নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বিশ্বজোড়া পাঠশালাতে সবাই ছাত্র-ছাত্রী, \nনিত্য নতুন শিখছি মোরা সদাই দিবা-রাত্রী!

নীল আকাশ

এই ব্লগ-বাড়ির সমস্ত লেখা সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। লেখকের অনুমতি ছাড়া এই ব্লগ-বাড়ির কোনো লেখা অন্যকোথাও প্রকাশ করা যাবে না।

নীল আকাশ › বিস্তারিত পোস্টঃ

মাহে রামাদানে তারাবীহর নামাজের রাকাত নিয়ে প্রতিষ্ঠিত সুন্নাত

২৮ শে এপ্রিল, ২০২০ সকাল ১১:২৮



প্রতি বছর রামাদান এলেই উপমহাদেশের কিছু আলেম ওলামারা আহলে হাদিসের তকমা গায়ে লাগিয়ে সাধারণ মুসলিমদের মাহে রামাদানে তারাবীহ নামাজের রাকাত সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা করেন।
এরা এইসব কেন করেন বা করেই বা কী লাভ হয় সেটা আল্লাহ তায়ালাই ভালো জানেন!

প্রথমেই একটা কথা পরিষ্কারভাবে জানা উচিৎ যে, মসজিদে নববী’তে জামাতে ২০ রাকাত তারাবীহ নামাজ পড়া শুরু করেছিলেন হযরত উমর ইবন খাত্তাব (রাদিআল্লাহু আনহু)। এই সর্ম্পকে সহী বুখারী শরীফে দেয়া আছে, "আবদুর রাহমান ইবনু আবদ আল-ক্বারী (রাহমাতুল্লাহি আলাহি) হতে বর্ণিতঃ তিনি বলেন আমি রমজানে এক রাতে উমর ইবন খাত্তাব (রাদিআল্লাহু আনহু) এর সাথে মসজিদে নববীতে গিয়ে দেখি যে, লোকেরা এলোমেলোভাবে জামা’য়াতে বিভক্ত। কেউ একাকী সালাত আদায় করছে আর কোন ব্যক্তি সালাত আদায় করছে এবং ইকতিদা করে একদল লোক সালাত আদায় করছে। উমর (রাদিআল্লাহু আনহু) বলেন, আমি মনে করি যে, এই লোকদের যদি আমি একজন ক্বারীর (ইমামের) পিছনে জমা করে দেই, তবে তা উত্তম হবে। এরপর তিনি উবাই বিন কা’ব (রাদিআল্লাহু আনহু) এর পিছনে সকলকে জমা করে দিলেন। পরে আর এক রাতে আমি তার {উমর (রাদিআল্লাহু আনহু)} সাথে বের হই। তখন লোকেরা তাদের ইমামের সাথে সালাত আদায় করছিল তখন উমর (রাদিআল্লাহু আনহু) বলেন, কত না সুন্দর এই ব্যবস্থা! তোমরা রাতের যে অংশে ঘুমিয়ে থাক তা রাতের ঐ অংশ অপেক্ষা উত্তম যে অংশে তোমরা সালাত আদায় করো, এর দ্বারা তিনি শেষ রাত বুঝিয়েছেন, কেননা তখন রাতের প্রথমভাগে লোকেরা সালাত আদায় করছিল।" (সূত্রঃ সহী বুখারী, তাওহীদ প্রকাশনী, দ্বিতীয় খন্ড হাদিস নাম্বার ২০১০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন হাদিস নাম্বার ১৮৮০ শেষাংশ, আধুনিক প্রকাশনী ১৮৬৮)

দ্বিতীয় খুলাফায়ে রাশিদীনের আমলে বিশ রাকাত তারাবীহ নামাজ পড়ার প্রমাণ আছে। হযরত হাসান (রাদিআল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, "হযরত উমর (রাদিআল্লাহু আনহু) লোকদেরকে হযরত উবায় বিন কাব (রাদিআল্লাহু আনহু ) এর কাছে একত্র করে দিলেন। আর তিনি লোকদের বিশ রাকাত তারাবীহ পড়াতেন।" {সূত্রঃ সুনানে আবু দাউদ-১/২০২, সিয়ারু আলামিন নুবালা-১/৪০০}

সুতরাং এর আগে জামাতে বিশ তারাবীহ নামাজ পড়ার সহী সনদ খুঁজে বেরানো অপ্রয়োজনীয় কাজ। খুলাফায়ে রাশিদীনের প্রতিটা ধর্মীয় কাজ আমাদের অনুসরণ করতেই হবে। মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তার উম্মতদের জীবনের সার্বিক ক্ষেত্রে যেসকল বিষয়ের প্রয়োজন অনুভব করবে, তার সবগুলো তিনি খুব সুন্দর করে বর্ণনা করে গেছেন। হযরত আবু যার (রাদিআল্লাহু আনহু) বলেন, مَا تَرَكَ النبي صلى الله عليه وسلّم طَائِراً يُقَلِّبُ جَنَاحَيْهِ فِي السَّمَاءِ إِلاَّ ذَكَرَ لَنَا مِنْهُ عِلْماً- "আকাশে যে পাখি তার দু’ডানা ঝাপটায় তার জ্ঞান সম্পর্কেও নবী করীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাদের নিকট আলোচনা করেছেন।" (সূত্রঃ মুসনাদে আহমাদ হা/২১৬৮৯, ২১৭৭০, ২১৭৭১, ২১৩৯৯, ৫ম খন্ড, পৃঃ ১৬৩; ছহীহাহ হা/১৮০৩)

মহানবী রাসূল পাক (সাল্লালাহু আলাহিস ওয়াসাল্লাম) ইরশাদ করেছেনঃ “তোমরা আমার সুন্নাত ও খুলাফায়ে রাশিদীনের সুন্নত আঁকড়ে ধরে থাক এবং মাড়ির দাঁত দিয়ে তা কামড়ে ধরো! খবরদার! তোমরা নতুন আবিষ্কৃত বস্তু থেকে দূরে থাকবে। কারণ প্রত্যেক নতুন আবিষ্কৃত বস্তু বিদা’আত এবং প্রত্যেক বিদা’আত গোমরাহী”। (সূত্রঃ আবূ দাউদ, হাদিস নাম্বার ৩৯৯১, আলবানী এই হাদিস’টিকে সহী বলেছেন)

