![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রথম পর্ব অংশ-১;
১)সকাল ৯ টা –
কোন ধরনের বিন্দুমাত্র বা সামান্য নিজের মধ্যে দোষী ভাব আসলো না যখন লরেনা তার মাকে একা রান্না ঘরে রেখে নিজে একটা নীল জিন্স আর ফতুয়া পরে কাধে ল্যাপটপের ব্যাগ টা নিয়ে বের হয়ে গেলো। আজকে লরেনার জন্ম দিন।ভাগ্যটা তার যে আজ অনুকুলে সেটা এমনিতেই বোঝা যায় কারন আজ যে রবিবার , সারাদিন ছুটি ।ছুটির দিন অনেকটা রিলাক্স থাকা গেলেও আসল কথা হলো সারাটাদিন নিজের মত করে কখনও পাওয়া সম্ভব নয় যতক্ষন না পর্যন্ত সে নিজ শহর ত্যাগ করে অন্য কোথাও যাচ্ছে । গেস্ট রুম এ ডজন খানেক মহিলা তারা কি জেনো একটা ছবি নিয়ে তাদের বিতর্ক চালিয়ে যাচ্ছে,আর চোখে দেখলো লরেনা কিন্তু ও্ই আড্ডা এর প্রতি তাঁর কোন ভ্রুক্ষেপ দেখা গেলো না।
এখন চট্রগ্রামে জানুয়ারী মাস।এমনিতেই শীত কাল তার ওপর আবার শৈতপ্রবাহ চলছে। প্রচন্ড শীত এ লরেনা কাপতে কাপতে হেটে চলল রাস্তায়।রিকশা তে উঠলে শীত লাগবে এই ভয় এ তার হন্ঠন যাত্রা চলতেই থাকলো। জন্মদিনের দিনটা ছুটির দিন হলেও তার মধ্যে কোন ধরনের চঞ্ছলতা দেখা যায় না। লরেনার দুক্ষে ভরা জীবনের গল্প যে অন্যখানে যেটা নিয়ে সে মোটেও খুশী নয় । যদিও সে খুব ভালো করেই যানে যে তার এ জীবনের এই দুক্ষের জন্য নীজের কোন দোষ নাই।
একা একা হাটতে হাটতে লরেনা প্রায় ১৫ টাকা রিকশা ভাড়া বাচিয়ে জি ই সি এর মোরে “ওয়েল ফুড” নামক ফাস্ট ফুড এর দোকানে গিয়ে পৌছালো ।
.তার জীবনের একমাত্র সঙ্গী , তার ল্যাপটপ যা কিনা তার সবচেয়ে প্রীয় বন্ধু ।ল্যাপটপ খুলে সে প্রথমে তার ইমেইল চেক করলো ।অনেক জন্মদীনের মজার মেসেজ এসেছে স্কুল ,কলেজ ও ইউনিভার্সিটির বন্ধুদের কাছ থেকে। একজন আধানগ্ন ছেলে একটি জম্নদিনের কেক হাতে ধরে আছে তার সামনে ভাবতে কেমন লাগে বলুন ? ,এরকম একটি ই- কার্ড পাঠিয়েছে তার একসময় এর রুমমেট , শেলি । লরেনা হাসি তে বুক ফেটে যাচ্ছিল ই- কার্ড দেখে নয়, এই ভেবে যে এখনও শেলির মধ্যে ছেলেমানুশী থেকে গেছে কিন্তু মুচকি হাসার পর একটু চারিপাশে তাকিয়ে সিউর হয়ে নিল যে আশে পাশের মানুশ গুলো তার দিকে কেউ তাকিয়ে নেই তো ? তার যে এতো সুভাকাঙ্খী জন্মদিন না আসলে বোঝার উপায় নাই । অনেক গুলো ই- কার্ড পেয়েছে লরেনা এবার জন্মদিন এ , কিন্তু সব ই- কার্ড এর মুল চিন্তা ধারা প্রাই একি ,কম বেশী সব একি ট্রিক্স।
জন্মদিন এ একাই নিজে একটা কেক নিয়ে একাই কেক টা কেটে লরেনা খেতে লাগলো।খাওয়ার পর তার প্রিয় কোল্ড ড্রিংক পেপসি খেয়ে আবার একলা হাটতে লাগলো রাস্তায় উদ্দেশ্যহীন ভাবে ।আজকে যে লরেনার জন্মদিন ।
লরেনার হেডফোনে বাজতে থাকে –-
হেয়ার কামস দা রেইন এগেইন
ফলিং অন মাই হেড লাইক এ মেমোরি
ফলিং অন মাই হেড লাইক এ নিউ ইমোশন
আই ওয়ানট টু ওয়াল্ক ইন দা ওপেন ওয়িন্ড
আই ওয়ানট টু টল্ক লাইক লাভারস ডু
আই ওয়ানট টু ডাইভ ইন ইউর ওশেন
ইজ ইট রেইনিং উইথ ইউ …………………..
