নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এই ব্লগ-বাড়ির সমস্ত লেখা সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। লেখকের অনুমতি ছাড়া এই ব্লগ-বাড়ির কোনো লেখা অন্যকোথাও প্রকাশ করা যাবে না।
(পাঁচ)
নাবিলা গভীর মনোযোগ দিয়ে ওর সামনে বসা দুইজন মানুষের দিকে তাকিয়ে আছে। এরা সুজাতার বাবা এবং মা। এরা দাবী করছে সুজাতা জন্ম থেকে কলেজে পড়া পর্যন্ত কোন সমস্যা এরা দেখতে কিংবা বুঝতে পারেনি।
-সুজাতার মেডিক্যাল টেস্ট রির্পোট দেখাচ্ছে ওর জন্মগত হরমোনাল ত্রুটি আছে। আপনাদের দাবী অনুযায়ী সুজাতা ছোটবেলা থেকে কোন সিমটমই দেখায় নি, এটা অবিশ্বাস্য ব্যাপার।
সুজাতার বাবা কিছুটা ইতঃস্তত করে বললেনঃ
-সুজাতা ছোটবেলা থেকেই খুব জেদি আর একরোখা ছিল। ও যা বলবে সেটা না করে দিলে কান্নাকাটি করে সারা বাসায় হইচই ফেলে দিত।
সুজাতার মা অনেকক্ষণ ধরে উসখুস করছিলেন। একটা প্রশ্ন উনার মনের ভিতরে ঘুরপাক খাচ্ছে।
-আচ্ছা আমার মেয়ে কি হিজড়া বা এইধরণের কিছু?
নাবিলা টেবিলের উপর রাখা একটা সুজাতার ফাইল খুলে কথা শুরু করলোঃ
-আমি ভালোমতো সুজাতা’র মানসিক কিছু পরীক্ষা করেছি। সুজাতার এখন দেখা এবং শোনার প্রসেস মেয়েদের থেকে ভিন্নতর, যা পুরোপুরি ছেলেদের সাথেই মেলে। ওর ব্রেইন এখন সিঙ্গেল টাস্ক বেসড হয়ে কাজ করছে, যেখানে মেয়েরা সবসময়ই মাল্টি টাস্কিং ব্রেইন নিয়ে চিন্তাভাবনা করে। আরো অদ্ভুত ব্যাপার হলো উত্তেজিত অবস্থায় সুজাতা’র ব্রেইনে অ্যাড্রেনালিন রাসের কারণে রক্ত চলাচল বেশি করছে যেটা ছেলেদের জন্য খুব স্বাভাবিক কিন্তু মেয়েদের জন্য পুরোপুরি অস্বাভাবিক ব্যাপার। উত্তেজিত অবস্থায় ওর এনালাইটিক্যাল অ্যাবিলিটিও বেড়ে যাচ্ছে যেটা মেয়ে হলে ওর বরং কমে যাওয়ার কথা। সুজাতা এখন আর কিছুতেই পুরোপুরি মেয়ে হিসেবে আচরণ করছে না। সুজাতা এই সমস্যা মানসিক নয়, বরং শারীরিক। আর এই কারণেই ওকে আমি ভালোমতো ফিজিক্যাল চেকআপ করতে পাঠিয়েছিলাম।
সুজাতার বাবা আতঙ্কিত স্বরে জিজ্ঞেস করলেনঃ
-পরীক্ষায় কি কোন অসুখ ধরা পরেছে?
-হ্যাঁ। মেডিক্যাল সাইন্সে এটাকে বলে androgen insensitivity syndrome সংক্ষেপে AIS. তবে সুজাতার এই সমস্যা আংশিক অ্যান্ড্রোজেন সংবেদনশীলতা সিন্ড্রোম নাকি সর্ম্পূণ অ্যান্ড্রোজেন সংবেদনশীলতা সিন্ড্রোম সেটা মেডিক্যাল ডাক্তার’রাই আরো ভালোভাবে বলতে পারবে। ডাঃ ফাতেমা সুজাতা পরীক্ষার কিছু ডাটা দেশের বাইরে আর ভালো এনালাইসিসের জন্য পাঠিয়েছে। সেটার রির্পোট আসুক। এইসব বিষয়ে ভুলের সম্ভাবনা যত কম হবে সুজাতার জন্য ততই ভালো হবে।
-সুজাতার কী ধরণের ট্রিটমেন্ট লাগতে পারে? সেগুলি কি দেশে করা সম্ভব হবে?
