নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বিশ্বজোড়া পাঠশালাতে সবাই ছাত্র-ছাত্রী, নিত্য নতুন শিখছি মোরা সদাই দিবা-রাত্রী!

নীল আকাশ

এই ব্লগের সমস্ত লেখা সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। আমার অনুমতি ছাড়া এই ব্লগের লেখা অন্য কোথাও প্রকাশ করা যাবে না।এই ব্লগের সমস্ত লেখা সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। আমার অনুমতি ছাড়া এই ব্লগের লেখা অন্যকোথাও প্রকাশ করা যাবে না।

নীল আকাশ › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্পঃ মিথিলা কাহিনী ৩ - তালাক-আল-রাজী (প্রথম পর্ব)

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ২:২৫



ক্লাস ফাইভের ম্যাথের ক্লাস নিচ্ছিল মিথিলা, হঠাৎ স্কুলের পিওন এসে দরজায় দাঁড়িয়ে কথা বলতে চাইলো।
পড়া থামিয়ে পিওনকে ভিতরে ডাকলো মিথিলাঃ
-কী ব্যাপার? কোন সমস্যা হয়েছে?
-রিমনকে এইমাত্র খুঁজে পাওয়া গেছে। অন্যকোথাও যায়নি, স্কুলের ভিতরেই আছে।
-খুঁজে পাওয়া গেছে মানে? রিমনকে তো আমি সকালে প্রথম ক্লাসেই দেখলাম। কোথায় গিয়েছিল ও?
-আপনার প্রথম ক্লাস করার পর থেকেই গত তিনটা ক্লাস ধরে রিমন উধাও হয়ে গিয়েছিল। সবাই সারাস্কুলে খোঁজাখুঁজি করে অবশেষে বের করেছে। হেডমিস্ট্রেস ম্যাডাম আপনাকে যেয়ে রিমনের সাথে কথা বলে বুঝিয়ে শুনিয়ে ওকে নিয়ে আসতে বলেছে। আপনি ছাড়া অন্যকোন টিচারের কথা ও শুনেই না।
-কী বলছেন আপনি এসব? রিমন কোথায় এখন?
-স্কুলের পিছনে বড় আমগাছটার নীচে চুপ করে বসে আছে।
-বলেন কী? ক্লাস ফাঁকি দিয়ে ওখানে রিমন কী করছে? আচ্ছা ঠিক আছে, চলুন!
ক্লাসের মাঝখানেই ব্রেক দিয়ে মিথিলা পিওনের সাথে যেয়ে দেখে রিমন সত্যই সেই আমগাছের নীচে চুপ করে বসে আছে। রিমনকে কয়েকবার ডাকার পরও জবাব না দেয়ায়, মিথিলা ওর কাছে যেয়ে আদর করে হাত ধরে নিজের সাথে করে নিয়ে আসলো। ক্লাসের চল্লিশজন ছাত্র, এর মধ্যে এই বাচ্চাটাকে নিয়ে মিথিলা পড়ছে মহা বিপদে। ক্লাসে ঠিকমতো আসে না, লেখাপড়ায় কোনই মনোযোগ নেই, হোমওয়ার্কও করে না ঠিকমতো। বাচ্চাটার ডায়েরীর মধ্যে কতবার ও সবকিছু লিখে দিয়েছে যেন গার্জিয়ানরা সেটা দেখে বাচ্চাটার ব্যাপারে এক্সট্রা কেয়ার নেয়, কিন্তু কোন লাভই হয়নি। ক্লাসটিচার হবার কারনে সব কমপ্লেইন ওর কাছেই আসে। আজকে এখানে আসার আগে মিথিলা মনে মনে ঠিক করেছে রিমনের সাথে ও খোলাখুলি আলাপ করবে আসলে ওর সমস্যাটা আসলে কোথায়? ছেলেটা একেবারেই চুপচাপ স্বভাবের।

অনেক আদরের পর আসল কাহিনী রিমনের মুখ থেকে শুনে মিথিলার মন খুবই খারাপ হয়ে গেল। রিমনের বাবা ব্যবসা করেন আর মা ব্যাংকে চাকরি করেন। দিনের বেশিরভাগ সময়ই বাবা মা কেউই বাসায় থাকে না, দেখাশুনা করে বাসার হাউজ মেইডরা। সামান্য কিছুর জন্যই এরা রিমনের গায়ে হাত তোলে। বাবা বাসায় ফিরে এলে রিমন এদের নামে বিচার দিলে মাঝে মাঝে হাউজ মেইডগুলি পরিবর্তন করে দেয়া হয়। কিন্তু কেউ ওকে সময় দেয় না, আদরও করে না, ওর সাথে খেলেও না। রিমন বাসা থেকে বের হয়ে নীচেও যেতে পারে না। হারিয়ে যাবার ভয়ে বাসা থেকে ওকে বের হতেই দেয় না। সারাদিন বাসায় রিমনকে একলা একলাই থাকতে হয়। মিথিলার ভাইয়ের ছোট ছেলেটা প্রায় একই বয়সী। মা ছাড়া এতটুকু বাচ্চা কিভাবে সারাদিন একা থাকে ওর মাথাই ঢুকল না, তবে এতটুকু বুঝল যে ওকে টিচার হিসেবে যতটুকু সম্ভব এই বাচ্চাটার পিছনে আলাদা করে এক্সট্রা কেয়ার নিতে হবে, বাচ্চাটাকে কিভাবে আরও বেশী করে সাহায্য করা যায় সেটা চিন্তা করতে করতে ওর ক্লাসে ফিরে আসলো মিথিলা। রিমনের বাবা মা’কে ডেকে এই বিষয় নিয়ে কথা বলা খুব জরুরী হয়ে পড়েছে এখন।

