নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আল্লাহ পাক সুবহানাহু ওয়াতায়ালা ছাড়া কোনো প্রভু নেই, রসূল(সা:) আল্লাহর প্রেরিত রসূল।

নীলডলার

আমি একজন মুসলিম। এটাই আমার একমাত্র পরিচয়। একা এসেছি, একাই যেতে হবে।

নীলডলার › বিস্তারিত পোস্টঃ

সূরা বাকারার শেষ দুই আয়াতের ফজিলত

২৯ শে এপ্রিল, ২০১৯ দুপুর ১২:০১

সূরাতুল বাকারা। পবিত্র কোরআনুল কারীমের দ্বিতীয় সূরা। এ সূরাটির শেষ দুটি আয়াতের রয়েছে বিশেষ ফজিলত ও তাৎপর্য। নিয়মিত এ অংশটির আমল বান্দাকে নানা বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা করবে। জান্নাতের পথও সুগম করবে।

রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল (সা.)! কোরআনের কোন সূরা সবচেয়ে বেশি মর্যাদাবান? তিনি বললেন, সূরা ইখলাস। এর পর আবার বললেন, কোরআনের কোন আয়াতটি মর্যাদাবান? তিনি বললেন, আয়াতুল করছি। অতপর বলেন, হে আল্লাহর নবী! আপনি কোন আয়াতকে পছন্দ করেন যা দ্বারা আপনার ও আপনার উম্মত লাভবান হবে? নবীজী (সা.) বললেন, সূরা বাকারার শেষ আয়াত। কেননা, এ দুটি আয়াত আল্লাহর রহমতের খাজানা, যা আরশের নিচের এ উম্মতকে দান করা হয়েছে। এ আয়াতের মাঝে যা সম্পৃক্ত করা হয়েছে এর মধ্যে দুনিয়া ও আখিরাতের কোনো ভালো কাজকে বাদ দেয়া হয়নি। সূত্র: দারেমি, কিতাবু ফাযিলুল কোরআন।

এ হাদীস দ্বারা বুঝা যায়, নিশ্চয় নবী কারীম (সা.) সূরা বাকারার শেষ অংশ নিজে এবং তার সাহাবারাও ভালোবাসতেন। আর তা হলো সূরা বাকারার ২৮৫-২৮৬ নং শেষ দু্ইটি আয়াত।

آمَنَ الرَّسُولُ بِمَا أُنزِلَ إِلَيْهِ مِن رَّبِّهِ وَالْمُؤْمِنُونَ كُلٌّ آمَنَ بِاللّهِ وَمَلآئِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ لاَ نُفَرِّقُ بَيْنَ أَحَدٍ مِّن رُّسُلِهِ وَقَالُواْ سَمِعْنَا وَأَطَعْنَا غُفْرَانَكَ رَبَّنَا وَإِلَيْكَ الْمَصِيرُ (সূরা: বাকারা, আয়াত: ২৮৫)

لاَ يُكَلِّفُ اللّهُ نَفْسًا إِلاَّ وُسْعَهَا لَهَا مَا كَسَبَتْ وَعَلَيْهَا مَا اكْتَسَبَتْ رَبَّنَا لاَ تُؤَاخِذْنَا إِن نَّسِينَا أَوْ أَخْطَأْنَا رَبَّنَا وَلاَ تَحْمِلْ عَلَيْنَا إِصْرًا كَمَا حَمَلْتَهُ عَلَى الَّذِينَ مِن قَبْلِنَا رَبَّنَا وَلاَ تُحَمِّلْنَا مَا لاَ طَاقَةَ لَنَا بِهِ وَاعْفُ عَنَّا وَاغْفِرْ لَنَا وَارْحَمْنَآ أَنتَ مَوْلاَنَا فَانصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْكَافِرِينَ (সূরা: বাকারা, আয়াত: ২৮৬)

আয়াতদ্বয়ের অর্থ:

