্য কল্ফিল্ড স্টেশনের কাছাকাছি পৌঁছুতেই ট্রেন থেকেই সুউচ্চ Chisholm Tower-টা দৃষ্টি কাড়বে। আমি বাস স্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে অতীত রোমন্থনে নিমগ্ন হয়ে রই।



মেলবোর্ণ এয়ারপোর্টে পৌঁছালুম সাতাশ তারিখে। ঢাকা থেকে রওয়ানা দেবার পরেরদিন সিঙ্গাপুরে হোটেল Sea View-তে এক রাত কাটাতে হয়েছিল। মেলবোর্ন পৌঁছালুম সকাল ন'টায়। এয়ারপোর্টে দেখি হাসি হাসি মুখে মণিখালা, খালু ও নানী এদিক ওদিক তাকাচ্ছেন। তাঁদের দেখামাত্র আমাদের এই ক'টিদিনের দুর্ভাবনা, উত্তেজনা, উদ্বেগ নিমেষে মিলিয়ে গেল। মণিখালা তিনবছর হল বিয়ের পর অস্ট্রেলিয়াতে রয়েছেন - খালু বাঙালী এবং অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক। তিনি sponsor করে নানীকেও নিয়ে এসেছেন মেলবোর্নে। তাঁরাই অস্ট্রেলিয়াতে আমাদের একমাত্র আত্মীয় ও পরিচিত।



মণিখালা-খালু দুটো গাড়ী নিয়ে এসেছেন। খালু তাঁর গাড়ীতে আমাদের বাক্স-পেঁটরা আর সোয়েটারের বান্ডিল নিয়ে ইতিমধ্যেই গাড়ী স্টার্ট দিয়েছেন। মণিখালার গাড়ীতে আমরা বাকী পাঁচজন রওয়ানা দিলুম যখন, তখন শ্যামলের আনন্দ আর ধরে না। "মণিখালা city-এর প্রাসাদগুলোতে নিয়ে চলনা, মণিখালা সুন্দর পার্কগুলোতে নিয়ে চলনা" ইত্যাদি ইত্যাদি করেই চলেছে; একদন্ড সুস্থির হয়ে বসবার কোন লক্ষণ নেই। মণিখালা আনন্দে উচ্ছ্বসিত হয়ে আশে-পাশে সবকিছুর সঙ্গে আমাদের পরিচয় করিয়ে দিতে থাকলেন। "এখন আমরা West Gate Bridge-এর ওপর দিয়ে চলেছি। এই bridge-এর মর্মান্তিক এক ইতিহাস আছে, বুঝলি। সিভিল ইঞ্জিনীয়ারদের অসতর্কতার জন্যে এই bridge ভেঙে একবার অজস্র মানুষ প্রাণ দিয়েছিল। এটা এখন পুনঃ মেরামত করা হয়েছে।" "ঐ দেখ, মেলবোর্ণ city!" আমাদের ঢাকার মতিঝিল এলাকার সমতুল্য মেলবোর্ণ city-টাকে দেখলুম। City-এর পরিসরও মতিঝিল এলাকার মতই বড় হবে। City পেরিয়ে মণিখালার হলুদ Mitsubishi Colt সাঁ সাঁ করে গ্রামের দিকে এগুতে থাকল। দু'পাশে বিস্তীর্ণ সবুজ মাঠ।



Christmas Eve-এ খালা-খালু আমাদের নিয়ে city-তে ঘুরতে বেরুলেন। তখন সন্ধ্যে হয় হয়। ঘন নীল আকাশে সাদা সাদা মেঘের আনাগোনা, যেন মৌনতার মাঝে সুরের মূর্ছনা --- তায় অস্তগামী সূর্যকিরণের লাল-হলুদ-কমলায় হোলি খেলার এক উন্মত্ত আয়োজন। আকাশটা যেন লজ্জায় রক্তগন্ড এক উর্বশী। মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে রইলুম।



রাতের শহর সত্যিই মনোমুগ্ধকর । উঁচু-নীচু পাহাড়ী রাস্তা দিয়ে যখন আমরা চলেছি; দূরে, বহু-দূরে দেখা যায় সারি সারি আলোর সমারোহ --- বিন্দু বিন্দু আলো ক্রমশ উপরে উঠতে উঠতে উর্বশী ঐ আকাশটাকে স্পর্শ করতে চলেছে। ওখানেই Melbourne City -- ছাপ মারা এক বিশাল শামুকের খোলসের মত দাঁড়িয়ে -- যার অপর নাম সভ্যতা।



প্রচণ্ড ভীড় পথে। Christmas Eve উপলক্ষে Myer কোম্পানী পুতুল প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করেছে জনসাধারণের উদ্দেশ্যে। জীবন্ত পুতুলগুলি থরে থরে সাজানো বিভিন্ন show room-এ। ‘Snow White and the Seven Dwarfs’ গল্পটির রূপায়নের প্রচেষ্টা। একের পর এক show room-এ পুতুলগুলি এমনভাবে সাজানো হয়েছে যে, তা' গল্পটির একের পর এক দৃশ্যায়নে সহায়তা করে গল্পটাকে শেষ পরিণতির দিকে এগিয়ে নিচ্ছে। Show room-গুলির দেওয়ালে প্রতিটি দৃশ্যপটের ঘটনা লিখিতভাবেও বর্ণনা করা আছে। এই ভীড়ে আমি খুব সাবধানে বাবার হাত শক্ত করে চেপে ধরে চলেছি। একসময় লক্ষ্য করলুম, নাতো, কেউ কারো ঘাড়ে পড়ে যাচ্ছে না, বা কেউ আলগোছে আমার শরীরে নিজের ভার দেবারও চেষ্টায় নেই। আমি জীবনে প্রথমবারের মত প্রচন্ড ভীড়ের মধ্যেও নিশ্চিন্তবোধ করলুম।



মা, বাবা ও শ্যামল মণিখালার বাড়ীতে অস্থায়ীভাবে থাকবার বন্দোবস্ত করলেন। আমি ইন্টারভিউতে বেশ ভালো ফলাফল করে ইউনি.তে 'Creative Literature'-এ চ্যান্স পেয়ে গেলাম। ইউনি. মণিখালার এই গ্রামের বাড়ীটা থেকে বহুদূরে থাকবার কারণেই আমার এই হোস্টেল ভাড়া করে থাকা। তাও বাস ও ট্রেনে করে যেতে আধঘন্টা লেগে যায় ইউনি. পৌঁছাতে।



