নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বিশ্বজোড়া পাঠশালাতে সবাই ছাত্র-ছাত্রী, নিত্য নতুন শিখছি মোরা সদাই দিবা-রাত্রী!

নীল আকাশ

এই ব্লগের সমস্ত লেখা সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। আমার অনুমতি ছাড়া এই ব্লগের লেখা অন্য কোথাও প্রকাশ করা যাবে না।এই ব্লগের সমস্ত লেখা সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। আমার অনুমতি ছাড়া এই ব্লগের লেখা অন্যকোথাও প্রকাশ করা যাবে না।

নীল আকাশ › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্পঃ স্বৈরাচারিণী

১৫ ই অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ১:৪৬



সঙ্গদোষে নাকি লোহাও ভাসে! চরমতম এই সত্যটা আর কেউ না হোক ফাহিবের বাবা মা দৃঢ়ভাবেই বিশ্বাস করেন। তা না হলে, যেই ছেলে বুয়েট থেকে এত ভালো রেজাল্ট নিয়ে পাশ করল, বিদেশী কম্পানীতে এতদিন ভালো বেতনে চাকুরী করল, তার মাথায় এই বিদঘুটে ভুত হুট করে ঢুকলোই বা কিভাবে? উনারা নিশ্চিত ফাহিবের সাথের কিছু বদমায়েস বন্ধুবান্ধরাই ওর মাথাটা এইভাবে নষ্ট করেছে। এর চেয়ে পাশ করার পর বিদেশে পড়তে যেতে চেয়েছিল, সেটা করতে দিলেও মনে হয় অনেক ভালো হত, একমাত্র ছেলে দেখে তখন কিছুতেই রাজি হন নি উনারা। ফাহিবের বাবা তো ছেলের উপর মহাক্ষিপ্ত। মা নিরবে অবিরত চোখের পানি ফেলেছেন। কিন্তু কোনভাবেই ছেলেকে উনারা বাগে আনতে পারছেন না। কোন শাষনই কাজ করছে না। বাসা থেকে বের করে দেবার ভয় দেখিয়ে আরেক বিপদে পড়েছিলেন ওর বাবা। প্রায় দশদিন ছেলের কোন খোঁজখবরই পান নি। শেষ পর্যন্ত নিজেই যেয়ে এখানে ওখানে খোঁজ নিয়ে ছেলেকে ধরে আবার বাসায় নিয়ে এসেছেন।

কিন্তু এইসব নিয়ে ফাহিবের কোনই বিকার নেই। ফাহিব আছে ওর নতুন জগৎ নিয়ে। ওর ধারনা, খুব সামান্য একটা ব্যাপার নিয়ে ওর বাবা মা ওভার রিয়্যাক্ট করছে। তিন বছর চাকুরী করেছে, এখন আর এইসব চাকুরী ভালো লাগছে না দেখে ছেড়ে দিয়েছে। এখন ও অন্যভাবে ক্যারিয়ার তৈরির চিন্তাভাবনা করছে। সবার কি আর জীবন নিয়ে একইরকম চিন্তাভাবনা থাকে নাকি? অথচ ওর ভবিষ্যৎ প্ল্যান কি সেটা পুরোপুরি না শুনেই ওর বাবা মা'র মাথা খারাপ অবস্থা। চরম হতাশ হয়ে শেষপর্যন্ত কোনভাবেই ছেলেকে বাগে আনতে না পেরে ফাহিবকে বিয়েই দিয়ে দিলেন তারা। এইবার যদি কিছুটা সুমতি হয় এই ছেলের!

বাসর ঘরঃ
অনিচ্ছা সত্ত্বেও বাসার সবার চাপাচাপিতে ফাহিবকে বাসর ঘরে ঢুকতেই হলো। বিয়ে মানেই স্বাধীনতার নির্বাসন। বিয়ে ও করতে চায় নি। বাসর ঘরে স্বেচ্ছায় ঢুকার তো প্রশ্নই আসে না। বাসার সবার মতিগতি দেখে বাসা থেকে পালানোর একটা প্ল্যান ছিল ফাহিবের মাথায়, কিন্তু কিভাবে যেন ওর মা সেটা ঠিকই বুঝে ফেললেন। সারাক্ষন চোখে চোখে রাখা হলো ওকে। আর তাই রাত এগারোটায় নিজের রুমে ঢুকার সময় ফাহিব হাঁফ ছেড়ে বাঁচলো। নিজের রুমে যেয়ে শান্তি মতো এখন একটু রেস্ট তো নেয়া যাবে। যদিও ওর রুমে একটা মেয়ে বসে আছে তবে সেটাকে তাড়িয়ে দিতে ওর নিশ্চয় সময় লাগবে না। তবে ফাহিবের মাথায় একটা সহজ বিষয় ঢুকল না, এত বড় বেকুব কোন মেয়ে, যে ফাহিব বিয়েতে কোনভাবেই রাজি না জেনেও ওকে বিয়ে করেছে। মেয়ের বড় বোন'কে তো বিয়ের অনুষ্ঠানেই ফাহিব হুমকি দিয়ে এসেছিল। একরাতেই বিয়ের খেল খতম করে দিবে ও। কিন্তু আশেপাশের সবাই কিভাবে যেন তাকিয়ে রইল এটা শুনে। কেউ পাত্তাই দিল না ওর কথা! তখন থেকেই ওর মেজাজটা গরম হয়ে আছে। আজকে এই মেয়ের খবর আছে। ধ্যাৎ, বিকেলবেলায় সবাই মিলে জম্পেস একটা আড্ডা আর সুখটান দেয়া আজকের মতো মিস হয়ে গেল এই মেয়ের জন্য।

বেশ মুড নিয়েই ঘরে ঢুকল ফাহিব। মেজাজ এমনিতেই বেশ তিরিক্ষি হয়ে আছে। সব রাগ যেয়ে পরল মেয়েটার উপর। একে ভালো মতো ধমক টমক না দিতে পারলে ও শান্তি পাবে না। মেয়েকে ঝাড়ি মারার জন্য কয়েক পা ঘরের ভিতরে এগুতেই শুনলঃ
-এইরুমে ঢুকার আগে কি হাত মুখ ভালো করে ধুয়ে এসেছেন আপনি?
- না। কেন?
-আমার হাইজিন নিয়ে সমস্যা আছে। বাথরুম কোথায় আছে সেটা তো জানেন। যান, আগে যেয়ে ভালো করে হাত মুখ ধুয়ে আসুন।
ফাহিব এবার বেশ ভালো করে মেয়েটার দিকে তাকালো। নাটক ছিনেমায় তো দেখায় বিয়ের রাতে মেয়েরা মাথায় বড় একটা ঘোমটা দিয়ে বসে থাকে। আর এইমেয়ে তো দেখি দিব্যি বেডের উপর বসে পা ঝুলিয়ে মোবাইল টেপাটেপি করছে। মাথায় কাপড়ের কোন বালাই নেই! লজ্জা শরম কম নাকি এইমেয়ের?

ফাহিব কিছু একটা বলার জন্য মুখ খুলার আগেই এই মেয়ে বলে উঠলঃ
-আপনি ফ্রেস হয়ে আসার আগে আপনার কোন কথাই আমি শুনব না। যান, আগে বাথরুমে যান।
ডানহাত উঁচু করে আঙ্গুল দিয়ে যেভাবে বাথরুম দেখাল তাতে ফাহিবের মেজাজ আরও খারাপ হয়ে গেল। বেতমিজ মেয়ে, আদব কায়দার কিছুই এর বাবা মা শেখায় নি। প্রথমে বাথরুমে না যাবার সিদ্ধান্ত নিলেও ছোট বাথরুমের চাপ বেড়ে গেলে নিজেই ওদিকে হাঁটা দিল।
-বাথরুমে টাওয়াল রাখা আছে। হাতমুখ ধুয়ে টাওয়াল দিয়ে মুছে টাওয়ালটা বাথরুমেই রেখে আসবেন। খবরদার বাথরুমের টাওয়াল রুমে নিয়ে আসবেন না।

বাথরুমে ঢুকার আগে ঠিক যা করতে ওকে মানা করেছিল ঠিক সেটাই করল ফাহিব। টাওয়াল হাতে নিয়েই রুমে ঢুকল ও, ইচ্ছে করেই।
ফাহিবের হাতে বাথরুমের টাওয়াল দেখে রেগে গেল মেয়েটা।
-আপনার কি ধারনা আমি ঠাট্টা করেছি আপনার সাথে? এত্ত বড় সাহস কিভাবে হলো আমার কথা না শুনার?
-আমার রুমে, আমার খাটে বসে আমার সাথে এই ভাষায় কথা বলার সাহস পেলে কোথা থেকে? বেতমিজ মেয়ে, আরেকবার বেয়াদপি করবে তো সোজা আমার রুম থেকে বের করে দেব।

ফাহিবের আপাদমস্তক একবার বেশ ভালো করে দেখল, তারপর বিছানা থেকে নেমে আসল মেয়েটা।
-আমার পরিচয় আপনি জানেন? আপনার চেয়ে কত বড় বড় ইতর বাঁদর ত্যাদড় পোলাপানদের আমি একদম সোজা করে ফেলেছি। আরেকবার যদি আমার সাথে এইভাবে কথা বলেন তো খবর আছে আপনার।
-কি করবে তুমি? বের হও আমার রুম থেকে।

কষে একটা ধমক দিল ফাহিব। এটা শুনে ফাহিবের সামনেই বিছানার উপর একটা বালিশ সরালো মেয়েটা। বিস্ফোরিত চোখে ফাহিব সেই বালিশের নীচে যা দেখল তাতে ওর মাথাই ঘুরে গেল।
-আমার সাথে এভাবে আরেকবার উঁচু গলায় কথা বললে এই হ্যান্ডকাফটা দিয়ে ঐ জানালার গ্রীলের সাথে আটকিয়ে এই গজারের লাঠিটা দিয়ে এমন ধোলাই দেব যে সারাজীবনে আর কোনদিনও সেটা ভুলবেন না। মাইরের উপর কোন ঔষধ নাই। আপনার বাবা মা আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন আপনাকে ঠিক করার। আজকেই একবারে সোজা করে ফেলব।

মেয়ের গলার টোন আর বিছানায় পড়ে থাকা জিনিসগুলি দেখে ফাহিবের মাথায় শর্টসার্কিট হয়ে গেল। কাহিনী কি? এই মেয়ের এত তেজ কোথা থেকে আসল? মাইর দিলে কেমন হয়! বিছানার উপরের জিনিসগুলি বা কই পেলে এই মেয়ে!
-এত বড় বড় কথা যে বলছ, ধরে যখন আচ্ছা মতো মাইর লাগাবো তখন সব ফুটুস হয়ে যাবে।
-কি? আমাকে মাইর দিবেন আপনি? এত সাহস? আসুন তো দেখি! সারদাতে একবছর এত কষ্ট করে কি শিখলাম তাহলে!

সারদাতে মানে? এই মেয়ে এইখানে গেল কিভাবে? কিছুটা কনফিউজড হয়ে ফাহিব তাকিয়ে রইল মেয়ের দিকে।
-এইগুলি কি দেখুন, বেশ ভালো করে দেখুন। সারাজীবনের জন্য আর কখনও ভুলবেন না।

মেয়েটার হাত থেকে একটা আইডেন্টিটি কার্ড আর ব্যাজ নিয়ে ভালো করে দেখে ফাহিব এবার বুঝল কেন বিয়ের অনুষ্ঠানে ওর কথায় কেউ পাত্তাও দেয় নি। সাড়ে সর্বনাশ! এই চীজ কোথা থেকে বাবা মা যোগার করল?
নামঃ জান্নাতুল তাসনিম রেশমা।
পদবীঃ এ এস পি।

-আপনার ফ্রেন্ড রাশেদ ভাইকে ফোন দিন। দিয়ে আমার ব্যাপারে এখনই খোঁজ নিন। উনি আমার দুই ব্যাচ সিনিয়র। আমাকে খুব ভালো মতোই চিনেন উনি।
রাশেদ ফাহিবের সাথে একই ডিপার্টমেন্টেই পড়ত। বিসিএস দিয়ে এখন পুলিশে আছে। রাজশাহীতে পোস্টিং। এলাকায় নাকি পলিটিক্যাল কি ঝামেলা লেগেছে এইজন্য বিয়েতে আসতে পারেনি।
-নিন আপনার বন্ধুকে ফোন দিয়ে কনফার্ম হন।

মেয়ের ফোন ফিরিয়ে দিয়ে নিজের মোবাইল বের করে ফোন দিল ফাহিব। কল রিসিভ করতেই দরজা খুলে বারান্দায় চলে আসল ও। ঐপাশ থেকেই প্রথম কথা ভেসে আসল।
-দোস্ত তুই তাহলে এখনও বাইচা আছোস? আমি তো তোর কুলখানির জন্য চান্দা তোলার লিস্ট বানাচ্ছিলাম।
-তুই কি জান্নাতুল তাসনিম……
-থাম তুই, আমি তোর বৌ'রে খুব ভালো করেই চিনি। আমার আন্ডারেই তিনমাস ছিল। দোস্ত তুই কিছু মনে করিস না। একটা সত্যি কথা বলতো? তুই কি পালক ছেলে, আই মিন উনারা কি তোকে পালছে শুধু?
-কি উলটা পালটা কথা বলছিস তুই? আমি পালক ছেলে হতে যাব কেন?
-তাইলে আমারে বল, তোরে এই ভাবে কুরবানী দিয়েছে কেন? এই মেয়ে তোর লাইফ তো একেবারে ঝাড়াঝাড়া করে ফেলবে।
-হারামজাদা আমাকে আগে বলিস নাই কেন?
-তুই আমারে দাওয়াত দেয়ার আগেই এই মেয়ের বাবা আমাকে ফোনে মানা করেছিল। রেশমার বাবা ডিআইজি। কিছুদিন আগেই আমার ইমিডিয়েট বস ছিল। কেমনে কই তোরে?