সাময়িক বিরতি দেয়া ক্লাসটা শেষ করেই মিথিলা সোজা হেড মিস্ট্রেসের রুমে চলে গেল।
আজকে ম্যাডামের সাথে রিমনের বিষয়ে নিয়ে ও বিস্তারিত আলাপ করবে।

এক
কয়েকদিন পরেই রিমনের বাবা মিথিলার সাথে দেখা করে। বাবা’কে একা আসতে দেখে বেশ অবাক হলো মিথিলা। রিমনের মায়ের সাথে কথা বলাটাই ওর বেশি দরকার। অথচ মহিলা নিজেই আসলেন না। কী আশ্চর্য্য!

স্কুলের গেস্টরুমে বসে মিথিলা রিমনের ব্যাপারে যতগুলি কমপ্লেইন এসেছে সবগুলি বিস্তারিতভাবে বললো। রিমনের অমনযোগীতার সাথে আজকাল স্কুলে এসে ক্লাস ফাঁকি দেয়ার কথা শুনে রিমনের বাবা বড় বড় করে কিছু দীর্ঘশ্বাস ফেললেন। রিমনের বাবা নাম রাশেদুল ইসলাম। সবকিছু শোনার পর রাশেদ সাহেব কিছুক্ষণ চুপ করে বসে রইলেন। মিথিলা বেশ অবাক হলো। ভদ্রলোকের চোখে মুখে বেশ দ্বিধাগ্রস্থতা।
-ম্যাডাম আমি রিমনের খুব একটা দোষ দিচ্ছি না। বাচ্চাটার মানসিক অবস্থা এখন ভালো না। বাসার অবস্থা তো আপনি জানেন না! রিমন কয়েকবার বাসা থেকে পালানোর চেষ্টা করেছিল। আপাতত আমি ওর স্কুলে আসা বন্ধ করেছি।
-কী বলছেন আপনি এসব? বাসা থেকে পালাতেই চাইবে কেন? আর স্কুলে যাওয়া বন্ধ করা তো কোন সলিউশন না! কতদিন বন্ধ করে রাখতে পারবেন?
-আমি জানি না ম্যাডাম। ব্যবসা এবং বাচ্চা পালা, এই দুইটা কাজ একসাথে সামলানো একা একা খুব কঠিন হয়ে পরছে।
-আপনি একা সামলাবেন কেন? রিমনের মা কোথায়? উনি কী করেন তাহলে?
রাশেদ সাহেব বিব্রতকর দৃষ্টিতে মিথিলার দিকে তাকিয়ে আছে। সুতীব্র একটা অস্বস্তি নিয়ে রাশেদ সাহেব মুখ অন্যদিকে ফিরিয়ে ভারী গলায় বললেনঃ
-ও এখন আমাদের সাথে থাকে না। আলাদা থাকে। সেপারেশনের কেস চলছে এখন আমাদের।

মিথিলা বুকের ভিতরে বড়সড় একটা ধাক্কা খেল। রিমন লজ্জায় মনে হয় এই বিষয়টা ওকে বলতে পারেনি। এতটুকু বাচ্চাটা কিভাবে মা ছাড়া একা একা থাকে? আহা!
-ব্যবসা ছেড়ে দিয়ে ঘরে বসে থাকলে তো জীবন চলবে না ম্যাডাম? খেতে পরতে তো হবে?
-আপনার দিকের কোন মহিলা আত্মীয়স্বজন’কে আপাতত বাসায় এনে রাখুন।
-এনে রাখার মতো না পেলে কী করবো? আমার বিয়ের আগেই বাবা মা দুইজনই মারা গেছেন। আমি বাসায় দুইজন হাউজমেইড রেখেছি সংসার আর রিমন’কে দেখাশুনা করার জন্য। কিন্তু রিমনের সাথে কোনভাবেই এদের বনিবনা হচ্ছে না। ও দিন দিন খুবই দূরন্ত হয়ে উঠছে। সামান্য কারনেই এদের সাথে মারামারি করে। সংসার সামলাতে আমাকে এখন প্রায় দিনই বাসায় বসে থাকতে হচ্ছে।