।। তিন ।।



পনেরো মিনিট লেইট করে অবশেষে ইউনি. পৌঁছালুম। টিউটোরিয়াল ক্লাস এখন। এত দেরীতে পৌঁছে ভীষণ লজ্জা করছে। মাথা নত করে ক্লাসে ঢুকে কোনমতে "my apology" শব্দ দুটো উচ্চারণ করলুম। ডঃ স্টিভেন লেদ্যু ক্লাস নিচ্ছেন। আজকের বিষয় লেখক 'Albert Camus"-এর রচনাবলীর স্টাইল সম্পর্কে। আমি Camus-এর গুটিকতক বই পড়েছি -- "দ্য প্লেগ", "দ্য আউটসাইডার", "এ হ্যাপী ডেইথ" -- এই পর্যন্তই। বেশ নার্ভাস লাগছে, কারণ আগামী পনেরোদিনের মধ্যে এ' বিষয়ে একটা assignment জমা দেবার কথা বলছেন লেদ্যু। তিনি বেশ সিরিয়াস ভঙ্গিতেই Camus-এর রচনাবলীতে সমসাময়িক জীবনধারা প্রতিফলিত হওয়া সত্ত্বেও একইসাথে কিভাবে অনন্য ও সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র এক মূল্যবোধ পরিস্ফুট হয়ে ওঠে -- এ' বিষয়ে আলোচনা করে চলেছেন। এমন সময়ে দুটো ছেলে ডঃ লেদ্যুর দিকে এগিয়ে এল। একজন break dance করতে করতে আসল। একজন লেদ্যুর সামনের চেয়ারে এক পা উঠিয়ে লেদ্যুর হাতে কিছু কাগজ গুঁজে দিল। দূর থেকে তাকে ইংরেজী ছোট হাতের 'এইচ' অক্ষরের মত দেখাচ্ছে। লেদ্যু হাসিমুখে কাগজগুলোর উপর চোখ বুলিয়ে চলেছেন। পরে বুঝলুম, ছেলেদুটো ইতিমধ্যেই assignment-এর জন্য ছোটখাট একটা draft তৈরী করে ফেলেছে, সেটাই তাদের শিক্ষককে দেখাবার জন্য নিয়ে এসেছে। ইউনি. তে ক্লাস করছি সপ্তাহখানেক হল। এদের কাণ্ডকারখানা দেখে কিছুক্ষণ পরপরই চমকে উঠতে হচ্ছে। আমার পাশে বসে রয়েছে মালিসা। মালিসা Tasmania থেকে পড়তে এসেছে। মফস্বলের মেয়ে বলেই বোধহয় তার আচার আচরণে এখনও শহুরে ছোপ ভালমত গাঢ় হয়ে ওঠেনি। ও আমার ভাল বন্ধু। আমি মালিসার চোখে চোখ রেখে বললুম, "তোমরা শিক্ষাগুরুদের সম্মান করতে জানো না!" সে চোখ বড় বড় করে বলে উঠল, "সম্মানতো মানুষ হিসেবে আমদের সকলেরই প্রাপ্য। নয় কি? আর শিক্ষকের কথা বলছ! শিক্ষক আর ছাত্রের সম্পর্ক তো হবে বন্ধুত্বের ও সমঝোতার সম্পর্ক। এখানে অসম্মানের তুমি দেখলে কি? তোমাদের দেশে কি' সম্মান ও ভীতি সমার্থক শব্দ?" আমি প্রসঙ্গ পাল্টে জিজ্ঞেস করলুম, "আচ্ছা মালিসা, এখানে প্রাইভেট টিউটর কোথায় পাব বলতো? আমার ছোট ভাই শ্যামলের জন্য একটা প্রাইভেট টিউটরের বড় প্রয়োজন।" "এখানে প্রাইভেট টিউটর তেমন নেই বললেই চলে, Student Union-এ খোঁজ করে দেখতে পারো।" বলে চলল মালিসা, "আমরা সাধারণতঃ প্রাইভেট ট্যুশনিতে বিশ্বাসী নই। তোমার পাঠে আগ্রহ, প্রচেষ্টা ও অধ্যবসায়ই তোমার যোগ্যতা প্রমাণ করবে। এখানে উঁচু ক্লাসের ছাত্রদের জন্য প্রাইভেট টিউটর রাখতে হলে স্কুল কর্তৃপক্ষের অনুমতির প্রয়োজন পড়ে কখনও কখনও। প্রাইভেট টিউটররাও কখনও কারো assignment লিখে দেবে না, সামান্য ভুল সংশোধন করে দিতে পারে মাত্র।" অজান্তেই আমার ভেতর থেকে এক দীর্ঘনিশ্বাস বেরিয়ে এল। আমাদের দেশের অভিভাবকরা সন্তানদের অষুধগেলা করে লেখাপড়া শিখিয়ে দিতে চান। আর সেই সুযোগও নিচ্ছে কিছু শিক্ষা ব্যবসায়ী। দেশ ভরে গেছে প্রাইভেট টিউটর দিয়ে। আচ্ছা, আমরা এমন অদ্ভুত কেন!! পাশ্চাত্যের কতরকম খেয়ালেরই তো আমরা অন্ধ অনুকরণ করে চলেছি, কিন্তু পশ্চিমা ঐতিহ্যগুলির যে আলোকময় দিকগুলি রয়েছে, সেখানে আমাদের যাত্রা নাস্তি কেন! যে বিচারবুদ্ধি থাকবার জন্যই মানুষ আজ জীবকূলের মধ্যে শ্রেষ্ঠ, আমাদের সেই বিচারবুদ্ধির তীক্ষ্ণতা আজ কোথায়? আমরা কি' শুধু অন্ধ অনুকরণ করেই চলব?



ক্লাস শেষে আমি ও মালিসা একসঙ্গে রুম থেকে বেরিয়ে এলাম। এখন ফ্রী পিরিয়ড। একঘন্টা পর 'অষ্টাদশ শতাব্দীর মঞ্চনাটক' বিষয়ে একটা লেক্চার আছে। লেক্চারটা ঠিক কোন hall room-এ হবার কথা আমার মনে পড়ছে না। আমি notice board-এর দিকে চোখ বুলালাম। রুম নাম্বার D2.11। বেশ কিছু ad দেখলাম বোর্ডে টাঙানো। যেমন:- "বাড়ী শেয়ারে ভাড়া দেয়া হবে। Non-smoker মহিলাদের অগ্রাধিকার রইল। আগ্রহীগণ নিম্নোক্ত টেলিফোন নাম্বারে যোগাযোগ করুন।" কিংবা "ক্রিকেট খেলায় আগ্রহী বন্ধুরা যোগাযোগ কর। মহিলা ও পুরুষ সকলেরই আহ্বান রইল। খুব শীঘ্রিই ফ্রেন্ডলি ম্যাচের আয়োজন করা হবে। ফোন নং - ৯৫৬৫ ৭৮০৩।" হঠাত্ একটা ad-এর উপর এসে আমার দৃষ্টি আটকে গেল। "তুমি কি সেই বিশেষ নারী ? না কি এখনও অনিশ্চয়তার দোলায় দুলে চলেছ? কখনও কি তুমি অন্য এক নারীর প্রতি দুর্বার আকর্ষণবোধ করনি? বিন্দুমাত্র প্রশ্নও যদি কখনো জাগে তোমার মনে - তার উত্তর দিতে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। মার্চের ২৮ তারিখে আমাদের প্রথম conference। সন্ধ্যে ৭টায় রেজিস্ট্রি। ৭:১৫ তে আলোচনাপর্ব শুরু হবে। স্থান ...........।" আমি নির্বাক হয়ে শুধু চেয়ে রইলুম।



মালিসার ঝাঁকুনি খেয়ে ধ্যান ভাঙল। সে বল্লে, "কি পড়ছ এত গভীর মনোযোগে? আমি দীর্ঘনিঃশ্বাস চাপতে চাপতে না সুচক মাথা নাড়লাম, "কিছু না"। আশেপাশে তাকিয়ে দেখি আমার classmate-রা প্রায় সকলেই জোড়ায় জোড়ায় দাঁড়িয়ে রয়েছে - বেষ্টনীবদ্ধ হয়ে যুগলমূর্তিগুলো free period উপভোগ করছে। আমার কাছে মনে হল যেন ওভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে তাদের বেশ কষ্টই হচ্ছে। "মালিসা, তোমার কি মনে হয়না যে, ঘন্টাখানেক ওভাবে বেষ্টনীবদ্ধ হয়ে থাকা তাদের জন্য খুব একটা আরামদায়ক ও উপভোগ্য হবে না?" "তুমি হয়তো ঠিকই বলেছ, কিন্তু ওভাবে না দাঁড়িয়ে থাকলে লোকে বুঝবে কি করে যে ওরা পরস্পরকে ভালবাসে। এখানে তো প্রতি মাসে যুগল বদলে যায়," মালিসার উত্তর। আমি শব্দ করে হেসে উঠলাম। "আচ্ছা মালিসা, তোমরা বিয়ে না করেই বন্ধুদের সাথে রাত্রিযাপন কর; তোমাদের লজ্জা করে না?" মলিসা যেন আকাশ থেকে পড়ল, "এসব তুমি কি' বলছ, Anna! যে মানুষটিকে ভাল লাগল, তার সাথে দৈহিক সম্পর্ক হবে না তো কার সাথে হবে? কেন তোমরা কি' তোমাদের প্রমিকদের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক রাখ না?" "বিয়ের আগে কখনো নয়। আমাদের দেশে অনেক মহিলার স্বামীর সাথে বিয়ের আগে চেনা-পরিচয়ই থাকে না!" আমার কন্ঠস্বরে গর্ব উপচে পড়ছে। ভুত দেখার মত চমকে উঠল মালিসা। "বল কি! চেনা নেই, পরিচয় নেই, সম্পূর্ণ অপরিচিত, অদেখা মানুষের সঙ্গে ঘুমুতে তোমাদের লজ্জা করে না!" আমার গলায় কথা আটকে গেল। সেই মুহূর্তে বলবার মত কোন কথা খুঁজে পেলাম না।