-দেখুন, আপনাকে সরাসরি বলে ফেলাই ভালো। সুজাতা আদতে এখন আর মেয়ে নয়। মানসিক দিক থেকে ইতিমধ্যেই ছেলেদের মতো আচরণ করছে। ওর সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য কিছু ফিজিক্যাল পরিবর্তন করা লাগতে পারে। কিছু হরমোনাল ট্রিটমেন্টের সাথে বেশ কয়েকটা সার্জারীও করতে হতে পারে। এইগুলি বেশ কস্টলী ব্যাপার। এবং আমাদের দেশে এত বড় বয়সে খুব একটা এইসব করা হয় না। ওকে যদি ওর পিউবার্টির আগে নিয়ে আসতেন তাহলে সহজে দেশেই কাজটা করে ফেলতে পারতেন। ডাঃ ফাতেমা আমাকে যেটা বলেছে সেটা হলো সুজাতার এত দেরি করে ট্রিটমেন্ট শুরু করার কারণে পুরো বিষয়টা এখন অনেক কমপ্লেক্স হয়ে পরেছে।
সুজাতার বাবা অস্থির ভঙ্গিতে চেয়ার ফেলে উঠে দাঁড়ালেনঃ
-আমার একটাই সন্তান। অনেক চেষ্টা করেছি আর হয়নি। দরকার পরলে ওকে আমি ব্রিটেনে আমার ছোট ভাইয়ের কাছে পাঠিয়ে দিবো। সুজাতার চিকিৎসার জন্য যা লাগে আমি খরচ করবো।
-এটা তো খুব ভাল কথা। সুজাতা’কে জেন্ডার ট্রান্সফরম করাতে হবে। এক্ষেত্রে ছেলে হয়ে ও যদি দেশে ফিরে আসে, তাহলে আপনাকে বেশ কিছু সামাজিক সমস্যার কথাও মাথায় রাখতে হবে।
-বুঝতে পেরেছি আপনি কী বুঝাতে চেয়েছেন।
-আপনি অতি দ্রুতই প্রস্তুতি নেয়া শুরু করুন। যেই কাজ করতেই হবে সেটা ফেলে রেখে কোন লাভ নেই। বিশেষ করে টাকাপয়সা যোগাড় করতে শুরু করুন। এই চিকিৎসা অনেকটাই ওয়ান ওয়ে জার্নির মতো। মাঝখানে থামতে পারবেন না।
সুজাতার বাবা মা দুইজন সুজাতা'র ভবিষ্যত পরিচয় নিয়ে নাবিলার সাথে বিস্তারিত আলোচনা শুরু করে দিলো।
(ছয়)
জীবনে কিছু কিছু সময় আসে যখন নিজেকে দুমড়ে মুচড়ে ভেঙ্গে চুড়ে আবার নতুন করে সাজাতে হয়। সুজাতা এখন জীবনের প্রথম পালার দিনগুলির শেষে দ্বিতীয় পালার দিনগুলির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। নিজের উপর আত্মবিশ্বাসের কখনই অভাব ছিল না ওর। নিজেকে কঠিন পরিস্থিতিতে শান্ত রাখার গুণটা ওর আগে থেকেই ছিলো। ও খুব ভাল করেই জানে দেশে ফিরলে সমাজে ওর মতো মানুষদের যথাযথ সামাজিক স্বীকৃতি আদায় করা খুব কঠিন হয়ে যাবে। এমন কি খুব পরিচিতরাও যখন ওর নতুন পরিচয় জানতে পারবে, তারাও সহজে মেনে নিতে পারবে না। যেই কঠিন কাজ ও করতে চাচ্ছে সেটার জন্য শুধু মৌখিক আশ্বাস নয় অর্থনৈতিক নিরাপত্তাও বেশ দরকার ছিল। ওর কপাল খুব ভালো যে ওর পরিবার প্রতিটা বিষয়েই ওর পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। নাবিলা ম্যাডাম ওর বাবা'কে দারুণভাবে কনভিন্স করিয়েছেন। ব্রিটেনে সুজাতার ভিসার জন্য ওর চাচা স্পনসরশিপ নিতে রাজি হয়েছেন। খুব শীঘ্রই সুজাতা দেশ ছেড়ে একবারে বিদেশে চলে যাবে।
কিছুটা দ্বিধাদ্বন্দ নিয়েই সুজাতা প্রথমবার নাবিলা ম্যাডামের কাছে গিয়েছিল। জীবনের কিছু কষ্টের কাহিনী নিজের মুখে পুরোপুরি বলা ওর সম্ভব হয়নি। ম্যাডাম সেই মিথ্যা কথাগুলি বুঝেও সেই বিষয় এড়িয়ে গিয়ে ওর আসল সমস্যা নিয়ে কাজ করেছেন। ইন্টারনেটে লেসবিয়ানিসম নিয়ে কিছু লেখা পড়ে ওর মনে হয়েছিল হয়তো ওর সমস্যা এর কাছাকাছি কিছু হবে। সেজন্যই ও মানসিক ডাক্তারের কাছে গিয়েছিল। গতকালকে ম্যাডামের চেম্বারে ও নাবিলা ম্যাডামের সাথে শেষবারের মতো দেখা করতে যায়।
-ইন্টারনেটে দেখলাম উন্নত দেশগুলিতে এইধরণের ট্রান্সফরমেশন আঠারো বছরের আগেই করে ফেলে। ম্যাডাম এটা যদি আমার শারীরিক সমস্যাই হয় তাহলে কেন আর আগেই আমি টের পেলাম না?
-দারুন প্রশ্ন করেছ তুমি। উন্নত দেশগুলিতে মানুষ অনেক বেশ সচেতন। ডাঃ ফাতেমা’র রির্পোট তো তোমাকে দিয়েছি। তোমার আগে থেকেই প্রচ্ছন্নভাবে বেশ কিছু সমস্যা ছিল যেইগুলি তুমি মেয়েলি সমস্যা মনে করে কারো সাথেই শেয়ার করো নি। তাছাড়া উন্নত দেশগুলিতে শারীরিক সর্ম্পক শুরু করার বয়সও অনেক কম হয়। ওরা হাইস্কুলেই এইসব ট্রাই করা শুরু করে। এইকারণেই আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম যে তুমি জামিলের সাথে এটা ট্রাই করেছ নাকি? তখন যদি ট্রাই করতে তাহলে আরো আগেই তোমার সমস্যা ধরা পরতো। অথবা তোমাকে যদি একবারের জন্যও ভালোভাবে মেডিক্যাল চেকআপ করা হতো তাহলে এটা ধরা পরে যেত। তোমার দেহে জরায়ু, ফ্যালোপিয়ান টিউব বা ডিম্বাশয় নেই। এটা আজ না হয় কাল ধরা পরতোই।
-আমি যদি পুরোপুরি মেয়ে না হয়ে থাকি তাহলে কেন জামিল, কামরুল স্যার কিংবা রায়হানের মতো পুরুষদের প্রেমে পরলাম?
