নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
শিশুর মত চোখ দিয়ে দেখি আমার এই বিশ্ব।মানুষ স্বপ্নের কাছে হেরে যায় না, হেরে যায় নিজের প্রত্যাশার কাছে। প্রত্যাশা থাকে আকাশচুম্বী অথচ প্রচেষ্টায় থাকে শুধুই স্বপ্ন।
একটা পরিচিত ভাইরাস প্রতিনিয়ত আমাদেরকে কাবু করে ফেলে।চলতে, ফিরতে, ঘুমাতে,খেতে এমন কী ফ্রেশ রুমে গিয়েও ফ্রেশ হবার সময়ে আক্রমণ করে!ভাইরাসের নামটি সবাই জানে।আমি প্রথম জেনেছিলাম ক্লাস ফাইভে থাকতে।সেই সময়ে বুঝলাম, হাড়ে হাড়ে টের ও পেলাম।এবার একটু ওর সাথে পরিচয় করিয়ে দিই,ওর নাম মন খারাপ।মন খারাপকে আমি ডাকি উদাসী। মন খারাপ মানে উদাসী, আর উদাসী মানেই ভাইরাস, আপনি ভালোবেসে যাকে বলবেন আজ মন খারাপ সেও সাথে সাথে এই রোগে আক্রান্ত হবে,শতভাগ নিশ্চয়তা দিচ্ছি। যদি না হয় আমার সাথে দেখা করে চকোলেট নিয়ে যাবেন।তবে অবশ্য মনে রাখবেন মিথ্যা কথা বলে চকোলেট খেলে দাঁতে কিন্তু ইল্লি ইল্লি পোঁকা হবে,তখন কিন্তু বলবে শকুনের দোয়ায় গরুও মরে!!
উদাসী এমন এক ভাইরাস যখন কোন ছেলের হাত ধরে তখন সে প্রথমে ছেলে হয়ে যায়।তারপর গাছের ডালপালা যেমন করে বাড়ে ঠিক তেমনি করে বাড়তে শুরু করে।এক সময় বাড়তে বাড়তে সারা শরীরে চলে আসে।উদাসীকে সামলাতে সে তখন ইচ্ছে মত অনেক কিছু করে।মনে হয় এটা করলে মন ভালো হয়ে যাবে।এমনকি অনেকে ই আছে যারা জানেই না যে তারা উদাসীর প্রেমে পড়েছে যে ধরা।এখন কী আর করা! এই ভাবেই উদাসীর সাথে সারাটি সময় কেটে যায় তাদের।
আর উদাসী যখন মেয়ের হাত ধরে তখন সে মেয়ে হয়ে যায় উদাসিনী। সে মেয়ে নিজের চুল এলিয়ে বারান্দায় ঝুলিয়ে রাখে।যদি সে চুল বেয়ে গল্পের রাজকুমার চুপটি করে আসে!কেউ তো আসেনা মাঝখান দিয়ে উদাসীর একচ্ছত্র অত্যাচার। এই উদাসী ছেলেদের চেয়ে বেশি ধরে মেয়েদের।ব্যাপারটা এমন নয় যে মায়ের পেট থেকে বেরিয়ে যে কান্না দেয় সেই থেকে উদাসীর আক্রমণ। মেয়েরা ভীষণ অভিমানী। আর এই অভিমানী মেয়েদেরকে সব চেয়ে বেশিই মন খারাপের ভাইরাস থুক্কু উদাসী।
"উদাসী তুমি কার"- সে সকলের।সবার জীবনেই সে আসে গোপনে কিংবা ঢাক ঢোল পিটিয়ে।কেউ সেটাকে প্রশ্রয় দেয় কেউ দেয় আশ্রয়। আর কেউ আমার মত যুদ্ধ করে,মন খারাপ হলেও নিজেকে বলে আমার মন ভীষণ ভাল।
আমার মন ভাল, আমার মন ভাল বলে নিজেকে বলতে বলতে উদাসী পালিয়ে যায় এক সময়।
