![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন মুসলিম। এটাই আমার একমাত্র পরিচয়। একা এসেছি, একাই যেতে হবে।
নামাজ পড়া, রোজা রাখা, জাকাত দেয়া, মসজিদে যাওয়া-আসা, নেক-আমল তথা ফারায়েজ, ওয়াজিবাত ও সুনান আদায়কেই ইবাদত মনে করেন অনেক মানুষ। ‘হ্যাঁ’, এগুলো অবশ্যই ইবাদত। এসব ইবাদত মানুষকে আল্লাহর আজাব থেকে মুক্তি দেবে। তেমনি এগুলোর পাশাপাশি মানবতার সেবা তথা প্রতিবেশি ও আত্মীয়-স্বজনের খোঁজ-খবর রাখা এবং জীবের প্রতি দয়া করাও ইবাদত। এগুলোও মানুষকে আল্লাহর আজাব থেকে মুক্তি দেবে।
মানবতার প্রতি দরদ না থাকলে, আত্মীয়-স্বজনের প্রতি ভালোবাসা না থাকলে, প্রতিবেশি অধিকার যথাযথ আদায় না করলে কিংবা অন্যের অধিকার যথাযথ আদায় না করলে কোনো মানুষই নিজেকে মুমিন হিসেবে দাবি করতে পারবে না।
কোনো মানুষ যদি নামাজ-রোজা, নেক-আমল তথা ফারায়েজ, ওয়াজিবাত ও সুন্নান আদায় না করে কিংবা অমুসলিমও হয় আর সে যদি প্রতিবেশি হয় তবে তার প্রতিও বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে কেননা মানবতার সেবা বা তার অধিকারগুলো যথাযথ রক্ষা করাও ইবাদত।
হজরত শেখ শাদি রাহমাতুল্লাহি আলাইহি তার বিখ্যাত গ্রন্থ ‘গুলিস্তা-বোস্তা’তে এ রকম একটি ঘটনার উল্লেখ করেছেন। আর তাহলো-
আল্লাহর বন্ধু হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালামের অভ্যাস ছিল- তিনি মেহমানছাড়া খাবার খেতেন না। মেহমানের খোঁজে যদি একমাইলও হাটার প্রয়োজন হতো, তিনি তাই করতেন।
একদিন হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালাম এক পথিককে খাবারের দাওয়াত দিয়ে নিয়ে আসলেন। মেহমানকে নিয়ে তিনি খাবার খেতে বসলেন এবং বিসমিল্লাহ বলে তিনি খাবার খাওয়া শুরু করে দিলেন। আর মেহমান (পথিক) ‘বিসমিল্লাহ’ না বলেই খাবার খাওয়া শুরু করলেন।
হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালাম পথিককে বললেন, ‘হে পথিক! তুমি খাবার শুরুর সময় ‘বিসমিল্লাহ’ বলনি কেন?