-ডাঃ ফাতেমা আমাকে যা বলেছে সেটা হলো, অ্যান্ড্রোজেন সংবেদনশীলতা সিন্ড্রোমে মা কিংবা বাবার কাছ থেকে প্রাপ্ত এক্স ক্রোমোজোম যখন ঠিকঠাক মতো কাজ করে না তখন এই সমস্যা শুরু হয়। এই সিন্ড্রোমে এক্স ক্রোমোজোমের যে কোন একটা মাত্র ত্রুটিই সারা শরীরে টেস্টোস্টেরনের প্রভাব সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে বাধা দেয়। এটি ভ্রূণকে পুরুষ হরমোনের প্রতিক্রিয়া জানাতে বাধা দেয়, যৌন অঙ্গগুলির বিকাশে হস্তক্ষেপ করে। কেন এবং ঠিক কখন থেকে হুট করে এক্স ক্রোমোজোমে ত্রুটি শুরু হয় সেটা বের করা নাকি সম্ভব না। তুলনামূলকভাবে এক্স ক্রোমোজোম ওয়াই ক্রোমোজোমের চেয়ে অনেক স্ট্যাবল হয়। প্রায় ২০,০০০ জন্মে ১টা ত্রুটি হতেও পারে বলে বিজ্ঞানীর ধারণা করে। আমি তোমাকে এক এক করে জামিল, কামরুল স্যার কিংবা রায়হানের কাহিনীর ব্যাখ্যা দিচ্ছি, যদিও তুমি আমাকে অনেকগুলি মিথ্যা কথা বলেছে কিংবা সত্য গোপন করেছ।
-ম্যাডাম, আমি সত্যি কথাগুলি বলতে খুব লজ্জা পাচ্ছিলাম।
নাবিলা ভালো করে তাকিয়ে দেখে সুজাতা সত্যই এখনও ভীষন লজ্জা পাচ্ছে। প্রসঙ্গ পাল্টে আবার বলা শুরু করলো ওঃ
-আমার ধারণা জামিলই প্রথম ছেলে তোমার জীবনে যে এত কাছাকাছি এসে তোমাকে প্রপোজ করতে পেরেছে। কবি হবার কারণে ওর প্রতি তোমার সফট কর্নার ছিল যেটা জামিলও আমার কাছে স্বীকার করেছে। ঐ সময়ে ক্লাসের বান্ধবীদের দেখে তোমারও খুব প্রেম করতে ইচ্ছে করছিল যেটা খুবই স্বাভাবিক। তোমার দেহে অ্যান্ড্রোজেন সংবেদনশীলতা সিন্ড্রোম তখনও প্রকাশ পেতে শুরু করেনি।
-কামরুল সাহেবের বিষয় নিয়ে আমি অনেক ভেবেছি। উনার সাথে কথা বলার পর এটা আরও পরিষ্কার হয় আমার কাছে। তুমি উনার কাছে উনার বাসায় যেয়ে একা প্রাইভেট পড়তে। সদ্য বাচ্চা হবার কারণে উনার স্ত্রী তখন নিজের বাবার বাসায়ই থাকতো বেশি। কামরুল সাহেব যথেষ্ঠ সুপুরুষ। দুর্দান্ত আবৃত্তি করেন। সাহিত্যের প্রতি তোমার সফট কর্নার ছিল আগে থেকেই। তাছাড়া ঠিক সেইসময় জামিল তোমাকে খুব প্রেশার দিচ্ছিল ইন্টিমেট রিলেশনের জন্য যেটার ব্যাপারে তোমার আগ্রহ তখন দিন দিন কমছে। জামিলের কাছ থেকে সরে যাবার জন্য তোমার একটা শক্ত অবলম্বন দরকার। একদম ডেস্পারেট ভাবেই চেষ্টা করেছিলে কামরুল সাহেব'কে পাবার, তাইনা?
-উনাকে আমার খুব ভালো লাগতো। সবচেয়ে ভালো লাগতো উনার আন্তরিকতা।
-সুজাতা, তুমি বিদেশে চলে যাবার আগে আমি চাই কামরুল সাহেব এবং উনার স্ত্রীর সাথে দেখা করে যা ঘটছে সেটার জন্য তুমি ক্ষমা চেয়ে নেবে। আমি তোমার বর্তমান অবস্থা আগেই উনাকে ব্রীফ করে দেবো। উনি বেশ ভালো মানুষ, বুঝতে পারবেন কিছুটা হলেও।
-ম্যাডাম আমি দেখা করতে পারবো না, উনার সামনে যেয়ে দাঁড়ানো আমার পক্ষে সম্ভব না। আমি ফোনে মাপ চেয়ে নেবো।
-ঠিক আছে। আমার কাছ থেকে নাম্বার নিয়ে যাবে।
-রায়হানের ব্যাপারে ব্যাখ্যা কী ম্যাডাম?
-এটা ছিল যাস্ট কম্পিটিশন। আমার ধারণা রায়হানের সাথে তোমার এফিয়্যার হবার সময় তোমার সব বান্ধবীদেরই একজন করে বয়ফ্রেন্ড হয়ে গিয়েছিল। এটা ছিল তোমার জন্য মান সম্মানের ব্যাপার। তুমি ডেস্পারেট হয়েই এই সর্ম্পক করেছিলে।
-জী ম্যাডাম। হলে আমার রুমের সব মেয়েদের বয়ফ্রেন্ড ছিল। ওরা আমাকে খেপাতো কিন্ডারগার্টেনের মেয়ে বলে। আমার খুব লজ্জা লাগতো।
-রায়হানের সাথে সর্ম্পক তুমি জোর করে করেছ। তুমি এই সর্ম্পক নিয়ে যা যা আমাকে বলেছ তাতে পুরো ব্যাপারটাই আমার কাছে একমূখী সর্ম্পক মনে হয়েছে। রায়হান তোমার হাত ধরেছে, জড়িয়ে ধরেছে এইসব যখন বলতে তখন তুমি খুব নির্লিপ্ত ভাবে বলে যেতে। রায়হানের এই কাজগুলি তোমার মধ্যে কোন অনুভূতির সৃষ্টি করতো না, কোন আবেগও কাজ করতো না। লঞ্চে রায়হান যা করেছে তার জন্য ওকে পুরোপুরি দায়ী করা যায় না। তুমি দিনের পর দিন ওকে প্রশয় দিয়ে গেছ দেখেই ও মনে করেছে শারীরিক সর্ম্পকের ব্যাপারে তোমার পূর্ণ সম্মতি আছে। উত্তেজিত অবস্থায় রায়হান নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারেনি সম্ভবত।
-যতদূর সেদিন এগিয়ে গিয়েছিলাম তাতে পুরুষ হিসেবে নিজেকে সামলানো ওর আসলেই সম্ভব ছিল না। আমি কি রায়হানের সাথে দেখা করে সবকিছু খুলে বলবো।
নাবিলা চুপ করে কিছুক্ষণ ভাবলো।
-রায়হানের সাথে তো তোমার সর্ম্পক নেই এখন। কথাবার্তাও হয় না এখন, তাইনা?