মহানবী রাসূল (সাল্লালাহু আলাহিস ওয়াসাল্লাম) আরও বলেছেন, “সেই সত্ত্বার কসম, যার আয়ত্বে আমার প্রাণ, শয়তান কখনো তোমার (উমর) চলার পথে তোমার সঙ্গে মিলিত হয়নি। বরং তোমার রাস্তা ছেড়ে অন্য রাস্তায় চলে গেছে"। (সূত্রঃ মুসলিম শরীফ, ৭ম খণ্ড-হাদিস নম্বর-৬০২৫)। হযরত হুজাইফা (রাদিআল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, "রাসুলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাহিস ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “আমার পরে তোমরা তোমাদের মধ্যে আবু বকর ও উমরের অনুসরণ করবে”। (সূত্রঃ সহী তিরমিজি, ষষ্ঠ খণ্ড, হাদিস নম্বর-৩৬০১)

ইসলামে চার মাজহাবের ইমামগন এই ২০ রাকাতের ব্যাপারেই মত দিয়েছেন। আমাদের এই উপমহাদেশে হানাফী মাজহাব সবচেয়ে বেশি প্রচলিত। হানাফী মাজহাবে সুস্পষ্টভাবে ২০ রাকাত তারাবীহর নামাজ পড়ার জন্য নির্দেশ দেয়া আছে।
-হানাফী মাজহাবের আলেম ইমাম আস্সারখাসী বলেন: “আমাদের মতে বিতির ছাড়া তারাবীহর ২০ রাকাত।” [সূত্রঃ আলমাবসুত (২/১৪৫)]
-ইবনে ক্বুদামাহ বলেন: “আবু-আবদুল্লাহ অর্থাৎ ইমাম আহমাদ (রাহিমাহুল্লাহ) এর কাছে পছন্দনীয় মত হলো তারাবী ২০ রাকাত। এই মতে আরো রয়েছেন ইমাম ছাওরী, ইমাম আবু-হানীফা ও ইমাম শাফেয়ী। আর ইমাম মালেক বলেছেন: “তারাবীহ ৩৬ রাকাত।” [সূত্রঃ আলমুগনী (১/৪৫৭)]
-ইমাম নববী বলেছেন: “আলেমগণের ইজমা অনুযায়ী তারাবীহর সালাত পড়া সুন্নত। আর আমাদের মাজহাব হচ্ছে, তারাবীর নামায ১০ সালামে ২০ রাকাত। একাকী পড়াও জায়েয, জামাতের সাথে পড়াও জায়েয।” [সূত্রঃ আলমাজমূ (৪/৩১)]

বিশ্ববিখ্যাত ইসলামের চার মাজহাবের ইমামগন (রাহমাতুল্লাহি আলাহি) এর বক্তব্য-
১। শাহ ওয়ালী উল্লাহ মুহাদ্দেসে দেহলবী (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেনঃ আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত চার মাযহাবে সীমাবদ্ধ। এ চার ইমামের মাঝে প্রথম ইমাম হলেন ইমাম আবু হানীফা (রাঃ) [ইন্তেকাল ১৫০ হিজরী], তিনি ও বিশ রাকাত তারাবীহের সমর্থক। [ফাতাওয়া কাজীখান-১/১১২}
২। ইমাম মালিক (রাহমাতুল্লাহি আলাহি) এর একটি বক্তব্য বিশ রাকাতের পক্ষে, দ্বিতীয় বক্তব্য ৩৬ রাকাতের পক্ষে। [যাতে বিশ তারাবীহ আর ১৬ রাকাত নফল]। (হেদায়াতুল মুজতাহিদ-১/১৬৭)।
৩। ইমাম শাফেয়ী (রাহমাতুল্লাহি আলাহি) বিশ রাকাতের সমর্থক। (সূত্রঃ আলমুগনী-২/১৬৭)
৪। ইমাম আহমদ বিন হাম্বল (রাহমাতুল্লাহি আলাহি) এর বক্তব্যও বিশ রাকাতের পক্ষে। (সূত্রঃ আলমুগনী- ২/১৬৭)

এরপরও কেউ যদি ইসলামে দ্বিতীয় খলিফা, আমির-ঊল-মূমিনীন, হযরত উমর ইবন খাত্তাব (রাদিআল্লাহু আনহু) এবং খুলাফায়ে রাশিদীনের সুন্নত না মানতে চায় তাহলে সেটা তার দায়িত্ব, রোজ হাশরের দিন তাকেই এইজন্য হিসাব দিতে হবে। তখন কাউকেই তিনি তার পাশে পাবেন না।

আমরা অবশ্যই খুলাফায়ে রাশিদীনের সুন্নত মেনে চলবো, কারণ এটা মেনে চলার ব্যাপারে সরাসরি নির্দেশ দেয়া আছে।

আট রাকাত ফিৎনা’র সূত্রপাতঃ
যারা জানে না তাদের জন্য বলছি, পৃথিবীর ইতিহাসে সর্বপ্রথম ১২৮৪ হিজরী সালে ভারতের আকবরাবাদ থেকে কথিত আহলে হাদীসদের একজন আট রাকাত তারাবীহ নামাজের ফতোয়া দেন। তীব্র প্রতিবাদের মুখে সেই ফতোয়া টিকতে পারেনি। এরপর ১২৮৫ হিজরীতে পাঞ্জাব সীমান্তে মাওলানা মুহাম্মদ হুসাইন বাটালবী নামে কথিত আহলে হাদীসদের আরেকজন ফতোয়া দেন যে, আট রাকাত তারাবী পড়া সুন্নত। বিশ রাকাত পড়া বিদাআত। তার ফতোয়াও তীব্র বিরোধিতা মুখামুখি হয়। এমনকি কথিত আহলে হাদীসদের একজন বিখ্যাত আলেম মাওলানা গোলাম রাসূল নিজেই ঐ ফতোয়ার খন্ডনে ‘রিসালা তারাবীহ’ নামে একটি পুস্তিকা রচনা করেন। ১২৯০ সালে সেটি প্রকাশিত হয়। (সূত্রঃ রাসায়েলে আহলে হাদীস, ২খ, ২৮পৃষ্ঠা)।

