![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
রাত্রির নির্জনতায় নিঃসঙ্গ কেঁদে কেঁদে, একদিন হয়তো তুই অজান্তেই মরে যাবি, তবুও তুই জানবি না পাষাণ এ বুকে কতটুকু ভালবাসা তোর জন্যে জমা রাখি।
প্রথম পর্বঃ Click This Link
রাফা ঘুমিয়ে আছে অঘোরে.. তার মা পাশে বসে আছেন এবং তার ছোট ভাই রাহী মাটিতে নিঃশব্দে বসে আছে.. রাফার মা তার মেয়েকে নিয়ে বেশ চিন্তায় আছেন.. কয়দিন পর পরই অসুস্থ হয়ে যায়.. সেদিন বিকেলে হঠাত্ করেই জ্ঞান হারিয়ে পড়ে গেল.. আর কিছুতেই জ্ঞান ফিরে না.. বাসায় তখন তার বাবা কিংবা বড় ভাই শাহী কেউ নেই.. তাড়াতাড়ি ফোন দিলেন শাহীকে, সে এসে নিয়ে গেল হাসপাতালে.. এক দিন দু রাত পর জ্ঞান ফিরল.. তারপর কারো সাথে কোন কথা নাই.. সারাদিন শুধু ঘুমায়.. জেগে থাকলে কিছু জিজ্ঞেস করলে মাথা নাড়ায় মুখে কিছু বলে না.. ডাক্তার বলছে হঠাত্ করে ভয় পেয়ে স্নায়ু দুর্বল হয়ে পড়ায় এই অবস্থা হয়েছে, এখন বিশ্রাম নিতে হবে কয়েক সপ্তাহ তাহলেই ঠিক হয়ে যাবে.. কিন্তু মেয়ের এই অবস্থা কোন কারণে কিছুটা আঁচ করতে পেরেছেন তিনি..
হঠাত্ করেই বদলে যায় রাফা তার কাজিন মাহার অস্বাভাবিক মৃত্যুর পরে.. সেদিন মাহার লাশ দেখার পর থেকেই তার ভয় লাগতে শুরু করে.. কিভাবে যেন মাথাটা থেঁতলে গেছে একপাশ দিয়ে.. রক্তমাখা চোখ একটা শুকিয়ে কালো রঙের হয়ে ভিতরে চেপে গেছে.. সাধারনত বাথরুমের ওয়াটার সিংকের সাথে মাথায় আঘাত পেয়ে মরে যাওয়াটা অস্বাভাবিক.. তারচে বড় মাহার মুখের অবস্থা দেখলে মনে হয় তাকে অনেক শক্ত কিছু দিয়ে মাথার একপাশে আঘাত করা হয়েছে.. লাশ দেখে রাতে বাসায় এসে ঘুমোতে পারে নি রাফা.. লাইট জ্বালিয়ে বসে ছিল কিন্তু অনেক ভয় করেছে.. শেষ রাতের দিকে চুড়ির রিনিঝিনি শব্দ আর একটা হালকা হাসির শব্দ পায়.. এটা শুনে চিত্কার করে কেঁদে ওঠে কিন্তু পরে আর ঐ রাতে শুনতে পায় নি.. মাহার মৃত্যুর পর থেকেই রাফা অনেক বদলে গেল.. পরহেযগার হয়ে গেল আগের চেয়ে বেশি..
মাহা প্রায়ই রাফাকে বলত যে সে এরকম মাঝরাতে অস্পষ্ট মেয়েলি হাসি আর চুড়ির রিনিঝিনি শব্দ শুনত.. রাফা তেমন গা করত না হাসত শুধু ওকে নিয়ে, বলতঃ আমি ওসবে ভয় পাই না.. শুধু শুধু ভয় দেখাতে চাইলে মাইর দিব.. কিন্তু এখন সে ভয়ে রাতে বাতি নিভিয়ে ঘুমাতে পারে না.. মাঝে মাঝে ঐ হাসি আর চুড়ির শব্দ শুনত রাতে.. তখন ঘুম ভেঙ্গে যেত আর বাকী রাত জেগে থেকে কাঁদত.. প্রথমে রাফা কাউকে কিছু বলে নি.. পরে একদিন তার মাকে বলল সব খুলে.. উনি একটু ঘাবড়ে গেলেন.. বললেনঃ এসব কিছু না দোয়া দুরুদ পড়ে ঘুমাও আর বাজে জিনিস দেখবে না.. কিন্তু তারপরও হঠাত্ হঠাত্ রাতে ঘুম ভেঙ্গে গেলে শব্দ শুনত..