পথিক বললেন, ‘আমি অগ্নিপূজক। আমি বিসমিল্লাহ বলতে পারি না।’
তখন হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালাম পথিককে খাবার খাওয়া অবস্থায়ই তাড়িয়ে দিলেন।
কিছু সময় পর আল্লাহ তাআলা ওহি নাজিল করেন বলেন-
‘হে ইবরাহিম! ‘বিসমিল্লাহ’ না বলার কারণে তুমি লোকটিকে একবেলার খাবার দিয়ে আবার খাওয়া অবস্থা থেকেই উঠিয়ে দিলে। আর আমি (আল্লাহ) তার জীবনের শুরু থেকেই খাবার দিয়ে আসছি।’
এরপর শেখ সাদি রাহমাতুল্লাহি আলাইহি উল্লেখ করেন-
মানবতার সেবাই মারেফাত। তাসবিহ হাতে, জায়নামাজে বসে এবং জীর্ণ শরীর ও ছিন্ন পোশাকে উপবাস করলেই আল্লাহর প্রিয় হওয়া যায় না।
বরং আল্লাহর বিধান ও বিশ্বনবির সুন্নাহগুলো আদায়ের পাশাপাশি আল্লাহ আজাব থেকে রক্ষা পেতে ও সফলতা লাভ করতে হলে-
‘মানবতার সেবা তথা প্রতিবেশি ও আত্মীয়-স্বজনের খোঁজ-খবর রাখা এবং জীবের প্রতি দয়া করা আবশ্যক।’
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজ পরিবারের প্রতি দান তথা খরচের ব্যাপারে যেমন উপদেশ দিয়েছেন আবার পাড়া-প্রতিবেশির অধিকার ও ক্ষুধার্থ প্রতিবেশির প্রতি সহায়তার কথাও বলেছেন। তিনি বলেছেন-
‘প্রতিবেশীকে গোশত/তরকারি না দিতে পার একটু ঝোল হলেও দাও।’
তিনি আরও বলেছেন-
‘সেই ব্যক্তি মুমিন নয়, যে পেট ভরে খায় অথচ তার পাশের বাড়ি লোক/প্রতিবেশী উপোস থাকে।’
তাই ক্ষুধার্থ ব্যক্তি খাবার দেয়া, ইয়াতিম ও আত্মীয়-স্বজনকে সহযোগিতা করা। এসবই সাওয়াবের কাজ। আবার ঋণগ্রস্ত ব্যক্তিকে আর্থিকভাবে যেমন সহায়তা করা দরকার আবার অর্থ না থাকলে ঋণ পরিশোধে সহায়তা করাও সাওয়াবের কাজ।
মনে রাখতে হবে
আত্মীয়-স্বজন ও ইয়াতিমদের ক্ষুধা নিবারণ তথা সহযোগিতায় রয়েছে দ্বিগুণ সাওয়াব। আর তাহলো-
>> ক্ষুধার্ত ব্যক্তির ক্ষুধা দূর করা কিংবা সহযোগিতা করার সওয়াব।
>> আত্মীয়-স্বজনের খোঁজ-খবর রাখার সাওয়াব।
বর্তমান সময়ে এমন অনেক সচ্ছল পরিবার আছে যাদের প্রতিবেশি ক্ষুধার যন্ত্রণা নিয়ে রাত-দিন অতিবাহিত করে কিন্তু তারা তাদের খবর রাখে না। অথচ বিশ্বনবির আদর্শ হলো-
‘মানুষের দরজায় দরজায় গিয়ে তাদের খোঁজ-খবর নেয়া। তাদের দৈনন্দিন জীবনের খোঁজ-খবর নেয়া। অভাবিদের অভাব দূর করার চেষ্টা করা।’
সাহাবায়ে কেরাম প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এ আদর্শের পুরোপুরি অনুসরণ ও অনুকরণ করেছেন। রাতের আঁধারে প্রতিবেশির বাড়িতে গিয়ে খোঁজ-খবর নিতেন। ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু নিজ মাথায় খাবারের বস্তা বহন করে নিয়ে অভাবির বাড়িতে দিয়ে এসেছেন।
আল্লাহ চাইলে বান্দার নামাজ রোজা সংক্রান্ত ত্রুটিগুলো ক্ষমা করে দিতে পারেন। কিন্তু গরিব-অসহায়, আত্মীয়-স্বজনকে দূরে ঠেলে দিলে, তাদের অধিকার খর্ব করলে কোনো মানুষই প্রকৃত মুমিন দাবি করতে পাবে না।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে মানবতার সেবা করার তাওফিক দান করুন। গরিব-অসহায়, আত্মীয়-স্বজনের অধিকারের প্রতি যত্নবান হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।
২| ০৫ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ১:৪২
রাজীব নুর বলেছেন: পোষ্ট টি ভালো লাগলো।
©somewhere in net ltd.
১|
০৫ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ১:০১
নেওয়াজ আলি বলেছেন: Ameen