নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
শিশুর মত চোখ দিয়ে দেখি আমার এই বিশ্ব।মানুষ স্বপ্নের কাছে হেরে যায় না, হেরে যায় নিজের প্রত্যাশার কাছে। প্রত্যাশা থাকে আকাশচুম্বী অথচ প্রচেষ্টায় থাকে শুধুই স্বপ্ন।
অলস দুপুর কাটিয়ে পড়ন্ত বিকালে এক কাপ চা নিয়ে বারান্দায় বসে আছে অর্চি।ঝকঝকে সাদা মেঘে আর নীলের হাতছানি।বাসার সামনে বিদ্যুতের খুঁটি;সেখানে ঝুলে থাকা তারে বসে আছে কয়েকটা শালিক।ওদের কাকলীতে মুখর বিকেল।জীবনের অনাবিল সৌন্দর্য যেন লুকিয়ে আছে প্রতিটি পরতে পরতে;শুধু অনুভব আর বিশ্বাসে মেলায় তা।
এমন বিকালে হঠাৎ কলিংবেলটা বেজে ওঠে।
দরজা খুলে অর্চি দেখে তিন তলার ভাবী এসেছেন।
অর্চি কিছু বলার আগেই ভাবী বলছেন,"আমাকে চিনতে পারছেন তো?আমি স্বপ্নীলের আম্মা।ওই যে গতদিন সিঁড়িতে পরিচয় হল।"
অর্চি বলছে হ্যাঁ ভাবী আপনাকে চিনতে পেরেছি।
-"ওহ চিনতে পেরেছেন? ভাবী কিছু মনে করবেন না আপনি কি আমাকে কিছু টাকা ধার দিতে পারবেন?আমার ভীষণ দরকার।কাল সন্ধ্যায় দিয়ে দেব।"
-অর্চি মুখ গম্ভীর করে বলছে কত টাকা ভাবী?পরিচয় হতে না হতে টাকা চেয়ে বসেছে বিষয়টা অর্চির মোটেও ভালো লাগেনি।
-"একশত টাকা। একশত টাকা দিলেই হবে।"
অর্চি ভীষণ অবাক হয়।একশত টাকা কোন টাকা!প্রতিদিন কোন না ভাবে কতটাকা কতদিকে খরচ হয়ে যায়।আর কেউ একশো টাকা কারো কাছে ধার চায়ছে।
অর্চি টাকাটা এনে দেয়।স্বপ্নীলের বাবা একজন কলেজের অধ্যক্ষ।তার স্ত্রীকে একশো টাকা ধার চাইতে হয় ব্যাপারটা কেমন যেন!
এরপর দিন ঠিক সন্ধ্যাবেলায় স্বপ্নীলের মা টাকাটা দিয়ে যায়।
কয়েকদিন পর অর্চি কলেজ থেকে ক্লাস নিয়ে ফেরার পথে দেখে স্বপ্নীলের মা আর স্বপ্নীল হেঁটে হেঁটে বাড়ি ফিরছে।স্বপ্নীলের মায়ের হাতে বড় বাজারের একটা ব্যাগ।
একদিন দেখে পাশের বাসায় জারিফের আম্মুর সাথে কথা বলছে।পরে জারিফের আম্মু বলল অর্চিকে যে স্বপ্নীলের মা টাকা চাইতে এসেছিলেন।
এরপর প্রায় স্বপ্নীলের মা অর্চির কাছে আসেন।এসেই বলেন "ভাবী একশো টাকা লাগত যে।দিতে পারবেন? আপনার অসুবিধা হবে না তো?" এরপর একদিন সন্ধ্যা বেলায় স্বপ্নীলের মা বললেন আজকে একটু বেশি টাকা লাগবে।এক হাজার টাকা দিবেন?অর্চির এই টাকা দেয়া নেয়াটা ভালো লাগে না।কারণ টাকা সম্পর্কে ফাটল ধরায়।আর ধার দিলে বেশিরভাগ মানুষ ফেরত দিতে চাই না।
অর্চির কাছে এক হাজার টাকা ছিল তবুও ভরসা পেল না তাই তাকে পাচঁশ টাকা দিল।দুদিন পরেই টাকাটা দিয়ে গেল।যদিও কথা ছিল একদিন পরে দিবে।
টাকাটা ফেরত দেওয়ার দিন স্বপ্নীলের মা ঘরে বসল।
অন্যদিন টাকা দরজার মুখ থেকেই দিয়ে চলে যায়।বসে না।
-"বলে অনেক কাজ।আমার কোন কাজের সাহায্যকারী নেই।বুয়ারা কাজে ফাঁকি দেয়।তাই ঘরের কাজ আমিই করি।"