সেদিন রাতে ঘুম ভেঙ্গে গেল রাফার হঠাত্ কারেন্ট চলে গেছে বলে.. আইপিএসের চার্জ ছিল না তাই ফ্যান ঘুরছিল না.. রুমের বাতিটা আধো আধো হয়ে জ্বলছিল.. ঘুম ভাঙ্গতেই মনে হল কে যেন হাসছে ঠিক তার পড়ার টেবিলের পাশে রাখা চেয়ারে বসে.. মনে হচ্ছিল তার কে যেন তাকে ঘুম ভাঙ্গিয়ে খুব মজা পেয়েছে.. সে রেগে গিয়ে ঘুমোতে যাওয়ার আগে বালিশের পাশে থাকা বইটা ছুঁড়ে মারে.. হাসি থেমে গেল এবং অনেকগুলো কাচের চুড়ি ভেঙ্গে একসাথে মাটিতে পড়ার শব্দ পেল.. তারপর ভয়ে কাঁদতে লাগল ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে.. রুম থেকে আস্তে আস্তে বের হয়ে ডাইনিং রুমে গিয়ে বসে থাকল.. সকালে তার মা তাকে ডাইনিং টেবিলে মাথা রেখে ঘুমোতে দেখে জাগালেন.. মাথা তুলে মাকে দেখতে পেয়েই জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করল..
ঐদিন বিকেল বেলা রাজুর সাথে দেখা করার কথা ছিল.. রাফা রেডি হয়ে গিয়েছিল প্রায়, হঠাত্ তার চোখ পড়ল তার টেবিলের পাশে রাখা চেয়ারের উপর.. চেয়ারে একটা কাপড়ের সাথে আটকে আছে একটা আধভাঙ্গা লাল চুড়ি.. দেখে সে ভয় পেয়ে গেল কিছুটা সরে আসল অনেকটা দূর.. তার কোন লাল রঙের চুড়ি নেই, এমনকি বাসার কেউ লাল চুড়ি পড়ে না.. রাফার মনে হল, আমি বই ছুঁড়ে মারার পর চুড়ি ভেঙ্গে মাটিতে পড়ার আওয়াজ হয়েছিল, কিন্তু সকালে তো কোন ভাঙ্গা চুড়ি মাটিতে পড়ে থাকতে দেখিনি.. এটা কোথায় থেকে আসলো? ঠিক এমন সময় রাতের সেই হাসিটার আওয়াজ অস্পষ্টভাবে শুনতে পেল আর কড়া বকুল ফুলের ঘ্রাণ তার নাকে এসে লাগল.. সাথে সাথে রাফা মূর্ছা গেল..
আজ তের দিন হয় রাফার সাথে রাজুর কোন যোগাযোগ নেই.. ফোন করেও সংযোগ পায় না.. প্রায় উদভ্রান্তের মতো হয়ে গেছে সে.. খাওয়া দাওয়ার ঠিক নেই শুধু সিগারেট খেয়েই আছে.. মাঝে মধ্যে ক্ষুধা বেশি লাগলে বাইরে গিয়ে হালকা খেয়ে আসে.. অনেক চিন্তা ভাবনার পর রাফার বাসায় যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়.. দরজার সামনে দাঁড়িয়ে কিছুটা ভয় কাজ করে তার মনে.. যদি রাফার বাসার কেউ তাকে অপমান করে তাড়িয়ে দেয় কিংবা যদি শুনে হঠাত্ রাফার বিয়ে হয়ে গেছে প্রবাসী কোন ছেলের সাথে.. সে আর চিন্তা করতে পারে না.. সে রাফাকে ছাড়া একমূহুর্ত হয়তো থাকতে পারবে না..
রাফা একদিন তার হাত ধরে বলেছিলঃ আমি চাই না কোন দিন তুমি আমাকে ছেড়ে চলে যাও, কথা দাও এই যে আমার হাতটা ধরেছ তা কোনদিনই ছেড়ে যাবে না.. কথা দাও..
রাজু আরও শক্ত করে ওর হাতটা ধরে বুকের কাছে নিল.. বলতে লাগলঃ আমি হয়তো থাকবো না, মিশে যেতে পারি ঐ অজানায় কিন্তু এই পৃথিবী যত দিন থাকবে, সূর্যটা পূর্ব দিকে উঠবে ততদিন আমি ছাড়তে চাইব না তোমার হাতটা.. রাফার ঐকথাটা খুব মনে পড়ছে এই মূহুর্তে তার.. অনেক ভেবে চিন্তে ডোরবেলে হাত রাখল.. ভিতরে সুমধুর সুরের মিউজিক বাজছে.. রাজু অপেক্ষা করছে অপ্রিয় কোন সত্য কথা শুনার জন্য.. মনটাকে আজ তৈরী করেই এনেছে।
তৃতীয় পর্বঃ Click This Link
১২ ই জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১০:৩৩
আকিব আরিয়ান বলেছেন: ২১ শে জুন, ২০১৩ রাত ১০:১০ তে ধন্যবাদ জানিয়েছিলাম
©somewhere in net ltd.
১|
২১ শে জুন, ২০১৩ সকাল ১১:১০
ইরফান আহমেদ বর্ষণ বলেছেন: