নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নাজমুল হুদা নাজ

নাজ রিটার্নস

নাজ রিটার্নস › বিস্তারিত পোস্টঃ

সফল মানুষদের একটি বৈশিষ্ট

২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ৮:৪৮


যোগাযোগের দক্ষতা, ইংরেজিতে যেটি আমাদের কাছে Communication নামে পরিচিত, বর্তমানে খুবই প্রয়োজনীয় একটি বিষয়। শুধু বর্তমানে নয়, এটি অতীতেও প্রয়োজনীয় ছিল এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। চাকুরী বলি আর স্টার্ট-আপ শুরু করার কথা বলি, যোগাযোগের দক্ষতা আমাদের ক্যারিয়ারের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শুধু তাই নয়, যোগাযোগের দক্ষতা মানুষের মাঝে আমাদের গ্রহণযোগ্যতাকেও বাড়িয়ে তোলে। চলো দেখে আসি যোগাযোগের দক্ষতা কী এবং তা বৃদ্ধি করার কিছু উপায়।

যোগাযোগ দক্ষতা হল অন্যের দেয়া তথ্য সঠিকভাবে বুঝতে পারা এবং নিজে যা বলতে চাই তা অন্যকে সঠিকভাবে বুঝাতে পারা। এটা লিখে আর কথায়- দু’রকম ভাবেই হতে পারে। আমরা এখানে শুধু কথা বলার মাধ্যমে যে যোগাযোগ হয় তার দক্ষতা নিয়ে কথা বলব। খেয়াল করলে দেখতে পারবে যে যোগাযোগের দক্ষতার মূলত দু’টি অংশ- অন্যের কথা বুঝতে পারা এবং নিজের কথা অন্যকে বুঝাতে পারা।

অন্যের কথা বুঝতে পারা
অন্যের কথা বুঝতে পারার ক্ষমতা গড়ে তোলা এবং তা পরিচর্যার মাধ্যমে বৃদ্ধি করার জন্য কিছু ছোট ছোট জিনিস মাথায় রাখতে হবে। চলো দেখে আসি কী কী বিষয় মাথায় রাখলে কেউ কথার মাধ্যমে কী তথ্য দিতে চায় তা সহজেই বুঝে নেয়া যাবে।

১। মনোযোগ দিয়ে শোনা:
অনেকেই কথোপকথনের মাঝে বক্তার কথা শোনার দিকে খুব একটা নজর দেয় না। এটা মোটেও ঠিক নয়। অন্যের কথা বুঝতে পারার জন্য তোমাকে প্রথমেই নজর দিতে হবে কথাটা ভালোমত শোনার জন্য। মনোযোগ দিয়ে না শুনলে অনেক কিছুই খেয়াল করা হয়ে উঠে না অনেক সময়। সেক্ষেত্রে দেখা যায় যে যখন কথার উত্তরে কিছু বলতে যাবে তখন কথা খুঁজে না পেয়ে থমকে যাবে। এজন্যই তোমার উচিত মনোযোগ দিয়ে বক্তার কথা শোনা। তাহলে কথোপকথন খুব সহজেই চালিয়ে যাওয়া যায় কোন রকম আটকে যাওয়া ছাড়া।



একবার চিন্তা করে দেখো কেউ যদি তোমার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনে তাহলে তোমার কেমন লাগবে। অবশ্যই ভালো লাগবে এবং মনে হবে তারা তোমার মূল্য দিচ্ছে। তখন তুমি আরো বেশি চেষ্টা করবে ভালোমত কথাগুলো বলার জন্য। তুমি যখন অন্যের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনবে তখন তার মাঝেও ঠিক একই ব্যাপার কাজ করবে এবং সে তোমাকে তার কথাগুলোও ভালোমত বলবে। এর ফলে তুমি সহজেই প্রয়োজনীয় তথ্য জোগাড় করে নিতে পারবে। তাহলে মনোযোগ দিয়ে কথা শুনতে বাধা কোথায়?