ইউনি. শেষে হোস্টেলের পথে রওয়ানা দিচ্ছি। ট্রেন ও বাসে চড়ে এসেছি, এখন পয়ে হাঁটা পথ দু'মিনিটের। সন্ধ্যে হয়ে এসেছে। আকাশে রূপোলী থালার মত মায়াবী চাঁদ। বাংলাদেশের চাঁদের চাইতে এখানে চাঁদকে দেখতে অনেক বড় দেখায়। ভৌগোলিক কারণে হয়তো। পথের দু'পাশে পাইন গাছের সারি। আসন্ন শরতের মৃদুল বাতাস শরীর ছুঁয়ে ছুঁয়ে দুরে সরে যাচ্ছে। প্রাণভরে এই নৈসর্গিক সুধা পান করছি আমি। হঠাত্ Dickson-এর সাথে দেখা। Dickson আমার সহপাঠী। আমাকে দেখেই Dickson চেঁচিয়ে "হ্যাল্লো Anna" বলেই যত জোরে সম্ভব jogging করতে করতে ছুটল। প্রকৃতির এই অনাবিল সৌন্দর্যের মধ্যে দাঁড়িয়ে থেকেও এরা কিভাবে এমন আবেগশূন্য গলায় কথা বলতে পারে - আমি তাই ভাবতে থাকলুম।



নাওয়া-খাওয়া সেরে হোস্টেলে আমার রুমে গিয়ে বসেছি। জানালা গলে পূর্ণেন্দুর তরল জ্যোত্স্না এসে আমার ছোট্ট ঘরটাকে আলোকিত করে দিচ্ছে। আমি ঘর অন্ধকার করে জ্যোত্স্নার আলোয় বসে রয়েছি জানালার পাশে। দূ--রে 'West Gate Bridge' আর Melbourne City-এর বিন্দু বিন্দু আলোর ঝরণা দেখা যাচ্ছে এখান থেকে।পাশের রুমে Hi-Fi stereo-তে full volume-এ গান বেজে চলেছে -- "Let’s talk about sex, baby! Let’s talk about you and me! "

আমার বহু, বহুদূরের ফেলে আসা ছোট্ট একটা মোহময় দেশের কোমল মানুষগুলির কথা মনে পড়ছে। অয়ন আমায় মাঝে মাঝে বলত, "আন্মনা, তুমি শ্রী যতীন্দ্র মোহন বাগচীর লেখা এই পংক্তিদু'টো পড়েছ কখনও? আমার খুব প্রিয় লাইনদু'টো ---



"অমা যামিনীর গহীন আঁধারে চুপিচুপি এলে প্রিয়া,

দ্বিগুণ আঁধার খর্জুর বীথি, তাহার আড়াল দিয়া।"




সংকোচে কখনও আমায় ভালবাসার কথা মুখ ফুটে বলতে পারেনি অয়ন। বলবার অবশ্য প্রয়োজন ছিলনা কোন। যেখানে ভাব আছে, সেখানে ভাষার বাহুল্য না থাকলেও চলে। আমি আন্মনা হয়ে রূপসী তন্বী চাঁদের পানে চেয়ে রই। আমি এখানে আন্মনা নই, আমি অ্যানা।



বাদুড়ের গল্পটা আপনাদের জানা আছে নিশ্চয়ই। সেই যে একবার পৃথিবীর সব পশু আর পাখিদের মধ্যে লড়াই চলল। কে পৃথিবীতে শাসন চালাবে এই নিয়ে লড়াই। তিনদিন ধরে চলল তাদের লড়াই। প্রথম দিনে পশুরা জয়ী হয়ে গেল। বাদুড় সঙ্গে সঙ্গে পশুদের দলে যোগ দিল। বাদুড় পশুদের ডেকে বলল যে, আমি তো আমার ছানাদের স্তন্যদান করি। আমি তাই পশু -- আমি তোমাদের দলে। পশুরা তাকে খুশীমনে দলে টেনে নিল। দ্বিতীয় দিনে দ্বিপ্রহরে পাখিরা জয়ী হয় হয়। বাদুড় উড়ে চলে এল পাখিদের ডেরায়। "শোন পাখি বন্ধুগণ," ফূর্তির গলায় চেঁচিয়ে উঠল বাদুড়, "আমি চমত্কার উড়তে জানি। আমি তাই পাখি। আমি এখন থেকে তোমাদের দলে। পাখিরাও খুশীমনে তাকে দলে টেনে নিল। তৃতীয় দিনে বিকেলে পশুর দল জয়ী হয় হয়। বাদুড় ছুটে এল পশুর আড্ডায়। "আমি তোমাদের দলে!" সেদিন রাতেই পশু আর পখিদের সন্ধি হয়ে গেল। পাখিদের রাজ্য আকাশে, আর পশুদের রাজ্য মাটিতে। তারপরই সকলে হতভাগা বাদুড়ের পানে তাকালো। "যাও তুমি পাখিদের রাজ্যে তোমার চমত্কার পাখা নিয়ে" -- হুংকার দিল বনরাজ সিংহ। বাদুড় পাখিদের দলের কাছাকাছি পৌঁছুতেই ধেয়ে এল গরুড় পাখি। "তুমি বলেছিলে যে, তুমি ছানাদের স্তন্যদান কর -- তুমি তাই পশু; তুমিতো পশুদের আড্ডায় আশ্রয় নিয়েছিলে। বেরিয়ে যাও এখন পাখিদের রাজ্য থেকে!" বাচারা বাদুড় তাই এখন অন্ধকার রাত্রি ছাড়া ঘর থেকে বেরোয় না। দিনের আলোতে লুকিয়ে থাকতে হয় ওদের -- পৃথিবীতে আলোর বন্যার কণামাত্রও তাদের ভাগ্যে কোনদিন আর জুটবে না।



আমি জানি, বহুদিন পর যখন দেশে যাব, আর সেদেশের মানুষগুলোর সাথে, সেদেশের পরিবেশের সাথে কিছুতেই মিলেমিশে একাকার হতে পারব না, খাপ খাওয়াতেও পারব না হয়তো নিজেকে। সেদেশে সবকিছুই আগের মতই, কেবল বদলে যাব আমি। এই বিশাল ভুবনে আমার কোন ঠিকানা থাকবে না। রহস্যময়ী চাঁদ কি' সে কথা বুঝে ফেলেছে! কি' স্নিগ্ধ মায়ায় সে আমার পানে চেয়ে রয়েছে।





**মুখবন্ধ: 'বাদুড়' লিখি যখন আমি ছিলাম একজন teenager। :)

'বাদুড়' ১৯৯২ তে লেখা হয়েছিল এবং মেলবোর্ণের স্থানীয় একটা বাংলা পত্রিকায় (নাম মনে না থাকায় আন্তরিক ভাবে লজ্জিত) একই সালে প্রকাশিত হয়। এর মধ্যে কখন যে ইয়ারা (Yarra River) নদীতে জল গড়িয়ে গেছে প্রায় কুড়ি বছর, টেরই পাইনি একদম। কুড়িটা বছর! এর মধ্যে পৃথিবী তার অক্ষপথে ঘুরেছে সাত সহস্র বার। পৃথিবী ঘুরেছে, পৃথিবী বদলেছে। বদলেছি আমি নিজে। কুড়ি বছরের পথ পরিক্রমায় অসংখ্যবার জন্ম-মৃত্যুর মধ্যে দিয়ে আবর্তিত হয়েছি 'আমি'। তাই, ১৯৯২ -এর 'আমি'-র সম্মানার্থে হুবুহু একইভাবে লেখাটাকে upload করলাম সামুতে, যদিও ২০১১ এর 'আমি' চাইছিল লেখাটার কিছু কিছু অংশে কাঁচি চালনা করতে। এই যেমন:- "করলুম", "খেলুম" শব্দগুলো (এখন হাস্যকর শোনাচ্ছে), কিংবা টাকার হিসেবগুলো। কিন্তু প্রত্যেকটা লেখকেরই বাক্-স্বাধীনতা আছে। তাই, ২০১১ -এর 'আমি'-র কোন অধিকার নেই ১৯৯২ -এর 'আমি'র লেখায় কাঁচি চালাবার। সম্মানিত পাঠকদের হাতেই ছেড়ে দিলাম মন্তব্যের ভারটুকু।