‘রাসূল বিশ্বাস রাখেন ওই সমস্ত বিষয় সম্পর্কে যা তাঁর পালনকর্তার পক্ষ থেকে তাঁর কাছে অবতীর্ণ হয়েছে এবং মুসলমানরাও সবাই বিশ্বাস রাখে আল্লাহর প্রতি, তাঁর ফেরেশতাদের প্রতি, তাঁর গ্রন্থসমূহের প্রতি এবং তাঁর পয়গাম্বরগণের প্রতি। তারা বলে, আমরা তাঁর পয়গাম্বরদের মধ্যে কোনো তারতম্য করি না। তারা বলে, আমরা শুনেছি এবং কবুল করেছি। আমরা তোমার ক্ষমা চাই, হে আমাদের পালনকর্তা। তোমারই দিকে প্রত্যাবর্তন করতে হবে।

আল্লাহ কাউকে তার সাধ্যাতীত কোনো কাজের ভার দেন না, সে তাই পায় যা সে উপার্জন করে এবং তাই তার ওপর বর্তায় যা সে করে। হে আমাদের পালনকর্তা, যদি আমরা ভুলে যাই কিংবা ভুল করি, তবে আমাদের অপরাধী করো না। হে আমাদের পালনকর্তা! এবং আমাদের ওপর এমন দায়িত্ব অর্পণ করো না, যেমন আমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর অর্পণ করেছ, হে আমাদের প্রভূ! এবং আমাদের দ্বারা ওই বোঝা বহন করিও না, যা বহন করার শক্তি আমাদের নেই। আমাদের পাপ মোচন কর। আমাদেরকে ক্ষমা কর এবং আমাদের প্রতি দয়া কর। তুমিই আমাদের প্রভু। সুতরাং কাফের সম্প্রদায়ে বিরুদ্ধে আমাদের সাহায্য কর। (সুরা: বাকারা, আয়াত ২৮৫-২৮৬ )

এ দুটি আয়াত কখন অবতীর্ণ হয়?

সহীহ মুসলিমে এ দুটি আয়াতের ব্যাপারে বর্ণিত আছে যে, ‘এ দুটি আয়াত রাসূল (সা.)-কে মিরাজের রাতে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সঙ্গে আসমানে দান করা হয়েছে। এ বিষয়ে হজরত আব্দুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূল (সা.) মিরাজের রাতে সপ্তাকাশে সিদরাতুল মুনতাহায়, আর জমিন থেকে উর্ধারোহের এখানেই সমাপ্তি ছিল। সেখান থেকে তাঁকে ওপরে নিয়ে যাওয়া হয়। মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন, যখন কুলগাছকে যা আচ্ছাদিত করার তা আচ্ছাদিত করেছিল। (সূরা নজম : ১৬)

অন্য বর্ণনায় রয়েছে, সেখানে স্বর্ণের খুদিত বিছানা রয়েছে। রাসূল (সা.)-কে তিনটি জিনিস দেয়া হলো, তন্মধ্যে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ এবং সূরায়ে বাকারার শেষ দুই আয়াত এবং তার উম্মতের মধ্যে শিরক গুনাহকারী উম্মতকেও তিনি ক্ষমা করবেন। (মুসলিম, কিতাবুল ঈমান)