আহলে হাদিসের সমর্থকরা শায়খ নাসীরুদ্দীন আলবানীর লেখা নিয়ে তারাবীহর নামাজের আট রাকাত করার পক্ষে মত দেন। কিন্তু দুঃখজনক হলো শায়খ নাসীরুদ্দীন আলবানী নিজেও সাহাবী/তাবেঈন/তাবে-তাবেঈনগণের কোন একজনকেও দেখাতে পারেননি যিনি আট রাকাত তারাবীহ নামাজ পড়েছেন। এমনিভাবে এমন কোন ঐতিহাসিক মসজিদের নজিরও দেখাতে পারেননি যেখানে আট রাকাত তারাবীহ জামাত হতো।

যারা শায়খ আলবানী সাহেবের (আট রাকআতের পক্ষে রচিত) লেখার পক্ষে কথা বলেন তাদের দাঁতভাঙ্গা জবাব দিয়েছেন সৌদি আরবের কেন্দ্রীয় দারুল ইফতার সাবেক গবেষক ও মুহাদ্দীস শায়খ ইসমাঈল আনসারী। তার কিতাবটির নাম- ‘ تصحيح حديث صلوة التراويح عشرين ركعة والرد على الالبانى فى تضعيفه (অর্থাৎ বিশ রাকআত তারাবীহ নামাজের হাদীসগুলো সহীহ এবং আলবানীর (আত রাকআতের মতবাদ) ভ্রান্ত/প্রত্যাখিত ও যয়ীফ হাদীস এর আশ্রয় গ্রহণকৃত)। একইভাবে সৌদি আরবের বিখ্যাত আলেম, মসজিদে নববীর প্রসিদ্ধ মুদাররিস ও মদীনা শরীফের সাবেক কাযী, ‘‘শায়খ আতিয়্যা সালিম’’ التراويح أكثر من ألف عام في المسجد النبوي ’ (অর্থাৎ এক হাজার বছরের অধিক সময় ধরে মসজিদের নববীতে তারাবীহ নামাজের এর ইতিহাস) নামে একটি মূল্যবান গ্রন্থ রচনা করেন। তিনি পূর্ণ পুস্তিকাটিতে এইকথাই সাব্যস্ত করেছেন যে, হাজার বছরের অধিক সময় ধরে মসজিদের নববীতে তারাবীহ বিশ রাকআতই চলে আসছে।

আজ মুসলিম উম্মার মাঝে এটা নিয়ে ফিৎনা ইচ্ছাকৃতভাবে সৃষ্টি করা হয়েছে। উম্মতের ঐক্যে ফাটল সৃষ্টি করা কার উস্কানীতে হতে পারে সেটা বড়ই চিন্তার বিষয়। একজন সুস্থ মস্তিকের ব্যক্তি ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করলেই কয় রাকাত পড়া শুদ্ধ হবে সেটার সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন। আট রাকাতের মতবাদ তো ১২৮৪ হিজরীতে জন্ম হয়েছে, তাহলে এটি কি করে সঠিক হতে পারে?

যারা এখনও রাকাতের সংখ্যা নিয়ে সন্দেহের মাঝে আছেন, তারা যেন মক্কা মদিনার সুপরিচিত মসজিদগুলিতে হযরত উমর ইবন খাত্তাব (রাদিআল্লাহু আনহু) বিশ রাকাত তারাবীহর নামাজ শুরু করার পর থেকে আজ পর্যন্ত প্রতিবছর কত রাকাত করে তারাবীহর পড়া হচ্ছে সেটা খোঁজ নিয়ে দেখেন!

আপনি যদি নিজকে হযরত উমর ইবন খাত্তাব (রাদিআল্লাহু আনহু) সহ সেই সময়কাল হতে সকল সাহাবী, তাবেঈন, তাবে-তাবেঈন, পূর্ববর্তী চার মাজহাবের ইমামবৃন্দদের চেয়েও বেশি ধর্মীয় জ্ঞান সম্পন্ন মনে করেন তাহলে আর বলার কিছু নেই!

আমরা রামাদানের তারাবীহ নামাজ জামাতে পড়া এবং কত রাকাত সেটা সাহাবী, তাবেঈন, তাবে-তাবেঈনদের অনুসরন করা পদ্ধতি অনুসারেই মেনে চলবো।

