![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
. ♥ ♥ ♥ ♥ I Treat My life as a Sea, Heart as Seashore and Friends like waves….. It never matters how many Waves are there?...... What matters is which one Touches the Seashore..... ♥ ♥
আমার পরিচিত এক লোক সেদিন গল্প করছে, তার পরিচিত এক পতিতা নাকি খুউব খারাপ। তার নামে নানা বাজে বাজে কথা বলছে। আমি বললাম- তুমি ওর কাছে যাওনা? সে বল্লো-আগে যেতাম, এখন সে আমায় চায় না। ও তাহলে এজন্যেই তুমি ওর বদনাম করে বেড়াচ্ছো? সে বল্লো- না। ঐ পতিতা খুউব লোভী। সে একেক সময় একেক জনের সাথে সময় কাটায় আর একেকটা বাড়ি করে নেয়। লোকটার কাছ থেকে অনেক কিছু হাতিয়ে নেওয়ার পর তাকে ছেড়ে অন্যকে বেছে নেয়। আমি বললাম- সে তো ঠিক কাজই করছে। তোমাদের মত বোকা লোকগুলো কাড়ি কাড়ি টাকা দিয়ে দেশ ও সমাজের উন্নয়ন করছো না বরং বাজে খরচাই বেশী করছ। আর ওরা তোমাদের টাকা নিয়ে যে বাড়ি করছে, এতে এলাকার উন্নয়ন হচ্ছে, এলাকাতে দুই পাঁচটা নতুন বাড়ি হচ্ছে, এলাকার সৌন্দর্য বাড়ছে। তোমাদের মত বলদ ঠকায়ে তারা যে অর্থ আয় করছে, সেটাই ঠিক আছে। অন্যের দোষ ধরার আগে নিজে ঠিক হও। নিজের পক্ষে যা ভাল করার, সেটাই করো আগে।
আমরা যত গান শুনি, ততো কি গাই? যত খারাপ কথা শুনি, ততো কি খারাপ হই? যখন শুনি কেউ কোন খারাপ কাজ করছে, মনে হয়, আমি ওর জায়গায় হলে অমন করতাম না। কিন্তু ওর জায়গায় গিইয়ে দেখুন, আপনি হয়ত ওর চেয়ে অনেক খারাপ কিছু করতেন। পরিস্থিতি মানুষকে দিয়ে কখন কি করিয়ে নেয়, সেটাই বোঝা মুশকিল। আমরা খারাপ বিষয়গুলোর পিছনে জীবনের অনেক সময় দেই কিন্তু ভাল কিছুর জন্য জীবনে খুব কম সময়ই খরচা করি। তাহলে আমরা কি করে ঠিক ভাবে ভাল হবো? আমাদের ভালর ভালটুকু তো মন্দের ম তেই খেয়ে নেয়।
আমাদের সাধারন শিক্ষাব্যবস্থার পেছনে আমরা জীবনের অনেক সময় ব্যবহার করি, কেউ কোন কাজ শিখলে সেখানে সময় ব্যয় করে, আমরা নানা স্থানে নানান শিক্ষার পেছনে আমাদের সময়কে ব্যয় করে কে কতটুকু শিখি? আর পার্থিব বিষয়াবলী বাদে ধর্ম বা আধ্যাতিকতার পেছনে আমরা কতটা সময় দিই!!! এই স্বল্প সময়ে আমরা কতটুকুই শিখি? এজন্যেই অর্থাৎ ভালর শিক্ষার পেছনে কম সময় দেওয়ার কারনে আমরা কম শিখি- মন্দ কাজ করি আর ভুলপথে নিমজ্জিত হই।
আমরা যে যতটুকু ভাল কাজ করছি, যে যতটুকু মন্দ কাজ করছি, সবের বিচার হচ্ছে- হবে। কেবল আমাদেরই নয়, পৃথিবীতে একটা ছাগল যদি বিনা দোষে অন্য ছাগলকে গুঁতো দেয়, সেটারও বিচার হবে। কেবল মানুষ ও জ্বীনই নয়, সবকিছুই বিচারের অধীন। আমাদের যৌবন সবচে কঠোর বিচারের আওতায়, আমাদের সম্পদ আর সন্তানের বিচার আরো কঠিন কিন্তু আমরা কি করছি! !! আমাদের সন্তানকে সঠিক পথে পরিচালিত করছি? যৌবন ও সম্পদকে সঠিক পথে ব্যয় করছি? সময়ের হিসেব আরো অনেক কঠিন... আর এই সময়ের জন্যেই আমাদের যত দূর্ভোগ ও সুফলভোগ। লক্ষ্য করুন আমাদের সারা দেশে বিশেষ করে শহরগুলোতে সুস্থ বিনোদনের উপায় ও উপকরন এতোটাই অপ্রতুল তাতে করে যার যার নিজ দায়িত্বে আমাদের নিজেদেরকেই সচেতন হতে হবে, নিজেদেরকেই নিজের সঠিক শিক্ষার ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে ও সুস্থ বিনোদনের উপায় খুঁজে নিতে হবে।
আমরা অনেক সময় ক্ষমা চাই, দোয়া করি; ক্ষমা হয় কিনা, সেটা জানা না হলেও লক্ষ্য করবেন, অনেক সময় দোয়া কবুল হয় না। কেন হয় না! আমরা কি লক্ষ্য করি? অনেক মুসলমান আছেন, যারা বিশ্বাস করেন দোয়া করে কোন লাভ হয় না। অনেকে মনে করেন, এতে কেবল মনোবলই বাড়ে। এরা মোটেও মুসলমান নয়। অনেক মুসলমানেরাই যারা ঠিকমত নিয়্যত ও নিয়মের মাধ্যমে গোছল করেন না, অনেকেই নিয়মিত পুরুষ স্ত্রী আলাদা নিয়মে লজ্জাস্থানের লোম পরিস্কার করেন না। একথা ঠিক যে, আমরা কেউই পুরাপুরি ভাল নই, আমরা ভালোও আবার মন্দও তবু আমরা অনেকে অনেক খারাপ, সেটা অনেকেই মনে করিনা। অনেকেই নিয়মমত নখ কাটিনা। প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে যে নিয়ম, সেটাও পালন করিনা। আর কিছু না হোক, সর্বাবস্থায় সহযে আল্লাহ ও রাসূলের স্মরন করিনা আমরা অনেকেই অথচ আমাদের দোয়া কবুল না হলে আমরা আল্লাহর