উদাসী যখন আসে আমায় কিচ্ছু করতে দেয় নাহ ভুল হল,কিছু করতে দেয়,আমাকে দিয়ে শুধু খাওয়ার কাজ আর ঘুম পাড়ানোর কাজ দুটো করিয়ে নেয়।আমি হেরে যায় কিন্তু আবার জিতের আশায় জেগে উঠি।মনে মনে ভাবি, এই জগতে সবচেয়ে ভাল অবস্থায় আছি আমি,অন্য সবাই কতইই না কষ্টে আছে।আমার বয়সী অনেক মানুষই কবরে শুয়ে হিসাব দিতে হচ্ছে,অথচ আমি এখনো বেচেঁ আছি আলহামদুলিল্লাহ্, চাইলে পাপের ক্ষমাও চেয়ে নিতে পারছি।যেটুকু কষ্ট আছে তা তো থাকবেই।কষ্ট বিহীন কোন মানুষ হতে পারেনা,যদি হয় বলব সে অমানুষ। উদাসী র গল্প করতে করতে হারিয়ে গেছি।
আমি উদাসীর হাত ধরতে চাইনা।কিন্তু সে মাঝে মাঝে এমন শর্টকাট বানায় আমি না চাইলেও ধরা পড়তে হয়,তোমার চোখেতে ধরা পড়ে গেছি আজ...অনেকটা এমনি।
উদাসী ভাইরাসের সরাসরি আক্রমণ হতে রক্ষা পেতে আপনাকে কিছু কাজ করতে হবে।আচ্ছা, আপনি যদি চান ও থাকুক তাহলে থাকুক,আমার কী!!!আমি চাই ও চলে যাক,সত্যিইইইইইই চলে যাক,ও ওর মত থাকুক আমাকে আমার মত থাকতে দিক।
আমার এই গুরু গম্ভীর কথা বার্তা অনুসরণ করতে বলছিনা,শুধু বলছি পড়ুন,যদি আপনার ও আমার মত যুদ্ধ করতে মন চায়!
আমি চেষ্টা করি একটা জিনিস সেটা হল নিজে যেটা আপ্লাই করতে পারি সেটাই বলি।না পারলে বলি না।
মন খারাপ হলে হতে দেয়া উচিত।কেন উচিত,নিজেকে আর একটু কাছে পাওয়ার জন্য।নিজের বোঝাপড়াটা আরো খাটিঁ ভাবে করার জন্য।আমি দেখেছি উদাসীর স্পর্শ আমাকে সকল কাজ হতে বিরত রাখে।নিজের মনকে কাজ দেয়া যায় এমন কিছু কাজ আমি খুজঁছি যাতে এমন সময়ে আমি কাজ দিতে পারি, যেটা করতে আমার অনিচ্ছাসত্ত্বে ও কিছুটা করবার ইচ্ছা জাগ্রত হবে।কিন্তু এখনো তেমন পাইনি,আপনাদের কাছে এমন কাজের সন্ধান থাকলে খবর দিয়েন প্লিজ।
আর একটা ব্যাপার ধর্মীয় কাজ কম হলে শান্তি চলে যায়।শান্তি না থাকলে মনে অশান্তি আসবেই তো ।
আসেন দেখি কয়টা নিয়ম আপনি মানেন?আমি কয়েকটা দিলাম।চাইলে আপনার টা দিতে পারেন।তবে ব্যাপারটা হল ফেসবুকের বেশিরভাগ সবাই বেশ কিপ্টুস।চাপ দিলে লাইক হয় তাই না পড়েই সব লাইক দেয়।কমেন্ট করেনা কারণ কারো পোষ্ট পড়ার টাইম নাই।আমি অবশ্য ব্যতিক্রম, লোকজনের পোষ্ট শুধু ওয়ালে আসা দরকার।কমেন্ট শুরু,বাহরে! আমি যে এখনো জীবিত তার প্রমাণ তো থাকা চাই।নীলাম্বরী কমেন্ট করিয়া প্রমাণ করে সে মরে নাই.
