| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যুদ্ধাপরাধ নিঃসন্দেহে যে কোন দেশের জন্য একটি স্পর্শকাতর বিষয়। আমদের বাংলাদেশেও তাই। আর এই যুদ্ধাপরাধ নিয়ে রয়েছে নানা মুনির নানা মত। একেক জন একেক ভাবে চিন্তা করছে, ব্যাখ্যা করছে। এক কথায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
প্রথমেই যে কথাটা না বললেই নয় তা হল কাদের মোল্লা দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। যার প্রেক্ষিতে তার যাবজ্জীবন কারাদন্ড হয়ছে। এমতবস্থায় যেহেতু তিনি মহামান্য আদালতের কাছে দোষী সাব্যস্ত হয়ে শাস্তির সিদ্ধান্ত পেয়েছেন সেহেতু বাদী বা রাষ্ট্র পক্ষ আপিল করে সিদ্ধান্ত পাল্টাবে সে সুযোগ নেই।
১. একজন জানালেন তার বাড়ি কাদের মোল্লার বাড়ির কাছাকাছি। তিনি নাকি তাকে কাছ থেকে দেখেছেন। এমনকি তিনি কাদের মোল্লার ছাফাই গাচ্ছেন।
২. অপর একজন জানালেন তিনিও নাকি কাদের মোল্লা সম্পর্কে জানেন। কাদের মোল্লা যেভাবে জবাই করে মানুষ হত্যা করেছে, ধর্ষণ করেছে, লুট করেছে তার তিনি প্রত্যক্ষদর্শী।
৩. অন্য একজন জানালেন কাদের মোল্লা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকাকালীন জাসদের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন এবং তিনি ১৯৮৯ এর পর থেকে জামায়াতে ইসলামীর সাথে যুক্ত হন।
সবই নিছক শোনা কথা। সবাই হয়ত কোথাও শুনেছে অথবা কোথাও পড়েছে বা দেখেছে। পত্রিকাসহ অন্যান্য মিডিয়াগুলোও একেকটি একেক ভাবে ঘটনার ব্যাখ্যা দিচ্ছে বা বিশ্লেষণ করছে। সেগুলোই এক মানুষের সাথে অন্য মানুষের মতবেদ তৈরি করছে। বলার সময় তারা সেই মিডিয়াকে রেফারেন্স টানছে। অপরকে বলার সময় একটু বাড়িয়ে নচেৎ রস লাগিয়ে বলছে এতে মুখ থেকে মুখে ঘটনার রুপবদল হচ্ছে।
আমরা যারা তরুণ তারা তো মুক্তিযুদ্ধ দেখিনি। দেখিনি হানাদার বাহিনীদের নির্মমতা। দেখিনি রাজাকারদের পৈশাচিকতা। আমরা কোনটা বিশ্বাস করব?
একজনকে প্রশ্ন করলাম, বিচারের রায়ের ব্যাপারে আপনার মন্তব্য কি? সে বলল, আমি অসন্তুষ্ট। আমি চেয়েছিলাম যাতে ফাঁসি হয়। আমি তার কাছে জানতে চাইলাম কেন ফাঁসি চান? সে বলল, সবাই চায় তাই আমিও চাই।
কেউ কেউ বলছেন কাদের রাজাকের প্রতি বাচ্চু রাজাকারের তুলনায় পক্ষপাতিত্ব হয়েছে। সবাই নিশ্চই জানেন, পারিবারিক, সামাজিক, রাষ্ট্রীয় বিচারের ক্ষেত্রে দোষী ব্যক্তি যদি অনুপস্থিত থাকে তবে শাস্তি অপেক্ষাকৃত বেশি হয়। ঠিক তাই হয়েছে বাচ্চু রাজাকারের ক্ষেত্রে।
অনেকে বলছেন জামায়াত ইসলামীর পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালের বিচারকদের ঘুষ খাওয়নো হয়েছে। হয়ত ঠিক হয়ত মোটেও না। তাহলে কি তারা দল বা পদ বা সম্মানকে অর্থের কাছে জলাঞ্জলী দিলেন?
আবার কেউ বলছেন সরকারের এখানে সুক্ষ্ম চাল রয়েছে। যে সরকারের নির্বাচন মেনিফেস্টোতে প্রথম ও প্রধান পয়েন্ট হল যুদ্ধ অপরাধীদের বিচার করা। তাদের আর কি সুক্ষ্ম চাল থাকতে পারে?
