নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বিশ্বজোড়া পাঠশালাতে সবাই ছাত্র-ছাত্রী, নিত্য নতুন শিখছি মোরা সদাই দিবা-রাত্রী!

নীল আকাশ

এই ব্লগের সমস্ত লেখা সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। আমার অনুমতি ছাড়া এই ব্লগের লেখা অন্য কোথাও প্রকাশ করা যাবে না।এই ব্লগের সমস্ত লেখা সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। আমার অনুমতি ছাড়া এই ব্লগের লেখা অন্যকোথাও প্রকাশ করা যাবে না।

নীল আকাশ › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্পঃ মিথিলা কাহিনী ২ - মিথিলার ভালোবাসা

০৩ রা নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ৮:১৮



পর পর তিন বার মিথিলা ৯ রোল কল করল, কোন রেসপন্স নেই দেখে চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়িয়ে ভালো করে সারা ক্লাসে খুঁজল। নাহ, সুমন আজকেও আসেনি। এই নিয়ে টানা পাঁচ দিন ধরে সুমন ক্লাসে আসছে না। এটা কিছু হলো? এভাবে কি পড়াশুনা করানো যায়! হেড মিস্ট্রেস ম্যাডাম কে জানাতে হবে। এইভাবে ক্রমাগত স্কুল ফাঁকি দিলে তো চলবে না, সুমনের গার্ডিয়ানদের ডেকেও কথা বলতে হবে….

কয়েকদিন পরে মিথিলা কমন রুমে বসে ক্লাস টেস্টের খাতা দেখছে। এমন সময় পিয়ন এসে জানাল যে একজন ভদ্রলোক গেস্ট রুমে ওর সাথে দেখা করতে চাচ্ছেন। কে জানতে চাইলে বলল যে, উনি সুমনের বাবা। ক্যালেন্ডারের দিকে তাকিয়ে দেখল, খবর পাঠানোর প্রায় পাঁচ দিন পরে আসল দেখা করতে। একটু বিরক্তই হলো মিথিলা, গার্ডিয়ানরাই যদি এরকম করে, বাচ্চারা তো ক্লাস ফাঁকি দেবেই! ক্লাস টেস্টের খাতা গুলি গুছিয়ে ওর লকারে রেখে মিথিলা গেস্ট রুমে এসে দেখে মধ্য বয়স্ক একজন ভদ্রলোক ওর জন্য অপেক্ষা করে বসে আছেন……..

এক
বেশ কিছুদিন পরে স্কুল থেকে ফিরে মিথিলা দেখে ওর ভাই আর ভাবী ওর বাসায় ওরই অপেক্ষায় বসে আছে। ড্রেস চেঞ্জ করে আসতেই ভাইয়া সরাসরি বলল যে, সুমনের বাবা, মাসুদুর রহমান সাহেব মিথিলার সাথে ওনার বিয়ের প্রস্তাব পাঠিয়েছেন। ভদ্রলোক মেরিন ইঞ্জিনিয়ার, আগের স্ত্রী মারা গেছেন প্রায় দেড় বছর হলো, ছোট দুইটা বাচ্চা, খুবই ভালো ফ্যামিলি। ভাই আর ভাবী দুইজনই ওকে এই বিয়ের প্রস্তাবে রাজি হবার জন্য চাপ দিল আর মাসুদ সাহেবের একটা সিভি ওর হাতে ধরিয়ে দিল। মিথিলা একেবারেই হতবাক হয়ে গেল এই বিয়ের প্রস্তাবে! মাসুদ সাহেবের সাথে ওর পরিচয় আছে, মাঝে মাঝেই ওর সাথে দেখা করেন সুমনের লেখাপড়ার খোঁজখবর নেবার জন্য। উনি যে মিথিলাকে পছন্দ করেন এটা ও কখনোই বুঝতে পারে নি? ওকে একবারও না জিজ্ঞেস করে কিভাবে বিয়ের প্রস্তাব পাঠাল? মাসুদ সাহেবের সাথে আগে সামনা সামনি কথা বলতে হবে কেন উনি বিয়ের প্রস্তাব পাঠালেন………..

দুই
ছুটির দিন শুক্রবার মাসুদ সাহেব সকাল বেলা মিথিলার মোবাইলে কল দিলেন। ফোন নাম্বারটা দেখেই মিথিলা চিনতে পারল, সিভিতে এই নাম্বারটাই দেয়া ছিল। কিছুটা অস্বস্তি আর তার চেয়ে বেশি লজ্জা নিয়ে ও ফোনটা রিসিভ করল। সালাম পর্ব শেষ হতেই মাসুদ সাহেব নিজেই কথা শুরু করলেন।
-মিথিলা, আপনার সাথে সরাসরি এই বিষয়ে কথা বলতে আমার খুব লজ্জা লাগছে! আমি এই জন্যই আপনার ভাইয়ের কাছে প্রস্তাব দিয়েছিলাম। উনি বললেন, আপনি আমার সাথে কথা বলতে চান, সে কারনেই আপনাকে আমি কল করেছি। আমি আজকে বিকাল বেলা আপনার সাথে কথা বলার জন্য দেখা করতে চাচ্ছি, যদি আপনি অনুগ্রহ করে আমাকে একটু সময় দিতেন?

মাসুদ সাহেবের কথা এবং এপ্রোচ দেখে মিথিলা মনে মনে খুব খুশি হলো। যথেষ্ট ভদ্রোচিত ব্যবহার। মিথিলা খুব ভয় পাচ্ছিল যে, উনি কি মিথিলাকে করুনা বা এই ধরনের কিছু করছেন কিনা? সেটা না দেখে মিথিলার ভালো লাগল। আজকে বিকাল বেলা ও ফ্রি আছে এবং দেখা করতে পারবে এটা জানিয়ে দিল।

বিকাল ছয়টার সময় মাসুদ সাহেব মিথিলাকে ওর বাসার সামনে থেকে পিক করে নিজেই গাড়ী ড্রাইভ করে কাছাকাছি একটা চাইনিজ রেস্টুরেন্টে নিয়ে যাচ্ছেন। সারা রাস্তা মাসুদ সাহেব বেশ চুপচাপ আছেন দেখে মিথিলার মনে হলো উনি মনের ভিতরে কথা গুলি গুছিয়ে নিচ্ছেন। ওর ভাইয়া আজকে ফোন করে ওকে জানিয়েছে যে, মাসুদ সাহেব কে ওদের ফ্যামিলির বেশ পছন্দ হয়েছে। ওকে মাসুদ সাহেবের সাথে সব কিছু জানিয়ে আলাপ করতে বললেন। মিথিলার কেমন জানি লাগছে, ঠিক বুঝতে পারছে না, আসলে ওর কি করা উচিত? এই দেড় বছরে সাগরের কাছ থেকে চলে আসার পর, ও এখন নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে স্বাবলম্বী হতে পেরেছে, হুট করে আবার কারো কাছে মুখাপেক্ষী হতে ওর ইচ্ছে করছে না। নতুন করে কোন ছেলেকে আবার বিশ্বাস করা ওর জন্য অনেক কঠিন ব্যাপার! ওর ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যাওয়া হৃদয় আবার কি ও জোড়া লাগাতে পারবে? এর আগেও বেশ কিছু বিয়ের প্রস্তাব এসেছিল, ও সরাসরি না বলে দিয়েছে। এই বার কেন যেন সরাসরি না করতে পারছে না। ভদ্রলোক যথেষ্ট সোবার, ব্যবহার ভালো, দেখতেও বেশ হ্যান্ডসাম। ওর বন্ধ্যাত্ব জনিত সমস্যার কথা জানানোর পর কি বলে এটাই আসল? তখনই আসল আচরন বুঝা যাবে…….

রেস্টুরেন্টে নিরিবিলি একটা টেবিলে মিথিলা কে নিয়ে মাসুদ সাহেব এসে বসলেন। মিথিলা মাথা নীচু করে বসে রইল। মাসুদ সাহেব একটু সময় নিয়ে কথা শুরু করলেনঃ
-মিথিলা, আপনার মনের অবস্থা কিছুটা আমি অনুভব করতে পারছি। একটা কথা প্রথমেই আপনাকে বলতে চাই, সেটা হলো, আমি নিজে পছন্দ করেই আপনাকে বিয়ে করতে চাচ্ছি, এটার সাথে আপনার আগের বা বর্তমান অবস্থার কোনই সম্পর্ক নেই।
মিথিলা বেশ অবাক হয়ে মাথা উচু করে মাসুদ সাহেবের দিকে তাকাল। উনি কি ভাবে বুঝলেন?
-আমি সব কিছু বেশ ভালো ভাবে খোঁজখবর নিয়েই প্রস্তাব দিয়েছি। এমন কি, আপনার শারীরিক সমস্যার কথাও আমি জানি। আমি কোন ছোট বাচ্চা না যে হুট করে পাগলামি করছি!
-আপনি কেন এত মেয়ে থাকতে আমাকে বিয়ে করতে চাচ্ছেন? আপনার বাচ্চাদের দেখাশুনা করার জন্য?
-মিথিলা, আপনি মনে হয় ভূল বুঝেছেন! আমি আপনাকে বিয়ে করে স্ত্রী হিসেবে আমার সংসারে আনতে চাইছি, বাচ্চাদের গর্ভনেস হিসেবে নয়! এই নিয়ে আপনার সাথে আমার ঠিক নয় বার দেখা হলো। প্রথমবার আপনার সাথে স্কুলের গেস্ট রুমে দেখা হবার সময়ই আপনাকে আমার খুবই ভালো লাগে। ভালো লাগা এমন এক জিনিস যা একবার শুরু হলে তার সব কিছুই আস্তে আস্তে ভালো লাগতে থাকে। তখন আপনার ব্যাপারে আমি কিছুই জানতাম না। এর পরের বার দেশে এসেই আপনার ব্যাপারে আমি সব রকম খোঁজ খবর নিয়েছি। এই সাত মাস আমি শুধু নিজের সাথেই বোঝাপড়া করেছি আপনাকে নিয়ে। আপনি হয়ত খেয়াল করেন নি, দেশে ফিরলেই আমি মাঝে মাঝেই সুমনের ব্যাপারে খোঁজ নেয়ার অজুহাতে আপনার সাথে দেখা করতে যেতাম আর বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলাপ করতাম আপনাকে বুঝার জন্য। কমপ্লিটলি স্যাটিসফাইড না হওয়া আমি অপেক্ষা করেছি। যখন উপলব্ধি করেছি যে, আমি সত্যই আপনাকে যথেষ্ঠ পছন্দ করি এবং বিয়ের পর উপযুক্ত সম্মান দিতে পারব, তখনই বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছি। আমার বয়স এখন ৩৯। এই বয়সে এসে নিশ্চয়ই আপনাকে আমি অ্যাফিয়ার করার প্রস্তাব দিতে পারি না? আপনিই বলুন, আমি কি কোন ভূল করেছি?

মিথিলার মনে হঠাৎ করেই সব কিছু জলের মতো পরিষ্কার হতে লাগল। এই জন্যই উনি এত ঘন ঘন ওর সাথে দেখা করতে চাইতেন? ওর মনে হয়েছিল ভদ্রলোক বাচ্চার লেখাপড়ার ব্যাপারে বেশী সিরিয়াস। মা নেই যেহেতু, বাবা একটু বেশী টেক কেয়ার করে। মাঝে মাঝে ওর বিরক্তই লাগত, ইচ্ছে করে হাত ঘড়ির দিকে তাকিয়ে উঠে যেত ক্লাস আছে এই অজুহাত দেখিয়ে। অনেক সময় গেস্ট রুমে অনেকক্ষন বসিয়ে রেখে পরে দেখা করত। ছিঃ ছিঃ, কি করেছে ও! ভূলেও এটা কখনোই জানতে দেয়া যাবে না। ও যেত ক্লাস টিচার হিসেবে সুমনের লেখাপড়ার প্রোগ্রেস নিয়ে কথা বলার জন্য আর উনি কিনা দিব্যি ওকে প্রেমিকা ভেবে গল্প করতেন! কি ভয়ংকর কান্ড? ভাগ্য ভালো স্কুলে কেউ টের পায় নি? টের পেলে এই স্কুলের চাকরীটা করাটা খুব কঠিন হয়ে যেত? কি পাগল মানুষ! নিজের ছেলের টিচার কে কেউ প্রেমিকা ভাবতে পারে? তাও আবার একদিন দুইদিন না, সাত মাস ধরে উনি এই কান্ড করে বেড়িয়েছেন! লজ্জায় মিথিলার মাথা কাটা যাচ্ছে। ওর বয়স অল্প বা ভার্সিটির স্টুডেন্ট টাইপের কিছু হলেও একটা কথা ছিল? তখন ও দেখতে সুন্দর ছিল, অনেক ছেলেরা ওকে পছন্দ করত, প্রোপজালও পেত অনেক। অনেক বেলা কেটে গেছে, ওর বয়সও বেড়ে গেছে, এখন কি ওর এসব মানায়? ওর মাথায় সব কিছু তালগোল পাকিয়ে যাচ্ছে। কি কি যেন বলবে মনে করে এসেছিল, ভদ্রলোকের এই কান্ড কারখানা শুনে সব ভূলে গেল মিথিলা! ধ্যাত, এটা কিছু হলো! এক মুহুর্তের জন্যও এই ধরনের কিছু হতে পারে মিথিলা চিন্তাও করে নি? কি বলবে ও এখন? মাসুদ সাহেব তো চাতক পাখীর মতো ওর উত্তরের অপেক্ষায় বসে আছে! আচ্ছা ওর অসুখের কথা, কি জানেন উনি?
-আমার শারীরিক সমস্যা কতটা ভয়াবহ আপনি জানেন?
-মিথিলা, প্রোফেশন বা স্বভাব যেটাই বলেন না কেন, আমি যথেষ্ট মেথডিক্যাল পারসন। কোন কিছু না জেনে আমি কিছুই বলি না। আপনার অসুখের ব্যাপারে যে সবচেয়ে ভালো বলতে পারবেন, সেই সাগর সাহেবের সাথেই আমি দেখা করেছি। ওনার সাথে তো আমার এমনিতেই দেখা করতে হতো। আমি খোঁজ নিয়েছি, আপনাদের এখনো ফরমাল ডিভোর্স হয় নি। আপনার চেন্নাইতে চিকিৎসার ফাইনাল রিপোর্ট এর একটা কপি আমি কালেক্ট করেছি। আমার একজন ক্লোজ ফ্রেন্ড ডাক্তার, ফার্টিলিটি নিয়েই কাজ করে ঢাকায়, ও সেটা দেখে বলেছে ইউরোপ আর আমেরিকায় এখন এটার ট্রিটমেন্ট স্টার্ট হয়েছে, অল্প কিছু ক্ষেত্রে সাফল্যও পেয়েছে। আমি আপনাকে কথা দিচ্ছি; সাগর সাহেব যেখানে থেমে গিয়েছিলেন, আমি সেখানে থামব না। আমি যথেষ্ট ফিনান্সিয়ালি রিচ পারসন। ইনসাল্লাহ, আমি আপনার জন্য আমার চেস্টার কোন ত্রুটিই রাখব না। বাকিটা মহান আল্লাহ পাকের ইচ্ছা!

