| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বেহুলা লক্ষিন্ধরের বাসর ঘর দেখা শেষে বগুড়া শহরে ফিরছে মাহাদী (ছদ্মনাম)। হঠাৎ ৪ স্ট্রোকে ওঠার সময় মোবাইলে ম্যাসেজ এল। একটা অপরিচিত নাম্বার থেকে আশুরার ম্যাসেজ। অপরিচিত নাম্বার হলেও নাম্বারটা অপরিচিত নাম্বার হিসেবে সেইভ করা। এ নাম্বার থেকে বিভিন্ন ওকেশনে ম্যাসেজ আসে। মাহাদী একজন মেয়েকে সন্দেহ করত এবং তাকে নিয়ে একটা প্লানও ছিল। মাহাদীর মা-বাবা প্রায়ই বলেন, মেয়ে অনেক পাওয়া যায় কিন্তু ছেলে বিয়ে করাতে গেলে আর মেয়ে পাওয়া যায় না। কাজেই আমরাও দেখছি তুমিও দেখতে থাক। যেই মেয়েটাকে ম্যাসেজ করে বলে মাহাদী সন্দেহ করত তার বান্ধবীকে মাহাদী পছন্দ করত। তাই তার প্লান ছিল ম্যাসেজকারীর মাধ্যমে তার সাথে যোগাযোগ করা। যদিও দুই জনের সাথে শেষ দেখা ৮ মাস আগে। এ পর্যন্ত আর পরিকল্পনার বাস্তবায়ন হয়ে ওঠেনি।
মাহাদী নিশ্চিত হতে ফিরতি ম্যাসেজ ছুড়ে দিল। “আপনাকেও আশুরার শুভেচ্ছা, কিন্তু কে আপনি? আমি কি আপনাকে চিনি?”।
কিছুক্ষণপর ওপাশ থেকে ফিরতি ম্যাসেজ এল “আমি শারমীন (ছদ্মনাম)”।
মাহাদীর সন্দেহ শতভাগ ঠিক। মাহাদী ম্যাসেজ লিখল “আপনার সাথে আমার জরুরী কথা আছে, আমাকে আপনার একটু সাহায্য করতে হবে।” দু এক দিন ম্যাসেজ আদান প্রদান চলল।
এরপর একদিন মাহাদী ম্যাসেজ লিখল, “আমার আপনার বান্ধবী বৃষ্টিকে (ছদ্মনাম) পছন্দ, তাকে প্রস্তাব দিলে সে কি রাজি হবে?”।
শারমীন জানালো, “রাজি না হবার কি আছে, বলে দেখতে পারেন”।
মাহাদীর কাছে বৃষ্টির নাম্বারও ছিল, সেই আট মাস আগে নেয়া। কিন্তু আর ফোন দেয়া হয়নি। একদিন মাহাদী ফোন করল। কিন্তু নাম্বারটি বন্ধ।
মাহাদী পুনরায় শারমীনকে ফোন করে সব জানালো। শারমীন জানালো তারা ক্লাসমেট কিন্তু ঘনিষ্ট নয় তবে সে খোজ নিতে পারবে। শারমীন খোজ নিয়ে মাহাদীকে ফোন করে জানালো, সে নতুন নাম্বার নিয়েছে এবং অন্য বান্ধবীর কাছ থেকে নেয়া নতুন নাম্বারটা তাকে দিল।
একদিন রাতে মাহাদী বৃষ্টিকে ফোন করল। বেশ কিছুক্ষণ রিং হবার পর যিনি ফোন ধরলেন তিনি বৃষ্টির মা। তিনি জানালেন, বৃষ্টি এশার নামাজ পড়ছে, নামাজ শেষে তিনি বৃষ্টিকে বলবেন।