উপর অভিমান করি কিন্তু অভিমান তার উপরেই করা যায়, যার উপর অধিকার রয়েছে, যাকে ভালবাসি। আমাদের সেই ভালবাসার নমুনা কৈ? প্রেমিকার জন্য বৃষ্টিতে ভিজি, ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করি, রোদে পুড়ি তার পরেই তো অভিমান জন্মায় কিন্তু এক্ষেত্রে আমরা সহযেই সবকিছু পেতে চাই। আমাদের মেয়েদের মধ্যে ঘরে থেকে অনেক ধর্ম ও জ্ঞান সাধনার সুযোগ থাকলেও, এরাও ধর্ম জ্ঞানে কতটুকু কর্মতৎপর? সবারই মনে যেন আধুনিকতার ছোঁয়া। নারীরা পুরুষের সাজ নিয়েছে অনেক আগেই আর ইদানীং পুরুষেরাও নারীদের মত পোষাক ও অলঙ্কার পরছে। পোষাক, পরিচ্ছদ দেখে অনেককেই চেনা দায় হয় না কেবল দৈহিক বৈশিষ্টের কারনে। বর্তমান মেয়েদের পোষাকের তিনটি স্পেশাল বৈশিষ্ট হলো- হচ্ছে পাতলা, সংক্ষিপ্ত ও লাগোয়া। আমাদের নারী ও পুরুষ উভয়েরই বেশভূষা পরিবর্তন এক বিরাট হুমকির ইঙ্গিত দিচ্ছে। পর্দা কি, আমরা সেটা ঠিকমত জানিইনা।
পর্দার আলোচনার জন্য বহুত মোটা মোটা বই রয়েছে, যেগুলো আলচনা করতে গেলে আরো করেকটা বই লেখা হয়ে যাবে। মূল কথা হলো- পুরুষ ও নারীর শালীন পোষাকই তার পর্দা। পর্দা আমাদের দেহের, চোখের আর অন্তরের। আমরা যদি আমাদের চোখে আর অন্তরের পর্দাকেই শক্তিশালী করতে পারি তাহলে পৃথিবীতে যত অন্যায় আর অশ্লীল আছে, সব পর্দার ওপারেই হয়ে যাবে।
মেয়েরা ফুলের মত সোন্দর্য ও সৌরভ বিলিয়ে চলেছে আর আমরা পুরুষেরা মৌমাছিদের মত মধু ভক্ষন করছি। ভালও লাগে মন্দও লাগে। এটা কি আমাদের পর্দা রক্ষা হচ্ছে? আর কিছু না হোক দৃষ্টি, ভাবনা আর নিজে নিজে অপকর্ম করছি আমরা অনেকেই। মুখে বড় বড় কথা কই আমরা সবাই, জন্ম থেকে দেশ ও প্রকৃতির কাছ থেকে নিচ্ছি অনেক কিছুই। এই অবহেলিত দেশের জন্য কে কি করছি? কখনো কি করেছি? আমার পাশের মানুষ, প্রকৃতির ও অন্যান্য জীবকূলের জন্য কি প্রতিদান ও কর্তব্য পালন করছি? পানি পান করার প্রায় দশ বারোটা নিয়ম কি মানছি? পানি ত্যাগ করার সময় কি বসে নিচ্ছি, যাদের বাধ্য হয়ে বসতে হয়, তারাও কি কুলুপ বা পানি ব্যবহার করছি? আমরা এক শ্রেনী ব্যপকারে মাদকের ও নানা মন্দের নেশা করছি, অন্য বড় একটা শ্রেনী বিশেষত কামের নেশায় মত্ত। ভাল যারা আছে, তারা তো চিরকালই ভাল। আমি আমার মত মন্দদের কথা বলছি। প্রতিবার খাওয়ার সময় আগে পরে ও মাঝে, আমরা কতজন দোয়া পড়ি, আমাদের পোষাক পরিপূর্নরূপে পাক করার নিয়ম অনেকেই জানেন না আর মানেন খুউব কম মানুষ। ঢাকা বাড়িঘরের কথা বাদ দিলাম, যেসব মেস ব্যাচেলরদের আবাসস্থল সেখানকার পরিবেশ কি রকম হয় লক্ষ্য করুন। আর অগুনিত অনেক বাড়িতেও পানির ব্যবহারে কোন পবীত্রতা নেই। মসজিদে ঢোকা বা বের হওয়ার নিয়ম কজন মানি আর মসজিদে যাই কজন? জামাতে নামাজ পড়তে গিয়ে আমাদের নবাবী অবস্থা, যেখানে কাঁধে কাঁধ লাগিয়ে দাঁড়ানোর কথা, আমরা দাঁড়াই অনেক ফাঁকা হয়ে। যেখানে একাত্ম হতে হবে সবার সাথে সেখানে আমরা সাহেবী ভাব দেখাই। মসজিদে নামাজ পড়ছেন বিশ জন আর নামাজ বাদ দিয়ে মিছিল করে বেড়াচ্ছেন কমপক্ষে একশো থেকে দুইশো জন। পর পর তিন জুম্মা কামাই করেন অনেকেই। খুতবার সময় অনর্গল কথা বলছি। অনেকেই কেবল ঈদের নামাজ পড়েন। এমনো অনেকে আছেন যারা নামাজ দোয়া সহ বিভিন্ন ধর্মীয় বিষয়ে আলোচনার সময় প্রতিটা কথার সাথে অশ্লীল শব্দ বা বাক্য যোগ করে। এরা লক্ষ্য করে না, তারা নিজেরাই নিজেদের প্রতি কত নির্মম! তা এর প্রতিফল এরা নিজেরাও জানেনা। আমাদের পরীক্ষার হলে যখন অতিরিক্ত সময় দেওয়া হয়, আমরা তখন বুঝতে পারি সময়ের কত মূল্য!! আর আমাদের প্রতিরাতে ঘুমানোর পর প্রতিটা নতুন এক একটা দিন দেওয়া হচ্ছে তবু আমরা সেইরকম আগের মতই বা তারচে আরো দুনিয়াবী ব্যস্ততার মাঝেই আমাদের দিনকে অতিবাহিত করছি। আমরা সারা জীবনের লক্ষ লক্ষ প্রয়োজনীয় আর অপ্রয়োজনীয় কাজের মধ্যে, জীবনের অবারিত সময়ের মাঝে কতটুকু আমাদের সৃষ্টিকর্তার স্মরনে ব্যয় করি? পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম ধর্ম ইসলাম পালনের এটাই কি পথ? আল্লাহকে কি এগুলোর সবই মেনে নিতে বলছেন? তাহলে তিনি আমাদের দোয়া কিভাবে কবুল করবেন? কেন করবেন? আমি আপনি তাঁর কথা শুনবোনা, তিনি আমাদের কথা কেন শুনবেন?