মন্তব্য ৭৯ টি রেটিং +১৪/-০

মন্তব্য (৭৯) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই জুন, ২০১১ সকাল ৭:২০

রিয়েল ডেমোন বলেছেন: হুম দারুন চিন্তা ভাবনা, আপনি বয়সে আমার থেকে বড় হবেন, তাই আপু বলেই সম্বোধন করি:)

গল্পটি এই পর্বে সম্পূর্ণটা পোস্ট করে ভালোই করেছেন। আমি গল্পের পোকা। আরো গল্প চাই । :)

০৯ ই জুন, ২০১১ সকাল ৭:৪২

নাঈফা চৌধুরী (অনামিকা) বলেছেন: "আপু" সম্বোধন আমার খুব প্রিয় এমনিতেই :)
লেখা পড়বার জন্য অজস্র ধন্যবাদ, ভাইয়া!
আমার ব্লগে আপনাকে সুস্বাগতম। :)

২| ০৯ ই জুন, ২০১১ সকাল ৮:৫২

ত্রাতুল বলেছেন: অনেক বড়! /:)

তবে এক পর্বে দিয়ে ভাল করেছেন। আলদা পর্বের জন্য অপেক্ষা করতে ভাল লাগে না। বিশ বছর আগের লেখাও বেশ ঝরঝরে লাগছে। পুরনো সব কিছুই আমার কাছে কেমন রহস্যময় লাগে। একটা আলাদা টান অনুভব করি। তবে আপনার এখনকার লেখাও পড়ার খুব ইচ্ছে হচ্ছে। আশা করি অচিরেই পাব।

ভাল থাকবেন আপু। :)

০৯ ই জুন, ২০১১ বিকাল ৩:১০

নাঈফা চৌধুরী (অনামিকা) বলেছেন: অশেষ ধন্যবাদ ত্রাতুল। :)
আপনার নিকটা অনেক ইউনিক! আচ্ছা, 'ত্রাতুল' শব্দের অর্থ কি? খুব জানতে ইচ্ছে করছে।

৩| ০৯ ই জুন, ২০১১ সকাল ৮:৫৪

ফাইরুজ বলেছেন: চমত্‍কার লিখেছেন ।এক টানে পড়ে ফেল্লাম।কোথাও আটকায়নি পড়তে গিয়ে

০৯ ই জুন, ২০১১ বিকাল ৩:১২

নাঈফা চৌধুরী (অনামিকা) বলেছেন: সত্যি! খুব ভালো লাগলো আন্তরিক মন্তব্য শুনে। আমার ব্লগে আপনাকে সুস্বাগতম ফাইরুজ! :)

৪| ০৯ ই জুন, ২০১১ সকাল ১১:৫৫

আহমেদ জী এস বলেছেন: নাঈফা চৌধুরী অনামিকা,

"টীনেজ" এর লেখা যে "টিন"এর মতো ধারালো হয় তা আপনার লেখায় পেলুম । খুব ভালো লেগেছে । বর্ণনা সাবলীল, আবেগময়ও হয়ে উঠেছে মাঝে মাঝে । নিজেকে চেনার কথাও লিখেছেন, তাও প্রাঞ্জল ।ধন্যবাদ সুন্দর লেখার জন্যে ।

হা, বিশ বছরে অনেক জল গড়িয়ে গেছে বুড়ীগঙ্গা দিয়ে, অবশ্যই নোংরা,পলিয়্যুটেড জল। তারপরেও জল পুণ্যময়ী । তার নাব্যতা হারিয়ে গেলেও, তার জলে ছানি পড়ে গেলেও সে জল আমাদেরই চরন ছুঁয়ে ছুয়েঁ যায় যে এখোনও । তাই হয়তো আমরা বলি, " ইনহাস্ত ওয়াতানম ..."

০৯ ই জুন, ২০১১ বিকাল ৩:১৭

নাঈফা চৌধুরী (অনামিকা) বলেছেন: তথাস্তু! " ইনহাস্ত ওয়াতানম ..."









[সত্যি কথা বলব? মাথার উপর দিয়ে গেছে। হে হে হে।]
সৈয়দ মুজতবা আলীর ঊক্তি? আসি আসি করেও মনে পড়ছে না। অনুগ্রহ করে যদি একটু মনে করিয়ে দিতে সাহায্য করতেন...লিঙ্ক দিলেও চলবে।
এত চমত্কার আর আন্তরিক মন্তব্যের জন্য বিনীত ধন্যবাদ।
মন্তব্যে ভাল লাগা! :)

৫| ০৯ ই জুন, ২০১১ দুপুর ১২:৫১

নস্টালজিক বলেছেন: দারুন, বন্ধু!

আপনাকে নিয়মিত পাবো সামু-তে, আশা রাখছি!

০৯ ই জুন, ২০১১ বিকাল ৩:০৮

নাঈফা চৌধুরী (অনামিকা) বলেছেন: =p~ 'সাক্ষাতে' বলব।।

৬| ০৯ ই জুন, ২০১১ দুপুর ১:৩১

বৃষ্টিধারা বলেছেন: বাহ.....

কি ঝরঝরে লিখা !!!

০৯ ই জুন, ২০১১ বিকাল ৩:০৬

নাঈফা চৌধুরী (অনামিকা) বলেছেন: থ্যাঙ্কু আপুমণি। আর আমার তরফ থেকে মিষ্টি মামণির জন্য গাল টিপে আদর। :)

৭| ০৯ ই জুন, ২০১১ দুপুর ১:৪৯

ডেজা-ভু বলেছেন: খুবই সহজভাবে লিখেছেন, পড়তে ভালো লেগেছে। ১৯৯২ এর আপনাকে ধন্যবাদ।

০৯ ই জুন, ২০১১ বিকাল ৩:০৪

নাঈফা চৌধুরী (অনামিকা) বলেছেন: ১৯৯২ এর পক্ষ থেকে ২০১১ এর আমি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি লেখাটি পড়বার জন্যে। :)

৮| ০৯ ই জুন, ২০১১ দুপুর ২:২২

অচেনা রাজ্যের রাজা বলেছেন: পড়তে পড়তে শেষ.... :(

তবে সহজ করে লেখেছেন এ জন্য পড়তে ভালোই লেগেছে।

০৯ ই জুন, ২০১১ বিকাল ৩:০৩

নাঈফা চৌধুরী (অনামিকা) বলেছেন: এত কষ্ট করে এত বড় লেখা পড়বার জন্য অনেক ধন্যবাদ! :)

৯| ০৯ ই জুন, ২০১১ দুপুর ২:২৬

বৃষ্টি ভেজা সকাল ১১ বলেছেন: ভালো লাগলো।

০৯ ই জুন, ২০১১ বিকাল ৩:০২

নাঈফা চৌধুরী (অনামিকা) বলেছেন: ধন্যবাদ। :)

১০| ০৯ ই জুন, ২০১১ বিকাল ৫:১৯

জারনো বলেছেন:
অপূর্ব! দুটি পোস্ট দিয়েতো সামুর মাঠ গরম করে ফেলছেন। সত্যি লেখার হাত দারুন। বেশী বেশী লিখে আমাদের মনের খোরাকের যোগান দিবেন আশা করি। শুভ কামনা

১০ ই জুন, ২০১১ দুপুর ২:১৯

নাঈফা চৌধুরী (অনামিকা) বলেছেন: কি যে বলেন! :#> :#> :#>
আমার ব্লগে আপনাকে সুস্বাগতম, জারনো। :)

১১| ০৯ ই জুন, ২০১১ রাত ৮:৩০

যাযাবর৮১ বলেছেন:
আমার ধৈর্য্য বেজায় কম ............যাযাবর তো ................হাহাহা.......হাহাহা
তারপরেও পড়েই ফেললাম ...............বাপরে ................. :)
মনের গোপনে লুকানো কঠিন ভাবনার বহিঃপ্রকাশ সত্যি অসাধারণ। :D
ধন্যবাদ,শুভ কামনা রইলো।ভালো থাকবেন।

১০ ই জুন, ২০১১ বিকাল ৩:০৪

নাঈফা চৌধুরী (অনামিকা) বলেছেন: অ-নে-ক ভালো লাগলো যাযাবর ভাইকে আটকে রাখতে পেরে। :)
আপনার জন্যও শুভকামনা নিরন্তর।

১২| ০৯ ই জুন, ২০১১ রাত ৯:২৩

স্মৃতির নদীগুলো এলোমেলো... বলেছেন: শেষে এসে বাদুড়ের যে গল্প বললেন, ওইটাও ভাললাগল। আর পুরো লেখাটা তো ভাল ছিলই।

২৩ শে জুন, ২০১১ রাত ৮:৪৩

নাঈফা চৌধুরী (অনামিকা) বলেছেন: লেখক বলেছেন: অজস্র ধন্যবাদ আপনাকে। :)
আপনার প্রোফাইল পিকটা দারুণ!!!