মনের ভিতরে প্রমাদ গুনলো মিথিলা। মানুষের জীবন কত অদ্ভুত। বাইরে থেকে যা দেখা যায় ভিতরে তার কত উলটপালট। রাশেদ সাহেবের জন্য খারাপ লাগলো মিথিলার। যতকিছুই হোক, এই পৃথিবীতে প্রতিটা সংসার ভাঙ্গাই চরমতম দুঃখজনক ঘটনা। কিন্তু আসল বিষয় হচ্ছে-
-আচ্ছা আপনি রিমন’কে ওর মায়ের কাছে দিয়ে দিচ্ছেন না কেন?
-কেন দেবো? আমি ওর বাবা না? রিমনের উপর আমার কোন অধিকার নেই?
-অবশ্যই আছে। কিন্তু আপনি তো পারছেন না। আপনার কাছে অসম্ভব কাজগুলি ওর মায়ের কাছে খুবই সহজ কাজ।
-এই সহজ কাজগুলি ফেলেই তো ও স্বার্থপরের মতো চলে গেছে। এখন কি আমি যেয়ে ওর হাতে পায়ে ধরে নিয়ে আসবো? বাচ্চা কি আমার একার? ও জন্ম দেইনি? ওর কোন দায়দায়িত্ব নেই?
মিথিলা চুপ হয়ে গেল। আসল ঘটনা পুরোপুরি না জেনে আন্দাজে কোনকিছু বলাই ঠিক হবে না। আরো কিছুক্ষণ কথা বলার পর রাশেদ সাহেব’কে চলে যাবার আগে হেড মিস্ট্রেস ম্যাডামের সাথে দেখা করে যেতে অনুরোধ করলো মিথিলা।

রাশেদ সাহেবের দেখা করে যাবার ঠিক পাঁচদিন পরেই রিমনের মা সাদিয়া মুমতাহীনা নিপা নিজে থেকেই স্কুলে এসে মিথিলার সাথে দেখা করলো। ভদ্রমহিলা একটা বেসরকারী ব্যাংকে ভালো পদে চাকুরী করেন। অর্ধবেলা ছুটি নিয়ে এসেছেন শুধুই মিথিলার সাথে দেখা করার জন্য।

দুই
আজকে সকালবেলা থেকেই রাশেদের মেজাজ খুব খারাপ। হাউজমেইড দুইজনের একজন কয়েকদিন আগেই চাকুরী ছেড়ে দিয়ে চলে গেছে। আরেকজন আজকে আসেনি। রান্নাবান্না করা এখনও পুরোপুরি শিখে উঠেতে পারেনি রাশেদ। দুপুরবেলা হোটেল থেকে বাপ-বেটা খেয়েদেয়ে বাসায় ফিরে রাশেদ বিছানায় শুয়ে রেস্ট নিচ্ছে। এমন সময় ফোনকল এলে মোবাইলে স্ক্রীনে রাশেদ তাকিয়ে দেখে ওদের ডির্ভোস কেসের উকিল রফিক সাহেব ফোন দিয়েছে।
-রাশেদ সাহেব, ব্যস্ত নাকি?
-জী না। বলুন?
-নিপা ম্যাডামের উকিল আমাকে কিছুক্ষণ আগেই ফোন দিয়েছিল। রিমন’কে উনি মায়ের কাছে ফিরত দিতে বলছেন। না দিলে উনি আইনের আশ্রয় চাইবেন।
-আমি বাচ্চা ওকে দিবো না। কোনভাবেই দিবো না। দরকার পরলে আমি জেল খাটবো, ফাঁসিতে ঝুলবো। তাও দিবো না। আমাকে না বলে, রিমন’কে না জানিয়ে ও এভাবে চলে গেল কেন? আপনি যেভাবে পারেন এটা আটকানোর ব্যবস্থা করেন।
-ভাই, আপনার বাচ্চার বয়স খুব কম। আদালতে গেলে এটা কোনভাবেই ঠেকানো যাবে না। আপনাকে আমি আগেই বলে রাখছি। আপনি বরং ম্যাডামের সাথে কথা বলে দেখুন।
-আমি ওর সাথে কোন কথাই বলবো না।
রাগের চোটে লাইন কেটে দিয়ে ফোনসেট বিছানার উপর সজোরে আছাড় দিলো রাশেদ। মেজাজ এখন ওর চুড়ান্ত খারাপ। বাচ্চা পালার সময় কোন হদিশ নেই, সারাদিন কোন খোঁজখবর থাকে না। এখন এসেছে বাচ্চা নিতে?
রিমন’কে দেয়ার প্রশ্নই উঠে না।

রাগ কমানোর জন্য বাথরুমে ঢুকে মুখ চোখ ভালো করে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে আসলো রাশেদ। মাথা যেকোনভাবেই হোক শান্ত রাখতে হবে। ওদের দুইজনের মাথাই হুটহাট করে গরম হয়ে যায় দেখেই আজকে এই ভয়াবহ অবস্থা এসে দাঁড়িয়েছে! উকিল ওকে যেভাবেই হোক মাথা ঠান্ডা রাখতে বলেছে।