শিতের রাত্রে কনসার্ট, কুয়াশা ভরা টপ টপ করে ঝরছে, শিশির পড়া আছাড় খাওয়া মাঠেও অনেক রাত পর্যন্ত দারুন ভীড় অথচ ধর্মীয় মাহফিলে পাটি পেতে দেওয়া, সামিয়ানা টাঙ্গায়ে দেওয়া, খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়, পুরুষ মহিলাদের আলাদা আলাদা যায়গায় বসার সুব্যবস্থা করে দেওয়া হয়, সেখানে মানুষের জমজমাট নেই।
কোরয়ান তেলাওয়াত সর্বোত্তম দোয়া যদি সেটা বুঝে তেলাওয়াত করা হয় কিন্তু বুঝে করে কজন!!! পৃথিবীতে কোরয়ানই একমাত্র পুস্তক, যা লক্ষ লক্ষ মানুষেরা মুখস্ত করছে, এমনকি কোরয়ানের চেয়ে বেশী লেখা হাদীস সমূহকেও কত মানুষ মুখস্ত করে নিচ্ছে, অথচ অনেকেই এর মর্ম বুঝছেনা। এক মুসলিমের দেওয়া সালাম অন্য মুসলিমের জন্য সবচে কল্যানকর দোয়া যদি সেটা মন থেকে দেওয়া হয়। আমরা জানি, দুরূদ ব্যতীত দোয়া আসমানের স্তর পার হতে পারেনা কিন্তু আমরা দোয়ার শেষে দুরূদ পড়ি কজন!!! আমাদের দোয়া কবুল হবে কেমনে? পৃথিবীতে যদি মুসলমানেরা সঠিকভাবে যাকাত দিত, তাহলে পৃথিবীতে কোথাও এইরকম দারীদ্রতা থাকতো না। অথচ ঠিকভাবে যাকাত দেওয়ার নিয়মই অনেক মুসলমানেরা জানেননা। অনেকে মানেন না। আমরা অনেকেই নামাজ পড়ি, সেটা কার কতটুকু শুদ্ধ হয় বা কতটুকু কবুল হয়, সেটা আমাদের কারোরই বোধগম্য নয় তবে আমাদের প্রার্থনাগুলোর বাহ্যিক অবস্থাগুলো যতটা সম্ভব শুদ্ধ করা দরকার। অনেক মানুষ সাধারনের চলার পথে নামাজে দাঁড়িয়ে যান। লক্ষ্য করলে দেখা যায় অন্যের অসুবিধা সৃষ্টি করে অনেক মুসল্লি জুতার বাক্সের সামনে খুউব নিমগ্ন হয়ে নামাজ পড়ছেন। বোকার মত প্রার্থনা না করে, আমার কাজে অন্যের সমস্যা হচ্ছে কি না!! সেটা বুঝতে হবে। এটাই আদর্শ।
আমরা অনেক সময় মিথ্যেই সন্দেহ বাজে অভ্যাস ও ভুল বিশ্বাসে নিমজ্জিত হই। লক্ষ্য করবেন সন্দেহ, অভ্যাস ও বিশ্বাস এই তিনই ভয়ানক জিনিস। যেকোন কিছুতেই এই তিনের ব্যপারে আমাদের সাবধান থাকা উচিত।
আমরা যারা মন্দতে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছি, এসব কথা তাদের ভাল লাগবে না। ঠিক ঐ বদ্ধ ঘরটার মত, যে ঘর তামাকের ধোঁয়াতে ভরপুর, সেখানে আতর ছিটিয়ে দিয়ে কি লাভ? সেখানে কেবল তামাকের গন্ধই পাওয়া যাবে। কিন্তু সাধারন একটা ঘরে এক ফোঁটা আতর দিলেও ঘ্রান ছড়িয়ে পড়ে আর মৌ মৌ করে ওঠে। আমাদের অন্তর তামাকের ধোঁয়াতে পরিপূর্ন। সত্য কথাগুলো আমাদের হয়ত ভাল লাগেনা। তাই আমরা আগে নিজেকে চেনার চেষ্টা করবো। নিজেদের চিনব, তাহলেই বুঝতে পারব কেন আমার দোয়া কবুল হচ্ছে না। আমাদের সঠিক পথে ফিরিয়ে আনার দ্বায়িত্ব আমাদের নিজেদেরই। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ধর্ম ইসলাম বলে আত্মশুদ্ধি করতে। সক্রেটিস বলেছেন নো দাইসেলফ, রবিন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছেন, আপনারে আপনি চিনে নে, কোয়ান্টাম বলছে, নিজেকে জানো; হিন্দুরা বলেন, আত্মনং সিদ্ধি; খ্রিষ্টানেরা বলে; ইয়াহুদিরা বলে; একই কথা; লালন বলেছেন, আরশীনগর অর্থাৎ নিজের অন্তর খোঁজার কথা, নজরুল নিজেকে চেনার কথা বলেছেন, আমি সহসা চিনেছি আমারে, আমার খুলিয়া গিয়াছে সব বাধ। মহাত্মা গান্দীজি নিজেকে চেনার অর্থাৎ সাবলম্বনের গুরুত্ব দিয়েছেন।... সবাই একই কথা বলছে। সবাই সেটাই বলছে, যেটা আমাদের আদি পিতা আদম বলেছিলেন। যদি আপনি নিজেকে আবিস্কার করতে পারেন, তখন সত্য ধর্ম, সত্য মত আপনার কাছে পরিস্কার হয়ে যাবে।
বিভিন্ন বিষয়ে আমাদের সচেতনতা আনতে হবে, বুঝতি হবে। গুরুত্বপূর্ন বিষয় সমূহের গুরুত্ব উপলব্ধি ও অনুধাবন করতে হবে। জন্ম মৃত্যু আর বিয়ে এই তিনের গুরুত্ব আমাদের সকলের জীবনেই অনেক গুরুত্বপূর্ন। এই তিন বিষয়েই সচেতন থাকতে হবে সকলকে। তাছাড়া তিনের গুরুত্ব অনেক। লক্ষ্য করুন, তিন কাল, শিশুকাল, যৌবনকাল, বৃদ্ধকাল। জীবনের আগের কাল, পরকাল আর জীবনের সময়কাল। তিন অবস্থায় প্রায় সবকিছুই- কঠিন, তরল, বায়বীয়। তিন জিনিসেই মানুষের পরিচিতি- খাওয়া, ঘুম আর বাথ্রুম (মলমূত্র)। কথায় বলে- জন, জামাই আর ভাগ্না; এই তিন নাকি কখনো আপন হয়না। তিন জিনিস সহ্য করতে কষ্ট বেশী, এগুলো হলো- রোগের মধ্যে কাশ, কাজের মধ্যে চাষ আর ভাই বন্ধুর দেওয়া বাঁশ। মানুষ তিন প্রকার- পুরুষ, নারী ও হিজড়া। ভাল মানুষ, মন্দ মানুষ আর ভালমন্দ। মনের তিন স্তর- সচেতন, অবচেতন ও অচেতন বা অতিচেতন। প্রকৃতিরও তিন স্তর- স্থল, জল আর শূন্য। শুন্যেও আমরা তিন স্তর পাই মধ্যিখানে বায়ুশূন্য। পানির স্তরও তিনভাগে বিভক্ত। যথা- এপিপেলাজিক, মেসোপেলাজিক ও ব্যাথিপেলাজিক স্তর। যাদের স্তর যথাক্রমে ছয়শত পঞ্চাশ ফুট পর্যন্ত, এরপর তেত্রিশ শত ফুট পর্যন্ত ও ব্যাথিপেলাজিক স্তর তেত্রিশ শত ফুটের নীচে অজানা পর্যন্ত। সংসারে বাবাদেরকে তিনটি বিষয় লক্ষ্য রাখা জরুরী। পুত্র নষ্ট হাটে, কন্যা নষ্ট ডাটে আর বৌ নষ্ট হয় ঘাটে। পৃথিবীতে তিন বাজী- মদবাজী, মাগীবাজী আর জুয়াবাজী এর তেজস্ক্রীয়তায় মানুষ উন্মাদ পর্যন্ত হয়ে যায়। তিনপথে আমাদের প্রচ্চুর শক্তির অপচয় হয়। মলের সাথে আম, সর্দি কাশির কফ আর বীর্যক্ষরন। রাত, চাঁদ আর অন্ধকার আমাদের অনুভুতির এক বিরাট অংশকে নিয়ন্ত্রন করে।