আয়াতদ্বয় অবতীর্ণ হওয়ার ব্যাপারে হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, যখন এ আয়াত নবীজীর ওপর অবতীর্ণ হয় তখন নবীজী (সা.) এর সাহাবীগণের ওপর কঠিন প্রভাব পড়লো। সবাই নবীজী (সা.) এর নিকট এসে বলল, হে আল্লাহর রাসূল (সা.)! আমরা যত সম্ভব আমলের প্রতি আসক্ত হয়েছি। নামাজ, রোজা, জিহাদ ও সাদকা। অথচ আপনার ওপর এ আয়াত অবতীর্ণ হলো। নবীজী বললেন, তোমাদের পূর্বে আহলে কিতাবগণ যেভাবে বলেছে, তোমরা কী সে রকম বলতে চাও? তারা বলেছে আমরা শুনলাম ও অস্বীকার করলাম। বরং তোমরা বল, আমরা শুনেছি ও অনুসরণ করেছি। আমরা তোমার কাছে ক্ষমা চাই। হে আমাদের পালনকর্তা! তোমারই দিকে প্রত্যাবর্তন করতে হবে। তারা বলল, শুনেছি এবং কবুল করেছি। হে আল্লাহ! আমরা তোমার ক্ষমা চাই। তোমারই দিকে প্রত্যাবর্তন করতে হবে। যখন এ আয়াত পাঠ করা হলো, তাদের মুখগুলো লজ্জাবনত হয়ে পড়ল। তখন এ প্রসঙ্গে আলোচ্য আয়াত অবতীর্ণ করেন। অতপর তারা যখন এর ওপর আমল করা শুরু করলে তখন আল্লাহ তায়ালা অবতীর্ণ করলেন, ‘আল্লাহ কাউকে তার সাধ্যাতীত কোন কাজের ভার দেন না। সে তাই পায় যা সে উপার্জন করে এবং তাই তার ওপর বর্তায় যা সে করে। হে আমাদের পালনকর্তা! যদি আমরা ভুলে যাই কিংবা ভুল করি তবে আমাদেরকে অপরাধী করো না। আল্লাহ বলেন, হ্যাঁ! হে আমাদের প্রভু! এবং আমাদের দ্বারা ওই বোঝাবহন করতে দিও না যা বহন করার শক্তি আমাদের নেই। আল্লাহ তায়ালা বলেন, হ্যাঁ। আমাদের পাপ মোচন করো! আমাদেরকে ক্ষমা করো এবং আমাদের প্রতি দয়া করো। তুমিই আমাদের প্রভু। কাজেই কাফের সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাদের সাহায্য কর। আল্লাহ বলেন, হ্যাঁ। সূত্র: সহীহ মুসিলম, কিতাবুল ঈমান।

এ আয়াতদ্বয়ের ব্যাখ্যা হলো, রাসূল (সা.) ও ঈমানদার বান্দাগণকে সুংসংবাদ দেয়া। কেননা, তারা রাসূল (সা.) এর ওপর যা অবতীর্ণ হয়েছে তার ওপর ঈমান এনেছে এবং এ কথার ওপরও ঈমান এনেছে যে, আল্লাহ এক, একক। তিনি অমুখাপেক্ষী। তিনি ছাড়া কোনো ইলাহ নেই। এবং তিনি ব্যতিত কোনো প্রভু নেই। তারা সকল নবী রাসূল, তাদের ওপর আসমান থেকে অবতীর্ণ কিতাবসমূহকে সত্য বলে স্বীকার করে। তাদের কারো মধ্যে পার্থক্য করে না। কাউকে বিশ্বাস ও কাউকে অবিশ্বাস করে না। বরং তাদের নিকট সবই সত্যবাদী। সকলই ভালো, সুসংবাদদাতা, পথ প্রদর্শক, ভালো রাস্তার রাহবার। কেউ যদি আল্লাহর নির্দেশে তাদের শরীয়তের এর কিছু বিলুপ্ত করে তবে সর্বশেষ নবী ও রাসূল (সা.) এর শরীয়তকেও বিলুপ্ত করা যাবে এবং তার শরীয়তেই মহা প্রলয় তথা কিয়ামত সংঘটিত হবে এবং সব সময় এ নবীর উম্মতের একটি দল হক প্রচারে রত থাকবে। আর তাদের কথা তারা বলেছে, আমরা শুনেছি এবং কবুল করেছি। অর্থাৎ হে আল্লাহ! আমরা আপনার কথা শুনেছি বুঝেছি এর ওপর কায়েম রয়েছি এবং সে অনুপাতে আমরা করার চেষ্টা করছি। আমরা তোমার কাছে ক্ষমা চাই। এ কথার মাঝে রয়েছে ক্ষমা দয়া ও মেহেরবানী।