হঠাৎ করেই সব কিছু ফকফকা হয়ে গেল ফাহিবের কাছে। এই জন্যই গত একমাস ধরে ওর বাবা মা ওকে আর কিছুই বলছিল না। যা ইচ্ছে তাই করে বেড়াচ্ছিল ফাহিব। একবার রাত একটার সময় বাসায় ফিরলে শুধু ওর বাবা বলেছিল, “আমাদের কথা তো তুমি শুনবে না। ঠিক আছে, আমরাও তোমার ব্যবস্থা করছি”। অর্থাৎ আজকের সবকিছুই প্রি-প্ল্যানড।
-দোস্ত, একটা কথা শোন, এই মেয়ের সাথে বেশি ঘাটাঘাটি করিস না। আমার সার্কেলে যখন ছিল, তখন জুনিয়র সব অফিসার আর কন্সটেবলরা আড়ালে ওকে বাঘিনী বলে ডাকত। একবার দশ বছরের একটা মেয়ের রেপিস্ট'কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডের রুমে ঢুকেছিল রেশমা। জিজ্ঞাসাবাদের সময় প্রশ্নের একটা উত্তর শুনে রেশমা এরে এমন মাইর দিয়েছিল যে সেখানেই ফুটুস। পরে এটাকে বাইরে নিয়ে যেয়ে আমার অন্য কাহিনী সাজাতে হয়েছে।
-কি বলেছিল রেশমা'কে?
-রেশমা জিজ্ঞেস করেছিল, দশ বছরের একটা ছোট বাচ্চা মেয়েকে দেখে কিভাবে এর উত্তেজনা উঠল? ওকে পালটা উত্তর দিয়েছিল, যেকোন মেয়ে দেখলেই নাকি এর জিনিস খাড়া হয়ে যায়। রেশমার কাঠমিস্ত্রী দিয়ে বানানো একটা গজারের স্পেশাল লাঠি আছে, ঐটা দিয়ে ইচ্ছেমতো ননষ্টপ দুরমুজ দিচ্ছিল আর বলছিল, দাড়া তোর জিনিস সারাজীবন যেন আর কোনদিনও খাড়া না হয় সেই ব্যবস্থা করতেছি।

ফাহিবের আর রুচি হলো না রাশেদের সাথে এই বিষয়ে কথা বাড়ানোর। ম্যাইনকার চিপা শব্দটা অনেক শুনেছে জীবনে ও, কার গাওয়া একটা গান আছে, সেটাও শুনেছে কিন্তু এই জীবনে প্রথমবারের মতো এটার প্রকৃত অর্থ কি বুঝল ও! নিজের বাবা মা ওর সাথে শেষ পর্যন্ত এইরকম বিট্রে করল! বেশ কিছুক্ষন ভালোভাবে চিন্তাভাবনা করার পর ফাহিব বুঝল যে, এই মেয়ের সাথে আর যাই হোক, ওর সংসার করা সম্ভব না। সুতরাং, বেড়াল অবশ্যই বাসর রাতেই মারতে হবে। বারান্দা থেকে রুমে ঢুকেই সোজা রেশমার কাছে যেয়ে বললঃ
-তোমাকে নিয়ে মিথ্যা কথা বলে আর আমাকে ভুল তথ্য দিয়ে এই বিয়ে দেয়া হয়েছে। এই বিয়ে আমি মানি না, মানব না।
-তাই, তাহলে এখন কি করবেন?
-আমি তোমাকে ডির্ভোস দেব। যেখান থেকে এসেছ ঠিক সেখানেই পাঠিয়ে দেব।
রেশমা দাঁত বের করে হাসতে হাসতে বললঃ
-এটা যে আপনি করতে চাইবেন সেটা আমরা সবাই জানি। আর এটা যেন না করতে পারেন সেটারও সুব্যবস্থা করা হয়েছে।
-মানে, কি বলছ তুমি? আমি ডির্ভোসও দিতে পারব না?
-বিয়ের কাবিনে আমার মোহরানা কত ধরা হয়েছে ভুলে গেছেন নাকি? আমি আপনার ২টা ব্যাংক একাউন্টে খুব ভালোমতো খোঁজ নিয়েছি। সবমিলিয়ে আছে মাত্র ৫লাখ। আপনি একটা রাম বুদ্ধু, কোন পাগলে আপনাকে ইঞ্জিনিয়ারের সার্টিফিকেট দিয়েছে? আমার কাছ থেকে আপনার পালানোর কোন উপায় নেই।

মুখ খারাপ করে মনে মনে নিজেকে কষে একটা গালি দিল ফাহিব। বিয়ের অনুষ্ঠানে মেজাজ খারাপ করে পারতপক্ষে কোন কথাই বলেনি ও। শুধু বিয়ে পড়ানোর সময় শুনেছিল এমাউন্টটা ৫০ লক্ষ। তখন চিন্তাও করেনি এটাই এত বড় বুমেরাং হয়ে যাবে। রাগে এখন নিজের সব চুল টেনে টেনে ছিড়ে ফেলতে ইচ্ছে করছে ওর।
-আপনি দিনের পর দিন ইচ্ছেমতো আপনার আব্বু আম্মুকে জ্বালাতন করেছেন। চাকরী ছেড়ে দিয়ে ইয়ার দোস্তদের নিয়ে শাহবাগে একটা দোকানে বসে সিগারেট ফুঁকতেন, গাঁজায় সুখটান দিতেন আর মনের সুখে আড্ডা দিয়ে বেড়াতেন। যেভাবে ইচ্ছে সেভাবে চলতেন। সুতরাং এই বিয়ে হচ্ছে তার পানিশমেন্ট।
-খুব মনোযোগ দিয়ে শুনুন। আজকে থেকে কবি হবার, সাহিত্য রচনা করার আর লেখালিখির যে বিটকেলে ভুত আপনার মাথায় চেপেছে সেটা আমি ঝেটিয়ে বিদায় করে দেব। ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানোর দিন আজকে এখন থেকেই শেষ।

ফাহিবের মাথায় সবকিছু মিলিয়ে ভজঘটের বিশাল একটা গিট্টু লেগে গেল। ঘরের ভিতরে ২টা বড় টিউবলাইট জ্বলার পরও চোখে নিকষ কালো আধার দেখল ফাহিব। কি করা যায় এখন? আচ্ছা বাসা থেকে এখন পালিয়ে অন্য কোথায় চলে গেলে কেমন হয়? অবচেতন মনেই দরজার দিকে তাকালো ও।
-ফাহিব সাহেব, দরজার দিকে তাকিয়ে কোন লাভ নেই। এইরুম থেকে বের হতে পারবেন শুধু। বাসার বাইরে আমি ২জন কন্সটেবল পাহাড়ায় রেখেছি। বাইরে বের হলেই ধরে আবার আমার কাছেই ফিরত দিয়ে যাবে।
ফাহিবের মাথা চক্কর দেয়া শুরু করল। এই বদ্ধ উন্মাদ মেয়ের সাথে কয়েকদিন থাকলে নির্ঘাত ও পাগল হয়ে যাবে। ঠিক এইসময় দরজা খট খট করলে রেশমা খুলে দিতেই বাসার হাউজমেইড একটা ট্রলীতে করে বেশ কিছু নাস্তা আর ফল দিয়ে গেল।
-আপনার যদি খিদে লাগে এখান থেকে খেতে পারেন। আমি বিয়ের অনুষ্ঠানে পেট ভরে খেয়ে এসেছি। আমার বিয়েতে আমি খাব না তাই হয় নাকি?
-আমি এখন আর কিছু খাব না।
-তাইতো, এতক্ষন আমার কাছে যা যা শুনেছেন তাতে তো পেট ভালো মতনই ভরে যাবার কথা!

এই কথাটা শুনার পর ফাহিবের ইচ্ছে করল রেশমার ডানগালে সেইরকম একটা কষে থাপ্পড় দিতে। কেন জামাইরা ধরে মাঝে মাঝে বৌরে মাইর দেয় এখন বুঝল ও! একটা কবিতার বই লেখার কাজ প্রায় শেষ করে এনেছিল ও। এইবারের বই মেলাতেই বের করার কথা। প্রকাশক'কেও টাকা এডভান্স দেয়া হয়েছে। সব জলে গেল মনে হচ্ছে! ইচ্ছে করছে যেয়ে রেশমার ফর্সা সুন্দর গলাটা টিপে ধরতে। না, এভাবে হবে না, ও পুরুষমানুষ, একে অন্য উপায়ে শায়েস্তা করতে হবে। বিয়ে তো হয়েই গেছে, অসুবিধা কি?
কিন্তু রেশমা ওর মনের গোপনতম ইচ্ছেটাকেও জলাঞ্জলি দিয়ে বিছানা থেকে একটা বালিশ তুলে নিয়ে ওর হাতে ধরিয়ে দিয়ে বললঃ
-ঐ যে ডিভানটা দেখছেন, এখন থেকে ঐখানে শুবেন আপনি। আর আমি এই বিছানায় ঘুমাব।
আয়েস করে শুয়ে শুয়ে কবিতা লেখালিখি করার জন্য হাতিল থেকে একটা ডিভান কিনে বেডরুমেই রেখেছিল ফাহিব। এটাই এখন বড় কালশাপ হয়ে দাড়াল ওর জন্য।
-কেন আমাদের বিয়ে হয়েছে না? আমি তোমার সাথেই ঘুমাব। এটা হ্যাজবেন্ড হিসেবে আমার অধিকার।
-হ্যাজবেন্ড? একটু আগেই না আমাকে ডির্ভোস দিতে চাচ্ছিলেন? আচ্ছা ঠিক আছে, কোন অসুবিধা নেই। আগে আমাকে আমার নায্য মোহরানার টাকা বুঝিয়ে দিন। এটা ছাড়া আমাকে স্পর্শ করাও আপনার জন্য হারাম।
-এত রাতে আমি এত টাকা কোথায় পাব?
-সেটা তো আপনার মাথাব্যথা, আমার না। বিয়ে করার সময় তো আমাকে দেখে তেঁতুলের রস জিভে চলে এসেছিল। যেই লুলচোখে তাকিয়ে ছিলেন কতক্ষন! টাকার কথা মনে ছিল না কেন? যতদিন মোহরানার পুরো টাকা আমার হাতে দিতে না পারবেন, ততদিন আলাদা শুবেন। খবরদার আমাকে টাচ করার কথা ভুলেও চিন্তা করবেন না।

ফলের ট্রেতে একটা ফল কাটার ছুড়ি দেখা যাচ্ছে। মাঝারি সাইজ। এটাতেই কাজ হয়ে যাবে। যা থাকে কপালে! এই মেয়ের সাথে সংসার করার চেয়ে ফাঁসিতে ঝুলে মরে যাওয়াও অনেকগুন ভালো। এগিয়ে যেয়ে ছুড়িটা হাতে নিয়ে রেশমার দিকে ঘুরতেইঃ
-একি, আপনি হাতে এটা কি নিয়েছেন? বাসর রাতে বিড়ালের জায়গায় নিজের বৌকেই মেরে ফেলতে চাচ্ছেন নাকি? এটা কি দেখেছেন?

ফাহিব তাকিয়ে দেখল বেডের উপর একটা আর্মস রাখা। রিভলবার নাকি পিস্তল চিনল না ও।
-বাংলাদেশ সরকার আমাকে আত্মরক্ষার জন্য এটা দিয়েছে। ফুললি লোড করা, সাথে এক্সট্রা একটা ম্যাগাজিনও আছে। জানেন তো আত্মরক্ষার জন্য আমাদের গুলি করার পারমিশনও আছে! বেশি ইচিং বিচিং করবেন তো হাঁটুর নীচে গুলি করে বিছানায় বেশ কিছুদিনের জন্য শুয়ে থাকার স্থায়ী ব্যবস্থা করব। টোটো কোম্পানীর বাদ্যাইম্যা ম্যানেজার জামাইয়ের চেয়ে চোখের সামনে বিছানায় পড়ে থাক সেটাও অনেক ভালো!

