![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
১৯৭১ সালের এপ্রিল মাসের দিকের কথা। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে সারা বাংলাদেশে। যুদ্ধের আঁচ লেগেছে মানিকগঞ্জে ও। পাক হানাদার বাহিনী ঘাটি গেড়েছে মানিকগঞ্জে। লোকাল কিছু উৎসুক পাকিস্তান প্রীতি লোকজন তাদের সাহায্য করছে। পরিস্থিতি খুব একটা ভালো নয়। নির্বিচারে মানুষকে হত্যা করছে পাক হানাদার বাহিনীরা। জ্বালিয়ে পুরিয়ে দিচ্ছে ঘরবাড়ী। অনেকেই বাড়ীঘর ছেড়ে নিরাপদ স্থানে চলে গেছেন। এই অন্যায় অবিচার সহ্য করার মত নয়।
ফজর নামের এক তরুণ মানিকগঞ্জ দেবেন্দ্রনাথ কলেজের বাণিজ্য বিভাগের ৩য় বর্ষ ছাত্র। হৃদয়ে তার দেশপ্রেম। ভাষা আন্দোলনের সময় বয়স ছিল ৩ বছর। সে সময় আন্দোলনে যোগদিতে পারেন নি বলে মনে মনে আক্ষেপ ছিল। কিন্তু এবার তো সময় এসেছে সেই আক্ষেপ দূর করার। ফজর তার আরো ৩/৪ বন্ধুর সাথে মুক্তিযুদ্ধে যাবার বিষয়টা শেয়ার করলেন। তাদের একজন হেসে বললেন শুধু শুধু এইসব কাজে যেয়ে লাভ কি আমরা কি পারবো ওদের সাথে। ওদের অস্ত্র সশস্ত্রের তো আর অভাব নেই। আমাদের ছাড়পোকার মত মারবে তাছাড়া এভাবে কিছুই হবে না উলটা আমাদের প্রাণ দিতে হবে। দরকার নেই এইসব কিছুতে যাবার। ফজর নামের সেই তরুন মনোক্ষুন্ন হলো। কিন্তু তার রক্ত যে টগবগ করে ফুটছে সেই যুদ্ধে যাবার জন্য। তিনি এই যুদ্ধে যাবার কথা শেয়ার করলেন তার পাড়ার এক চাচার সাথে। তিনি ও উৎসাহের জায়গায় নিরুৎসাহিত করলেন। বললেন এভাবে তোরা কয়টা ফালাফালি লাফালাফি করে কয়টা বোমা ফাটিয়ে কি বাংলাদেশকে স্বাধীন করতে পারবি! ভালো মত নামাজ কালাম পড়। মুসলিম ভাইদের সাথে আছি আমাদের কি চিন্তা। সব চিন্তা তো সেই বিধর্মীদের। একটাই ধর্ম ইসলাম, একটা রাষ্ট্র পাকিস্তান। ফজরের মনে অনেক কথাই ছিল কিন্তু তিনি কিছুই বললেন না।
তরুণ ফজর তার পরে নিজের আবেগ কে দমিয়ে রাখতে পারলো না। কিন্তু তিনি কার সাথে শেয়ার করবেন তা আর বুঝতে পারলেন না। এপ্রিলের শেষ দিকের ঘটনা তিনি ধামরাই উপজেলায় একটা কাজে গিয়েছিলেন। সেখানে তার সাথে কিছু বড় ভাইয়ের দেখা হয় যারা মুক্তিযুদ্ধে যাবেন বলে মনঃস্থির করেছেন। ফজর তাদের সাথে কথা বলেই উদ্যম ফিরে পেলেন। ঠিক করলেন তার বন্ধুরা আরকেউ যাক আর না যাক সে যাবেই। ধামরাই থেকে কাজ শেষ করে সোজা ফিরে গেলেন মানিকগঞ্জে। ফিরেই ফজর তার বাবার কাছে মুক্তিযদ্ধে যোগদান ব্যাপারে বললেন। বাবা প্রথমে না রাজি হলেও পরে রাজি হলেন। বন্ধুদের ফেলে রেখে চলে গেলেন ধামরাই বড় ভাইদের সাথে। এরপর বাকীটা তো ইতিহাস।
মে থেকে ডিসেম্বর ৮ মাস যুদ্ধ করেছেন সাভার –ধামরাই -মানিকগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায়। বড়ভাইদের সঙ্গে সফলতার সাথে শেষ করেছেন একেকটা মিশন। হারিয়েছেন কয়েকজন সহযোদ্ধাকে। নিজেও পায়ের পাতায় গুলি খেয়েছেন। তাতে কি দেশ তো স্বাধীন হয়েছে। মহান মুক্তিযদ্ধ থেকে ফিরে এসে জানলেন তার সেই বন্ধুদের একজনকে হানাদার বাহিনীরা ধরে নিয়ে গেছেন। আর ফেরত আসেন নি। অপর দুজন ভারতে গিয়ে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিয়েছিলেন। পরে তারা ফিরে আসেন ১৯৭২ সালে।
এই দুই বন্ধু ফজরের সাথে কথা দেখা করতেও লজ্জা পাচ্ছিলেন কেননা পরে তারা তাদের নিজেদের ভুল বুঝতে পেরেছিলেন। ফজরকে তারা বুকে জড়িয়ে ধরে ক্রন্দন স্বরে বলেন দোস্ত আমাদের বেঁচে থাকার অধিকার নাই। আমাদের ক্ষমা করিস। আমরা বাংলা মায়ের অযোগ্য সন্তান। ফজর বললেন সবাই সব কিছু পারে না। তবে তোদের দেশের প্রতি ভালোবাসা আছে এইটাই যথেষ্ট। দেশকে কিছু দিতে পারিস নাই ঠিক আছে কিন্তু ক্ষতি তো আর করিস নাই। এইটাই বা কয়জন পারে।