উনাকে ঘরে বসতে দিয়ে রান্নাঘরে এলাম।আজ বাচ্চাদের জন্য চিকেন ফ্রাই আর নুডুলস করেছি।উনাকে খাবার গুলো দিলাম।এরপর উনি খাওয়া শুরু করলাম।
"এইটার নাম কী ভাবি? খেতে স্বাদ হয়েছে খুব।ঘরেই বানালেন?বুঝলেন ভাবী আমি হলাম ভীষণ ভালো মা।অন্য মা'দের মত না।আমি কিছু খেলে বাচ্চাকে না দিয়ে খাই না।কেউ কিছু খেতে দিলে আমি নিয়ে যাই।"
অর্চি কিছুটা অবাক হল তার কথা শুনে।এমন পরিস্থিতিতে ঠিক কী যে বলতে হয়!অর্চি বলল 'আপনি তাহলে ভালো মা।'
"উনি বলছেন শুধু ভালো মা না অনেক ভালো মা।উনি চিকেন ফ্রাই হাতের মুঠোয় নিয়ে বলছে ভাবী এই গুলো স্বপ্নীলের জন্য নিয়ে যায়, ও খাবে।"
অর্চি বলল পিরিচে করে দেই,উনি অসম্মতি জানালেন।আমি টিস্যু পেপার দিয়ে মুড়ে দিলাম।
উনি টাকাটা দিয়ে চলে গেলেন।
এই ঘটনার বেশ অনেক দিন পর সিঁড়িতে উনার সাথে দেখা।বলছে বাসার ভাড়া বেড়েছে তাই অন্য জায়গায় বাসা ভাড়া করবে।হঠাৎ পাচঁশো টাকা আবার চেয়ে বসল।
আমিও দিয়ে দিলাম।কারণ উনি তো ফেরত দিয়ে যান। হয়ত কখনো কখনো একটু একটু দেরি হয়।
মেয়ের স্কুল ছুটি।হঠাৎ করে আমি বাড়িতে চলে যায়।কয়েকদিন পর যখন ফিরি তখন এসে শুনি তিনতলার ভাবী চলে গেছেন।
অর্চির এই প্রথম একটু খারাপ লাগে উনি চলে গেছেন শুনে।টাকাটা তো একতলায় রেখে যেতে পারত!অর্চি ভাবে যা গেছে তা গেছে,ও নিয়ে মন খারাপ করতে নেই।সামান্য কিছু টাকা।ফী সাবিলিল্লাহ।
অনেকদিন চলে যায়।এক বিকালে অর্চির ঘুম পাই।এমন বিকালে কেউ একজন কলিং বেল চেপে নক করে।অর্চি উঠে গিয়ে দেখে আর কেউ নয়;সেই তিনতলার ভাবী।
'ভাবী কিছু মনে নিয়েন না , টাকাটা দিতে দেরি হল!আপনার টাকা দিতে বাসা থেকে আসলাম এখন।'
অর্চি অবাক হয়ে তাকিয়ে ভাবল মনের মাঝে কারো সম্পর্কে কু-ধারণা এলেও সেই ধারণার প্রশয় দিতে নেই।
রুবাইদা গুলশান
০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:৫২
নীল মনি বলেছেন: শুকরিয়া
২| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:১৯
eunknown_rafi বলেছেন: এটা কি গল্প ছিলো নাকি বাস্তব কাহিনী? মহিলা কেনো এমন করছেন এটা লিখলে আরও ভালো হত।
০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:৫২
নীল মনি বলেছেন: এটা সত্যি কাহিনি। কেন এমন করছেন লেখক জানে না।হয়ত খুব অভাব।
৩| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:৫৩
করুণাধারা বলেছেন: মহিলার আচরণ কেমন অদ্ভুত! বাস্তব চরিত্র কি এমন হয়!
০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:৫৩
নীল মনি বলেছেন: নি:সন্দেহে বাস্তব।
©somewhere in net ltd.
১| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:১১
অবনি মণি বলেছেন: সুন্দর।।