সূরা বাকারার শেষ এ দুটি আয়াতে কারীমার ফজিলত প্রসঙ্গে নবী (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি রাতে এ দুটি আয়াত পাঠ করবে তার জন্য এটাই যথেষ্ট।’ এর ব্যাখ্যায় কেউ বলেন, এর অর্থ রাতের নামাজ, কেউ বলেন শয়তান থেকে মুক্তি, কেউ বলেন বিপদ থেকে মুক্তি, কেউ বলেন, মানুষ ও জ্বীনের অনিষ্ট থেকে মুক্তি।

নবীজী (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ তায়ালা সাত আসমান ও জমিন সৃষ্টি করার এক হাজার বছর আগে কোরআন লিখেছেন এবং তার মাঝে দুটি আয়াত অবতীর্ণ করেছেন। যে ঘরে এ দুটি আয়াত পাঠ করা হয় না সে ঘরে শয়তান অবস্থান করে।’ সূত্র: সহীহ মুসলিম।

হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, জিবরাঈল (আ.) নবীজী (সা.) এর সামনে বসা ছিলেন। তিনি বিপরীত দিকে থেকে একটি আওয়াজ শুনলেন। এরপর মাথা ওপর দিকে তুললেন, এরপর বলেন, এটা আসমানের দরজা। আজকে খোলা হয়েছে। এদিন ছাড়া অন্য কোনো দিন খোলা হবে না। অতপর তা থেকে একজন ফেলেশতা বের হলো এবং বলল, এটা একজন ফেলেশতা জমিনে অবতীর্ণ হয়েছে, আজকের দিন ছাড়া কোনো দিন অবতীর্ণ হবে না। ওই ফেরেশতা নবীজীকে সালাম দিল এবং বলল, আপনাকে দুটি সুসংবাদ দিচ্ছি, আপানাকে দুটি জিনিস দেয়া হবে যা আপনার পূর্বে কাউকে দেওয়া হয়নি। সূরা ফাতিহা ও সূরা বাকারা শেষ দুটি আয়াত। যে কেউ তা পড়বে তাকে প্রতিদান দেওয়া হবে। সূত্র: মুসিলম, কিতাবু সালাতুল মুফাসসিরীন, বাবে ফজলুল ফাতিহা ও খাওয়াতিমে সূরাতুল বাকারা।

সূত্র : ডেইলি বাংলাদেশ

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৯ বিকাল ৩:০৮

করুণাধারা বলেছেন: একটি ভাল বিষয় শেয়ার দেয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। আমি এই দুটি আয়াত নিয়মিত পড়ি, তবে অনেক কিছু জানা ছিল না, এই পোস্ট পড়ে জানতে পারলাম।

২| ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৯ বিকাল ৩:৩৪

মাহমুদুর রহমান বলেছেন: তারা সকল নবী রাসূল, তাদের ওপর আসমান থেকে অবতীর্ণ কিতাবসমূহকে সত্য বলে স্বীকার করে। তাদের কারো মধ্যে পার্থক্য করে না।

বর্তমান পৃথিবীতে তাই করা হচ্ছে।বিশেষ করে অনেক অনেক হুজুরদের এই কাজটা করতে দেখেছি।তার আল্লাহর রাসূল (সঃ) এর সাথে অন্য নবীদের মাঝে পার্থক্য সৃষ্টি করছে,আমাদের নবীকে এমন ভাবে উপরে তুলে নিচ্ছে যার ফলে বাকী নবী রাসূলদের নিচে নামিয়ে দিচ্ছে যা মোটেও সমীচিন নয়।এই কাজটা আমার কাছে অপছন্দনীয় কারন এটা আল্লাহর কাছে অপছন্দনীয়।

আল্লাহ্‌ সবাই কে সহীহ বুঝ দান করুন।

৩| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৯ রাত ৮:৫১

আর্কিওপটেরিক্স বলেছেন: কমেন্টের উত্তর দিতে সবুজ তীরে ক্লিক করে উত্তর লিখুন :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.