![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বাংলাদেশের জনসংখ্যা ১৬ কোটি ১০ লাখ। পরিসংখ্যান ব্যুরো বলছে, বাংলাদেশের জসসংখ্যার প্রায় তিনভাগের এক ভাগ কিশোর-কিশোরী ও তরুন-তরুনী। ১০ থেকে ১৯ বছর বয়সী নাগরিক মোট লোকসংখ্যার ২৩ শতাংশ । ১০ থেকে ২৪ বছর ধরলে ৩১ শতাংশ। যে কোনো দেশের জন্যই এই বয়সের নাগরিকরা হচ্ছে বড় সম্পদ। অর্থনীতি ও জনসংখ্যা বয়স বিন্যাসসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে যারা কাজ করেন,তাদের কাছে বাংলাদেশের বর্তমান কালপর্ব হচ্ছে ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডের, যাদের শ্রমে মেধায় গড়ে উঠতে পারে উন্নত সমৃদ্ধ সমাজ। এ সময়ের নিজেদেরই পরবর্তী সময়ে। তাদের পরবর্তী প্রজন্ম কেমন বাংলাদেশ পাবে, সেটাও বহুলাংশে নির্ভর করছে বর্তমান প্রজন্মের কিশোর-কিশোরী ও তরুনদের ওপর। তাদের পিছনে বিনিয়োগ প্রকৃত মানবিক বিনিয়োগ, লাভজনক বিনিয়োগ।
জাতীয় যুবনীতি অনুসারে বাংলাদেশের ১৮-৩৫ বছর বয়সী জনগোষ্টিকে যুুব হিসেবে সংঞ্জায়িত করা হয়েছে। এ বয়সসীমার জনসংখ্যা দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ, যা আনুমানিক ৫ কোটি। জনসংখ্যার প্রতিশ্রুতিশীল, উৎপাদনমুখী ও কর্মপ্রত্যাশী এই যুবগোষ্টিকে সুসংগঠিত,সুশৃখল ও দক্ষ জনশক্তিতে রপান্তুরের লক্ষ্যে, শেখ হাসিনা সরকারের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রনালয়াধীণ যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর নিরলসভাবে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ লেক্ষ্যে দেশের জনসংখ্যার সম্ভাবনাময় এ অংশকে জাতীয় উন্নয়নের মূলধারায় সম্পৃক্ত করে তাদের মাঝে গঠনমূলক মানসিকতা ও দায়িত্বরোধ জাগ্রত করা এবং সুশৃখল কর্মীবাহিনী হিসেবে দেশের আর্থ-সামাজিক কর্মকান্ডে নিয়োজিত করার অনুকূল ক্ষেত্র তৈরির উদ্দেশ্যে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর শুরু থেকেই বাস্তবভিত্তিক কর্মসুচি গ্রহন ও বাস্তবায়ন করছে, যার সুফল ইতোমধ্যে জাতীয় কর্মকান্ডে প্রতিফলিত হচ্ছে।
যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর বেকার যুবকদের দেশের আর্থ সামাজিক উন্নয়ননে সম্পৃক্ত করে তাদের স্বাবলম্বী করার পাশাপাশি দেশের উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে কাজ করে চলেছে। তাদের কর্মস্পৃহা ও কর্মোদ্দীপনা কাজে লাগিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে তাদেরকে বিভিন্ন উৎপাদনমুখী বিষয়ে প্রশিক্ষন দিয়ে অত্যন্ত সহজ শর্তে ঋণ প্রদান করা হচ্ছে। এসব কর্মকান্ড বাস্তবায়নের জন্যে দেশের সকল জেলা ও উপজেলায় যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের কার্যালয় রয়েছে। এছাড়া দেশের ৬৪ টি জেলায় আবাসিক ও অনাবাসিক প্রশিক্ষন কেন্দ্র রয়েছে। তদুপরি দেশের সকল উপজেলায় ভ্রাম্যমান প্রশিক্ষন কেন্দ্র আছে। এসব প্রশিক্ষন কেন্দ্র থেকে আবাসিক ও অনাবাসিক এবং স্বল্পমেয়াদী প্রশিক্ষন গ্রহন করে বেকার যুবকরা কর্মসংস্থান ও আত্মকর্মসংস্থানের মাধ্যমে স্বাবলম্বী হচ্ছেন। যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের কর্মকান্ডের প্রচারস্বল্পতার কারনে বহু যুবক ও যুবমহিলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের কার্যক্রম সম্পর্কে কোনো ধারনা নেই। আমরা দেশের সকল যুবক ও যুবমহিলার কাছে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের কর্মকান্ডের তথ্য পৌছে দিতে চাই। যাঁরা এই লেখাটি পড়বেন, তাদের কাছে আমার সনির্বন্ধ অনুরোধ আপনারা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের কার্যক্রম সম্পর্কে বেকার যুবদের অবহিত করবেন।