-জী ম্যাডাম।
-তাহলে রায়হান'কে আর এই বিষয়ে কিছু জানানোর কোন দরকার নেই। তোমার ভিতরে যে শারীরিক পরিবর্তন ঘটছে তাতে তোমার কোন হাত নেই, এটা পুরোপুরি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া। তোমার এই শারীরিক অবস্থার কথা জানলে রায়হানের মনের ভিতরে তীব্র হীনমন্যতা সৃষ্টি হতে পারে যে কার সাথে ওর এ্যফিয়ার হয়েছিল। কি দরকার শুধু শুধু রায়হানের মনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করার?
সুজাতা মাথা নীচু করে চুপ করে বসে আছে। বিষন্ন এই ভঙ্গি দেখেই নাবিলা বুঝলো কতটা মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে দিয়ে এই মেয়ে এখন সময় কাটাচ্ছে।
-সুজাতা, জীবনে কিছু কিছু প্রশ্ন থাকে যার উত্তর কখনও মিলে না। জীবনে কিছু কিছু ঘটনা ঘটে যায় যেইগুলি সারাজীবন চেষ্টা করলেও শুধরানো যায় না। আর কিছু কিছু লুকানো কষ্ট থাকে যা কাউকেই কখনও খুলে বলা যায় না। তোমার এখন সামনে এগিয়ে যাবার সময়। দ্বিধাগ্রস্থতা তোমাকে শুধুই পিছনে আঁকড়ে ধরে রাখতে চাইবে।
-আমার জন্মদাত্রী মা পর্যন্ত আমার এই পরিবর্তনটাকে বিশ্বাস করতে পারেন নি। বাবা স্তব্ধ হয়ে গেছেন।
-এটা তাদের দোষ নয়। প্রতিটি বাবা মা'ই তার সন্তানের সুন্দর সামাজিক একটি জীবন চায়। চায় তাদের প্রতিটা সন্তান নিরাপদে ভালোভাবে বেড়ে উঠুক।
-মাঝে মাঝে আমার খুব ভয় লাগে। আমি কোথায় যাবো? কি করবো? কিভাবে বেঁচে থাকবো?
-সুজাতা, আমাদের দেশের সমাজ কোন ব্যতিক্রমকে সহজে ধারণ করতে এখনও শিখেনি। তুমি মেধাবী এবং সাহসী। তোমার সুচিকিৎসা বিদেশেই আছে। আমাদের এখানে এখনও এই চিকিৎসার জন্য যে অপারেশন দরকার তার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই। আর সেক্স পরিবর্তনের পর তোমাকে যে পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার ভিতর দিয়ে যেতে হবে সেই পরিবেশটা আমাদের এখানে আসলেই নেই। তুমি একটা কাজ করতে পারো, দেশেই 'আইইএলটিএস' পরীক্ষা দিয়ে দাও। লন্ডনে যেয়ে আবার পড়াশুনা শুরু করে দেবে। সেখানে তুমি পড়াশুনা শেষ করে চাকুরী করে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে আবার নতুনভাবে স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারবে।
-আমি পারবো তো ম্যাডাম? আমার যে অনেক ভয় করে!
-আকাশে যত মেঘের ঘনঘটাই আসুক, একসময় আবার তা ঠিকই সরে যায়। তুমি যদি এখন ভয় পেয়ে সরে আস, তাহলে তোমার জীবনের আকাশ সবসময় কালো মেঘে ঢাকাই থাকবে। গহীন অরণ্যে যেমন সূর্যের আলো কখনই পৌছায় না, এখানে থাকলে তোমার জীবনটাও ঠিক এরকম সারাজীবন অন্ধকারাচ্ছন্নই থেকে যাবে।
একবুক ভরা আশা চোখে নিয়ে সুজাতা নাবিলার বাকি কথাগুলি মনোযোগ দিয়ে শুনে গেল।
নাবিলার সাথে বিস্তারিত আলোচনা করে সুজাতার মনের ভিতরের শংকাগুলি আস্তে আস্তে কেটে যেতে লাগলো।
ডাঃ ফাতেমা ম্যাডাম ওকে লন্ডনে কোথায় চিকিৎসা করতে হবে সেটার বিস্তারিত সব কিছুই দিয়ে দিয়েছেন।
এখন শুধু ওর অপেক্ষার পালা ইংল্যান্ডের ভিসার জন্য।
স্পনসরশীপ ভিসা ইস্যু হতে কিছুটা সময় লাগে।
সুজাতা নাবিলা ম্যাডামের কথামতো বৃটিশ কাউন্সিলে ভর্তি হয়ে ল্যাংগুয়েজ কোর্সের পড়াশুনায় মনোযোগী হয়ে উঠলো।
(সাত)
চারমাস পরের কথা-