২। বডি ল্যাঙ্গুয়েজ খেয়াল করা:
মনোযোগ দিয়ে শোনা শুধুমাত্র শোনার মাঝেই সীমাবদ্ধ নয়, চোখ দিয়ে লক্ষ্য করার ব্যাপারটাও এখানে এসে পড়ে। মনোযোগ দিয়ে শোনার ক্ষেত্রে বক্তার মুখের ভঙ্গিমা এবং হাত পা নড়াচড়া লক্ষ্য করা ইত্যাদি বিষয়গুলো বক্তার কথা সহজে বুঝতে সাহায্য করে। যদি সেটা অবচেতনভাবে হয়, তবুও বক্তার শরীরের নড়াচড়া তার বক্তব্যকে ফুটিয়ে তুলতে সাহায্য করে। সেজন্যই বক্তার কথা শোনার পাশাপাশি তার শরীর এবং অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের নড়াচড়ার দিকেও খেয়াল রাখতে হবে।

আবার অনেকেই সরাসরি না বললেও হাতের নড়াচড়া, চোখের ইশারার মাধ্যমেও বোঝানোর চেষ্টা করে যে কথোপকথনের সমাপ্তি চায় সে। সেক্ষেত্রে সেই ইশারা বুঝতে পারা এবং দ্রুত কথা শেষ করাটাও যোগাযোগ দক্ষতার মধ্যেই পড়ে।

৩। বক্তাকে বোঝানো যে তুমি শুনছ:
একজন বক্তা যখন কথা বলে তখন সে এটাও লক্ষ্য করে যে শ্রোতা তার কথা শুনছে কি না। যদি শ্রোতা আগ্রহী হয় তাহলে তার কথা বলার উৎসাহ বৃদ্ধি পায়। তাই কথা শোনার সময় বক্তাকে বোঝাতে হবে যে তুমি তার কথা শুনছ। সেক্ষেত্রে একটু পর পর মাথা নাড়ানো, মাঝে মাঝে হু-হ্যাঁ ইত্যাদি শব্দ করা ইত্যাদি কাজ বক্তাকে বুঝিয়ে দেবে যে তুমি তার কথা শুনছ। এতে করে বক্তাও কথা বলতে আরো আগ্রহী হবে যা তোমাদের কথোপকথনকে আরো সহজ এবং সাবলীল করে দেবে।

তবে এত বেশি সাড়া আবার দিও না যাতে বক্তার কথার মাঝখানে বাধার সৃষ্টি হয়। তাহলে বক্তা বিরক্ত হতে পারে। এতে করে তোমার মূল উদ্দেশ্যটাই ব্যাহত হবে।
বেরিয়ে আসুন নিজের খোলস থেকে!
কর্পোরেট জগতে চাকরির ক্ষেত্রে কিছু জিনিস ঠিক থাক রাখা অত্যন্ত জরুরি।



যোগাযোগ দক্ষতার কৌশলগুলোঃ

১। নিজের কথা অন্যকে বুঝাতে পারা:
নিজের বক্তব্যকে অন্যের কাছে ফুটিয়ে তুলতে পারাটাও যোগাযোগ দক্ষতার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কিছু বিষয়ের দিকে লক্ষ্য রাখতে পারলে খুব সহজেই নিজের কথাকে অন্যের কাছে উপস্থাপন করা যায়। চলো, দেখে আসি সেই বিষয়গুলো।

২। খুব দ্রুত কথা না বলা:
তোমার কথা যাতে মানুষ খুব সহজেই বুঝতে পারে সেজন্য প্রথমেই যে বিষয়টির দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে তা হল ধীরে ধীরে কথা বলা। যদি তোমার কথা খুব দ্রুত হয় তাহলে খুব সহজেই মানুষ তোমার কথা শোনার আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে কারণ, তারা বেশিরভাগ কথা বুঝতেই পারবে না। সেক্ষেত্রে, এর প্রভাব পড়বে তোমার কথোপকথনের উপর এবং আসল উদ্দেশ্য ব্যাহত হবে।

কৌতুক আমাদের সম্পর্ককে সহজ করে তোলে

অপরদিকে তুমি যদি ধীরে ধীরে কথা বল তাহলে তোমার বক্তব্য প্রকাশ করার জন্য যথাযথ শব্দ খুঁজে বের করার জন্য যথেষ্ট সময় পাবে। একইসাথে তোমার শ্রোতারা কথা শুনার সাথে সাথে সেই কথার মাধ্যমে তুমি কী বোঝাতে চাচ্ছো তা বোঝার জন্য যথেষ্ট সময় পাবে। এভাবে তুমি খুব সহজেই নিজেকে ভালো বক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে পারবে।