মিথিলা হতভম্ব হয়ে মাসুদ সাহেবের দিকে তাকিয়ে আছে। যা এতক্ষণ শুনল তারপর ওর আর কিই বা বলার আছে? এই ভদ্রলোক ওর মধ্যে কি দেখেছে যে এতটা ফিদা হয়েছে? মিথিলার মাথা এখন পুরোপুরি কাজ করছে না, এটা কি করে সম্ভব? এতো সিনেমার কাহিনী মনে হচ্ছে? বা তাকেও হার মানায়? আর একটা গুরুত্বপূর্ণ জিনিস ওর জানার বাকি আছে!
-আমি কি জানতে পারি আমাকে কেন আপনার এত পছন্দ হয়েছে? আমি আসলে খুবই কনফিউজড! আমি তো কোন বিশ্ব সুন্দরী নই যে, এত এত স্যাক্রিফাইস করে আমাকেই আপনার বিয়ে করতে হবে?

মিথিলার প্রশ্ন শুনে মাসুদ সাহেব দাঁত বের করে ওর দিকে তাকিয়ে হাসছেন। হাসির ধরন দেখে মিথিলা আরোও সংশয়ের মধ্যে পড়ে গেল? ঘটনা কি?
-মিথিলা, সব মানুষের জীবনেই কোন না কোন অপূর্ণতা থাকে, এই পৃথিবীতে কেউ পরিপূর্ণ নয়! অপূর্ণতা থাকে না শুধু বড় বড় সাধক আর মহা পুরুষদের। আপনি এর কোনটাই নন!
-আমি কিন্তু আমার প্রশ্নের উত্তর এখনো পাইনি, এর জন্য অপেক্ষা করছি!
-বললে আপনি বিশ্বাস করবেন না!
-বিশ্বাস করব কি করব না, সেটা আমার ব্যক্তিগত ব্যাপার। কিন্তু আমি জানতে চাই, এটা আমার জানতেই হবে?
-মিথিলা, আপনার কি মনে আছে? প্রথম বার যখন আমি আপনাকে দেখি, তখন চমকে উঠেছিলাম।

মিথিলা ঠিক মনে করতে পারল না, এসব বিষয় ওর কাছে গুরুত্বপূর্ণ কিছু ছিল না। অহরহ স্টুডেন্টের গার্জিয়ানদের সাথে দেখা করতে হত। আলাদা করে কাউকে মনে রাখার কোন দরকার ওর কাছে মনে হয়নি। তবে এই ফিদা কাহিনী ও আগে জানতে পারলে সেটা অন্য ব্যাপার হতো।
-এই ছবিটা দেখুন, আমি জানতাম আপনি এই প্রশ্ন করবেনই। সেজন্যই এটা নিয়ে এসেছি। শুধু অপেক্ষা করছিলাম কখন জিজ্ঞেস করবেন? খুবই স্বাভাবিক প্রশ্ন, আপনার জায়গায় আমি থাকলেও করতাম!

ছবিটা হাতে নিয়ে মিথিলা ভালো করে দেখে খুবই অবাক হয়ে গেল। একেবারেই ওর মতো দেখতে, ড্রেসটার জন্য পার্থক্যটা ধরতে পারল, এই টাইপের ড্রেস ও কখনই পড়েনি। মনে হচ্ছে বেশ আগের ছবি। মেয়েটা কে? সুমনের মা নাকি? তাহলেই সর্বনাশ, কোনভাবেই বিয়েতে রাজী হওয়া যাবে না, সারা জীবন আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে ভুকতে হবে!
-এটা আমার মায়ের ছবি। প্রথম বার আপনাকে দেখে আমি হতভম্ব হয়ে চমকে উঠেছিলাম। এটা কিভাবে সম্ভব? এই জন্যই আমি আপনার বাবা মা ফ্যামিলি সম্পর্কে জানতে চেয়েছিলাম আর আপনি খুবই বিরক্ত হয়েছিলেন। কথা শর্ট করে চলে গিয়েছিলেন।

ছবিটা কার জানার পর মিথিলা যথেষ্ট অস্বস্তিতে পড়ে গেল। ও এই সমস্যাটার কথা জানে। ওর ক্লোজ একটা বান্ধবী, নাবিলা সাইকোলজির স্টুডেন্ট ছিল। নাবিলা মাঝে মাঝে এইসব অদ্ভুত সাইকোলজিক্যাল টার্ম নিয়ে গল্প করত। বিষদ ব্যাখ্যাটা ওর মনে নেই তবে এই সাইকোলজি টার্মটা ও জানে, সিগমন্ড ফ্রয়েড এটাকে বলেছেন “ওডিপাস কমপ্লেক্স”। কিন্তু ও তো জানতো বড় হলে ছেলেদের এই সমস্যা এমনতেই চলে যায়? আচ্ছা, উনি তো একমাত্র সন্তান, সম্ভবত মায়ের সাথে খুব বেশী ক্লোজ ছিল আর এখন খুব বেশী একাকিত্বে ভুগছেন। এই দুটাই মেজর ফ্যাক্টর। কিন্তু উনি কি এটা জানেন? মুখে বিরাট একটা প্রশ্ন নিয়ে মিথিলা মাসুদ সাহেবের দিকে তাকাতেই উনি হেসে ফেললেন।
-মিথিলা, আপনি আমাকে আবারো মুগ্ধ করলেন! আমার ধারনা ছিল এই ব্যাপারটা আপনি জানেন না। আমাদের দেশে এটা প্রচলিত নয়, সবাই এটা জানেও না। হ্যাঁ, আপনি বিড়বিড় করে যেটা বলেছেন, এটা সেই “ওডিপাস কমপ্লেক্স”। শুরুটা সেভাবেই হয়েছিল। আপনাকে প্রথম বার দেখার পর আমি সাথে সাথেই অদ্ভুত ঘোরের মধ্যে চলে যাই। মা আমার ছিল জীবনের সব কিছু, একমাত্র সন্তান হবার কারনে মা আমাকে চোখের আড়াল করতেনই না। অনেক দিন পরে মা'র মতো কাউকে দেখতে পেয়ে আমি পাগলের মতো হয়ে যাই। সেই বার হাতে সময় ছিল না, পরের দিনই আমাকে জাহাজের সাথে বিদেশে চলে যেতে হয়। দেশে আসার পরেই আমি বড় ছুটি নিয়ে আপনার সব কিছু খুঁজে বের করি, অনেক কষ্ট করতে হয়েছে, টাকা পয়সা বা সময় যা লাগে লাগুক, আমি পিছপা হইনি। বিশ্বাস করবেন কিনা জানি না, আমি আপনার প্রায় সব কিছুই জানি, এমনকি কোন কিন্ডারগার্টেনে পড়াশুনা করেছেন সেটাও জানি! আমি মন্ত্রমুগ্ধের মতো স্কুলের গেস্ট রুমে এসে আপনার জন্য অপেক্ষা করতাম, সময় কোন ব্যাপারই ছিল না। ঠিক আড়াই মাস পরে আমার ডাক্তার ফ্রেন্ড এটা প্রথম ধরতে পারে। সমস্যাটা নিয়ে আমি অনেক স্টাডি করেছি, বিদেশে সাইক্রিয়াট্রিক ট্রিটমেন্টের জন্য অনেক গুলি সেশনও করেছি, এটা থেকে আমি এখন মুক্ত। তত দিনে যা সর্বনাশ হবার তা হয়ে গেছে, কোন কিছু বুঝার আগেই আমি আপনার গভীরতম প্রেমে পড়ে গেছি। ভালোবাসা বাসির জন্য অনন্তকালের প্রয়োজন নেই, একটি মুহূর্তই যথেষ্ঠ! এই জীবনে মনে হয় সেই ভালোবাসা থেকে আর কোনদিনও বের হতে পারব না। সত্যি কথা বলতে কি, বের হবার কোন ইচ্ছাও আমার নেই! সত্যই আপনি যথেষ্ট এ্যাট্রাক্টিভ গার্ল। আপনি খুব সুন্দর করে কথা বলেন। কি যে ভালো লাগে আপনার কথা শুনতে! মনে হয় সারাক্ষণ শুধু আপনার কথা শুনি আর শুনি! বাচ্চা হওয়া নিয়ে যে সমস্যা, এটা নিয়ে আমার তেমন কোন মাথা ব্যাথা নেই। দেখুন, আমার দুইটা বাচ্চা অলরেডী আছে, এই দুটাকে পালতেই আমার নাভিশ্বাস উঠে যাচ্ছে! জাহাজে লাইফ খুব লোনলি। ঘরে ফিরে এসে হাসি খুশি ভাবে লাইফটা কাটাতে চাই। আপনার কোন কিছুর অভাবই আমি রাখব না, ঘরে ফেরার পর শুধু আমাকে সময় দিবেন, প্লিজ আমার সাথে কথা বলবেন।

অবিশ্বাস্য বিস্ময় চোখে নিয়ে মিথিলা মাসুদ সাহেবের দিকে তাকিয়ে রইল! একদিনে ও যা শুনেছে এটা হজম করতে মিথিলার অনেক অনেক দিন সময় লাগবে।
-মিথিলা, আমি অনেক হিসাব নিকাশ করে দেখেছি, আমার প্রস্তাব আপনার না করার কোন যৌক্তিক কারনই নেই। সুতরাং যেন তেন একটা চিন্তা করে আমাকে না বলে দিলেন আর আমি হাল ছেড়ে দিয়ে চলে দেব, এটা কোনদিনও ভাববেন না। এই বিয়ে নিয়ে আমি কোন কিছুতেই পিছু হটব না। প্রশ্নই উঠে না! বিনা যুদ্ধে নাহি দেব সুচাগ্র মেদিনী! আপনাকে বিয়ে আমি করবই করব, কেউ ঠেকাতে পারবে না!

এইরকম ডেস্পারেট একটা মানুষকে ও কি বলবে সেটা মিথিলার মাথায়ই এলো না। এই লোক কি ওকে জোড় করেই বিয়ে করবে নাকি? ওর মতামত কি সেটাও তো জানতে চাচ্ছে না। কি বড় বিপদ! ভিষন লজ্জায় মিথিলার মুখ লাল হয়ে গেল, মাথা নীচু করে ও ভাবছে কি করা যায় এখন!
-ওয়েটাররা অনেকক্ষন ধরে অপেক্ষা করছে আমার ইসারার জন্য। খাবারের অর্ডার আমি আগেই দিয়ে গিয়েছিলাম। ওদের কে খাবার সার্ভ করতে বলি? আপনি কি আর কিছু জিজ্ঞেস করবেন?
নীচু অবস্থায়ই দুই পাশে মাথা নাড়ল মিথিলা। ওর নিজের মাথাই এখন কাজ করছে না, কাকে কি জিজ্ঞেস করবে?