শেষ লাইনগুলি শুনে ফাহিবের আত্মারাম খাঁচাছাড়া হয় হয় অবস্থা!
-এতই যদি আমার দোষ থাকে তাহলে আমাকে বিয়ে করেছ কেন?
-আপনাকে আবার মানুষ বানানো জন্য। আপনার আব্বু আম্মু আমাকে খুব ভালো করে অনুরোধ করেছেন। শ্বশুর শাশুড়ির প্রথম অনুরোধ কি ফেলা দেয় যায় বলেন? তাছাড়া আমার একটা ঘরজামাইও দরকার। আপনার সবকিছু শুনার আর নিজের চোখে দেখার পর মনে হলো আপনিই পারফেক্ট, তবে সামান্য কিছুটা ঘষামাজা করে নিতে হবে।

কি ধরনের ঘষামাজার টার্গেট করেছে কে জানে? শেষ পর্যন্ত এই মেয়ের ঘরজামাই হতে হবে ওকে? কপাল এতই খারাপ ওর? চোখে প্রায় জল চলে আসার উপক্রম।
-এভাবে হাঁদারামের মতো দাঁড়িয়ে আছেন কেন? চুপচাপ যেয়ে শুয়ে পড়ুন। আপনি নাকি সারারাত জেগে থাকেন আর দুপুরবেলা ঘুম থেকে উঠেন? আজকে থেকে ঠিক এই সময়ে ঘুমিয়ে পড়বেন আর সকাল আটটার মধ্যে ঘুম থেকে উঠে যাবেন। আমি ঘুমাতে যাচ্ছি, আপনি শুয়ে পড়ার আগেই সবলাইট বন্ধ করে দেবেন। সামান্য আলোর মধ্যেও আমি ঘুমাতে পারি না।
রেশমা বিছানায় যেয়ে শুয়ে পড়লে ফাহিব লাইট নিভিয়ে দিয়ে চুপচাপ শুয়ে পড়ল। একদিনে যথেষ্টই হয়েছে।

পাঁচমিনিট পরেই রেশমার মোবাইলে ফোনকল আসল। ফাহিবের মনে হলো কেউ যেন কোন কাজের রির্পোট করছে।
-ফাহিব সাহেব, আপনার জন্য দারুন একটা সুখবর আছে। আপনার সেই আড্ডা মারার আর গাঁজা ফুকার চারজন ইয়ার দোস্তদের থানায় নিয়ে বেশ ভালোমতো আপদমস্তক সাইজ করা হয়েছে। এদের যা যা করেছে শুনলাম, তাতে আমি নিশ্চিত, আপনাকে এরপর দেখা মাত্রই এরা লুঙ্গি তুলে ঝেড়ে দৌড় দিবে।

রেশমার অট্টহাসি শুনে ফাহিবের পিত্তথলি পর্যন্ত জ্বলে উঠল। অন্ধকারে চুপচাপ যেয়ে গলা টিপে ধরলে কেমন হয়? কিন্তু রাশেদের কাছ থেকে শুনা সারদাতে দেয়া ট্রেনিংগুলির কথা আবার মনে পড়ে গেল। ঘোড়ায় চড়া, দৈনিক দৌড়ানো, প্যারেড, অবস্টাকলস, মার্শাল আর্ট, ফায়ারিং। নাহ, অনেক বড় রিস্ক হয়ে যায়। মাইর টাইর খেলে কেলেংকারী হয়ে যাবে। কালকে আর কাউকেই মুখ দেখানো যাবে না। এর চেয়ে বরং ঘুমিয়ে পড়াই নিরাপদ।

পরের দিন সকালবেলাঃ
-আপনাকে এই শেষবারের মতো ঘুম থেকে উঠতে বলছি। এরপর গায়ের উপর বালতি দিয়ে পানি ঢেলে দেব।
ধরমড় উঠে বসল ফাহিব। এই মেয়েকে কোন বিশ্বাস নেই।
-আমার খিদে লেগেছে। আপনাকে ছাড়া এই রুম থেকে বের হতে পারব না। পনের মিনিট সময় দিলাম, এর মধ্যে হাতমুখ ধুয়ে রেডি হবেন।

ভালো করে তাকিয়ে ফাহিব দেখল ইতিমধ্যেই রেশমা কাপড় পালটে সালোয়ার কামিজ পড়ে ফেলেছে। ঘড়িতে কেবলই নয়টা বাজে। সাত সকালবেলা এর সাথে ঝগড়া করে মুড নষ্ট করার কোনই মানে হয় না।

বিশমিনিট পরে যখন রেশমাকে নিয়ে ফাহিব রুম থেকে বের হয়ে ডাইনিং টেবিলে আসলে, সবাই হতভম্ব হয়ে ওর দিকে তাকিয়ে রইল।
-আম্মু এখন থেকে সবকিছু নিয়ম মতো হবে। আপনাদের আর ওকে নিয়ে কোন টেনশন করতে হবে না।

রেশমার কথা শুনে ফাহিবের বাবা মা খুশিতে দাঁত বের করে হেসে ফেলল। দুইজনের চোখেই অকৃত্রিম কৃতজ্ঞতা।
-মা, এইজন্যই তো তোমাকে এনেছি। সবসময় ওকে ভালোমতো দেখেশুনে রাখবে।
বাবা'র এইকথা শুনে রাশেদের মতো ফাহিবেরও সন্দেহ হলো আসলেও ও পালক ছেলে নাকি?
নাস্তা খাওয়া শেষ হবার পর রেশমা ওর শ্বশুরের কাছ থেকে বাসার কাছাকাছি সেলুনের এড্রেসটা নিল। ফাহিবের ছোটবোন অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলঃ
-তুমি সেলুনে যেয়ে কি করবে ভাবি? চুল কাটবে নাকি? চল তোমাকে পার্লারে নিয়ে যাই!
-আমি কাটব না, তোমার ভাই কাটবে। চুল দাড়ি না কেটে উনি কবি হবার বিশাল ভাব ধরেছেন। উনার এই কবি কবি ভাব আমি সারাজীবনের মতো একবারেই কেটে ফেলে দেব।

ফাহিবের প্রায় মাথায় হাত অবস্থা। পাক্কা পাঁচমাস ধরে এত কষ্ট করে এতবড় একটা ঝুটি সহ ঝাকড়া চুল বানিয়েছে ও আর এত সুন্দর দাড়ি কি একদিনে হয়?
-চলুন এখন সেলুনে যাব।
-না আমি এইগুলি কাটব না।
-সবার সামনে সিনক্রিয়েট করবেন না। আপনি আমাকে এখনও ভালোমতো চিনেন নি। বাইরে ২টা কন্সটেবল এখনও পাহাড়া দিচ্ছে। দরকার পরলে হাতে হ্যান্ডকাফ পড়িয়ে ধরে নিয়ে যাব। আমি যা বলি সেটাই করি।
নিজের কাছে তখনই ওয়াদা করল ফাহিব এর শাস্তি ও রেশমাকে অবশ্যই দেবে। বাসাসুদ্ধ সবাই ওর সাথে বিট্রে করেছে। তবে দিন সবার সমান যায় না! এটার উসুল ও রেশমার কাছে ঠিকই আদায় করবে।

একঘন্টা পরে দুইজন যখন বাসায় ফিরে আসল, সবাই ফাহিবকে দেখে অবাক! কি সুন্দর লাগছে এখন। ফাহিবের মা তো খুশিতে রেশমা'কে জড়িয়েই ধরল….
-দেখেছেন আম্মু, আমাকে বিয়ের আগে ওকে দেখার জন্য যেই ছবিটা দিয়েছিলেন ঠিক সেরকম বানিয়ে এনেছি।

বিশদিন পরের কথাঃ
গুলশান ১নাম্বারে বিকেলবেলা হঠাৎই ফাহিবের সাথে রাশেদের দেখা। স্যুট টাই পড়া ফাহিবকে দেখে রাশেদের চোখ প্রায় আকাশে উঠার উপক্রম! একি অবস্থা!
-কিরে, তোকে তো দেখি রেশমা ঠিকই সাইজ করে মানুষ বানিয়ে ফেলেছে। শুনলাম চাকুরীতেও নাকি আবার ঢুকেছিস, এটা কি সত্য?
রাশেদকে দেখে ফাহিবের মেজাজ সাথে সাথেই খারাপ হয়ে গেল। এই হারামজাদাই আসল কালপ্রিট। এর মাধ্যমেই ওর সব খোঁজখবর নিয়েছিল রেশমার বাসা থেকে, এমনকি শাহবাগের কোথায় যেয়ে ও আড্ডা মারতো সেটাও এর কাছ থেকে জেনে রেশমা নিজে যেয়ে ফাহিবকে দেখে এসেছিল। বেঈমান কোথাকার! রাশেদের সামনে রাস্তায় একদলা থুথু ফেলে একটা কথাও না বলে গটগট করে চলে আসল ফাহিব।

রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতেই বিয়ের পরের দিনগুলির কথা আবার মনে পড়ে গেল ফাহিবের। ওর জীবন একদম ভাজা ভাজা করে ফেলেছে রেশমা। বিয়ের পর ফাহিবকে নিজের সরকারী বাসায় জোর করে নিয়ে এসেছে। ফাহিব চাকরী ছেড়েছিল প্রায় সাতমাস আগে। বাসা থেকে এইভাবে বিয়ে দিয়েছে দেখে রাগ করে ঠিক করেছিল ও বিয়ের পরেও চাকরী করবে না। ঘরজামাই পছন্দ তো রেশমার, ১০০% ঘরজামাই থাকবে ও। দারুন একটা শাস্তির ব্যবস্থা করেছে ও রেশমার জন্য! কারও সাথে যখন রেশমা ওকে পরিচয় করিয়ে দেয়, কি করে জিজ্ঞেস করলেই ফাহিব হাসিমুখে বলে দেয়, “আমি তো চাকরী বাকরী করি না। ঘরজামাই তো, সেজন্য সারাদিন ঘরেই বসে থাকি”। রেশমার সাথে এই নিয়ে প্রথম দশদিন বেশ কয়েকবার তুমুল ঝগড়াও হয়েছে ওর। সবধরনের ভয়ভীতি দেখিয়েও যখন কোনভাবেই চাকুরী করার জন্য ফাহিবকে রাজি করাতে পারল না, রেশমাও ফাহিবের জন্য ভয়ংকর শাস্তির ব্যবস্থা করল। হাড়ে হাড়ে বজ্জাত মেয়েটার মাথাভর্তি সব শয়তানি বুদ্ধি। মোহরানার টাকা এখনও শোধ দিতে পারেনি দেখে এই সূত্র ধরে শাস্তিস্বরূপ বিয়ের পর থেকেই ধারে কাছেও ফাহিবকে ঘেষতে দেয় না। শর্ত একটাই - হয় আমার মোহরানার টাকা শোধ দাও, না হলে চাকুরীতে ঢুকে প্রতিমাসে শোধ দেবার লিখিত চুক্তি করো। অন্যকোন মেয়ে হলে পুরুষমানুষ কাহাকে বলে সেটা ও ঠিকই বুঝিয়ে দিত, কিন্তু রেশমার সাথে সেটা করার সাহস কিছুতেই পেল না ও। ফাহিব দাঁতে দাঁত চেপে প্রথম পনেরদিন অনেক কষ্টে নিজেকে সংবরন করেও চাকুরীতে ঢুকল না। রেশমাকে শাস্তি দেবার এতবড় সুযোগ হাতছাড়া করার প্রশ্নই উঠে না! একই বিছানায় রেশমার উলটো দিকে ফিরে নাক ডেকে ডেকে ঘুমাতো ফাহিব।

এদিকে কিছুতেই ফাহিব'কে বাগে আনতে না পেরে রেশমাও চরমতম শাস্তির ব্যবস্থা করল ঠিক ষোলদিনের মাথায়। রাতেরবেলা খাওয়া দাওয়া শেষ হবার পর বেডরুমের দরজা ভালোমতো লাগিয়ে দিয়ে রেশমা হতাশ গলায় শেষবারের মতো জিজ্ঞেস করলঃ
-তুমি তাহলে চাকুরীতে কিছুতেই ঢুকবে না?
ফাহিব দাঁত বের করে হেসে দিল। এত আনন্দ ও রাখবে কোথায়?
-না, চাকুরী করা আমার পোষাবে না। তুমি তো ঘরজামাই চেয়েছ, সুতরাং সারাদিন ঘরেই থাকবো।
-তোমার মতো বজ্জাত পুরুষমানুষের নাটবল্টু স্ক্রু কিভাবে টাইট দিতে হয় সেটা আমি খুব ভালো করেই জানি। এবার দেখবো তুমি কয়দিন চাকুরীতে না ঢুকে থাকতে পারো!

কথা শেষ করেই সোজা বাথরুমে ঢুকলো রেশমা। পাঁচমিনিট পরে যখন বের হয়ে এলো, রেশমা'কে দেখে ফাহিবের মাথায় সাথে সাথেই সর্টশার্কিট হয়ে গেল। শুধুই সেমি ট্রান্সপারেন্ট একটা স্লীভলেস নাইটি পড়ে বের হয়ে এসেছে। রেশমা মেয়ে হিসেবে যথেষ্টই সুন্দরী। এই ড্রেসে রেশমা'কে দেখে ফাহিবের বিশেষ একটা হরমোন সহসাই আন-ব্যালেন্সড হয়ে মাথায় ইলেকট্রনগুলি উলটা পালটা দিকে ছুটোছুটি শুরু করে দিল। তাকানোও যাচ্ছে না, আবার না তাকিয়েও থাকা যাচ্ছে না। বজ্জাতির একটা সীমা থাকা উচিৎ!
-এই ড্রেস পড়েছ কেন?
-কেন? অসুবিধা কোথায়? তুমি আমার হ্যাজবেন্ড, তোমার সামনে আমার যেকোন ড্রেস পড়ার পারমিশন আছে!