হাদিসের ভুল ব্যাখ্যা দেয়াঃ
আহলে হাদিসের লোকজন প্রায়শই তারাবীহর আট রাকাতের যথার্থতা বুঝানো জন্য উম্মূল মূমীনীনা হযরত আয়েশাহ (রাদিআল্লাহু আনহা) দ্বারা বর্ণিত একটা হাদিস প্রমাণ হিসেবে হাজির করে। হাদিসটা হচ্ছে-
হযরত আবূ সালমাহ ইবনে আব্দুর রহমান (রাদিআল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত। তিনি হযরত আয়েশাহ (রাদিআল্লাহু আনহা)’কে জিজ্ঞেস করেন যে, রমজানে আল্লাহর রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহিস ওয়াসাল্লাম) এর সালাত কিরূপ ছিল? তিনি বলেন, রামাদান মাস এবং রামাদান মাস ব্যতিত অন্যসময়ে (রাতে) তিনি এগারো রাকাত হতে বৃদ্ধি করতেন না। আর তিনি তা চার রাকাত সালাত আদায় করতেন, তুমি তার সৌন্দর্যও দীর্ঘতা সর্ম্পকে জিজ্ঞেস করো না। অতঃপর তিনি চার রাকাত পড়েন, তুমি তার সৌন্দর্যও দীর্ঘতা সর্ম্পকে জিজ্ঞেস করো না। এরপর তিনি তিন রাকাত সালাত আদায় করতেন। (সূত্রঃ সহী বুখারী, তাওহীদ প্রকাশনী, দ্বিতীয় খন্ড হাদিস নাম্বার ২০১৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন হাদিস নাম্বার ১৮৮৩, আধুনিক প্রকাশনী ১৮৭০)
এখানে তারাবীহ নামাজের কথা কিভাবে আসলো? চার রাকাত করে কি তারাবীহ নামাজ পড়া হয়? রামাদান মাস ব্যতিত কি তারাবীহ নামাজ পড়া হয়? এই হাদিস যে তাহাজ্জুদ নামাজের জন্য প্রযোজ্য তার অকাট্য দলীল হলো এই যে, জমহুর হাদিস গ্রন্থাকারগন এবং ইমামগণ উক্ত হাদিস’কে নিজেদের কিতাবে তাহাজ্জুদের অধ্যায়ে বর্ণনা করেছেন। প্রমাণ দেখুন-
* ইমাম মুসলিম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মুসলিম শরীফে
* ইমাম আবূ দাউদ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সুনানে আবূ দাউদে
* ইমাম তিরমিযী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার তিরমিযী শরীফে
* ইমাম নাসাঈ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নাসাঈ শরীফে
* ইমাম মালেক রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মুয়াত্তায়ে ইমাম মালেকে

সাহাবীরা কত রাকাত তারাবীহর নামাজ পড়তেন?
ইবনে হাজার হাইসামী বলেছেনঃ “মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর কাছ থেকে তারাবীহর সালাত ২০ রাকাত হওয়ার ব্যাপারে কোন সহীহ বর্ণনা পাওয়া যায়নি। আর এই ব্যাপারে যা বর্ণিত হয়েছে- “তিনি ২০ রাকাত সালাত আদায় করতেন; তা অত্যন্ত জয়ীফ (দুর্বল)।”[আল্‌মাওসূ‘আহ আল-ফিক্বহিয়্যাহ (২৭/১৪২-১৪৫)]

মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)’কে রাতের সালাত (কিয়ামুল লাইল) সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেছিলেন: “দুই রাকাত দুই রাকাত।” অর্থাৎ দুই রাকাত করে পড়তে হবে। সুতরাং ২০ রাকাত তারাবীহর নামাজের সূত্র নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর কাছে থেকে আসে নি। এসেছে খুলাফায়ে রাশিদীন এবং সাহাবীদের কাছ থেকে।

দেখা যাক খুলাফায়ে রাশিদীনের আমলে কত রাকাত তারাবীহর নামাজ পড়া হতো-
(১) ইয়াজিদ ইবনে খুসাইফা (রহমাতুল্লাহি আলাহি) বলেন, সাহাবি সায়েব ইবনে ইয়াজিদ (রাদিআল্লাহু আনহু) বলেছেন, সাহাবায়ে কেরাম হজরত উমর ইবনুল খাত্তাব (রাদিআল্লাহু আনহু) এর যুগে রামাদান মাসে বিশ রাকাত তারাবীহর পড়তেন। তিনি আরো বলেন যে, তারা নামাজে শতাধিক আয়াতবিশিষ্ট সূরাসমূহ পড়তেন এবং হজরত উসমান ইবনে আফফান (রাদিআল্লাহু আনহু) এর যুগে দীর্ঘ নামাজের কারণে তাদের (কেউ কেউ) লাঠিসমূহে ভর দিয়ে দাঁড়াতেন। (সূত্রঃ আস সুনানুল কুবরা ও বাইহাকি, ২/৪৯৬/৪২৮৮)

সাহাবী সায়েব ইবনে ইয়াজিদ (রাদিআল্লাহু আনহু) বলেন, আমরা হজরত উমর ইবনুল খাত্তাব (রাদিআল্লাহু আনহু) এর যুগে বিশ রাকাত তারাবীহ এবং বিতর পড়তাম। (সূত্রঃ আস সুনানুল কুবরা, বাইহাকি- ১/২৬৭-২৬৮)

(২) তাবেঈ ইবনে আবি যুবাব (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, হজরত উমর (রাদিআল্লাহু আনহু) এর যুগে রামাদানের কিয়াম তথা তারাবীহ ছিল ২৩ রাকাত। (সূত্রঃ মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক, হাদিসঃ ৭৭৩৩)। হাদিসটির সূত্র বিশুদ্ধ। এতে ২৩ রাকাত দ্বারা উদ্দেশ্য হলো, ২০ রাকাত তারাবীহ ও তিন রাকাত বিতর।

(৩) তাবেঈ আবদুল আজিজ ইবনে রুফাই (রহমাতুল্লাহি আলাহি) বলেন, উবাই ইবনে কাব (রাদিআল্লাহু আনহু) রমজানে মদিনায় লোকদের নিয়ে বিশ রাকাত তারাবীহ এবং তিন রাকাত বিতর পড়তেন। (সূত্রঃ মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা: ২/২৮৫/৭৭৬৬)

(৪) তাবেঈ ইয়াহইয়া ইবনে সাঈদ আনসারি (রহমাতুল্লাহি আলাহি) বলেন, উমর (রাদিআল্লাহু আনহু) এক ব্যক্তিকে আদেশ করেন, তিনি যেন লোকদের নিয়ে বিশ রাকাত তারাবীহ পড়েন। (সূত্রঃ মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা: ২/২৮৫/৭৭৬৪)