মন, মস্তিস্ক ও দেহের উপর বেশী প্রেসার নেবেন না, এই তিন ঠান্ডা থাকা মানেই সব ঠিক আছে। যাই হোক, যতটা সম্ভব জেনে, সবকিছুর গুরুত্ব অনুধাবন করার যোগ্যতা অর্জন করে নিজেকে সুপথে পরিচালিত মানব জন্মের স্বার্থকতা।
আমরা যা কিছুই করিনা কেন, ক্ষমা চেয়ে যথাসাধ্য ভাল কিছু করার চেষ্টা করা উচিৎ। আমার দুঃখে যদি কেউ নাই কাঁদলো, তাহলে আমি কিসের মানুষ? প্রত্যেকটি সচেতন মানুষের এমন কিছু করা উচিৎ যাতে মৃত্যুর পরেও মানুষ তাকে সন্মানের সাথে স্মরন করে। আর এজন্য যে যত ছোটবেলা থেকে শুরু করবে,সে তত ভাল করবে। আমরা সচেতন হলে আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম আর সুখী ও সমৃদ্ধশালী হতে পারবে। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে দারিদ্রতা, কুশিক্ষা, বর্তমানের সহিংসতা থেকে মুক্ত করে, সুন্দর একটা দেশ দেওয়ার চেষ্টা করা এ যুগের মুক্তিযুদ্ধ, আমাদের সচেতনতা একটি মুক্তিযুদ্ধ। আমি ঘুষ না দিলে আমার অফিসার ঘুষ খেতে পারেনা, আমি চুরি না করলে আমার প্রতিবেশী নিরাপদ থাকে। আমি, একা আমি নই, আমি বাংলাদেশের বিশ কোটি মানুষ। সবাইকেই সচেতন হতে হবে। আমাদের সবাইকে এই যুদ্ধে অংশগ্রহন করতে হবে। লক্ষ্য করবেন, এই দেশে বিপুল জনসংখ্যার যে হারে বাড়ছে সেই হারে বাড়ছেনা পুলিশ, বাড়ছেনা চাকরি, বাড়ছেনা আইনশৃংখলা বাহিনী। বিপুল পরিমান অপরাধপ্রিয় জনগোষ্ঠী সামলানো কোন সরকারের পক্ষেই সম্ভব নয়, যদি আমরা নিজেরা সচেতন হই, তবেই আমাদের মুক্তি। নইলে বিপদ। খুব খেয়াল, সামনে দেয়াল, পেছনে শেয়াল।
আবারো লক্ষ্য করুন, পৃথিবীতে সব কিছু, সব সৃষ্টিই নিয়মের মধ্যে রয়েছে গরু ঘাস রেখে মাছ খায়না, বিড়াল মাছ রেখে ঘাস খায়না, প্রত্যেক প্রানীরই চাহিদা ও রিজিক নির্দিষ্ট। লক্ষ্য করবেন পশু পাখি ইতর প্রানীর জোড়াও নির্দিষ্ট। মানুষের সাথে থেকে থেকে শহরের কুকুর, কবুতরদের মধ্যে চারিত্রিক দোষ দেখা যায়। মিথু শাহরিয়ারের কবিতার মত নিয়ম ভাঙ্গার মত আনন্দ পৃথিবীতে নেই, তাই আমরা মানুষেরা কেবল নিয়ম ভাংছি। অপরদিকে লক্ষ করুন সমগ্র সৃষ্টজগত নিয়ম মেনে চলছে। আমাদের চরম সৌভাগ্য যে মহান আল্লাহ আমাদেরকে জ্ঞান দিয়েছেন। আমরা বুঝি কোনটা ভাল, আর কোন টা মন্দ!!! পৃথিবীতে কট্টর নাস্তিকগন বাদে সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ত সকলেই মানেন। ধর্ম, বর্ন, গোত্র বিশেষে এক এক জনের ধারনা আলাদা হলেও সকলে লক্ষ্য করবেন, সামান্য এক ফোঁটা তরল, যার মধ্যে দুই শতাধিক হাড়ের জোড়া; রক্ত মাংসের মাঝে আত্মা ও জীবনের নীল নকশা; কেউ বলে আট কুঠুরি নয় দরজা, লালন বলে সাড়ে নয় দরজা এই আমাদের শরীর। শরীরের ভিতরকার আত্মা পৃথিবীতে আসতে চেয়েছিল কিনা সে বিষয়ে মত পার্থক্য থাকলেও স্বাভাবিকভাবে আত্মারা পৃথিবী ছেড়ে যেতে চায়না এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। আত্মারা পৃথিবীতে ইচ্ছা করে না এলে নিশ্চয় একে পাঠানো হয়েছে। আর যদি কাউকে কোথাও পাঠানো হয়,তাহলে নিশ্চয় কোনো দায়িত্ব থাকে। এবার ভাবুন- আপনার দায়িত্ব কি হতে পারে? কবি আসাদ জামানের মত বলতে হয়, আঁধারের ই যত পথ, কুলোশিত মতামত; মন্দ তা যত, সমাজের অবক্ষয় তত; সব ছাড়িয়ে, দাও হাত বাড়িয়ে, জড়তা কাটিয়ে, ভয় ডর মাড়িয়ে, জ্বালো আরো আলো জ্বালো, দুর করো কালো...।
যেহেতু যিনি আপনাকে পাঠিয়েছেন তিনি মহান, তিনি আপনাকে যেসকল যোগ্যতা দিয়েছেন, ঐগুলো পূরন করাই আপনার দায়িত্ব। মন্দ কোনো কিছুই কারও যোগ্যতা নয় বরং অযোগ্যতা। রাত আছে বলেই দিনের মর্ম যেমন, তেমনি মন্দ রয়েছে বলেই আমরা ভালোকে বুঝতে পারি। ভালোও লাগে মন্দও লাগে, মন্দ কাজ মানুষই করে। অন্যায়ের উর্দ্ধে আমরা কেউই নই তবে সবসময় ভাল থেকে আরও ভালো হওয়ার চেষ্টা করা উত্তম। অনেক সুঠাম শরীর মারামারির জন্য নয়, পরিশ্রমের জন্য; সুন্দর করে কথা বলার যোগ্যতা, আপনার ভন্ডামী করার জন্য নয়, অনেক সুন্দর চেহারা লোক ঠকানোর জন্য নয়, ভালোর পথে মানুষ কে ডাকার জন্য। আপনি ভাবুন আপনাকে কি উদ্দেশ্যে পাঠানো হয়েছে? পৃথিবীটাকে নষ্ট করার জন্য? প্রতিবেশী, আত্মীয়, নিজের ও পরবর্তী প্রজন্মের জন্য আপনার কি কোনোই দায়িত্ব নেই?