ফজর নামের যে তরুণ ছেলেটির মুক্তিযুদ্ধের সময়কার কাহিনী বললাম তিনি আর কেউ নন আমার বাবা। তিনি ১৯৯৯ সালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ইন্তেকাল করেন যখন আমি ক্লাস নাইনে পড়ি। গল্প খানার কিছু অংশ তার থেকে শুনা। বাকী অংশ শুনেছি গত বছর রোজার ঈদে গ্রামে গিয়েছিলাম ধামরাই এ আব্বুর সেই এক বড় ভাইয়ের কাছে।
আমার চলমান লেখা মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক অসম্পূর্ণ উপন্যাস “মুক্তির সূর্য” একটি অংশ বিশেষ। এই ব্লগটি উতসর্গ করলাম তাদের জন্য যারা আমাকে বলেছিল শাহবাগে আমি যাইয়া কি করি / কি ফালাই !!?? তাদের কে যেতে বললে তারা বলেন এত আজাইরা সময় তাদের কাছে নাই। তাদের কে বলতে চাই মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। ১৯৭১ সালে গিয়েছিলেন আমার বাবা তার বন্ধুদের ফেলেই আর আমি ২০১৩ সালে যাবো না কেন??? রাজাকার যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এই বাংলায় করতে হবেই হবে। আর তোরা যারা নব্য রাজাকার তারা বাসায় বসে বসে কি ফালাস / কি ফালাইলেন সেইটা আমার প্রশ্ন। খারাপ লাগে আমার বাবার বন্ধুরা তো যুদ্ধে যাননি কিন্তু পরে তাদের ভুল ভেঙ্গেছে। কিন্তু আমার কিছু বন্ধু এবং বড় ভাইদের ভুল এখনো ভাংগে নি। আগামীতে ভাঙবে সেই আশায় থাকলাম।
২| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১:৫৭
দেবগুরু বলেছেন: ফাসিঁ ফাঁসি ফাঁসি চাই, রাজাকারের ফাসিঁ চাই.. জামাত -শিবির নিষিদ্ধ কর...
৩| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ২:০১
দেবগুরু বলেছেন: ফাসিঁ ফাঁসি ফাঁসি চাই, রাজাকারের ফাসিঁ চাই.. জামাত -শিবির নিষিদ্ধ কর..
আজ এসব দাবির সাথে একমত প্রকাশ করেছে বি-এন-পি ।
এখানে-http://www.amardeshonline.com/pages/details/2013/02/13/187682#.URqa5h1QEXg
৪| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১১:৪৭
চলতে ফিরতে দেখা বলেছেন: কেন আমরা শাহবাগ যাই
-এখানে এলে সব কিছু ফ্রি পাওয়া যায় এজন্য।
-টাকা পাওয়া যায় এজন্য।
-টিভিতে নিজের চেহার দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা আছে এজন্য।
-নিজেকে নেতা বানানোর জন্য।
-আর..... বাকি থাক।
৫| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:২৫
স্পাইসিস্পাই001 বলেছেন: চলতে ফিরতে দেখা @ আপনারা কি আর ভাল হবেন না নাকি?????
এইসব বলে নিজের মান-সম্মান , বংশ পরিচয় ডোবাতে খারাপ লাগে না....।
রাজাকারের ফাসি চাই ....।
জয় বাংলা
৬| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:০৫
নীলমামুন বলেছেন: চলতে ফিরতে দেখা @ সব কিছু তো ফ্রি পাওয়া যায় তার পরেও তো আপনারা আসেন না ... ঐ রাজাকার যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষ নিয়ে ঘরেই বসে আছেন ... আর টাকার কথা বললেন এই পর্যন্ত ৬ দিন গেলাম একদিন ও তো টাকা পাইলাম না ... আর আপনার কি ধারণা টাকা দিলেই কি লোকজন যাইতো ... রাজনৈতিক নেতাদের বিভিন্ন সমাবেশে টাকা পয়সা দিয়ে লোক আনায় ঠিক ই তবে তাদের কে এই ৮/৯ দিন টানা বসিয়ে রাখতে পারবেন ...
ব্লগটির নিচের অংশে বলেছিলাম আব্বু তার নিজের দুই বন্ধুকে বলেছিলেন দেশকে ভালোবাসিস যুদ্ধে যাস নাই ঠিক আছে কিন্তু ক্ষতি তো আর করিস নাই ... আপনারা দেশকে ক্ষতিগ্রস্থ করছেন।
৭| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৮:৩৩
চলতে ফিরতে দেখা বলেছেন: ছবি দেখুন, আর সত্য উপলব্ধি করার চেষ্টা করুন।
আজকের খবরের কাগজও দেখুন
৮| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:১১
নীলমামুন বলেছেন: ভাই শুধুমাত্র ছবি দেখে তো বোঝার উপায় নাই .। আর আপনি তো একটা পত্রিকার লিংক দিলেন অন্য আরেকটা পত্রিকার লিংক দেননা ভাই .। একটু দেখি ....
©somewhere in net ltd.
১|
১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১:১৪
("_") বলেছেন: ফাসিঁ ফাঁসি ফাঁসি চাই, রাজাকারের ফাসিঁ চাই.. জামাত -শিবির নিষিদ্ধ কর...