তিন
এখন প্রায় মধ্যরাত।
রোজকারের মতো আজকেও দুইচোখে কোন ঘুমই নেই নিপার। শোয়া থেকে বিছানায় উঠে বসলো। দুইতলার পশ্চিমমূখী এই ঘরটা নিপার নিজের ঘর। বাইরে আজ পূর্ণিমা। মায়াবী জ্যোৎস্নার স্নিগ্ধ আলোতে সারাঘর মাখামাখি হয়ে আছে। মিষ্টি সেই আলোর তীব্রতা আটপৌরে মশারীর ফাঁকফোঁকরে গলে চুইয়ে এসে পড়ছে পুরো বিছানায়। আগে এখানে একটা সিঙ্গেল খাট ছিল। চার হাত-পা মেলে দিয়ে আরাম করে ঘুমানোর অভ্যাস রাশেদের। বিয়ের পর রাশেদ বেশ বড় একটা খাট কিনে শ্বশুরবাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছিল। চাঁদের আলোয় খাটে পাশাপাশি দুইটা খালি বালিশ দেখে মন আরো খারাপ হয়ে গেল নিপার। প্রায় চারমাস হয়ে গেছে ও রাশেদ’কে ফেলে রেখে বাবার বাসায় চলে এসেছে। ধৈর্য্যের সব বাঁধ ভেঙ্গে গিয়েছিল ওর। চলে আসার আগের রাতের ঝগড়ার শেষ দিকের দৃশ্যগুলি আবার মনে পড়ে গেল নিপার। প্রচণ্ড রাগে ক্ষিপ্ত হয়ে রাশেদ ওর দিকে তেড়ে এসে বললোঃ
-সব দায়িত্ব কেন আমার হবে?
-কোন দায়িত্বটা পালন করো তুমি শুনি? সকালবেলা বের হও আর ফের সেই রাতেরবেলা। মাঝের সময়টাতে সংসার কিভাবে চলে তার কোন হিসাব দিতে পারবে? এক বাজার করা ছাড়া আর বাসার কোন কাজটা তুমি করো?
-আসমান থেকে ফেরেস্তা এসে মনে হয় আমাদের সংসার চালায়! তুমি নিজে কতক্ষণ থাকো বাসায়?
-আমি চাকুরী করি কিন্তু সংসারের সবকাজও দেখে শুনে রাখি আমি। না হলে এতদিনে সংসার গোল্লায় যেত!
-ঘোড়ার ডিমের কাজ করো তুমি! হাউজমেইড রেখে দিয়েছ দুইটা। এরাই তো সব করে। নিজে তো গায়ে দুইটা পাখনা লাগিয়ে ঘুরে বেড়াও।

নিপা এরপর সহ্য করতে পারেনি, পারার কথাও না। মুখের লাগাম ছুটে গেল নিপারও!

ঝগড়ার চুড়ান্ত পর্যায়ে রাশেদ যখন ওর গালে চড় মারলো, সাথে সাথেই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললো নিপা অনেক হয়েছে, আর সম্ভব না। মাত্র চারদিনের ট্রেনিংয়ে অফিস থেকে কক্সবাজার পাঠিয়েছিল নিপা’কে। এই কয়টা দিন রাশেদ’কে বাসা দেখেশুনে রাখার জন্য বলেছিল নিপা। রাশেদ তাতে কোনভাবেই রাজি না। রাতে তুমুল ঝগড়ার পর পরেরদিন ভোরবেলা কাউকে কিছু না বলে নিপা সোজা বাবা’র বাসায় চলে আসে। এভাবে কাউকে কিছু না বলে চলে যাওয়া’টা রাশেদ ভালোভাবে নেয়নি। সোজা মুখের উপর নিপা’কে বাসায় ফিরতে মানা করে দিয়েছে। রিমন’কেও কোনভাবেই মায়ের কাছে যেতে দেবে না রাশেদ।

ঝগড়াঝাটি কিভাবে যেন শেষ পর্যন্ত কিছু বুঝার আগেই চরম পর্যায়ে চলে গেল। মাথায় রোখ চেপে গিয়েছিল নিপার। রাশেদ চাকুরী ছেড়ে দিয়ে কেবলই ব্যবসায় নেমেছে। এখনও খুব একটা ভালো কিছু করতে পারেনি। সংসারের বেশিরভাগ খরচ নিপা’ই দেয়। রাশেদের সব ব্যাপারে খবরদারী তাই কিছুতেই মেনে নিতে পারলো না নিপা। জিদ নিপারও কম না। নিপা’র নিকাহের কাবিননামায় ১৮ নাম্বার ঘরে স্ত্রীর তালাক প্রদানের ক্ষমতা (তালাক-ই-তৌফিজ) দেয়া ছিল না। রিমন’কে যখন কিছুতেই ওর কাছে আসতে দেবে না, রাগের মাথায় আদালতের মাধ্যমে ডির্ভোস দেয়ার ভয় দেখালো নিপা। নিপা মনে করেছিল এতে রাশেদ ভয়ে চুপ হয়ে যাবে। কিন্তু ঘটনা ঘটলো উলটো, রাশেদ ওকে প্রকাশ্যে চ্যালেঞ্জ করলো ডির্ভোস দেয়ার ব্যাপারে। রাশেদের সোজাসাপ্টা কথা, নিপা কোনভাবেই ওকে ডির্ভোস দিতে পারবে না। পাক্কা দুইমাস ধরে রিমন’কে দেখার জন্য ফোন করতে করতে বিরক্ত হয়ে একজন উকিলের সাথে দেখা করে নিপা। সেখান থেকে কিভাবে যেন তিক্ততার জল গড়াতে গড়তে এখন এই অন্তিম পর্যায়ে এসে পৌছিয়েছে।