দূর্বার গতিতে এগিয়ে যাওয়া বাংলাদেশের বেকার যুবদের কর্মসংস্থান ও আত্মকর্মসংস্থানের জন্য প্রশিক্ষন প্রদান একটি গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম। এ লক্ষ্যে বর্তমান সরকারের যুগোপযোগী দিক নির্দেশনার আলোকে চলমান নিয়মিত ৭২টি প্রশিক্ষন ট্রেডের পাশাপাশি প্রতিনিয়ত নতুন নতুন ট্রেড প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত কওর যুবদের দেশে ও বিদেশে কর্মসংস্থানের জন্য দক্ষ মানব সম্পদ তৈরিতে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারের সময়ে ১৭ লক্ষ ৯৯ হাজার ৫১ জনকে বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত যুবক ও যুবমহিলা তাদের প্রশিক্ষণলব্ধ জ্ঞান কাজে লাগিয়ে স্থানীয়ভাবে উৎপাদন বৃদ্ধিতে সরাসরি আবদান রাখছে। যা গ্রামীন দারিদ্র বিমোচন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ভূমিকা পালন করছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে আত্মকর্মী যুবরা লক্ষাধিক টাকা উপাজন করে থাকে তারা নিজেরা সাবলম্বী হয়ার পাশাপাশি অনেক যুবকের কর্মসংস্থানের ও ব্যবস্থা করে যাচ্ছে। বর্তমান সরকারের সময়ে ৪ লক্ষ ৬৭ হাজার ৫শত ৭৮ জন আত্মকর্মসংস্থানের মাধ্যমে সাবলম্বী হয়েছে। ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচী সরকারের একটি যুগান্তকারী প্রদক্ষেপ। এটি বর্তমান সরকারের একটি অগ্রধিকার কর্মসূচী।
গ্রামাঞ্চলের বেকার যুবকদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি এবং দারিদ্র বিমোচনে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের যুব কর্মসূচী গুরুত্বপূর্ন অবদান রাখছে। বর্তমান সরকারের সময়ে ঋণের সর্বোচ্চ সীমা প্রাতিষ্ঠানিক ট্রেডে ৫০ হাজার টাকা থেকে একলক্ষ টাকা। অপ্রাতিষ্ঠানিক ট্রেডে ৩০ হাজার টাকা থেকে ৫০ হাজার টাকায় উন্নিত করণ হয়েছে। বর্তমান সরকারের সময়ে একলক্ ৪৮ হাজার ৮৮১ জন প্রশিক্থিত যুবককে ৬৫৪ কোটি ৬৫৪ কোটি ৪৬ লক্ষ ৮২ হাজার রিণ প্রদান করা হয়েছে।
শেখ হাসিনা জাতীয় যুব কেন্দ্রের উন্নয়ন- মূলত একটি মানবসম্পদ উন্নয়ন তথ্য ও গবেষনা কেন্দ্রে। বাংলাদেশ এটি যুবদেও জন্য জাতীয় পযার্য়ে প্রথম মানব সম্পদ উন্নয়ন কেন্দ্র। কেন্দ্রের কার্যক্রমকে বেগবান করার জন্য একটি প্রকল্পের মাধ্যমে কেন্দ্রটিকে আন্তজার্তিক পর্যাযে উন্নিত করার উদ্দ্যেগ গ্রহন করা হয়েছে। সেই লক্ষ্যে একটি পৃথক আইন প্রনয়নের কাজ ও চলছে।
ইন্টারনেট ও নেটওয়াকিং সুবিধা সম্প্রসারন যুব কার্যক্রম গতিশীল করার লক্ষ্যে, অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ের সাথে সকল জেলা ও উপজেলায় ইন্টারনেট সংযোগ স্থাপন করা হয়েছে। প্রশিক্ষন ও রুনের জন্য অনলাইন আবেদনের ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে।