(৫) তাবেঈ ইয়াজিদ ইবনে রুমান (রহমাতুল্লাহি আলাহি) বলেন, হজরত উমর ইবনুল খাত্তাব (রাদিআল্লাহু আনহু) এর যুগে লোকেরা রমজানে তেইশ রাকাত পড়তেন। (সূত্রঃ মুয়াত্তা মালিক, হাদিস: ৩৮০) এতে ২৩ রাকাত দ্বারা উদ্দেশ্য হলো, ২০ রাকাত তারাবীহ ও তিন রাকাত বিতর।

(৬) তাবেঈ ইমাম আবু আবদুর রহমান সুলামি (রহমাতুল্লাহি আলাহি) বলেন, হযরত আলী (রাদিআল্লাহু আনহু) রমজানে হাফীজদের ডাকেন এবং তাদের একজনকে লোকদেরকে নিয়ে বিশ রাকাত পড়ার নির্দেশ দিলেন। তিনি বলেন, আলী (রাদিআল্লাহু আনহু) তাদের নিয়ে বিতর পড়তেন। (সূত্রঃ সুনানুল বাইহাকি: ২/৪৯৬-৪৯৭/৪২৯১)
হযরত আবুল হাসনা (রাদিআল্লাহু আনহু) বলেন, হযরত আলী (রাদিআল্লাহু আনহু) এক ব্যক্তিকে বিশ রাকাত তারাবীহ পড়াতে হুকুম দিয়েছেন। (সূত্রঃ সুনানে কুবরা লিলবায়হাকী, হাদীস নং-৪৮০৫, ৪৩৯৭, কানযুল উম্মাল, হাদীস নং-২৩৪৭৪)

(৭) হযরত উবায় বিন কাব (রাদিআল্লাহু আনহু) বলেন, হযরত উমর (রাদিআল্লাহু আনহু) আমাকে এই মর্মে আদেশ দিলেন যে, আমি যেন লোকদেরকে তারাবীহ পড়াই। তখন বিশ রাকাত পড়া হতো। (সূত্রঃ কানযুল উম্মাহ- ৮/২৬৪)

পরিশেষঃ
রামাদান মাসের সুনির্দিষ্ট নামাজ হচ্ছে সালাতুত তারাবীহ। তারাবীহর নামাজ জামাতে পড়া (মহিলাদের বাসায় পড়তে হবে) ও সম্পূর্ণ কোরআন শরিফ একবার খতম করা সুন্নতে মুয়াক্কাদা। রাসুলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাহিস ওয়াসাল্লাম) নিজে তারাবীহর নামাজ পড়েছেন এবং সাহাবায়ে কিরামকেও পড়ার জন্য আদেশ দিয়েছেন। মাহে রামাদানের রাতে ২০ রাকাত তারাবীহর নামাজ হলো আমির-ঊল-মু’মিনীন হযরত উমর ইবন খাত্তাব (রাদিআল্লাহু আনহু) সহ সকল সাহাবীদের পালন করা সুন্নত।

সাহাবী তাবেঈনের সর্বসম্মতিক্রমে আমলের ভিত্তিতে এবং যুগ যুগ ধরে চলে আসা সম্মিলিত অবিচ্ছিন্ন কর্মের ভিত্তিতে আলেমদের অভিমত হলো ২০ রাকাত তারাবীহ সুন্নতে মুয়াক্কাদা। বিনা কারণে এর চেয়ে কম পড়লে সুন্নতে মুয়াক্কাদা ছেড়ে দেয়ার গুনাহ হবে।

রামাদান মাস অধিক গুরুত্বপূর্ণ ও ফজিলতের মাস, এই মাসে ইবাদত-বন্দেগির সওয়াব অনেক বেশি। মাহে রামাদানে রোযা, তারাবীহ নামাজ, কোরআন তিলাওয়াত ও অন্যান্য ইবাদতের দরুন আল্লাহ তাআলা রোযাদার ব্যক্তির আগের সব গুনাহ মাফ করে দেন। রাসুলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাহিস ওয়াসাল্লাম) আরও বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ইমানের সঙ্গে পুণ্য লাভের আশায় রোযা রাখে, তারাবীহ নামায পড়ে এবং কদরের রাতে জাগ্রত থেকে আল্লাহর ইবাদত করে, তার জীবনের পূর্বের সব গুনাহ মাফ করা হবে।’ (সূত্রঃ বুখারি ও মুসলিম শরীফ)

আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদের ইবাদতের এই পবিত্র মাসে এইসব চিহ্নিত ধোঁকাবাজদের ধোঁকায় পড়ে ইবাদত থেকে গাফিল হয়ে মাত্র আট/দশ রাকাত পড়ে প্রতিষ্ঠিত সুন্নাতের সাথে বেআদবী কাজ করা থেকে মুসলিম উম্মাহকে হিফাযত করুন।

আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদের সবাইকে সিরাতুল মুস্তাকীমের পথে চলার তৌফীক দান করুন, আমীন।



সবাইকে ধন্যবাদ, পবিত্র মাহে রামাদানের শুভেচ্ছা রইলো।
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত @ নীল আকাশ, এপ্রিল ২০২০

মন্তব্য ২৮ টি রেটিং +৮/-০

মন্তব্য (২৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে এপ্রিল, ২০২০ সকাল ১১:৩৮

নেওয়াজ আলি বলেছেন: হে আল্লাহ এই রমজানের ইবাদতের বরকতে আমাদের মাফ করে দিন

২৮ শে এপ্রিল, ২০২০ সকাল ১১:৪৫

নীল আকাশ বলেছেন: প্রথম মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।

২| ২৮ শে এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ১২:২৬

করুণাধারা বলেছেন: ধন্যবাদ, সবিস্তারে বর্ণনা করায়। অনেক কিছু জানা হল।

২৮ শে এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ১:০০

নীল আকাশ বলেছেন: ধন্যবাদ আপু। ইচ্ছে করেই বিস্তারিত ভাবে লিখেছি যেন সবাই বিষয়টা অনুধাবণ করতে পারে।
প্রমাণ সহ লিখেছি যেন কেউ কোন প্রশ্ন তুলতে না পারে।