শাহাবাগ চত্ত্বরে অনেকে ফাঁসির দাবীতে আন্দোলন করছে, মানব বন্ধন করছে। এ দেশে সবই সম্ভব। যদিও বাদী পক্ষের আপিলের সুযোগ নেই তবুও নতুন কোন পদ্ধতি বা রাস্তা হয়ত ঠিকই বেরিয়ে যাবে। সাধারণ মানুষের ব্যানারে হোক বা কোন নির্দিষ্ট দলের ব্যানারেই হোক না কেন এ প্রতিবাদ বা দাবীর মাধ্যমে দুটো উল্লেখযোগ্য বিষয় ফুটে উঠেছে।
১. ট্রাইব্যুনাল গঠন বা ট্র্যাইব্যুনালের বিচারকদের পছন্দ হয়নি কারণ তারা ফাঁসির আদেশ দেয়নি।
২. বিচার প্রত্যাখ্যান করে আদালতকে অবমাননা করছি।
বিচারের রায় নিশ্চই কারো মনগড়া হবে, এমনটি ভাবা কখনই ঠিক হবে না। আমরা যদি ট্রাইব্যুনাল গঠন বা ট্রাইব্যুনালের নিয়োগ প্রাপ্ত বিচারকদের পছন্দই না করি তবে কেন গঠন বা নিয়োগের সময় আন্দোলন বা প্রতিবাদ করিনি? হয়ত বলতে পারেন, আমরা তো বিচারকদের সমালোচনা করছি না বরং রায় নিয়ে করছি যেমনটি একজন আমাকে বলেছেন, বিচারের সিদ্ধান্তের পর রায় নিয়ে ভিন্ন মত পোষণ করা যায় কিন্তু বিচারক কে নিয়ে কোন আলোচনা নয়। এখন কথা হল রায় নিয়া সমালোচনা কি বিচারক নিয়ে সমালোচনার নামান্তর নয়? এখন আমরা যে প্রতিবাদ করছি তাতে প্রমান হচ্ছে আমরা বিচার মানিনা, আমাদের বিচার ব্যবস্থার দরকার নেই, আমরা নিজেরাই সিদ্ধান্ত দেব। যা মহামান্য আদালতকে অবমাননা করার শামিল। আমাদের কি তবে বিচার ব্যবস্থার প্রতি আস্থা বা শ্রদ্ধাবোধ নেই? তা না হলে জনগন আদালতের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে কি করে? অবাক লাগে আমরা বিচারের জন্য গঠিত ট্রাইব্যুনালকে সায় দিলাম আর এখন বিচার মনঃপুত হয়নি বলে আদালত অবমাননার দুঃসাহস দেখাচ্ছি। যদিও বার অ্যাসোসিয়েশনের একজন বিশেষজ্ঞ টক শোতে বলেছেন, বিচার প্রক্রিয়া চলাকালীন কোন মন্তব্য করার সুযোগ না থাকলেও বিচারের রায়ের পর সমালোচনা করা যায় এতে আদালত অবমাননা হবে না। এ বিষয়টিতেও তার সাথে কিছু কিছু বিশেষজ্ঞের মতবেদ রয়েছে। আবার এ বিষয়ে সরকারি দল এবং বিরোধী দলের কিছু কিছু নেতার বিভ্রান্তিমুলক বক্তব্যে পরিস্থিতি ঘোলাটে হচ্ছে।
এর শেষ কোথায়?
আমি কোন বিশ্লেষক নই। এমন স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে বিশ্লেষণ করার দুঃসাহসও আমার নেই। শুধু মাত্র আমার মতামত তুলে ধরলাম। মানুষ মাত্রই ভুল হয় আর কোন নির্দিষ্ট পক্ষ সমর্থন করতে পারলাম না বলে আমার ধারনায়, লেখায় ভুল হতেই পারে তাই দুঃখিত। অনুগ্রহপূর্বক ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখলে খুশি হব এবং আপনার মুল্যবান মন্তব্য বা দিকনির্দেশনাটি দিতে ভুল করবেন না।
©somewhere in net ltd.
১|
০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:৪৮
আবদুল্লাহ আল জাফর মালেক বলেছেন: শেষ নাই। যতক্ষণ ফাঁসী না হয় ততক্ষণ চলবে।