ইতিবাচক মানসিকতাস্মপন্ন যে কোনো মানুষই একজন উদ্যোক্তা হতে পারে। যেমন পথ শিশুদের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়াতে নিজের সময়কে কাজে লাগানো। পাড়ার গলির রাস্তাটা ভীষণ অপরিচ্ছন্ন। পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের জন্য অপেক্ষা না করে কাজ সেরে বাড়ি ফেরার পর পাড়া মহল্লার ছোট বড় ভাইদের নিয়ে নিজেই পরিচ্ছন্নতাই লেগে যাওয়া। নিজের জড়তাকে ভেঙ্গে কিছু একটা করার যে তাড়না, নিজেকে একজন উদ্যোক্তা হওয়ার এটাই প্রথম উদ্যোগ। অর্থনীতি মানুষের জীবনে যেহেতু খুবই প্রভাবশালী একটি অনুষগ। কিন্তু অর্থনৈতিক পরিকল্পনা ছাড়া যে উদ্যোক্তা হওয়া যাবে না, এমনটি নয়। এমনকি চাকরি করে ও উদ্যোক্তা হওয়া সম্ভব। যদি কেউ চাকরির পাশাপাশি তাঁর প্রকল্পে পর্যাপ্ত সময় দিতে পারে, সঙ্গে নিজেকে বিকশিত করার তীব্র ইচ্ছা থাকে। তবে সফলতা আসবেই। সফল মানুষরাই সম্যসার সমাধান আনতে পারে। সফলরাই যুক্তিবাদী মানুষ হয়। যুক্তিবাদী মানুষ জীবনে উন্নতি করে। তবে আবেগ মানুষের খুবই শক্তিশালী মনেবৃত্তি । যুক্তির প্রয়োজন যেমন আছে,কিন্তু সব সময় যুক্তিকে প্রাধান্য দিয়ে আবেগকে খাটো করে দেখার সুযোগ নেই। বিশেষ করে উদ্দ্যোক্তাদের জন্য আবেগ অতীব জরূরী এক উপাদান। নিজের কাজগুলোকে গভীরভাবে অনুভব না করলে এর প্রতি অপরিসীম মমতা না থাকলে কারও পক্ষে দীর্ঘকালব্যাপী সেই সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকা সম্ভব নয়। কারণ, উদ্যোক্তার জীবন আরাম-আয়েশের নয়। প্রতিনিয়ত নানা বাধাবিপত্তির মোকাবিলা তাকে করতে হয়,শারীরিক ও মানসিক প্রচুর সংকটের মধ্য দিয়ে তাকে যেতে হয়। এত কিছুর পরও লেগে থাকার ক্ষেত্রে প্রচন্ড প্রেষনা হতে পারে ওই আবেগটুকুই। উদ্দ্যেক্তা যদি ক্লান্ত হয়ে পড়ে,তার পক্ষে নতুন কিছু সৃষ্টি করা বা নিজেকে ভারমুক্ত রাখা ভিষন রকম দুরূহ হয়ে পড়ে।
সত্যিকারের মানুষ হবে আত্মবিশ্বাসী। যে লুকায়িত ক্ষমতা তার আছে,তা দিয়েই পৃথিবী জয় করা সম্ভব। অলৌকিক কোনো প্রপঞ্চে আসক্ত বা বিশ্বাসী হওয়ার দরকার নেই। কর্মের ভেতর দিয়েই সে সত্যিকার মানুষ হয়ে উঠবে।
মানুষের উপলদ্ধি থেকে জন্ম নেয় অভিঞ্জতা । অভিজ্ঞতা দেয় ধারনা আর বহুবিদ ধারনা থেকে জন্ম নেয় জ্ঞান। জ্ঞানের ব্যবহারিক কার্যক্রমের ভেতর দিয়ে পাওয়া যায় বুদ্ধিমত্বা। বুদ্ধিমত্তা ও ন্যায়বোধে একজন মানুষ হয়ে ওঠে একজন সত্যিকারের মানুষ। সত্য ও ন্যায় কাজে সে সাহসিকতা দেখাবে পক্ষপাত পুষ্টতায় নিজেকে কুলষিৎ করবে না। আত্মশোধনের ভেতর দিয়ে গড়ে ওঠবে আলোকিত এক মানুষ আর এমন আলোকিত মানুষের সংখ্যা যত বৃদ্ধি পাবে ততই ঐক্যবদ্ব হয়ে আমরা গায়তে পারবো আমরা মানবতার জয়গান।
তরুণদের মুক্তিযুদ্ধের সুমহান আদর্শে উদ্দীপ্ত করে তোলা চাই। ধর্মান্ধতা কূপমন্ডকতার অশুভ ছায়া তাদের ওপরে যেন বিন্দুমাত্র না পড়ে সেটা নিশ্চিত করা চাই । তারা উপযুক্ত শিক্ষা না পেলে ন্যায়নীতি ও মানবিতক ম্যলাবোধের আদর্শে অনুপ্রানিত না হলে দেশকে কীভাবে সবকিছু উজাড় করে দেবে? নতুন প্রজন্মকে যথাযোগ্যভাবে গড়ে তোলার দায়িত্ব কেবল রাষ্টের নয়, সব পরিবারকে এজন্য এগিয়ে আসতে হবে। সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে। ১৯৫২ সালে বাংলাদেশের তরুন প্রজন্ম বাংলা ভাষার অধিকারের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছিল। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে তরুণরাই ছিল মূল চালিকাশক্তি। তারা স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছিল। এ মহান সংগ্রামে লাখ লাখ তরুণ জীবন উসর্গ করেছিল। আশা রাখি, বর্তমানে তরুণ প্রজন্মও বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে এবং নিদিষ্ট দায়িত্ব পালনে পিছিয়ে থাকবে না।
©somewhere in net ltd.