সুজাতার ইংল্যান্ডের ভিসা তৈরি হয়ে গেছে। দেশ ছেড়ে চলে যাবার আগে শেষবারের মতো ঢাকা ভার্সিটিতে বেড়াতে আসলো সুজাতা, সাথে ওর খুব প্রিয় বান্ধবী কাজল। কলাভবন থেকে পলাশী, শহীদুল্লাহ হল, জগন্নাথ হল, কার্জন হল, পাবলিক লাইব্রেরি সব জায়গায় হাতে হাত ধরে নিঃশব্দে ঘুরে বেড়ালো দুইজন। টিএসসির চত্তরে ঢুকেই সুজাতার চোখ এক জায়গায় আটকে গেল। লাস্যময়ী শাড়ি পড়া খোলা চুলের এক তরুণীর হাত ধরে রায়হান সবুজ সেই চত্তরে হাসিমুখে ঘুরে বেড়াচ্ছে। মেয়েটি সম্ভবত ওর জুনিয়রই হবে। পরম নির্ভরতায় মেয়েটা রায়হানের হাত ধরে হাঁটছে আর গল্প করছে। ঠিক যেইভাবে সুজাতা রায়হানের সাথে ঘুরে বেড়াতো। মধুর আবেগের সেই দৃশ্য দেখে কিছুতেই সুজাতা নিজের চোখের পানি আটকে রাখতে পারলো না। বয়ে যাওয়া সময় সবার জীবনেই অনেক কিছুই বদলে দেয়। কারো জন্যই কারো দুনিয়া থেমে থাকে না। শুধু কিছু কিছু অমোচনীয় স্মৃতি জমা হতে থাকে হৃদয়ের খাতায়, পাতায় পাতায়। অশ্রুসজল চোখেই সুজাতা, রায়হান আর অচেনা সেই মেয়ের ভবিষ্যতের জন্য একরাশ শুভ কামনা জানিয়ে সেখান থেকে চলে আসলো।
একসপ্তাহ পরে খুব ভোরবেলা সুজাতা জিয়া ইন্টারন্যাশনাল এয়ার পোর্টের বর্হিঃগমন লাউঞ্জের কাঁচের বড় একটা জানালার পাশে আনমনে দাঁড়িয়ে আছে। চোখের সামনে রানওয়ের আলোগুলি খুব স্পষ্ট হলেও ভোরের আবছা আলোয় সেইগুলি ক্রমশই অস্পষ্ট হয়ে যেন আঁধারেই মিলিয়ে যাচ্ছে। ওর জীবনের সাথে ঠিক কতই না মিল এই আলো আঁধারের খেলার। কিছুক্ষণ পরেই ফ্ল্যাইট অ্যানাউন্সমেন্ট শুনেই সুজাতা শ্লথ পায়ে বড় একটা লাগেজ হাতে নিয়ে রওনা দিলো। মনের অজান্তেই উড়োজাহাজে ঢুকার আগ মুহূর্তে ভোরের মৃদু আলো আঁধারের সংমিশ্রণে ঘুমিয়ে থাকা প্রিয় মানুষগুলির কথা ভেবে গভীর আবেগে সুজাতা শেষবারের মতো পিছনে ফিরে তাকালো। কিন্তু সুজাতার হৃদয়ের সেই উথাল পাথাল আবেগ জামিল, কামরুল স্যার কিংবা রায়হান, কারো ঘুমই ভাঙাতে পারলো না।
(আট)
দুইবছর পরে হঠাৎ একদিন নাবিলার চেম্বারে দেশের বাইরে থেকে একটা ছোট পার্সেল এলো। সন্ধ্যার সময়ে চেম্বারে ঢুকে চেয়ারে বসতেই নাবিলার কাছে ওর রিসেপশনিস্ট পার্সেলটা নিয়ে আসলো।
পার্সেলটা খুলতেই এর ভিতর থেকে পাঁচটা ছবি আর একটা প্যাকেট পাওয়া গেল। প্যাকেটের ভিতরে খুব দামী তিনটা ফ্রেঞ্চ পারফিউমের বোতল। প্রতিটা পারফিউমই নাবিলার পছন্দ হলো। ছবিগুলি হাতে নিয়ে দেখে সেইগুলি বিয়ের অনুষ্ঠানের ছবি, ছবিগুলির উল্টো পিঠে মাত্র গত সপ্তাহের তারিখ দেয়া। কনে সেঁজে যেই মেয়েটা বসে আছে তার চেহারা নাবিলার পরিচিত মনে হলো, কোথায় যেন এই মেয়েটাকে দেখেছে ও আগে। কিছু একটা মনে পড়তেই বেশ আগের একটা কেস ফাইল খুঁজে বের করলো নাবিলা। এখন মনে পরেছে, মেয়েটাকে চেনে ও। প্রায় দেড় বছর পরেও কাজলের চেহারা চিনতে ভুল হয়নি ওর। বরের বেশে ছেলেটাকেও চিনতে পারলো নাবিলা। শারীরিক অবয়বে অনেক পরিবর্তন আসলেও আগের চেহারার হালকা একটা ছাপ এখনও রয়েই গেছে।
পারফিউমগুলির সাথে একটা হাতে লেখা চিরকুট পাওয়া গেল।
গোটা গোটা অক্ষরে সেখানে মেয়েলী ধাঁচে লেখা-
প্রিয় ম্যাডাম আমার কথা কি ভুলে গেছেন আপনি?
গত সপ্তাহে কাজল'কেই বিয়ে করলাম। ওর চেয়ে বেশি আপণ আর আমার কে আছে? আমার বিয়ের কথা শুধু দেশে বাবা-মা ছাড়া আর কাউকেই বলিনি। আজকে আপনাকে জানালাম। আপনার কাছে আমার কৃতজ্ঞতার কোন শেষ নেই। নিজের বেতনের টাকা দিয়েই এই পারফিউমগুলি কিনে আপনাকে পাঠালাম। সব সময় ভালো থাকুন আপনি। আমার আর কাজলের জন্য অনেক অনেক দোয়া করবেন।
বড় করে স্বস্তির একটা নিঃশ্বাস বের হয়ে এলো নাবিলার বুক থেকে। ছবিগুলি আর কাগজের চিরকুট সেই কেস ফাইলে রেখে দিয়ে চেয়ার থেকে উঠে ফাইল'টা একটা কাঠের আলমিরা খুলে সেখানে রেখে দিল নাবিলা।
সেই আলমিরার সামনে বড় করে একটা স্টিকার লগানো "সলভড কেস"।
(এই গল্পের মূল ঘটনা সত্য কাহিনীর উপরে লেখা)
সমাপ্ত
সবাইকে ধন্যবাদ ও শুভ কামনা রইল।
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত @ নীল আকাশ, সেপ্টেমবর ২০২০
উৎসর্গঃ আমার খুব প্রিয় বন্ধু, উপন্যাসিক, গল্পকার এবং কথা সাহিত্যিক @এ কে আজাদ'কে। যার প্রতিটা লেখাই আমি মুগ্ধতার সাথে পড়ি। ইচ্ছে করে প্রথাগত নিয়মের বাইরে যেয়ে ঠিক ওর মতন করে লিখতে!