খাবার সার্ভ করার পর সেগুলি দেখে মিথিলা অবাক হয়ে গেল। চাইনিজ খাবার ও পছন্দ করে আর উনি ঠিক ঠিক যে ডিস গুলি ও খুবই পছন্দ সেগুলিই অর্ডার দিয়েছেন। একগাদা খাবারে টেবিলটা ভরে গেল। মিথিলা এত খাবার দেখে বিরক্ত হয়ে বললঃ
-এত খাবার অর্ডার দিয়েছেন কেন? কে খাবে এতগুলি? মানুষ তো মাত্র আমরা দুইজন!
-আপনি খাবেন! আপনার পছন্দের কোনও ডিস আমি বাদ দেই নি।

এই লোকের সাথে তর্ক করে কোন লাভ নেই! শুধুই পন্ডশ্রম! মিথিলা হতাস হয়ে চেয়ার থেকে উঠে নিজেই দুইজনের প্লেটে খাবার সার্ভ করা শুরু করল, বসে থেকে কোন লাভ নেই, শুধু দেরীই হবে আর কিছু না।

ফেরার পথে মিথিলা গাড়িতে আরো একটা অদ্ভুত কথা শুনল। স্কুলের হেড মিস্ট্রেস ম্যাডাম নাকি মাসুদ সাহেবের এই পছন্দের কথা সবই জানেন। প্রথম দিন মিথিলা চলে যাবার পরই নাকি মাসুদ সাহেব সোজা উনার রুমে চলে গিয়েছিলেন। প্রায় প্রত্যেক বারই মিথিলার সাথে কথা হবার পর মাসুদ সাহেব ম্যাডামের সাথে এই বিষয় নিয়ে আলাপ করতেন। এটা ওর মাথায় কিছুতেই ঢুকল না কিভাবে এই ভদ্রলোক যেন সবাই কে ম্যানেজ করে ফেলেন!

বাসায় আসার পর ড্রেস চেঞ্জ না করেই মিথিলা চুপচাপ বেডে বসে রইল। ওর কি করা উচিত বা উচিত না কিছুই মাথায় ঢুকছে না। অনেকক্ষন চিন্তা করার পর হটাৎ করেই মনে হলো, তাইতো, নাবিলার সাথেই আলাপ করতে হবে। এই সিচুয়েশনে ঐ সব চেয়ে ভালো সাজেশন দিতে পারবে। কিছুদিন আগেই শুনেছিল ও এখন ঢাকায় চেম্বার নিয়ে ট্রিটমেন্ট দিচ্ছে……

তিন
মিথিলা নাবিলা চেম্বারে যাবার আগের দিনই ফোনে প্রায় সবকিছুই নাবিলাকে জানালো। পুরো বিষয়টা নিয়ে ও মারাত্মক বিপদে পড়েছে, রাজি হবে কি হবে না সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না। তাই চেম্বারে যেয়ে সরাসরি আসল বিষয়ে কথা বলা শুরু করল। নাবিলা ওকে একেবারে মাসুদ সাহেবের সাথে প্রথম দেখা হওয়া থেকে সেইদিন বাসায় ফিরে আসা পর্যন্ত সবকিছু আদ্যোপান্ত খুলে বলতে বলল, নাবিলা অবশ্য ওকে ফোনে আগেই মনে করে রাখতে বলেছিল। প্রায় ৩০ মিনিট ধরে মাসুদ সাহেবের ফিদা কাহিনী শুনার পর নাবিলা মিথিলার দিকে তাকিয়ে হো হো করে হেসে দিল। নাবিলার হাসি দেখে মিথিলার মেজাজ খারাপ হয়ে গেল। ও আছে দুনিয়ার ঝামেলার মধ্যে আর সবাই শুধু হাসে, এটা কোন কথা হলো?
-হাসছিস কেন? গাধা কোথাকার, এটা হাসির কিছু হলো?
-তোর সমস্যা কি? তুই কেন রাজি হচ্ছিস না? তোর বর্তমানে যেই অবস্থা, এটাতো মেঘ না চাইতেই জল পাবার মতো? সমুদ্রের জীবনে যেমন জোয়ার ভাটা আছে, মানুষের জীবনেও আছে। মানুষের সাথে এই জায়গাতেই সমুদ্রের মিল। এই রকম প্রেমিক পুরুষ তুই বারবার পাবি?
-তাই বলে এই রকম একটা সাইক্রিয়াট্রিক পেশেন্ট কে আমি বিয়ে করব?
-আমি তো কোন অসুবিধা দেখছি না। তোকে “ওডিপাস কমপ্লেক্স” সম্পর্কে যা বলেছিলাম সেটা তোর ভালোই মনে আছে, সে জন্যই সাথে সাথে ধরতে পেরেছিলি। যদিও উনি বলেছেন এটা থেকে উনি মুক্ত কিন্তু আমার মনে হয় কিছুটা এখনো রয়ে গেছে তবে উনি যেহেতু ব্যাপারটা জানেন এবং ট্রিটমেন্ট নিয়েছেন, এটা তোর কোন সমস্যা করবে না। তুই কিন্তু ওনার আসল সমস্যাটার কিছুই ধরতে পারিস নি। মাসুদ সাহেবের উদ্ধত আর বেপরোয়া প্রেম দেখে তুই যে ভয় পেয়েছিস, সেটা ভয়ের কিছু না। তোকে আমি এটাও বলেছিলাম, সম্ভবত ভূলে গেছিস। আমরা এটাকে বলি “সিংগেল চাইল্ড সিনড্রোম”। আমি ফোনেই তোর কথা শুনে কিছুটা বুঝেছিলাম। উনি একটু বেশী রিয়াক্ট করেছেন, মনে হয় একাকিত্বটা সহ্য করতে পারছেন না। আমি তোর জন্য এদের বিহেবিরিয়াল প্যার্টানের একটা নোট রেডি করেছিলাম, যাওয়ার সময় নিয়ে যাস।
-শোন, খুব মনোযোগ দিয়ে শোন, ““সিংগেল চাইল্ড সিনড্রোম” এর ছেলেরা প্রেম, ভালোবাসা বা বিয়ের জন্য খুবই ভালো, যদি এরা নিজেরা কাউকে প্রস্তাব দেয় বা পছন্দ করে….
-এরা সহজে কাউকে পছন্দ করে না। পছন্দ না হলে এদের পায়ে সারা জীবন মাথা কুটলেও হৃদয়ে এক ফোটা জায়গা দেবে না। কিন্তু কাউকে যদি এরা নিজেরা পছন্দ করে, তার জন্য এরা হাসি মুখে হেঁটে হিমালয় পর্বতেও উঠে যেতে পারবে। নিজের ভালোবাসার জন্য এরা পারে না এমন কিছুই নেই! এরা নিজের ভালোবাসার মানুষের প্রতি চরম বিশ্বস্ত! ভালোবাসার মানুষ আর নিজের পরিবার এদের কাছে পৃথিবীর সব কিছুর চাইতেও বেশী আপন! এরা সারাজীবন হৃদয়ের ভালোবাসার চাদর দিয়ে মনের মানুষকে ঢেকে রাখে, ফুলের টোকাও গায়ে লাগতে দেয় না। ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশে এর অনবদ্য। প্রতিনিয়ত ইনোভেটিভ কিছু করে এরা প্রেয়সীকে মুগ্ধ করে রাখে।

-আমি একটা জিনিস শুধুই বুঝলাম না, তুই কেন এখনো মাসুদ সাহেবের প্রেমে পড়িস নি? মনে হয় মাসুদ সাহেব ধরেই নিয়েছেন তুই এমনিতেই রাজি হয়ে যাবি, তাই তোকে ইমপ্রেস করার কোন চেস্টা করেন নি। এরা ভালোবাসার মানুষকে ইমপ্রেস করতে দারুন পটু। তুই যেহেতু উনাকে এখনো ঠিক পছন্দ করতে পারিস নি, তাহলে একটা কাজ কর, উনি তো তোর প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছেন, উনাকে একটু বিরহের পুকুরে চুবিয়ে নিয়ে আয়! কিছুদিন দেখা করবি না, নিজে ফোন করবি না, উনি ফোন করলে শুধু yes no very good টাইপের উত্তর দিবি। এরা দুর্দান্ত বুদ্ধিমান হয়, সাথে সাথেই বুঝে ফেলবে তুই এখনো উনাকে পছন্দ করতে পারিস নি। উনি কোন না কোন এ্যাকশনে অবশ্যই যাবেন, আমার ধারনা এমন কিছু একটা করে বসবেন যে, তুই সাথে সাথেই উনার প্রেমে পড়ে যাবি। আমার কাছেও আর তোকে আসতে হবে না।
-তোর কথা যদি ঠিক না হয়? তখন তোকে আমি কি করব, বল?
-আমি নিশ্চিত। গত আট বছর ধরে এই রকম একটার সাথেই সংসার করছি আর আমার সাবজেক্টই এটা, আমার চেয়ে ভালো আর কে জানবে, বল? আমি তো আর পালিয়ে যাচ্ছি না। তবে আমার কথা যদি সত্য হয়, তাহলে তোকে আমি মাসুদ সাহেবের সাথে তোর বিয়ের অনুষ্ঠানেই পিঠের মধ্যে গুনে গুনে তিনটা কিল দেব, মনে রাখিস…….


চার
প্রায় পঁচিশ দিন পরে, একদিন বিকেল বেলা স্কুল থেকে বাসায় ফিরে ঘরে ঢুকে মিথিলা বেশ অবাক হলো। বেশ বড় সাইজের একটা প্যাকেট ডাইনিং টেবিলের উপর রাখা। বাসায় যে মেয়েটা সোমাকে দেখাশুনা করে তাকে ডেকে জানতে পারল কিছুক্ষণ আগে এই পার্সেল টা মিথিলার নামে ডেলিভারি দিয়ে গেছে। কি আছে ভিতরে দেখার জন্য প্যাকেটের উপরের কাভার খুলতেই মিথিলা স্তব্ধ হয়ে গেল। ও নিজেই ভূলে গিয়েছিল! আজকে ওর বার্থডে আর সেটা উইশ করেই এই বিশাল বড় বার্থডে কেকটা তৈরী করে পাঠানো হয়েছে। কেকের উপরে ওর প্রিয় সবুজ রং দিয়ে ওর নাম এবং দিন তারিখ লেখা। কেকের উপরে সাজান মোমবাতি গুলি গুনে দেখে ঠিক ঠিক ৩০ টাই আছে, কোন ভূল করেনি। মিথিলা সাথে সাথেই বুঝল কেকটা কে পাঠিয়েছে! অনেক, অনেক দিন পরে ওর বার্থডে তে কেক কেনা হলো। সাগরের সাথে বিয়ের পর সম্ভবত প্রথম দুই বছর কেক কেনা হয়েছিল। তারপর মনে হয় এত দিন পরে এটা! কি যে খুশি লাগছে মিথিলার! চোখে জল আসার উপক্রম! প্যাকেটের চারপাশে ভালো করে মিথিলা খুঁজল কোন চিঠি বা উইশ কার্ড টাইপের কিছু আছে নাকি?
প্যাকেটের পাশে একটা খাম পেল। খামটা খুলে মিথিলা দেখে ওর জন্য গোটা গোটা বাংলা বর্ণে হাতে লেখা একটা চিঠি…..

মিথিলা,
শুভ জন্মদিন! আপনার জীবনের এই আনন্দঘন দিনটা ইচ্ছে ছিল সবাই মিলে হইচই করে কাটাব। সেজন্য এই কেকটার অর্ডার দিয়েছিলাম। ইচ্ছে ছিল নিজেই নিয়ে আসব। হটাৎ করে কেন জানি মনে হল, আপনি আমাকে কিছুটা এ্যাভয়েড করতে চাচ্ছেন! তাই পার্সেল করে পাঠিয়ে দিলাম। আপনার জন্মদিনের উপহার হিসেবে এইবার সিংগাপুর থেকে ফেরার সময় একটা দারুন গিফট নিয়ে এসেছিলাম। ইচ্ছে ছিল নিজের হাতেই আপনাকে পড়িয়ে দেব! গিফটটা আমার কাছেই আছে। ইনসাল্লাহ, খুব শিঘ্রই এটা আমি আপনাকে পড়িয়ে দিতে পারব! আপনার মনের বদ্ধ দুয়ার খুব তাড়াতাড়িই খুলে যাবে সেই প্রত্যাশায়……
মাসুদ

# আমার খুব প্রিয় একটা গানের কিছু লিরিক্স দিলাম। কেন দিয়েছি পড়লেই বুঝবেন!
ঝড়ের দিনে খুলেছে যে পথ
আমি জানি জানি তার বেদনা
নতুন আলোর জোয়ার এলে
আমি চাই তারে দিতে আশা
তুমি কি চাওনা সোনালী দিনে
সোনালী সুখেরই সারা
কাঁটার আঘাত ভুলে তুমি
এসো এই ফুলেরই কাছে।

হাজার ফুলে ছেয়েছে যে পথ
আমি চিনি চিনি সে ঠিকানা
তোমার মনের নীরব ভাষা
সেতো আমার আছে জানা
আমি তো চাইনা তোমার এ দ্বিধা
ভেঙ্গে দাও কাঁচেরই বাধা
সীমার বাঁধন ছিঁড়ে তুমি
ধরা দাও আমারই কাছে।