শুধু আজাইড়া প্যাঁচাল করছি,না করে উপায় কী! সার্টিফিকেট এর গুরু গম্ভীর নাম থেকে মুক্তি মিলেছে।এর চেয়ে শান্তি আর আছে।নিজের খুশি একটু মিষ্টির মত ভাগ করে দিচ্ছি,এই যা।
#নিজেকে কখনও অন্যের সাথে তুলনা করবেন না।আমিও করি না।করবই বা কেন? হাজারো নীল আসবে আর যাবে কিন্তু এই নীল একটাই।আপনিও তাই।কেউ আপনার মত দেখতে হতে পারে কিন্তু আপনিতো আপনিই! মনে রাখবেন টুইনরাও ভিন্ন হয়।যে যা পারে, পারুক তাতে আপনার কী? ওরা পারছে পারুক,আপনি তাকিয়ে হাসুন যে ওরা পারছে।
#হিংসা মুক্ত রাখুন নিজেকে।একটা শুকনো কাঠে আগুন দিলে কেমন করে পুড়ে দেখেছেন?দেখা উচিত,না দেখলে দেখুন।হিংসুটে ব্যক্তি হিংসার আগুনে তেমনি করে পুড়ে।আলহামদুলিল্লাহ্, জীবনে হিংসা ও আফসোস এই দুইটা বিষয়ে করেছি,যখন দেখেছি কেউ অধিক জ্ঞানী তখন মনে হয়েছে ইশশশ! আমি যদি জ্ঞানী হতে পারতাম! আর যখন দেখেছি কেউ অনেক ভালো মানুষ।তখন মনে হয়,ইশশ,আমি যদি ওর মত ভালো হতে পারতাম!
আসুন হিংসামুক্ত থাকি।কেউ যদি নিজেকে অনেক বড় করে আপনার সামনে উপস্থাপন করে তাহলে তাকে সুযোগ দিন। ক্ষতি কী,ও যদি সুখ পায় -আমিই বনের রাজা।কাউকে ছোট না করে তাকে বড় করে দেখুন,তার ভেতরের ভালো গুনগুলো সামনে তুলে ধরুন দেখবেন সে আরো ভালো হতে চাইবে।মানুষকে সম্মান দিতে ভীষণ মজা।হিংসা না করে যার যতটুকু প্রাপ্য অন্তত সেটুকু দিতে শিখুন।
#নেতিবাচক চিন্তা পরিহার করুন।সত্যিই পরিহার করুন।চিন্তা করুন এই ভাবে,আপনার একটা ফ্যাক্টরি আছে।সেখানে দুই ধরনের পণ্য উৎপাদন হয়।নেতিবাচক ফ্যাক্টরি সব সময় বলে,নীলা তোমারে দিয়ে কিছু হবেনা,তুমি শুধু ঘুমাও,ঘুমায় ঘুমায় স্বপ্ন দেখ,কিন্তু কাজের কাজ কিছু করনা,মন দিয়ে পড়না,তোমারে দিয়ে কী হবে,দেখছ আজ সকালে ঘুম থেকে উঠেই পড়ে গেছ।আজ তোমার দিনটাই খারাপ।এ রকম হাজারো না এর রাজত্ব।
আর ইতিবাচক ফ্যাক্টরিতে সব পণ্য ইতিবাচক।নীলা, তুমি হেরে যেও না,তুমি পারবে আমি জানি।আল্লাহ্র উপর ভরসা রাখো।তুমি যা পাবে তা থেকে বঞ্চিত হবেনা।আস্থা রাখ,যা হবে ভালো কিছুই হবে ইনশাআল্লাহ্। এই রাজত্ব এ শুধু নিজেকে বোঝানোর রাজত্ব। উদাসী এখানে এসে সুবিধা করতে পারেনা। সবকিছুকে ইতিবাচক ভাবে গ্রহন করতে চেষ্টা করুন।
আপনার ফ্যাক্টরি,উদাসীর কাচ্চা বাচ্চা উৎপাদন করবেন না করবেন না সে আপনার সিদ্ধান্ত।আমার নয়
#নিজেকে ভালোবাসুন।আমি এখন শিখছি নিজেকে ভালোবাসার।আগে একটুও পারতাম না এখন একটু একটু পারি।আপনি কী পারেন?