কয়েকদিন আগেই রিমনের ক্লাস টিচারের সাথে দেখা করতে গিয়েছিল নিপা। মিথিলা ম্যাডামের কাছে রিমনের বর্তমান অবস্থার কথা শুনে রীতিমতো ভয় পেয়েছে নিপা। রাশেদ রিমন’কে কিছুতেই সামলাতে পারছে না। পারার কথাও না। রাশেদ মনে করেছিল রিমন’কে দেখা করতে না দিলে নিপা ওর কাছে সবকিছুর জন্য মাপ চেয়ে অবনত মস্তকে রাশেদের সব খবরদারী মেনে নিয়ে সংসারে ফিরে আসবে। কিন্তু নিপা সেইকাজ কোনদিনও করবে না। আজকের এই অবস্থার জন্য সব দোষ রাশেদের, সুতরাং মাপ রাশেদ’কেই চাইতে হবে। সেই প্রস্তাব দেয়াও হয়েছিল নিপার বাসা থেকে। এটা শুনে রাশেদ যা ইচ্ছে তাই ভাষায় নিপা’কে বকাঝোকা করেছে। এরপর আর নিপা রাশেদের সাথে কথা বলেনি। নিজের বৌয়ের সাথে যে এই ভাষায় কথা বলতে পারে তার সাথে আর যাই হোক সংসার করা যায় না।

ডির্ভোস কেস এখন আদালতে উঠেছে। এবার দেখা যাক রাশেদ কি করে?

বড় বড় করে কিছু দীর্ঘশ্বাস ফেলে নিপা বিছানায় আবার শুয়ে পরলো।

ঘুম মনে হয় আজকেও আর আসবে না...........................

মিথিলা কাহিনীর আগের পর্বগুলিঃ
১। গল্পঃ মিথিলা কাহিনী ১ - একজন বন্ধ্যা মেয়ে বলছি!
২। গল্পঃ মিথিলা কাহিনী ২ - মিথিলার ভালোবাসা


সবাইকে ধন্যবাদ ও শুভ কামনা রইল।
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত @ নীল আকাশ, ফেব্রুয়ারী ২০২১


মন্তব্য ৪২ টি রেটিং +১৫/-০

মন্তব্য (৪২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ২:৩৮

জুল ভার্ন বলেছেন: চমতকার লিখেছেন।

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৩:৪১

নীল আকাশ বলেছেন: প্রথম মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

২| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ২:৪৫

তারেক ফাহিম বলেছেন: দেখা যাক রিমন কার কাছে থাকতে পারে।


আমরাও আদালতের রায়ের অপেক্ষায় আছি।

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৩:৪২

নীল আকাশ বলেছেন: এটা সত্য ঘটনা নিয়ে লেখা। পরের পর্বের অপেক্ষায় থাকুন।

৩| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ২:৫৬

নেওয়াজ আলি বলেছেন: শিরোনামে মিথিলা দেখে থমকে গেলাম । এক মিথিলা ভারতে পাচার হলো এই আবার কোন মিথিলা, পড়ে বুঝলাম। চমৎকার লেখা

২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১২:০৭

নীল আকাশ বলেছেন: পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
মিথিলা সিরিজ লেখা শুরু করেছিলাম আমি অনেক বছর আগে।
পর পর দুইটা পর্ব লিখে এটা লেখা বন্ধ রেখেছিলাম শুধু এক নিলর্জ্জ বেহায়া মেয়ের নামের সাথে মিল আছে দেখে।
অনেকদিন পরে এটার পর্ব লিখলাম। আগের দুইটা পর্ব পড়ে দেখতে পারেন। ১মটা ব্লগে অন্যতম সেরা পঠিত গল্পের একটা।
শুভ রাত্রী।

৪| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৩:২১

রাজীব নুর বলেছেন: আল্লাহ ভাগ্যে যা লিখে রাখেন তাই তো হবে। মানুষের কিচ্ছু করার ক্ষমতা নাই। তাই সব আল্লাহর হাতে ছেড়ে ছুড়ে পরকালের কন্য অপেক্ষা করাই ভালো।

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৪:৫৩

নীল আকাশ বলেছেন: আপনি আমাকে আসলেই সব সময়ে খুব কনফিউশনের মাঝে রাখেন!
আপনি পারেনও!

৫| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৩:৪৬

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
দেখা যাক রায়ের পর কোন দিকে ঘটনা মোরড় নেয়।++++

২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১২:০৮

নীল আকাশ বলেছেন: জী ঠিক বলেছেন।
ইনশা আল্লাহ কালকেই পারলে শেষ পর্ব দিয়ে দেবো।

৬| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৪:০১

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: সুন্দর গল্প

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৪:৪৩

নীল আকাশ বলেছেন: ধন্যবাদ, পরের পর্ব পড়ার আমন্ত্রণ দিলাম।

৭| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৪:৪৪

নিঃশব্দ অভিযাত্রী বলেছেন: দুইটা গ্রুপে আগেই পড়েছি। আবার পড়লাম। সুন্দর লেখা।

২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১২:০৯

নীল আকাশ বলেছেন: বারবার পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

৮| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৪:৫০

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ভাই চমৎকার গল্প +++ ,তবে হৃদয় ভংগের বা বেদনার।

আসলে স্বামী - স্ত্রী'র মাঝে একটু ইগো প্রবলেম তথা মানিয়ে নেয়া-মানিয়ে চলার মানষিকতার অভাবে কত সংসার যে ভেংগে যায় কত ছেলে-মেয়ের জীবনে যে নেমে আসে অমানিশার অন্ধকার ,এসব ভাবলেও খারাপ লাগে।

বাস্তব যাই হোক না কেন, লেখক হিসাবে গল্পে অন্তত:পক্ষে তাদের(রাশেদ-মিথিলা)কে মিলানোর চেষ্টা করুন এবং রিমনকে ফিরিয়ে দিন তাদের বাবা-মা উভয়ের নিকট।

লেখক হিসাবে এ আপনি চাইলেই পারেন(এ পাঠক হিসাবে চাওয়া,আপনার লেখায় অন্তরায় তৈরী বা হস্তক্ষেপ নয়)।

২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১২:১১

নীল আকাশ বলেছেন: হৃদয়স্পর্শ করা একটা মন্তব্য করেছেন।
এটা একটা সত্য ঘটনার উপর নির্ভর করে লেখা হয়েছে।
রিমনের বাবা মা হচ্ছে রাশেদ এবং নিপা।
দেখা যাক লেখা কোন দিকে যায়!