যেখানে সীমান্ত তোমার
সেখানে বসন্ত আমার
ভালোবাসা হৃদয়ে নিয়ে
আমি বারে বার আসি ফিরে
ডাকি তোমায় কাছে।

@ শিল্পীঃ কুমার বিশ্বজিত, সুরকারঃ লাকী আখন্দ,গীতিকার: কাওসার আহমেদ চৌধুরী।

চিঠিটা হাতে নিয়ে মিথিলা খোলা বারান্দায় এসে দাড়াল। উন্মুক্ত নীল আকাশে রক্তিম সুর্যাস্তের আভাস দেখা যাচ্ছে আর ওর জীবনে নতুন সুর্যোদয় অনুভব করছে মিথিলা। ওর এই ভেঙে যাওয়া ছোট্ট বুকে এত ভালোবাসা রাখার জায়গা কি আছে? হাত ঘড়িতে দেখল এখন বাজে সাড়ে পাঁচটা। ও মনে মনে একটা হিসেব করে তাড়াতাড়ি ঘরে ফিরে আসল।

সব কিছু রান্না শেষ করে মিথিলা যখন রান্নাঘর থেকে বের হলো তখন বাজে পোনে সাতটা। ওর জীবনের সবচেয়ে সেরা রান্না করেছে আজকে আর সেজন্যই সময়টা একটু বেশীই লাগল। হাতে আর আছে মাত্র ৪৫ মিনিট। গরমে ঘেমে নেয়ে একেবারে যা তা অবস্থা! আলমিরা খুলে ভালো একটা ড্রেস বের করে বাথরুমে গেল গোছল করতে। ড্রেসিং টেবিলের সামনে যখন মিথিলা বসল হাতে আর মাত্র ২০ মিনিট। আজকে অনেক, অনেক দিন পড়ে ও মনের মতো করে সাজবে, যা সময় লাগবে লাগুক! এতটা দিন ধরে অপেক্ষায় ছিল আর ওর ঘরে এসে আর কিছুক্ষন অপেক্ষা করতে পারবে না ওর জন্য? আজকের এই সাজুগুজু তো ওর প্রেমিক পুরুষের জন্যই……………

পাঁচ
বাসর ঘরে বসে মিথিলার খুব লজ্জা লাগছিল। এক মেয়ের জীবনে কয় বার বাসর হয়? কি শরমের ব্যাপার! ছিঃ ছিঃ! তাকিয়ে দেখে পুরো বিছানাটা খুব সুন্দর করে সাজানো হয়েছে। সম্ভবত ডেকরেটরের কাজ! ঘরের ফার্নিচার গুলি খুব দামী। মাসুদ মনে হচ্ছে সৌখিন মানুষ। বেড রুমটাও বেশ বড়। মিথিলা চারপাশে যখন তাকিয়ে দেখছিল হটাৎ দরজা খুলে সুমন ঢুকে পড়ল, ওর পিছনে পিছনে দুই জন হাউজ মেইড। সুমন দৌড়ে মিথিলার পাশে এসে বসে পড়ল। হাউজ মেইড দুইজন সুমন কে নিয়ে যাবার চেস্টা করতেই সুমন বেশ জোড়ে দুই হাত দিয়ে মিথিলাকে জড়িয়ে ধরল। মিথিলা সুমনের দিকে তাকিয়েই বুঝল ও কিছুতেই যাবে না। মিথিলা হাউজ মেইডদের মানা করে দিয়ে বললঃ
-আপনারা চলে যান। সুমন আমার কাছে থাক। ওর আব্বু আসলে আমি বুঝিয়ে বলব।

মিথিলার জন্য চরম বিস্ময় অপেক্ষা করছিল যখন মাসুদ ওর তিন বছরের মেয়েকে কোলে নিয়ে বাসর ঘরে এসে ঢুকল। মেয়েকে ভাইয়ের পাশে বসিয়ে দিয়ে মাসুদ হাসতে হাসতে বললঃ
-দায়িত্ব যখন নিচ্ছেন, তখন দুটারই নেন। দুই ভাই বোন মিলে আমার লাইফ পুরো ভাজা ভাজা করে ফেলেছে! কিছুটা হলেও তো শান্তি পাব! আরো আগে আপনি আসলে, আরো আগেই শান্তি পেতাম!
মাসুদের কথার ধরন দেখে মিথিলা হেসে ফেলল। মাসুদের পা সালাম করার জন্য বেড থেকে নামার চেস্টা করতেই মাসুদ ওকে ধরে আবার বেডে বসিয়ে দিল।
-লাগবে না। আমি এমনিতেই অনেক খুশি হয়েছি। কবুল বলার পর থেকে আপনার জন্য অনেক বার শুকরিয়া করেছি।
মাসুদ দুই ভাই বোন কে মিথিলার দুই পাশে বসিয়ে দিয়ে মিথিলার সামনে বেডে এসে বসল। বাচ্চা দুইটাকে দুই পাশে দেখে মিথিলা চুপ হয়ে গেল। মাথা নীচু করে বসে আছে দেখে মাসুদ মিথিলার ডান হাত নিজের দুই হাতের মধ্যে নিয়ে বললঃ
-শুধু শুধু মন খারাপ করছেন কেন? এই রুমে ঢুকার আগেই আমি সোমার খোঁজ নিয়েছি। সোমা এখন আপনার ভাইয়ের বাসায় আছে। একটু আগে আপনার ভাইয়ের সাথে আমার কথা হয়েছে। কালকে আপনার ভাইয়ের বাসায় আমাদের দাওয়াত, এমনিতেই যেতে হবে। ফেরার সময় আমরা দুই জন মিলে এক সাথেই সোমাকে এই বাসায় নিয়ে আসব।
-আল্লাহ আমাকে অনেক দিয়েছেন। শুকরিয়া করে শেষ করা যাবে না। এই দুইটা বাচ্চাকে যদি খাওয়াতে পড়াতে পারি, আরেকটা কে কেন পারবো না? আমি আপনাকে কথা দিয়েছি না, বলুন?
অসম্ভব কৃতজ্ঞতায় মিথিলার মনটা ভরে উঠল। এই মানুষটা এত ভালো কেন? কেন মাসুদের সাথে ওর আগে পরিচয় হয় নি? কেন এই ভালো মানুষটা ওর কাছ থেকে এতদিন এত দূরে দূরে ছিল? আগে পরিচয় হলে হয়ত ওর জীবনটাই অন্যরকম হতে পারত!

হঠাৎ করেই মাসুদের জন্য মিথিলার বুকের ভিতর গভীর অনুরাগের একটা ঝড় বয়ে গেল। আবেগের তীব্রতায় মিথিলা মুখ তুলে দেখে মাসুদ এক বুক ভরা মায়া চোখে নিয়ে ওর দিকে তাকিয়ে আছে। সেই মায়া ভরা চোখের দিকে তাকিয়ে মিথিলা ওর পিছনে ফেলে আসা জীবনের সব পাওয়া না পাওয়া আর বেদনা বিধূর দিন গুলির কথা ভূলে গেল। টুকরো টুকরো হয়ে যাওয়া হৃদয়টা আবারো জোড়া দিতে শুরু করল। এটাই মনে হয় সেই ভালোবাসা, যা অনেক দিন আগে ও হারিয়ে ফেলেছিল! মিথিলার ডান হাত অনেকক্ষন ধরেই মাসুদের দুই হাতের মধ্যে ছিল, এবার মিথিলা ওর বাম হাতটাও মাসুদের দুই হাতের মধ্যে রাখলো। অনেক দিন পর ভালোবাসার স্পর্শে মিথিলার দুই চোখই আদ্র হয়ে আসছে! ভিজে যাওয়া চোখ ওর মুছতে ইচ্ছে করছে না! ভিজে যাওয়া চোখেই মিথিলা মাসুদের দিকে তাকিয়ে রইল। মাসুদের দুই হাতের স্পর্শে মিথিলা অনুভব করল ভালোবাসায় ঘেরা নিরাপত্তা, যার জন্য প্রতিটা মেয়েই সারা জীবন তৃষিত হয়ে থাকে…………

পূনশ্চঃ
এর আগের পর্ব পড়ে আসুন এখান থেকে গল্প - আমি মিথিলা, একজন বন্ধ্যা মেয়ে বলছি! শবনম আর শুভর প্রেম কাহিনীর জন্য অনেক অনুরোধ এসেছে, লিখতেও শুরু করেছিলাম। হঠাৎ মনে হলো মিথিলা কি দোষ করল? ভালোবাসা পাবার অধিকার তো মিথিলারই সবচেয়ে বেশী! তাইনা……….

সবাইকে ধন্যবাদ ও শুভ কামনা রইল।
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত @ নীল আকাশ, নভেম্বর ২০১৮

মন্তব্য ৬৯ টি রেটিং +১৩/-০

মন্তব্য (৬৯) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:২৩

মুক্তা নীল বলেছেন: শুভ সকাল। অনেক অনেক ধন্যবাদ মিথিলাকে নেয়ে লেখার জন্য। আমি একটু ফ্রি হয়ে পরে পড়বো। তারাহুরা করে আমি কোন কিছু পরি না। ধন্যবাদ আবারও।

০৩ রা নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:৩০

নীল আকাশ বলেছেন: প্রথম মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। আপনার মতামতের অপেক্ষায় থাকলাম........

২| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:৩০

আব্দুল্লাহ্ আল মামুন বলেছেন: শুভ সকাল। দিন কাটুক সুন্দর আর সুখের হয়ে

০৩ রা নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:৩৩

নীল আকাশ বলেছেন: আব্দুল্লাহ্ আল মামুন ভাই, শুভ সকাল। আপনার জন্যও শুভ কামনা রইল!

৩| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:০৫

খাঁজা বাবা বলেছেন: অসম্ভব ভাল লেগেছে :)

০৩ রা নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:১৪

নীল আকাশ বলেছেন: খাঁজা বাবা বলেছেন: অসম্ভব ভাল লেগেছে :) - ঠিক এই রকম একটা মন্তব্যের জন্যই সকাল থেকে বসে ছিলাম। অনেক কষ্ট করেছি এটা লেখার জন্য। সাইকোলজী পড়তে যেয়ে খবর হয়ে গেছে........সব কষ্ট মিষ্টি করে দিলেন রে ভাই......কি দিয়ে যে আপনাকে আপ্যায়ন করব........। নিন আমার নিজের হাতে ফুটানো গোলাপ ফুল,,,,,,,,,,

আপনার জন্য শুভ কামনা রইল!

৪| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:১৭

নতুন নকিব বলেছেন:



সবটা পড়া হয়নি। তবু ভালো লাগা জানিয়ে গেলাম। গল্পে +++

০৩ রা নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:২৭

নীল আকাশ বলেছেন: আস্লালামালাইকুম, নকিব ভাই। পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

৫| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:৩১

নতুন নকিব বলেছেন:



সালামের জবাব দেয়া ওয়াজিব। না দিয়ে গেলে সমস্যা। তাই আবার ফিরে আসতে হলো। ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়ারহমাতুল্লাহ।

আপনি কেমন আছেন? আপনি তো পুরনো গল্পকার। আজ একটি গল্প লিখেছি। দেখে এলে খুশি হব।

০৩ রা নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:৫৪

নীল আকাশ বলেছেন: ব্লগে কাউকে আমি সালাম দেই না। কেন জানি আপনাকে শুভ সকাল বা শুভ কামনা বলতে ইচ্ছে করল না। একজন মুসলিম হিসেবে মনে হলো অন্তত আপনাকে সালাম দেয়া উচিত। বুঝতে পারিনা আপনাকে আবার ফিরে এসে প্রতি সালাম দিতে হবে। মনে মনে আপনি বললে মনে হয় হতো না, তাইনা......।আপনার লেখা আমি এখন পড়ছি। মন্তব্য জায়গা মতো করবো। ধন্যবাদ।

৬| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:০৪

নতুন নকিব বলেছেন:



যিনি যেভাবেই নিয়ে থাকুন না কেন, আপনার বিনম্র মানবিকতা আমি অনুধাবন করি। সালাম নিয়ে এই ব্লগে আমার লেখা রয়েছে। সম্ভবত: আপনি দেখেছেনও। আপনি সালাম দিয়েছেন বলে আনন্দিত। আল্লাহ পাক আপনার নেক হায়াত দীর্ঘ করুন।

একচুয়ালি যিনি যেভাবে সালাম দিবেন উত্তরও তেমন হওয়াই বাঞ্চনীয়। কেউ যদি মুখে উচ্চারন করে সালাম দেয়। উত্তরটিও মুখে দিতে হবে। একইরকম লিখিতভাবে সালামের উত্তর লিখিত হওয়া উচিত।

অনেক ভালো থাকবেন।

০৩ রা নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:০৭

নীল আকাশ বলেছেন: সালামের নিয়মটার জন্য ধন্যবাদ, নকীব ভাই।

৭| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:০৭

হাবিব বলেছেন: ভাইয়া, রাতে পড়ে তারপর জানাবো কেমন হয়েছে। মনে হয় ভালোই হবে কারন আপনি খারাপ লিখেন না।

০৩ রা নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:০৮

নীল আকাশ বলেছেন: ওকে, অপেক্ষায় থাকলাম......