#নিজেকে নিয়ে এবং কাছের মানুষদেরকে নিয়ে অনর্থক দুশ্চিন্তা করবেন না। যার ভাগ্যে যা আছে তা ঘটবেই।কপালে লেখা থাকলে আপনি তালপুকুরে আসবেন আমার সাথে দেখা করার জন্য।যতই কপোতাক্ষ পাড়ি দেন না কেন!! হেহেহে।
#ভুলকে ভুলে যান। অতীতের ভুল নিয়ে অতিরিক্ত ঘাটাঘাটি করে তিক্ততা বাড়িয়ে বর্তমানের সুন্দর সময়কে নষ্ট করবেন না।অতীত, কানের গোড়াঁয় ঘ্যানর ঘ্যানর করে সেই একি গান শোনায়,-নীল শাড়ি পরে ও চলে গেল।এর পর দিন নীল শাড়ির পরে ওকে ঘোড়ার ডিমের মত দেখাচ্ছিল।এর পর দিন ওর খোপাঁয় কি ফুল ছিল? হ্যাঁ ছিলতো,সাদা ফুল। এই ভাবে এক এক দিন এক এক ভাবে মন খারাপ করিয়ে দেয়।#সব সময় হাসিখুশী থাকার চেষ্টা করুন।এমন তো পারে আপনার হাসি অন্যের ঠোঁটে হাসির ঝিলিক এনে দেয়।তবে অন্য কিছু এনে দিলে কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়।
#জীবনের সব ক্ষেত্রে জয় লাভ করা অসম্ভব। তাই হার মেনে নিতে প্রস্তুত থাকুন। এটাও আপনার একটা মানসিক বিজয়।
#অন্যের দোষ-ত্রুটি ক্ষমা-সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার চেষ্টা করুন।আমি শতভাগ চেষ্টা করি কিন্তু শতভাগ এখনো পারিনি।
#অন্যেরা আপনাকে নিয়ে কী ভাববে তা নিয়ে চিন্তিত হবার কিছু নেই।আমি ভাবি -আমি কী ডরাই সখী ভিখারি রাঘবে!শুধু ভয় রাখুন আপনার আল্লাহ্ কে।আর নিজের কাজ করে যান আত্মবিশ্বাস নিয়ে।
# কোনো কিছুতেই অতিরিক্ত উৎফুল্ল বা অতিরিক্ত দুঃখিত হবেন না।মাঝামাঝিতে থাকুন।সর্বাবস্থায় বলুন আলহামদুলিল্লাহ্।
আর লিখতে ইচ্ছে করছেনা,পরে মন চাইলে আবার লিখব ইনশাআল্লাহ। মন খারাপের ভাইরাস থেকে দূরে থাকতে নিজের মত এন্টিবায়োটিক বানিয়ে ফেলুন।বেচেঁ থাকুন। মানুষকে ভালোবাসুন।
আস সালামু আলাইকুম।
বিঃদ্রঃ নীল মনির লেখায় ভুল থাকবেই, কারণ সে লিখে আর পড়ে না, ভীষণ অলস।দুঃখিত ইচ্ছাকৃত ঠিক না করার জন্য।
©somewhere in net ltd.