একটা স্বপ্নের কথা বলি, এক রাতে ইয়ামিন স্বপ্নে দেখল, সে এমন একটা শহরে এসে পড়েছে, যেখানে এমন অনেক বাড়ি আছে, অসাধারন কিছু বাড়ি, ছাদে একা একা সূর্যাস্ত দেখা, অসাধারন কোন ঘরে রাত্রি জাগরনের ব্যবস্থা ও সূর্যোদয় উপভোগ করার ব্যবস্থাও অসাধারন। দিনে বা রাতে যখনই সে ওই ঘর থেকে বাইরে বের হলো, সে আরো হতবাক হলো। শহরটির চারিপাশে পাহাড়, নদী, দূরে সমূদ্র, সুউচ্চ মসজিদের মিনার, গির্জার স্তম্ভ, স্বর্নালী বোদ্ধ মঠ, অতিকায় মন্দির নানা পবীত্র অনুভুতি দিয়ে শহরটা সাজানো। রাস্তার দুই ধার দিয়েই নানা রকম গাছ গাছালী ফুল, ফল, ঔষধি সহ নানা বৃক্ষরাজীতে ভরপুর। গাছগুলোর ডালে ডালে বিভিন্ন সাইজের মাটির হাঁড়ি দিয়ে রাখা, সেখানে নানা রকম পাখি ও কাঠবিড়ালী, রক্তচোষা সহ রঙ বেরঙ্গের নানা সরিসৃপের বসবাস। বড় বড় গাছগুলোতে পথিকদের বিশ্রামের জন্য উঁচু মাচা করা, যা দৃষ্টি নন্দন ও আরামদায়কও। সেখানে একটা লোকের বাড়ির সামনেই রাস্তার পাশে উত্তম রূপে ঘেরা একটি আধুনিক সুইমিঙ্গপুলও আছে। ভুতুড়ে, পবীত্র বা আধ্যাত্মিক অনুভূতির জন্য সেখানে পাহাড়ের চূড়ায় রাত্রিয়াপনের সুব্যবস্থাও করেছে স্থানীয় কতিপয় লোক। সেখানকার মানুষগুলো সর্বপরি খুব ভাল। অমায়িক তাদের আচরন, পুরো শহরটাই যেন একটা বিচ্ছিন্ন হোটেল। সেখানে দর্শনার্থীরা আসছে, থাকছে, আনন্দ করছে। স্থানীয়রা সবাই তাদের সাহায্য করছে, নির্দিষ্ট অর্থের বিনিময়ে থাকা খাওয়া মনোরঞ্জনসহ অন্যান্য সুবিধাদি প্রদান করছে। সেখানে কোন পুলিশ নেই, প্রশাসনের দায়িত্ব নেই কিন্তু রঙ বেরঙ্গের পোষাক পরিহিত একই রকমের কিছু মানুষ জংলীদের মত সেজে সারা শহর ঘোরা ঘুরি করছে। এদের এই বেশ ভুষার কারন, যাতে অপরিচিতরা সহযেই তাদের চিনতে পারে। এরা বিচ্ছিন্ন হোটেল মালিকদের বেতনে ও দর্শনার্থীদের দেওয়া বকশিসের বিনিময়ে কাজ করে। সেখানে একটা সুন্দর নিয়ম আছে, কেউ কখনো গ্যঞ্জাম করতে পারবেনা। করলেই উভয়পক্ষ আটক। বাদী ও বিবাদী উভয়কেই মামলার খরচ দিতে হয়। স্বল্প সময়ে চুলচেরা বিচার বিশ্লেষনে মূল দোষীকে সকলের সামনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হয়। ফলে অপরাধের হার শূন্যের কোঠায়। কেউ কারো নামে নালিশ করেনা, তাই পুলিশ ও আসেনা; যদি কোন মনোমালিন্য সৃষ্টি হয়, বাদী ও বিবাদী নিজেরাই মিটিয়ে ফ্যালে। রাস্তাঘাট সহ স্থাপনা জনিত সকল কাজ ও আন্দোলন স্থানীয় দিন মজুরেরা ও জনগনেরাই করে থাকে। নিজেদের এলাকাকে সাজাতে ও সুন্দর রাখতে তারা বদ্ধ পরিকর। সবাই সেখানে নিরহংকারী হতে বাধ্য। তবে ধনী দরীদ্র সহ নানাবিধ বৈষম্য তো থাকবেই কিন্তু তারা এক ও অভিন্নরূপে মেলামেশা করে। ভিক্ষুকেরা সবখানে নয়, কেবল মাত্র যেখানে মানুষ মন্দ কাজ করছে ও নির্বিচারে টাকা উড়াচ্ছে। যেখানে জুয়া, নেশা ও মদের পসার সেখানে অন্ধ, বৃদ্ধ ও বিকলাঙ্গ ভিক্ষুকদের স্থান। এতে মন্দ লোকেদের হৃদয় কোমল হচ্ছে। সকল শ্রেনীর লোক সেখানে সকলকে মর্যাদা দিতে বাধ্য, সেখানে ঐরকমই আইন। একটা বাড়িতে বিরাট এক লাইব্রেরী রয়েছে, যেখান রয়েছে পত্র পত্রিকা ও বিলুপ্তপ্রায় বইয়ের সমন্বয়ে অসীম জ্ঞানের সম্ভার। দর্শনার্থীগন অবসাদ কাটিয়ে নেন সেখানে বসে বই পড়ে অথবা বই নিয়ে চলে যান নদী বা সমূদ্রের পাড়ে অথবা পাহাড়ের চুড়ায়। সেখানে আছে অনেক সুন্দর একটা ঘর, যা এক কবি’র সৃষ্টি। সেখানে রাস্তাঘাটে আমাদের এখানকার মত শব্দঝঙ্কার নেই। মাঝে মাঝেই অনেক উঁচুতে মাইকের মাধ্যমে মনমোহনকারী গান বাজানো হচ্ছে। সময় বিশেষে যখন দূর থেকে আযান ও প্রার্থনার ধ্বনি ভেসে আসে, তখন নিজেকে এতো পবীত্র আর নিস্পাপ মনে হয়, যেন ইচ্ছে করে- এখনি মরে যাই, যেন সব পাপ মোচন হয়ে গিয়েছে। সে শহরে নদীর পাড়ে আর পাহাড়ের চূঁড়ার নির্দিষ্ট বিভিন্ন জায়গায় প্রতিদিনই বিরাট মেলা বসে, মেলায় যাবতীয় সব দর্শকপ্রিয় বিষয়াবলী ও স্থানীয় ও অস্থানীয় ঐতিহ্যের জিনিসপত্র প্রদর্শিত ও বিক্রি হয়। উক্ত অঞ্চলের সাহিত্য ও সংস্কৃতিচর্চা, নৃত্য গীতেরো ব্যবস্থা থাকে মেলায়। ফলে এলাকার অনেকেরই কাজকর্ম করা লাগেনা, পর্যটকদের গাইড হয়েই ইনকাম করে নেয়। আর নানা রকম ব্যবসার মাধ্যমে নিজেদের উন্নয়ন করতে পারে। শহরের সকলেই নিজেরাই নিজেদের বাড়ির সামনের রাস্তাঘাট ও পরিবেশকে পরিচ্ছন্ন ও দৃষ্টি নন্দন করে রাখে। জলাধারগুলোতে অতি চমৎকার হাঁসের ঝাঁক সর্বোদাই ভেসে বেড়াচ্ছে। কোথাও বাঁশ ঝাড়, কোন অংশে নারিকেলের বাগান, কোথাও আম অথবা লিচু কিংবা কলার ক্ষেত। নির্মল রেললাইন, আশেপাশের দোকান ও স্থাপনাগুলোর অবয়বও অনেক অনেক সুন্দর দৃশ্যমান। অন্য আর কেউ সেখানে সাহায্য করেনি সেখানে এতো সুন্দর একটা পরিবেশ সৃষ্টি করেছে স্থানীয় কিছু মানুষেরাই।
আমাদের দেশে কোথাও কোথাও এমন ব্যবস্থা করা যায়, যেখানে মানুষেরা সয়ংসম্পূর্নভাবে থাকতে পারে। এর অর্থ পুকুরে মাছ, নিজেদের পশু নিজেরা পালন, শস্য উৎপাদন করে অনেকেই স্বনির্ভর হতে পারে। আমরা কি পারিনা ইয়ামিনের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে?