তবে বেশি ধীর হয়ো না কিন্তু। তাহলে তুমি যার সাথে কথা বলছ সে ভেবে নেবে তুমি যে বিষয়ের উপর কথা বলছ সে বিষয়ের উপর তোমার যথেষ্ট জ্ঞান নেই। তাই সে কথা শোনার এবং বলার আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে।

৩। শ্রোতার চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলা:
কথা বলার সময় অবশ্যই শ্রোতার চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলতে হবে। এতে করে শ্রোতা বুঝতে পারবে তুমি আত্মবিশ্বাসী এবং যা বলছ তা সম্পর্কে তুমি যথেষ্ট জ্ঞান রাখ। এছাড়াও শ্রোতার চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বললে শ্রোতা তোমার কথাকে খুব সহজে এড়িয়ে যেতে পারবে না। এভাবে খুব সহজেই তুমি যা বলতে চাও শ্রোতার কাছে তা পৌঁছে দিতে পারবে।

যদি শ্রোতা একাধিক হয় তাহলে কখনোই একজনের দিকে তাকিয়ে কথা বলবে না। চেষ্টা করবে সবার দিকে তাকিয়ে কথা বলতে। এতে করে তারা বুঝতে পারবে তুমি সবাইকেই গুরুত্ব দিয়ে কথা বলছ।

৪। শরীরের অঙ্গভঙ্গির দিকে খেয়াল রাখা:
তুমি মুখে যা বল, তার সাথে সমন্বয় করে তোমার শরীরও প্রয়োজনমত নড়াচড়া করে। এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ কারণ, একজন মানুষ তোমার কথা যখন শুনে তখন সে তোমার অঙ্গভঙ্গির দিকেও খেয়াল করে। কারণ, তোমার অঙ্গভঙ্গি তাকে সেই কথাটা সহজে বুঝতে সাহায্য করে। কিন্তু খেয়াল রেখো তোমার অঙ্গভঙ্গি যেন তোমার বক্তব্যের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়। তাহলেই শ্রোতা তোমার কথা সহজে বুঝতে পারবে।

যে সকল অঙ্গভঙ্গি শ্রোতাকে তোমার কথা বুঝতে সাহায্য করবে সেগুলোর মাঝে হাতের নড়াচড়া, দাঁড়ানোর ভঙ্গি ইত্যাদি বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তুমি মুখে যদি কোন বস্তুর কথা বল এবং হাত দিয়ে তার আকৃতি দেখানোর মত ভঙ্গিমা কর তাহলে তা শ্রোতারা সহজেই বুঝতে পারবে। এভাবেই তুমি সহজে তোমার কথাকে শ্রোতার কাছ সহজবোধ্য করে তুলতে পারবে।

৫। কৌতুক ব্যবহার করা:
হাস্যরস মানুষকে আকৃষ্ট করে। তাই তুমি যদি তোমার কথায় প্রয়োজনমত কৌতুক ব্যবহার কর তাহলে খুব সহজেই মানুষকে আকৃষ্ট করতে পারবে তোমার দিকে। এছাড়াও কৌতুক আমাদের সম্পর্ককে সহজ করে তোলে। তাই কোন রসকসহীন কথার মাঝে মাঝে কিছু হাসির কথা বা ইঙ্গিত ব্যবহার করলে খুব সহজেই শ্রোতাকে আপন করে নিতে পারবে এবং শ্রোতার মনোযোগ তোমার দিকে ধরে রাখতে সক্ষম হবে।

তবে যদি আলোচনাটা যদি হয় কোন শোকের কিংবা কষ্টের আলোচনা তাহলে সেখানে কৌতুক ব্যবহার করতে যেয়ো না আবার। তাহলে ফলাফল যে কী হবে তা বলাই বাহুল্য।

জানলে তো কী কী উপায়ে কথা বললে তোমার যোগাযোগ দক্ষতা তথা Communication skill বৃদ্ধি করতে পারবে? তাহলে আর দেরি কেন? চর্চার মাধ্যমে এখন থেকেই একটু একটু করে বাড়িয়ে তুলতে থাকো এই প্রয়োজনীয় দক্ষতাকে যা দিয়ে ভবিষ্যতে নিজেকে মানুষের কাছে আরো গ্রহণযোগ্য করে তুলতে পারবে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.