পাঁচমিনিট পরে-
-ফাহিব, এভাবে লুকিয়ে লুকিয়ে আমাকে দেখছ কেন? ভালো মতন দেখ! আমি না তোমার বিয়ে করা বৌ! আমার দিকে তাকাতে লজ্জা পাচ্ছ নাকি?
-না না, লজ্জা পাবার কি আছে?
-ঠিক বলেছ। লজ্জা কিসের? যতক্ষন ইচ্ছে দেখবে। তোমার দেখার সুবিধার জন্য আমি তোমার একদম সামনে এসে দাঁড়ালাম।
তারপর ফাহিবের হাতে ড্রেসের প্যাকেটটা দিয়ে রেশমা বললঃ
-ফাহিব বলো তো? প্যাকেটের গায়ের মডেল মেয়েটাকে, না আমাকে বেশি হট লাগছে? খুব ভালো করে দেখে বলবে।
ফাহিব পর পর বেশ কয়েকটা বড় করে দীর্ঘশ্বাস ফেলল। আজকে ওর খবর আছে! কিসের মডেল? সামনে যে দাঁড়িয়ে আছে তাকে দেখেই রাত দশটার সময় বারটা বেজে যাচ্ছে ওর!
-তুমি চিন্তা করো না, এভাবেই আজকে রাতে তোমার সাথে ঘুমাব আমি। তুমি আসলেও পুরুষমানুষ নাকি সেটারও পরীক্ষা হয়ে যাবে।
নিজের মাত্র একহাত সামনে এই ড্রেসে রেশমা দেখে মাত্র এগারো মিনিট টিকে থাকতে পারল ফাহিব। এরপর বিনাযুদ্ধেই হার মেনে নিল। আলমিরা থেকে ২০০টাকার স্ট্যাম্পড কাগজ বের করে তাতে ফাহিবের সাইন নিল আগে রেশমা। সবকিছু আগেই লিখে রেখেছিল। চুক্তি মোতাবেক চাকুরীতে যত দ্রুত সম্ভব ঢুকবে ফাহিব আর যা বেতন পাবে সেখান থেকে প্রতিমাসে নিয়মিত মোহরানার টাকা পরিশোধ করবে। এবং রেশমার অনুমতি ছাড়া কোনভাবেই ফাহিব চাকুরী ছাড়তে পারবে না।

ফাহিবের শারীরিক আর মানসিক যা অবস্থা তখন, রেশমা যে শর্তই দিত তাতেই চোখ বন্ধ করে সাইন করে দিত! কোনরকমে কাগজে শুধুই সাইনটা করে প্রথমবারের মতো নিজের বৌকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরল ফাহিব……..

কানের কাছে একটা বড় পাব্লিক বাসের হর্ণ শুনে হুট করেই আবার বর্তমানে ফিরে আসল ফাহিব। আজকেই নতুন চাকুরীতে ঢুকেছে ও। ওর খারাপ কপালের দৈন্যদশা কি কিছুতেই কাটবে না? চাকুরীতে ঢুকার প্রথমদিনেই কিনা এত বড় অপয়া একজনের সাথে দেখা হলো ফাহিবের……..



উৎসর্গঃ শ্রদ্ধেয় ব্লগার মফিজ ভাইকে এবং উনি মোটেও ভুয়া নন, কোনভাবেই না! উনি আমার গল্পের একজন একনিষ্ঠ পাঠক। এবং চমৎকার ব্যক্তিত্বের অধিকারী একজন ব্লগার। উনার রম্য লেখাগুলি দুর্দান্ত হয়!

যারা এই ধরনের আরও গল্প পড়তে চান তাদের জন্যঃ
গল্পঃ ভুল সবই ভুল

মন্তব্য ৫৯ টি রেটিং +১৪/-০

মন্তব্য (৫৯) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ২:০৬

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন:

১৫ ই অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ২:৩৫

নীল আকাশ বলেছেন: প্রথম মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। গল্পটা পড়ুন। সেই রকম মজা পাবেন! গ্যারান্টি দিলাম!

নিজের বাগানে ফুটানো গোলাপ।

১৫ ই অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ২:৩৭

নীল আকাশ বলেছেন: টি ব্যাগ কই?

২| ১৫ ই অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ২:১০

বিজন রয় বলেছেন: হা হা হা , ছবি আপা এসব ছবি পান কোথা?

গল্প পড়া শুরু করি এবার.....

১৫ ই অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ২:৩৯

নীল আকাশ বলেছেন: গল্পটা পড়ুন। সেই রকম মজা পাবেন! গ্যারান্টি দিলাম!

৩| ১৫ ই অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ২:২৮

বিজন রয় বলেছেন: পড়া শেষ করলাম!

টক-ঝাল স্বাদ পেয়েছি।

বেশ বেশ!

১৫ ই অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ২:৩৯

নীল আকাশ বলেছেন: বিজন দা,
টক-ঝাল স্বাদ দেইয়ার জন্যই তো লিখেছি। একটু ডিফারেন্ট টেস্ট।
পড়ার এবং সুন্দর একটা মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।

৪| ১৫ ই অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ২:৪২

বিজন রয় বলেছেন: আবার এলাম।

গল্পটি আসলেই টেস্ট লেগেছে। ভিন্ন প্লট!

আর গল্পটির নামকরণ স্বার্থক হয়েছে, যেটি আমার কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ।

শুভকামনা।

১৫ ই অক্টোবর, ২০১৯ বিকাল ৫:০৩

নীল আকাশ বলেছেন: আমি মাঝে মাঝে ভিন্ন রকমের থীম নিয়ে লিখি। হাতে যদি সময় থাকে তাহলে এই সিরিজের আরেকটা গল্পঃ ভুল সবই ভুল পড়ে দেখবেন। ওটাও বেশ মজা করে লিখেছি।

ছবি এবং নামের ব্যাপারে আমি সবসময় খুতখুত করি। আমার মতে নামটা পারফেক্ট দিয়েছি।
আবার ফিরে আসার জন্য ধন্যবাদ।

৫| ১৫ ই অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ২:৪৯

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: হাহাহাহাহাহাহা খুবই সুন্দর গল্প

১৫ ই অক্টোবর, ২০১৯ রাত ১০:৫৯

নীল আকাশ বলেছেন: সুন্দর কিনা জানি না তবে দুস্টামী করে লিখেছি।
ধন্যবাদ।

৬| ১৫ ই অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ২:৫০

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:





মহিলা পুলিশ বিচক্ষণ হয়ে থাকেন, ট্রেনিং টা তাদের জীবন পাল্টে দেয়। সারাদিন ক্রাইম নিয়ে প্রচুর মাথা ব্যাথা সহ ব্যস্ত থাকতে হয়, বাসায় যেচে পাগল রাখবেন এমন হতেই পারে না। পাগল উম্মাদের সাথে বিয়ের তো প্রশ্নই আসে না। একজন কন্সটেবলও এই ভুল করবেন না। আর তিনি ডিআইজি কন্যা সহ একজন বিসিএস (পুলিশ) এএসপি - কিভাবে সম্ভব? গল্পেও সম্ভব না! যাক আপনি অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন!

নীল আকাশ ভাই, আপনার গল্পে মন্তব্য স্বরুপ প্রচুর তেল মাখন ঘি পাবেন - সব ভেজাল! আমি সমালোচনা করেছি মাত্র। আপনার জন্য একটি ছবি দেওয়ার ইচ্ছে সংবরণ করতে পারিনি। পুলিশ ট্রেনিংয়ে ছে্াট্ট একটি বাক্য আপনাকে জানাচ্ছি। - “police not foolish





১৫ ই অক্টোবর, ২০১৯ বিকাল ৩:৩৯

নীল আকাশ বলেছেন: মাহমুদ ভাই,
খুব দারুন একটা মন্তব্য করেছেন। নীচে প্রতিটা লাইনের ব্যাখ্যা দিলাম।

মহিলা পুলিশ বিচক্ষণ হয়ে থাকেন, ট্রেনিং টা তাদের জীবন পাল্টে দেয়। সারাদিন ক্রাইম নিয়ে প্রচুর মাথা ব্যাথা সহ ব্যস্ত থাকতে হয়, বাসায় যেচে পাগল রাখবেন এমন হতেই পারে না। পাগল উম্মাদের সাথে বিয়ের তো প্রশ্নই আসে না। একজন কন্সটেবলও এই ভুল করবেন না। আর তিনি ডিআইজি কন্যা সহ একজন বিসিএস (পুলিশ) এএসপি - কিভাবে সম্ভব? গল্পেও সম্ভব না! যাক আপনি অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন!
- একদম ঠিক বলেছেন। রেশমা বিয়ের আগে ভালো ভাবেই খোজ নিয়েই বিয়ে করেছে। শাহবাগে যেয়ে ফাহিবকে দেখেও এসেছে। ছেলে পাত্র হিসেবে পারফেক্ট তবে ঈদানিং কিছু আজেবাজে ছেলেদের সাথে মিশে নষ্ট হয়ে গেছে। হালকা এক্টু ঘষামাজা করে নিতে হবে যেটা ওর পক্ষে খুব সহজ। কারণ ফাহিবের পরিবার থেকেই রেশমাকে সাহায্য করবে। রেশমা এএসপি পদে চাকুরী করে দেখেই নিজের উপর কনফিডেন্স অনেক বেশি। যে কোন ঘটনা সে সামলাতে পারবে। গল্পের কোথাও আমি ফাহিবকে পাগল কিংবা উন্মাদ বলি নি। ফাহিব পাগল কিংবা উন্মাদ নয়। বুয়েট থেকে পাশ করার ভালো রেজাল্ট নিয়ে বের হওয়ায় ইঞ্জিনিয়ার। শুধু লেখালিখির ঝোক চেপেছিল মাথায়, কবি হবার বাসনা হয়েছিল। এতটুকুই।

নীল আকাশ ভাই, আপনার গল্পে মন্তব্য স্বরুপ প্রচুর তেল মাখন ঘি পাবেন - সব ভেজাল! আমি সমালোচনা করেছি মাত্র। আপনার জন্য একটি ছবি দেওয়ার ইচ্ছে সংবরণ করতে পারিনি। পুলিশ ট্রেনিংয়ে ছে্াট্ট একটি বাক্য আপনাকে জানাচ্ছি। - “police not foolish”
-আমি নিজেই সমালোচনা পছন্দ করি। ভালো সমালোচনা না হলে আমি শিখব কোথা থেকে? পুলিশদের নিয়ে আমি সব সময় ভালোই লিখি। সম্ভবত আপনি আমার শবনম সিরিজের কথা ভুলে গেছেন। এখানেও এএসপি শুভকে নিয়ে দারুন দারুন ঘটনা লিখেছি। সময় পেলে এই সিরিজের গল্পঃ ছেড়া পালে লাগে হাওয়া পড়ে দেখবেন। সাথে সাথেই বুঝবেন আমি এদেরকে কোন দৃষ্টিতে দেখি।

ভালো থাকুন ভাই, সব সময়।

৭| ১৫ ই অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ২:৫৬

ভুয়া মফিজ বলেছেন: আপনার উপহারের কথা শুনে মনে মনে ভাবছিলাম, কোন একটা গল্পের নায়কের নাম দিবেন 'মফিজ'। এই গল্পের নায়কের নাম 'ফাহিব' দেয়ার জন্যে অশেষ কৃতজ্ঞতা! :P

গল্প ভালো লাগলো। বিজনদা'র মতো করেই বলছি, টক-ঝাল স্বাদ পেয়েছি। মন খারাপ ভালো হয়ে গেল এমন হাল্কা চালের গল্প পড়ে।

আর হ্যা, সারপ্রাইজিং উৎসর্গের জন্য কৃতজ্ঞতা।

১৬ ই অক্টোবর, ২০১৯ সকাল ৯:৫৫

নীল আকাশ বলেছেন: মফিজ ভাই,
কিছুটা দুস্টামী করেই এটা লিখেছি। হালকা মেজাজের লেখা। সবাইকে টক-ঝাল স্বাদ দিতে চেয়েছি। অন্যরকম ধাঁচের লেখা।
উতর্সগ আপনার নামে করবো আগেই ঠিক করে রেখেছিলাম। আপনি ব্লগে ছিলেন না দেখে আগে পোস্ট দেই নি। গল্পের নায়কের নাম মফিজ হলে ঠিক মানাতো না, তাই দেই নি।

গল্পটা আপনার ভালো লেগেছে দেখে আমারও ভালো লাগলো। ঠিক আছে, এর পর গুরুগম্ভীর দেখে আরেকটা গল্প আপনার নামে দেয়াই যাবে। প্লট মাথায় আসলেই লিখে ফেলবো।

ধন্যবাদ এবং শুভ কামনা রইল।

৮| ১৫ ই অক্টোবর, ২০১৯ বিকাল ৩:০৭

আখেনাটেন বলেছেন: মজা পেলুম।

তবে আপনার গল্পে অতিরিক্ত কিছু শব্দ বা বাক্য থাকে যেগুলো না থাকলেও চলত। যদিও এখন আগের গল্পগুলো থেকে অনেকটায় কমে এসেছে এই বাহুল্যকথন।

গল্পের নামকরণও আমার মতে সঠিক হয় নি। এখানে প্রোটাগনিস্টকে ভিলেন হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে। অথচ এটি স্রেফ আনন্দপাঠের গল্প, কেন্দ্রীয় চরিত্রকে ভিলেন মনে হচ্ছে না কিছুতেই। সেক্ষেত্রে নামেও পজিটিভ কিছু থাকলে ভালো লাগত।

এগুলো একান্তই আমার ভাবনা। ভালোভাবে নিবেন আশা করি।

১৯ শে অক্টোবর, ২০১৯ বিকাল ৪:৫২

নীল আকাশ বলেছেন: সুপ্রিয় আখেনাটেন ভাই, শুভ অপরাহ্ন।

প্রথমেই দেরি করে প্রতিমন্তব্য দেয়ার জন্য ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। আপনারটা নিয়ে সময় করে বসব দেখেই দেরি হয়ে গেল।
যে সমস্যাটার কথা বলেছেন, সেটা আমি ক্রমাগত কাটিয়ে উঠার আপ্রাণ চেস্টা করছি। লিখতে বসলে প্লট শেষ না করা পর্যন্ত লিখতেই হয়। আর এইজন্য এখন পুরোটা লেখার পর রিভিশন দেই অতিরিক্ত অংশ বাদ দেয়ার জন্য। আপনার কথা শুনে মনে হচ্ছে আর কঠোর হতে হবে এডিটিং এর সময়। ভালো সাজেশনের জন্য ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা রইল।

গল্পের নামকরণ নিয়ে আপনার কথাগুলি আমি অনেকবার পড়েছি এবং ভেবেছি। এই গল্পটা আমি একধারে রম্য এবং নামকরণ স্যাটায়ার হিসেবে দিয়েছি। স্বৈরাচারিণী মানে হলো কোন ব্যক্তি যা ইচ্ছে/ভাবে তাই করে ছাড়ে। রেশমা এখানে কিন্তু তাই করেছে। এমন কি ওর ভালোনামতাও আমি ইচ্ছে করে জান্নাতুল রেখেছি স্যাটায়ার করে। রেশমা ওর শ্বশুর আর শাশুড়ি কাছে জান্নাতুল তবে ফাহিবের কাছে সাক্ষাত জাহান্নাম!!!!