৩| ২৮ শে এপ্রিল, ২০২০ বিকাল ৪:৫০

রাজীব নুর বলেছেন: ভালো। ভালো পোষ্ট।

৩০ শে এপ্রিল, ২০২০ সকাল ১১:৩৬

নীল আকাশ বলেছেন: ধন্যবাদ রাজীব ভাই পড়ার জন্য।

৪| ২৯ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ১২:১০

জোছনাস্নাত রাত্রি বলেছেন: খুব সুন্দর লিখেছেন। খুব প্রয়োজনীয় লেখা। ধন্যবাদ আপনাকে।

৩০ শে এপ্রিল, ২০২০ সকাল ১১:৩৭

নীল আকাশ বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে। সবার উপকার করার জন্যই এটা এত কষ্ট করে লেখা হয়েছে।

৫| ২৯ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ১:০৪

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ভালো একটা বিষয় নিয়ে লিখেছেন। এ নিয়ে প্রথম তারাবীহ'র দিনই একটা আলোচনার সূত্রপাত হয়। আমি ২/৩ বছর আগে একবার রাকাত সংখ্যা নিয়ে একটু ঘাঁটাঘাঁটি করেছিলাম নেটে। ৮+৩, ১২+৩ থেকে শুরু করে ২০+৩ রাকাত পড়ার পক্ষে-বিপক্ষে নানান যুক্তি-তর্ক দেখেছি। কোথাও দেখেছিলাম, ৪০+৩ রাকাতও কেউ কেউ উল্লেখ করেছেন।

মসজিদে জামাতে নামাজ হলে ৮ রাকাতের পর মসজিদ প্রায় অর্ধেক হয়ে যায়। করোনার সময় বাড়িটাই মসজিদ হয়ে গেছে। আগের বছরগুলোতে বাসায় একা নামাজ পড়লে কখনো কখনো ৮, ১২ বা ১৬ রাকাত পড়েও শেষ করেছি। কিন্তু, ২০ রাকাত না পড়লে মনের ভেতর একটা অস্বস্তি ভর করে। তাই, সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ইনশা'ল্লাহ, ২০ রাকাতই আদায় করবো।

২০ বা ৮ রাকাতের বিতর্ক/প্রচলন এসেছে কোনো হাদিসে সুনির্দিষ্ট ভাবে রাকাতের সংখ্যা উল্লেখ না থাকার কারণে। যারা ২০ রাকাত পড়েন, তারা ৮ রাকাতওয়ালাদের বলেন বিদায়াত করছেন, আর ৮ রাকাতওয়ালারা বলছেন, ২০ রাকাতওয়ালারা বিদায়াত করছেন। আর আমি মনে করি, আল্লাহর উদ্দেশ্যে নামাজ বেশি পড়লে কোনো ক্ষতি নাই, বরঞ্চ এতে আমার লাভই হবে। তাই, ২০ রাকাতই আমার জন্য সহি।

৩০ শে এপ্রিল, ২০২০ সকাল ১১:৫২

নীল আকাশ বলেছেন: আল্লাহর উদ্দেশ্যে নামাজ বেশি পড়লে কোনো ক্ষতি নাই, বরঞ্চ এতে আমার লাভই হবে। তাই, ২০ রাকাতই আমার জন্য সহি। - দারুন বলেছেন।
আপনি খেয়াল করবেন এই আহলে হাদিসের গ্রুপ সব সময় সাধারণ মানুষ'কে কম ইবাদত বন্দেগী করতে বলে। কেন বলে? মানুষজন বেশি ইবাদত, আল্লাহর নাম নিলে এদের সমস্যা কি? এটাই আসল ঘটনা।
২০ রাকাত পড়ার জন্য সরাসরি নির্দেশ দেয়া আছে। সুনির্দিষ্ট কারণ ছাড়া এর কম পড়া যাবে না। আমি তো বাসায় জামাত করে ২০ রাকাত পড়ি। মসজিদ বন্ধ তাতে কি হয়েছে?
চমতকার মন্তব্য করার জন্য কৃতজ্ঞতা রইলো।

৬| ২৯ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ১:১৩

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
বেতের নামাজ বিশ রাকাত এতে কোন সন্ধেহ নাই।
যারা এ নিয়ে ফেৎনা সৃষ্টি করে তাদের আল্লাহ সহি
বুঝ দান করুক এই জন্য দোয়া করতে হবে।

৩০ শে এপ্রিল, ২০২০ সকাল ১১:৪৪

নীল আকাশ বলেছেন: শুদ্ধ উচ্চারণে বেতের না হয়ে হবে বিতির। আর আমার এই পোস্টে লেখা হয়েছে তারাবীহ নামাজের বিশ রাকাত পড়ার জন অনুরোধ করে। সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
এই দুনিয়ায় প্রতিটা ফেৎনা সৃষ্টি করার জন্য তাদের আল্লাহ যথাযথা শাস্তি দিবেন।

৭| ২৯ শে এপ্রিল, ২০২০ সকাল ১১:৩০

নতুন নকিব বলেছেন:



আপনার এই লেখাটি সুন্দর হয়েছে। শুকরিয়া। জাজাকুমুল্লাহ।

২০ রাকাআত তারাবীহ নামাজের দলিল ভিত্তিক একটি লেখা পোস্ট করেছিলাম এই ব্লগে ২০১৭ তে। লিঙ্কটা দিয়ে দিচ্ছি-

তারাবীহ নামায বিশ রাকাতঃ একটি দলীলভিত্তিক পর্যালোচনা

৩০ শে এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ১২:১২

নীল আকাশ বলেছেন: আমি এই লেখা কপি করে রাখালাম। ভবিষ্যতে কাজে লাগতে পারে।
এই লেখাটা অনেক ভালো হয়েছে। এত খুঁজাখুঁজি না করে এই পোস্ট পড়লেই অনেক উপকার হতো।
লিংক দেয়ার জন্য কৃতজ্ঞতা রইলো।