০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:৩৫
নীল আকাশ বলেছেন: লাগবে না। প্রতিটা গল্পই আলাদা। এইক গল্পের সবগুলি পর্ব পড়বেন।
প্রতিটা গল্পই নতুন কাহিনী নিয়ে লেখা। সাইকোলজি বেসড থ্রীলার।
২| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:১৭
নেওয়াজ আলি বলেছেন: শুভ কামনা । অসাধারণ
০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:৩৫
নীল আকাশ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই। ভালো থাকুন সতত।
৩| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:৫৯
পদ্মপুকুর বলেছেন: এই রকম একটা প্লট মাথায় আসলো কিভাবে? এটা কি কোনো লেখার ছায়ানুবাদ?
ক্যাম্পাসে আমার এক বন্ধু বিয়ের পর জানতে পারে যে তার পার্টনারের এ রকম সমস্যা আছে। ভয়াবহ অবস্থা! অনেক সময় বাস্তবতা গল্পকে ছাড়িয়ে যায়।
০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:৩৪
নীল আকাশ বলেছেন: এটা আমার এক বন্ধুর কাছ থেকে শোনা বাস্তব জীবনের কাহিনী থেকে নেয়া।
ফিনিস আমি নিজের মতো করে দিয়েছি। এই সিন্ড্রোম নিয়ে বিদেশে প্রচুর রিসার্চ করা হয়।
ইন্টারনেটে সার্চ দিলেই এটা নিয়ে প্রচুর লেখা পাবেন। আমাকে বেশ ঘাটাঘাটি করতে হয়েছে এটা নিয়ে লেখার সময়।
পুরো গল্পটা পড়ে বলুন কেমন লিখেছি? অনেক কষ্ট করেছি এই লেখাটা দাঁড়া করানোর জন্য!
এইসব বিষয় নিয়ে লেখা খুব কঠিন!
৪| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:২৩
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
বাস্তবেও যখন শুনি ছেলে মেয়ে হয়ে গেছে আবার তার বন্ধুকেই বিয়ে করেছে বা মেয়ে ছলে হয়ে বান্ধবীকে বিয়ে করেছে।
তাহলে এগুলো মিথ্যা নয়।
কত বিচিত্র মানব জীবন।
০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:৩৬
নীল আকাশ বলেছেন: মেয়ের শুরুর কাহিনী বাস্তব ঘটনা। এটা আমার এক বন্ধুর কাছ থেকে শোনা।
এগুলো মিথ্যা নয়। কত বিচিত্র মানব জীবন। একদম ঠিক বলেছেন।
৫| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:৪৩
রাজীব নুর বলেছেন: সব মিলিয়ে নাবিলা কাহিনী আমার কাছে ভালো লেগেছে।
০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:৪২
নীল আকাশ বলেছেন: ধন্যবাদ রাজীব ভাই। বেশ কষ্ট করে এটা লিখতে হয়েছে।
৬| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:৪৭
পদ্মপুকুর বলেছেন: পুরো গল্পটা পড়ে বলুন কেমন লিখেছি?
আমিতো দুইপর্বই পড়েছি। প্রথমপর্বেও মন্তব্য দিয়ে এসেছি। আপনিতো এম্নিতেই ভালো লেখেন, এখানে এই কঠিন প্লটেও তাই গল্পের গতি বা ছন্দ কোনোটিই নষ্ট হয়নি বলেই আমার মনে হয়েছে।
০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:১৬
নীল আকাশ বলেছেন: কিছুটা শংকায় ছিলাম এই লেখাটা নিয়ে। ভয় কাটিয়ে দিলেন। ধন্যবাদ।
৭| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:১৭
চাঁদগাজী বলেছেন:
বিদেশী কোন লেখকের লেখা থেকে লিখছেন! এগুলো বাতাস।
০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:১৫
নীল আকাশ বলেছেন: আপনাকে আমি সাধে ফার্মের মুরগীর মগজ সম্পন্ন বলেছি!
৮| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:৩৪
মুক্তা নীল বলেছেন:
ভাই ,
উপস্থিতি জানান দিয়ে গেলাম । আগে প্রথম পর্ব শেষ
করে তারপর দ্বিতীয় পর্ব পড়ে মন্তব্য করবো ।
০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:৪৮
নীল আকাশ বলেছেন: ধন্যবাদ। এই পর্ব পড়ার পর আপনার পুরো অনুভূতি লিখে জানাবেন।
শুভ কামনা রইলো।
৯| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:৫৫
করুণাধারা বলেছেন: মানুষের জীবনের এক অচেনা দিককে সুন্দর ভাবে এই গল্পে বিশ্লেষণ করেছেন। ভালো লাগলো। তবে সব মা-বাবা সুজাতার মা-বাবার মত সহযোগিতা করবেন কিনা সন্দেহ আছে।
০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:৩২
নীল আকাশ বলেছেন: ধন্যবাদ আপু। সুন্দর মন্তব্য করেছেন।
আশা করি গল্পের মেসেজটা সবাই বুঝতে পেরেছে। হাত পা গুটীয়ে বসে না থেকে এটার চিকিতসা করলে এটা নিরাময় যোগ্য।