রেশমা অবশ্যই কোনমতেই ভিলেন নয়, ওতো আমার মেইন নায়িকা। রেশমাই তো এই গল্পের পুরো কাহিনী নিয়ন্ত্রন করছে। ওর ঊপরেই তো নামকরণ হয়েছে। ওকে ওর শ্বশুর বাড়ি থেকেই এই প্রোজেক্ট দেয়া হয়েছে, ফাহিবকে আবার মানুষ বানানোর জন্য। রেশমাকে নিয়ে আমি কিন্তু অন্য চিন্তা ভাবনা করছি। শবনম কাহিনী তো শেষ করে দিয়েছে। এএসপি শুভকে নিয়ে এখন আর কিভাবে লিখবো? তাই এবার এএসপি শুভ'র মহিলা ভারশন বের করলাম। সম্ভবত রেশমাকে নিয়ে আরও লিখবো। রেশমাকে আমার নিজেরই খুব পছন্দ হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায়/ঘটনায় যেয়ে সেইরকম প্যাদানি দিতে পারব, মনের খুশি মতো। গজারের লাঠি তো ইতিমধ্যেই দেখিয়ে দিয়েছি!!!!!

এগুলো একান্তই আমার ভাবনা। ভালোভাবে নিবেন আশা করি। - আপনার সাথে আমার ব্লগীয় সম্পর্ক অনেকদিনের। আর আমাকে প্রায় প্রথম থেকেই আপনি ভালো সমর্থন দিয়ে এসেছেন। সেইগুলি ভুলি কি করে!! সেই বন্ধ্যামেয়ের গল্পটা থেকে শুরু। আপনাকে আমি খুব পছন্দ করি কারণ আপনার কথাবার্তা স্ট্রেইট, যা বলার সোজাসুজি বলে দেন, চোখে আঙ্গুল দিয়ে ভুলটা ধরিয়ে দেন। নিজের সমালোচনা সহ্য করতে না পারলে লেখালিখিতেই আসা উচিত নয়।

আপনাকে ধন্যবাদ এবং সব সময় পাশে থাকার জন্য কৃতজ্ঞতা।
শুভ কামনা রইল।

৯| ১৫ ই অক্টোবর, ২০১৯ বিকাল ৪:০১

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
ফাহিব ও রেশমার গল্পটা ভালই জমেছে। সুন্দর।

১৫ ই অক্টোবর, ২০১৯ বিকাল ৪:৫৯

নীল আকাশ বলেছেন: মাইদুল ভাই,
গল্পটা পড়ার এবং খুব সুন্দর একটা মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ, তার সাথে শুভ কামনা রইল।

১০| ১৫ ই অক্টোবর, ২০১৯ বিকাল ৫:৪৪

ইসিয়াক বলেছেন: দারুণ স্বাদের গল্প ।
চমৎকার উপস্থাপন ।
খুব ভালো লেগেছে।

১৬ ই অক্টোবর, ২০১৯ সকাল ৯:৫৭

নীল আকাশ বলেছেন: ইসিয়াক,
হালকা মেজাজের লেখা। সবাইকে টক-ঝাল স্বাদ দিতে চেয়েছি। অন্যরকম ধাঁচের লেখা।
আপনার ভালো লেগেছে দেখি আমারও ভালো লাগলো।
পড়ার এবং মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ।

১১| ১৫ ই অক্টোবর, ২০১৯ বিকাল ৫:৪৫

ঢাবিয়ান বলেছেন: হা হা হা হা। আপনার নিজের জীবনের ঘটনা নয়তো?

১৬ ই অক্টোবর, ২০১৯ সকাল ৯:৫৮

নীল আকাশ বলেছেন: কি যে বলেন? নায়ক আমি হলে কি আর এই কাহিনী ফাঁস করতাম?
ঘরের শান্তি বড় শান্তি।
পড়ার এবং মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ।

১২| ১৫ ই অক্টোবর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:৫৬

রাজীব নুর বলেছেন: ভালো লিখেছেন।
তবে আমি লিখলে এই গল্প অনেক ছোট হতো।

১৬ ই অক্টোবর, ২০১৯ সকাল ৯:৫৯

নীল আকাশ বলেছেন: শুভ সকাল,
পড়ার এবং মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ রাজীব ভাই।
আমি কেন যেন ছোট গল্প লিখতে পারি না। কিভাবে যে বড়ই হয়ে যায়!

১৩| ১৫ ই অক্টোবর, ২০১৯ রাত ৮:০৬

আহমেদ জী এস বলেছেন: নীল আকাশ,




বাঘে ছুঁলে আঠারো ঘা হয় আর পুলিশে ছুঁলে নাকি ছত্রিশ ঘা ! তাহলে "পুলিশিনী" ছুঁলে যে বাহাত্তর ঘা হবে তা রেশমার কারিশমায় বুঝিয়ে দিলেন।

জম্পেশ লেখা হয়েছে। একদম পুলিশের ইস্ত্রী করা পোষাকের মতো টাইটফিট।
সেমিট্রান্সপারেন্ট লেখার ভেতর দিয়ে সব কিছু পরিষ্কার দেখা গেল। দেখা গেলো যে, গল্পকার নিজেও সম্ভবত একজন ইঞ্জিনিয়র, লেখালেখির বাতিক আছে, বিশেষ করে গল্প। সে সব গল্পে আবার পুলিশের জয়জয়কার। ইদানীং কবিতা লেখায় হাত পাঁকাতে শুরু করেছে। লেখক হতে হলে আড্ডা , গাঁজায় দু'একটা টান দিতেই হবে এসব ধারনাও টনটনে।
গল্পটি পড়তে পড়তে আমি এমনটা যে ভেবেছি তা "ঢাবিয়ান" আমার আগেই ঢাক পিটিয়ে জানান দিয়েছে।

তবে " জান্নাতুল" নামটিতে আপনার মনে হয় কিছু একটা 'ব্যাপার-স্যাপার" আছে!
বাই দ্য ওয়ে - রেশমার (জান্নাতুল) মাইনকা চিপায় পড়ে মনে হয় সবকিছু গুবলেট হয়ে গেছে তাই কিছু কিছু প্রতিমন্তব্য করতে ভুলে গেছেন। :||

১৯ শে অক্টোবর, ২০১৯ বিকাল ৩:৫১

নীল আকাশ বলেছেন: গুরুজী,
আপনার মন্তব্যগুলি শুধুই পড়তে ইচ্ছে করে। এত গভীর ভাবে লেখাটা পড়েন আপনি যে, আপনার মন্তব্য পড়লেই লেখাটা নিয়ে সম্পূর্ণ ধারনা পাওয়া যায়। প্রথমেই দেরি করে প্রতি মন্তব্য দেয়ার জন্য ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। আমি সবার মন্তব্যে সমান সময় নিয়ে প্রতিমন্তব্য করি না। আপনারটা নিয়ে সময় নিয়ে বসব দেখেই দেরি হয়ে গেল।

আপনি যদি ডাক্তার হয়ে ব্লগার হতে পারেন, আমি আমি আপনার শিষ্য হয়ে, ইঞ্জিনিয়ার হয়ে ব্লগার হতে পারবো না কেন? আপনার পদাঙ্কই তো অনুসরণ করছি....

শাহবাগে বিশেষ একটা জায়গায় গেলেই এইসব নতুন কবিদের দেখতে পাওয়া যায়। এরা লেখায় হাত পাকানোর আগেই এইসব সুখটানে হাত পাকিয়ে ফেলে। আর ঢাবিয়ান ভাইকে কি বলেছি পড়ে দেখবেন! আপনার ভাবীও কিন্তু মাঝে মাঝে এই ব্লগে এসে পড়েন। আমার ঘাড়ের উপর মাত্র একটাই মস্তক!!!!!!

সে সব গল্পে আবার পুলিশের জয়জয়কার। - পুলিশকে নিয়ে লিখতে আমার কেন যেন ভালো লাগে। এদেরকে নিয়ে কেউ লেখে না। অথচ এরা কিন্তু সমাজের খুব বড় একটা জায়গা জুড়ে আছে। আমি ভাবছি রেশমাকে নিয়ে আরও কিছু লিখবো। এএসপি শুভ'র কাহিনী তো শেষ।

তবে " জান্নাতুল" নামটিতে আপনার মনে হয় কিছু একটা 'ব্যাপার-স্যাপার" আছে! - ইচ্ছে করেই জান্নাতুল দিয়েছে। স্যাটায়ার। রেশমা ওর শ্বশুর আর শাশুড়ি কাছে জান্নাতুল তবে ফাহিবের কাছে সাক্ষাত জাহান্নাম!!!!

অফ টপিকঃ আপনার লেখা যেটা কপি করার পারমিশন দিয়েছেন, সেটা নিয়ে প্লট একটা মাথায় এসেছে। লেখাটা পোস্ট দিলে আপনাকে জানাবো।

আপনাকে ধন্যবাদ এবং সব সময় পাশে থাকার জন্য কৃতজ্ঞতা।
শুভ কামনা রইল।

১৪| ১৫ ই অক্টোবর, ২০১৯ রাত ৮:১৪

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: গল্পটি যে গল্প হবার যোগ্যতায় উপনিত হয়েছে তা কিন্তু লেখকের মেধার কারণে বলতে দ্বিধা নেই। আপনি অনেক সুন্দর লিখেন পাঠক প্রীতিও আপনার অনেক। এই, লেখক -পাঠকের বন্ধন সত্যি সুন্দর। গল্পটি মজা লেগেছে পাঠে। ভাল থাকুন সবসময়।

১৬ ই অক্টোবর, ২০১৯ সকাল ১০:০২

নীল আকাশ বলেছেন: সুজন ভাই,
শুভ সকাল। দারুণ একট মন্তব্য করার জন্য প্রথমেই কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
প্লট অন্যরকম ধাঁচের আর তাই লিখতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে। আমি আবার একই প্লটের ১টার বেশি গল্প লিখি না।
গল্পটি মজা লেগেছে পাঠে - আমিও খুব খুশি হয়েছি।
ধন্যবাদ।

১৫| ১৫ ই অক্টোবর, ২০১৯ রাত ৯:০৬

মা.হাসান বলেছেন: বরাবরের মতো ছবিটা খুব সুন্দর হয়েছে। ইলেনর রুজভেল্ট মনেহয় এই লেখাটার কথা ভেবেই ঐ ডায়ালগ দিয়েছিলেন।

ফাহিমের জন্য অনেক সমবেদনা । অনভিজ্ঞতার কারণে বেচারা জানলো না, যা কিনেছে সারা জীবন ধুকে ধুকে এর মূল্য চোকাতে হবে।
আপনাকে একটি অনুরোধ করবো। যখন হাতে কিছু অবসর থাকবে এই গল্পটা নিয়ে একটা এক্সপেরিমেন্ট করেন। একটা অংশ ফাহিমের জবানিতে লেখেন। । আর একটা অংশ রেশমার জবানিতে লিখেন। শেষটা তৃতীয় পুরুষে। এরপরে আবার সামুতে পোস্ট করেন। দু ভার্শনে পাঠকের রিয়াকশন তুলনা করে দেখবেন।

লেখা ভালো লেগেছে

১৯ শে অক্টোবর, ২০১৯ বিকাল ৩:৫১

নীল আকাশ বলেছেন: হাসান ভাই,
আগের প্রতিমন্তব্যে তাড়াহুড়া করে একটা ভুল তথ্য দিয়েছি। এবার ঠিক করে দিলাম। খুব লজ্জিত।
নামকরন এবং ছবি নিয়ে আমি সব সময় খুত খুত করি এটা আপনি জানেন। এই ছবিটা আমি নিজে বানিয়েছি ২টা ছবি এক জায়গা করে।
ফাহিমের জন্য অনেক সমবেদনা । অনভিজ্ঞতার কারণে বেচারা জানলো না, যা কিনেছে সারা জীবন ধুকে ধুকে এর মূল্য চোকাতে হবে। - শুধু ফাহিব কেন আমাদের সবাইকেই কম বেশি চোকাতে হচ্ছে, ভুল বলেছি নাকি??? দিল্লিকা লাড্ডূ, খেলেও পস্তাতে হবে, না খেলেও পস্তাতে হবে!!