৮| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:১১

আরোহী আশা বলেছেন: ভালো লেগেছে খুব। অনেক অনেক বেশি ভালো।

০৩ রা নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:১৮

নীল আকাশ বলেছেন: আরোহী আশা, আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

৯| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:৫১

টিয়া রহমান বলেছেন: একদম ই বাস্তবমুখী গল্প, অনেক ভালো লাগলো ভাইয়া। আসলে মেয়েদের স্বাবলম্বী হওয়াটা অনেক বেশী জরুরী।
তবে সোমার কথা আসাতে একটু কনফিউসড হয়ে পড়েছিলাম যে বাচ্চা কই থেকে আসলো। পরে মিথিলার পরিচয় (গল্পের প্রথম অংশ) পড়ে বুঝতে পারলাম।
এখন প্রথম অংশের মন্তব্যগুলো পড়তেছি, মন্তব্য পড়া শেষে ওটার মন্তব্য ওখানেই লিখবো।
আশা করছি আপনার থেকে এমন আরও অনেক সুন্দর সুন্দর বাস্তব সমাজের চিত্রকে কাল্পনিক গল্পের আকারে পাবো।
আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা।

০৩ রা নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:১০

নীল আকাশ বলেছেন: টিয়া রহমান আপু, দুর্দান্ত একটা মন্তব্যের জন্য আপনাকে প্রথমেই ধন্যবাদ। আপনি যে খুব ভালো মতো পড়েছেন সেটা বুঝাই যাচ্ছে, সোমা কে নিয়ে এর আগে কেউ প্রশ্ন তুলেনি। সম্ভবত আপনি আমার আগের লেখা গুলি পড়েন নি। আমি এই ধরনের সামাজিক সমস্যা নিয়ে সব সময় লিখি। হিট বা সুপার হিট হবার আমার ইচ্ছে নেই। ব্লগে এই ধরনের লেখা খুব কম। আমার অন্য লেখা গুলি পড়ার আমন্ত্রন রেখে গেলাম.......।

আমি যখন এটা লিখছি নিশ্চয় আপনি মিথিলাকে নিয়ে ১ম পর্ব পড়ে ফেলেছেন। মিথিলা চরিত্রৎ টা আমার অনেক অনেক আপন। কেন জানিনা, ওকে নিয়ে যখন লিখি, তখন আমার লেখনির সব টুকু দরদ লেখায় চলে আসে....আমার আবারো মিথিলা কে নিয়ে, ওর সুন্দর একটা দাম্পত্য জীবনকে নিয়ে লেখা ইচ্ছে আছে...ইচ্ছে আছে ওর ভালোবাসার সংসার নিয়ে লেখার....

পরিশেষে, আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।


১০| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:৫০

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: প্রিয় নীলআকা ভাই ,

গল্পটা ভীষণ সুন্দর লেগেছে। সুপারহিট আর কি। ++

শুভকামনা ও ভালোবাসা রইলো।

০৩ রা নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:১৫

নীল আকাশ বলেছেন: দাদা, আমার অপেক্ষা অবশেষে শেষ হলো। আপনার জন্যই অপেক্ষা করছিলাম। খুব ভয়ে ভয়ে ছিলাম। সাইকোলজি নিয়ে লেখা ১ম ট্রাই করলাম। নাবিলা কে কেমন লেগেছে...।আমার একটা সুপ্ত ইচ্ছা হলো নাবিলা কে নিয়ে অনেক সাইকোলজি বিষয়ে লেখা। দেখি আপনি কি বলেন?
গল্পটা ভীষণ সুন্দর লেগেছে। সুপারহিট আর কি। ++ - :`> লজ্জায় মরি মরি, কি বলেন আপনি এসব?????

আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।

১১| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:১৪

নজসু বলেছেন: জীবন আর ভালোবাসা।
কেউ ভালোবাসায় ভর করে জীবন গড়ে।
আবার কেউ জীবন গড়তে ভালোবাসে।
ভালোবাসার ধরন যেমনই হোক না কেন, ভালোবাসা ভালোবাসাই।
মাসুদ মিথিলারা ভালোবাসে।
কোন কারণে , অজ্ঞাত কারণে অথবা প্রকৃতির নিষ্ঠুরতার কারণে সেই ভালোবাসার সমাপ্তি ঘটে।
ধীরে ধীরে কালক্রমে হয়তো সেই ভালোবাসা আবার নবরূপে হৃদয়ে আন্দোলিত হয়।
নতুন কারও প্রতি মুগ্ধতা সৃষ্টি হয়।

এক মেয়ের জীবনে কয়বার বাসর হয়?
এমন প্রশ্ন যতই উঠুক না কেন আমি বলবো একজন মানুষের জীবনে বারবার ভালোবাসার সৃষ্টি হয়।
কারণ মানুষের সুন্দর পবিত্র একটা মন আছে।

প্রেম হৃদয় ছুঁয়ে যায়।
আপনার গল্পে প্রেম আছে।
পাঠককে কাছে টানার জাদুকরী ক্ষমতা আছে।
আপনার গল্প আমার হৃদয় ছুঁয়ে যায়।

০৩ রা নভেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:১৯

নীল আকাশ বলেছেন: প্রেম হৃদয় ছুঁয়ে যায়।
আপনার গল্পে প্রেম আছে।
পাঠককে কাছে টানার জাদুকরী ক্ষমতা আছে।
আপনার গল্প আমার হৃদয় ছুঁয়ে যায়
- চোখে পানি চলে আসার মতো মন্তব্য করলেন রে ভাই। কি যে ভালো লাগছে.........।
আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

১২| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:২২

রাজীব নুর বলেছেন: মিথিলার কপালে দুঃখ আছে।

০৩ রা নভেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:৩৪

নীল আকাশ বলেছেন: কেন রে ভাই? এত দু:খী একটা মেয়ে! কতটা বছর শুধু কষ্টই করে গেল? সামান্য ভালোবাসাও কি ওর কপালে নেই? এত এত নির্দয় হচ্ছেন কেন ওর উপরে...........সবার জীবনেই তো জোয়ার-ভাটা আছে , আছে না বলেন?

১৩| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:২৫

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: যাক মাগরিব নামাজের আগেই শেষ করতে পারলাম পোস্টটা ।

মনে হচ্ছিল দারুণ কোন উপন্যাস পড়ছি।

ভাই আপনে সময় করে উপন্যাস লেখা শুরু করেন।

অনবদ্য।

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ৮:১৫

নীল আকাশ বলেছেন: ভাই, কষ্ট করে পুরোটা পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।  উপন্যাস লেখার কথা বলে তো ব্যাপক লজ্জায় ফেলে দিলেন। সম্ভবত উপন্যাস লেখার যোগ্যতা এখনও আমার হয় নি, তবে যেদিন লিখব, সেদিন আপনার নাম সেখানে থাকবে।

মিথিলা আমার অনেক পছন্দের একটা চরিত্র। কি পরিমান খাটাখাটুনি করে আমি প্রতিটা চরিত্রটা দাড় করাই, এটা বুঝানো জন্যই এই ধরনের থিওরি বেসড লেখা দিয়েছি। ওকে নিয়ে আমার আগের লেখাটায় কেউ কেউ কার না কার সাথে মিল পেয়েছিল। মিথিলার এই লেখাটার মতো একটা লেখা লিখে দেখাক! তারপর বুঝা যাবে........

ভাই, একটা প্রশ্ন, নাবিলা সাইকোলজিস্ট চরিত্রটা কেমন লেগেছে আপনার? ওকে নিয়ে আমার অনেক কাজ করার ইচ্ছে আছে। 

আপনি কি আমার শবনম নিয়ে লেখা প্রায়শ্চিত্ত গল্পটা পড়েছেন? না পড়ে থাকলে পড়ে দেখুন। ব্যাপক বিনোদন পাবেন। আজ এই পর্যন্তই। শুভ সকাল এবং শুভ কামনা রইল। 

১৫ ই মার্চ, ২০২০ সকাল ১০:৫৬

নীল আকাশ বলেছেন: মাইদুল ভাই,
দেখি এইবার এটা নিয়ে কিছু করা যায় নাকি?
বুদ্ধিটার জন্য ধন্যবাদ।

১৪| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:০১

মুক্তা নীল বলেছেন: শুরুতেই মিথিলার নতুন জীবনের জন্য শুভকামনা করছি। মিথিলা নতুন ও নিরাপদ জীবন,অভিবাবক পেলো এটাই বাস্তবতা ও আপনার লেখার সাথকতা। আপনি জীবনমুখী গল্প লিখেন, আরও লিখবেন। ভাই, বিশ্লেষণ সহ মন্তব্য করতে আমার ভালোলাগে। জানি না কে কি ভাবে। মিথিলার ৩য় পর্বেের অপেক্ষায় রইলাম। এত বড় প্রতারণা করলো মিথিলার সাথে সাগর,এর কি কোনো বিচার হবে না? থাক, মিথিলা সুখী হলেই আমরাসুখী। তবে,হ্যা্ঁ সাগর প্রকৃতির বিচার পাবেই। গল্পে আবারও ভালোলাগা

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ৮:১৭

নীল আকাশ বলেছেন: ভাই, আমি যে রকম, কেন জানি ব্লগে ঠিক আমার মতো ব্লগারদের সাথেই এত খাতির হয় আমার! আপনি যে বললেন, বিশ্লেষণ সহ মন্তব্য করতে আমার ভালোলাগে, আমিও ঠিক এই কাজটাই করি। এই লেখাটা পোষ্ট দেবার ঠিক ৫ মিনিটের মধ্যে আমি আপনাকে জানিয়েছি। এই লেখাটা হয়েছে শুধুমাত্র আপনার আগ্রহের কারনে। ভূল করে আপনার নামে উতসর্গ করিনি। সেজন্য আমি ক্ষমাপার্থি। 

আসলে সাগর কে নিয়ে আমার তেমন কোন ম্যাথাব্যাথা কখনই ছিল না। সে সমাজের একজন স্বার্থপর লোকদের উদাহরণ। আমার টার্গেট ছিল মিথিলার মতো মেয়েরা যদি এই রকম বিপদে পড়ে তাহলে কি করবে সেটা দেখান আগের পর্বে। আর এই সব মেয়েরাও যে ভালোবাসা পেতে পারে, পাওয়ার যোগ্য সেটা দেখানোর জন্যই এই পর্ব। 

মিথিলা চরিত্র টা আমার অনেক অনেক আপন। কেন জানিনা, ওকে নিয়ে যখন লিখি, তখন আমার লেখনির সবটুকু দরদ লেখায় চলে আসে....আমার আবারো মিথিলা কে নিয়ে, ওর সুন্দর একটা দাম্পত্য জীবনকে নিয়ে লেখার ইচ্ছে আছে...ইচ্ছে আছে ওর ভালোবাসার সংসার নিয়ে লেখার....ভালো প্লট মাথায় আসলেই লিখব। কথা দিলাম।

আজ এই পর্যন্তই। শুভ সকাল এবং শুভ কামনা রইল!

১৫| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:৪৯

মুক্তা নীল বলেছেন: সেই সাথে অবশ্যই প্লাস

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ৮:১৭

নীল আকাশ বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে.......

১৬| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:০৭

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:

নাবিলা চরিত্রটা বেশ ইন্টারেস্টিং। ওকে নিয়ে লিখুন। দারুন হবে।

সেই সাথে নতুন কিছু ডাক্তারি তথ্য মানুষ জানতে পারবে।

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:৫৯

নীল আকাশ বলেছেন: নাবিলা কে নিয়ে সাইকোলোজিকাল গল্প লেখার ইচ্ছা আছে দেখেই, ডেলিবারেটলি ওকে এই গল্প নিয়ে এসেছি....।পাঠকদের সাথে পরিচয় করে দেয়া বলতে পারেন! সাহস যখন দিলেন, নাবিলা কে নিয়ে চিন্তা ভাবনা শুরু করে দেয়া যাক! একটা প্লট হালকা মাথায় আছে......দেখা যাক!

১৭| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:২৮

আহমেদ জী এস বলেছেন: নীলআকা৩৯ ,




চমৎকার লিখেছেন । মিথিলা ও মাসুদের কথোপকথন খুব যৌক্তিক ও প্রাসঙ্গিক হয়েছে । ছন্দপতন হয়নি কোথাও ।
লাইকড............

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:০৫

নীল আকাশ বলেছেন: চমৎকার লিখেছেন । মিথিলা ও মাসুদের কথোপকথন খুব যৌক্তিক ও প্রাসঙ্গিক হয়েছে । ছন্দপতন হয়নি কোথাও ।
লাইকড............ -
- ভাই, কষ্ট করে পুরোটা পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। লেখার কষ্টটা মনে হয়ে উসুল হয়ে গেল।

আমি এই ব্লগে দুই জনের লেখা মারাত্মক পছন্দ করি। কবিতায় আপনি আর গল্পে অহরিত ভাই। হাতে সময় পেলেই আপনাদের ব্লগে যেয়ে হাজির হই, পুরানো লেখা পড়ার জন্য, কিছু শেখার জন্য। শুধু নিজে পছন্দ করি তা না, নতুন ব্লগারদের কে এই দুই জনের লেখা পড়তে বলি শেখার জন্য। আমি নিজেও অনেক কিছু শিখেছি। আপনাদের দুই জনের কাছে আমি অনেক কৃতগ্গ। আপনার জন্য শুভ কামনা রইল!

