নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মেডলি ট্রাভেল লাভিং ওয়ান।

মোরতাজা

আমি সাধারণের একজন। বেড়াতে, বেড়ানোর আয়োজন করতে ভালোবাসি।

মোরতাজা › বিস্তারিত পোস্টঃ

কিস্তি ৭৯ : নারী ও বন্ধু

২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৩৩

কিস্তি ৭৯:

আমার ক্যাম্পাস জীবনের বন্ধুদের মধ্যে সাংবাদিক শামীম অন্যতম। ওকে আমার বরাবরই বুদ্ধিদীপ্ত ও যৌক্তিক মনে হয়েছে। বিশ্বাস করতাম যে কোনো ক্রাইসিস উতরে যাওয়ার ক্ষেত্রে ওর পরামর্শ আমার জণ্য সুবিধের হবে। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। আমিও ভুল করেছি। ভুলে গেছি প্রেম-নারী বন্ধুদের নিয়ে ভাবনা এব সময়কে ধারণ করে যৌক্তিক জায়গায় পৌছানোর সঠিক পথ থেকে মানুষকে দূরে রাখে।

মীর জাফর সাহেবদের আচরণে আমি ভেঙে পড়ার পর কি করণীয় সেটি নির্ধারণে আমি সর্বোচ্চ নির্ভর করেছি শামীমের ওপর। কিন্তু বিষয়টা গুরুত্ব ঠিক সেভাবে উপলব্ধি করেনি শামীম, যেভাবে করা উচিৎ ছিল। বরং ওর কিছু কিছু সিদ্ধান্ত ছিল শিশুতোষ। যেটি আমি পরে বুঝতে পেরেছি। তখন আর কিছু করার ছিল না।

শামীম তখন সাংবাদিক সমিতির সেক্রেটারি, তার অনেক ক্ষমতা। কিন্তু ক্ষমতা দিয়ে সব হয় না। আর পেশি শক্তি প্রয়োগ করলে আমিই করতে পারি, তার জন্য ওর দরকার পড়ে না। আমি সেটি চাইলাম না বলে বিষয়টা তালগোল পাকালো।

এর একটি হলো- আমি কমিটি ভেঙ্গে দিলাম । এ সিদ্ধন্তটি আমার সঠিক ছিল না। কিন্তু নৈতিক মানদণ্ডে এটি উত্তীর্ণ । কারণ আমি যখন সব ডকুমেন্ট দেখলাম, তখন মনে হলো নির্বাচনটা প্রহসনের পর্যায়ে ছিল। বাবু কোনো রেজুলেশনই লেখেনি। তার ওপর অফিস থেকে অনেক ডকুমেন্ট সরিয়ে ফেলা হয়। এটি কে সরিয়েছে আমি নিশ্চিত নই। ডাটসের সব ধরণের নিউজ ক্লিপিং সরিয়ে ফেরা হয়। এতে আমি ক্ষুব্ধ হই। এই ক্ষুব্ধ হওয়াটা অসঙ্গত বলে আমি মনে করিনি, এখনো করি না।

আর্থিক দিক থেকে আমার সততা নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনো সুযোগ আছে কিনা জানি না। টাকার স্পর্শটা আমি বাবুকে দিতাম নিজে কখনো নিযেছি বলে মনে পড়ে না। আমার সময় গ্লোরিয়াকে অর্থ সম্পাদক করেছিলাম। ডাটসের কাজে আমি নিজে কিছু টাকা খরচ করেছিলাম, যা পাওনা ছিল আমার। কিন্তু সেটি আমি নিতাম না। আগেও নিইনি।

আমি চেয়োছলাম টাকা পয়সার সব হিসাব রেডি করে আমার কাছে বুঝিয়ে দেয়া হোক। অফিস খরচ বাদ দিয়ে বাকি টাকা নতুন কমিটির কাছে তুলে দেবো। কিন্তু কোনো এক অজানা কারণে গ্লোরিয়া আমার কাছে হিসাব দিতে গড়ি মসি করে। এতে আমি ভীষণ কষ্ট পাই। কারণ হলো গ্লোরিয়াকে আমি আলাদাভাবে দেখি- নিজের বোনের মতই। কিন্তু সেই সময় ওর এ আচরণ আমার ভালো লাগেনি। একইভাবে আমার আচরণও তার ভালো লাগার কথা নয়। আমি নব নির্বাচিত কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে নতুন আহবায়ক কমিটি ঘোষনা করি। একই সাথে বেশ কয়েকজনকে বহিষ্কার করি। এটি একেবারেই একটা অপরিপক্ক সিদ্ধান্ত ছিল। তবে ডাটসের সে সময়কার গঠনতন্ত্র মতে এর ভিত্তি ছিল।