আপনাকে একটি অনুরোধ করবো। যখন হাতে কিছু অবসর থাকবে এই গল্পটা নিয়ে একটা এক্সপেরিমেন্ট করেন। একটা অংশ ফাহিমের জবানিতে লেখেন। । আর একটা অংশ রেশমার জবানিতে লিখেন। শেষটা তৃতীয় পুরুষে। এরপরে আবার সামুতে পোস্ট করেন। দু ভার্শনে পাঠকের রিয়াকশন তুলনা করে দেখবেন। - আমি কিন্তু অন্য চিন্তা ভাবনা করছি। শবনম কাহিনী তো শেষ করে দিয়েছে। এএসপি শুভকে নিয়ে এখন আর কিভাবে লিখবো? তাই এবার
শুভ'র মহিলা ভারশন বের করলাম। সম্ভবত রেশমাকে নিয়ে আরও লিখবো। রেশমাকে আমার নিজেরই খুব পছন্দ হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায়/ঘটনায় যেয়ে সেইরকম প্যাদানি দিতে পারব, মনের খুশি মতো। গজারের লাঠি তো ইতিমধ্যেই দেখিয়ে দিয়েছি!!!!!

আপনার মতো বিধগ্ধ একজন ব্লগারের লেখা ভালো লেগেছে দেখে আমারও ভালো লাগলো।
আপনাকে ধন্যবাদ এবং সব সময় পাশে থাকার জন্য কৃতজ্ঞতা।
শুভ কামনা রইল।

১৬| ১৫ ই অক্টোবর, ২০১৯ রাত ৯:১৭

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: এটা কি সিরিজ হচ্ছে???

আহারে বেচারা !
নাস্তানাবুদ অবস্থা! ;) হা হা হা

১৬ ই অক্টোবর, ২০১৯ সকাল ১১:৫০

নীল আকাশ বলেছেন: ভৃগু ভাই,
না ভাই। এটা সিরিজ না। আমার রম্য গল্পগুলি একটা সিরিজ আছে। এটা সেটার অংশ।
এই ধরনের গল্পগুলি খুব মজা লাগে লিখতে। অনেকেই পড়তে চায় দেখে আগেরটাও দিয়ে দিয়েছি।
পড়ার এবং মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ ভাই।

১৭| ১৫ ই অক্টোবর, ২০১৯ রাত ১০:০৩

বলেছেন: মেয়ে তো নয় যেন আগুনের গুলা ...................


বেশ সেনেমাটিক মনে হলো ......................

শাড়িতে নারী . .. Sleeveless , topless ছাড়া কি রমনীর কোমনীয়তা তুলে ধরা যায না ????

সবকিছুতেই তড়িঘড়ি হয়েছে ফলে খাপছাড়া ভাব মনে হলো -----

১৬ ই অক্টোবর, ২০১৯ সকাল ১১:১৫

নীল আকাশ বলেছেন: লতিফ ভাই,
এএসপি যদি মহিলা হয় তাহলে তো আগুনের গোলা হবারই তো কথা! রেশমা'কে আমি এভাবেই চিত্রায়িত করছি। রেশমাকে নিয়ে আমি হয়ত আরও লিখবো।

শাড়িতে নারী . .. Sleeveless , topless ছাড়া কি রমনীর কোমনীয়তা তুলে ধরা যায না ???? - এটা কোন প্রসঙ্গে বলেছেন আমি বুঝতে পারি নি। শাড়ি এখানে এই গল্পে কি কোন অংশে কি ব্যবহার করেছি? আরেকটা কথা, বিবাহিতা মেয়েরা নিজেরদের স্বামীর সামনে যে কোন পোষাক পড়ার ধর্মীয় অনুমতি আছে। আপনি চাইলে আমি সহী সনদ সহ হাদীস দেখাতে পারবো।

সবকিছুতেই তড়িঘড়ি হয়েছে ফলে খাপছাড়া ভাব মনে হলো ----- আমার কিন্তু তা মনে হয় না। আমি একটা লেখা লেখার পর সেটা অনেক বার বেশ ভালো করে অনেক বার পড়ি। যদি সম্ভব হয় একদম সুনির্দিস্ট করে জায়গাটা উল্লেখ করুন।

পড়ার এবং মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ লতিফ ভাই।

১৮| ১৫ ই অক্টোবর, ২০১৯ রাত ১০:২১

মুক্তা নীল বলেছেন:
নীল আকাশ ভাই ,
অনেকদিন পর একটি মজার গল্প পড়লাম । অতিরিক্ত ব্রেনি কিছু কিছু মানুষ ক্ষেত্রবিশেষ একটু সাইকো হয় এটা একদমই সত্যি। আপনার গল্পের একটা জিনিস আমার খুব ভালো লাগে তা হচ্ছে ,গল্পের ছলেও কোথায় যেনো কিছু চরিত্র খুঁজে পাই। ফাহিব ও রেশমার গল্প পড়ে অনেক হাসলাম। গল্পের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ ও ভালোলাগা রইলো।

মফিজ ভাই কে উৎসর্গ করার জন্য আবারো ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা মফিজ ভাইকে ।

১৯ শে অক্টোবর, ২০১৯ বিকাল ৩:২৪

নীল আকাশ বলেছেন: দেরি করে প্রতি মন্তব্য করার জন্য দূঃখিত।
কিছুটা হালকা মেজাজের লেখা লিখ্যেছি এবার। সবাইকে টক-ঝাল স্বাদ দিতে চেয়েছি। অন্যরকম ধাঁচের লেখা।
আমাদের সমাজের ভিতর থেকেই এদের নিয়ে আসি দেখে এদেরকে পরিচিত মনে হয়।
রেশমা চরিত্রটাকে কেমন লাগলো? আরও লিখবো একে নিয়ে?
ধন্যবাদ।

১৯| ১৬ ই অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ১২:৫৭

রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন: শুভ সকাল,
পড়ার এবং মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ রাজীব ভাই।
আমি কেন যেন ছোট গল্প লিখতে পারি না। কিভাবে যে বড়ই হয়ে যায়!

গল্প বড় হওয়াটা দোষের নয়।

১৬ ই অক্টোবর, ২০১৯ বিকাল ৪:২৩

নীল আকাশ বলেছেন: গল্প বড় হওয়াটা দোষের নয়।
খুব ভালো একটা কথা বলেছেন। লিখতে বসলে কেন জানি হিসাব থাকে না। প্লট শেষ না করা পর্যন্ত লিখতেই হয়।
আবার ফিরে আসার জন্য খুব করে ধন্যবাদ নিবেন ভাই।

২০| ১৬ ই অক্টোবর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:৫০

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: প্রিয় নীল আকাশ ভাই,

অন্য ফরম্যাটে ভিন্ন স্বাদের গল্প বেশ ভালো লেগেছে। গল্পের বিন্যাসটিও যথার্থই লাগলো। তবে গল্পেরনায়কের স্বভাব চরিত্রের সঙ্গে বুয়েটের যোগ দেওয়ার কারণ খুঁজে পেলাম না। নিজের আঙ্গিকে লেখা হলে অবশ্য নো প্রয়োজন। নামকরণের ক্ষেত্রে আখেনাটেন ভাইয়ের সুরেই বলবো, অ্যালেগোরিক্যাল হলে বেশি ভালো লাগতো। পাশাপাশি গল্পটি পড়তে ভালো লেগেছে, আনন্দ পেয়েছি। কিন্তু মূল চরিত্র দুটির চিত্রায়নে একটু বাস্তবতা হারিয়েছে বলে মনে হলো।
শুভেচ্ছা নিয়েন।

১৬ ই অক্টোবর, ২০১৯ রাত ১০:৫৮

নীল আকাশ বলেছেন: ভাই,
বুয়েটের যোগসূত্র অবশ্যই আছে। খেয়াল করুন, হুট করে রেশমার মতো একটা মেয়ে (যে পুলিশে এএসপি পদে চাকুরী করে) এইরকম বাউন্ডেলে ছেলেকে বিয়ে করবে কেন? যদি এর ফিউচার ব্রাইট না হয়? ভালো ক্যারিয়ার না থাকে? রেশমা যে ভালোমতোই খোজ খবর নিয়েই বিয়ে করেছে সেটা আমি কিন্তু বেশ কয়েকটা জায়গায় লিখে দিয়েছি। মাত্র কয়েকদিনের কবি হবার হুজুগের রোগ কেবল সারিয়েছে রেশমা।

নামকরন পারফেক্ট হয়েছে। থীমের সাথে এবং মূল চরিত্র রেশমার এগ্রিসিভনেসের সাথে মিল রেখেই এই নাম রাখা হয়েছে।

রেশমা কিন্তু এএসপি শুভ'র মহিলা ভার্সন। শবনম শেষ, তাই এএসপি শুভও শেষ। এখন এএসপি রেশমার কাহিনী শুরু হতে পারে!

জাদরেল চরিত্র হিসেবেই রেশমাকে দাড় করিয়েছি। কেমন লাগলো রেশমাকে? জানাবেন কিন্তু?

শুভ রাত্রী।

২১| ১৬ ই অক্টোবর, ২০১৯ রাত ১০:১৪

বলেছেন: সমালোচনা করবো??

১৬ ই অক্টোবর, ২০১৯ রাত ১০:৪৬

নীল আকাশ বলেছেন: অবশ্যিই পূর্ণ স্বাধীনতা নিয়ে করুন। আমি সমালোচনা শুনতে চাই। কোথায় ভুল হয়েছে জানতে চাই!
যত বিস্তারিত এবং নির্দিষ্ট করে বলবেন ততই উপকার হবে।
একটা কথা, আমি কিন্তু এটা মানে, এই গল্পটা ১০০% রম্য গল্প হিসেবে লিখেছি।
ধন্যবাদ।

২২| ১৭ ই অক্টোবর, ২০১৯ রাত ১২:২৩

বলেছেন: সমালোচনা ভালো না লাগলে ডিলিট করে দিবেন --
আপনি, মফিজ ভাই, দুই চৌধুরী, আহমেদ জি এস এদের লেখা বারবার পড়ি।।।

আগে প্রচুর কবিতা পড়তাম। ইদানীং অনেক গল্প পড়েছি বিশেষ করে রহস্য গল্পের জনক এডগার অ্যালান পোর গল্প পড়েছি।।
আপনাকে একজন দক্ষ ও খাঁটি গল্পকার হিসাবে পেয়েছি কিন্তু গত দুটি গল্প আপনারা কিছুটা স্কিল অনুপস্থিত পেয়েছি।।

এবার এ গল্পে আসি --
নামকরণ -- প্রতিটি গল্পে সফল ও সার্থক নামকরণ হলে পাঠক প্রথম থেকে শেষ পযর্ন্ত ফ্লো টিকে ধরে রাখতে পারবে আর মনে গেঁথে রাখবে.. সেক্ষেত্রে গল্পের " মোটিফ" এবং থিম-
In a literary work, a motif can be seen as an image, sound, action, or other figure that has a symbolic significance, and contributes toward the development of a theme.

আপনার গল্পের কেন্দ্রীয় নারী চরিত্র অনেকটা ভিলেন, জেমসবন্ড, টাইপের দিয়ে শুরু করেলেন - হঠাৎ বিয়ে করে বাসর রাতে সেখানে মর্ডান ড্রেস ও কথোপকথন একটা বড় ধাক্কাপরে আবার দায়িত্বশীল ঘরণী হিসাবে শেষ করেছেন ৷
সেক্ষেত্রে এসপিকে স্বেরাচারীণী বা Dictatorship বা Thumbs rule হিসাবে মনে হয়নি বরং " প্রিয়ভাষিণী" হিসাবেই মনে হয়েছে।।

"থিম" Theme --- Motif and theme are linked in a literary work, but there is a difference between them.
In a literary piece, a motif is a recurrent image, idea, or symbol that develops or explains a theme, while a theme is a central idea or message....
পারিবারিক টানাপোড়ন ও সামজিক বলয় নিয়ে গল্পটি এগিয়ে গেলেও লেখক মৌলিক ও রম্য মিশ্রণ করেফেলেছেন ফলে পাঠককে কোন কোন জায়গায় আটকে থাকে দুবার ভাবতে হয়েছে।।


খাপছাড়া ---- আমার কিন্তু তা মনে হয় না। আমি একটা লেখা লেখার পর সেটা অনেক বার বেশ ভালো করে অনেক বার পড়ি। যদি সম্ভব হয় একদম সুনির্দিস্ট করে জায়গাটা উল্লেখ করুন ------ "আপনার ফ্রেন্ড রাশেদকে ফোন করুন" ঘটনাক্রমে রাশেদ বিয়েতে দাওয়াত পেয়েও আসতে পারেনি -- আপনার ঘনিষ্ঠ বন্ধুকে দাওয়াত বা নিমন্ত্রণ দিলে সে জানবে কোথায় ও কাকে বিয়ে করছেন সেটা না করে হুট করে বদমেজাজি রেশমার কথা চলে আসলে - এখানে বলা যায় প্রফেশনালিজম ও পারিবারিক বন্ধন এক হয় না।

সাহিত্যলোপ --
পারিপার্শ্বিকতা হিসাবে লেখক বলেছেন ""জিনিস খাড়া হয়ে যায় "" দুরমুজ দিয়ে পেটানো।। স্লিভলেস, টপলেস।।।
জ্বী লেখকের দায়িত্ব হলো তার কালচারা রিপ্রেজেন্ট করা, সেক্ষেত্রে রেশমাকে কখনো বাঙালি পোশাকে দেখা যায়নি।।
রেমা প্রথমবারের মতো হালকা গোলাপি শাড়ি, তার ভেতর দিয়ে নারী শরীরের অঙ্গ ভেসে আসা সেই সাথে গোলাপের সুগন্ধি যেন ঘরটাতে অদ্ভুত নেশা নিয়ে এলো আর নায়ক সে নেশার ঘোরে পাঁচ মিনিটের বেশি টিকতে পারলে না, পৃথিবীর সব শর্ত দিয়ে হ'লেও জয় করতে চায় এমন টানটান শরীর।।

১৭ ই অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ১২:৩১

নীল আকাশ বলেছেন: ল বলেছেন: সমালোচনা ভালো না লাগলে ডিলিট করে দিবেন --
আপনি, মফিজ ভাই, দুই চৌধুরী, আহমেদ জি এস এদের লেখা বারবার পড়ি।।।

-আমি কখনই সমালোচনা ডিলিট করি না। আপনার মনে নেই? বন্ধ্যা মেয়ের গল্পের  সব কিছু আমি রেখে দিয়েছিলাম। আমি সবসময় ফেয়ার থাকি। লেখা হলে সমালোচনা আসতেই পারে। আর সেজন্যই এটা ব্লগ। কোন ভুল থাকলে সেটা ঠিক করে নেয়া যায় এখানে!!!