১৮| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:২২

আহমেদ জী এস বলেছেন: নীলআকা৩৯ ,




প্রতিমন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ । তবে আপনার জানার জন্যে বলি - আমি কোনও লেখা পড়লে তা ধৈর্য্য নিয়েই সবটা পড়ি নইলে প্রাসঙ্গিক মন্তব্য কি করে করবো ? একটু আধটু পড়ে বা না পড়েই বাহবা দিয়ে কোনও মন্তব্যই করিনে , করিও নি আমার ব্লগীয় জীবনে। ওটা লেখকের সাথে একরকম প্রতারণা করারই মতো ।

শুধু কবিতাই নয় আমার ফিচারগুলোও পড়ে দেখতে পারেন ।
শুভেচ্ছান্তে ।

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:৪৭

নীল আকাশ বলেছেন: ইনসাল্লাহ, আপনার বাকি লেখা গুলিও পড়বো। তবে আপনার কবিতা গুলির উপর আমার লোভ বেশী। এত চমৎকার লাগে পড়তে!

আমি কোনও লেখা পড়লে তা ধৈর্য্য নিয়েই সবটা পড়ি নইলে প্রাসঙ্গিক মন্তব্য কি করে করবো ? একটু আধটু পড়ে বা না পড়েই বাহবা দিয়ে কোনও মন্তব্যই করিনে , করিও নি আমার ব্লগীয় জীবনে। ওটা লেখকের সাথে একরকম প্রতারণা করারই মতো । - ঠিক আমিও একই কাজ করি। যেটা পড়ি, সেটা ভালো মতো পড়ি, এটাই ব্লগে সবার করা উচিৎ। আপনার মন্তব্যে শেখার অনেক কিছু আছে।
আপনাকে ফিরে আসার জন্য আবারো ধন্যবাদ।

১৯| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:১৩

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: অহরিত ভাইয়ের লিংক দিয়েনতো আমি মনে হয় ওনার লেখা পড়িনি।

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:২০

নীল আকাশ বলেছেন: http://www.somewhereinblog.net/blog/ohoritblog
এই ব্লগে আমার সেরা পছন্দের গল্প - http://www.somewhereinblog.net/blog/ohoritblog/30184548
বার বার পড়লেও আমার মন ভরে না...........।কত বার যে পড়েছি বলে শেষ করতে পারবো না........। ইস, কোনদিন যদি উনার মতো লিখতে পারতাম!!!!!!!!!!!!!!!!!!!

২০| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:২৬

হাবিব বলেছেন: অনেক অনেক বেশি ভালো লেগেছে

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:৩১

নীল আকাশ বলেছেন: আপনাকে ফিরে আসার জন্য আবারো ধন্যবাদ।

২১| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:০৭

রাকু হাসান বলেছেন:



ব্লগে যে কয়জনের ব্লগে আমি দ্বিধাহীনভাবে মন্তব্য করতে পারি সেই সব ব্লগের মধ্যে আপনার ব্লগ অন্যতম । কেননা আপনি সব কিছু ইতিবাচক হিসাবে নেন ।
গার্জিয়ান < গার্ডিয়ান ( ই.কে এবং ইউ.এস.এস ইংলিশের আলোকে উচ্চারণটা গার্জিয়ান হয় ) একটু দেখবেন । তবে দুই ধরনের উচ্চারণে একটু পার্থক্য আছে । ।
বেশী<বেশি,বেশী অর্থ দাঁড়ায়, বেশী:-বেশ বা ভূষা, সজ্জা, পোষাক, বেশধারী, সাধুবেশী, ছদ্মবেশী।
বেশি:- আধিক্য, সংখ্যা বা পরিমানে অধিক ।
হটাৎ<হঠাৎ,ভয়ংকর<ভয়ঙ্কর ,
মিথিলাকে একজন স্পষ্টবাদী চরিত্র লাগলো । গল্প ভালো লেগেছে । খোলামেলা আলোচনা সুখপাঠ্য ছিল । আমাদের সবার সম্মানতি আহমেদ স্যার বলে গেছেন ‘‘চমৎকার লিখেছেন । মিথিলা ও মাসুদের কথোপকথন খুব যৌক্তিক ও প্রাসঙ্গিক হয়েছে । ছন্দপতন হয়নি কোথাও ।
লাইকড............
----এমন বড় নামের কাছ থেকে প্রশংসা পেলে আর কি লাগে । আমার এমনটা মনে হয়েছে ।

০৫ ই নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:৫০

নীল আকাশ বলেছেন: শুভ সকাল, গতকালকে আপনার মন্তব্যটা পড়েছিলাম। রাকু ভাই, তবে একটু দেরীতে আসলাম। আমার কাছে মনে হয়েছে উত্তর দেবার চেয়ে ভূল গুলি খুজে বের কে ঠিক করে দিলে আপনি বেশি খুশি হবেন। যতটুকু চোখে পড়েছে, ঠিক করে দিয়েছি। বাকি গুলি চোখে পড়লেই ঠিক করে দেবো আর ভূল গুলি যেন আর না হয় সেটা নিয়ে কাজ করব।

বানান নিয়ে সমস্যার কথা আমি আপনাকে আগেও বলেছি। আপনি বিশ্বাস করুন, আমি বাংলা বানান এখনো শিখছি, আমার জন্য এটা খুব কঠিন কাজ, সারা দিন ইংরেজীতে লেখার পর বাংলা বানান মনে রাখা কষ্টকর, কিন্তু আমাকে সঠিক বানান শিখতেই হবে। এর কোন বিকল্প নেই, নেই কোন শর্টকাট রাস্তা। তবে ভূল গুলি এখন আমি অনেক কমিয়ে ফেলেছি। ইনসাল্লাহ, হয়ত খুব শিঘ্রই এই সমস্যা থেকে আমি বের হয়ে আসতে পারবো কারন আমার এই ব্যাপারে ইচ্ছে আছে..এটা সবচেয়ে বড়!

শুধু আপনি কেন? আমার প্রত্যেকটা পাঠকের জন্য আমার ব্লগের প্রতিটা পোষ্টে প্রাসংগিক মন্তব্যের জন্য পূর্ণ স্বাধীনতা দেয়া আছে। আপনার মাধ্যমে আমি আগেই এটা লিখিত ভাবে সবাইকে জানিয়েছি.....

আপনার মতো একজন ভালো বন্ধু পেয়ে আমি আসলেও খুবই খুশি। আমাদের বন্ধুত্ব অনেক অনেক গভীর।
আপনার জন্য আমার মন থেকে শুভ কামনা রইল!

২২| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৩৯

করুণাধারা বলেছেন: মিথিলাকে নিয়ে গল্প চমৎকার হয়েছে! আসলে মিথিলা চরিত্র এমন করে এঁকেছেন যে, কেবল পাঠক নয় আমার ধারণা তার আশে পাশে যারা আছে তারা সবাই ওকে ভালোবেসে ফেলে, সুতরাং মাসুদ সাহেব যে মিথিলাকে ভালোবাসবেন এ আর আশ্চর্য কি! দুজনের কথোপকথন খুব ভালো লেগেছে; ভালো লেগেছে গল্পের হ্যাপি এন্ডিং যেটার আমার চিরকাল পছন্দ।

গল্পটা বেশ বড়, সে কারণে একবারে বসে পড়ে উঠতে পারছিলাম না। এখন পড়ে ভালো লাগলো, লাইক দিলাম তাই।

০৫ ই নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:৫১

নীল আকাশ বলেছেন: আপু, শুভ সকাল। আমি গতকালকেই আপনার মন্তব্যটা পড়েছি মোবাইলে। আপনাকে বড় উত্তর দেব ভেবে আজকে সকালে বসলাম। 

মিথিলা আমার সবচেয়ে সেরা সৃস্টি, ওকে নিয়ে লেখার সময় আমি আলাদা অনুভুতি নিয়ে লিখি। ওর জন্য আমার মনে আলাদা একটা জায়গা আছে। এই ব্লগে একমাত্র রাজীব ভাই ছাড়া সবাই মিথিলাকে পছন্দ করে, ওর ভাল চায়! (উনার উপরে মন্তব্য দেখুন ;) ) পাঠকদের জানার জন্য বলছি, মিথিলা খুব সাধারন সাধাসিধা মধ্যবিত্ত পরিবারের একটা সহজ সরল মেয়ে, সে কোন আহামরী কোন সুন্দরী নয়, তবে সে সত্যবাদী, দেয়ালে হঠাৎ পিঠ ঠেকে যাওয়ায় সে এখন নতুন করে জীবন টাকে দেখতে ও বুঝতে শিখছে। এই রকম মেয়ে আমাদের সমাজে অহরহ দেখা যায়। মিশুক স্বভাবের এই ধরনের মেয়েদের সবাই পছন্দ করে - এই রকম একটা সাধারন মেয়ে নিয়েই আমি লেখা শুরু করেছি। আর ঠিক এই রকম মেয়ের কথাই আপু, আপনি বলেছেন!

ব্লগের গল্প গুলি সাধারনত ২০০০-৩০০০ শব্দের মধ্যে হয় কিন্তু আমি কথোপকথন বেশি দেই দেখে এটা বেড়ে হয়ে যায় ৩০০০-৪০০০। একটা ভাল প্লটের উপর লিখতে গেলে একটু জায়গা লাগবেই। আমার প্লটের কাহিনী/টপিক গুলি বড় হয়। তবুও আপনাদের কষ্টের জন্য আমি দুঃখিত।   

পাশে সব সময় থাকার জন্য ও এই রকম চমতকার সব মন্তব্যের জন্য অনুরোধ রেখে গেলাম। 

ভালো থাকবেন আপু, সব সময়।
শুভ কামনা রইল! 

২৩| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:৪১

মুক্তা নীল বলেছেন: আমার আগ্রহকে আপনি বিবেচনা করেছেন এতেই আমি খুশী ও কৃতজ্ঞ। আমাদের সমাজে মিথিলার মতো মানুষ খুব প্রয়োজন। জীবনের এই ভাংচুর, তারপর নতুন করে সিদ্ধান্ত নিজেকে নিয়ে সুন্দর জীবনের জন্য এর চেয়ে ভালো আর কি হতে পারে!!! আরেকটি কথা, আপনি আর ঠাকুর মাহমুদ আমাকে পুরুষ বানিয়ে দিলেন? এতো মিথিলাকে সাপোর্ট করছি তারপরও বুঝেন না আমি পরু্ষ না মহিলা? পরেরপর্ব কবে দিবেন? অপেক্ষায় রইলাম। শুভ রাত্রি।

০৫ ই নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:১২

নীল আকাশ বলেছেন: সামু এই ধরনের ভুল আমি করি না, আমি এই সব ব্যাপারে খুবই সাবধান থাকি। তারপরও কিভাবে আপু কে আমি চিনতে পারলাম না? হায় খোদা? ছি: ছি:, ধরনী তুমি দ্বিধা হয়, আমি তোমার চরনে আশ্রয় নেই......।আপনার মন্তব্যটা পড়ে আপু আমি ৫ মিনিট লজ্জায় বসে ছিলাম কি লিখব বুঝতে পারিনি....নিজ গুনে আমাকে আশা করি ক্ষমা করে দিবেন.....

পরেরপর্ব কবে দিবেন? - আপনাকে সত্য কথা বলি, মিথিলা কে নিয়ে পরের পর্ব লিখতে আমাকে অনেক স্টাডি করতে হবে, ওর অসুখ নিয়ে কিভাবে চিকিৎসা হবে সেটা নিয়ে। আমি লিখব তবে সময় নিয়ে, ভালো করে, মিথিলাকে নিয়ে কখনো আমার খারাপ লেখা হবে না, কথা দিলাম।
তবে আপনার জন্য সুখবর আছে, হয়ত তাড়াতাড়ি নাবিলা নিয়ে লেখা শুরু করব, এই লেখায় মিথিলা অবশ্যই থাকবে, ইয়ার দোস্ত বান্ধবীকে বাদ দিলে হবে ;) ..........
শুভ সকাল আর শুভ কামনা রইল!