নামাজ শেষ করে বৃষ্টি ফোন করল। মাহাদী কেটে দিয়ে ব্যাক করল। সেদিন তেমন কোন বিশেষ কথাই হল না। কেবলমাত্র পরিচয়, সৌজন্যতা, অনেকদিন পর কথা হচ্ছে, কেমন আছেন এসব।
ঠিক তার পরদিন মাহাদী পুনরায় বৃষ্টিকে ফোন করল। মাহাদী বৃষ্টিকে বলল, আপনার সাথে জরুরী কথা আছে। “আমি আপনাকে বিয়ে করতে চাই, উভয়ের পরিবারের সম্মতিক্রমে”। বৃষ্টি বোধহয় অনেকটা অবাকই হল। কোথায় ফোন করে আমি তোমাকে ভালবাসি তা না আমি আপনাকে বিয়ে করতে চাই! বৃষ্টি বলল, আমি আপনার কাছ থেকে এ কথা শোনার জন্য প্রস্তুত ছিলাম না।
মাহাদী বলল, আমি জানি, আবার এও জানি আপনি প্রাপ্ত বয়স্ক তাই নিজেকে সামলে নিতে পেরেছেন। বৃষ্টি বলল, হা তা পেরেছি। বৃষ্টি জানালো, সে তার বাবা-মার সাথে কথা বলবে। সেদিনের মত কথা সেখানেই শেষ।
পরদিন মাহাদীর মোবাইলে বৃষ্টির ম্যাসেজ, “আমার মা আপনার সাথে কথা বলতে চান”।
মাহাদী ফিরতি ম্যাসেজে লিখল, “আমার সাথে নাকি আমার মা-বাবার সাথে?”
বৃষ্টি লিখল, “আপনার সাথে”।
মাহাদী রাতে বৃষ্টিকে ফোন করল, ওর মার সাথে কথা বলতে চাইল। ওর মা জানালো “আপনার কথা বৃষ্টি আমাদের বলেছে, এখন আপনাকে তো আমরা চিনি না তাই আপনার একটা বায়োডাটা পাঠান।”
মাহাদী তাতে সম্মত হল।
পরদিনই মা’র অনুমতি নিয়ে কুরিয়ার সার্ভিসে ছবিসহ বায়োডাটা পাঠালো।
দুই দিন পর মাহাদীর মোবাইলে বৃষ্টির ম্যাসেজ, “আমার বাবা আপনার সাথে কথা বলতে চান”।
মাহাদী ফিরতি ম্যাসেজে লিখল, “আমার সাথে নাকি আমার মা-বাবার সাথে?”
বৃষ্টি লিখল, “আপনার সাথে”।
মাহাদী রাতে বৃষ্টিকে ফোন করল, ওর বাবার সাথে কথা বলতে চাইল। ওর বাবা জানালো “আপনার বায়োডাটা আমরা দেখেছি, এখন কিভাবে আগানো যায়।”
মাহাদী বৃষ্টির ছবি ও বায়োডাটা ও ছবি পাঠাতে বলল। যা দেখিয়ে সে তার বাবা মা’র সাথে কথা বলবে।
প্রতিদিনই পূর্ব আকাশে রাতকে বিলিন করে দিয়ে দিনের আগমনে ভোরের সূর্য হাসে। আবার একইভাবে রাতের আগমনে সূর্য পশ্চিম আকাশে অস্ত যায়। এভাবেই একের পর এক ছোট ছোট ঘটনা চলতে থাকে, দিন পেরুতে থাকে, আর অন্য দশটা ভালোবাসার গল্পের সাথে অমিল রেখে গড়ে উঠতে থাকে ওদের ভালোবাসা। ওদের কাছে ভালোবাসা তিন প্রকার। যথা- ভালোবাসা, ভালোবাসা এবং ভালোবাসা। ভালোবাসার তিন কাল। ভালোবেসেছি, ভালোবাসি এবং ভালো বাসব। শেষ খবর কি, কিইবা ওদের পরিণতি তা আজও জানা যায়নি।
©somewhere in net ltd.