আগে প্রচুর কবিতা পড়তাম। ইদানীং অনেক গল্প পড়েছি বিশেষ করে রহস্য গল্পের জনক এডগার অ্যালান পোর গল্প পড়েছি।। আপনাকে একজন দক্ষ ও খাঁটি গল্পকার হিসাবে পেয়েছি কিন্তু গত দুটি গল্প আপনারা কিছুটা স্কিল অনুপস্থিত পেয়েছি।। -আমি গল্পকার তবে এডগার অ্যালান পোর গল্পগুলির সাথে যদি তুলনা করেন, তাহলে কিন্তু আমি ইংল্যান্ডে টিকিট কেটে যেয়ে আপনার সাথে সেইরকম ঝগড়া করে আসবো। আমি গল্প লেখালেখি শুরু করছি মাত্র এক বছর হলো। তুলনা যদি করেন তাহলে সমান সমান হওয়া উচিত!!!      

এবার এ গল্পে আসি -- নামকরণ -- প্রতিটি গল্পে সফল ও সার্থক নামকরণ হলে পাঠক প্রথম থেকে শেষ পযর্ন্ত ফ্লো টিকে ধরে রাখতে পারবে আর মনে গেঁথে রাখবে.. সেক্ষেত্রে গল্পের " মোটিফ" এবং থিম- In a literary work, a motif can be seen as an image, sound, action, or other figure that has a symbolic significance, and contributes toward the development of a theme.
-গল্পের নামকরন গল্পকার কোন থীম নিয়ে লিখেছে পুরোপুরি তার উপর নির্ভর করে। এই গল্পটা ১০০% রম্য গল্প। এখানে স্বৈরাচারিণী শব্দটা মেটাফোর। আমি দ্বৈত অর্থে ব্যবহার করেছি। ফাহিবের কাছে যেই মেয়ে স্বৈরাচারিণী আবার সেই মেয়ে কিন্তু ফাহিবের বাবা মায়ের কাছে আর্দশ ছেলের বৌ। কারণ রেশমা ফাহিবকে আবার ওর বাবা মায়ের ইচ্ছে মতো ফিরিয়ে এনেছে।এখানে পাঠক আগ্রহ নিয়ে শেষ পর্যন্ত পড়বে কারণ জানতে চাইবে আসলে স্বৈরাচারিণী হয়ে কি রেশমা ফাহিবের সাথে জিততে পেরেছে? সবাই কিন্তু শেষ পর্যন্ত পড়েছে। আগ্রহ তৈরি হয়েছে এই নাম থেকেই।       

আপনার গল্পের কেন্দ্রীয় নারী চরিত্র অনেকটা ভিলেন, জেমসবন্ড, টাইপের দিয়ে শুরু করেলেন - হঠাৎ বিয়ে করে বাসর রাতে সেখানে মর্ডান ড্রেস ও কথোপকথন একটা বড় ধাক্কাপরে আবার দায়িত্বশীল ঘরণী হিসাবে শেষ করেছেন ৷ সেক্ষেত্রে এসপিকে স্বেরাচারীণী বা Dictatorship বা Thumbs rule হিসাবে মনে হয়নি বরং "প্রিয়ভাষিণী" হিসাবেই মনে হয়েছে।।
-রেশমা কখনই মর্ডান ড্রেস পড়েনি। বিয়ের রাতে শুধু মাথায় ওড়না দেয় নি। দেখুন আমি কি লিখেছে?
ফাহিব এবার বেশ ভালো করে মেয়েটার দিকে তাকালো।নাটক ছিনেমায় তো দেখায় বিয়ের রাতে মেয়েরা মাথায় বড় একটা ঘোমটা দিয়ে বসে থাকে।আর এইমেয়ে তো দেখি দিব্যি বেডের উপর বসে পা ঝুলিয়ে মোবাইল টেপাটেপি করছে। মাথায় কাপড়ের কোন বালাই নেই! লজ্জা শরম কম নাকি এইমেয়ের? * ভালো করে তাকিয়ে ফাহিব দেখল ইতিমধ্যেই রেশমা কাপড় পালটে সালোয়ার কামিজ পড়ে ফেলেছে। 
রেশমার মর্ডান ড্রেস পেলেন কোথায়? 

কথোপকথন একটা বড় ধাক্কা তো লাগবেই। কারণ রেশমা সব কিছু জেনে শুনেই বিয়ে করে এই বাসায় ফাহিবের কাছে এসেছে। ফাহিবকে ফেরাতে হলে ওকে তো ডিক্টেটরই তো হতে হবে। "প্রিয়ভাষিণী" কিভাবে মনে হলো আপনার? পড়ে দেখুন নীচে--আমার পরিচয় আপনি জানেন? আপনার চেয়ে কত বড় বড় ইতর বাঁদর ত্যাদড় পোলাপানদের আমি একদম সোজা করে ফেলেছি। আরেকবার যদি আমার সাথে এইভাবে কথা বলেন তো খবর আছে আপনার।  
-আমার সাথে এভাবে আরেকবার উঁচু গলায় কথা বললে এই হ্যান্ডকাফটা দিয়ে ঐ জানালার গ্রীলের সাথে আটকিয়ে এই গজারের লাঠিটা দিয়ে এমন ধোলাই দেব যে সারাজীবনে আর কোনদিনও সেটা ভুলবেন না। মাইরের উপর কোন ঔষধ নাই। আপনার বাবা মা আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন আপনাকে ঠিক করার। আজকেই একবারে সোজা করে ফেলব। -বাংলাদেশ সরকার আমাকে আত্মরক্ষার জন্য এটা দিয়েছে। ফুললি লোড করা, সাথে এক্সট্রা একটা ম্যাগাজিনও আছে। জানেন তো আত্মরক্ষার জন্য আমাদের গুলি করার পারমিশনও আছে! বেশি ইচিং বিচিং করবেন তো হাঁটুর নীচে গুলি করে বিছানায় বেশ কিছুদিনের জন্য শুয়ে থাকার স্থায়ী ব্যবস্থা করব। টোটো কোম্পানীর বাদ্যাইম্যা ম্যানেজার জামাইয়ের চেয়ে চোখের সামনে বিছানায় পড়ে থাক সেটাও অনেক ভালো!  এই লাইনগুলি কি আপনার কাছে "প্রিয়ভাষিণী" মতো লেগেছে? বলেন কি?  

"থিম" Theme --- Motif and theme are linked in a literary work, but there is a difference between them. In a literary piece, a motif is a recurrent image, idea, or symbol that develops or explains a theme, while a theme is a central idea or message.... পারিবারিক টানাপোড়ন ও সামজিক বলয় নিয়ে গল্পটি এগিয়ে গেলেও লেখক মৌলিক ও রম্য মিশ্রণ করেফেলেছেন ফলে পাঠককে কোন কোন জায়গায় আটকে থাকে দুবার ভাবতে হয়েছে।। -এই গল্পটা ১০০% রম্য গল্প। পারিবারিক টানাপোড়ন ও সামজিক বলয় কোন কিছুই নেই এতে। এতবড় একটা ছেলেকে এভাবে জোর করে বিয়ে দেয়া কি স্বাভাবিক কোন ঘটনা মনে হচ্ছে আপনার? টক-ঝাল স্বাদ দেইয়ার জন্যই তো লিখেছি। একটু ডিফারেন্ট টেস্ট।

খাপছাড়া ---- আমার কিন্তু তা মনে হয় না। আমি একটা লেখা লেখার পর সেটা অনেক বার বেশ ভালো করে অনেক বার পড়ি। যদি সম্ভব হয় একদম সুনির্দিস্ট করে জায়গাটা উল্লেখ করুন ------ "আপনার ফ্রেন্ড রাশেদকে ফোন করুন" ঘটনাক্রমে রাশেদ বিয়েতে দাওয়াত পেয়েও আসতে পারেনি -- আপনার ঘনিষ্ঠ বন্ধুকে দাওয়াত বা নিমন্ত্রণ দিলে সে জানবে কোথায় ও কাকে বিয়ে করছেন সেটা না করে হুট করে বদমেজাজি রেশমার কথা চলে আসলে - এখানে বলা যায় প্রফেশনালিজম ও পারিবারিক বন্ধন এক হয় না।
- রাশেদ তো ইচ্ছে করেই বিয়েতে আসেনি। আসলেই ফাহিব ধরে ওকে মাইর লাগাতো এই বিয়ে ঠিক করার জন্য। না আসার জন্য ছুতা বের করেছে।দেখুন রাশেদ কি বলেছে? 
মেয়ের ফোন ফিরিয়ে দিয়ে নিজের মোবাইল বের করে ফোন দিল ফাহিব। কল রিসিভ করতেই দরজা খুলে বারান্দায় চলে আসল ও। ঐপাশ থেকেই প্রথম কথা ভেসে আসল।-দোস্ত তুই তাহলে এখনও বাইচা আছোস? আমি তো তোর কুলখানির জন্য চান্দা তোলার লিস্ট বানাচ্ছিলাম।-তুই কি জান্নাতুল তাসনিম…… -থাম তুই, আমি তোর বৌ'রে খুব ভালো করেই চিনি। আমার আন্ডারেই তিনমাস ছিল। দোস্ত তুই কিছু মনে করিস না। একটা সত্যি কথা বলতো? তুই কি পালক ছেলে, আই মিন উনারা কি তোকে পালছে শুধু?-কি উলটা পালটা কথা বলছিস তুই? আমি পালক ছেলে হতে যাব কেন?-তাইলে আমারে বল, তোরে এই ভাবে কুরবানী দিয়েছে কেন? এই মেয়ে তোর লাইফ তো একেবারে ঝাড়াঝাড়া করে ফেলবে। -হারামজাদা আমাকে আগে বলিস নাই কেন? -তুই আমারে দাওয়াত দেয়ার আগেই এই মেয়ের বাবা আমাকে ফোনে মানা করেছিল। রেশমার বাবা ডিআইজি। কিছুদিন আগেই আমার ইমিডিয়েট বস ছিল। কেমনে কই তোরে?  

আবার দেখুন পরে কি দেয়া আছে?রাশেদকে দেখে ফাহিবের মেজাজ সাথে সাথেই খারাপ হয়ে গেল। এই হারামজাদাই আসল কালপ্রিট। এর মাধ্যমেই ওর সব খোঁজখবর নিয়েছিল রেশমার বাসা থেকে, এমনকি শাহবাগের কোথায় যেয়ে ও আড্ডা মারতো সেটাও এর কাছ থেকে জেনে রেশমা নিজে যেয়ে ফাহিবকে দেখে এসেছিল। বেঈমান কোথাকার! রাশেদের সামনে রাস্তায় একদলা থুথু ফেলে একটা কথাও না বলে গটগট করে চলে আসল ফাহিব।

জ্বী লেখকের দায়িত্ব হলো তার কালচারা রিপ্রেজেন্ট করা, সেক্ষেত্রে রেশমাকে কখনো বাঙালি পোশাকে দেখা যায়নি।। 
রেমা প্রথমবারের মতো হালকা গোলাপি শাড়ি, তার ভেতর দিয়ে নারী শরীরের অঙ্গ ভেসে আসা সেই সাথে গোলাপের সুগন্ধি যেন ঘরটাতে অদ্ভুত নেশা নিয়ে এলো আর নায়ক সে নেশার ঘোরে পাঁচ মিনিটের বেশি টিকতে পারলে না, পৃথিবীর সব শর্ত দিয়ে হ'লেও জয় করতে চায় এমন টানটান শরীর।। 

-আপনি রেশমার ড্রেসের জায়গা ভালো করে পড়েন নি। আমি রেশমা যে শাড়ি পড়েছে সেটা কোথাও লিখিনি। হালকা গোলাপি শাড়ি তো দুরের কথা!!!  বাঙালি পোশাকে দেখা যায়নি - এতা ভুল।বিয়ের পরেরদিন সকালে উঠে রেশমা কি পড়েছিল? উপরেই তো লিখেছি!!