২৪| ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:৩৩

অপু দ্যা গ্রেট বলেছেন:

সত্যিকারের ভালবাসা পাওয়াটা দুঃস্কর । তবে পেয়ে গেলে সেটা হারাতে হয় না । আর ওডিপাস এবং সিঙ্গেল চাইল্ড সিনড্রোম নিয়ে পড়াশুনা করেছিলাম(সাইকোলজি পড়ার ইচ্ছে ছিল যখন) সম্পর্কে ।

আমি সিংগেল চাইল্ড না । তবে হ্যা একাকিত্বের রোগ আছে । কারন ফ্যামিল থেকে অনেক দূরে থেকে পড়াশুনা করতে হয়েছে । তাই আমি জানি এই সব মানুষ কেমন হয় । নিজেও তাই । তবে গল্পের মত সুন্দর বাস্তব হয় না । যদি হতো তবে কেউ কান্না করে জীবন পার করত না ।

গল্পটা ভাল লেগেছে । বিশেষ করে ভালবাসার পার্ট টুকু । তবে ইদানিং ভালবাসা থেকে দুরেই থাকছি । দূরে থাকাই ভাল ।

০৬ ই নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:১৮

নীল আকাশ বলেছেন: কে বলে আপনি ভালো মন্তব্য করতে পারে না? সাইকোলজি নিয়ে আপনি ছাড়া আর কে মন্তব্য করেছে বলুন? আপনাকে বলেছিলাম না, সাহস করে শুরু করুন, সব ঠিক হয়ে যাবে.......
ওডিপাস এবং সিঙ্গেল চাইল্ড সিনড্রোম নিয়ে পড়াশুনা করেছিলাম - আমাকে লেখার আগে ভালোই পড়াশুনা করতে হয়েছে...পড়ে নিশ্চয়ই বুঝেছেন!
গল্পের মত সুন্দর বাস্তব হয় না । যদি হতো তবে কেউ কান্না করে জীবন পার করত না । - গত পর্বে মিথিলাকে অনেক কষ্ট করতে হয়েছিল। এত দু:খী একটা মেয়ে! কতটা বছর শুধু কষ্টই করে গেল? সামান্য ভালোবাসাও কি ওর কপালে নেই? এত এত নির্দয় হচ্ছেন কেন ওর উপরে...........সবার জীবনেই তো জোয়ার-ভাটা আছে , আছে না বলেন?

গল্পটা ভাল লেগেছে । বিশেষ করে ভালবাসার পার্ট টুকু । - লেখক হিসেবে এটাই আমার সার্থকতা।

পাশে সব সময় থাকার জন্য ও এই রকম চমৎকার সব মন্তব্যের জন্য অনুরোধ রেখে গেলাম।
ভালো থাকবেন সব সময়। শুভ কামনা রইল!

২৫| ০৭ ই নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:২৪

শিখা রহমান বলেছেন: নীল আপনি বেশ ভালো গল্প লেখেন। গল্পটা পড়তে ভালো লেগেছে। ধারা বর্ণনায় হোঁচট খাইনি।

একটা ছোট্ট সাজেশন ছিলো। যেহেতু গল্পটা দীর্ঘ এবং দৃশ্য থেকে দৃশ্যান্তরে গিয়েছে, সেহেতু আমার মনে হয়েছে (একান্তই আমার মতামত) দৃশ্যগুলোকে নাম্বারিং করে দিলে (যেমন আমার বৃষ্টিচিনহ্নিত ভালোবাসা গল্পে আছে) পাঠকের সুবিধা হয়। আর মিথিলাকে পাঠানো চিঠির নীচে গানের তথ্যটা আপনি শেষে ফুটনোটে দিয়ে দিলে হয়তো ভালো লাগতো।

ভালো থাকবেন। গল্পকার হিসেবে আপনার সাফল্য কামনা করছি। শুভকামনা নিরন্তর!!

০৭ ই নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:৩৬

নীল আকাশ বলেছেন: নীল আপনি বেশ ভালো গল্প লেখেন। গল্পটা পড়তে ভালো লেগেছে। ধারা বর্ণনায় হোঁচট খাইনি। - অনেক টেনশনে ছিলাম। নতুন বিষয় সাইকোলজির উপরে লিখেছি। যাক, সবার মন্তব্য পড়ে মনে শান্তি পেয়েছি.....

একটা ছোট্ট সাজেশন ছিলো। যেহেতু গল্পটা দীর্ঘ এবং দৃশ্য থেকে দৃশ্যান্তরে গিয়েছে, সেহেতু আমার মনে হয়েছে (একান্তই আমার মতামত) দৃশ্যগুলোকে নাম্বারিং করে দিলে (যেমন আমার বৃষ্টিচিনহ্নিত ভালোবাসা গল্পে আছে) পাঠকের সুবিধা হয়। - আপনার লেখাটা আবার যেয়ে ভালো করে পড়ে দেখবো, কিভাবে সেটা ইমপ্লিমেন্ট করা যায়!

আর মিথিলাকে পাঠানো চিঠির নীচে গানের তথ্যটা আপনি শেষে ফুটনোটে দিয়ে দিলে হয়তো ভালো লাগতো। - কপিরাইটের জন্য দেইনি। ঠিক আছে, কপিরাইট আইনটা ভালো করে পড়ে দেখবো!

ভালো থাকবেন। গল্পকার হিসেবে আপনার সাফল্য কামনা করছি। শুভকামনা নিরন্তর!! - কষ্ট করে এসে পড়ার আর শুভ কামনার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

ভালো থাকবেন সব সময়, আপু।
শুভ কামনা রইল!




২৬| ০৭ ই নভেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:২৬

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: আপনার পোষ্টে আমি বেশ আগ্রহ এবং বিব্রত বোধ নিয়ে মন্তব্য করি। এর কারন আপনি নিজেই।
একটু বিশ্লেষন করে বলি। প্রথমত, গল্প লেখার প্রতি আপনার আগ্রহ আমার খুব চমৎকার লাগে। কেউ লেখার চেষ্টা করলে আমি খুব খুশি হই, তাঁকে উৎসাহ দেয়ার চেষ্টা করি। কারন আমি যখন লেখালেখি শুরু করি, তখন আমি কিছু মানুষের অনুপ্রেরণা পেয়েছি। তারা আমার ভুল ত্রুটি খুব আন্তরিকভাবে ধরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করতেন। এর ফলাফল আমি পেয়েছিলাম খুব দ্রুতই। তাই ক্ষেত্রে নিজের দায়িত্ববোধের জায়গাটি পরিষ্কার করার জন্যই আপনার বা আরো কয়েকজনের লেখা আমি বেশ মনযোগ দিয়ে পড়ি।

দুইজন পোড়খাওয়া মানুষের নতুন জীবনের গল্প, একটা মিষ্টি প্রেমের গল্প। গল্পের দৃশ্যায়নগুলো আরো ভালো হতে পারত। তবে আগের চাইতে অনেক ভালো হয়েছে। গল্পের দৃশ্যায়ন বলতে আমি বুঝিয়েছি - এক পরিস্থিতি থেকে আরেক পরিস্থিতিতে যাওয়ার ব্যাপারটি। বর্ণনা দীর্ঘ করার চাইতে, পরিবেশের বর্ণনা, কিছু ডায়লগ যোগ করলে বৈচিত্র বৃদ্ধি পায়। গল্পের কিছু স্থানে তাড়াহুড়ার ছাপ আছে। আশা করি, সামনে সময় নিয়ে লিখবেন।

লিখতে থাকুন। শুভেচ্ছা রইল। :)

০৭ ই নভেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:১০

নীল আকাশ বলেছেন: কা_ভা ভাই আপনার মন্তব্য টা আমি বেশ কয়েকবার পড়েছি। আপনি আমার আসল দুর্বলতাটা ঠিকই বের করেছেন। পারিপার্শ্বিক পরিবেশের মনকাড়া বর্ণনা বা পরিবেশের বর্ণনা লেখাটা বেশ কঠিন, হুট করে শুরু করা যায় না। আমার প্রায় সব লেখায় আমি ঠিক এই জায়গাটাই এড়িয়ে যাই, যদি ভালো না হয় এই ভয়ে! আমি জানি এটা আমার লেখার ব্ড় দুর্বলতা কিন্তু
এটাকে আমার দুর করতেই হবে! সময় নিয়ে এটাতে কাজ করতে হবে.....

দুইজন পোড়খাওয়া মানুষের নতুন জীবনের গল্প, একটা মিষ্টি প্রেমের গল্প। গল্পের দৃশ্যায়নগুলো আরো ভালো হতে পারত। তবে আগের চাইতে অনেক ভালো হয়েছে। - এই শব্দচয়ন আমার জন্য অনেক অনুপ্রেরনা হয়ে থাকবে।

আমি নতুন লেখক, এভাবে ভুলত্রুটি গুলি ধরিয়ে দিলে এতে আমার কাজ করার সুযোগ থাকে।
আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ ও শুভ কামনা রইল!

২৭| ০৭ ই নভেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৩৫

আখেনাটেন বলেছেন: এই গল্পের বর্ণনাটা চমৎকার হয়েছে। শব্দের নানামুখী ব্যবহারও বেড়েছে মনে হচ্ছে।

তবে মিথিলা ও মাসুদ সাহেবের বিয়েটা পূর্বানুমান করা যাচ্ছিল। সেখানে একটু চমক থাকলে ভালো হত। 'শেষে কি হবে'-- এরকম একটা টান টান উত্তেজনা থাকলে ভালো হত। কিংবা অাকস্মিক শেষ। মানে পাঠককে চমকের মধ্যে রাখা আর গল্প পড়ে এর রেশটাও যেন বহুদিন থাকে।

যাইহোক আপনার লেখাগুলি ইদানিং পরিপূর্ণতা পাচ্ছে। শুভকামনা।

০৭ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:১১

নীল আকাশ বলেছেন: ভাই, আসার জন্য ধন্যবাদ। মিথিলাকে নিয়ে লেখাটা ছিল আমার কাছে চ্যালেঞ্জ। ওকে নিয়ে আমার আগের লেখাটায় কিছু প্রশ্ন উঠেছিল, আপনি জানেন, সেটার জবাব দেবার জন্যই এই টাইপের সাইকোলজির উপর লিখেছি। যেন আর কেউ উলটা পালটা কথা বলতে না পারে। লেখাটা পড়েই বুঝেছেন, কি পরিমান স্টাডি করে লিখতে হয়েছে। আমি আমার যে কোন গল্প লেখার আগেই স্টাডি করে লিখি, যেটা আগের গল্পটাতেও বলেছিলাম।

তবে মিথিলা ও মাসুদ সাহেবের বিয়েটা পূর্বানুমান করা যাচ্ছিল। সেখানে একটু চমক থাকলে ভালো হত। 'শেষে কি হবে'-- এরকম একটা টান টান উত্তেজনা থাকলে ভালো হত। কিংবা অাকস্মিক শেষ। মানে পাঠককে চমকের মধ্যে রাখা আর গল্প পড়ে এর রেশটাও যেন বহুদিন থাকে। - ভালো কথা বলেছেন। পরকীয়ার উপর আরেকটা লিখছি, আগের টার মতোই ভরপুর বিনোদন থাকবে আশা করি।

এই গল্পের বর্ণনাটা চমৎকার হয়েছে। শব্দের নানামুখী ব্যবহারও বেড়েছে মনে হচ্ছে। যাইহোক আপনার লেখাগুলি ইদানিং পরিপূর্ণতা পাচ্ছে। শুভকামনা। - কি যে ভালো লাগছে আপনার কথাটা শুনে! কা ভা ভাই আমাকে একটা জায়গায় কাজ করতে বলেছেন, এটা আমাকে শিখতেই হবে, লেখা আপাতত বন্ধ করে হলেও এটা শিখব আমি। আমার লেখায় কোন জায়গায় দুর্বলতা রাখা যাবে না।

ভাই, ভুল ত্রুটি চোখে পড়লে দেখিয়ে দিয়ে যাবেন।
পাশে সব সময় থাকার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ।
শুভ কামনা রইল!

২৮| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:৫২

মনিরা সুলতানা বলেছেন: এ লেখায় আমি আবার ফিরবো .........

০৮ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:১৩

নীল আকাশ বলেছেন: অবশ্যই ফিরবেন, কেন নয়? আমার সব পছন্দের ব্লগারদের মধ্যে আপনার দুর্দান্ত একটা মন্তব্য খুব মিস করছিলাম। মনে হচ্ছিল কি যে একটা নেই, কেমন যেন একটা শুন্যতা। আমার প্রায় প্রতিটি গল্পেই সব চেয়ে বেশি যার সাথে আলাপ করতাম সেটা হচ্ছে আপনি। কাজের ব্যস্ততার জন্য আজকাল ব্লগে খুব একটা বসতে পারছিনা, আপনার সাথেও ঐ ভাবে আলাপ করতে পারছিনা, ব্যর্থতা টা আমারই।
ভালো থাকবেন, আপু, সব সময়।
শুভ কামনা রইল!