৮| ২৯ শে এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ২:০৩

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
তারাবি ২০, ৮ বা ৩ রাকাতের বিতর্ক পরে
আমার স্বল্প জ্ঞানে আমি যা বুঝি, তারাবি অপরিহার্য নামাজ নয় বা রোজা সংশ্লিষ্ট কোন নামাজ নয়। ৫ ওয়াক্ত ফরজ বাদে বাকি সুন্নত নফল নামাজগুলো অতিরিক্ত নামাজ।
তারাবি নামাজের সাথে রোজার কোন সম্পর্ক নেই। রোজা রাখবেন বলে তারাবি পড়া জরুরী বা উত্তম কি না এটি কোন প্রশ্নই নয়।
রমজান মাসে হাতে সময় থাকলে যে কোন ইবাদাতই করতে পারেন, তারাবি নামাজও পড়তে পারেন। ৩ - ৮ - ২০ যত ইচ্ছা।
অর্থাৎ মুল নামাজ পরে হাতে সময় থাকলে সুন্নত নফল ইত্যাদি অতিরিক্ত নামাজগুলো পড়লে সোয়াব, না পরলে গোনাহ নেই।
কিন্তু শুক্রবার বাদে ৫ ওয়াক্ত ফরজ নামাজে মসজিদের এক কাতারও পুরে না, কিন্তু তারবি নামাজে মসজিদ উপচে বারান্দায় .. রাস্তায়!

নির্দিষ্ট নামাজের জন্য নির্দিষ্ট নিয়ত করা একটি অপরিহার্য। অর্থাৎ নিয়ত সঠিক না হলে নামাজই হবে না।
আপনারা যদি একটি ঐচ্ছিক অতিরিক্ত নামাজকে যদি আপনি রোজার কারনে অপরিহার্য মনে নামাজ আদায় করেন তাহলে আপনার নিয়তই ভুল হয়ে যাবে।




৩০ শে এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ১২:২১

নীল আকাশ বলেছেন: এটা সাহাবায়ে কীরামদের পালন করা সুন্নাত। সুন্নাত আর ফরজ এক নয়।
অপরিহার্য হচ্ছে ফরজ আর ওয়াজীব।
নির্দিষ্ট নামাজের জন্য নির্দিষ্ট নিয়ত করা একটি অপরিহার্য। অর্থাৎ নিয়ত সঠিক না হলে নামাজই হবে না। স হ ম ত। নিয়ত যেকোন ভাষাতেই করা যায়। শুধু আরবীতেই করতে হবে সেটা ঠিক নয়।
ধন্যবাদ।

৯| ২৯ শে এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:০৪

শের শায়রী বলেছেন: প্রিয় ভাই, অনেক বিষয়ে জানলাম, যার প্রায় কিছুই জানা ছিল না। অনেক অনেক ধন্যবাদ।

৩০ শে এপ্রিল, ২০২০ সকাল ১১:৪৬

নীল আকাশ বলেছেন: ধন্যবাদ প্রিয় ভাই। ছোট এই বিষয় নিয়ে একশ্রেনীর মানুষ কিভাবে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করছে সেটা প্রকাশ করার জন্য এই লেখা।
নিরাপদে থাকুন, সব সময়।

১০| ৩০ শে এপ্রিল, ২০২০ সকাল ১১:৫০

নতুন নকিব বলেছেন:



এ বিষয়ে আমার সংক্ষিপ্ত সর্বশেষ পোস্টটি দেখার অনুরোধ থাকলো-

২০ রাকাআত তারাবিহ সাহাবায়ে কেরামের আমল

৩০ শে এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ১২:০০

নীল আকাশ বলেছেন: খুব সুন্দর লিখেছেন এটা। আগে পেলে আমারটা লিখতে অনেক সুবিধ হতো।
ধন্যবাদ।

১১| ৩০ শে এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ১:০১

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:




আল্লাহর ইবাদতে কোনো বাধা নেই।
আজ যারা ৮ রাকাত নামাজ পড়তে বলছেন কিছুদিন পর তারাই ২ রাকাত নামাজ পড়তে বলবেন, তারপর তারাবিহ নামাজ পড়া থেকে সবাইকে সরে পরতে বলবেন।

নীল আকাশ ভাই, আপনাকে একটি বিষয় পরিস্কার করে বলছি। কেউ যদি নামাজ না পড়েন এটি তার নিজস্ব ও একক পাপ। আর কেউ যখন আর দশজনকে নামাজ পড়া থেকে বিরত রাখবেন এই ধরনের মন্তব্য ও আলোচনা করে তখন সেই দশজনের পাপ ও তার বহন করতে হবে। এই ধরনের লেখা আলোচনা সমালোচনা পড়ে/শুনে/দেখে নামাজ থেকে যারা দুরে সরে যাবেন তাতে প্রচারকারী সেই দশজনের পাপের দায়ভার নিতে হবে।

চাইলে যে কেউ সারা রাত নামাজ পড়তে পারেন, নফল ইবাদত হিসেবে তা গণ্য হবে। এবং জীবনের সকল কাজা নামাজ মাফ হবে। আল্লাহপাক আমাদের সকলকে তাঁর ইবাদত করার ও ভালো কাজ করার তৌফিক দান করুন। ওয়া আখের ওয়া দাওয়ানা আন আলহামদুলিল্লাহি রব্বিল আলামিন।


১৪ ই মে, ২০২০ সকাল ১১:০০

নীল আকাশ বলেছেন: বড় ভাই,
শুভ সকাল। আল্লাহ ইবাদতের কাজে যারা বাধা দেয় তাদের নিশ্চইয় গোপন একটা মেনিফেস্টো আছে। কারণ এর সাথে জাগতীক কোন কিছুর সর্ম্পক নেই। তারপর এর মিথ্যা আর তথ্য গোপন করে মানুষকে পথভ্রষ্ট করতে সদা নিয়োজিত। মিলিয়ন ডলার প্রশ্ন হচ্ছ এতে তাদের লাভ কী?