তার ভেতর দিয়ে নারী শরীরের অঙ্গ ভেসে আসা সেই সাথে গোলাপের সুগন্ধি যেন ঘরটাতে অদ্ভুত নেশা নিয়ে এলো আর নায়ক সে নেশার ঘোরে পাঁচ মিনিটের বেশি টিকতে পারলে না, পৃথিবীর সব শর্ত দিয়ে হ'লেও জয় করতে চায় এমন টানটান শরীর।।             
-আপনি সম্ভবত অন্য কোন গল্পের কোণ অংশ এখানে তুলে দিয়েছেন। এই অংশ এই গল্পে  কোথায় নেই।  

সাহিত্যলোপ -- পারিপার্শ্বিকতা হিসাবে লেখক বলেছেন ""জিনিস খাড়া হয়ে যায় "" দুরমুজ দিয়ে পেটানো।। স্লিভলেস, টপলেস।।।  -
চরিত্রের প্রয়োজনে যে কোন ভাষা আসতে পারে। যাদের এই ক্ষেত্রে সমস্যা তারা শিশুতোষ বই পড়ুক। এটা আমার কথা নয় ব্লগের মডারেটরের কথা। আমিও এটাই বিশ্বাস করি।  ""জিনিস খাড়া হয়ে যায় "" দুরমুজ দিয়ে পেটানো। এই গুলি কোন জায়গায় লিখেছি বলুন ত? একটা ১০ বছরের মেয়ের ধর্ষনের কাহিনী লিখতে যেয়ে। ধর্ষনের বর্ণনায় কি ললিপপ চুষার কথা লিখবো বলুন? পুলিশ এই ধরনের আসামীদের সাথে কথা বলার সময় কি সাধু সুদ্ধ ভাষা ব্যবহার করে? চিন্তা করে দেখুন। যা লিখেছে সেটাই বাস্তব। পুলিশরা এভাবেই কথা বলে। বরং আরও বাজে ভাষা ব্যবহার করে। আমি কমই লিখেছি। আর এই কথাগুলি খুব ক্লোজ ২টাবন্ধু নিজেদের মধ্যে বলার সময় ইউজ করেছে। ক্লোজ ফ্রেন্ডরা কি ভাষ ব্যবহার করে আন্দাজ করুন? 
আরেকটা কথা, বিবাহিতা মেয়েরা নিজেরদের স্বামীর সামনে স্বামীকে খুশি করার জন্য যে কোন পোষাক পড়ার ধর্মীয় অনুমতি আছে। আপনি চাইলে আমি সহী সনদ সহ হাদীস দেখাতে পারবো। স্বামী পুরুষ নাকি সেটা জানা এবং উত্তেজিত করার জন্য রেশমা দরজা লাগিয়ে শুধুই ফাহিবের সামনেই নাইটড্রেস পড়েছে। দেখুন নীচে-
- রাতেরবেলা খাওয়া দাওয়া শেষ হবার পর বেডরুমের দরজা ভালোমতো লাগিয়ে দিয়ে রেশমা হতাশ গলায় শেষবারের মতো জিজ্ঞেস করলঃ
আর রেশমার উদ্দেশ্য কি ছিল? খারাপ কিছু? নীচে দেখুন? স্বামীকে ভালো করার জন্যই ও এটা
করেছে...।।  
-তোমার মতো বজ্জাত পুরুষমানুষের নাটবল্টু স্ক্রু কিভাবে টাইট দিতে হয় সেটা আমি খুব ভালো করেই জানি। এবার দেখবো তুমি কয়দিন চাকুরীতে না ঢুকে থাকতে পারো!

আশা করছি আমার প্রতি মন্তব্য পড়ার পর আর কোন জিজ্ঞেস থাকলে সেটাও জানতে চাইবেন।

ধন্যবাদ এবং শুভ কামনা রইল। 

২৩| ১৭ ই অক্টোবর, ২০১৯ বিকাল ৩:২০

বলেছেন: প্রিয় নীল আকাশ ভাই


দীর্ঘ প্রতিমন্তব্য করার জন্য অশেষ ধন্যবাদ।।।
মনে হয় আমি যা বলতে চেয়েছিলাম তা বুঝাতে পারিনি -- ভুলটা আমারই।।

আমার মন্তব্যের শেষের প্যারাটা কোন এক অদৃশ্য কারণে আসেনি --
একটি সফল গল্প তিনটা "স" এর গুণাবলি সম্বলিত হতে হয়।
স - সাবলীলতা
স - স্বচ্ছতা
স- সার্থকতা।

একজন লেখকের সবচেয়ে বড় গুণ হলো সাবলীলতা।
আপনার সাবলীলতা গুণ - ১০০/১০০ এটা যে কেউ মানবে।
আপনার গল্পের চরিত্রগুলো সাবলীলভাবে উপস্থাপন করার গুণ আছে তাই আমার এক্সপেকটেশন সবসময় বেশি।

ভালো থাকুন।।।


১৮ ই অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ১২:৪৮

নীল আকাশ বলেছেন: আপনার পোস্টে আমি কিন্তু সত্য কথাই বলে এসেছি। পরের পোস্টেই দেখবেন কতজন এই সুযোগে ইসলাম কে ব্যাকডেটেড ইত্যাদি বলে কত কিছু বলবে!!! আমি আগাম বলে এসেছি সতর্কতা হিসেবে।

আর আপনি আমাকে মোটেও হার্ট করেন নি, করলে প্রায় এক + এক = দুই ঘন্টা ধরে ২টা এত বিশাল আপনার জন মন্তব্য আর প্রতি মন্তব্য লিখতাম না। আমার মন্তব্যটা আপনার কথামতো পোস্ট দেবার কথা চিন্তা ভাবনা করছি।
ধন্যবাদ।

২৪| ১৭ ই অক্টোবর, ২০১৯ বিকাল ৪:৫০

ঘুটুরি বলেছেন: দারুন

১৮ ই অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ১২:৪১

নীল আকাশ বলেছেন: আমার গল্পের বাগানে স্বাগতম। সময় পেলে আমার বাকি গল্পগুলিও পড়ার আমন্ত্রন দিয়ে গেলাম।
ধন্যবাদ।

২৫| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৯ রাত ১:২৮

আমি তুমি আমরা বলেছেন: ব্যাপক।

২১ শে অক্টোবর, ২০১৯ রাত ৯:৪৭

নীল আকাশ বলেছেন: কোন দিকে?
রেশমাকে বলে দিব কিন্তু!

২৬| ২৪ শে অক্টোবর, ২০১৯ বিকাল ৫:৪৬

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন: নীল আকাশ ভাই ব্লগ মুক্তির শুভেচ্ছা নিবেন।



০৫ ই নভেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৪:২৪

নীল আকাশ বলেছেন: শুভেচ্ছা আপ্নাকেও রইল। ছবিটা পছন্দ হয়েছে।
খুব করে ধন্যবাদ নিবেন ।

২৭| ২৮ শে অক্টোবর, ২০১৯ রাত ১১:২৪

কথার ফুলঝুরি! বলেছেন: গল্পের প্লট টা আনকমন । নিজেরা ছেলে কে পথে আনতে না পেরে বাবা মা এর কঠিন এক মেয়ের সাথে ছেলের বিয়ে করিয়ে দেওয়ার আইডিয়া খারাপ না । চাকরি করতে না চাওয়া স্বামীকে ভিন্ন উপায়ে চাকরী করানোতে রাজী করানোর আইডিয়াটাও খারাপ না । বাবা মা ও বউ সবাই বুদ্ধিমান বুদ্ধিমতি । গল্পটি সুন্দর ।

আমি গল্প লিখতে জানিনা তবে একজন পাঠক হিসেবে কয়টা কথা বলবো, আমি আপনার সব গল্প পড়িনি কিন্তু যে কয়েকটা গল্প পড়েছি একটা কমন বিষয় খুজে পেয়েছি তা হচ্ছে পুলিশের গালাগালি আর প্রেমিক বা স্বামীকে আকৃষ্ট করার জন্য প্রেমিকা বা বউ এর কিছু আচরন, এডাল্ট কথাবার্তা । আর কারও কাছে কেমন মনে হচ্ছে জানিনা তবে আমার কাছে এখন আপনার গল্প মানেই মনে হয় এই বিষয়গুলো থাকবেই ।

কারও ভাষা গত সমস্যা থাকলে সে শিশুতোষ বই পড়ুক, আমার রান্না কারও পছন্দ না হলে সে বাইরে থেকে কিনে খাক, কথাটি অনেকটা এরকম । রান্না এমন জিনিস যা নিজের পছন্দ না, যে বা যারা খাবে তারা যেন খেতে পারে সেভাবে রাধতে হয় । লেখাও সেরকম, পাঠকের কথাই বিবেচনা করতে হয় ।

একজন লেখক হিসেবে আমি চাই সব শ্রেণীর মানুষ আমার লেখা পড়ুক । তবে কারও যদি নির্দিষ্ট শ্রেণীর অডিয়েন্স টার্গেট থাকে সেটি ভিন্ন কথা । আপনার বিষয় আমি জানিনা ।

শিশুতোষ বই ছাড়াও বড়দের আরও অনেক ধরনের উপন্যাস গল্প আছে সবটায় এডাল্ট কথাবার্তা থাকেনা ।

লেখকরা তো বাস্তব নিয়েই লিখে,আমাদের জীবন নিয়েই লিখে । পুলিশের গালাগালি, কিংবা বেডরুমে স্বামী স্ত্রীর গোপন কথাবার্তা কাজকর্ম সবই বাস্তব । অবশ্যই আমরা সেগুলো লেখায় আনতে পারি, সিনেমা নাটকেও দেখাতে পারি, দেখাইও । তবে কোন কিছু যখন আমাদের লেখায় কমন হয়ে যায় তখন মনে হয় এই লেখক এই বিষয় ছাড়া ভাবতে পারেন না বা এই বিষয় ছাড়া লিখতে পারেন না ।

আপনি খুব ভালো গল্প লিখেন । বাস্তব নিয়ে লিখেন কিন্তু বাস্তবে গালাগালি কিংবা ছেলে মেয়ের দৈহিক বিষয়ের ভালোবাসা ছাড়াও আরও অনেক বিষয় ও ভালোবাসার আরও অনেক ধরনের অনুভুতি আছে সেগুলো নিয়ে লেখা আশা করছি ভাইয়ার কাছে । একটু ভিন্নতা আশা করছি আপনার সামনের লেখায় ।

আর হ্যাঁ, সব পুলিশ কিন্তু গালাগালি করেনা ঘুষ খায়না। পুলিশ হিসেবে নায়িকার কঠিন রুপ প্রকাশ করার জন্য ধর্ষণকে কেন্দ্র করে ওইরকম প্লট তৈরী না করে অন্যরকম কিছুও করা যেতো ।

যাই হোক, লেখার কোন ধরাবাঁধা নিয়ম নেই যে এ লেখা যাবেনা ও লেখা যাবেনা । এখানেই লেখার মজা । আমরা স্বাধীন লেখক, তবে কখনো কখনো লেখার জন্য প্রান দিতে হয় বলে পুরোপুরি স্বাধীন না । তবে সেক্ষেত্রে পাঠক হিসেবে আমরা পুরোপুরি স্বাধীন । পাঠকদের প্রান যাওয়ার ভয় নেই । যা মন চায় তা পড়তে পারি, লেখা নিয়ে নিজের মনের ভাব প্রকাশ করতে পারি । আমি আমার মনের ভাব প্রকাশ করে গেলাম মাত্র ।

০৭ ই নভেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১২:৪২

নীল আকাশ বলেছেন: অনেক বড় মন্তব্য করেছেন। দৃষ্টি ভঙ্গি পড়ার এবং লেখার সময় খুব গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। আমি আপনার মন্তব্যগুলি নীচে প্রতি মন্তব্য দিচ্ছি।
আমি এই পর্যন্ত গল্প লিখেছি ৩০টা। পুলিশ চরিত্র নিয়ে এই পর্যন্ত মাত্র ৩টা গল্প লিখেছি। ১। প্রায়শ্চিত্ত, ২। ছেড়া পালে লাগে হাওয়া, এবং ৩। এই গল্প। বাকি কোথাও পুলিশ নিয়ে কিছু লিখিনি। এখন আপনি যদি মাত্র এই ৩টা গল্পই পড়ে থাকেন তাহলে আমি কি করব বলুন? আর এডাল্ট কথা নিয়ে বলছেন? বেশি না আমি আপনাকে হুমায়ুন আহমেদের ২টা গল্প/উপন্যাস পড়তে বলব, ১। এক্সরসিজম, ২। অমানুষ। ইমদাদুল হক মিলনের নাম তো বললামই না। বড় বড় সাহিত্যিকরা যখন লেখেন তখন কেউ কিছুই বলে না। আমি মাত্র স্বামী এবং স্ত্রীর মধ্যে কথাবাররাত লিখেছি, এটাতে সমস্যা ধরা কোন ভাবেই ঠিক হয়নি।

আপনার অভিযোগের প্রক্ষিতে এই গল্পটা প্রথম বারের মতো সামু ছাড়াও আরও আরেকটি বড় সাইটে দেয়া হয়েছিল। আপনার
মতো অভিযোগ কেউ করে নি। এটা ব্লগ। নূন্যতম বয়স থাকলেই কেউ এসে এই ব্লগে লেখা পড়বে এটা ধরে নেয়া হয়। মনের প্রাপ্ত বয়স্কতা অনেক কিছুর উপর নির্ভর করে। লেখালেখি কম পড়লেই এই সমস্যা হতে পারে।
ধন্যবাদ এবং শুভ কামনা রইল।


২৮| ০১ লা নভেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:১০

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: নতুন গল্প চাই

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১:৪২

নীল আকাশ বলেছেন: একটা ভৌতিক গল্প লিখেছি। এখন এডিটিং পর্যায়ে আছে
খুব শিঘ্রই এই ব্লগেই পাবেন।
লেখা দেবার অনুরোধের জন্য কৃতজ্ঞতা রইল।

২৯| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১২:১৩

খাঁজা বাবা বলেছেন: বেচারা :(

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১:৩৯

নীল আকাশ বলেছেন: ফাহিবের জন্য দূঃখ করে কোন লাভ নেই।
বিবাহিত ছেলেদের সবার কপালেই কম বেশি এইরকম বেদনার ঘটনা থাকে!!!!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.