৯| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:১৯

নজসু বলেছেন:


প্রিয় ভাই, প্রথম পর্ব পাঠ করলাম।
ধারালো লেখনি।
বাকি পর্বগুলো পড়ার ইচ্ছা রইলো।
আশা করি, সবশেষে একটা মন্তব্য করবো।

২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১২:১২

নীল আকাশ বলেছেন: আপনি হচ্ছে আমার খুব প্রিয় একজন গল্পের পাঠক। এই লেখায় আপনাকে পেয়ে খুব খুশি হয়েছি।
এটা একটা সত্য ঘটনার উপর নির্ভর করে লেখা হয়েছে। এই লেখার সাথেই থাকুন।
শুভ রাত্রী।

১০| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৩৬

চাঁদগাজী বলেছেন:



হাউকাউ

২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১২:০৩

নীল আকাশ বলেছেন: দেশি গরুর বিদিশি হাম্বা হাম্বা !!!

১১| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ৮:৩১

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: পড়া গল্প সত্য ঘটনার উপর নির্মিত; ভালো লিখেছেন।

শেষ অংশটি খুব টার্চি হয়েছে। ++
পোস্টে অষ্টম লাইক।

শুভেচ্ছা প্রিয় নীল আকাশ ভাইকে।

২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১২:১৩

নীল আকাশ বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে পড়ার এবং খুব সুন্দর একটা মন্তব্য করার জন্য।
শুভ রাত্রী।

১২| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১১:০০

রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন: আপনি আমাকে আসলেই সব সময়ে খুব কনফিউশনের মাঝে রাখেন!
আপনি পারেনও!

শুনুন ভাইজান আপনাকে শুধু একটা কথাই বলি-
আমি রাতে ঘুমাতে যাওয়ার সময় আল্লাহকে স্মরণ করে ঘুমাতে যাই। এবং সকালে উঠে আল্লাহকে স্মরণ করি।

২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১২:১৬

নীল আকাশ বলেছেন: যে আল্লাহ'কে স্মরণ করে ঘুমাতে যায়, তার নিরাপত্তার জন্য আল্লাহ ফেরেস্তা পাঠান যেন শয়তান সেই সময়ে কাছে আসতে না পারে।
আপনি দিনের বেলাও এই অভ্যাস করুন। আপনার অনেক সমস্যা দেখবেন নিজে নিজেই ঠিক হয়ে গেছে।
শুভ রাত্রী।

১৩| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১১:০৪

করুণাধারা বলেছেন: ক'দিন আগে পত্রিকায় ছবি দেখেছিলাম, মা-বাবা কেউ ছেলেকে নিতে চাচ্ছেন না, তাই আদালতের রায়ের অপেক্ষায় ছেলে রাতে আদালতে থেকেছে!! কী ভয়ানক! ছেলেটার জন্য খুব কষ্ট হয়েছে। এরা সন্তান জন্ম দেয় কেন!! আর নিষ্পাপ শিশুর যন্ত্রনার চাইতে নিজেদের ইগো তাদের কাছে বেশী গুরুত্ববহ!!!

আশাকরি রিমনের মা-বাবা ছেলের সাথে এমন করবেন না... পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১২:১৯

নীল আকাশ বলেছেন: আপু, আপনি পরের পর্ব অবশ্যই পড়বেন। পড়লেই বুঝবেন কেন আমি পড়তে বলেছি।
আপনি কি পেন্সিল কিংবা অন্যপ্রকাশ সাহিত্যগ্রুপের সাথে সংযুক্ত? সেখানে আমি লেখাটা আগে প্রকাশ করেছি।
পরের পর্ব দারুন লিখেছি। কালকেই দেবো।
শুভ রাত্রী।

১৪| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১১:৫৩

আহমেদ জী এস বলেছেন: নীল আকাশ ,




বাস্তবে এমনটাই হয়। তিল থেকে তাল হয়ে যায় সবকিছু।

আগের পর্বগুলো পড়া হয়নি। সবটা পড়লে হয়তো বোঝা যাবে "তিল'টা কখন বপন করা হয়েছে !