চট্টগ্রাম, বান্দরবন, খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটির সকল স্থান এই সকল ছোট ছোট এলাকাই, এরকম পরিবেশ সৃষ্টির উপযোগী। সমূদ্র বাদ দিলে ফেনী, সিলেট, হবিগঞ্জ, মোলভীবাজার সহ পাহাড়িয়া শহর সমূহও এরকম সৃষ্টির উপযোগী। পাহাড় ও সমূদ্র বাদ দিলে সারা বাংলাদেশের সকল স্থান এরচে আরো সুন্দর করে সাজিয়ে তোলা সম্ভব কেবল প্রয়োজন প্রতি শহরে কেবল দশ জন প্রভাবশালী, অর্থশালী ও সৃষ্টিশীল মানুষের সম্মিলিত উদ্যোগ। এটি বাস্তবায়িত হলে আমরা একদিন সমগ্র বাংলাদেশকে পর্যটনের দেশ হিসেবে বিশ্বের দরবারে প্রতিষ্ঠিত করতে পারব। আমরা চাইলে বাংলাদেশ সন্মন্ধে বিশ্ব বাসীর ধারনা পরিবর্তন করে দিতে পারি। এর জন্য আমাদের সকলকে নিষ্ঠাবান ও পরপোকারী মনোভাব সৃষ্টি করতে হবে। বাঙ্গালীর আসল সত্তাকে লালন ও অন্তরে ধারন করা শিখতে হবে।
আমরা যার যার এলাকাতে, যার যার বাড়ির সামনে, যার যার যতটুকু সামর্থ আছে, তা থেকে নান্দনিক কিছু সৃষ্টি করতে পারি। যাদের বেশী টাকা আছে, যারা ঐক্য সৃষ্টি করতে পারেন, তারা স্থানীয় খেলার মাঠ সংস্কার ও খেলাধূলার সুস্থ পরিবেশ উন্নয়নে কাজ করুন। শিশুদের সুস্থ মানষিকতার বিকাশ, সঠিক নৈতিকতার শিক্ষা প্রদান ও সুস্থ শারীরিক বিনোদনের ব্যবস্থা করা আমাদের সকলের দায়িত্ব।
দুঃখের বিষয়, আমরা তেমন কোন কাজই করছি না বা করারই সুযোগ পাচ্ছিনা। সর্বক্ষেত্রেই বাধা। কতিপয় অসাদু লোক এম এল এম এর নামে আমাদের দেশের জনগোষ্ঠীকে ব্যবসার নামে নানাভাবে কর্মবিমূখ ও লোভী করে তোলার জন্য কতিপয় প্রতিষ্ঠান কাজ করে যাচ্ছে। আমরা ধান্দাবাজীতে অভ্যস্ত হয়ে পড়ছি। হাইব্রীড ও বেশি লাভের নামে আমাদেরকে ক্ষতিকর ফসল চাষের সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে, আমাদের শিল্পসমূহকে উন্নত হতে দেওয়া হচ্ছেনা। কেবল শিল্প, ব্যবসা ও কৃষিক্ষেত্রেই নয়, কেবল দরিদ্ররাই নয়, আধুনিক সমাজে আমাদের উন্নতির ক্ষেত্রগুলো আরো বেশি বাধাগ্রস্থ। কে? কি? এরা কে? এরা কারা? এরা কেন এরকম করছে আমাদের সাথে। এই বিশ্বায়নের যুগে আমরা বাংলাদেশীরা কেন আন্তর্জাতিকভাবে সব কিছু সহজে জানার সুযোগ থেকেও বঞ্চিত? আমাদের গ্রামীন, বাংলালিঙ্ক, এ্যাক্টেল, ছিটিছেল এসকল কোম্পানীরা অপেক্ষাকৃত কম সময়ে, অনেক ঝামেলা ছাড়াই ইন্টারনেট ব্যবহারের লাইন করে দিচ্ছে। আমাদের টি এন টি তে চারমাস ধরে দরখাস্ত ফেলে রেখেও সিব্বির পাচ্ছেনা কোন সুসংবাদ। নেটের স্পীডের কথা আর কি বলি? সবাই জানে। হাসে ও মজার মজার অ্যাড তৈরি হয়। আমরা কি ফানি? আমাদের নেটের বিলও বেশী। সেখানে নানা প্যাকেজের ঝামেলা। সরকারী লাইন চালু করতেও যেমন সমস্যা, বন্ধ করতেও সমস্যা। দুই ক্ষেত্রেই অতিরিক্ত অর্থব্যায়েরও যঠেষ্ট সম্ভাবনা। সময়েরও অনেক অপচয়, অনেক নথিপত্র যোগাড় করা লাগে। নেই কোন কাষ্টমার কেয়ার। নেই অভিজ্ঞ লোক। আর বড় শহরগুলোর আশেপাশে কিছুটা সুবিধা থাকলেও একটু দূরে কিছুই নেই। টেলিফোনের ব্যবহার ক্রমেই কমছে। এটি আমাদের অর্থনীতির জন্যেও খারাপ। এই শিল্পকে আরো উন্নত করে অভিজ্ঞ ও স্মার্ট কর্মচারী নিয়োগ করতে পারলে এই শিল্প আরো উন্নত হবে।
ইন্টারনেটের নূন্যতম জ্ঞানও এদেশের অনেকের জানা উচিত হলেও অজানা। তারপরেও যদি ভাল কোন সুবিধা পাওয়া যেত... কিন্তু সরকার কতৃক ইন্টারনেট ব্যবহারের কলাকৌশল অনেকটাই ফ্রী করে দেওয়া উচিত। আরো স্প্রীড দরকার। আরো জানা দরকার। তবে লিস্টেড সাইটগুলো অফ রাখার ব্যবস্থা থাকা দরকার। মোডেম ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রদান ও ব্যবহারকারীকে আইডেন্টিফাই করার ব্যবস্থা থাকলে ইন্টারনেটের মাধ্যমে অপরাধ হ্রাস পাবে। অনলাইনে আয়ের সুযোগ সুবিধা জানানো দরকার। তবে মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে এতো সুবিধা থাকা উচিত না, এতে সমস্যা বাড়বে। এজন্য কাজ করার জন্য বিশেষ একটা তার সংযোগের স্বল্পমূল্যের প্যাকেজ প্রয়োজন। ইন্টারনেটের মাধ্যমে কিছুটা অপরাধ বৃদ্ধি পেলেও সামাজিক অপরাধীদের সহযেই চিহ্ণিত করা যাবে। আবার অনেক অপরাধের মাত্রা কমবে। অনেক মানুষ কর্ময়ানুরাগীও হবে। আমাদের দেশে সবস্থানেই ক্লোজসার্কিট ক্যামেরার শক্তিশালী প্রয়োগ নিশ্চিত করা জরুরী। এজন্য স্থানীয় সরকার ও প্রতিষ্ঠানদেরকে দায়িত্ব দিতে হবে সেইসাথে মনিটারিং ও কড়াকড়ি তদারকির ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে। জিয়াউর রহমান একটা কথা প্রায় এরকম বলেছিলেন, পৃথিবীতে অন্যান্য জাতিরা বাংলাদেশকে প্রতিষ্ঠিত জাতি হিসেবে স্বীকৃতি