১৩| ০৯ ই জুন, ২০১১ রাত ৯:২৮

অনিক বলেছেন: অসম্ভব সুন্দর লিখেছেন। পেশাদার লেখকের লেখা বলেই মনে হচ্ছে। যে টীনএজে এমন লেখা লিখতে পারে সেতো এতোদিন অনেক বড় মাপের লেখিকা হয়ে ওঠার কথা। যদি লেখা পেশা হিসেবে না নিয়ে থাকেন তবে অন্য কথা। তবে লেখার মাণ ও ভাষার ব্যবহার এবং বানানের প্রতি যত্নশীলতা বলে দেয় আপনি একজন উঁচু মানের লেখিকা।

১০ ই জুন, ২০১১ দুপুর ২:৫৩

নাঈফা চৌধুরী (অনামিকা) বলেছেন: আপনার মন্তব্য পড়ে তো শরতের কাশবনের মত প্রাণে দোলা লেগে গেছে। :)
পেশাদার হবার তো প্রশ্নই আসে না, আমি নেশাদার হিসেবেও লেখালেখির মধ্যেই আসলে নেই।

আপনার অসম্ভব সুন্দর মন্তব্যের জন্য অজস্র ধন্যবাদ।
আপনার চোখের কোণে যত্ন করে জমিয়ে রাখা স্বপ্নগুলো রঙে-রূপে মূর্ত হয়ে উঠুক - এই শুভকামনা রইল। :)

১৪| ০৯ ই জুন, ২০১১ রাত ১১:৩৯

রেজওয়ান তানিম বলেছেন: আপনাকে ব্লগে স্বাগতম । আমি একটু ডিটেল এ যাব । আশা করি আপনি আহত হবেন না ।

আপনার গল্পের শুরু ভাল ছিল । আর লেখনী ওভার অল চমৎকার ছিল । আপনি টানতে পারেন ভালই ।

কিন্তু সমস্যা যেখানে প্রথমাংশে পড়লে পাঠক ভাববে, মানুসক প্রবলেম টা মূল ফোকাস । কিছুক্ষণ পরে ভাববে অস্ট্রেলিয়ায় আসা, আর শেষাংশ পড়লে বয়ফ্রেন্ড অয়ন । আপনার লেখাটার আসল সমস্যা এই । ইউনিটি বজায় থাকে নি । মূল ফোকাসটা বদলে গেছে ।

আর কিছু ক্ষেত্রে ন্যারেটিভ ভাবটা গল্পের ফ্লো নস্ট করেছে ।

তার পরেও আপনার অনেক আগের লেখা, সে হিসেবে অনেক সুন্দর । আপনার ঐ সময়ের বয়সে ক্ল্পনা করাও আমার জন্য ছিল কঠিন । ভাল থাকবেন

১০ ই জুন, ২০১১ বিকাল ৩:২৫

নাঈফা চৌধুরী (অনামিকা) বলেছেন: প্রথমেই অশেষ কৃতজ্ঞতা রইল এত সূক্ষ্মভাবে আমার এত পুরনো লেখা পড়বার জন্য।

আপনার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করছি। আপনি শুধু সাহিত্যপ্রেমীই নন, আপনি নিঃসন্দেহে একজন নিবেদিতপ্রাণ ব্লগার।

আপনার বক্তব্যের সাথে আমিও একমত। অস্ট্রেলিয়াতে মাইগ্রেশানের সময় তাত্ক্ষণিকভাবেই লিখে ফেলেছিলাম ওটা, তাই লেখায়ও একধরণের অস্থিরতা প্রকাশ পেয়েছে। নিজেই মানসিক দিক থেকে ফোকাসড্‌ ছিলাম না। ওটা অনেকটা রোজনামচার মত হয়ে গেছে।

আমার ব্লগে আপনার লিঙ্ক সংযুক্ত করছি, এমন শুভাকাঙ্খী মেলা ভার!

শুভকামনা নিরন্তর। :)

১৫| ১০ ই জুন, ২০১১ রাত ১২:৪২

আশিক মাসুম বলেছেন: এত্তো বড়োওওওওওওওওওওওওওওও......
তবে লিখাটা ভালোই হিছে।

১০ ই জুন, ২০১১ দুপুর ২:৫৫

নাঈফা চৌধুরী (অনামিকা) বলেছেন: থ্যাঙ্কিউ, এত্তো বড় লেখাটা কষ্ট করে পড়বার জন্য। :)

১৬| ১০ ই জুন, ২০১১ রাত ১২:৫০

ইহতিশাম আহমদ বলেছেন: নেট সমস্যার কারণে এতক্ষণ মন্তব্য করতে পারছিলাম না। সারাদিনই আজ নেটটা সমস্যা করছে। কদিন ধরে আমি সামুতে শুধু গল্প পড়ছি। কি এক অজ্ঞাত কারণে বেশীর ভাগ লেখকই কেন যেন প্রেমের গল্প লেখে। এবং বেশীর ভাগেরই লেখার ধারাটা প্রায় একই রকম। অনেকদিন পরে পরিনত একটি লেখা পড়লাম। ভাল লাগল। প্রিয়তে নিলাম লেখাটা।

আমার কিছু অপরিনত লেখা আছে। সময় পেলে পড়বেন। হয়ত খুব একটা খারাপ লাগবে না।

ভাল থাকবেন।

১০ ই জুন, ২০১১ দুপুর ২:৫৯

নাঈফা চৌধুরী (অনামিকা) বলেছেন: অবশ্যই পড়ব আপনার লেখা!

আসলে জীবনের মূলেই তো প্রেম। তবে অনেকের প্রেম হয়তো কেবল একজনকে ঘিরেই কেন্দ্রীভূত থাকে। প্রেমটাকে বিশ্বময় ছড়িয়ে দিতে পারলেই (অন্য অর্থে নয় :)) ভাবনার বিস্তৃতি ঘটে।

শুভেচ্ছা নিরন্তর!

১০ ই জুন, ২০১১ বিকাল ৩:৩৬

নাঈফা চৌধুরী (অনামিকা) বলেছেন: "প্রিয়তে নিলাম লেখাটা।" - আপনার এত ভাল লেগেছে লেখাটা! আমার খু-ব-ই খুশী লাগছে। অসংখ্য ধন্যবাদ। :) :) :)

১৭| ১০ ই জুন, ২০১১ রাত ৩:৫১

ত্রাতুল বলেছেন:
হাহা! ত্রাতুল শব্দের কোন অর্থ নেই। রাতুল মানে লাল সেটাতো জানেন-ই। এই নামটা আসলে একটা বাংলা সাইন্স ফিকশান থেকে নেয়া। বুঝতেই পারছেন সেটা, ত্রাতুলের জগৎ। আর ব্লগে আসার পরে একজন এই নামকে ভেঙ্গে রেখেছিল তারা টুল। তার লিঙ্কে এখনো ত্রাতুল নামটা তারা টুল সিসেবেই আছে। :D

১০ ই জুন, ২০১১ বিকাল ৩:০২

নাঈফা চৌধুরী (অনামিকা) বলেছেন: আপনার ব্যাখ্যা শুনতে খুব ভালো লেগেছে। নাহ্‌, আগে কিচ্ছু জানা ছিলো না।
আপনার মন্তব্য পড়েই আমি আপনার লেখার ভক্ত হয়ে গেলাম। আমার ব্লগে আপনার লিঙ্ক সংযুক্ত করলাম। :)