অচেনা একটা বিষয় নিয়েই লিখেছি। একেবারেই অনকমন টপিক। এইদেশে এটা পরিচিত টার্মও না।
মানসিক বিশ্লেষন লিখতে যেয়ে সাইকোলজির কাছে হাত পাততে হয়েছে।
এটা শারীরিক সমস্যা হবার কারণে সামসিক সমাধান নাই। বিদেশে এই ধরণের সার্জারি করলেও এখন আমাদের দেশেও সীমিত আকারে এটা শুরু হয়েছে তবে বয়স কম হতে হয়।
বাবা মা যদি সন্তানের পাশে যেয়ে না দাঁড়ায় তাহলে সেই সন্তানকে সারাজীবনই এই দুঃসহ কষ্ট এবং যন্ত্রণা ভোগ করে যেতে হবে।
শুভ কামনা রইলো।
১০| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:০৫
ইসিয়াক বলেছেন: ভালো লাগলো।
০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:৪১
নীল আকাশ বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে পড়ার জন্য।
১১| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৮:৪০
সোহানী বলেছেন: হঠাৎ করে ঢুকে এ পর্ব পড়ার পর আগের পর্বগুলো পড়ার আগ্রহ তৈরী হলো। ভালো লাগলো এ পর্বটি।
০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:৫০
নীল আকাশ বলেছেন: ধন্যবাদ আপু। কিছুটা ওড টপিক নিয়ে লিখি এই সিরিজটা। বাকিগুলি মনে হয় আপনি পড়েছেন।
শুভ কামনা রইলো।
১২| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৯:২১
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: বাবারে! শরীর বিদ্যার সূক্ষ্ম তত্ত্বগুলো যেভাবে লিখলেন। তাতে তো মনে হল যে কলাবাগান ভাই বুঝি আমেরিকা থেকে কোন জীব বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করেছেন। সুন্দর ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণে ভরপুর একটি পোস্ট পড়লাম। এমন একটি ঘটনা কিছুদিন আগে কলকাতায় ঘটেছিল। পেপারের ভাষ্য অনুযায়ী কেরালার একজন স্পোর্টস পুলিশ ইন্সপেক্টর লিঙ্গ পরিবর্তনের সার্জারি করতে কলকাতায় এসেছিলেন। কাজেই সত্য ঘটনা অবলম্বনে কাহিনীটা রচিত হাওয়ায় বাস্তবে যারা ভুক্তভোগী তাদের জীবন যন্ত্রণায় কথা ভাবলে শিউরে উঠতে হয়।
পোস্টে লাইক।
শুভেচ্ছা প্রিয় নীল আকাশ ভাইকে।
১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:২২
নীল আকাশ বলেছেন: প্রিয় ভাই,
দেরি করে ফেললাম উত্তর দিতে। কালকে বিকাল থেকে শরীর খুব খারাপ লাগছিল। ব্লগে আর আসতে পারি নি ।
জেন্ডার চেঞ্জের ব্যাপারটা অনেক সময় পুরোটাই শারীরিক বিষয় হয়। এআইএস বলে যেটা আমি লিখেছি সেটা বৈজ্ঞানিক ভাবে প্রমানিত। উন্নত দেশগুলিতে এই এই ধরণের জেন্ডার ট্রান্সফর্মেশন নিয়মিতই করা হয়। অর্ন্তজালে খুজলে প্রচুর এই বিষয়ে তথ্য পাবেন।
সত্য ঘটনা অবলম্বনে কাহিনীটা রচিত হাওয়ায় বাস্তবে যারা ভুক্তভোগী তাদের জীবন যন্ত্রণায় কথা ভাবলে শিউরে উঠতে হয়।
কাহিনীর প্রথম অংশ উপ্ন্যাসিক একে আজাদের কাছ থেকে লিখেছি, যেটা সত্য/বাস্তব ঘটনা। ওর লেখাও গ্রুপে প্রথমে দেয়া হয়েছিল। তবে আমি লিখতে যেয়ে নাবিলাকে দিয়ে চিকিতসা পর্ব (শেষ পর্ব) যেটা লিখেছি সেটা আমার লেখা। আমি দেখাতে চেয়েছি এইধরণের ঘটনাতে কিভাবে নিয়ম মোতাবেক চিকিতসা করতে হয়। যাদের এইধরণের সমস্যা হয় তারা প্রোপার ট্রীটমেন্ট না পেলে সারা জীবনই ভুগতে থাকে। পুরো লাইফই নষ্ট হয়ে যায়।
বৈজ্ঞানিক বিষয় শুধু কলাবাগান ভাই কেন আমিও লিখি। নাবিলার কাহিনীগুলির সবগুলিই বৈজ্ঞানিক তথ্যের উপর লেখা।
দারুন একটা মন্তব্যের জন্য কৃতজ্ঞতা রেখে গেলাম।
১৩| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১০:৪৮
রাজীব নুর বলেছেন: সবার মন্তব্য গুলো পড়তে আবার এলাম। মন্তব্য গুলো সুন্দর।
০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:৪১
নীল আকাশ বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে ভাই।
১৪| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:০৪
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: বেশ ঝরঝরে...
টানা পড়ে গেলাম।
জেন্ডার ইস্যুকে সহজ ভাবে নেবার মতো জ্ঞান চর্চায় পৌঁছায়নি দেশ, মানুষ, সামাজিকতা!
তবে পরিবর্তন আসছে। ভাল মন্দ দুটো ঢেউই ক্রমাগত বদলে দিচ্ছে মানুষের ভাবনার জগতকে
হয়তো একদিন স্বাভাবিক হয়ে যাবে সবই...