দিলেও আমি এদেশকে প্রতিষ্ঠিত হিসেবে স্বীকৃতি দিই না। পরে বলেছিলেন, ওরা যা বলে, সেটাই আমাকে মেনে নিতে হবে। কারন, আমি যা বলি, আমি তা নই; অন্যেরা আমার সম্পর্কে যা বলে, আমি সেটাই। তার এই কথা আজো সত্য রয়ে গেছে। আমরা পুরোপুরি প্রতিষ্ঠিত নই। আমরা আজো অবহেলিত বাংলাদেশী। আমরা আজো কাঁদি, আমাদের কান্না কেউ শোনেনা। তবু এই দেশের মানুষেরাই সর্বোচ্চ সুখে আছে। এই দেশেই ছোট্ট দেশে হাসি কান্না সুখ, দুঃখ, হিংসা, মহত্ব, প্রেম, বিরোধ, ঝগড়া, ভালবাসা, গরীবের কুটির, ধনীর প্রমোদখানা সবকিছুই একদম পাশাপাশি থেকেও সহজ একটা জীবনযাত্রার মাঝে আমরা অনেক সুখেই আছি সবাই। আমরা বাংলাদেশীরা দুঃখ ভুলে কষ্ট করে থাকতে পারি। কেউ আমাদের হাজার ক্ষতি করলে, প্রচুর বাস দিলেও আমরা ভালবেসে আবারও তার কাছে ছুটে যেতে পারি, আমরা ক্ষুধায় কাতর হই, সামনে রাশি রাশি পানি সত্ত্বেও তৃষ্ণায় মরে যেতে পারি। আমরা কফি হাউজের অমর গান- অমলের মত প্রতিভার ধুকে ধুকে মারা যাওয়া দেখতে পারি কিন্তু তার একটা বই ছাপানোর ব্যবস্থা কেউ করে দিতে পারিনা। আমরা দরিদ্র, আমরা অসহায়, আমরা বঞ্চিত বাঞ্চত, আমরা অনেক কিছুর গন্ধ পাই, অনেকে সেটা খেয়ে ফেলার পরে। বাংলাদেশিরা আমরা শিক্ষা পাই না, চিকিৎসা পাই না, খাদ্য বস্ত্র বাসস্থান পাইনা। আমরা অপেক্ষাকৃত ধনীদের কাছে বঞ্চনা পাই, আমাদের কৃষকেরা ফসলের দাম পায় না। বাচ্চারা খেলার মাঠ পায় না, বন রক্ষা পায়না, আমদের নারীরা স্বাধীনতা পায় না, আমাদের নদীগুলো জল পায় না, আমাদের উত্তরবঙ্গে জ্বলে অনল; আমাদের কৃষিজমি নষ্ট হয়, আমরা পাই না আগের মত ফসল। এতসব দুঃখের কথা কইতে মন চায় না, নিজেকে ভিখেরী মনে হলেও বাংলাদেশীরা মোটেও ভিখেরী নয়; আমরা লুন্ঠিত একটা জাতি, আমরা পরিশ্রমী জাতি, আমাদের শরীরের নাম মহাশয়, যা সয়াবা তাহাই সয়। পৃথিবীতে আমাদের এই এতো কষ্ট দুঃখের জীবন, এতো না পাওয়া, এতো পিছিয়ে থাকা এগুলোও আমাদের সয়ে নিতে হচ্ছে।
পৃথিবীতে এই টেকনোজির যুগে আধুনিক দেশের মানুষেরা আমাদেরকে আধুনিকতার সুযোগ সুবিধা থেকে অনেক বঞ্চিত রেখেছে এখনো। পৃথিবীর কাছে কি মনে হয়? আমরা বাঙ্গালীরা ও বাংলাদেশিরা মানুষ তো!
আমাদের বাংলাদেশই পৃথিবীর বুকে এমন একটি দেশ, যেখানে নানা বর্নের নানা গোত্রের নানান মন মানষিকতার মানুষের স্থায়ী বসবাসের স্থল। ধনী, দরীদ্র ও মধ্যবিত্তেরা এখানে একাকার হয়ে মিশে থাকে। যতই বিদ্বেষ থাকুক, সুখে, দুঃখে, হাসি, কান্নায় আমরা বাংলাদেশীরা আমাদের চির আপন। আমরা বাংলাদেশীরা বিশ্ববাসীর কাছে সম্প্রীতির নিদর্শনস্বরূপ। আমাদের দেশ থেকে আমরা সারা বিশ্বে সম্প্রীতি ছড়িয়ে দেব। এজন্য এদেশের সকল স্থানকে পর্যটনের উপযোগী করে গড়ে তোলার দায়িত্ব আমাদের সবার। আর সরকারের উচিত যেকোনো দেশের মানুষের জন্য বাংলাদেশ ভ্রমনের বিজ্ঞাপন ও সুযোগ সুবিধা প্রদান করা। এতে আমাদের বৈদেশিক আয়ও বাড়বে। আমার বিশ্বাস, যদি বিশ্ববাসীকে আমাদের জীবনযাত্রার সাথে পরিচয় করানো যায়, তাহলে ওরা আমাদের সমাজের মায়ায় পড়ে যাবে আর বার বার এদেশে আসবে। নিশ্চয় বিশ্ববাসী এদেশের মানুষকে অনেক অনেক ভালবাসবে। আর ওদের সহযোগীতায় ও দিক নির্দেশনায় আমরাও আরো উন্নত হবো।
লক্ষ্য করুন বিগত দশ বছর আগে থেকে এখনকার পরিবেশের কতটা খারাপ অবস্থা! এর জন্যে কি অন্যেরা দায়ী? নাহ... আপনি আমি সহ সকলেই এর জন্যে দায়ী। আমরা যে অন্যায় আর মন্দ কাজগুলো করেছি আর সয়েছি, তাতে মহান সৃষ্টিকর্তা আমাদের উপর কিরূপ বিরূপ হতে পারে? চিন্তা করুন। ভাল কাজ করা কঠিন কিছু নয়, একদম সহজ।
আপনি সামান্য একটা আম গাছ লাগান। পৃথিবীতে কেবল গাছই আপনার সর্বোচ্চ নিকটতম বন্ধু। আর সেই বন্ধুর কাছ থেকে আপনি কি কি পাচ্ছেন? সামান্য লক্ষ্য করুন- সেখান থেকে আপনি কি কি পাচ্ছেন? দেখা ও জানা তথাকথিত উপকার ও প্রাপ্তি বাদই দিলাম, কোটি কোটি পোকামাকড় বাস করছে, লক্ষ লক্ষ পাখি ও প্রানী সেই গাছের ফল পাতা প্রভৃতি খাচ্ছে, পশু পাখি গাছের ডালে আশ্রয় নিচ্ছে, খেলছে, থাকছে, ঘুমাচ্ছে, মানুষেরা উপকৃত হচ্ছে, পরিবেশ ঠিক থাকছে। বাতাস হচ্ছে, সব সব প্রায় সকল কাজে কেবল গাছেরই সর্বোচ্চ ব্যবহার হচ্ছে। আর এটা চলে যাচ্ছে বছরের পর বছর। পৃথিবীতে প্রত্যেকটি গাছই এক একটা দোকান। একটা বাঁশঝাড় মানে একটা বাজার। একটা গাছ থেকেই পাচ্ছেন কত কিছু, আর কিচ্ছু না হোক, প্রকৃতির অক্সিজেন পাওয়া যাচ্ছে, দূর হচ্ছে কার্বন ডাই অক্সাইড। আর এর সকল প্রতিদান আপনার খাতাতেই লেখা হচ্ছে। কত সহযে পাচ্ছেন কত কিছু। গাছ ছাড়া আর