অনেক ভালো থাকবেন।।

১৮| ১০ ই জুন, ২০১১ বিকাল ৩:০৮

ছোটমির্জা বলেছেন:
আমিও কিন্তু ব্লগে ''বাঁদুড়দের কথা লিখছি''।
পরে পড়তে হবে।

১৯| ১০ ই জুন, ২০১১ বিকাল ৩:৩৫

ডেইফ বলেছেন:
আপনার লেখাটি অনেক সাবলিল ছিল।
ভাল লাগলো অনেক।

১১ ই জুন, ২০১১ সকাল ১১:২৪

নাঈফা চৌধুরী (অনামিকা) বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ! :)

২০| ১০ ই জুন, ২০১১ বিকাল ৩:৫৪

হুপফূলফরইভার বলেছেন: অপরিচিত কারো সাথে নাকি প্রথমেই ফরমাল পরিচয় পর্বটা সেরে নেয়া ইসমাট ব্লগারের কাজ B-) , তাই প্রথমেই আমার পরিচয়টা থুক্কু ব্লগিংয়ে আমার একটা বদ অভ্যাস হল থুক্কু, অপরিচিত কারো ব্লগে এসে কোন পোস্টের শিরোনাম ভাল লাগলে আগে কমেন্টে এক নজর চোখ বুলাই, পরিচিত ব্লগারদের কিছু কমেন্ট দেখে আন্দাজ করি গল্প অথবা কবিতা আই মিন পোস্টটা কেমন হল~ রিয়েল ফাকিবাজ ব্লগার বলতে পারেন~ ;) ;) B-)

য়্যা B:-) B:-) কি বলতে যেয়ে কি বলতে চাইলাম? ;) কিছুই তো মনে পরতাছে না~ ওঅঅঅঅ মুনে পড়ছে, বাদুর।

বাদুর একটি সরিসৃপ প্রানী~ আপনার পোস্টে বাদুরের আনাগোনা কম~ ;) ;) ;)

এইবার আসি আসল কথায়[কুড়ি বছর আগেই আপনার হাতের লেখা এত্ত সুন্দর আছিল? ;) শব্দচয়ন, নিজের জীবনে তত্কালীন ঘটমান অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে অবচেতন মনের চৈন্তিক প্রকাশে এত সাবলিল আর সুনিপুন শব্দঝর? ঘুমুঘুমু আধারে শুয়ে শুয়ে ভাবনা-->বাবা মা শ্যামল , আচমকা ব্যাত্তয় ঘটিয়ে নতুন পরিবেশের সাথে খাপখাইয়ে নেয়ার মুহুর্ত, মালিসা, ইউনি বাদুড়, আপন পরিবেশ, পেছনে ফেলে আসা স্মৃতির জাবর কাটা] সত্যিই দারুন লেগেছে~ আপি / আপু অথবা একজন নবীন ব্লগার!

নিয়মিত / রেগুলার এমন সদরঘাটগামী ৭ নাম্বার বাসের বেগে ছুটে চলা শব্দমালার ট্রামগাড়ীতে চড়ে বসতে চাই কিছুটা সময়ের জন্য~ ড্রাইভার হিসেবে আপনি বোধয় গাড়ী ভাইল চালাতে পারেন~ !:#P !:#P

১১ ই জুন, ২০১১ সকাল ১১:৩৩

নাঈফা চৌধুরী (অনামিকা) বলেছেন: গাড়ী খুব খারাপ চালাই (উভয়ার্থে) :-B
বাদুড় সরীসৃপ প্রাণী? হায়রে!

হে প্রবীণ ব্লগার, আমার ব্লগে আপনাকে সুস্বাগতম!

২১| ১০ ই জুন, ২০১১ বিকাল ৪:১৮

ছোটমির্জা বলেছেন:
আমি খুব স্যরি, নাঈফা চৌধুরী (অনামিকা),
আমাকে মাফ করবেন।

আমি এখানে আন্মনা নই, আমি অ্যানা। এখান থেকেই কথাটা বদলে দিলাম।
আপনি লেখায় যাকে/যাদেরকে বাঁদুড় হতে দেখেছেন সে/তারা পরিস্হিতির স্বীকার। বাস্তবতার নির্মমতা তাকে বাধ্য করে রং বদলাতে, টিকে থাকার জন্য তার ও দরকার আছে। তাতে বাঁদুড়ের দোষ তেমন না থাকলেও-নিয়তি তাকে ক্ষমা করেনা। বাস্তবতা হল, সেই বাঁদুড়ের বাস্তবতা পাখি বা পশুরা বোঝেনা- বোঝেনা কতটুকু অসহায়ত্ব ও নিরন্তর অস্তিত্ব সংকটের কষাঘাতে বা আলোহীন বিন্দুর দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে ঝাপসা চোখে ব্যথার সাথে প্রকৃতি উথলে পড়া আদিমতায় যখন খেলতে থাকে- সেই অসহায়ত্বে গহীনে নেমে যাওয়াই সাধারণ ও সহজাত। তখন আসলে কিছুই করার থাকে না ওর।কেও Ad দেয়া ঐ মেয়েদের মতই ভাবে জীবন একটাই- বাঁচব ভরপুর, কেউ মালিসার মত হয়ে যায়। অনেকে এর মাঝেও টিকে থাকে- কিন্তু তারপরও তাকে সীতা সাজতে হয়।

আরও কত কথা বলা যায়।
লেখাটা দারুণ হয়েছে-মাঝে কিছু বিষয় না আসলেও পারত বলে মনে হয়েছে। শুরু আর শেষ -ছোট গল্পের গ্রেট মাস্টারী দেখলাম।


সবার মত: আমারও জানতে ইচ্ছে হয়- অ্যানা কেমন আছে, অয়ন কি তাকে বাঁদুড় ভেবেছে? অয়নই বা কেন বসে থাকবে?
গ্রেট ছোট গল্প।

-----------------------______________----------------------------
ব্লগে কিছু -মুনাফেক বাঁদুড় আছে- আমি সেটাই ইংগিত করে ছিলাম আগের কমেন্টে।

১১ ই জুন, ২০১১ সকাল ১১:৩৫

নাঈফা চৌধুরী (অনামিকা) বলেছেন: নো প্রব্লেমো। :)
গল্পটা আপনার ভাল লেগেছে শুনে আমারও খুব ভাল লাগলো। শুভেচ্ছে নিরন্তর!

২২| ১০ ই জুন, ২০১১ সন্ধ্যা ৬:৫৮

সত্যবাদী মনোবট বলেছেন:
পুরোটা পড়তে পারি নি আপু................তবে যেটুকু পড়েছি ভালো লাগলো।

পরে সময় করে পড়ে নেবো। আমার ঘরে স্বাগতম। ভালো থাকবেন

১১ ই জুন, ২০১১ সকাল ১১:৩৭

নাঈফা চৌধুরী (অনামিকা) বলেছেন: আপনার জন্য অনেক শুভকামনা। আমার ঘরেও আপনাকে স্বাগতম! :)

২৩| ১০ ই জুন, ২০১১ রাত ১১:৩৬

আশরাফুল ইসলাম দূর্জয় বলেছেন:

আপু, আপনার ব্লগে প্রথম আসলাম।
গল্পটা শুরু করছিলাম, বেশ লাগছিলো।
কিন্তু শেষ আর করা হলোনা। অন্যদিনের জন্য রেখে দিলাম।

এই ব্লগ ভূবনে আপনাকে স্বাগত।
অনেক অনেক লিখুন, শুভকামনা থাকলো।

১১ ই জুন, ২০১১ সকাল ১১:৩৮

নাঈফা চৌধুরী (অনামিকা) বলেছেন: পুরোটা শেষ করে আপনার ফীডব্যাক জানালে খুব খুশী হব।
শুভেচ্ছা নিরন্তর! :)

২৪| ১১ ই জুন, ২০১১ রাত ১:০৫

পাহাড়ের কান্না বলেছেন: ইন্নালিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজিউন :-< । না এখনো মারা যাইনাই। তবে এমন দীর্ঘ পোস্ট দেখলে সাথে সাথে ঘুম চইলা আসে |-) (ঘুমাইলে মানুষ মরাই বলা যায়)। আমিও হুপু (মামুর) মত বেশি না একটু ফাঁকিবাজি পাঠক। :| আপনার ব্লগে প্রথম আসলাম তাই একটা সাক্ষর রেখে গেলাম। পরে এক সময় পড়ে নেব :)

১১ ই জুন, ২০১১ সকাল ১১:৩৯

নাঈফা চৌধুরী (অনামিকা) বলেছেন: স্বাক্ষর সাদরে সংগৃহীত হল। :)

২৫| ১১ ই জুন, ২০১১ সকাল ১১:৩২

সাকিন উল আলম ইভান বলেছেন: আসলাম আপু ,পড়ছি .............:)

১১ ই জুন, ২০১১ সকাল ১১:৪১

নাঈফা চৌধুরী (অনামিকা) বলেছেন: ওক্কে, ভাইয়া। :)
ফীডব্যাক দেওয়া চাই কিন্তু!

