নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
হায়দারাবাদের ডায়েরী….
রান্না-বান্না (৩১/০৮/২০১৪)
যত দিন যাচ্ছে ব্যস্ততা বাড়ছে। ক্লাস, অ্যাসাইনমেন্ট, প্রেরেজেনটেশন, পরীক্ষা; সব মিলিয়ে ব্যস্ত সময় পাড় করছি। হায়দারাবাদের ডায়েরী লেখা থেমে আছে… ।
যা হোক, আজ রবিবার, সাপ্তাহিক ছুটির দিন। দিনটি যতটা সম্ভব নিজের জন্য খরচ করবো ঠিক করে রেখেছিলাম। ইচ্ছে করে ঘুম থেকে অনেক দেরি করে উঠলাম। ১০:৩০ টার দিকে উঠে নাস্তা তৈরি করলাম। রুটি ও ডিম ভাঁজি। নাস্তা সেরে ঠিক করলাম আজ মাংস রান্না করবো। ইন্ডিয়া আসার পর থেকেই সটকাট রান্না করা খাবার খাচ্ছি। ভাত, আলু-ভর্তা, ডিম ভাজি, খিচুরি… খেতে-খেতে পেটে পলি জমে গেছে। অনেকদিন মাছ, মাংস খাওয়া হয়না। কারন মাছ-মাংস রান্না করার অভিঙ্গতা আমার নেই। ছুটির দিন বিধায় ঠিক করলাম, আজ মাংস রান্নার রিস্ক নেওয়ার মোক্ষম সময়।
নাস্তা সেরে রওয়ানা হলাম মাংস কেনার জন্য। উদ্দেশ্য এনআইআরডি ক্যাম্পাস থেকে দশ কি:মি: দূরের চেইন শপ স্পেন্সার। সেখানে নাকি সব কিছু পাওয়া যায়। আমার সঙ্গি শ্রীলংকার তিলকারত্নে, ফিজির মেলে ও ইন্দোনেশিয়ার লুকি। রুপি বাচানোর জন্য পাবলিক বাসে চরে রওয়ানা হলাম। অল্প সময়ের মধ্যেই পৌছে গেলাম স্পেন্সার চেইনশপে। বিশাল চেইনশপ, হেনো কিছু নেই যে সেখানে নেই। প্রথমে খাসির মাংস কিনলাম। আলু, পিয়াজ,রসুনসহ আরও কিছু সবজি কিনলাম।সবকিছু কেনা কাটা শেষে বের হলাম স্পেন্সার থেকে। বেরিয়ে দেখি অঝরে বৃষ্টি নামছে। বাইরে দাড়িয়ে বৃষ্টি দেখলাম কিছুক্ষন। এই বৃষ্টির মধ্যে হেটে গিয়ে পাবলিক বাস ধরা অসম্ভব। তাই ঠিক হলো অটো নিয়ে ক্যাম্পাসে চলে যাব। যথারিতি বিদেশী দেখে ভাড়া বেড়ে গেল। যা হোক, দরদাম করে উঠে পড়লাম। অঝরে বৃষ্টি ঝরছে। অটোতে হিন্দি গান বাজছে। এখানে একটা বিষয় খেয়াল করলাম ছোট বড় সকল যানবাহনে গান শোনার ব্যবস্থা আছে্। গান শুনতে-শুনতে ক্যাম্পাসে পৌছে গেলাম।
কোয়ার্টারে পৌছেই মাংস রান্নার আয়োজন শুরু করে দিলাম। জীবনে কোনদিন মাংস রান্না করিনি। জানিনা শেষ পর্যন্ত খাওয়া যাবে কিনা। এই ভাবনা বারবার মাথার মধ্যে কাজ করছিল। প্রথমে পিয়াজ, রসুন, কাচামরিচ, আলু কেটে ফেললাম। তারপর মাংস ভালো করে ধুয়ে আলাদা করে রাখলাম। তারপর গ্যাসের চুলা চালু করে দিলাম। সয়াবিন তেলের মধ্যে কাচামরিচ, পিয়াজ, রসুন হালকা করে ভেজে নিলাম। তারপর এর মধ্যে দু-চামচ মাংস রান্নার মসলা দিয়ে দিলাম। আরও কিছুক্ষন ভাজা হওয়ার পর মাংস ঢেলে দিলাম। এরপর কিছু আলু দিয়ে দিলাম।আরও একটু ভাজা হওয়ার পর তার মধ্যে পরিমান মতো পানি দিয়ে প্রেসার কুকারের ঢাকনা আটকে দিলাম। মিনিট বিশেক পর গ্যাসের চুলা বন্ধ করে দিলাম। রাইচ কুকারের সিগনাল পেয়েছি একটু আগে। অর্থাৎ ভাতও রান্না শেষ। ঢুকলাম গোসল করতে। গোসল শেষ করে জীবনে প্রথম নিজের হাতে রান্না করা মাংস দিয়ে ভাত খেতে বসেছি।পেসার কুকার থেকে মাংস তুলে নিয়ে ভয়ে-ভয়ে মুখে পুরে দিলাম। না জানি কি অবস্থা…। টেস্ট খারাপ হয়নি। শুধু লবন একটু বেশি হয়েছে। তবে খুব বেশি নয়। খাওয়া যাবে…
বাইরে অঝরে বৃষ্টি ঝরছে। আমি প্রথম বারের মতো নিজের রান্না করা মাংসের ঝোল দিয়ে অনেকদিন পর তৃপ্তি সহকারে ভাত খাচ্ছি।এক প্লেট শেষ… আরেক প্লেট শেষের পথে। এইতো জীবন… নতুন-নতুন অভিঙ্গতা ও আবিস্কারের মধ্যে দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে… এগিয়ে যেতে থাকুক… কি বলেন…?
২| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১:৩০
নিয়ামুলবাসার বলেছেন: আপনার মন্তব্য পড়ে মনে হচ্ছে আমার লেখা সার্থক.... ধন্যবাদ আপনাকে...।
৩| ২০ শে অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১১:১২
ইয়েন বলেছেন: এইতো জীবন… নতুন-নতুন অভিঙ্গতা ও আবিস্কারের মধ্যে দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে… +
©somewhere in net ltd.
১| ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:১৮
লিখেছেন বলেছেন: পড়তে পড়তে আবেগে চোখে পানি এসে গেল