২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১২:৩৫

নীল আকাশ বলেছেন: গুরুজী,
বাস্তবে দাম্পত্য কলহের ঘটনাগুলি খুবই তুচ্ছ ঘটনা থেকেই শুরু হয়। ছেলেমেয়েরা ইগোর জন্য এইগুলিকে টেনে টেনে ডির্ভোস পর্যন্ত নিয়ে যায়।
আগে ছেলেমেয়েরা অভিভাবকদের বিচার মেনে আবার সংসার শুরু করতো।
এখন তো এরা নিজেরাই বড় মাতব্বর। সোজা উকিলের কাছে যায়।
উকিল একদম লাইন মতো নিয়ে যায়। যত দিন কেস চলবে উকিলের লাভ।

আগের পর্বগুলো পড়া হয়নি। সবটা পড়লে হয়তো বোঝা যাবে "তিল'টা কখন বপন করা হয়েছে !
আগের প্রতিটা পর্বই আপনি পড়েছেন। তবে সেইগুলির সাথে এই কাহিনীর কোন সর্ম্পক নেই। প্রতিটাই আলাদা আলাদা কাহিনী।
শুভ রাত্রী আপনার জন্য।

১৫| ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১২:৫৫

ঢুকিচেপা বলেছেন: সমাজের একটি বাস্তাব চিত্র।
শুধু ইগোর কারণেই অনেক সংসার শেষ।

গল্প ভালো লেগেছে।

২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১:৩৪

নীল আকাশ বলেছেন: একদম ঠিক বলেছে।
সংসার চালাতে গেলে দুইজনকেই ছাড় দিতে হয়। অপরের কথা ভাবতে হয়। কম্প্রোমাইজে আসতে হয়। সন্তানের কথা ভাবতে হয়।
শুভ কামনা আপনার জন্য।

১৬| ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১:০৫

মা.হাসান বলেছেন: মা-বাবার সার্বক্ষনিক ঝগড়া দেখে বাচ্চাদের বড় হওয়া ঠিক বলে মনে হয় না, এর চেয়ে আলাদ হয়ে যাওয়াই মনে হয় ভালো।

মহিলারা কষ্ট হলেও নিষ্কর্মা স্বামী মেনে নিতে পারেন। জুয়াড়ি বা মাতালের সাথেও ঘর করতে পারেন। কিন্তু পরনারীতে আসক্ত বা গায়ে হাত তোলে একম লোকের সাথে সংসার করা আত্মসম্মানবোধ সম্পন্ন নারীর জন্য কষ্টকর। যাদের কোনো যাবার যায়গা নেই তারা হয়তো মুখ বুজে সহ্য করবেন। কিন্তু যার দাড়ানোর মতো একটা জায়গা আছে তিনি সহ্য করার কথা না।

গল্পে কয়েক জায়গায় খটকা লাগলো।
আমার জানা মতে কক্সবাজারে ব্যাংকারদের কোনো ট্রেনিং দেয়ার মতো জায়গা নেই। মিরপুর-২ এ কিডনি হাসপাতালের পাশে বিআইবিএম আছে, এটা ছাড়া আরো দু-একটা জায়গা , সবই ঢাকায়।

রাশেদ শশুর বাড়িতে বিশাল খাট পাঠিয়েছে, অথচ নিপা বলছে সংসারের খরচ সেই চালায়, রাশেদের আয় রোজগার তেমন নেই। হতে পারে তাহলে আগে হয়তো ছিলো , এখন ব্যবসা শুরুর পর আয় কমে গেছে।

কিন্তু রাশেদের বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থা যদি খারাপই হবে, এখন সংসারের খরচ যদি নিপাই চালায় , তাহলে নিপার অবর্তমানে রাশেদ দুইজন মেইড সহ সংসার খরচ কেমন করে চালাচ্ছে? এই অবস্থা তো কম পক্ষে দু মাস ধরে চলছে।

মিথিলা বহুবার রিমনের ডায়েরিতে সব লিখে দেবার পরেও কোনো উন্নতি হয় নি। তার মানে নিপা যখন এক সাথে থাকতো তখনও রিমনের খুব একটা যত্ন হতো না। অধিকাংশ লোক বিনা কষ্টে বাচ্চাকাচ্চা পেয়ে যায় বলে বাচ্চারা অনাদরে বেড়ে ওঠার চান্স থাকে।
আশা করি পরের পর্বে রহস্য খানিকটা খোলাশা হবে। আশা করি আরো একটা জমজমাট সিরিজ পেতে চলেছি।
অনেক শুভকামনা।

২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১:৩৩

নীল আকাশ বলেছেন: ঠিক এই জন্যই আমি আপনাকে এত পছন্দ করি। আপনার মতো পাঠক আমার নিয়মিত দরকার।
প্রথমেই বলে নেই এটা একটা সত্য ঘটনার উপর লেখা। আমি শুধু স্থান কাল পাত্র পরিবর্তন করেছি। গল্পের ভঙ্গিতে লিখেছি।

নীচে আপনার প্রশ্নগুলির জবাব দিচ্ছিঃ
১) আমার জানা মতে কক্সবাজারে ব্যাংকারদের কোনো ট্রেনিং দেয়ার মতো জায়গা নেই। মিরপুর-২ এ কিডনি হাসপাতালের পাশে বিআইবিএম আছে, এটা ছাড়া আরো দু-একটা জায়গা , সবই ঢাকায়।

বিআইবিএম'য়ে ব্যাংকিং ট্রেনিং মাত্র চার দিনের হয় না। প্রায় একমাসের। কক্সবাজারে পারফোর্মান্স বোনাস হসেবে ছোটখাট ট্রেনিংয়ে পাঠানো হয় কিছু কিছু জায়গায়। আমি সেটাই এখানে নিয়েছি। আমার গল্পের জন্য খুব সামান্য কয়েকদিনের ছুটি দরকার ছিল।