আট মাস হইয়ে গেলো লরেনা বাসায় থাকে ।তার সাথে নিহাদ এর প্রায় আট বছর প্রেমের সম্পর্ক । প্রেমের শেস পরিনতি বিবাহের সৌভাগ্য এখনো হয় নি তার । শেস জন্মদিনে নিহাদ এর সাথে কত না মজা হয়েছিল । সারাটা দিন সে কাটিয়েছিলো টমের সাথে।ঘুরে বেরিয়েছিলো সে নেভাল বীচ আর রাতে সে টমের সাথেই ছিলো। কথা গুলো ভাবতে ভাবতে লরেনা আনমনে কোথায় যেনো হারিয়ে যায়। সকাল ১১ টা বাজে এখনও নিহাদ এর পক্ষ থেকে কোন ধরনের শুভেচ্ছা বানী পেলো না লরেনা।লরেনা অনেক আশা নিয়ে ছিল এই দিনের জন্য , অন্তত এই দিনে নিহাদ এর কাছ থেকে সে অনেক দিন পর কিছুটা মুহূর্ত হইতো মুঠো ফোন এ পাবে।কিন্তু অপেক্ষা করতে করতে অনেক সময় ই পার হয়ে গেলো কোন ধরনের কোন কিছুই এখনও সে পেলো না।
একা একা লরেনা নেভাল বীচ এ ঘুরতে লাগলো আর তার পুরনো স্মৃতি গুলো মনে করতে লাগলো।
দুপুরের খাবার টা তার বাড়ীর বাইরে করার প্লান ছিলো কিন্তু শরীর আর সায় দিলো না ।দুপুর ২ টা বাজে এখন । নিঃশব্দে বাসায় প্রবেশ কাউকে কিছু না বলে লরেনা নিজেই একা একা খেয়ে উঠলো। খাওয়া শেষ হতে না হতেই তার প্রীয় সঙ্গী নিয়ে আবার শুয়ে পরলো আর ফেসবুক এ ও মেইল এ তাকে সুভেচ্ছান্তে প্রেরীত ই- কার্ড গুলো মনোযোগ দিয়ে দেখতে লাগলো।
দরজায় নক পরতেই লরেনা বললো -কাম ইন
আহ হাউ আর ইউ?
রুনি এর কন্ঠ শুনে লরেনা তরিঘরী করে ল্যাপটপ টা প্রায় ফেলেয় দিচ্ছিলো ।অবাক ই হয়েছে লরেনা ।রুনীর চোখ পরলো ল্যাপটপ এর দিকে।ও মাই গড !এইটা কি তোমার ছবি? জিজ্ঞেশ করলো রুনী।
হ্যা আমার বলে আস্তে আস্তে ল্যাপটপ টা অফ করে রেখে দিলো লরেনা।কেমন আছো ?জিজ্ঞেশ করলো?
লরেনার ফ্যামীলি তার চাওয়া কিংবা তার মতামত কোন কিছুর প্রতি খেয়াল করে না।এক রকম বাবা মাকে ঘৃণায় করে সে। রুনী আশাতে লরেনা মনে মনে অনেক খুশী ই হয়েছে। আছি ভালোই।বাই দা ওয়ে হ্যাপী বার্থডে ।আমি জানি আজ তোমার জন্মদিন এজন্য এসেছি তোমাকে শুভেচ্ছা জানাতে।
ধন্যবাদ বলে লরেনা তার কাধে চুলকাতে লাগলো ।
হেয় ওয়েট তোমাকে তো বার্থডে গিফট টা দেওয়া হলো না। এক গুচ্ছ রজনীগন্ধা হাতে তুলে দিলো লরেনা কে রুনী।মনে মনে খুশী হলেও নিহাদ ছারা এই মুহুরতে লরেনার কিছুই মনে আসতেছিল না।লরেনার অন্যমনস্ক ভাব দেখে রুনী আর কিছু না বলে লরেনা কে বলল- আই হ্যাভ টু গো। বাই
সুন্দর একটা হাসি দিয়ে লরেনা ও বাই বললো।
©somewhere in net ltd.