গল্পে +++
১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:২৬
নীল আকাশ বলেছেন: বেশ ভালো একটা টপিক নিয়ে এসেছেন।
জেন্ডার ইস্যুকে সহজ ভাবে নেবার মতো জ্ঞান চর্চায় পৌঁছায়নি দেশ, মানুষ, সামাজিকতা! তবে পরিবর্তন আসছে।
এর একমাত্র কারণ হলো জ্ঞানের অভাব। এখন তাও মানুষ কিছুটা জানছে। আগে তো হুজুরের কাছে পানি পড়া আনতে চলে যেত।
যত বেশি জ্ঞানের চর্চা হবে এইসব সমস্যা তত বেশি দূর করে ফেলা যাবে।
অফ টপিকঃ মহানবীর ওফাত নিয়ে আপনার প্রশ্নগুলির উত্তর নিয়ে একটা বড় পর্ব লিখছি। আপনার সব প্রশ্নের উত্তর ইনশা আল্লাহ একজায়গায় পেয়ে যাবেন।
ভাল থাকুন ভাই, সব সময়।
১৫| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৩:০৪
মা.হাসান বলেছেন: টিএমএসএস নামের একটা এনজিও আছে, উত্তরের জেলা গুলোতে কাজ করে । এর প্রতিষ্ঠাতা পুরুষ ছিলেন, পরে মহিলায় রূপান্তরিত হন এবং সহপাঠিকে বিয়ে করেন। এরকম আরো দু একটি ঘটনার নজির দেশে আছে। তবে মহিলার জন্য পুরুষে পরিনত হবার ঘটনা কম (কারণ ঐ যে , এক্স এর ত্রুটি কম)। আর এর অপারেশনও ব্যয় বহুল।
অসাধারণ লিখেছেন।
তবে একটি তথ্যের বিষয়ে প্রতিবাদ না করে পারছি না। পুরুষ থেকে নারী বা নারী থেকে পুরষে রূপান্তরের ঘটনা সম্ভব। কিন্তু কুকুর বা ছাগল থেকে মুরগিতে পরিনত হওয়া সম্ভব না।
অশেষ শুভ কামনা।
১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:৫৯
নীল আকাশ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই সুন্দর একটা মন্তব্যের জন্য।
টিএমএসএস = ঠেঙ্গামারা সবুজ সংঘ। যেই ঘটনা লিখেছেন সেটা আমার জানা ছিল না।
এআইএস বলে যেটা আমি লিখেছি সেটা বৈজ্ঞানিক ভাবে প্রমানিত। উন্নত দেশগুলিতে এই এই ধরণের জেন্ডার ট্রান্সফর্মেশন নিয়মিতই করা হয়। অর্ন্তজালে খুজলে প্রচুর এই বিষয়ে তথ্য পাবেন। মেয়ে থেকে পুরুষ হবার প্রসেস একটু ঝামেলার। কাজ শুরু হয় বেশ কিছুদিন হরমোন থেরাপীর মাধ্যমে। এক্সেস বেস্ট কেটে বাদ দিয়ে দেয়া হয়। ফিমেল জেনিটাল পুরোটাই অর্গান কেটে বাদ দিয়ে দেয়া হয়। আর্টিফিশিয়াল পেনিস গ্রো করা হয়। লং টাইম লাগে, প্রায় দুই বছরের কাছাকাছি। এইজন্যই আমি সময় এটা দেখিয়েছি। তবে এইসব রূপান্তরিত পুরুষরা মেয়েদের প্রেগ্ন্যান্ট করতে পারে না। এটাই সবচেয়ে ভয়াবহ সমস্যা। এবং এটার কোন সলুউশন নেই।
ভালো থাকুন ভাই।
১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:০৬
নীল আকাশ বলেছেন: তবে একটি তথ্যের বিষয়ে প্রতিবাদ না করে পারছি না। পুরুষ থেকে নারী বা নারী থেকে পুরষে রূপান্তরের ঘটনা সম্ভব। কিন্তু কুকুর বা ছাগল থেকে মুরগিতে পরিনত হওয়া সম্ভব না।
সৃষ্টিজগতের বিশেষ কিছু ইসপিশায়াল জিনিস থাকে যাদের পক্ষে অসম্ভব বলে কিছু নেই।
লজ্জা শরম ১০০% অনুপস্থিত থাকাটা স্বাভাবিক কিছু রে ভাই। এরা নরমাল কার্ভে পরে না। এবনর্মাল কার্ভে পরে।
ধন্যবাদ।
১৬| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১:৩৬
সাহাদাত উদরাজী বলেছেন: আমি শুধু কমেন্ট গুলো পড়েছি মনোযোগ দিয়ে, মুল লেখা আগামী কাল পড়বো।
১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ৮:১০
নীল আকাশ বলেছেন: শুভ সকাল,
প্রথম পর্ব আগে পড়ে নিবেন। তাহলে বুঝতে সুবিধা হবে।
ধন্যবাদ।
১৭| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:২৪
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: পড়ে ফেললাম ভাইয়া
ভালো লাগলো
১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:৪৮
নীল আকাশ বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে আপু। ভিন্ন একটা টপিক নিয়ে লিখেছিলাম। আন-কমন!
১৮| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:০২
ভুয়া মফিজ বলেছেন: প্রথম পর্বে বলেছেন, কামরুল স্যার অবিবাহিত। এই পর্বে বিবাহিত হয়ে বাচ্চা হয়ে গেল? নাবিলা কামরুল স্যার আর জামিলের সাথে যে কথা বলেছে সেটা আরেকটু জোড়ালো ভাবে আসলে ভালো হতো। যাই হোক, গল্প সুন্দর হয়েছে।
শামসুন্নাহার হলের এক সুন্দরী মেয়েকে একেবারে ছেলে বানিয়ে দেয়া ঠিক হয় নাই। বর্তমানের কোন ছেলে একসময়ে ওই হলে থাকতো, চিন্তাটা আমার পছন্দ হচ্ছে না।
সুজাতার বর্তমান নাম আর ঠিকানাটা দিয়েন। সময় করে একটু কথা বলতে হবে। আমার যদি আবার কোনদিন মেয়ে হতে ইচ্ছা হয়........বলাতো যায় না! যোগাযোগটা থাকা দরকার।
১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:০১
নীল আকাশ বলেছেন: সুজাতা কামরুল স্যারের ঘটনা গোপন করা এবং কিছুটা মিথ্যা তথ্য দিয়েছিল। তথ্যের মাঝে গড়মিল দেখেই নাবিলার সন্দেহ হয়েছিল। একজন বিবাহিত লোকের সাথে লটর পটর করার কাহিনী সুজাতা বলতে চাচ্ছিল না।
এইধরণের ঘটনা বহু আছে। ১৫ নাম্বার হাসান ভাইয়ের মন্তব্য দেখুন। আমাদের দেশে এদের'কেই হিজরা নামে ডাকা হয়।
শামসুন্নাহার হল এর প্রতি আলাদা টান আছে নাকি কোন?
সুজাতার বর্তমান নাম আর ঠিকানাটা দিয়েন। সময় করে একটু কথা বলতে হবে। আমার যদি আবার কোনদিন মেয়ে হতে ইচ্ছা হয়........বলাতো যায় না! যোগাযোগটা থাকা দরকার। নাবিলার সাথে যোগাযোগ করুন। নাবিলা এই ব্লগে আছে। সব সময়।
পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
১৯| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:০৯
খাঁজা বাবা বলেছেন: ভাল লেগেছে
২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:৩২
নীল আকাশ বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে পড়ার জন্য।
©somewhere in net ltd.
১| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:৫৮
সাগর শরীফ বলেছেন: আগে পুরান কিস্তিগুলো পড়ে আসি। মাঝখান থেকে মজা পাব না।