২) রাশেদ শশুর বাড়িতে বিশাল খাট পাঠিয়েছে, অথচ নিপা বলছে সংসারের খরচ সেই চালায়, রাশেদের আয় রোজগার তেমন নেই। হতে পারে তাহলে আগে হয়তো ছিলো , এখন ব্যবসা শুরুর পর আয় কমে গেছে।
আমি গল্পের মাঝেই লিখে দিয়েছি। রাশেদ আগে চাকুরী করতো। কেবলই চাকুরী ছেড়ে ব্যবসাতে ঢুকেছে।

৩) কিন্তু রাশেদের বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থা যদি খারাপই হবে, এখন সংসারের খরচ যদি নিপাই চালায় , তাহলে নিপার অবর্তমানে রাশেদ দুইজন মেইড সহ সংসার খরচ কেমন করে চালাচ্ছে? এই অবস্থা তো কম পক্ষে দু মাস ধরে চলছে।
এটাও গল্পে উল্লেখ করেছি। রাশেদ এখনও রান্না করা শিখে উঠতে পারে নি। নিতান্ত বাধ্য হয়েই হাউজমেইড দিয়ে সংসার চালাচ্ছে। গল্পের মাঝে লেখা আছেঃ "ব্যবসা ছেড়ে দিয়ে ঘরে বসে থাকলে তো জীবন চলবে না ম্যাডাম? খেতে পরতে তো হবে?"

৪) মিথিলা বহুবার রিমনের ডায়েরিতে সব লিখে দেবার পরেও কোনো উন্নতি হয় নি। তার মানে নিপা যখন এক সাথে থাকতো তখনও রিমনের খুব একটা যত্ন হতো না।
এটাই আমি দেখাতে চেয়েছি। বাবা মা কেউ বাচ্চাটার ঠিক মতো যত্ন নিতো না। সমস্যা শুরু হয়েছে আরো আগে থেকে, ধীরে ধীরে গন্ডগোল জটিল আকার হয়েছে অবহেলার জন্য।


৫) অধিকাংশ লোক বিনা কষ্টে বাচ্চাকাচ্চা পেয়ে যায় বলে বাচ্চারা অনাদরে বেড়ে ওঠার চান্স থাকে।

আপনার এবং করুণাধারা আপুর মন্তব্য নিয়েই পরের পর্বে বেশ কিছু জায়গা লেখা হয়েছে।

পরের পর্ব কালকেই দেবো। পুরোটা পড়ার পর অনেক কিছুই খোলাশা হবে। আগামী পর্বেই শেষ।

শুভ রাত্রী এবং শুভ কামনা আপনার জন্য।

১৭| ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ২:১০

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: বলছেন সত্য ঘটনা ছোট খাট নিখুঁত বর্ননা ,নিজের ঘটনা নয়তো!

২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সকাল ১০:২৬

নীল আকাশ বলেছেন: সম্ভবত আপনি আমার গল্প লেখার পদ্ধতি নিয়ে পরিচিত নন। আমি সব সময় এভাবেই লিখি, বাস্তবমূখী এবং ছোট খাট নিখুঁত বর্ননা সহ। পোস্টে আগের দুইটা পর্ব দেয়া আছে। পড়ে দেখুন। নিজেই বুঝতে পারবেন।
ধন্যবাদ।

১৮| ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সকাল ৮:৫১

কবিতা ক্থ্য বলেছেন: ভলো শুরু হয়েছে গল্পের।
শুভ কামনা।

২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সকাল ১০:২৩

নীল আকাশ বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে পড়ার এবং খুব সুন্দর একটা মন্তব্য করার জন্য।

১৯| ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সকাল ৯:০৬

ইসিয়াক বলেছেন: যদিও আগেই সবটা পড়েছি। ব্লগেও পড়লাম।


এটা আমি গল্প বলব না ,বলবো বাস্তব চিত্র।
চমৎকার উপস্থাপন। পরের পর্বের অপেক্ষায় ।
শুভকামনা সতত।

২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সকাল ১০:২৪

নীল আকাশ বলেছেন: যেহেতু এটা সত্য ঘটনা, আমি লেখার সময়ে যতটা বাস্তবতার কাছাকাছি থাকার চেষ্টা করেছি।
ধন্যবাদ।

২০| ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সকাল ১০:৫৬

সোহানী বলেছেন: একটু সমাজের চিত্র। ভালো লাগলো ।

০৬ ই মার্চ, ২০২১ বিকাল ৫:৪৮

নীল আকাশ বলেছেন: আমাদের সমাজে এইসব দৃশ্য খুব পরিচিত।
সামান্য কারণেই এইসব বিচ্ছেদের ঘটনায় তুলকালাম কান্ড ঘটে যায়।

২১| ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সকাল ১১:১৭

রাজীব নুর বলেছেন: পোষ্টে আবার এলাম সকলে রমন্তব্য গুলো দেখতে।

০৬ ই মার্চ, ২০২১ বিকাল ৫:৫০

নীল আকাশ বলেছেন: দেখে কি করবেন রে ভাই? পারলে আমার পোস্টে প্রতি মন্তব্যগুলি দিয়ে যান। খুব উপকার হতো। সারাদিন এত ব্যস্ত থাকি যে ব্লগেই আসা হয় না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.