২৯| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১:১৩

মনিরা সুলতানা বলেছেন: কথার জাদুকর এই বিশেষণ টি আসলেই গল্প লিখিয়েদের জন্য !
বাহ ! ছুঃ মন্তর এ কেমন পাল্টে গেলো জীবন। সত্যি কথা বলতে কি , গল্প তো জীবনের বাইড়ে নয়; এভাবে দু' জনের প্রয়োজন মিলে যাওয়া ও ভাগ্য। এমন চমৎকার পরিসমাপ্তি বাস্তবে ও হয়।

গল্পে' র বিষয় , বিষয়ের ব্যখ্যা ভালোলেগেছে। আপনার গল্প বলার ঢঙ আপনার মত অবশ্যই, এবং লিখতে লিখতে তাতে পূর্ণতা আসবে।

আপনার শবনম আমার অন্যতম প্রিয় চরিত্র!! একটা মেয়ে মাঝে কোমলতা যতখানি থাকে প্রয়োজনে ঠিক ততটাই কঠিন হওয়া জরুরী। সব সম্পর্কের ক্লাসিফিকেশন ও। অনেকটাই প্রাইড এন্ড প্রেজুডিস এর এলিজাবেথ লিজি ধরনের।

শুভ কামনা।


০৯ ই নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:২৯

নীল আকাশ বলেছেন: শুভ সকাল, আপু। আপনার দারুন মন্তব্যের জন্যই অপেক্ষা করছিলাম।

প্রথমেই আমার নায়িকাদের নিয়ে কথা। শবনমকে নিয়ে আপনি যা বলছেন ও আসলে তাই - একটা মেয়ের মাঝে কোমলতা যতখানি থাকে প্রয়োজনে ঠিক ততটাই কঠিন হওয়া জরুরী। সব সম্পর্কের ক্লাসিফিকেশন ও। ঠিক সেটাই শবনম। কুসুম কুসুমের শেষ পর্বে আমি ঠিক সেটাই দেখিয়েছি। ফিনিস টা পড়ে দেখবেন, হঠাৎ করেই কতটা সফট হতে পারে ও, কিভাবে আপনার কথার সাথে মিলে যাচ্ছে হুবহু?

কিন্তু আপু আমি কেন জানি মিথিলা চরিত্রটা প্রেমে পড়ছি! কিভাবে যেন মিথিলা আমার লেখার পুরো সফট কর্নারটা দখল করে বসে আছে! শবনম নিয়ে লেখার ফ্যাছিনেশন পর্যন্ত কমে গেছে! মিথিলাকে এত কষ্টের মধ্যে রাখতে ইচ্ছে করছিল না। মুক্তা নীল আপু, করুনাধারা আপু সহ আরো কয়েকজন মিথিলাকে অসম্ভব পছন্দ করেন, ঠিক যেমন আপনি শবনমকে পছন্দ করেন। আমি সব সময় বাস্তবতা নিয়ে লিখি। আমার নায়ক নায়িকারা কখনই সুপার হিরো বা হিরোইন না। এরা সমাজের সাধারন মানুষ। তাই অসম্ভব কিছু না দেখিয়ে খুব স্বাভাবিক একটা ঘটনায় মিথিলার ফিরে আসা দেখিয়েছি। পাঠকের যেই প্রশ্ন মনে উঠতে পারে তার উত্তর দিয়েছি সাইকোলজি দিয়ে। আশা করি এই গল্পটা পাঠকের মনে জায়গা করে নিতে পেরেছে..…

আপু, আমি কেবল লেখালিখি শিখছি। আপনার সাহায্য দরকার একটা বিশেষ জায়গায়। কা-ভা ভাইয়ের উপরের মন্তব্যটা নিশ্চয়ই পড়েছেন, কিভাবে এই ধরনের বর্ননা লেখা সহজ ভাবে শেখা যায় সেটা জানতে চাই, আমি অবশ্যই আমার এই দুর্বলতাটা কাটাতে চাই। একটু সময় নিয়ে হলেও আমাকে এই সাজেশনটা দেবেন। আমি আপনার লেখা পড়ি দেখেই জানি, পুরো সামুতে আপনার চেয়ে এই ব্যাপারে কেউ ভালো সাজেশন দিতে পারবে না।

ভালো থাকবেন আপু সব সময়।
আপনার জন্য আন্তরিক শুভ কামনা রইল!

৩০| ১১ ই নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:৪১

মনিরা সুলতানা বলেছেন: না না আমি হয়ত বোঝাতে পারি নি আপনাকে আমার কথা -
আমি চরিত্রের প্রশংসা করেছি , এখানে মিথিলা বা শবনম নাম মুখ্য নয়; মিথিলা' র যায়গায় শবনম থাকলে ও সেইম করত বলেই আমার মনে হয়। মিথিলা যে শুরুতে অত গঞ্জনা অপমান সহ্য করে ও ছিল, সে কি তার যাবার জায়গা নেই বা কিভাবে চলবে সেসব ভেবে ? এ সব কিছুর চাইতে বড় ব্যাপার ছিল ভালোবাসা। আবার প্রয়োজনে কিন্তু ঠিক' ই মিথিলা উঠে দাঁড়িয়েছে। কেবল দাঁড়িয়েছে বললে ভুল হবে, সে অন্যদের আশ্রয়দাতা ও হয়েছে।

যাইহোক সেসব-
আমি একটা ব্যাপারে খুব ই দুর্বল :( সেটা হচ্ছে সাজেশন দেয়া। নিজে ব্যাকরণ না মেনেই লিখি , প্রতিদিন ই শেখার চেষ্টা করি। আমার হিসেবে আপনি এভাবে লিখতে থাকুন , আর প্রচুর পাঠঅভ্যাস থাকুক সাথে। আপনি নিশ্চয়ই খুব শীঘ্রই পরিপূর্ণতা পাবেন লেখালিখি তে।

অনেক অনেক শুভ কামনা।

১২ ই নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:৩৬

নীল আকাশ বলেছেন: আমি আপনার মন্তব্যটা গতকালকে থেকে আজ পর্যন্ত বেশ কয়েকবার পড়েছি, ভালো ভাবে আপনার কথা গুলি চিন্তা করেছি...
আমার মনে হচ্ছে সবচেয়ে ভালো সাজেশনটাই দিয়েছেন আপনি - আমার হিসেবে আপনি এভাবে লিখতে থাকুন,আর প্রচুর পাঠঅভ্যাস থাকুক সাথে। - কৃত্রিম কিছু লেখা চেস্টা করতে যেয়ে শেষে স্বীকিয়তাটাই হারিয়ে ফেলবো। আপাতত গল্প লেখা বাদ দিয়ে পড়া শুরু করেছি। এমনিতেই আমি সবার লেখা পড়ি, তবে এবার বেছে বেছে নির্বাচিত লেখা গুলি ভালো করে পড়ব, বুঝা আর শেখার জন্য।

আপনাদের সবার কবিতা পড়ে একটা জগাখিচুরী লেখার চেস্টা করেছি, কবিতা বলার সাহস পাচ্ছি না....পড়ার আমন্ত্রন দিয়ে গেলাম।

না না আমি হয়ত বোঝাতে পারি নি আপনাকে আমার কথা - আমি চরিত্রের প্রশংসা করেছি ......... - হায় হায় আপু, আপনি মনে হয় ভুল বুঝেছেন। আমি তো আগের সব গল্পের মতোই আপনার সাথে চরিত্র নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করেছি...আমি একমাত্র আপনার সাথেই এই কাজটা করি। আপনি চরিত্রে ভুল ত্রুটি গুলি সব সময় খুব সুন্দর করে ধরিয়ে দেন, ভালো ভালো সাজেশন দেন. পরবর্তি লেখার সময় সেটা আমি মাথায় রাখি। শবনম কে নিয়ে আপনি খুব ভালো ভালো কিছু বুদ্ধি দিয়েছিলেন। নিজের ভূল সব সময় নিজের চোখে পড়ে না.....

সব সময় পাশে থাকার জন্য অনুরোধ রেখে গেলাম।
ভালো থাকবেন আপু, সব সময়।
আপনার জন্য আন্তরিক শুভ কামনা রইল!

৩১| ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:৪৪

ইয়াসিনুর রহমান ফাহিম বলেছেন: গল্পটা পড়ার সময় কেন জানিনা, বিয়োগান্তক পরিণতির একটা ভয় মনে চেপে বসেছিল। সাবলীল সেটিংয়ের জন্যই বোধহয় অমন লাগছিল।
গল্পের শেষে মিথিলাও খুশি, আমরাও খুশি ।

০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৩৭

নীল আকাশ বলেছেন: ভাল লাগল আপনার মন্তব্যটা পড়ে। আমার গল্পের সেটিংস গুলি একটু অন্য রকম হয়। বিয়োগান্তক পরিণতির লেখা আমি কমই লিখি। আমি পজেটিভ মাইন্ডের মানুষ।
গল্পের শেষে মিথিলাও খুশি, আমরাও খুশি - আর সেজন্য আমিও খুশি।
ধন্যবাদ আর শুভ কামনা রইল!

৩২| ১২ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:১৪

তারেক ফাহিম বলেছেন: কি লজ্যা কি লজ্যা :((

মিস করলাম এ পর্বটি তাইতো ঠিকঠাক উত্তর মেলাতে পারিনি।

গল্পের শেষে মিথিলার সফলতা দেখে ভালো লাগলো।

ব্যস্ত থাকায় পোষ্টটি চোখে পড়েনি।
পরের পর্বগুলোতে চোখ রাখার চেষ্টা করবো।

১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:১৬

নীল আকাশ বলেছেন: শুভ সকাল,
এই জন্যই তো আমি আপনাকে এই গল্পটা পড়তে বলেছিলাম!
নাবিলা কে নিয়ে আমি পরবর্তি পর্ব গুলিতে সাইকোলজির উপরে লিখব, আশা করি ঐ সময়ে আপনাকে পাশেই পাব। আপনার চমৎকার মন্তব্য আমাকেও মুগ্ধ করে রাখল!
ধন্যবাদ।

৩৩| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ৩:২৯

মা.হাসান বলেছেন: কিছুক্ষণ আগে পড়া শেষ করলাম (গান বাদ দিয়ে, সর্পে রজ্জুভ্রম হচ্ছে)। মিথিলার সাথে পরিচয় করানোর জন্য ধন্যবাদ। বাড়তি পাওনা অহরিত-এর লেখার সাথের পরিচয় হওয়া (১৯ নং মন্তব্যে আপনারজবাব থেকে)।
ভুলবশতঃ মিথিলা উল্টো অর্ডারে পড়ে ফেলেছি অর্থাৎ দ্বিতীয় পর্ব প্রথম পর্বের আগে পড়ে ফেলেছি। আমার কাছে নাবিলা বেশি ভাল লেগেছে, তবে এটা সুপার হিট, আমার কাচে নাবিলা ডুপার হিট।

আপনার পরের লেখার অপেক্ষায় থাকবো।

১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:১৪

নীল আকাশ বলেছেন: শুভ সকাল,
অহরিত ভাই ক্লাসিক লেখক। আমার জানা মতে উনার একটা লেখা পড়ার পর আপনি সাথে সাথেই উনার গুনমুগ্ধ পাঠক হয়ে যাবেন। ব্লগে ওনেকেই উনার নামটা পর্যন্ত জানে না। উনি আমার গুরু বলতে পারেন.................
ভুলবশতঃ মিথিলা উল্টো অর্ডারে পড়ে ফেলেছি অর্থাৎ দ্বিতীয় পর্ব প্রথম পর্বের আগে পড়ে ফেলেছি। আমার কাছে নাবিলা বেশি ভাল লেগেছে, তবে এটা সুপার হিট, আমার কাচে নাবিলা ডুপার হিট। - তাই, নাবিলা কে নিয়ে আমি সাইকোলজির উপরে লিখব, আশা করি ঐ সময়ে আপনাকে পাশেই পাব। আপনার চমৎকার মন্তব্য আমাকেও মুগ্ধ করে রাখল!
ধন্যবাদ।

৩৪| ১৫ ই অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ১২:৪৯

রামিসা রোজা বলেছেন:
মিথিলার নতুন জীবনের জন্য শুভকামনা ।
ধৈর্য্য ও কষ্টের ফলাফল কখনোই বিফলে যায়না।
সমাপ্তি সহ পুরো গল্পটি পড়তে ভালো লেগেছে ।
ধন্যবাদ আপনাকে ।

১৭ ই অক্টোবর, ২০২০ সকাল ৯:০৭

নীল আকাশ বলেছেন: শুভ সকাল,
একটানে দুইটা গল্পই পড়ে ফেললেন?
মিথিলা'কে আরেকটা পর্ব লেখার জন্য খুব করে অনুরোধ আসছিল সবার কাছে থেকে।

সাইকোলজি বেসড এই লেখায় প্রথমবারের মতো সাইকোলজিস্ট নাবিলা হক'কে নিয়ে আসি। নাবিলা'কে নিয়ে এখন পূর্ণাঙ্গ একটা সিরিজ লিখছি। সম্ভবত পাচটা গল্পও লেখা হয়েছে। সিরিজের নাম "নাবিলা কাহিনী"।

এই পর্ব লেখার মূল কারন হলো মিথিলার জীবনে পরিবর্তন আনা। মানুষের জীবনে যে জোয়ার ভাটা থাকে,
জীবনে হাল ছেড়ে না দিয়ে সামনে এগিয়ে গেলে আরো ভালো কিছু হতে পারে সেটা দেখানো।

সমাপ্তি সহ পুরো গল্পটি পড়তে ভালো লেগেছে । এটাতেই সমাপ্তি করার ইচ্ছে ছিল না। পরের পর্ব লেখার ইচ্ছে আছে। তবে এখন তিনটা পর্ব মিলিয়ে একটা পূর্নাঙ্গ উপন্যাস বানাচ্ছি। ২/৩ ভাগ লেখা হয়ে গেছে।
ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।
শুভ কামনা রইলো।


আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.