কি আছে? কিচ্ছু নাই; গাছের মাঝেই- ভাল মন্দ সব পাই। আপনি যখন গাছ লাগানোর জন্য গাছটি কোন নার্সারি থেকে নির্দিষ্ট স্থানে নিয়ে যাবেন, পথে লোকে দেখে উৎসাহিত হবে। আপনার লাগানো দেখে লোকেও লাগাবে। আপনার লাগানো গাছের কলমের গাছের অংশও আপনার হিসেবে যুক্ত হবে। পাখির খাবারের মাধ্যমে সহ নানা কারনে সেই গাছের বীজ থেকে অন্য স্থানে নতুন নতুন চারা গজাবে। সেটার প্রতিদানও আপনিই পাবেন। জাহাঙ্গীরের আব্বা চেঙ্গুটিয়া বাজারে একটা বট গাছ লাগিয়েছিল। শোনা যায়, পাখিতে না খেলে নাকি বটের অংকুরোদগম হয় না। পাখির মাধ্যমে সারা পৃথিবীতে এ ধরনের কাজ হয় সহজেই। আর নানাবিধ পাখির মাধ্যমেই সারা পৃথিবীতে সহযেই ছড়িয়ে পড়ে বটবৃক্ষেরা। সর্বোচ্চ কথাটি হলো, সহীহ একটি হাদীসে এরকম রয়েছে, যদি তুমি নিশ্চিত হও আগামীকাল কেয়ামত হবে, আর তোমার হাতে যদি কোন চারা বা বীজ থাকে, তবে তা রোপন করো।
গাছকে কষ্ট দিয়েন না, রোপন ও বপনের নিয়ত ঠিক থাকলে সকল বৃক্ষের প্রতিদান জায়গা মত পৌছে যাবে। খুকি আপু আর ময়না আপু খুবই গুরুত্বপূর্ন কথা শিখিয়েছিলেন, বলেছিলেন, অনেক যত্নের পর রোপিত গাছটি যদি মারাও যায়, তবু গাছ লাগানোর সময় একবার বিসমিল্লাহ পড়া হয়, সেটাই বা কম কিসে? এর প্রতিদানই তো অনেক। সেই সাথে প্রকৃতির সাথে আপনার একটা সম্পর্কও তৈরি হয়ে যাচ্ছে, যা প্রকৃতি মানুষকে ফিরিয়ে দ্যায়। রিটার্ন ল অফ নেচার। সামান্য একটা গাছ লাগিয়ে আপনি কত ভাল প্রতিদান পাচ্ছেন, আর সকল ভাল কাজের জন্য উত্তম প্রতিদানই নির্দিষ্ট। আর প্রতিটি ভাল কাজই সহজ ও আনন্দের ও কল্যানের। ধোঁকা তো থাকবেই, সমস্যা তো আসবেই, মন্দকে ছেড়ে ভালকে গ্রহন করলে আমরা অনেক অনেক এগিয়ে যাব। লক্ষ্য করবেন- পৃথিবীতে ভাল কিছু করাই সহজ, মন্দ টাই কঠিন।
পৃথিবীর এই চুড়ান্ত সফলতার মুহূর্তে আর হয়ত বেশী সময় নেই কিন্তু লক্ষ্য করুন, এখনো পৃথিবীতে লক্ষ লক্ষ মানুষ কত কষ্টে আছে! এখনো পৃথিবীতে কত শত জায়গায় হাহাকার। আমার যদি ঐ জায়গায় জন্ম হতো! এই চিন্তা করে সকলেরই উচিত বঞ্চিতদের জন্য, নিপীড়িতদের জন্য কিছু করা। এই শেষ সময়গুলোতে যেন মানুষ ভাল থাকে...। সকল মানুষ যেন তাদের নূন্যতম অধিকারটুকু পায়। যেন সুন্দরভাবে বাঁচতে পারে। সে ব্যবস্থা আমাদেরকেই করতে হবে। যারা ভাল আছি, তাদের উচিত অন্যদেরকে ভাল রাখার দায়িত্ব নেওয়া। আর এজন্য নিজেকেও ভাল রাখা প্রয়োজন।
আসলে আমরা কেউ মন্দ মানুষ নই, সব্বাই আমরা আমাদের পালনকর্তার কাছে এক সমান। সবাইকে তিনি একই তারা, একই পানি, একই বাতাস একইভাবে দিচ্ছেন অনেক কিছুই। লক্ষ্য করবেন, আপনি ভাল, আপনি একটু বেশীই কষ্ট পান কিন্তু আপনার সে কষ্টের মধ্যে সুখ ও শিক্ষাও পান। আপনি সাবধান হয়ে যান। অপরদিকে মন্দ মানুষেরা আরো বেশী কষ্ট পান তবে তাদের কষ্ট তাদের সুখদুঃখ সব ভুলিয়ে দেয়, তাতে তারা তেমন কোন শিক্ষা পান না। তারা আবারো মন্দ কাজে লিপ্ত হন। সে যাই হোক সবাই ভাল থাকুক, আমাদের কাম্য হওয়া উচিত সেটাই। আমাদের মন্দ কাজ করায় যে, তিনিই শয়তান, গ্রামে বলে- শয়তানের নানীর নয় ঠ্যাং। শয়তান, আমাদের ভেতরে বসবাসকৃত এক মন্দ সত্তা, যা প্রতিটা কাজে প্রতিনিয়ত আমাদের প্রতি তাড়না সৃষ্টি করে।
লক্ষ্য করবেন, মন্দ যারা, তারা বহুকাল ধরে অনেক চড়াই উতরাই পার করে, বহু ঘাত- প্রতিঘাত আর হাঙ্গামা পার করে, বহু কষ্ট- ঝুঁকি আর সুখকে পেছনে ফেলে অনিয়মতান্ত্রিক জীবন পার করে আসছে। আমি বলবো মন্দদের কোন দোষ নেই, শয়তানই তাদের তাড়া করে নিয়ে বেড়াচ্ছে, তারা মন্দ নয়, তারা সবাই ভাল হতে চায়। যদি কেউ দাবি করেন, তিনি সাধারন মানুষ নন, তাকে হেমায়েতপুর পাঠাতে হবে। পৃথিবীতে আমাদের সবার মাঝেই আছে ভাল হয়ে যাবার বাসনা; সবারই আছে ভাল একটা পরিবার গঠনের কামনা; ভাল কিছু জায়গা সবাই আমরা চাই; যেখানে নিশ্চিন্তে সময় কাটাবো- আরাম করবো আর জীবনের ভাল কিছু সময় অতিবাহিত করবো। পৃথিবীতে এমন কেউ নেই, যার ভাল হয়ে থাকার বাসনা নেই। তাহলে আমরা কেন মন্দ কাজ করি?
লক্ষ্য করবেন, যারা মন্দের মাঝে রয়েছেন, শত ঝুঁকির মাঝেও তারা অনেকক্ষেত্রে কম ক্ষতিগ্রস্থ, আল্লাহ তাদেরকে সময় দেন, শিক্ষার। মহান সৃষ্টিকর্তা তাদের অনেক ভালবাসেন, অনেক সময় তিনি তাদের বাঁচিয়ে দেন কেননা তারাতো মন্দ নয়, তারা শয়তানের ধোঁকায় পড়ে আছে। এই ধোঁকার মধ্য থেকে বেরিয়ে এসে, এককেন্দ্রিকতা মন থেকে ধুয়ে ফেলে, সুন্দর একটা সমাজের স্বপ্ন দেখা- বাস্তবায়নের চেষ্টা করা ও সফল হওয়া আমাদের সকলের দায়িত্ব।
©somewhere in net ltd.