২৬| ১১ ই জুন, ২০১১ সকাল ১১:৪২

আহমেদ আরিফ বলেছেন: ৩দিন আইসা আজ শেষ করছি !:#P !:#P !:#P !:#P

১১ ই জুন, ২০১১ সকাল ১১:৫৩

নাঈফা চৌধুরী (অনামিকা) বলেছেন: একটা প্যারোডী মনে আসলো, অভয় দিলে বলি: "ও বন্ধু, ৩ দিন তোর ব্লগে গেলাম, ফীডব্যাক দিলাম না"!

আমার ব্লগে আপনাকে স্বাগতম, আরিফ ভাই! :)

২৭| ১১ ই জুন, ২০১১ রাত ৯:৫২

এস এম নোমান বলেছেন: বাদুড়, কলা বাদুড়, আমার প্রিয় প্রাণীদের একটি। শেষ গল্পটিতে কষ্টের

ভাল লাগলো, তবুও বাদুড় আমার ভাল লাগে এ কারণে যে, ছোট বেলায়

ঘরের বাইরে টাঙানো দুই চাটাই এর মাঝে বাদুড়ের অনেক বাচ্চা ঝুলে

থাকতো। আমি এক দুই করে গুনতে গুনতে ৯৯ থেকে আর গুনতাম না।

এ চিত্র আমরা প্রায়ই দেখতাম।

অন্তত এই কারণে বাদুড়ের সাময়িক অনুশোচনাকে আমি.. আমরা ভুল

ভাবা ঠিক হবে না। তবে গল্পটার বাস্তবতা সত্য।

"থিবীতে আলোর বন্যার কণামাত্রও তাদের ভাগ্যে কোনদিন আর জুটবে

না।" এতটা কঠিন পৃথিবীর পালন কর্তা তিঁনি নন।


আমি জানি, বহুদিন পর যখন দেশে যাব, আর সেদেশের মানুষগুলোর সাথে, সেদেশের পরিবেশের সাথে কিছুতেই মিলেমিশে একাকার হতে পারব না, খাপ খাওয়াতেও পারব না হয়তো নিজেকে। সেদেশে সবকিছুই আগের মতই, কেবল বদলে যাব আমি।



All the praises and thanks be to Allah.

------------------

SM NOMAN
(নিজ ব্লগে রাখলাম)

২৩ শে জুন, ২০১১ রাত ৮:৫৬

নাঈফা চৌধুরী (অনামিকা) বলেছেন: প্রথমেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি, এত দেরীতে মন্তব্যের উত্তর দেবার জন্যে।

অনেক অনেক ধন্যবাদ নোমান ভাই, বাদুড় নিয়ে আপনার স্মৃতিগুলো আমাদেরকে জানাবার জন্য।

সমস্ত প্রশংসা পরম করুণাময় আল্লাহ্‌পাক-এর প্রাপ্য। স্নিগ্ধতার আধার আল্লাহ্‌পাক, যত মলিনতা সব আমার নিজের।

আমার ব্লগে আপনাকে সুস্বাগতম!!

২৮| ১২ ই জুন, ২০১১ বিকাল ৩:৩৬

প্রজন্ম৮৬ বলেছেন: একটানে পড়ে ফেললাম। বেশী ভাল লেগেছে আত্মউপলব্ধিগুলো। এত চমৎকার বোধশক্তি'র জন্য আপনাকে অভিনন্দন এবং লেখায় +++++

এত চমৎকার পরিবেশে মানুষগুলো কিভাবে যে এত ভবলেশহীন হয় আমিও বুঝতাম না। একদিন বসন্তের শুরুতে অত্যন্ত সুন্দর পরিবেশে হাটতে হাটতে আমিও টের পেলাম যে আমার মনে আন্দোলন হচ্ছে না। পরে ভেবে দেখলাম, শিল্প- সৌন্দর্য এসবের বিকাশের প্রথম শর্ত হচ্ছে প্রতিবন্ধকতা। বাঁধা না পেলে কল্পনা শক্তি থমকে যায় তাই বাঁধহীন জীবনের মানসপটে কোন কিছুই জমে না।শুন্য একটা জীবন পরে থাকে।

বাদুড়ে'র গল্পটা জানতাম না।জানা খুব প্রয়োজন ছিল। আশাকরি আপনার ব্লগ থেকে নিয়মিত নিজেকে সমৃদ্ধ করতে পারবো।

আপনাকে ধন্যবাদ। ভাল থাকুন।

২৩ শে জুন, ২০১১ রাত ৮:৩৩

নাঈফা চৌধুরী (অনামিকা) বলেছেন: প্রথমেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি ভাইয়া, এত দেরীতে মন্তব্যের উত্তর দেবার জন্যে।

"বাঁধা না পেলে কল্পনা শক্তি থমকে যায় তাই বাঁধহীন জীবনের মানসপটে কোন কিছুই জমে না।শুন্য একটা জীবন পরে থাকে।" -- চমত্কার মন্তব্যটি পড়ে খুব, খুব ভাল লাগলো!

ব্লগভ্রমণে চতুর্মাত্রিক বেশী পছন্দ হয়েছে, তাই সামু থেকে বিদায় নেবার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
তবে লেখালেখির সাথেও আমার বর্তমানে একেবারেই সম্পৃক্ততা নেই আর। :)

আপনার ব্লগভ্রমণ ও অভিজ্ঞতা সুষমামণ্ডিত হোক এই শুভকামনা রইল। :)

২৯| ১২ ই জুন, ২০১১ বিকাল ৪:১৯

সকাল রয় বলেছেন:
মাঝে মাঝে ইংরেজী শব্দ না থাকলে আরো ভালো লাগতো পড়তে।

ভালো থাকুন আরো লিখুন

২৩ শে জুন, ২০১১ রাত ৮:২৫

নাঈফা চৌধুরী (অনামিকা) বলেছেন: প্রথমেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি ভাইয়া, এত দেরীতে মন্তব্যের উত্তর দেবার জন্যে।

মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ! আপনার প্রস্তাবনা সাদরে গৃহীত হল। চেষ্টা করব ইংরেজী শব্দ এড়িয়ে যেতে। সমস্যা হল ইংরেজী শব্দ বাংলায় ট্রান্সলিটারেশান করতে গেলে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়, কারণ সঠিক উচ্চারণে লিখলে অনেক পাঠকই কনফিউজ্‌ড্‌ হয়ে যাবেন। তাছাড়া 'সঠিক উচ্চারণ' দেশভেদে ভিন্ন হয়ে যায়। :)


শুভেচ্ছা নিরন্তর!