অফিস ডকুমেন্ট খোয়া যাবার কারণে আমি অফিসের তালা বদল করার নির্দেশ দিই। এবং এটি জানিয়ে নোটিশ দেয়া হয়। কিন্তু এটাকে ভিন্ন চোখে দেখেছেন অনেকে। দেখতেই পারেন। সবার দেখার অ্যাঙ্গেল একই রকম হবে না।

তালা খোলার ব্যবস্থাও আমি করেছি। কিন্তু তার আগে বাপ্পী বিদ্রোহ করে, এফ রহমান হল থেকে ছেলেপুলে নিয়ে মহড়া দিচ্ছে। আমার কাছে জহু হলের পুলাপাইন বলে যাই মাইরা আসি। কিন্তু আমি সে অনুমোদন দিতে পারিনি।

অথচ বাপ্পীকে হলে তোলা এবং তার আগে তাকে এসএম হলে রাখার ব্যবস্থাটা আমার সাতৈ সম্পর্কের খাতিরে শামীমই করেছিল।



যেই মৌ ও রিমিতে আমি ডাটসে পেতামনা, নানা অজুহাতে তারা আসতো না। তাদের সাথে নিত্য দেখা হতে লাগলো। আমি গিয়েছি বেশ কয়েকদিন। সমস্যার সমাধানে অনেক রকম তদ্বির হয়েছে। শাহেদ নামে একজন লোক আছেন, যিনি নিজেকে ডাটসের অনেক বড় কাণ্ডারি মনে করেন, তাকে ডেকে আনলেন হেলাল ভাই। সাবেক সভাপতি ও সম্পাদকদের জড়ো করলেন। আলমগীর ভাইয়ের (টিএসসির পরিচালক) রুমে বসে আমরা সমস্যার সমাধানে আমি নিঃশর্তভাবে সব অন্যায়কে মেনে নিতে অনুরোধ উপেক্ষা করতে পারিনি। এটা আমার চরিত্রের সাথে যায় না, তবুও করতে হয়েছে, কারণ নতুন কমিটির কোনো দোষ নেই। দোষ আমার বন্ধূ বাবু ও আমার আস্তিনের নিচে লুকিয়ে থাকা মীর জাফরদের। যারা প্রকাশ্য বিরোধী তাদের আমি কোন কারণে কষ্ট দেবো।

নিজেই পরাজয় মেনে নিয়ে ডাটসের শেষ মিটিংটা করেছিলাম মুনীর চৌধুলী কনফারেন্স হলে। সেখানে দেখি ডাটসের উপদেষ্টা আর সহকর্র্মীর অভাব নাই। মঞ্চে লম্বা লাইন। আমি সবাইকে অভিনন্দন জানিয়ে সুন্দর ভবিষ্যত কামনা করে বক্তব্য শেষ করেছিলাম। সাধারণ সদস্যরা তখনো বিষয়টা সম্পর্কে ক্লিয়ার কোনো পিকচার পায়নি। তাই ওরা আমাকে সহমর্মিতা প্রকাশ করতে এগিয়ে এলো। বক্তব্যের পর আমি আর সেখানে যাইনি।

ডাটস ছেড়ে যাওয়ার পর মনে হতে লাগলো আমি অক্সিজেনের অভাবে ভুগছি। আমার মন খারাপ করা রোগ হলো। সব সয়ে নিলাম, কিন্তু নাটকের শেষ দৃশ্যটা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারলাম না। কিন্তু না মানলে কি ,যা হবার তা হয়েছে। ভাগ্য বলে মেনে নিয়ে আমি সামনে তাকালাম। ভাবলাম- এটা একটা দুর্ঘটনা। এটা কম কিসে, ডাটসের শত শত ছেলে মেয়ে আমাকে মনে রেখেছে। দেখা হলে ছুটে আসে, সে আমার বিরোধি হলেও। আমরা খুবই ভালো লাগে। আপ্লুত হই। এখানে আমি ছিলাম। আমি আছি মানসিকভাবে। সামনেও থাকবো।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.