নীল আকাশ ভাই, আপনাকে একটি বিষয় পরিস্কার করে বলছি। কেউ যদি নামাজ না পড়েন এটি তার নিজস্ব ও একক পাপ। আর কেউ যখন আর দশজনকে নামাজ পড়া থেকে বিরত রাখবেন এই ধরনের মন্তব্য ও আলোচনা করে তখন সেই দশজনের পাপ ও তার বহন করতে হবে। এই ধরনের লেখা আলোচনা সমালোচনা পড়ে/শুনে/দেখে নামাজ থেকে যারা দুরে সরে যাবেন তাতে প্রচারকারী সেই দশজনের পাপের দায়ভার নিতে হবে। আমার লেখার মূল কথা মাত্র এই কয়টা লাইনেই বলে দিয়েছেন আপনি। তবে আমাদের সবারই নূন্যতম ধ র্মীয় জ্ঞান অর্জন করা উচিত যেন কোনটা সঠিক আর কোনটা না সেটা বুঝতে পারি।

আল্লাহপাক আমাদের সকলকে তাঁর ইবাদত করার ও ভালো কাজ করার তৌফিক দান করুন। ওয়া আখের ওয়া দাওয়ানা আন আলহামদুলিল্লাহি রব্বিল আলামিন। - ছুম্মা আমীন।

১২| ১৯ শে মে, ২০২০ সকাল ১১:১৮

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:




নীল আকাশ ভাই,
আমি এখন আর আশ্চর্য হই না। অনলাইনে লেখার সুযোগ হওয়ার কারণে ব্লগে ফেসবুকে একদল ভুল মিথ্যা ও তথ্য বিভ্রাট লেখা লিখেই যাবে। খারাপের মধ্য একটি ভালো দিকও আছে “আল্লাহর দরবারে আপনার-আমার জানা অজানায় যদি কোনো ভুল অন্যায় পাপ থেকে থাকে তারা সব মুছে নিয়ে যাচ্ছে নিজ নিজ মাথায় আমল নামায় করে”।

আসছে ২৭ রমজান রাত। দেখতে পাবেন একদল শুরু করে দিবে এই রাতে নামাজ পড়া ভুল, অন্যায়, বিদাত সহ আরো অসংখ্য মাসআলা। আমার প্রশ্ন: ২৭ রমজান রাতে মুসলিম ভাই ও বোনেরা কি করেন? - চুরি করেন/ডাকাতি করেন/ কারো হক মেরে খান/জুয়া খেলেন/মদ পান করেন? কি করেন? উত্তর: মুসলিম ভাইবোনেরা নামাজ পড়েন।

যারা ভুল তথ্য সহ ঈমান আখলাক নিয়ে মিথ্যা বলছে - তাদের বলতে দিন। তাদের সাথে তর্ক বিতর্ক করার কোনো প্রয়োজন নেই। অযথা সময় নষ্ট। আল্লাহপাক আমাদের সকলকে তাঁর ইবাদত করার ও ভালো কাজ করার তৌফিক দান করুন।

১৯ শে মে, ২০২০ দুপুর ২:৫২

নীল আকাশ বলেছেন: আপনি যা যা বলেছেন তারপর আর কিছু বলার নেই।
এরা পথভ্রষ্ট। সমস্যা হচ্ছে এরা দেশে নিরহ জনসাধারনকে ভুল পথে নিয়ে যাচ্ছে।
এদের সাথে তর্ক বিতর্ক করার কোনো ইচ্ছেই নেই আমার।
আমার দায়িত্ব হচ্ছে সত্যকে তুলে ধরা। আমি সেটা করেছি। কেউ যদি এটা দেখে ভালো রাস্তায় আসে তাহলে আমি তার পুরষ্কার পাবো।
আল্লাহপাক আমাদের সকলকে তাঁর বেশি বেশি করে ইবাদত করার ও ভালো কাজ করার তৌফিক দান করুন, ছুম্মা আমীন।

১৩| ২৯ শে মে, ২০২০ রাত ৯:৫৩

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:




নীল আকাশ ভাই,
আপনাকে সর্বশেষ ব্লগার ভুয়া মফিজের ব্লগবাড়িতে স্বাগতম!!! পোস্টে ২৩ শে মে, ২০২০ সময় দুপুর ১৪:৩৯ এ ৪২ নং মন্তব্য করতে দেখা গেছে। তারপর আর দেখতে পাচ্ছি না। আপনি যেখানেই থাকুন প্লিজ নোট দিয়ে জানাবেন।

দোয়া করি আপনি ভালো থাকুন নিরাপদ থাকুন।

০১ লা জুন, ২০২০ রাত ৮:০৪

নীল আকাশ বলেছেন: দুঃখিত ভাই, নোটিফিকেশন প্রবলেমের জন্য এটা আগে দেখতে পারিনি।
আমি ভালো আছি, নিরাপদে আছি। যতটা সম্ভব সাবধানে থাকার চেষ্টা করি।
আমার কথা মনে রাখার জন্য নিরন্তর কৃতজ্ঞতা রইলো।
ধন্যবাদ বড় ভাই।

১৪| ২১ শে এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৩:০৭

মাহমুদুর রহমান বলেছেন: আবু দাউদ-১/২০২ মর্মে যে ২০ রাকাত তারাবীহের কথা উল্লেখ করেছেন এটা হাদীস গ্রন্থেই নেই। থাকলে প্রমান দিন।

২২ শে এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ১২:৩৬

নীল আকাশ বলেছেন: এক কথা বারবার বলার কি আছে?
আমি তো বলেছি আপনাকে আমি দেখছি। একটা সামান্য বিষয় নিয়ে ইরিটেট করার কোন মানে হয় না।
অনেকগুলি হাদিসের একটার সূত্র মেলেনি, তাতে কী হয়েছে? বাকিগুলি তো ঠিক আছে।
সেইগুলি নিয়ে তো কিছু বলছেন না? পুরো পোস্ট নিয়েও কিছু বলেননি!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.