৩০| ১৩ ই জুন, ২০১১ বিকাল ৪:৫৯

লীলা চক্রব্ত্তী বলেছেন: আপনার লেখা গল্প পড়ে ভাল লাগল। নমষ্কার।

২৩ শে জুন, ২০১১ রাত ৮:১৩

নাঈফা চৌধুরী (অনামিকা) বলেছেন: প্রথমেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি এত দেরীতে মন্তব্যের উত্তর দেবার জন্যে।

লীলা, আমার ব্লগে আপনাকে সুস্বাগতম। :)

স্লামালিকুম (বঙ্গানুবাদ: আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক, এই প্রার্থনা রইল)।

৩১| ১৭ ই জুন, ২০১১ রাত ৮:১৭

মোঃ গোলাম কিবরিয়া বলেছেন: আপু সামনের ঘটনা জানতে চাই ............... আর লেখায় + ...সরাসরি প্রিয়তে :)

২৩ শে জুন, ২০১১ রাত ৮:০৮

নাঈফা চৌধুরী (অনামিকা) বলেছেন: ভাইয়া, প্রথমেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি এত দেরীতে মন্তব্যের উত্তর দেবার জন্যে।
আপনি আমার এতদিনের পুরানো লেখা এত পছন্দ করেছেন জেনে খুবই ভাল লাগছে। লেখাটা সার্থক হয়েছে।

ব্লগভ্রমণে চতুর্মাত্রিক বেশী পছন্দ হয়েছে, তাই সামু থেকে বিদায় নেবার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
তবে লেখালেখির সাথেও বর্তমানে আমার একেবারেই সম্পৃক্ততা নেই আর।

আপনার ব্লগভ্রমণ ও অভিজ্ঞতা সুষমামণ্ডিত হোক। আপনার জন্য শুভেচ্ছা নিরন্তর। :)

৩২| ২১ শে জুন, ২০১১ সন্ধ্যা ৬:৩৭

আত্মমগ্ন আিম বলেছেন: আমি অস্ট্রেলিয়া গিয়েছিলাম প্রায় ১১ বছর আগে...সিডনীতে থাকতাম...সাড়ে তিনমাস থাকার পর বাংলাদেশে চলে আসি।
আমার বয়স তখন সাড়ে চার ছিল।
অনেক স্মৃতি মাঝে মাঝে মনে পড়ে।
বড় মামা-মামি থাকেন ওখানে।
আজও মামি ফোন করে বললেন AMC exam এর প্রস্তুতি নিতে।
মামাত ভাইটাও ফোন করলে বলে চলে যেতে ওখানে।
মনটা টানে না বাইরে।
সামনে এফ সি পি এস, এম.এস পরীক্ষা দেবো ইনশাল্লাহ।
নিউরোসার্জন হলে তখন দেখে আসব হারবার ব্রিজটা আবার...অপেরা হাউজ বা ডলফিনের কসরৎ...ইনশাল্লাহ।

আপনার লেখাটা পড়ে পুরোনো কথাগুলো মনে পড়ে গেল।
আপনার অনুভুতিগুলোর প্রকাশটা দারুন।

ভাল থাকবেন।

২৩ শে জুন, ২০১১ রাত ৮:৩৮

নাঈফা চৌধুরী (অনামিকা) বলেছেন: মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ!

প্রথমেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি ভাইয়া, এত দেরীতে মন্তব্যের উত্তর দেবার জন্যে।

আপনি লিখেছেন, "আমি অস্ট্রেলিয়া গিয়েছিলাম প্রায় ১১ বছর আগে...আমার বয়স তখন সাড়ে চার ছিল।...সামনে এফ সি পি এস, এম.এস পরীক্ষা দেবো ইনশাল্লাহ।"

৪.৫ আর ১১ যোগ করলে মাত্র ১৫.৫ হয়। একটু কনফিউজ্‌ড্‌ হয়েছি।

আপনার সুন্দর অভিজ্ঞতা আমাদের সাথে শেয়ার করায় খুব ভাল লাগলো। এ.ম.সি. সহ জীবনের সব পরীক্ষায় আপনি সফল হোন এই প্রার্থনা করি। :)

৩৩| ২৪ শে জুন, ২০১১ সকাল ১১:৫৫

আত্মমগ্ন আিম বলেছেন: @লেখক...আপু লিখতে ভুল হয়ে গেছে...কি-বোর্ড মিসটেক!!!
১১ না,২১ হবে। :#>

ধন্যবাদ ধরিয়ে দেবার জন্য।

৩৪| ০৬ ই জুলাই, ২০১১ সন্ধ্যা ৭:২০

এস এম নোমান বলেছেন: Your Can see ..... http://www.probashipotro.com
Thats Our Site...

৩৫| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১১ সকাল ৮:৪৫

আহাদিল বলেছেন: নতুন পোস্ট দিন, নাঈফা!
আপনার মন্তব্যের টানে, সেগুলোর জবাব দিতে ব্লগে ফিরে এসেছি!


ভালো থাকবেন!
শুভ সকাল!

২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১১ রাত ১:৪৫

নাঈফা চৌধুরী (অনামিকা) বলেছেন: আমার ব্লগে আপনাকে সুস্বাগতম, প্রিয় আহাদিল! :)

ব্লগে ফিরে আসবার জন্য অভিনন্দন!

আপনার কাছ থেকে আমার এই পোস্ট সম্পর্কিত মন্তব্য পেলে অনেক ভাল লাগতো।

শুভেচ্ছা নিরন্তর!
স্লামালিকুম।।

৩৬| ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১১ বিকাল ৩:৩৭

হাসান যোবায়ের বলেছেন: অনেক সুন্দর পোস্ট। :) :) :D
আরও নতুন পোস্ট চাই।

০১ লা নভেম্বর, ২০১১ বিকাল ৪:২৭

নাঈফা চৌধুরী (অনামিকা) বলেছেন: থ্যাঙ্কিউ ভাইয়া! :)


সামু'র পরিবেশ ভাল্লাগে না। B-))


৩৭| ২৯ শে অক্টোবর, ২০১১ বিকাল ৪:২০

চাটিকিয়াং রুমান বলেছেন: চমৎকার লেখা। :)

+++++

০১ লা নভেম্বর, ২০১১ বিকাল ৪:৩৫

নাঈফা চৌধুরী (অনামিকা) বলেছেন: আর্‌রে!!

আপনি আমার লেখা পড়েছেন! আমি তো কখনও ব্লগে লগইন-ই করি না! তারপরও পড়েছেন! ইউ হ্যাভ মেইড মাই ডে ট্যুডে!! আই মিন ইট! :) :) :)

আমাকে খুঁজে পেলেন কিভাবে?!

খু-উ-ব খুশী লাগল, ভাইয়া (না কি আপু?)
আপনার লিংক আমার ব্লগে যোগ করে নিলাম! :)

আমি সামু'তে লগইন করি না বলতে গেলে। চতুর্মাত্রিকে যোগ দেবার আহ্বান রইল আপনাকে।

অনেক, অনেক ভাল থাকবেন! হাসিখুশীতে ভরপুর জীবন হোক আপনার! ;)

৩৮| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:২১

অপ্রচলিত বলেছেন: আপনার জীবন ডায়েরীর কিছু পাতা পড়ে চমৎকৃত। প্রায় দুই বছর পর আপনার পোস্টে একটি মন্তব্য। যদি কখনো দেখেন আশা করি মনটা খুব ফুরফুরে হয়ে যাবে ;)

১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১১:১৬

নাঈফা চৌধুরী (অনামিকা) বলেছেন: আসলেও মনটা প্রজাপতি হয়ে গেছে! কৃতজ্ঞতা!

৩৯| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:০১

নাছির84 বলেছেন: ভাল লাগছে....পড়ছি। আপনার লেখা বেশ গোছালো। মনে হয় পেশাদার লেখক....
আবার এসে বাকিটুকু শেষ করবো।

১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:০৫

নাঈফা চৌধুরী (অনামিকা) বলেছেন: বাহ! অনেক কৃতজ্ঞতা আপনার উদার মন্তব্যের জন্য! এই লেখাটা আমার টীন-এইজ বয়সে লেখা। তারপর আর কিছুই লিখিনি!
==

আমার ব্লগে স্বাগতম!

৪০| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:১৫

নাছির84 বলেছেন: আমার ব্লগেও আপনার নেমতন্ন রইল.....

৪১| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১০:২১

মনিরা সুলতানা বলেছেন: "অমা যামিনীর গহীন আঁধারে চুপিচুপি এলে প্রিয়া,
দ্বিগুণ আঁধার খর্জুর বীথি, তাহার আড়াল দিয়া।


সবার জীবনের প্রথম ভাললাগা গুলি একই ধাচের কেন ...

২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ৮:৪২

নাঈফা চৌধুরী (অনামিকা) বলেছেন: হারিয়ে যাওয়া সেসব দিন!
মন্তব্যে খুব ভালো লাগা, প্রিয় মনিরা!
শুভকামনা অনন্ত!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.